Expert Speak India Matters
Published on Feb 25, 2022 Updated 12 Hours ago

উত্তরপ্রদেশে নির্বাচন পরিচয়ভিত্তিক রাজনীতির কেন্দ্রিকতা শক্তিশালী করছে, কারণ দলগুলি বিভিন্ন গোষ্ঠীর কাছে পৌঁছনোর কৌশল কাজে লাগাচ্ছে।

উত্তরপ্রদেশ বিধানসভা নির্বাচন: পরিচয়ভিত্তিক রাজনীতির ধাঁধা

Image Source: Ritesh Shukla — Getty

উত্তরপ্রদেশ বিধানসভা নির্বাচন: পরিচয়ভিত্তিক রাজনীতির ধাঁধা

এ বার পাঁচটি রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন, তবে সুস্পষ্ট কারণে উত্তরপ্রদেশই সর্বাধিক আগ্রহ তৈরি করেছে৷ ৮০টি লোকসভা আসন থাকায় লখনউকে বাদ দিয়ে দিল্লির মসনদ হাসিল করা সম্ভব নয়। ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) রাজ্যে গত দুটি সাধারণ নির্বাচন (২০১৪ ও ২০১৯) ও ২০১৭ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বড়সড় জয় পেয়েছে। বলা হয় বিজেপি–র এই অসামান্য রাজনৈতিক সাফল্যের পেছনে রয়েছে সফল ‘‌সোশ্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং’‌, যার অর্থ এই সাফল্যের কারিগর উচ্চ বর্ণ, অ-যাদব অন্যান্য অনগ্রসর জাতি (ওবিসি) ও অ-জাটব তফশিলি জাতি (এসসি)‌ নিয়ে একটি বিস্তৃত জাতভিত্তিক জোট গড়া।

বিগত কিছু সপ্তাহে স্বামী প্রসাদ মৌর্য, দারা সিং চৌহান, ধরম সিং সাইনির মতো বিশিষ্ট মন্ত্রী ও বিজেপির অন্য কিছু বিধায়কের প্রস্থান ঘটেছে। এই নেতারা ওবিসি সম্প্রদায়ের, যারা রাজ্যের মোট ভোটারের ৩৯-৪০ শতাংশের মতো।

উত্তরপ্রদেশে ১৯৯০-এর দশকে অল্প দিনের জন্য সাফল্য পাওয়ার পরে গেরুয়া দলটি রাজনৈতিক ভাবে পিছিয়ে পড়েছিল;‌ কিন্তু ২০১৪ সাল থেকে তাদের উত্থান হল একটি বড়সড় শক্তি হিসাবে। প্রধানমন্ত্রী মোদীর জনপ্রিয়তার পাশাপাশি তৈরি হল একটি বিস্তৃত সমর্থনভিত্তি। বিজেপি–র পুনরুত্থান উত্তরপ্রদেশের অন্যান্য প্রধান রাজনৈতিক শক্তিকে, যেমন সমাজবাদী পার্টি (এসপি) ও বহুজন সমাজ পার্টি (বিএসপি)–কে রাজ্যের নির্বাচনী ভূগোলে প্রান্তিক স্থানে ঠেলে দেয়, যদিও তারা তাদের মূল সমর্থন ভিত্তিগুলি—যাদব, মুসলমান ও জাটভ ভোট—ধরে রেখেছিল। কংগ্রেস বছরের পর বছর ধরে রাজ্যে তার রাজনৈতিক স্থান হারিয়ে ভোটের হিসেবে একটি প্রান্তিক শক্তিতে পরিণত হয়েছে। যাই হোক, বিগত কিছু সপ্তাহে স্বামী প্রসাদ মৌর্য, দারা সিং চৌহান, ধরম সিং সাইনির মতো বিশিষ্ট মন্ত্রী ও বিজেপির অন্য কিছু বিধায়কের প্রস্থান ঘটেছে। এই নেতারা ওবিসি সম্প্রদায়ের, যারা রাজ্যের মোট ভোটারের ৩৯-৪০ শতাংশের মতো। চিত্তাকর্ষক ঘটনা হল, এই ধরনের পরিচয়ের রাজনীতি কল্যাণ ও উন্নয়নের গুরুত্বপূর্ণ সংস্থানের সুযোগের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গী ভাবে জড়িত।

‘‌সামাজিক ন্যায়বিচার’‌ রাজনীতির গতিশীলতা

উত্তরপ্রদেশের রাজনীতিতে ১৯৯০-এর দশকের গোড়ার দিকে অনগ্রসর ও প্রান্তিক জাতিগোষ্ঠীগুলির রাজনৈতিক উত্থানের উপর ভিত্তি করে সামাজিক ন্যায়বিচারের আখ্যানের উদয় হয়েছিল। এই ঘটনাটি কয়েকটি দলের উত্থানকে সহজতর করে, যেমন এসপি, যে দলটি যাদব ওবিসি সম্প্রদায়ের সমর্থন পেয়ে থাকে, ও বিএসপি, যার জোরালো প্রভাব আছে দলিতদের, বিশেষ করে জাটবদের মধ্যে। তখন এমন ধারণা তৈরি হতে শুরু করে যে যাদব এবং জাটব সম্প্রদায়গুলি এসপি ও বিএসপি–র শাসনকালে বিরাট ভাবে উপকৃত হয়েছে। কিন্তু এর পাশাপাশি অভিযোগ করা হয় যে অন্য অ-প্রধান ওবিসি ও দলিত মানুষেরা প্রান্তিক হয়ে পড়েছেন, এবং তা অনেক ক্ষুদ্র জাতিকে তাদের নিজস্ব দল গঠন করতে প্ররোচিত করে। তাই বিজেপি–র পক্ষে ২০১৪ সাল থেকে হিন্দুত্ব ও উন্নয়নের মতো অপরিহার্য নির্বাচনী বিষয়গুলিকে ব্যবহারের পাশাপাশি এই ছোট দলগুলির সঙ্গে কৌশলগত জোটের মাধ্যমে অ-প্রধান ওবিসি ও অ-জাটব তফসিলিদের একত্র করা সম্ভব হয়েছিল।

বিশ্লেষকেরা এই ঘটনাকে ক্ষমতাসীন বিজেপি–র প্রতি ওবিসি নেতাদের মোহভঙ্গ, এবং রাজ্যে তার বিস্তৃত সামাজিক জোট অক্ষুণ্ণ রাখতে বিজেপি–র ব্যর্থতার প্রতিফলন হিসেবে দেখছেন।

এই প্রেক্ষাপটেই সম্প্রতি উল্লেখযোগ্য অ-যাদব ওবিসি নেতাদের বিজেপি থেকে অখিলেশ যাদবের নেতৃত্বাধীন এসপি–তে যাওয়া রাজ্যের রাজনৈতিক পরিসর জুড়ে আলোড়ন তুলেছে। এক দিকে, বিশ্লেষকেরা এই ঘটনাকে ক্ষমতাসীন বিজেপি–র প্রতি ওবিসি নেতাদের মোহভঙ্গ এবং রাজ্যে তার বিস্তৃত সামাজিক জোট অক্ষুণ্ণ রাখতে বিজেপি–র ব্যর্থতার প্রতিফলন হিসেবে দেখছেন। অন্য দিকে, বিজেপি ও বিএসপি ছেড়ে আসা ওবিসি নেতারা এই নির্বাচনে এসপি–কে সমর্থন করতে পছন্দ করছেন। এই ঘটনাকে এসপি–র নিজের আরও সহনশীল ও অন্তর্ভুক্তিমূলক ছবি তুলে ধরে অ-যাদব সামাজিক ভিত্তির বাইরে রাজনৈতিক সমর্থনভিত্তি প্রসারের সাফল্য হিসেবে দেখা হচ্ছে। এই ভাবে বিজেপি–র একটি সম্ভাব্য প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে এসপি–র ভাবমূর্তি উজ্জ্বলতর হয়ে উঠেছে।

সম্ভাব্য ওবিসি পুনর্বিন্যাস

ইতিহাস ২০০৭, ২০১২ ও ২০১৭ সালে যথাক্রমে বিএসপি, এসপি ও বিজেপি–র জয়ের পিছনে অ-প্রধান ওবিসি সমর্থনভিত্তির বিশেষ ভূমিকার সাক্ষ্য বহন করে। প্রতিবেদনগুলি বলছে বিজেপি থেকে সাম্প্রতিক দলত্যাগকারীরা—বিশেষ করে স্বামী, রাজভর ও সাইনি, যাঁদের নিজের সম্প্রদায়ের মধ্যে শক্তিশালী সমর্থনভিত্তি রয়েছে— আসন্ন নির্বাচনে বেশ কয়েকটি নির্বাচনী এলাকায় নির্বাচনী গতিশীলতাকে উল্লেখযোগ্য ভাবে প্রভাবিত করতে পারেন৷ ধরে নেওয়া হচ্ছে যে বৈষম্যের অভিযোগে বিজেপি থেকে উল্লেখযোগ্য ওবিসি নেতাদের প্রস্থান কিছু পরিমাণে এমন ‘‌ধারণা’‌ তৈরি করতে পারে যে শাসক দলটি মূলত ‘‌উচ্চ বর্ণের দল’‌। এটা লক্ষণীয় যে কেন্দ্র ও রাজ্য উভয় জায়গার বিজেপি সরকারগুলি ওবিসি নেতাদের মন্ত্রী হিসেবে প্রতিনিধিত্ব দেওয়ার জন্য কিছুটা চেষ্টা করেছে। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষক আসিম আলি বলেছেন এই ধরনের পদক্ষেপগুলি প্রতিনিধিত্বের ক্ষেত্রে নেহাতই ‘বর্ণনামূলক’‌ ছবি তৈরি করে। ওবিসিদের প্রতি বিজেপির বৈষম্যের অভিযোগের কারণ এটা হতে পারে যে দলটি তার শাসনকালে ওবিসি সম্প্রদায়কে ‘‌প্রতীকী’‌‌ ও সেই সঙ্গে ‘‌বস্তুগত ভাবে’‌ প্রতিনিধিত্ব দিতে বা তাদের ক্ষমতায়নে ব্যর্থ হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে যে মন্ত্রী হওয়া সত্ত্বেও ওবিসি নেতাদের প্রশাসনে প্রকৃত কর্তৃত্ব দেওয়া হয়নি, কারণ কর্তৃত্ব ছিল মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের কেন্দ্রীভূত কমান্ড ও তাঁর পছন্দের আমলাদের ‘একচেটিয়া গোষ্ঠী’র হাতে। এই যুক্তিও দেওয়া হয় যে স্থানীয় প্রশাসনের বেশিরভাগ গুরুত্বপূর্ণ পদে উচ্চবর্ণের আধিপত্য ছিল, যাঁরা প্রায়শই ওবিসি মন্ত্রী ও বিধায়কদের উপেক্ষা করার দায়ে অভিযুক্ত হয়েছেন।

ওবিসিদের প্রতি বিজেপির বৈষম্যের অভিযোগের কারণ এটা হতে পারে যে দলটি তার শাসনকালে ওবিসি সম্প্রদায়কে ‘‌প্রতীকী’‌‌ ও সেই সঙ্গে ‘‌বস্তুগত ভাবে’‌ প্রতিনিধিত্ব দিতে বা তাদের ক্ষমতায়নে ব্যর্থ হয়েছে।

বিজেপি–র ওবিসি সমর্থনভিত্তিতে ভাঙন ধরাতে পারে কিছু ইস্যু, যেমন সংরক্ষণের উপ-শ্রেণিকরণের অপূর্ণ প্রতিশ্রুতি; জাতিভিত্তিক জনগণনার বাস্তবায়ন না–করা, এবং অর্থনৈতিক ভাবে দুর্বল অংশের (ইডব্লিউএস)‌ কোটার বাস্তবায়ন, যা উচ্চবর্ণের উন্নতির লক্ষ্যে একটি পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হয়। তা ছাড়া শিক্ষাক্ষেত্রের বেসরকারিকরণ, শিক্ষক নিয়োগে ওবিসি–দের প্রান্তিক প্রতিনিধিত্ব, এবং অনগ্রসর জাতিগুলির বিরুদ্ধে নৃশংসতার বহু সংখ্যক ঘটনা বিজেপি শাসনে ওবিসিদের মধ্যে নিরাপত্তাহীনতা, বস্তুগত বঞ্চনা ও বিশ্বাসঘাতকতার বোধকে আরও বাড়িয়ে তুলে থাকতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। উপরন্তু, এই সম্প্রদায়টির মধ্যে বিচ্ছিন্নতাবোধ তৈরি করতে পারে কৃষকদের দুর্দশা, তিনটি কৃষি আইন (যদিও পরে বাতিল করা হয়েছে), গোহত্যার উপর ইউপি সরকারের নিষেধাজ্ঞা, এবং গোশালার ব্যবস্থাপনা ঠিক না–থাকায় অবাধে বিচরণ করা গবাদি পশুর বেশি করে ক্ষুদ্র কৃষকদের ফসল নষ্ট করা, যে কৃষকদের মধ্যে অনেকেই ওবিসি শ্রেণিভুক্ত। ওবিসি সম্প্রদায়ের এই সব নির্দিষ্ট ক্ষোভ ছাড়াও কোভিড–এর দ্বিতীয় তরঙ্গের সময় অ–ব্যবস্থাপনা, মুদ্রাস্ফীতি, মূল্যবৃদ্ধি ও বেকারত্বের মতো বৃহত্তর বিষয়গুলি এসপি বড় করে তুলে ধরায় বিজেপি সরকার আরও বেশি করে সমস্যায় পড়তে পারে। তা ছাড়া পশ্চিম উত্তরপ্রদেশে জাঠদের সমর্থননির্ভর রাষ্ট্রীয় লোক দল (আরএলডি)–এর মতো ছোট বর্ণভিত্তিক দলগুলির কাছে অখিলেশ যাদবের পৌঁছে যাওয়া, এবং সুহেলদেব ভারতীয় সমাজ পার্টি ও মহান দলের মতো দলগুলির সঙ্গে গাঁটছড়া, এই নির্বাচনে এসপি–কে সুবিধা করে দেওয়ার মতো সামাজিক গোষ্ঠীগুলির ‘রামধনু জোট’ গড়তে সহায়তা করেছে।

উন্নয়নের কেন্দ্রিকতা — হিন্দুত্ব আখ্যান

যদিও রাজ্যে সামাজিক জোটের সম্ভাব্য পুনর্গঠনের ইঙ্গিতগুলি এই নির্বাচনের রাজনৈতিক ফলাফল নির্ণয়ের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে, তা হলেও বিজেপি–র রাজনৈতিক ভাবে লড়াই করার ক্ষমতাকে ছোট করা যাবে না। উল্লেখযোগ্য ঘটনা হল সাত বছর ক্ষমতায় থাকার পরেও সমীক্ষাগুলিতে দেখা যাচ্ছে যে প্রধানমন্ত্রী মোদী রাজ্যে অত্যন্ত জনপ্রিয়। শাসক দল শাসন ও উন্নয়নের আখ্যান জোরালো ভাবে তুলে ধরছে। এসপি ক্ষমতায় থাকার সময় যাদব আধিপত্যের অধীনে আইনশৃঙ্খলা সঙ্কটের অভিযোগের বিপরীতে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের দক্ষ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী হিসেবে ভাবমূর্তি তুলে ধরে বিজেপি এই বার্তা দিতে চাইছে যে তারা দক্ষ শাসন দিতে পারবে। তা ছাড়া, রাজ্য সরকারের অর্থনৈতিক ভাবে দুর্বল অংশগুলির জন্য গৃহীত বেশ কয়েকটি কল্যাণমূলক পদক্ষেপ, যেমন আবাসন, শৌচালয় ও স্বাস্থ্যসেবা বিনামূল্যে বা ভর্তুকি দিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা, এবং কোভিড-এর সময় একটি বড় মাপের খাদ্যশস্য বিতরণ প্রকল্প হাতে নেওয়া, বিজেপির জনপ্রিয়তাকে বাড়িয়ে তুলেছে।

এ ছাড়াও আজমগড়, আলিগড় ও সাহারানপুরে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন, একটি আয়ুষ বিশ্ববিদ্যালয় ও একটি ক্রীড়া বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি করা, এবং পূর্বাঞ্চলে নয়টি মেডিক্যাল কলেজ গড়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে। তা ছাড়া অযোধ্যা, মথুরা ও বারাণসীতে পর্যটন উন্নয়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

গুরুত্বপূর্ণ ভাবে, উত্তরপ্রদেশে কেন্দ্র ও রাজ্য উভয় সরকারই পরিকাঠামোগত উন্নয়নের ক্ষেত্রে বিভিন্ন ভাবে উদ্যোগী হতে শুরু করেছে। গত কয়েক বছরে বেশ কয়েকটি বড় মাপের প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে, যার মধ্যে কয়েকটি সাম্প্রতিক মাসগুলিতে প্রধানমন্ত্রী মোদী উদ্বোধন করেছেন, এবং সেগুলি শেষ করার কাজ বিভিন্ন পর্যায়ে রয়েছে। কিছু বড় প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে নয়ডা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, গোরখপুরের এইমস, কানপুর মেট্রো প্রকল্প, ইউপি ডিফেন্স ইন্ডাস্ট্রিয়াল করিডর, কুশিনগর বিমানবন্দর, হিন্দুস্তান উর্বারক রসায়ন লিমিটেডের সার কারখানা ও বিআরডি মেডিক্যাল কলেজে আইসিএমআর-এর আঞ্চলিক ইউনিট রিজিওনাল মেডিক্যাল রিসার্চ সেন্টার (‌আরএমআরসি)‌–এ একটি হাই-টেক ল্যাবরেটরি তৈরি করা। এ ছাড়াও আজমগড়, আলিগড় ও সাহারানপুরে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন, একটি আয়ুষ বিশ্ববিদ্যালয় ও একটি ক্রীড়া বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি করা, এবং পূর্বাঞ্চলে নয়টি মেডিক্যাল কলেজ গড়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে। তা ছাড়া অযোধ্যা, মথুরা ও বারাণসীতে পর্যটন উন্নয়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সড়ক যোগাযোগের একটি বড় উদ্যোগ হিসেবে ৫৯৪ কিলোমিটার দীর্ঘ গঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে ও ‘পূর্বে (পূর্বাঞ্চল) ও দক্ষিণে (বুন্দেলখণ্ড) ‌প্রায় ৬৪০ কিলোমিটার’‌ এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ শুরু করা হয়েছে। এই উন্নয়নমূলক প্রকল্প এবং কল্যাণমূলক প্রকল্পগুলি জাতভিত্তিক পরিচয়কে অতিক্রম করে বিজেপি–র পক্ষে ভোটারদের সরাসরি সংগঠিত করতে সহায়তা করতে পারে।

২০১৩ সালের মুজফফরনগর দাঙ্গার বিষয়টি বিজেপি–র বার বার ফিরিয়ে আনা, এবং অভিযোগ করা যে এসপি ‘‌মুসলিম তোষণ’‌ নীতি নিয়ে চলে, বিজেপি–র পক্ষে হিন্দু ভোটারদের মেরুকরণ ঘটাতে পারে। এ ছাড়াও, বারাণসীতে কাশী-বিশ্বনাথ করিডরের ঢাক পিটিয়ে উদ্বোধন এবং রাম মন্দির নির্মাণের সূচনা নির্বাচনে হিন্দুত্বভিত্তিক সংঘবদ্ধতার সম্ভাবনাকে পুনরুজ্জীবিত করেছে। এর ফলে ওবিসিদের কিছু অংশও বিজেপি–র প্রতি আস্থা রাখতে পারে, এবং তা ওবিসি নেতাদের সাম্প্রতিক দলত্যাগের কারণে রাজনৈতিক ক্ষতি সীমিত করে দিতে পারে। দলত্যাগ সত্ত্বেও বিজেপি–র নিজস্ব উল্লেখযোগ্য ওবিসি নেতারা এবং বিজেপি–র পশ্চাদপদ বর্ণের রাজনৈতিক সহযোগীরা, যেমন আপনা দল (এস) ও নিষাদ পার্টি, ওবিসি ভোটের কিছু অংশকে ক্ষমতাসীন গেরুয়া দলটির পাশে আটকে রাখতে পারে।

সব মিলিয়ে, উন্নয়নের প্রতিদ্বন্দ্বী আখ্যানের সঙ্গে জড়িত পরিচয়ের রাজনীতির দুটি রূপ উত্তরপ্রদেশের নির্বাচনী মানচিত্রে প্রাধান্য পাবে বলে মনে হচ্ছে। শেষ পর্যন্ত অখিলেশ যাদবের নেতৃত্বে মন্ডল রাজনীতির প্রত্যাবর্তনের চেষ্টা ফলপ্রসূ হয় নাকি হিন্দুত্বের বৃহত্তর আবেদন, যা কল্যাণবাদ ও মেরুকরণকে সযত্নে সম্পৃক্ত করেছে, বিজয়ী হয়ে উপর্যুপরি দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়, তা দেখার জন্য সকলের দৃষ্টি ভোটের দিকে রয়েছে।

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.