Author : Preeti Kapuria

Expert Speak Terra Nova
Published on Mar 07, 2022 Updated 1 Days ago

চরম জলবায়ু পরিস্থিতি সত্ত্বেও সময়োপযোগী নীতিগত পদক্ষেপের মাধ্যমে অস্ট্রেলিয়া শুধুমাত্র খাদ্য নিরাপত্তাই অর্জন করেনি, বরং একটি বড় রফতানিকারক দেশ হয়ে উঠেছে।

খরার মধ্যে অস্ট্রেলিয়ার কৃষি: উৎপাদনশীলতার লাভ ও বিশ্ব মূল্য শৃঙ্খলের সঙ্গে একীকরণই বিশ্বব্যাপী প্রতিযোগিতার চাবিকাঠি
খরার মধ্যে অস্ট্রেলিয়ার কৃষি: উৎপাদনশীলতার লাভ ও বিশ্ব মূল্য শৃঙ্খলের সঙ্গে একীকরণই বিশ্বব্যাপী প্রতিযোগিতার চাবিকাঠি

অস্ট্রেলিয়ায় খরার পুনরাবৃত্তি, তাপজনিত দুর্ভোগ, বন্যা ও তাপমাত্রার পরিবর্তনশীলতার মতো চরম জলবায়ু পরিস্থিতি কৃষিজ খাদ্য উৎপাদন ব্যবস্থার জন্য একটি বিশাল চ্যালেঞ্জ। ঐতিহাসিক রেকর্ড থেকে দেখা যায় ১৭০০ খ্রিস্টাব্দের শেষের দিক থেকেই খরাকে কৃষির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করা হচ্ছে। খরা কৃষিকে প্রভাবিত করে ক্রমাগত ফসল ও মজুতের ক্ষতি করে, জল সরবরাহের প্রাপ্যতা হ্রাস করে, মারাত্মক দাবানল, ধুলো ঝড়, ভূমিক্ষয় এবং পরিবেশের অবনতির মাধ্যমে। এই জলবায়ু-সম্পর্কিত প্রভাবগুলি কৃষির জন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীর (‌ইনপুট)‌ সরবরাহ শৃঙ্খলগুলিকে ব্যাহত করে থাকে, বিশেষ করে যেগুলি সার, আগাছানাশক, কীটনাশক, ছত্রাকনাশক, বীজ, যন্ত্রপাতি ও অন্যান্য ইনপুটের সঙ্গে সম্পর্কিত। এই ভাবে ইনপুট অদল–বদলের ফলে খামার-স্তরের উৎপাদনের (‌আউটপুট)‌ পরিবর্তনগুলি বিভিন্ন প্রতিক্রিয়ার মাধ্যমে অস্ট্রেলিয়ার বিতরণ ও সংরক্ষণ, উৎপাদনের বিকল্পগুলি, এবং অন্যান্য কৃষিনির্ভর শিল্পকে প্রভাবিত করেছে। বিশ্বজুড়ে উষ্ণায়নের কারণে খরার চরিত্র পরিবর্তনের সম্ভাবনা উপলব্ধি করে কৃষিতে খরার ধাক্কা সামলানোর প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়াগুলিও বদলে গেছে, এবং জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে যুক্ত ঝুঁকিগুলিকে স্বপ্রণোদিত ভাবে মোকাবিলা করার ক্ষেত্রে কৃষকদের প্রতিরোধ ও অভিযোজনের ক্ষমতা তৈরির উপর অনেক বেশি মনোযোগ দিয়েছে। ১৯৯২ সালে একটি জাতীয় খরা নীতি প্রণয়ন করে সক্রিয় ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে জলবায়ুর প্রভাব প্রশমনের ভার সরাসরি কৃষক সম্প্রদায়কেই দেওয়া হয়েছিল। পরবর্তিকালে ২০১৩ সালের নতুন খরা নীতি পরিবর্তনশীল জলবায়ুতে কৃষকদের সচেতন সিদ্ধান্ত গ্রহণের সুবিধার্থে একটি দেশব্যাপী অভিমুখ নির্ধারণের চেষ্টা করেছিল। এই নতুন নীতির মধ্যে ছিল কৃষি বাণিজ্যের প্রশিক্ষণ ও সমন্বিত ও সহযোগিতামূলক সামাজিক সহায়তা পরিষেবা দেওয়া এবং উন্নততর সরঞ্জাম ও প্রযুক্তির ব্যবস্থা করা, যাতে কৃষকরা জেনে-বুঝে পরিবর্তনশীল জলবায়ু পরিস্থিতিতে উপযুক্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। এই ভাবে এক দিকে যেমন ন্যূনতম সরকারি ভর্তুকি (২ শতাংশের সামান্য বেশি) দিয়েও বিজ্ঞান-ভিত্তিক চাষের মাধ্যমে উৎপাদনশীলতা বাড়ানোর উপর ধারাবাহিক ভাবে নজর রাখা হয়েছে, তেমনই খামারের যন্ত্রপাতির ক্ষেত্রে নতুন নতুন উদ্ভাবন, অত্যাধুনিক উদ্ভিদ ও প্রাণী প্রজনন কর্মসূচি, এবং পরিবহণ সমস্যার বুদ্ধিদীপ্ত সমাধানের মাধ্যমে কৃষি ব্যবসাকে প্রতিযোগী করে তোলার জন্য ক্রমাগত চেষ্টা করা হয়েছে। অস্ট্রেলিয়ায় কৃষি ব্যবসার বৃদ্ধির চাবিকাঠিই হল স্থানীয় ভাবে উন্নত উৎপাদন পদ্ধতি ও প্রযুক্তির ব্যবহার, এবং আন্তর্জাতিক গবেষণা ও উন্নয়ন সহযোগিতা।

প্রতিকূল জলবায়ু পরিস্থিতির বিরুদ্ধে কৃষকদের স্থিতিস্থাপকতা গড়ে তোলার জন্য কৃষি উৎপাদনশীলতার উন্নতিই হল মূল বিষয়। এই উন্নতি এসেছে কাঠামোগত সমন্বয়, পরিবর্তন, খামার-স্তরে জলবায়ু ঝুঁকি সামলানোর জন্য উদ্ভাবন, মানব পুঁজিতে বিনিয়োগ, গবেষণা, উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ (আরডিঅ্যান্ডই),‌ এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভাবে, জলের প্রাপ্যতা ও তার ঠিক মতো ব্যবহার নিশ্চিত করতে অস্ট্রেলিয়ার সরকারের ব্যাপক বিনিয়োগের মাধ্যমে। এই প্র‌য়াসগুলি অস্ট্রেলিয়াকে বিশ্ব বাজারে তার প্রতিযোগী সত্তা বজায় রাখার এবং কৃষক পরিবারগুলিকে আর্থিক ভাবে টেকসই সুযোগ করে দেওয়ার পথ তৈরি করে দিয়েছে।

অস্ট্রেলিয়ার বৈচিত্র্যময় কৃষি, মৎস্য ও বনজ ক্ষেত্র রয়েছে, যা শস্য এবং পশুসম্পদজাত পণ্যের একটি বড় পরিসর তৈরি করে। এর মধ্যে প্রধান হচ্ছে গরুর মাংস, ভেড়া, গম, দুধ, উদ্যানপালন, এবং পশুসম্পদ পণ্য। এই ক্ষেত্রে উৎপাদনের মোট মূল্য ২০০০-০১ সালের প্রায় ৬,২০০ কোটি মার্কিন ডলার থেকে বেড়ে ২০১৯-২০ সালে ৬,৭০০ কোটি মার্কিন ডলার হয়েছে। অস্ট্রেলিয়ায় ভূমির ৫৫ শতাংশ (প্রায় ৪২ কোটি ৭০ লক্ষ হেক্টর) এবং জলের প্রায় ২৫ শতাংশ (২০১৮-১৯ সালের হিসেব অনুযায়ী ৩,১১৩ গিগালিটার) ব্যবহার করে কৃষি। তিন বছরের গড় হিসেবে, ২০১৫-১৬ থেকে ২০১৭-১৮ পর্যন্ত, অস্ট্রেলিয়া মোট উৎপাদন–মূল্যের প্রায় ৭০ শতাংশ রফতানি করেছে। ১৯৮৮ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে অস্ট্রেলিয়ার রফতানির একটি বড় অংশ ছিল কাঁচা পণ্য ও ন্যূনতম রূপান্তরিত পণ্য, প্রধানত মাংস। ২০১৯-২০ সালে অস্ট্রেলিয়ার কৃষি উৎপাদনের মোট মূল্য ছিল প্রায় ৬,১০০ কোটি মার্কিন ডলার, আর কৃষিজ রফতানির মূল্য ছিল ৪,৮০০ কোটি মার্কিন ডলার। অস্ট্রেলিয়ায় রফতানির পরিপ্রেক্ষিতে দুধ, উদ্যানপালন ও শুকরের মাংসের চেয়ে বেশি রফতানিমুখী হল গম ও গরুর মাংস।

প্রতিকূল জলবায়ু পরিস্থিতির বিরুদ্ধে কৃষকদের স্থিতিস্থাপকতা গড়ে তোলার জন্য কৃষি উৎপাদনশীলতার উন্নতিই হল মূল বিষয়। এই উন্নতি এসেছে কাঠামোগত সমন্বয়, পরিবর্তন, খামার-স্তরে জলবায়ু ঝুঁকি সামলানোর জন্য উদ্ভাবন, মানব পুঁজিতে বিনিয়োগ, গবেষণা, উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ (আরডিঅ্যান্ডই),‌ এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভাবে, জলের প্রাপ্যতা ও তার ঠিক মতো ব্যবহার নিশ্চিত করতে অস্ট্রেলিয়ার সরকারের ব্যাপক বিনিয়োগের মাধ্যমে।

তবে এটাই সব নয়;‌ অস্ট্রেলিয়ার কৃষির সারা বিশ্বের মূল্য শৃঙ্খলে বিভিন্ন শিল্পের সঙ্গে পশ্চাৎ ও অগ্রবর্তী সংযোগ রয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার কৃষি উৎপাদনকারীরা বিশ্বব্যাপী প্রতিযোগী পণ্য উৎপাদনের জন্য বিশ্বব্যাপী সরবরাহ শৃঙ্খল ও আমদানিকৃত ইনপুটের উপর নির্ভর করে। যেমন, পশ্চাৎ সংযোগের ক্ষেত্রে নিউজিল্যান্ড ও অন্যান্য দেশ থেকে বিশেষ ধরনের ইনপুটের উপর নির্ভরশীল অস্ট্রেলিয়ার দুগ্ধজাত পণ্য এখন আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতা করছে। অস্ট্রেলিয়ার কৃষি শিল্প বিশ্বব্যাপী খাদ্য মূল্যশৃঙ্খলে একীভূত হওয়ার পর রফতানির ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতামূলক হয়ে ওঠার মাধ্যমে উপকৃত হয়েছে, এবং দেশে কর্মসংস্থান বৃদ্ধিতে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছে। সমগ্র অস্ট্রেলীয় কৃষি সরবরাহ শৃঙ্খলে ১৬ লক্ষ মানুষ কাজ করেন। জলবায়ুর চরম প্রভাব অস্ট্রেলিয়ার কৃষকদের উৎপাদনশীলতা ও মুনাফার অঙ্ককে প্রভাবিত করলেও বিশ্ব মূল্য শৃঙ্খলে একীভূত হওয়ায় অস্ট্রেলিয়া প্রচুর লাভ পাচ্ছে।

১৯১০ সাল থেকে অস্ট্রেলিয়ার জলবায়ু গড়ে ১.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস উষ্ণ হয়েছে এবং ১৯৫০ সাল থেকে এই হার আরও বেড়েছে। দক্ষিণ-পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ায় ১৯৭০ সাল থেকে শীতের মরসুমে বৃষ্টিপাত ২০ শতাংশ এবং দক্ষিণ-পূর্ব অস্ট্রেলিয়ায় ২০০০ সাল থেকে ১২ শতাংশ কমেছে। এর ফলে পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার খামারগুলির ফলনের ক্ষতির পরিমাণ যথেষ্ট। এই চ্যালেঞ্জগুলির প্রতিক্রিয়ায় কৃষি ও খাদ্য উৎপাদন ক্ষেত্রের উৎপাদনশীলতা উন্নত করার জন্য কাঠামোগত পরিবর্তন আনা হয়েছে। এই ক্ষেত্রটিতে প্রায় অর্ধেক উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি হয়েছে কাঠামোগত সমন্বয়ের কারণে। এর মধ্যে রয়েছে খামার একত্রীকরণের ফলে খামারের সংখ্যা প্রায় অর্ধেক হয়ে যাওয়া, আর গত ৬০ বছরে খামারের আয়তন বৃদ্ধি। খামারের বর্ধিত গড় আয়তনের কারণে ব্যবস্থাপনার (‌ম্যানেজমেন্ট)‌ উন্নতি হয়েছে, আয়তনজনিত অর্থনৈতিক সুবিধা পাওয়া গিয়েছে, এবং খামারের আয় ক্রমাগত বেড়েছে। ফলস্বরূপ, ২০১৮ সালের জাতীয় খরা চুক্তিতে খরা সংক্রান্ত নীতির কেন্দ্রবিন্দু কৃষকদের রক্ষা করার পরিবর্তে হয়ে গিয়েছে তাঁদের খরার জন্য প্রস্তুত করা ও স্বনির্ভর করা। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব প্রশমিত করার জন্য কৃষকদের নানা ধরনের কৌশল ব্যবহারের উপর জোর দেওয়া হয়েছে। এই কৌশলগুলির মধ্যে আছে কৃষকদের কর্ষণবিহীন কৃষিপদ্ধতির ব্যবহার, যা ভূমিক্ষয় হ্রাস করে এবং ফসলের খড় ধরে রেখে মাটিতে কার্বনের ইনপুট বৃদ্ধি করে। এটি কার্বন ধরে রাখা ও গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ কমাতেও সাহায্য করে; মাটির উন্নত গঠন ও উর্বরতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে; এবং ইনপুট খরচ কমানোর পাশাপাশি জল ব্যবহারের দক্ষতা বাড়ায়।

কৃষিতে জলবায়ু পরিবর্তনশীলতার সফল মোকাবিলার ক্ষেত্রে অস্ট্রেলিয়ার একটি দীর্ঘ এবং বিকাশশীল ইতিহাস আছে। অস্ট্রেলিয়ার বিশেষ দক্ষতা কৌশলগত গবেষণা ও প্রযুক্তি হস্তান্তরের মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে ভারতীয় কৃষির স্থিতিস্থাপকতা বাড়ানোর জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে।

চরম জলবায়ু পরিস্থিতির কারণে জৈব নিরাপত্তার বিপদ সত্ত্বেও বিশ্বের সবচেয়ে খাদ্য-সুরক্ষিত দেশগুলির মধ্যে একটি হল অস্ট্রেলিয়া, যেখানে নিরাপদ, স্বাস্থ্যকর খাবারের প্রাপ্যতা পর্যাপ্ত। সেই কারণে অস্ট্রেলিয়া বিশ্বব্যাপী কৃষি ও খাদ্য নিরাপত্তার খুব বড় সমর্থক। অস্ট্রেলিয়া তার খাদ্যের চাহিদার ৯০ শতাংশেরও বেশি অভ্যন্তরীণ ভাবে উৎপাদন করে, আবার তার রফতানি বিশ্বের অনেক দেশের খাদ্য নিরাপত্তায় অবদান রাখে। স্বল্প আয়ের দেশগুলিতে কৃষির উৎপাদনশীলতা বাড়াতে, কৃষকদের বাজারের সঙ্গে যুক্ত করতে, অ-কৃষি গ্রামীণ জীবিকা উন্নত করতে, এবং ঝুঁকি ও দুর্বলতা কমানোর লক্ষ্যে তাদের জাতীয় কৌশল বাস্তবায়নে অস্ট্রেলিয়ার সরকার সহায়তা করে, এবং সেই জন্য বিশ্বব্যাপী কৃষি ও খাদ্য নিরাপত্তা কর্মসূচিতে (জিএএফএসপি) তারা বিনিয়োগ অব্যাহত রেখেছে। অস্ট্রেলিয়া তার দ্বিপাক্ষিক, আঞ্চলিক ও বিশ্বব্যাপী কর্মসূচিতে বিভিন্ন কৃষি উদ্যোগের নেতৃত্ব দেয়। কৃষি গবেষণায় এর অত্যন্ত মূল্যবান প্রযুক্তিগত ও ব্যবস্থাপনাগত ক্ষমতা উন্নয়নশীল দেশগুলিতে কৃষি উৎপাদনশীলতা বাড়াতে সাহায্য করেছে।

ভারত–অস্ট্রেলিয়া শস্য অংশীদারি

ভারত-অস্ট্রেলিয়া শস্য অংশীদারি ভারতের জন্য একটি সুযোগ যা কাজে লাগিয়ে ফসল তুলে নেওয়ার পরবর্তী পর্বের ব্যবস্থাপনায় অস্ট্রেলিয়ার দক্ষতা ব্যবহার করা সম্ভব। এই ভাবে গ্রামীণ শস্য গুদামে রাখার ব্যবস্থা ও সরবরাহ শৃংখল শক্তিশালী করা যায়, এবং তার ফলে ক্ষতি ও অপচয় কমানো যায়। ভারত-অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে কৃষিতে সহযোগিতা ২০২০ সালের জুনে তাদের ভার্চুয়াল শীর্ষ সম্মেলনে উভয় দেশের ঘোষিত ব্যাপক কৌশলগত অংশীদারিত্বের একটি অংশ। বিশ্বব্যাপী বাজার, সরবরাহ শৃঙ্খল ও বাণিজ্য–সম্পর্ক এখন জটিল হয়ে উঠছে। সাম্প্রতিক সাপ্লাই চেন রেজিলিয়েন্স ইনিশিয়েটিভ (এসসিআরআই)‌ হল ২০২১ সালে জাপান, অস্ট্রেলিয়া ও ভারতের চালু করা ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে সরবরাহ শৃঙ্খলের দুর্বলতাগুলি মোকাবিলা করার একটি যৌথ প্রচেষ্টা। কোভিড–১৯–এর ফলে তৈরি অভূতপূর্ব ঝুঁকি এবং খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার ক্রমবর্ধমান বিপদ এই দুর্বলতাগুলি প্রকাশ্যে এনেছে৷ এসসিআরআই উদ্যোগের মূল বৈশিষ্ট্যগুলি হল সরবরাহের নির্ভরযোগ্য উৎসগুলির বিকাশ; ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার বৃদ্ধি; বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৈচিত্র‌্যে সহায়তা; এবং অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে পারস্পরিক পরিপূরক সম্পর্ক জোরদার করা। ভারতের দিক থেকে অস্ট্রেলিয়াকে এমন এক ব্যবসায়িক অংশীদার হিসেবে দেখা হয় যে ভারতকে তার কৃষি সরবরাহ শৃঙ্খল বিকাশে সহায়তা করতে পারে। অন্য দিকে অস্ট্রেলিয়ার জন্য এই সহযোগিতা তাকে ভারতে রফতানির সুযোগ খোঁজার একটি পথ করে দিয়েছে, কারণ এখন অতিমারির বিশ্বে ভারতে নিরাপদ, পুষ্টিকর ও স্বাস্থ্যকর খাবারের ব্যবস্থা আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। জলবায়ু পরিবর্তন হল আরেকটি ক্ষেত্র যেখানে ভারতকে অবশ্যই তার কৃষিক্ষেত্রে জলবায়ু-সম্পর্কিত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে কাজ করতে হবে। কৃষিতে জলবায়ু পরিবর্তনশীলতার সফল মোকাবিলার ক্ষেত্রে অস্ট্রেলিয়ার একটি দীর্ঘ এবং বিকাশশীল ইতিহাস আছে। অস্ট্রেলিয়ার বিশেষ দক্ষতা কৌশলগত গবেষণা ও প্রযুক্তি হস্তান্তরের মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে ভারতীয় কৃষির স্থিতিস্থাপকতা বাড়ানোর জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে।

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.