Expert Speak India Matters
Published on Aug 13, 2022 Updated 15 Days ago

ভারতে যুবসমাজের জন্য ডিজিটাল দক্ষতা কর্মসূচির একটি শক্তিশালী ভান্ডার রয়েছে;‌ কিন্তু উল্লেখযোগ্য ফাঁকও থেকে গেছে, যা ভারতীয় তরুণ, তাদের নিয়োগকর্তা, এবং দেশের জন্য উদ্বেগের কারণ।

বিশ্ব যুব দক্ষতা দিবস ২০২২: তরুণ প্রজন্মকে অগ্রাধিকার
বিশ্ব যুব দক্ষতা দিবস ২০২২: তরুণ প্রজন্মকে অগ্রাধিকার

ভারত যখন তার স্বাধীনতার ৭৫ বছর পূর্ণ করছে, তার সঙ্গে সঙ্গেই এর কাজের জগৎ একটি রূপান্তরের পর্যায়ে পৌঁছেছে। দ্রুত ডিজিটাইজেশন এবং  প্রযুক্তিগত পরিবর্তন, ‌দুটোই এর একটি কারণ এবং একটি উপসর্গ হিসেবে কাজ করছে, আর কোম্পানিগুলি ক্রমশই বেশি করে সময় সাশ্রয়কারী ও মানোন্নয়নকারী  প্রযুক্তি গ্রহণ করছে, যার মধ্যে আছে বেসিক ডিজিটাল টুল থেকে ইন্টিগ্রেটেড ৪আইআর প্রযুক্তি। কর্মজীবী পেশাদারদের দ্রুত সম্প্রসারণশীল সংখ্যা, যা বর্তমানে ৪০০ মিলিয়নেরও বেশি, সারা দেশে একটি উদীয়মান আইসিটি–সক্ষম হাইব্রিড কাজের সংস্কৃতির সঙ্গে যুক্ত হয়ে পরিবর্তনকে অভূতপূর্ব মাত্রায় এগিয়ে নিয়ে চলেছে।

সামগ্রিকভাবে, ভারতের সংস্থাগুলি নতুন প্রযুক্তির প্রবর্তনের ফলে অতিরিক্ত কর্মী নিয়োগের প্রয়োজন সম্পর্কে আশাবাদী। ২০২০ সালের একটি সমীক্ষা অনুসারে, ৩৩ শতাংশ কোম্পানি তাদের ডিজিটাল রূপান্তর প্রচেষ্টার কারণে আরও বেশি কর্মী নিয়োগের প্রয়োজনের কথা জানিয়েছে, আর ১৯ শতাংশ সংস্থা তাদের শ্রমিক-সংখ্যা হ্রাস করার কথা বলেছে।

চিন্তার কথা হল, কোম্পানিগুলি কর্মীদের প্রয়োজনীয় দক্ষতার অভাব সম্পর্কে ক্রমশ বেশি করে উদ্বেগ প্রকাশ করছে। গত দুই বছরে এই উদ্বেগ আরও বেড়েছে বলে মনে হচ্ছে। ২০২০ সালে ভারতীয় কোম্পানিগুলি দক্ষতার অভাবকে তাদের সবচেয়ে বড় বাধা হিসেবে চিহ্নিত করেছিল। তারা যে সব চ্যালেঞ্জ অনুভব করেছিল তার ৩৪ শতাংশ ছিল এই বিষয়টি। ২০২২ সালে তা বেড়ে হয়ে গেছে ৬০ শতাংশ। যেমন, গার্টনারের একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে উদীয়মান প্রযুক্তির বহুবিধ দিককে গ্রহণের ক্ষেত্রে, যার চাহিদা ২০২৪-এর মধ্যে বিশ গুণ বেড়ে যাবে বলে প্রত্যাশিত, প্রতিভার অভাবকে ভারতীয় তথ্যপ্রযুক্তি শিল্প এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বাধা হিসেবে দেখে (৬৫ শতাংশ)।

কর্মজীবী পেশাদারদের দ্রুত সম্প্রসারণশীল সংখ্যা, যা বর্তমানে ৪০০ মিলিয়নেরও বেশি, সারা দেশে একটি উদীয়মান আইসিটি–সক্ষম হাইব্রিড কাজের সংস্কৃতির সঙ্গে যুক্ত হয়ে পরিবর্তনকে অভূতপূর্ব মাত্রায় এগিয়ে নিয়ে চলেছে।

এই দক্ষতার ঘাটতি এবং অপ্রতুলভাবে লালিত প্রতিভার ঘটনাগুলি তরুণ ভারতীয়দের কর্মিবাহিনীতে প্রবেশ করতে এবং উন্নতি করতে বাধা দেবে, এবং শেষ পর্যন্ত তাদের নিয়োগকর্তাদের প্রতিযোগিতামূলক হয়ে ওঠার পক্ষে ক্ষতিকারক প্রমাণিত হবে। যেহেতু ভারত বিশ্ব যুব দক্ষতা দিবস ২০২২ উদযাপন করছে, তাই দেশের দক্ষতা–বাস্তুতন্ত্রকে অবশ্যই এই ঘাটতিগুলি মোকাবিলা করার জন্য আরও পদক্ষেপ করতে হবে, এবং একটি ডিজিটাল শতাব্দীতে ৪আইআর–প্রস্তুত ভারতের মূল চালক হওয়ার জন্য যুবাদের তৈরি করতে হবে।

তরুণদের ডিজিটাল দক্ষতার জন্য ভারতীয় উদ্যোগ

চাকরির প্রোফাইলের পরিবর্তিত প্রকৃতি এবং নতুন দক্ষতার প্রয়োজনীয়তাকে স্বীকৃতি দিয়ে ভারত সরকার যুবকদের ডিজিটাল দক্ষতা, প্রশিক্ষণ ও জ্ঞান প্রদানের জন্য বেশ কয়েকটি নতুন নীতি ও কর্মসূচি তৈরি করেছে। ডিজিটাল রূপান্তরের জন্য সরকারের ফ্ল্যাগশিপ প্রোগ্রাম ডিজিটাল ইন্ডিয়া মিশন নয়টি স্তম্ভ বা বৃদ্ধির ক্ষেত্র নিয়ে গঠিত। তার মধ্যে একটি হল ‘‌কাজের জন্য তথ্যপ্রযুক্তি’‌, যা ‘‌আই টি/আই টি ই এস ক্ষেত্রে কাজের সুযোগ পেতে যুবাদের প্রয়োজনীয় দক্ষতায় প্রশিক্ষণ প্রদান’‌–এর উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ রেখেছে। তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে চাকরির জন্য ১০ মিলিয়ন যুবক–যুবতীকে প্রশিক্ষিত করা হবে, এবং এই কর্মসূচিটি বর্তমানে বিভিন্ন সরকারি মন্ত্রণালয় ও বিভাগ যৌথভাবে বাস্তবায়ন করছে।

২০১৫ সালে ন্যাশনাল স্কিল ডেভেলপমেন্ট মিশন (এন এস ডি এম) চালু করা হয়েছিল ‘‌দক্ষতা প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের পরিপ্রেক্ষিতে ক্ষেত্র এবং রাজ্য জুড়ে অভিন্নতা’‌ তৈরি করার জন্য। এন এস ডি এম–এর অধীনে ন্যাশনাল স্কিল ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন (এন এস ডি সি) তৈরি করেছিল দক্ষতা উন্নয়ন ও উদ্যোক্তা মন্ত্রক (এম এস ডি ই), যার লক্ষ্য ছিল পাবলিক–প্রাইভেট পার্টনারশিপ মডেল অনুসরণ করে দক্ষতা উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন উদ্যোগের বাস্তবায়ন। যেমন দক্ষতায়ন বাস্তুতন্ত্রের কথা মাথায় রেখে এন এস ডি সি ব্যবসা–থেকে–উপভোক্তা ই–লার্নিং পোর্টালগুলিকে একীভূত করা ও ই–লার্নিং বিষয়বস্তু তৈরি ও সোর্সিংয়ের জন্য একটি ই–লার্নিং অ্যাগ্রিগেটর ‘‌ই–স্কিল ইন্ডিয়া’ তৈরি করেছে৷ এম এস ডি ই বিভিন্ন ধরনের সক্ষমতা তৈরির উদ্যোগও চালু করেছে, যার মধ্যে বেশিরভাগই তরুণদের জন্য ডিজিটাল দক্ষতার উপর জোর দেয়।

‌সূত্র:‌ ‘‌ইমারজেন্স অফ ইন্ডিয়া অ্যাজ দ্য স্কিল ক্যাপিটাল অফ দি ওয়র্ল্ড:‌ পসিবিলিটিজ অ্যান্ড পাথ অ্যাহেড’‌

যৌথ পাঠ্যক্রম উন্নয়ন এবং সরকারি ও বেসরকারি ক্ষেত্রের মধ্যে প্রশিক্ষণ অংশীদারি এটা নিশ্চিত করতে সাহায্য করছে যে দক্ষতায়ন এমনভাবে করা হবে যাতে তা তরুণ ভারতীয়দের ‘শিল্পের জন্য প্রস্তুত’‌ করে তোলে। এই জায়গায় অন্যান্য উদ্যোগের মধ্যে এন এস ডি সি তরুণদের ডিজিটাল দক্ষতা কর্মসূচিগুলি বিকাশের জন্য  হোয়াটসঅ্যাপ, সিসকো, লিঙ্কড্‌ইন, আই বি এম  এবং সিম্পলিলার্নের মতো প্রযুক্তি সংস্থার সঙ্গে সহযোগিতা করেছে; এবং এম এস ডি ই–র ডিরেক্টরেট জেনারেল অফ ট্রেনিং (ডি জি টি) সারা দেশে শিল্প প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের ছাত্রদের জন্য ই–লার্নিং মডিউল তৈরি করতে মাইক্রোসফট ও ন্যাসকম ফাউন্ডেশনকে অংশীদার করেছে।

অন্য ল্যান্ডমার্ক স্কিমগুলিও উপযোগী প্রমাণিত হয়েছে। ডিজিটাল সাক্ষরতা অভিযান (দিশা) ৪.২৫ মিলিয়ন অ–আইটি–শিক্ষিত নাগরিককে ডিজিটাল দক্ষতা প্রদান করেছে, এবং প্রধানমন্ত্রী গ্রামীণ ডিজিটাল সাক্ষরতা অভিযান (পিএমজিদিশা)–এর লক্ষ্য গ্রামীণ এলাকার ৬০ মিলিয়ন মানুষকে ডিজিটালভাবে সাক্ষর করা এবং তাঁদের কম্পিউটার ও অন্যান্য ডিজিটাল ডিভাইসে প্রাথমিক কাজ সম্পাদন করতে সক্ষম করা। যদিও এই প্রকল্পগুলি একচেটিয়াভাবে যুবকদের লক্ষ্য করে তৈরি নয়, তাদের ১৪–৬০ বছরের যোগ্যতামান নিশ্চিত করে যে তরুণদের একটি উল্লেখযোগ্য অনুপাত এর থেকে লাভবান হয়েছে।

অর্থমন্ত্রী অনলাইন প্রশিক্ষণ এবং এপিআই–ভিত্তিক প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে নাগরিকদের দক্ষতায়ন, উচ্চতর দক্ষতায়ন এবং পুনর্দক্ষতায়নের সুযোগ প্রদানের জন্য অগ্রণী ‘‌দেশ’‌ স্ট্যাক ই–পোর্টাল চালু করার কথা ঘোষণা করেছিলেন।

২০২২ সালে দুটি বড় সরকারি হস্তক্ষেপ ভারতের ডিজিটাল দক্ষতার উদ্যোগের ভান্ডারে যুক্ত হয়েছে। কেন্দ্রীয় বাজেট ২০২২–২৩ পেশ করার সময় অর্থমন্ত্রী অনলাইন প্রশিক্ষণ এবং এপিআই–ভিত্তিক প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে নাগরিকদের দক্ষতায়ন, উচ্চতর দক্ষতায়ন এবং পুনর্দক্ষতায়নের সুযোগ প্রদানের জন্য অগ্রণী ‘‌দেশ’‌ স্ট্যাক ই–পোর্টাল চালু করার কথা ঘোষণা করেছিলেন। আরও সম্প্রতি জুন ২০২২–এ কেন্দ্রীয় শিক্ষা ও দক্ষতা উন্নয়ন মন্ত্রী একটি ডিজিটাল দক্ষতায়ন কর্মসূচি চালু করেছেন, যা বিশেষভাবে উদীয়মান ও ভবিষ্যতের প্রযুক্তিগুলির উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে। এই কর্মসূচিতে শংসাপত্র, ইন্টার্নশিপ, শিক্ষানবিশি ও কর্মসংস্থানের মাধ্যমে ১০ মিলিয়ন শিক্ষার্থীকে উদীয়মান প্রযুক্তির ক্ষেত্রে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। এটি একটি ব্যাপ্ত, উচ্চাভিলাষী অনুশীলন হবে যাতে একাধিক মন্ত্রণালয়, সরকারি সংস্থা ও প্রযুক্তি সংস্থা জড়িত থাকবে। এটি চালু হওয়ার এক সপ্তাহের মধ্যে প্রায় এক মিলিয়ন শিক্ষার্থী নথিভুক্ত হওয়ায় একটি আশাব্যঞ্জক সূচনা হয়েছে।

ডিজিটাল দক্ষতার অভাব কমানো

উপরে উল্লিখিত ডিজিটাল দক্ষতার উদ্যোগের গভীরতা এবং ব্যাপ্তি সত্ত্বেও, এখনও বড় ফাঁক রয়ে গেছে, যা ভারতীয় তরুণ, তাদের নিয়োগকর্তা এবং দেশের জন্য ক্রমবর্ধমান উদ্বেগের কারণ।

যদিও কাজ পাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় চাকরি–নির্দিষ্ট প্রযুক্তিগত দক্ষতার দিকে অনেকটা এগোনো গিয়েছে, শেষ পর্যন্ত শিক্ষার বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ, এবং নিয়োগকর্তারাও কিন্তু শ্রমশক্তিতে সম্ভাব্য প্রবেশকারীদের মধ্যে শিক্ষাগত যোগ্যতার মূল্য দেন। ইন্ডিয়া স্কিলস রিপোর্ট ২০২২ অনুযায়ী, ভারতের মাত্র ৪৮.৭ শতাংশ শিক্ষিত যুবক কর্মসংস্থানের যোগ্য। প্রকৃতপক্ষে শিল্পের প্রয়োজন এবং উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার মধ্যে বিরাট ব্যবধান বেসরকারি ক্ষেত্রকে, বিশেষ করে কারিগরি সংস্থাগুলিকে, ফাউন্ডেশন কোর্স এবং ইন–সার্ভিস লার্নিং মডিউলগুলিকে এতটাই বড় করতে বাধ্য করেছে যে সেগুলি কার্যত ‘‌প্রথাগত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিস্থাপন’‌ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সংস্থাগুলি ‘‌নতুন কর্মচারীদের এমন দক্ষতা প্রদান করে যা সাধারণত বিশ্ববিদ্যালয়ে শেখা উচিত’। [১]   কিন্তু যাঁরা এই নতুন স্কিলিং প্রোগ্রামে নাম নথিভুক্ত করেন না, বা চাকরি খুঁজে পেতে এবং প্রদত্ত প্রশিক্ষণের সুবিধা নিতে ব্যর্থ হন, তাঁদের কাজের জন্য প্রয়োজনীয় ডিজিটাল দক্ষতার অভাব একটি অন্ধকার বাস্তবতা। এর একটি আর্থিক খরচ আছে। আজ, ভারতের ডিজিটাল দক্ষতার ব্যবধান জি২০ দেশগুলির মধ্যে সবচেয়ে বেশি করে জিডিপি বৃদ্ধির ঝুঁকি (প্রতি বছর গড়ে  ২.৩ শতাংশ পয়েন্ট) বহন করছে।

বাণিজ্যিক সংস্থাগুলি বর্তমানে প্রযুক্তিগত নকশা, ডিজিটাল গোপনীয়তা, সাইবার নিরাপত্তা, ক্লাউড আর্কিটেকচার ডিজাইন, ইন্টারনেট অফ থিংস (আইওটি)‌, বিগ ডেটা, ডেটা অ্যানালিটিক্স ও ইনফরমেটিক্স, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, ডিপ লার্নিং ও মেশিন লার্নিং সম্পর্কিত প্রযুক্তিগত দক্ষতা ও জ্ঞানের জন্য বড় ধরনের চাহিদার প্রত্যাশা করছে৷

মোটের উপর, ভারতের ডিজিটাল দক্ষতায়ন কর্মসূচিগুলিকে প্রযুক্তির ক্ষেত্রে উদীয়মান অগ্রাধিকার ক্ষেত্রগুলির জন্য আরও বেশি সংবেদনশীল হতে হবে। যা জরুরি তা হল বেসরকারি ক্ষেত্রের সঙ্গে নিয়মিত পরামর্শ করে কোর্স ডিজাইন করা ও বিষয়বস্তু ঠিক করা, এবং  তা শুধু পাঠক্রম বহির্ভূত দক্ষতা কর্মসূচির জন্য নয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠক্রমের জন্যও। বাণিজ্যিক সংস্থাগুলি বর্তমানে প্রযুক্তিগত নকশা, ডিজিটাল গোপনীয়তা, সাইবার নিরাপত্তা,  ক্লাউড আর্কিটেকচার ডিজাইন, ইন্টারনেট অফ থিংস (আইওটি)‌, বিগ ডেটা, ডেটা অ্যানালিটিক্স ও ইনফরমেটিক্স, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, ডিপ লার্নিং ও মেশিন লার্নিং সম্পর্কিত প্রযুক্তিগত দক্ষতা ও জ্ঞানের জন্য বড় ধরনের চাহিদার প্রত্যাশা করছে৷ দক্ষতায়ন উদ্যোগগুলিকে অবশ্যই এই চাহিদাগুলি পূরণের সমাধান জরুরিভাবে করতে হবে, এবং তরুণদের মধ্যে দক্ষতার সঙ্কট কাটিয়ে তোলার ব্যবস্থা করতে হবে।

প্রযুক্তিগত দক্ষতার পাশাপাশি মূল মানবকেন্দ্রিক বৈশিষ্ট্যগুলিও বিকশিত করা প্রয়োজন। যেমন ক্লাউস শোয়াব তাঁর ক্লাসিক দ্য ফোর্থ ইন্ডাস্ট্রিয়াল রেভল্যুশন–এ উল্লেখ করেছেন, ‘‌এমন দক্ষতার জন্য ‌চাহিদা বাড়বে যা প্রযুক্তিগত সিস্টেমের পাশাপাশি কর্মীদের পরিকল্পনা, নির্মাণ ও কাজ করতে বা এই প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনগুলির শূন্যস্থান পূরণ করতে সক্ষম করে’‌।[২] ভারতের অভিজ্ঞতাও এর সাক্ষী, যেখানে ডিজিটাল দক্ষতা সংক্রান্ত প্রতিবেদনে ক্রমাগতভাবে সৃজনশীলতা, সামাজিক বুদ্ধিমত্তা, দলবদ্ধতা, অভিযোজনযোগ্যতা এবং কর্মীদের মধ্যে উচ্চতর যোগাযোগ দক্ষতার মতো গুণাবলির আহ্বান জানানো হয়।

দক্ষতা উন্নয়ন কর্মসূচির কিছু বৈশিষ্ট্য বিশেষভাবে তরুণদের কাছে আকর্ষণীয়। তরুণ ভারতীয়রা একটি শংসাপত্র পেতে আগ্রহী—একটি প্রমাণপত্র যা তারা আনুষ্ঠানিকভাবে প্রদর্শন করতে পারে। তারা পছন্দ করে দুই সপ্তাহ থেকে ছয় মাসের নিবিড় শিক্ষণ কর্মসূচি, যা অনলাইন এবং ক্লাসরুমের উপাদানগুলিকে একত্রিত করে। বেশিরভাগ যুবক–যুবতী এমন উদ্যোগকে অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা বলেছে যা ক্ষতিপূরণ প্রদান করে, যেমন স্টাইপেন্ড, এবং সেই সঙ্গে একটি বেসরকারি সংস্থা থেকে একটি প্রমাণপত্রও তারা প্রয়োজনীয় বলে মনে করে। তবে তরুণদের প্রধান বাধা হল উপলব্ধ সুযোগ সম্পর্কে সচেতনতার অভাব, এবং এমন ধারণা যে বিদ্যমান কর্মসূচিগুলি তাদের প্রশিক্ষণের চাহিদা পূরণ করতে পারে না।

২০২২ সালের জুনে এম এস ডি ই দ্বারা চালু করা উদীয়মান প্রযুক্তি সংক্রান্ত কর্মসূচিকে যুবরা এমন একটি ‘‌আদর্শ’‌ দক্ষতায়ন উদ্যোগ বলে মনে করে যা তাদের কাঙ্খিত মানদণ্ড অনেকটা পূরণ করে। এই ধরনের আরও উদ্যোগ প্রণয়ন করা এবং জোরালোভাবে প্রচার করা প্রয়োজন। ডিজিটালভাবে দক্ষ কর্মীদের জাতীয় চাহিদা ২০২৫ সালের মধ্যে নয় গুণ বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে—এটি তরুণ ভারতকে অগ্রাধিকার দেওয়া এবং ভবিষ্যতের জন্য সজ্জিত করার এমন একটি সুযোগ যা হাতছাড়া করা যায় না।


[১] ভিভান মারওয়াহা, হোয়াট মিলেনিয়ালস ওয়ান্ট: ডিকোডিং দি ওয়র্ল্ডস লার্জেস্ট জেনারেশন (‌নিউ দিল্লি: পেঙ্গুইন ভাইকিং, ২০২১), পৃ ৩৭–৮
[২] ক্লাউস শোয়াব, দ্য ফোর্থ ইন্ডাস্ট্রিয়াল রেভলিউশন (লন্ডন: পোর্টফোলিও, ২০১৭)

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.

Authors

Anirban Sarma

Anirban Sarma

Anirban Sarma is Director of the Digital Societies Initiative at Observer Research Foundation (ORF). He is presently a Lead Co-Chair of the Think20 Brazil Task ...

Read More +
Basu Chandola

Basu Chandola

Basu Chandola is an Associate Fellow. His areas of research include competition law, interface of intellectual property rights and competition law, and tech policy. Basu has ...

Read More +