Author : Priya Shah

Expert Speak Terra Nova
Published on Nov 25, 2022 Updated 17 Days ago

সরকার, বিনিয়োগকারী, বাণিজ্যিক কর্পোরেশন ও উদ্যোগপতিদের সম্মিলিত প্রচেষ্টা আর অ্যান্ড ডি জলবায়ু প্রযুক্তি স্টার্ট–আপগুলিকে তাদের যুগান্তকারী প্রযুক্তি প্রসারিত করতে এবং কম কার্বন রূপান্তরে অবদান রাখার সুযোগ দেবে।

জলবায়ু প্রযুক্তি উদ্ভাবনে ‌আর অ্যান্ড ডি–র গুরুত্ব
জলবায়ু প্রযুক্তি উদ্ভাবনে ‌আর অ্যান্ড ডি–র গুরুত্ব

এই শতাব্দীর প্রথম দশকের মাঝামাঝি সময়ে প্রথম ক্লিনটেক নিয়ে বিপুল উৎসাহ  তৈরি হতে শুরু করেছিল, যখন বিনিয়োগকারীরা সিলিকন ভ্যালিতে পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি স্টার্ট–আপগুলির (সৌর, বায়ু, জল) উপর বড় ধরনের বাজি ধরেছিল। এই স্টার্ট–আপ ফার্মগুলির মধ্যে অনেকগুলি বিভিন্ন কারণে উঠে গেছে, যেমন চিনা নির্মাতাদের থেকে আসা সস্তা আমদানি থেকে শুরু করে তেল  ও প্রাকৃতিক গ্যাসের দামে বিশাল পতন, যার ফলে ক্লিনটেক পণ্য কম গ্রহণ করা হচ্ছিল। যাই হোক, এই পতনের সবচেয়ে বড় কারণ ছিল ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ফান্ডগুলির দ্রুত লাভের জন্য অবাস্তব প্রত্যাশা, যদিও ডিপ টেক স্টার্ট–আপগুলির (ব্যাটারি, সেল বা প্যানেল নির্মাতারা) গড়ে ওঠা ও আয়তন বৃদ্ধির জন্য অনেক বেশি সময়ের প্রয়োজন হয়। এই অভিজ্ঞতার পরে প্রচুর দীর্ঘমেয়াদি লাভের সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও অনেক বিনিয়োগকারী বছরের পর বছর ধরে এই ক্ষেত্রটিকে এড়িয়ে চলতে থাকে।

যাই হোক, প্রায় দুই দশক পরে, ক্ষেত্রটি একটি প্রত্যাবর্তন দেখেছে, যাকে এখন ‘জলবায়ু প্রযুক্তি’ হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। আকর্ষণীয় বিষয় হল এই নতুন তরঙ্গটি শক্তি বণ্টন, নির্মিত পরিবেশ, গতিশীলতা, ভারী শিল্প, এবং সেই সঙ্গে খাদ্য ও জমির ব্যবহারের মতো বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে কার্বন নির্গমনের উৎস কমানোর লক্ষ্যে কাজ–করা সকল স্টার্ট–আপকে অন্তর্ভুক্ত করে। অতএব, জলবায়ু প্রযুক্তি পরিচ্ছন্ন প্রযুক্তির চেয়ে অনেক বেশি বিস্তৃত একটি ধারণা যা অর্থনীতির একাধিক ক্ষেত্র জুড়ে ডিকার্বনাইজেশনের উপর ফোকাস করে, শুধুমাত্র শক্তি পরিবর্তনের উপর নয়। এটি একটি ইচ্ছাকৃতভাবে বেছে নেওয়া মূলকেন্দ্র, যা অন্তর্নিহিত জটিলতা ও জলবায়ু চ্যালেঞ্জের মাত্রা প্রতিফলিত করে। প্রাইস ওয়াটারহাউস কুপারের স্টেট অফ ক্লাইমেট টেক রিপোর্ট অনুসারে, H2 ২০২০ এবং H1 ২০২১–এর মধ্যে জলবায়ু প্রযুক্তি স্টার্টআপগুলির জন্য ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ফান্ডিংয়ের ৮৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বরাদ্দ করা হয়েছিল।

জলবায়ু প্রযুক্তি পরিচ্ছন্ন প্রযুক্তির চেয়ে অনেক বেশি বিস্তৃত একটি ধারণা যা অর্থনীতির একাধিক ক্ষেত্র জুড়ে ডিকার্বনাইজেশনের উপর ফোকাস করে, শুধুমাত্র শক্তি পরিবর্তনের উপর নয়। এটি একটি ইচ্ছাকৃতভাবে বেছে নেওয়া মূলকেন্দ্র, যা অন্তর্নিহিত জটিলতা ও জলবায়ু চ্যালেঞ্জের মাত্রা প্রতিফলিত করে।

নতুন জলবায়ু প্রযুক্তি তরঙ্গে জলবায়ুতে বিনিয়োগের একটি মৌলিক বৈশিষ্ট্য হল যে এটি ‘‌ঐতিহ্যগত’‌ কম সম্পদভিত্তিক প্রযুক্তিতে বিনিয়োগের থেকে ভিন্ন। এন্টারপ্রাইজ সফ্টওয়্যার অ্যাজ আ সার্ভিস (সাস), প্ল্যাটফর্ম ও মার্কেটপ্লেস মডেলগুলি অবশ্যই হার্ডঅয়্যার বা মিডলঅয়্যার জলবায়ু প্রযুক্তির অতিরিক্ত সফ্টওয়্যার স্তর হিসাবে বিভিন্ন জলবায়ু প্রযুক্তি ক্ষেত্রে প্রযোজ্য;‌ তবে গত ৫ বছরে প্রযুক্তিগত অগ্রগতি—যেমন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, মেশিন লার্নিং, রোবোটিক্স ও ভূ–স্থানিক ডেটা আহরণের সুযোগ—জলবায়ু প্রযুক্তির স্টার্ট–আপগুলিকে দ্রুত বৃদ্ধি পেতে সহায়তা করছে। যাই হোক, কার্বন হ্রাসের বেশিরভাগই ঘটে ভৌত পণ্য, উৎপাদন প্রক্রিয়া ও গভীর বৈজ্ঞানিক উদ্ভাবনের সঙ্গে। অতএব, আর অ্যান্ড ডি–র উপর উল্লেখযোগ্য মনোযোগ দেওয়া প্রয়োজন, কারণ এটি সফল জলবায়ু প্রযুক্তি বিনিয়োগ পোর্টফোলিও তৈরির মূল বিষয়গুলির মধ্যে একটি।

বেশিরভাগ বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি থিসিস তৈরি করা স্থাপনার কৌশল পরিচালনের জন্য অপরিহার্য। থিসিস বিকাশের মধ্যে থাকে শিল্প ম্যাপিং, সরবরাহ ও চাহিদার কারণগুলি বোঝা, নিয়ামক সুবিধা ও প্রতিকূলতা এবং দেশীয় ও বিশ্ব বাজারে প্রতিযোগী বেঞ্চমার্কগুলি ও বাজারের মূল প্রবণতা শনাক্ত করা। কিন্তু জলবায়ু প্রযুক্তির ক্ষেত্রে থিসিস তৈরির অনুশীলনের জন্য আরও গভীরে গিয়ে ডিকার্বনাইজেশনের চালিকাগুলিকে শনাক্ত করতে হবে এবং কোন ধরনের প্রক্রিয়াগুলি ‘সবুজ’ হবে, কম শক্তি বা জল ব্যবহার করবে, এবং উপাদান পুনর্ব্যবহার বা পুনরুজ্জীবনের জন্য বৃত্তাকার লুপ তৈরি করবে তা বুঝতে হবে। অন্য কথায়, এই হার্ডঅয়্যার প্রযুক্তিগুলির জন্য আর অ্যান্ড ডি এবং বিজ্ঞানের গভীরে ডুব দিতে হবে, এবং তারা যে প্রভাব তৈরি করে তার পরিমাপ করতে হবে।

এই দশকে জলবায়ু প্রযুক্তির স্টার্ট–আপগুলির এই দ্বিতীয় তরঙ্গ যাতে বুদ্বুদ না হয়ে যায় তা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে বিনিয়োগকারীরা কিন্তু অন্যতম স্তম্ভ। আর অ্যান্ড ডি উদ্ভাবনকে প্রকৃত অর্থে বিকশিত করার জন্য অ্যাকাডেমিক  বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি শক্তিশালী ভিত্তি থাকা দরকার, যেখানে শিক্ষার্থীদের পণ্য ও প্রোটোটাইপ সংক্রান্ত পরীক্ষা করার জন্য গবেষণাগার, সরঞ্জাম ও অন্যান্য সংস্থান দেওয়া হয়। ভারতে আই আই টি মাদ্রাজের ন্যাশনাল সেন্টার ফর কম্বাশন রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (এন সি সি আর ডি) একটি চমৎকার ইনকিউবেশন ল্যাবের উদাহরণ, যা এই ক্ষেত্রে শিল্পের জন্য উদ্ভাবনী সমাধান তৈরি করতে অ্যারোস্পেস ইঞ্জিনিয়ার, অটোমোটিভ গবেষক এবং তাপবিদ্যুৎ বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে কাজ করে। এছাড়াও ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্স–এর কোর , স্টেম,  ও  টাইম বিভাগগুলি সক্রিয়ভাবে আই পি–নেতৃত্বাধীন স্টার্ট–আপগুলির বাণিজ্যিকীকরণ, এবং তাদের পণ্যবাজার–উপযুক্ত ব্যবসায়িক পরিকল্পনা তৈরি করতে ও কর্পোরেট অংশীদারিত্ব অর্জনে সহায়তা করে। একইভাবে, পুনের ভেঞ্চার সেন্টার হল পদার্থ, রাসায়নিক ও জৈবিক বিজ্ঞান ও প্রকৌশলের জন্য ভারতের বৃহত্তম বিজ্ঞানভিত্তিক ইনকিউবেটর ।

থিসিস বিকাশের মধ্যে থাকে শিল্প ম্যাপিং, সরবরাহ ও চাহিদার কারণগুলি বোঝা, নিয়ামক সুবিধা ও প্রতিকূলতা এবং দেশীয় ও বিশ্ব বাজারে প্রতিযোগী বেঞ্চমার্কগুলি ও বাজারের মূল প্রবণতা শনাক্ত করা।

যাই হোক, ভারতকে এখনও জলবায়ু প্রযুক্তি খাতের জন্য নিবেদিত আর অ্যান্ড ডি এবং গভীরতাসম্পন্ন বিজ্ঞান ইনকিউবেটর তৈরি করতে হবে, এবং শিল্প ও নীতি অংশীদারদের মধ্যে প্রাসঙ্গিক সংযোগ তৈরি করতে হবে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ‘এলিমেন্টাল’ এবং ‘জুলস’ হল দুটি জলবায়ু প্রযুক্তি ইনকিউবেটর, যা গবেষণাগারের উদ্ভাবন বাজারে নিয়ে যায়। তাছাড়া স্ট্যানফোর্ডের সদ্য চালু হওয়া ডোয়ের স্কুল অফ সাসটেনিবিলিটি–র পাশাপাশি কলম্বিয়ার ক্লাইমেট স্কুল এমন গবেষণাগার তৈরি করছে যেখানে বৃহত্তম বৈশ্বিক সংস্থাগুলি নতুন উদ্ভাবনের দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টি রাখে, কারণ তা শেষ পর্যন্ত তাদের মূল্যশৃঙ্খলে গৃহীত হবে। শিল্প নেটওয়ার্ক যেমন গ্রিনটাউন ল্যাবস ও এম আই টি–র ক্লাইমেট কোল্যাব এমন  বহুজাতিক কর্পোরেশনগুলির সঙ্গে অংশীদারিত্বের সুযোগ দেয় যারা বিজ্ঞানভিত্তিক জলবায়ুর প্রতি দায়বদ্ধ।

ভারতে কর্পোরেশনগুলি ইতিমধ্যেই নেট জিরো উত্তরণের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে৷ বি সি জি–র একটি সমীক্ষা অনুসারে, বেদান্ত, জে এস ডব্লিউ গ্রুপ, আদানি ট্রান্সমিশন, আদিত্য বিড়লা গ্রুপ ও মাহিন্দ্রা-সহ  বেশ কয়েকটি ভারতীয় কর্পোরেট হাউস ২০৫০ বা তার আগে নেট জিরো বা কার্বন নিরপেক্ষ হওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এই রূপান্তরগুলি শুধুমাত্র পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি ব্যবস্থা দিয়ে জীবাশ্ম জ্বালানির প্রতিস্থাপনকে অন্তর্ভুক্ত করবে না, সেই সঙ্গেই তাপ পুনরুদ্ধার ব্যবস্থা তৈরি করা, ভবনগুলিতে শক্তি-দক্ষতা বাড়ানো, বর্জ্য পুনর্ব্যবহারযোগ্য করা এবং সরবরাহকারী মূল্য শৃঙ্খলে কার্বন নির্গমন কমানোর কাজও করবে।

গবেষণা ও উন্নয়ন জলবায়ু প্রযুক্তি উদ্ভাবনের কাজটি দ্রুত ত্বরান্বিত করার জন্য কিছু উপাদানের প্রয়োজন: ১) শক্তিশালী উদ্যোক্তা বাস্তুতন্ত্র ও গভীর বিজ্ঞান প্রতিভা; ২) এমন বাণিজ্যিক কর্পোরেশনগুলির এগিয়ে আসা যেগুলি স্থায়িত্বের ক্ষেত্রে নেতৃত্ব দিচ্ছে এবং একটি পরিচ্ছন্ন শক্তি অর্থনীতি সক্ষম করার জন্য পরবর্তী প্রজন্মের প্রযুক্তিগুলিকে একীভূত করতে আগ্রহী; এবং ৩) বেসরকারি ফাউন্ডেশন বা সরকারি প্রকল্প থেকে জনহিতকর অনুদানের আকারে ঝুঁকির মূলধন, প্রোটোটাইপ তৈরি এবং ল্যাব ফান্ডের অর্থায়ন। শেষেরটির ক্ষেত্রে  বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগ (ডি এস টি), বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা বিভাগ (ডি এস আই আর), ও  কাউন্সিল অফ সায়েন্টিফিক অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিসার্চ (সি এস আই আর) হল সরকারি সংস্থাগুলির উদাহরণ, যারা স্টার্ট আপ লালন–পালন করতে পারে এবং তাদের অনুদান পাওয়ার ব্যবস্থা করে দিতে পারে। যদি ভেঞ্চার ক্যাপিটাল বিনিয়োগকারীরা ৫–৭ বছরের প্রচলিত সময়সীমার চেয়ে বেশি সময় ধরে (আদর্শভাবে ৯–১০ বছর বা তারও বেশি) বিনিয়োগে আগ্রহী হয়, এবং সরকার, বিনিয়োগকারী, বাণিজ্যিক কর্পোরেশন ও উদ্যোক্তাদের সম্মিলিত চাপ থাকে, তাহলে কিন্তু আর অ্যান্ড ডি জলবায়ু প্রযুক্তি স্টার্ট–আপগুলির জন্য অনেক বেশি সুযোগ থাকে তাদের যুগান্তকারী প্রযুক্তির প্রসারণে এবং কম–কার্বন পরিবর্তনে অবদান রাখতে।

যাই হোক, ভারতকে এখনও জলবায়ু প্রযুক্তি খাতের জন্য নিবেদিত আর অ্যান্ড ডি এবং গভীরতাসম্পন্ন বিজ্ঞান ইনকিউবেটর তৈরি করতে হবে, এবং শিল্প ও নীতি অংশীদারদের মধ্যে প্রাসঙ্গিক সংযোগ তৈরি করতে হবে।

বিশ্বের বৃহত্তম অ্যাসেট ম্যানেজার, ব্ল্যাকরক–এর সি ই ও ল্যারি ফিঙ্ক বলেছেন, আগামী ১,০০০ ইউনিকর্ন জলবায়ু প্রযুক্তিতে সংযুক্ত থাকবে, যা মূর্ত হবে সবুজ হাইড্রোজেন ইলেক্ট্রোলাইজার, ব্যাটারি রিসাইক্লার, সবুজ বিল্ডিং উপকরণ, নতুন কৃষি ও চক্রাকার খাদ্য ব্যবস্থা, এবং শক্তি সঞ্চয়ের মতো প্রযুক্তি দ্বারা। এই পদক্ষেপের দিকে মূল অংশীদারদের চালিত করার জন্য আমরা সঠিক জায়গায় ও সঠিক সময়ে আছি, এবং জলবায়ু আর অ্যান্ড ডি স্টার্ট–আপগুলিকে আয়তন ও সাফল্যের অনেক বেশি প্রতিষ্ঠিত বাণিজ্যিক পথে তুলে নিয়ে যাচ্ছি।

মতামত লেখকের নিজস্ব।

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.