Expert Speak India Matters
Published on Sep 27, 2022 Updated 5 Days ago

আমরা যখন আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস উদযাপন করছি, সেই সময় আমরা জাতীয় শিক্ষানীতির বিধান পরীক্ষা করতে পারি এবং দেখতে পারি যে এন ই পি সর্বজনীন সাক্ষরতা অর্জনের প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে পারবে কি না।

এন ই পি ২০২০: ভারতে ২০৪৭ সালের মধ্যে সর্বজনীন সাক্ষরতা অর্জন
এন ই পি ২০২০: ভারতে ২০৪৭ সালের মধ্যে সর্বজনীন সাক্ষরতা অর্জন

ভারতে সর্বজনীন সাক্ষরতা অর্জনের অতীত প্রয়াসের উপর ভিত্তি করে নতুন নির্মাণের জন্য প্রণীত জাতীয় শিক্ষা নীতি (এন ই পি) ২০২০ –র বিধানগুলি পর্যালোচনা করার একটি উপযুক্ত সময় হল আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস ২০২২। ১৯৮৮ সালে চালু করা ন্যাশনাল লিটারেসি মিশন (‌জাতীয় সাক্ষরতা মিশন)‌, যা এখন সাক্ষর ভারত প্রোগ্রাম (এস বি পি) নামে পরিচিত এবং জাতীয় সাক্ষরতা মিশন কর্তৃপক্ষ দ্বারা পরিচালিত, তা প্রশংসনীয় অগ্রগতি করেছে। স্বাধীনতার পর থেকে গড় সাক্ষরতার হার ১৯৫১ সালের মাত্র ১৮.৩৩ শতাংশ থেকে ২০১১ সালের জনগণনা অনুযায়ী বেড়ে হয়েছে ৭৪.০৪ শতাংশ। তা সত্ত্বেও, ভারত এখনও সবচেয়ে বেশি সংখ্যক নিরক্ষর মানুষের দেশ হিসাবে থেকে গেছে, এবং ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুসারে এই সংখ্যাটি প্রায় ২৮৭ মিলিয়ন।

জাতীয় সাক্ষরতা মিশন

ন্যাশনাল লিটারেসি মিশন (এন এল এম) সাক্ষরতাকে ‘‌পড়া, লেখা এবং পাটিগণিতের দক্ষতা অর্জন এবং দৈনন্দিন জীবনে এগুলি প্রয়োগ করার ক্ষমতা’‌ হিসাবে সংজ্ঞায়িত করে। মিশন নথি অনুসারে, ‘‌কার্যকরীভাবে সাক্ষর’‌ বলতে বোঝায় (১) থ্রি আরস অর্থাৎ পড়া, লেখা ও পাটিগণিতে আত্মনির্ভরশীলতা, (২) বঞ্চনার কারণ সম্পর্কে সচেতনতা এবং উন্নয়নের প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে উন্নতির দিকে এগিয়ে যাওয়ার ক্ষমতা, (৩) অর্থনৈতিক অবস্থা এবং সাধারণ অবস্থার উন্নতির জন্য দক্ষতা অর্জন, (৪) জাতীয় সংহতি, পরিবেশ সংরক্ষণ, নারীর সমতা, ছোট পারিবারিক নিয়ম পালনের মতো মূল্যবোধগুলিকে আত্মস্থ করা। ইউনেস্কোও এখন প্রচলিত সংজ্ঞার বাইরে চলে গেছে এবং সাক্ষরতাকে ‘ক্রমবর্ধমান ডিজিটাল, পাঠের আত্মস্থতানির্ভর, তথ্যসমৃদ্ধ ও দ্রুত পরিবর্তনশীল বিশ্বে সনাক্তকরণ, বোঝাপড়া, ব্যাখ্যা, সৃষ্টি ও যোগাযোগের একটি মাধ্যম’‌ হিসাবে গণ্য করছে। এন ই পি ২০২০–ও এই পথেরই অনুসারী।

প্রায় ২৪ মিলিয়ন শিক্ষার্থী, যার মধ্যে হিসাবমতো ১১ মিলিয়ন কমবয়সী মেয়ে বা যুবতী, তারা অতিমারির কারণে আর প্রথাগত শিক্ষায় ফিরে না–ও যেতে পারে।

১৯৯১ সালের ভারতীয় জনগণনায় সাক্ষরতার একটি কার্যকরী সংজ্ঞা হল সাত বছর বয়সের বেশি জনসংখ্যার শতাংশ হিসাবে ওই বয়সী সাক্ষর ব্যক্তির সংখ্যা। জাতীয় নমুনা সমীক্ষা ৭৫ তম রাউন্ডের (জুলাই ২০১৭– জুন ২০১৮), যেখানে শুধু ৭ থেকে ৩৫ বছর বয়সী ব্যক্তিদের সমীক্ষা করা হয়েছে, হিসাব অনুযায়ী এই বয়সের গড় সাক্ষরতার হার ৭৭.৭ শতাংশ। এর মধ্যে একটি বৃহৎ গ্রামীণ–শহুরে বিভাজন রয়েছে, যার গড় হার যথাক্রমে ৭৩.৫ শতাংশ এবং ৮৭.৭ শতাংশ। পুরুষ ও মহিলাদের মধ্যেও সমানভাবে বড় বিভেদ আছে, এবং গ্রামীণ এলাকায় এই ব্যবধানটি ১৬.৫ শতাংশ ও শহরাঞ্চলে প্রায় ১০ শতাংশ। এই বয়সের গ্রামীণ নারীদের মাত্র ৬৫ শতাংশ সাক্ষর, আর তুলনায় ৮১.৫ শতাংশ গ্রামীণ পুরুষ এবং ৯২.‌২ শতাংশ শহুরে পুরুষ সাক্ষর। এই বিষয়টি সম্পর্কে আমরা অবহিত যে এই তথ্যের মধ্যেও যথেষ্ট ভৌগোলিক বৈচিত্র্য রয়েছে, এবং তা শুধু গ্রামীণ এলাকায় শিক্ষাগত সুযোগ–সুবিধার অভাবের কারণে নয়, বরং বর্ণ ও অন্যান্য বৈষম্যের কারণেও।

আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস ২০২২ উদযাপনের সময় ইউনেস্কো জানিয়েছে যে সারা বিশ্বে প্রায় ৭৭১ মিলিয়ন নিরক্ষর মানুষ আছেন, যাঁদের বেশিরভাগই  নারী, যাঁদের এখনও প্রাথমিক পাঠ ও লেখার দক্ষতার অভাব রয়েছে, এবং যাঁরা বর্ধিত দুর্বলতার সম্মুখীন। প্রায় ২৪ মিলিয়ন শিক্ষার্থী, যার মধ্যে হিসাবমতো ১১ মিলিয়ন  কমবয়সী মেয়ে বা সদ্য–যুবতী, তারা অতিমারির কারণে আর প্রথাগত শিক্ষায়  ফিরে না–ও যেতে পারে। আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস ২০২২–এর জন্য নির্বাচিত থিম ‘ট্রান্সফর্মিং লিটারেসি লার্নিং স্পেসেস’ হল সাক্ষরতা প্রদানের স্থানগুলির মৌলিক গুরুত্ব অনুধাবন করে স্থিতিস্থাপকতা তৈরি করা এবং সকলের জন্য মানসম্মত, ন্যায়সঙ্গত ও অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে পুনর্বিবেচনার একটি সুযোগ। ইউনেস্কোর ঘোষণায় আরও বলা হয়েছে যে কেউ যাতে বাদ না–পড়েন, তা নিশ্চিত করার জন্য আমাদের ‘‌একটি সমন্বিত পদ্ধতির মাধ্যমে বিদ্যমান শিক্ষার স্থানগুলিকে সমৃদ্ধ ও রূপান্তরিত করতে হবে, এবং আজীবন শিক্ষার ধারণার পরিপ্রেক্ষিতে সাক্ষরতা সংক্রান্ত শিক্ষাকে সক্ষম করে তুলতে হবে’।

ইউনেস্কোর এই পর্যবেক্ষণগুলি এন ই পি–২০২০র সঙ্গে অত্যন্ত ভালভাবে সংযুক্ত, যার কেন্দ্রীয় থিম ‘‌সকলের জন্য মানসম্পন্ন শিক্ষায় ন্যায়সঙ্গত এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবেশাধিকার’‌, আর উচ্চাকাঙ্ক্ষী লক্ষ্য হল সর্বজনীন সাক্ষরতা অর্জন। এন ই পি–২০২০র প্রধান সুপারিশগুলির মধ্যে একটি হল স্কুল কমপ্লেক্স তৈরি করা, অর্থাৎ এমন জায়গা তৈরি করা যা এতটাই ভালভাবে সম্পদায়িত যে বেশ কয়েকটি স্কুল তা ভাগ করে নিতে পারে এবং স্কুলের সময়ের পরে তরুণ ও প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য এই একই জায়গা এবং সংস্থানগুলি উপলব্ধ হয়। নীতি নথিতে বলা হয়েছে যে সমস্ত সম্প্রদায় এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান—স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় এবং পাবলিক লাইব্রেরিগুলি—শক্তিশালী এবং আধুনিক করা হবে, যাতে প্রতিবন্ধী ও ভিন্নভাবে সক্ষম ব্যক্তি ও অন্য সমস্ত পড়ুয়াদের চাহিদা ও আগ্রহ পূরণের জন্য  উপযুক্ত বইয়ের পর্যাপ্ত সরবরাহ নিশ্চিত করা যায়।  এন ই পি–২০২০র অন্য পদক্ষেপগুলির মধ্যে রয়েছে সমস্ত বিদ্যমান গ্রন্থাগারগুলিকে শক্তিশালী করা, গ্রামীণ লাইব্রেরি এবং সুবিধাবঞ্চিত অঞ্চলে রিডিং রুম স্থাপন করা, ভারতীয় ভাষায় পড়ার সামগ্রীকে আকর্ষণীয় করা এবং ব্যাপকভাবে উপলব্ধ করা, শিশুদের জন্য গ্রন্থাগার ও মোবাইল লাইব্রেরি খোলা, দেশজুড়ে সমস্ত বিষয়ের বই নিয়ে বুক ক্লাব তৈরি করা, এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও গ্রন্থাগারগুলির মধ্যে বৃহত্তর সহযোগিতা তৈরি করা। সমস্ত স্থান যা ভাগ করে ব্যবহার করা হবে—স্কুল, স্কুল কমপ্লেক্স, পাবলিক লাইব্রেরি, বিশেষ উদ্দেশ্যের প্রাপ্তবয়স্ক শিক্ষা কেন্দ্র ইত্যাদি—তা সবই আইসিটি–সজ্জিত হবে, এবং জনসম্প্রদায়ের সম্পৃক্ততা ও সমৃদ্ধকরণ কার্যক্রমের জন্য ব্যবহার করা হবে। প্রাপ্তবয়স্কদের শিক্ষার জন্য অ্যাপস, অনলাইন কোর্স/মডিউল, স্যাটেলাইট–ভিত্তিক টিভি চ্যানেল, অনলাইন বই, আইসিটি–সজ্জিত লাইব্রেরি এবং প্রাপ্তবয়স্ক শিক্ষা কেন্দ্রে প্রযুক্তিভিত্তিক বিকল্পগুলি তৈরি করা হবে। এই উন্নতিগুলি মানসম্পন্ন প্রাপ্তবয়স্ক শিক্ষাকে অনলাইন বা মিশ্রিত মোডে নিয়ে যেতে পারবে৷

এন ই পি–২০২০র প্রধান সুপারিশগুলির মধ্যে একটি হল স্কুল কমপ্লেক্স তৈরি করা, অর্থাৎ এমন জায়গা তৈরি করা যা এতটাই ভালভাবে সম্পদায়িত যে বেশ কয়েকটি স্কুল তা ভাগ করে নিতে পারে এবং স্কুলের সময়ের পরে তরুণ ও প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য এই একই জায়গা এবং সংস্থানগুলি উপলব্ধ হয়।

প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য শিক্ষা

অতীতে সর্বজনীন সাক্ষরতার হার অর্জনের জন্য জাতীয় সাক্ষরতা মিশন (‌এন এল এম)‌ এবং সর্বশিক্ষা অভিযান (এস এস এ) সরকারের প্রাথমিক বাহন ছিল। এন ই পি সব বয়সের ক্ষেত্র জুড়ে,অর্থাৎ ছোট বাচ্চাদের পাশাপাশি যুবক ও প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য শিক্ষার সুযোগের অভাবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে। উদাহরণস্বরূপ, এটি ৩–৬ বছর বয়সী শিশুদের আনুষ্ঠানিক শিক্ষার অন্তর্ভুক্ত করেছে এবং প্রতিটি শিশুর আট বছর বয়সের মধ্যে মৌলিক সাক্ষরতা এবং সংখ্যাজ্ঞান (এফ এল এন) অর্জনের উপর যথেষ্ট জোর দিয়েছে। প্রারম্ভিক শৈশব যত্ন এবং শিক্ষার (ই সি সি ই)‌ উপরেও এতে সমানভাবে জোর দেওয়া হয়েছে, এবং ১২ শ্রেণি পর্যন্ত সমস্ত শিশু যাতে স্কুলে থাকে তা নিশ্চিত করার জন্য অনেকগুলি সুপারিশ রয়েছে যাতে স্কুলছুটের দুর্ভোগ সম্পূর্ণভাবে কাটিয়ে ওঠা যেতে পারে। এই নিবন্ধে আমরা বয়স্ক শিক্ষার উপর ফোকাস করেছি।

এন ই পি ২০২০–তে বলা হয়েছে, ভারতে এবং সারা বিশ্বে বিস্তৃত ফিল্ড স্টাডিজ ও বিশ্লেষণগুলি স্পষ্টভাবে প্রমাণ করে যে স্বেচ্ছাসেবকদের এগিয়ে আসা, জনসম্প্রদায়ের সম্পৃক্ততা এবং সক্রিয়তা প্রাপ্তবয়স্ক সাক্ষরতা কর্মসূচির সাফল্যের মূল কারণ। তার সঙ্গে প্রয়োজন রাজনৈতিক ইচ্ছা, সাংগঠনিক কাঠামো, সঠিক পরিকল্পনা, পর্যাপ্ত আর্থিক সহায়তা, এবং শিক্ষাবিদ ও স্বেচ্ছাসেবকদের উচ্চ মানে নিয়ে যাওয়া। নথিতে বলা হয়েছে যে বয়স্ক শিক্ষায় জনসম্প্রদায়ের সদস্যদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার জন্য সমস্ত প্রচেষ্টা চালানো হবে। নথিভুক্ত নন এমন পড়ুয়াদের এবং স্কুলছুটদের খুঁজে বার করা এবং তাঁদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার জন্য তাঁদের এলাকায় থাকা সমাজকর্মী/কাউন্সেলরদের অনুরোধ করা হবে, এবং সেই সঙ্গেই তাঁদের বলা হবে অভিভাবক, কিশোর–কিশোরী ও প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে শিক্ষার সুযোগ নিতে ও প্রসারে আগ্রহী অন্যদের সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করার জন্য, যাঁদের মধ্যে শিক্ষার্থী ও শিক্ষক/শিক্ষিকা উভয়েই থাকবেন। তারপরে তাঁরা এই প্রার্থীদের স্থানীয় প্রাপ্তবয়স্ক শিক্ষা কেন্দ্রের সঙ্গে সংযুক্ত করবেন। প্রাপ্তবয়স্ক শিক্ষার সুযোগগুলিও বিজ্ঞাপন ও ঘোষণা, এবং এনজিও ও অন্যান্য স্থানীয় সংস্থার ইভেন্ট ও উদ্যোগের মাধ্যমে ব্যাপকভাবে প্রচার করা হবে।

প্রশিক্ষক/শিক্ষকদের নিয়োগ করা ও প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে জাতীয়, রাজ্য, ও জেলাস্তরের সংস্থান সহায়তা প্রতিষ্ঠানগুলিতে, এবং তাঁদের প্রশিক্ষিত করা হবে বিশেষভাবে তৈরি করা বয়স্ক শিক্ষা কেন্দ্রে শেখানোর ক্রিয়াকলাপ সংগঠিত করার জন্য এবং সেইসঙ্গে স্বেচ্ছাসেবক প্রশিক্ষকদের সঙ্গে সমন্বয়সাধনের জন্য।

এন ই পি বাস্তবায়নের একটি কেন্দ্রীয় দিক হল নতুন জাতীয় পাঠক্রম কাঠামো (এন সি এফ) তৈরির কাজ, যা বর্তমানে চলছে। যে চারটি পাঠক্রম কাঠামো প্রস্তুত করা হচ্ছে, তার মধ্যে একটি হল অনন্য প্রাপ্তবয়স্ক শিক্ষা পাঠক্রম কাঠামো৷ এন ই পি ২০২০ নথিতে বলা হয়েছে যে প্রাপ্তবয়স্ক শিক্ষার পাঠক্রম কাঠামোতে কমপক্ষে পাঁচ ধরনের কর্মসূচি অন্তর্ভুক্ত থাকবে, এবং এর প্রতিটিতে স্পষ্টভাবে সংজ্ঞায়িত ফলাফল থাকবে: (ক) মৌলিক সাক্ষরতা এবং সংখ্যাজ্ঞান; (খ) গুরুত্বপূর্ণ জীবন দক্ষতা (আর্থিক সাক্ষরতা, ডিজিটাল সাক্ষরতা, বাণিজ্যিক দক্ষতা, স্বাস্থ্যসেবা ও সচেতনতা, শিশুর যত্ন ও শিক্ষা এবং পরিবার কল্যাণ সহ); (গ) বৃত্তিমূলক দক্ষতা উন্নয়ন (স্থানীয় কর্মসংস্থান অর্জনের লক্ষ্যে); (ঘ) প্রাথমিক শিক্ষা (প্রস্তুতিমূলক, মধ্যবর্তী ও মাধ্যমিক পর্যায়ের তুল্যতা সহ); এবং (ঙ) অবিরত শিক্ষা (কলা, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, সংস্কৃতি, খেলাধুলা ও বিনোদনে সম্পৃক্ত সামগ্রিক প্রাপ্তবয়স্ক শিক্ষা কোর্স সহ, এবং সেই সঙ্গে স্থানীয় শিক্ষার্থীদের জন্য আগ্রহ বা ব্যবহারের অন্যান্য বিষয়, যেমন গুরুত্বপূর্ণ জীবন দক্ষতার উপর আরও উন্নত উপাদান)। আগামী বছরের মধ্যে কাঠামো প্রস্তুত হয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

এন ই পি ২০২০–র সুপারিশ হল প্রাপ্তবয়স্কদের শিক্ষা পাঠক্রম কাঠামোটি এই সত্যটি মাথায় রেখে প্রস্তুত করা হবে যে প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে শিশুদের জন্য পরিকল্পিত পদ্ধতির চেয়ে ভিন্ন শিক্ষার পদ্ধতি এবং উপকরণের প্রয়োজন হবে, এবং প্রশিক্ষক/শিক্ষকেরা এই উদ্দেশ্যে বিশেষভাবে প্রশিক্ষিত হবেন। প্রশিক্ষক/শিক্ষকদের নিয়োগ করা ও প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে জাতীয়, রাজ্য, ও জেলাস্তরের সংস্থান সহায়তা প্রতিষ্ঠানগুলিতে, এবং তাঁদের প্রশিক্ষিত করা হবে বিশেষভাবে তৈরি করা বয়স্ক শিক্ষা কেন্দ্রে শেখানোর ক্রিয়াকলাপ সংগঠিত করার জন্য এবং সেই সঙ্গে স্বেচ্ছাসেবক প্রশিক্ষকদের সঙ্গে সমন্বয়সাধনের জন্য। প্রতিটি এইচ ই আই মিশনের অংশ হিসাবে এইচ ই আই–এর কিছু সদস্য সহ যোগ্য জনসম্প্রদায়ের সদস্যদের উৎসাহিত করা হবে এবং স্বাগত জানানো হবে নিজেদের স্থানীয় সম্প্রদায়ের সঙ্গে জড়িত থাকার জন্য একটি সংক্ষিপ্ত প্রশিক্ষণ কোর্স করতে, এবং স্বেচ্ছাসেবক হিসাবে প্রাপ্তবয়স্ক সাক্ষরতা প্রশিক্ষক বা ব্যক্তিকেন্দ্রিক টিউটর হিসাবে কাজ করার জন্য। তাঁরা দেশের জন্য তাঁদের গুরুত্বপূর্ণ সেবার স্বীকৃতি পাবেন। জাতীয় সাক্ষরতা মিশন চলাকালীন সাক্ষরতার হারে ব্যাপক বৃদ্ধির পেছনে প্রচুর পরিমাণে স্বেচ্ছাসেবকদের অংশগ্রহণ ও জনগণের সমর্থনের বড় ভূমিকা ছিল। রাজ্য সরকারগুলিও সাক্ষরতা ও বয়স্ক শিক্ষার লক্ষ্যে আরও বেশি প্রচেষ্টার জন্য এন জি ও এবং জনসম্প্রদায়ের  অন্য সংস্থাগুলির সঙ্গে কাজ করবে বলে আশা করা হচ্ছে৷

সর্বজনীন সাক্ষরতার লক্ষ্য অর্জনের ক্ষেত্রে বাকি ব্যবধান ঘোচানোর মঞ্চটি তৈরি করে দিয়েছে এন ই পি ২০২০। বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে এর প্রবিধানগুলিকে কাজে লাগিয়ে প্রতিশ্রুতি পূরণ করা সম্ভব হয় কি না সেটাই দেখার বিষয়।

মতামত লেখকের নিজস্ব।

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.