Published on Jul 16, 2022 Updated 0 Hours ago

রাষ্ট্রদ্রোহ আইনের অনস্বীকার্য অপব্যবহার সুপ্রিম কোর্টকে এই সাবেক আইন পুনর্বিবেচনা করতে বাধ্য করেছে।

রাষ্ট্রদ্রোহ আইন: অতীত, বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ

এস জি ভোমবাতকেরে বনাম ইউনিয়ন অফ ইন্ডিয়া মামলায় সুপ্রিম  জারি করা সাম্প্রতিকতম আদেশ এ দেশে বিরোধিতার ভবিষ্যতের নিরিখে অসীম গুরুত্বপূর্ণ। ইন্ডিয়ান পিনাল কোড ১৮৬০-এর (আই পি সি) অধীনে রাষ্ট্রদ্রোহের বিধানের সাংবিধানিকতাকে চ্যালেঞ্জ জানানো একগুচ্ছ পিটিশন দায়ের করার নিরিখে সংশ্লিষ্ট আদেশটি জারি করা হয়। এই বিষয়ে শুনানি চলাকালীন ইউনিয়ন অফ ইন্ডিয়ার তরফে হলফনামা জারি করে এ কথা জোর দিয়ে জানানো হয় যে, তাঁরা আই পি সি-র আওতায় রাষ্ট্রদ্রোহের বিধানগুলির পুনঃপরীক্ষা ও পুনর্বিবেচনা করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন। ইউনিয়ন অফ ইন্ডিয়ার তরফে পুনরায় এ কথা জানানো হয় যে, কেন্দ্রীয় সরকার দ্বারা পুনর্বিবেচনার প্রক্রিয়াটি শুরু হলে সুপ্রিম কোর্ট রাষ্ট্রদ্রোহিতার আইনের সাংবিধানিক বৈধতা খতিয়ে দেখতে পারে। সেই অনুসারে ইউনিয়ন অফ ইন্ডিয়া দ্বারা পুনঃপরীক্ষণের কাজ সম্পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত কোর্টের তরফে রাষ্ট্রদ্রোহের বিধানগুলির ব্যবহারকে অনুপযুক্ত বলে ঘোষণা করা হয়। একই সঙ্গে কোর্টের তরফে সরকারগুলিকে কোনও সংশ্লিষ্ট বিষয় বিচারাধীন থাকাকালীন এফ আই আর নিবন্ধন বা রাষ্ট্রদ্রোহের ঘটনা প্রসঙ্গে কোনও বলপূর্বক পদক্ষেপ গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়াও রাষ্ট্রদ্রোহ সংক্রান্ত সকল বিচারাধীন মামলার উপরে কোর্টের তরফে স্থগিতাদেশ জারি করা হয়েছে।

কোর্টের তরফে সরকারগুলিকে কোনও সংশ্লিষ্ট বিষয় বিচারাধীন থাকাকালীন এফ আই আর নিবন্ধন বা রাষ্ট্রদ্রোহের ঘটনা প্রসঙ্গে কোনও বলপূর্বক পদক্ষেপ গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

ভারতীয় সুপ্রিম কোর্ট দ্বারা জারি করা সাম্প্রতিকতম আদেশের নিরিখে এই প্রতিবেদনে আই পি সি-র অধীনে রাষ্ট্রদ্রোহের বিধানগুলির উপরে আলোকপাত করা হয়েছে এবং একই সঙ্গে রাষ্ট্রদ্রোহ আইনের সম্ভাব্য পরিণতি ও এই দেশে বিরোধিতার ভবিষ্যৎ নিয়েও আলোচনা করা হয়েছে।

অতীত

রাষ্ট্রদ্রোহের আইনটি আই পি সি-র ২৪এ ধারায় বর্ণনা করা হয়েছে, যেখানে বলা হয়েছে— এক জন ব্যক্তির বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ আনা যেতে পারে যদি সে ‘শব্দ, সঙ্কেত এবং সুস্পষ্ট বিবৃতির মাধ্যমে ঘৃণা বা অসন্তোষ সৃষ্টি করে বা সৃষ্টির চেষ্টা চালায় অথবা ভারতীয় আইন অনুসারে স্থাপিত সরকারগুলির বিরুদ্ধে অস্থিরতার উদ্রেক করে বা উদ্রেক করতে সচেষ্ট হয়।’

এই বিধানটির নেপথ্যে দীর্ঘ ঔপনিবেশিক ইতিহাস বর্তমান এবং ১৮৩৭ সালে স্যার থমাস ম্যাকাউলি তাঁর খসড়া প্রস্তাবে এটির সংযোজন করেন। যদিও ১৮৬০ সালে আই পি সি প্রণয়নের সময়ে এই প্রবিধানটি অনুপস্থিত ছিল। পরবর্তী কালে ১৮৭০ সালে এক সংশোধনী ধারার মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট প্রবিধানটির অন্তর্ভুক্তি করা হয় এবং এটিকে বিক্ষোভকারী, বিদ্রোহী কার্যকলাপ এবং অভ্যুত্থান সংক্রান্ত ইংলিশ ট্রিজন ফেলনি অ্যাক্ট, ১৮৪৮-এর আদলে গড়ে তোলা হয়। স্বাধীনতার আগে এই আইন ব্যবহার করে ভারতীয় সমাজে সমালোচনা ও অসন্তোষের স্বরকে দমন করার চেষ্টা চালানো হয় এবং বালগঙ্গাধর তিলকের মতো একাধিক স্বাধীনতা সংরামীদের এই প্রবিধানের আওতায় অভিযুক্ত করা হয়।

ভারতীয় আদালত একাধিক বার ১২৪এ ধারাকে সঠিক ভাবে ব্যাখ্যায়িত করার চেষ্টা করেছে এবং কখন একটি বক্তৃতাকে রাষ্ট্রদ্রোহী বলে বিবেচিত করা যেতে পারে, সেই সংক্রান্ত শর্তগুলি তুলে ধরেছে। উদাহরণ স্বরূপ বলা যায়, কেদারনাথ বনাম স্টেট অব বিহারের মামলায় শীর্ষ আদালত রাষ্ট্রদ্রোহিতাকে ‘হিংসার উদ্রেককারী অথবা জনগণের মধ্যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী বা সৃষ্টির অভিপ্রায়ে যুক্ত কিংবা সামাজিক শান্তি বিঘ্নিতকারী কার্যকলাপ’ রূপে চিহ্নিত করেছে। এ ছাড়াও বলবন্ত সিং বনাম ইউনিয়ন অফ ইন্ডিয়ার মামলায় এ কথা স্পষ্ট ভাবে বলা হয়েছে যে, ‘সমালোচনামূলক যে কোনও অভিব্যক্তি রাষ্ট্রদ্রোহিতা নয় এবং কোনও পদক্ষেপকে রাষ্ট্রদ্রোহী বলে দাগিয়ে দেওয়ার আগে সংশ্লিষ্ট বক্তৃতার নেপথ্যে থাকা আসল অভিপ্রায়কে বিবেচনা করা উচিত।’ একই ভাবে, পঙ্কজ বুটালিয়া বনাম সেন্ট্রাল বোর্ড অফ ফিল্ম সার্টিফিকেশনের মামলায় দিল্লির হাইকোর্ট জানায় যে, অভিপ্রায়ের কথা মাথায় রেখে রাষ্ট্রদ্রোহের কথা বিচার করতে হবে এবং সংশ্লিষ্ট বক্তব্যটিকে ‘কোনও বিক্ষিপ্ত অনুচ্ছেদের উপরে অযথা জোর না দিয়ে সামগ্রিক ও ন্যায্য ভাবে’ বিচার করতে হবে। এ ভাবে বিচার বিভাগীয় আধিকারিকরা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে রাষ্ট্রদ্রোহিতার সংজ্ঞা সংক্রান্ত নির্দেশিকা প্রদান করেছেন এবং তাঁরা এ-ও দর্শিয়েছেন যে, যে কোনও ধরনের সমালোচনা ও অসন্তোষের বহিঃপ্রকাশই রাষ্ট্রদ্রোহিতা নয়।

বর্তমান

একাধিক রিপোর্ট থেকে জানা যায় যে, ২০১০ সালের পর থেকে ভারতে ১৩০০০ জনের বিরুদ্ধে প্রায় ৮০০টিরও বেশি রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা দায়ের করা হয়েছে। ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরোর রিপোর্ট ‘ক্রাইম ইন ইন্ডিয়া ২০২০’ দেখাচ্ছে যে ২০১৮, ২০১৯ এবং ২০২০ সালে যথাক্রমে ৭০, ৯৩, এবং ৭৩টি রাষ্ট্রদ্রোহের ঘটনা ঘটেছে। রাষ্ট্রদ্রোহের মামলার সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়া সত্ত্বেও, দোষী সাব্যস্ত ধারাবাহিক ভাবে কম হয়েছে। সংখ্যার নিরিখে, ২০১৪ সালে নথিভুক্ত ৪৭টি মামলার মধ্যে দোষী সাব্যস্ত হয়েছিল মাত্র একটি ক্ষেত্রে; ২০১৫ সালে নিবন্ধিত ৩০টি মামলার মধ্যে কাউকেই দোষী সাব্যস্ত করা যায়নি; ২০১৬ সালে নিবন্ধিত ৩৫টি মামলার মধ্যে দোষী সাব্যস্ত হয়েছে এক জন; ২০১৭ সালে ৫১টি নিবন্ধিত মামলার মধ্যে দোষী সাব্যস্ত হয়েছে একটি ক্ষেত্রে; ২০১৮ সালে নিবন্ধিত ৭০টি মামলার মধ্যে একটি ক্ষেত্রে দোষী সাব্যস্ত হয়েছে এবং ২০১৯ সালে ৯৩টি নিবন্ধিত মামলার মধ্যে দোষী সাব্যস্ত হয়েছে একটি ক্ষেত্রে৷ কম দোষী সাব্যস্ত হওয়ার হার দর্শায় যে ১২৪এ ধারার অপব্যবহার করা হচ্ছে এবং ধারার অধীনে প্রয়োজনীয় উপাদানগুলির অনুপস্থিতি সত্ত্বেও মামলা দায়ের করা হচ্ছে৷ সংশ্লিষ্ট প্রবিধানের আওতায় একাধিক শিল্পী, সাংবাদিক এবং প্রতিবাদকারীর বিরুদ্ধে অসফল ভাবে মামলা দায়ের করা হয়েছে। উদাহরণ স্বরূপ বলা যায় যে, বিনায়ক সেন যিনি এক জন ডাক্তার এবং আদিবাসীদের উন্নয়নের ক্ষেত্রে সক্রিয় এক কর্মী, তাঁর বিরুদ্ধে নকশাল সাহিত্য সংক্রান্ত বইয়ের মালিকানার ভিত্তিতে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগ আনা হয়। একই রকম ভাবে অসীম ত্রিবেদীর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা দায়ের করা হয়েছিল এই বলে যে, তিনি দেশে দুর্নীতি এবং অনৈতিক আমলাতন্ত্র সম্পর্কে মন্তব্য করেছিলেন।

স্বাধীনতার আগে এই আইন ব্যবহার করে ভারতীয় সমাজে সমালোচনা ও অসন্তোষের স্বরকে দমন করার চেষ্টা চালানো হয় এবং বালগঙ্গাধর তিলকের মতো একাধিক স্বাধীনতা সংরামীদের এই প্রবিধানের আওতায় অভিযুক্ত করা হয়।

বেশ কয়েকজন সংসদ একাধিক ক্ষেত্রে এই অপব্যবহারের বিষয়ে তাঁদের উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। উদাহরণ স্বরূপ বলা যায়, শ্রী দিগ্বিজয় সিং, শ্রী গুলাম নবী আজাদ, শ্রী বিনয় বিশ্বম, শ্রী ই. টি. মহম্মদ বশির এবং শ্রী সঞ্জয় রাউত ১২৪এ ধারার অপব্যবহারের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। এর পাশাপাশি বেশ কয়েকটি প্রাইভেট মেম্বার বিলেও রাষ্ট্রদ্রোহ আইন সংক্রান্ত পরিবর্তন আনার চেষ্টা করা হয়েছে।

এ কথা উল্লেখ্য যে, ২০১৮ সালে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক (এম এইচ এ) আইন ও বিচার মন্ত্রককে চিঠি দিয়ে আইন কমিশনকে প্রবিধানটি পুনরায় পড়ে দেখার জন্য অনুরোধ করেছিল। আইন কমিশন অব্যবহিত পরেই ২০১৮ সালের অগস্ট মাসে রাষ্ট্রদ্রোহ সংক্রান্ত একটি পরামর্শপত্র উপস্থাপন করে। আইন কমিশন রাষ্ট্রদ্রোহ আইনের ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা করার সময়ে ১০টি বিষয় বিবেচনা করার সুপারিশ করেছিল।

এই সকল উদ্বেগ এবং অপব্যবহারের বিরুদ্ধে সরব হওয়া সত্ত্বেও রাষ্ট্রদ্রোহের আইনটি বহাল ছিল এবং খুব সাম্প্রতিক কাল পর্যন্তও ১২৪এ ধারার অধীনে মামলা দায়ের করা হচ্ছিল। যদিও এস. জি. ভোমবাতকেরে বনাম ইউনিয়ন অফ ইন্ডিয়ার মামলায় ইউনিয়ন অফ ইন্ডিয়ার তরফে দেওয়া হলফনামা এবং সেই সংক্রান্ত আদেশের সঙ্গে সঙ্গে রাষ্ট্রদ্রোহ সংক্রান্ত ১২৪এ ধারাটিকে স্থগিত করা হয়েছে।

ভবিষ্যৎ

আয়ারল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, ঘানা, নাইজেরিয়া এবং উগান্ডা-সহ বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশ সাম্প্রতিক অতীতে রাষ্ট্রদ্রোহ সংক্রান্ত আইনগুলিকে শিথিল করেছে বা সম্পূর্ণ ভাবে বাতিল করেছে। এমনকি সংযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রেও, যা ভারতীয় আইনের ভিত্তি ছিল, করোনার্স অ্যান্ড জাস্টিস অ্যাক্ট, ২০০৯-এর অধীনে রাষ্ট্রদ্রোহ আইন বাতিল করা হয়েছে।

ভারতে রাষ্ট্রদ্রোহের উপর বেশ কয়েকটি প্রাইভেট মেম্বার বিল চালু করা হয়েছে যেগুলির বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আইন বাতিল না করে সংস্কারের উপরে জোর দেওয়া হয়েছে। শ্রী ডি. রাজা, শ্রী পি. করুণাকরণ এবং শ্রী এলামারাম করিম কর্তৃক প্রস্তাবিত প্রাইভেট মেম্বার বিলগুলি আই পি সি-র ১২৪এ ধারাকে একটি কঠোর এবং ঔপনিবেশিক প্রবিধান বলে উল্লেখ করে অপসারণের সুপারিশ করেন। শ্রী শশী থারুর, শ্রী ভর্ত্রুহরি মাহতাব, শ্রী সৌগত রায় এবং শ্রী বৈজয়ন্ত পান্ডা-সহ অনেকেই প্রবিধানটির সংস্কারের প্রস্তাব করেন।

এগুলি মোকাবিলা করার জন্য নাগরিক, প্রয়োগকারী সংস্থা, নির্বাহী বিভাগ এবং নিম্ন বিচার বিভাগের মধ্যে সংস্কারকৃত বিভাগ সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা অপরিহার্য।

দেশে এই প্রবিধানটির সম্ভাব্য বিলুপ্তি সংক্রান্ত রব উঠলেও প্রাইভেট মেম্বার বিলের সংখ্যাগরিষ্ঠ ক্ষেত্রে আই পি সি-র ১২৪এ ধারার প্রবিধানগুলিকে সংস্কার করার সম্ভাবনাও প্রস্তাবিত হয়েছে৷ এমনকি আইন কমিশন তার পরামর্শপত্রে জাতীয় অখণ্ডতা রক্ষার জন্য রাষ্ট্রদ্রোহকে অপরিহার্য বলে মনে করে। এই সংক্রান্ত কয়েকটি সংস্কারের মধ্যে আওতাভুক্ত হতে পারে:

  • সরকারের পদক্ষেপ বা সরকারের প্রশাসনিক পদক্ষেপের প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ করে এমন কাজগুলি রাষ্ট্রদ্রোহের সমতুল্য বলে বিবেচিত হবে না এমন ব্যাখ্যা যোগ করা।
  • একটি স্পষ্টীকরণ যোগ করা যে, রাষ্ট্রদ্রোহ কেবল মাত্র তখনই বিবেচিত হবে যদি তা সরাসরি সহিংসার প্ররোচনা দেয় এবং অপরাধের নির্দিষ্ট শাস্তি লাগু করা যেতে পারে।
  • এই বিধানের অধীনে ‘অসন্তোষ’-এর সুযোগ সম্পর্কে স্পষ্ট ভাবে উল্লেখ করা।
  • বৈধ প্রতিবাদ সংক্রান্ত একটি স্পষ্টীকরণ যোগ করা।
  • ফৌজদারি কার্যবিধির ১২৪এ ধারা বা নীতি নির্দেশিকাগুলির মাধ্যমে পদ্ধতিগত সুরক্ষা যোগ করা।

কেদারনাথ বনাম স্টেট অব বিহারের মামলায় স্পষ্ট নির্দেশিকা জারি করা সত্ত্বেও, এ বিষয় তর্ক সাপেক্ষ যে, পুলিশ এবং রাষ্ট্রীয় সংস্থাগুলির দ্বারা এখনও আই পি সি-র ১২৪এ ধারার অপব্যবহার জারি রয়েছে এবং ফলত কোনও রকম সংস্কারই বাস্তব পরিসরে প্রতিফলিত না-ও হতে পারে৷ এ কথা তর্ক সাপেক্ষ যে, কোনও সাংবিধানিক সংস্কারের অনুপস্থিতিতে শুধু মাত্র ১২৪এ ধারার বয়ানের সংস্কার বর্তমান সমীকরণে কোনো উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনবে না। এগুলি মোকাবিলা করার জন্য নাগরিক, প্রয়োগকারী সংস্থা, নির্বাহী বিভাগ এবং নিম্ন বিচার বিভাগের মধ্যে সংস্কারকৃত বিভাগ সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা অপরিহার্য। সংস্কারের পাশাপাশি এই প্রবিধানের সুযোগ সম্পর্কে সমাজের বিভিন্ন অংশকে শিক্ষিত করার জন্য ওকালতি ব্যবস্থা থাকা প্রয়োজন।

রাষ্ট্রদ্রোহ সংক্রান্ত আইন বাতিল অথবা সংস্কার এ দেশে বাকস্বাধীনতা ও অসন্তোষ প্রদর্শনের ভবিষ্যৎকে ইতিবাচক ভাবে প্রভাবিত করতে পারে। আইনের পরিবর্তনগুলি সরকারের বিরুদ্ধে মতামত উত্থাপনে এক জন নাগরিক নিরাপদ বোধ করছেন কি না সে বিষয়ে বিশাল প্রভাব ফেলবে। এ কথাই কেবল আশা করা যেতে পারে যে, প্রবর্তিত পরিবর্তনগুলি নাগরিকদের বাক স্বাধীনতা এবং জাতীয় ও নিরাপত্তার স্বার্থকে মাথায় রেখে অসন্তোষ প্রকাশ করার অধিকারকে সুরক্ষা জোগাবে।

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.