Author : Anurag Awasthi

Expert Speak India Matters
Published on Oct 20, 2022 Updated 8 Days ago

ভবিষ্যতের গবেষণা ও উন্নয়ন কেন্দ্র হয়ে ওঠার জন্য ভারতকে তার অর্ধপরিবাহী ক্ষেত্রে নিযুক্ত শ্রমশক্তির দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে নিজের অতুলনীয় প্রতিভার ভাণ্ডারকে কাজে লাগাতে হবে।

চিপ শিল্পে দক্ষতা বৃদ্ধি: মানব সম্পদকে মানব পুঁজিতে রূপান্তরণ
চিপ শিল্পে দক্ষতা বৃদ্ধি: মানব সম্পদকে মানব পুঁজিতে রূপান্তরণ

দক্ষতা বলতে বোঝায় সাধারণত একটি নির্দিষ্ট সময়, শক্তি বা উভয়ের প্রেক্ষিতে অর্জিত ক্ষমতাকে সঠিক ভাবে কাজে লাগিয়ে পূর্ব নির্ধারিত ফলাফলের লক্ষ্যে তৎপর হওয়া। এই বিদ্যমান পালাবদলের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা চিপ-সহ ‘ডিজিটাল বিপ্লব’ এবং ‘ইন্ডাস্ট্রি ৪.০’ সম্পর্কে ব্যাপক আলোচনা হলেও চিপ ডিজাইন এবং উত্পাদনের মূল ভিত্তি আসলে দক্ষতা বিকাশের মধ্যেই নিহিত। এই দক্ষতার ব্যবধান শুধু মাত্র আমাদের দেশের জন্যই নয়, বাকি বিশ্বের জন্যও প্রাসঙ্গিক। এটিকে অনেক সময় ‘প্রতিভার ঘাটতি’ হিসাবেও উল্লেখ করা হয় এবং ক্রমবর্ধমান চাহিদা, ভূ-রাজনৈতিক পরিবর্তন ও অতিমারি পরবর্তী বিশ্বক্রমের নিরিখে এটি একটি চরম বাস্তব। এই গুরুত্বপূর্ণ দিকটিকে সঠিক ভাবে চিহ্নিত করা হয়েছে এবং ভারতের সরকার, শিল্প এবং শিক্ষাক্ষেত্র দ্বারা যথাযথ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে ঘাটতি বাড়ছে এবং অর্থায়ন ও বিনিয়োগের পাশাপাশি এ ক্ষেত্রে বেশ কিছু দীর্ঘমেয়াদি প্রতিকারেরও প্রয়োজন। এই ঘাটতির প্রত্যক্ষ ফলস্বরূপ ভবিষ্যতে শিল্পের বৃদ্ধিতে বিরূপ প্রভাব পড়বে।

অর্ধপরিবাহী এবং ই এস ডি এম-এ দক্ষতা বৃদ্ধি

অর্ধপরিবাহী এবং ই এস ডি এম-এ দক্ষতা বৃদ্ধি এক সর্বাঙ্গীন বোঝাপড়ার দাবি রাখে এবং তাই এটি সাধারণ শংসাপত্র প্রদানের চেয়ে অনেকটাই গুরুত্বপূর্ণ। সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে ঘাটতি বাড়ছে এবং অর্থায়ন ও বিনিয়োগের পাশাপাশি এ ক্ষেত্রে বেশ কিছু দীর্ঘমেয়াদি প্রতিকারেরও প্রয়োজন। এই ঘাটতির প্রত্যক্ষ ফলস্বরূপ ভবিষ্যতে শিল্পের বৃদ্ধিতে বিরূপ প্রভাব পড়বে। বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম স্টার্ট-আপ ইকোসিস্টেম থাকায়, এক বিলিয়নেরও বেশি ভোক্তা পরিকাঠামো-সহ ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের ক্ষেত্রে দ্বিতীয় হওয়ায় এবং বিশ্বব্যাপী শীর্ষ ফিনটেক অ্যাডাপ্টার থাকায় ভারত ভবিষ্যতের একটি ডিজিটাল পাওয়ার হাউস হয়ে ওঠার জন্য আদর্শ। এর ফলে দক্ষতা বৃদ্ধিকেই পাখির চোখ করে ভারত ফ্যাব্রিকেশন প্লান্ট ও যৌগ অর্ধপরিবাহী নির্মাণে অংশ নিয়েছে এবং একটি মজবুত নীতি কাঠামোর ভিত্তিতে ইলেকট্রনিক্স সিস্টেম ডিজাইন অ্যান্ড ম্যানুফ্যাকচারিং (ই এস ডি এম) শিল্পে উচ্চ বৃদ্ধির হারের সুফল লাভ করেছে।

একটি বহুস্তরীয় পন্থা

  • প্রথম স্তরে ইন্ডাস্ট্রিয়াল ট্রেনিং ইনস্টিটিউটে (আই টি আই) কর্মশক্তির দক্ষতা – যা প্রায় সব ক্ষেত্রে দক্ষ কর্মী সরবরাহের বিষয়ে মুখ্য ভূমিকা পালন করেছে – সেটিকে সেমিকন্ডাক্টরস অ্যান্ড কম্পোনেন্টস, কনজিউমার ইলেকট্রনিক্স, তথ্য প্রযুক্তি হার্ডওয়্যার, পি সি বি ডিজাইন, যোগাযোগ এবং সম্প্রচারের পাশাপাশি শিল্প অটোমেশনের বিভিন্ন কোর্সের মাধ্যমে শক্তিশালী করে তোলা দরকার। এই স্তরটি জনশক্তি-নিবিড় এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সংযোগ থাকতে পারে যা কর্পোরেট, শিল্প সমিতি এবং সি এস আর তহবিল দ্বারা অর্থায়ন করা যেতে পারে। এটি নিজেই প্রতিভার আধারের একটি ভিত্তিপ্রস্তর রূপে কাজ করতে পারে, যার মধ্যে অনলাইন অথবা অফলাইন পদ্ধতিতে সুনির্দিষ্ট অথচ প্রগতিশীল পাঠ্যক্রম পড়ানোর সুযোগ করে দেয়। এই স্তরটির মধ্যে অন্তর্নিহিত গতিশীলতা রয়েছে এবং এটি ব্যাপক সংখ্যক মানুষকে দক্ষতা অর্জনের সুযোগ করে দেয় ও এই আধারটিকে ‘ট্রেনিং দ্য ট্রেনার’ কর্মসূচির কাজে ব্যবহার করা যেতে পারে যেখানে প্রশিক্ষিত শ্রমশক্তি নির্বিঘ্নে নতুন প্রবেশকারীদের প্রশিক্ষণের দিকটিতেও সহায়তা করতে পারে। এই ক্ষেত্রে প্রগতিশীল চিন্তাভাবনা এবং কর্মের সুযোগ থাকলেও এর শক্তিকে বহু গুণে বৃদ্ধি করতে কেন্দ্রীয় আন্তঃসমন্বয় ব্যবস্থা কাজ করবে।
  • দ্বিতীয় স্তরটি ইঞ্জিনিয়ারিং বা প্রকৌশলবিদ্যা এবং অন্যান্য বিষয়ের স্নাতক কোর্সগুলিকে অন্তর্ভুক্ত করে, যা শিক্ষার্থীরা প্রায়শই বেছে নেন। প্রতি বছর ১.৫ মিলিয়ন প্রকৌশল বিদ্যায় স্নাতক এবং গত দুই দশকে প্রযুক্তির ব্যাপক বিস্তারের কারণে মাইক্রোইলেক্ট্রনিক্স, ইলেকট্রিক্যাল এবং মেটেরিয়াল ইঞ্জিনিয়ারিং ক্ষেত্রে চাকরির জন্য খুব কম সংখ্যক মানুষই রয়েছেন। এর নেপথ্যে দু’টি প্রধান যুক্তি হল কম্পিউটার বিজ্ঞান এবং সংশ্লিষ্ট শাখাগুলির তুলনায় অন্য শাখাগুলির সচেতনতার অভাব এবং চাকরির বিকল্পগুলির উপলব্ধতা। তাই ই এস ডি এম এবং অর্ধপরিবাহী ক্ষেত্রে দক্ষতার ব্যবধান কমাতে এই দু’টি দিকের মধ্যে সামঞ্জস্য স্থাপন করা গুরুত্বপূর্ণ। নতুন শিক্ষা নীতি হল এমন একটি যুগান্তকারী সংস্কার, যার কেন্দ্রে রয়েছে স্টেম (সায়েন্স, টেকনোলজি, ইঞ্জিনিয়ারিং, ম্যানেজমেন্ট) এবং এটিই ভবিষ্যতে সক্ষমতা বৃদ্ধির পরিচায়ক হবে। স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানের দ্বারা চিপ ডিজাইনের বাস্তব অভিজ্ঞতা-সহ স্নাতক ছাত্রদের জন্য সংক্ষিপ্ত ডিপ্লোমা কোর্সগুলিও এই স্তরের একটি অংশ হতে পারে।
  • তৃতীয় স্তরে রয়েছেন সেই সব মানুষ, যাঁদের স্পেশ্যালাইজেশন / স্নাতকোত্তর ডিগ্রি তেমন যথোপযুক্ত নয় এবং যাঁদের সম্ভাবনাকে জোরদার করতে দক্ষতা ও বিনিয়োগ খাতে নজর দেওয়া প্রয়োজন। শিক্ষাক্ষেত্রে শক্তিশালী সংযোগ তৈরির জন্য এটি গুরুত্বপূর্ণ যা পরবর্তী দশকে পরামর্শ দান এবং অত্যাধুনিক গবেষণা ও উন্নয়ন সুবিধা প্রদান করবে। এই স্তরটির বিশেষ অর্থায়নের পাশাপাশি ভারতে পড়াশোনা করতে আগ্রহী ছাত্রছাত্রীদের পরিসর ও পরিকাঠামো সুরক্ষিত করার জন্য একটি কার্যকর বাস্তুতন্ত্র গড়ে তোলা প্রয়োজন।
  • চতুর্থ স্তরটি ভারতকে গবেষণা ও উন্নয়ন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার দিকটির উপর নজর দেবে। কারণ রাসায়নিক ও উপকরণের পরিপ্রেক্ষিতে বৈশ্বিক সরবরাহ শৃঙ্খলে যুক্ত হওয়ার ক্ষমতার পাশাপাশি বিন্যাস এবং সক্ষমতার ক্ষেত্রে ভারতের বহু বছরের অভিজ্ঞতা রয়েছে। এর আওতায় পড়বে বিশ্বমানের পরীক্ষাগার, যেগুলিকে বিদ্যমান পরীক্ষাগারের উপর তৈরি করে অথবা পাশাপাশি বিকল্প হিসেবে দে নোভো বা নতুন পদ্ধতি অনুসরণ করে গড়ে তোলা যেতে পারে। আমাদের নিজস্ব প্রশিক্ষণের জন্য আন্তর্জাতিক বিশ্বস্ত অংশীদার দেশগুলির প্রতিভার ভাণ্ডারকে কাজে লাগানোর উপায়টিও খতিয়ে দেখা যেতে পারে। একটি সর্বাঙ্গীন খরচ ও সুবিধা বিশ্লেষণের পরে শিল্প ক্ষেত্রে প্রতিভা বিনিময় বা একটি যৌথ কর্মশক্তি উন্নয়ন উদ্যোগের কথাও ভাবা যেতে পারে।

ভবিষ্যতে সঙ্কটের সময়ে কিছু জাতি-রাষ্ট্র অর্ধপরিবাহী ক্ষেত্রে প্রশিক্ষিত শ্রমশক্তির একটি কৃত্রিম ঘাটতির প্রচার চালাতে পারে যা তাদের নিজস্ব দক্ষ শ্রমশক্তির মূল্য বৃদ্ধি করবে।

ভবিষ্যতের শক্তি সমীকরণ

পৃথিবী প্রতিনিয়ত পাল্টাচ্ছে। অতিমারি চলাকালীন গতিশীল টিকা সরবরাহ শৃঙ্খলটি প্রমাণ করেছে যে, সুদক্ষ শ্রমশক্তি চাহিদা প্রবল এবং তা অর্জনের জন্য মূল্য চোকাতে হবে। ভবিষ্যতে সঙ্কটের সময়ে কিছু জাতি-রাষ্ট্র অর্ধপরিবাহী ক্ষেত্রে প্রশিক্ষিত শ্রমশক্তির একটি কৃত্রিম ঘাটতির প্রচার চালাতে পারে যা তাদের নিজস্ব দক্ষ শ্রমশক্তির মূল্য বৃদ্ধি করবে। একই রকম ভাবে কয়েকটি জাতি-রাষ্ট্র তাদের নিজস্ব কর্মসূচি এবং স্বার্থকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে দক্ষ শ্রমশক্তিকে ব্যবহার করতে পারে। উদ্দেশ্য রাতারাতি বদলে গেলেও ক্ষমতা তৈরি করতে অনেক সময় লাগে।

ভারত বর্তমানে ভবিষ্যতের একগুচ্ছ অ্যাপ্লিকেশনের জন্য বৈচিত্র্যময় পণ্যসামগ্রী উত্পাদনের মাত্রা এবং গতির এক আনতিবিন্দুতে দাঁড়িয়ে আছে। অতএব ইলেকট্রনিক্স, চিপ ডিজাইন এবং উৎপাদন ক্ষেত্রের নিরিখে অত্যন্ত দক্ষ শ্রমশক্তির জন্য একটি শক্তিশালী বাস্তুতন্ত্র গড়ে তোলা অপরিহার্য। কর্মশক্তির দক্ষতা বৃদ্ধিই ‘আত্মনির্ভর ভারত’-এর কেন্দ্রবিন্দু।

মতামত লেখকের নিজস্ব।

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.