Author : RAJEN HARSHÉ

Published on Jun 13, 2023 Updated 0 Hours ago

রাশিয়ার বৈদেশিক নীতি স্পষ্ট করে দেয় চিন এবং আফ্রিকার দেশগুলি তার ক্ষেত্রে কতটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে

রাশিয়ার বিদেশনীতিতে চিন ও আফ্রিকার গুরুত্ব

২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া–ইউক্রেন সংঘর্ষ শুরু হওয়ার পর রাশিয়া পশ্চিমী বিশ্ব থেকে ক্রমশ বিচ্ছিন্ন হতে শুরু করে। এমনটা ঘটেছিল মূলত পশ্চিমী বিশ্বের রাশিয়ার বিরুদ্ধে অভূতপূর্ব অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপের কারণে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র (ইউএস) এবং তার ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) মিত্রেরা ইউক্রেনের প্রতি পূর্ণ সমর্থনের হাত বাড়িয়েছে তার সার্বভৌমত্ব ও ভূখণ্ডগত অখণ্ডতা রক্ষার জন্য। ২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে নর্থ অ্যাটলান্টিক ট্রিটি অরগানাইজেশন (ন্যাটো)–এ ফিনল্যান্ডের প্রবেশ এবং ইউক্রেনের প্রতি ন্যাটো শক্তিগুলির অব্যাহত সমর্থনের ফলে রাশিয়া  কার্যত তার দোরগোড়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো একটি শত্রুশক্তির মুখোমুখি হয়েছে। ফলস্বরূপ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের প্রতিহত করার জন্য রাশিয়া দ্বিতীয় সর্বাধিক শক্তিসম্পন্ন বিশ্বশক্তি এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ঘোর প্রতিদ্বন্দ্বী চিনের দিকে ঝোঁকার সিদ্ধান্ত নেয়। একই সঙ্গে রাশিয়া বৈশ্বিক দক্ষিণের দেশগুলির সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলছে। রাশিয়ার শুধু মধ্য ও পশ্চিম এশিয়ার রাজনীতিতে উল্লেখযোগ্য উপস্থিতি নেই, বরং দেশটি আফ্রিকা মহাদেশের দেশগুলির সঙ্গে ক্রমাগত বেশি করে বন্ধুত্ব করছে। রাষ্ট্রপুঞ্জের ৫৪টি সদস্য রাষ্ট্র এবং অপরিমেয় অব্যবহৃত সম্পদ–সহ আফ্রিকা মহাদেশ রাশিয়ার ক্রমবর্ধমান সম্প্রসারণবাদের জন্য যথেষ্ট জায়গা দেয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে রাশিয়ার বৈদেশিক নীতি কৌশলে একদিকে চিন এবং অন্যদিকে আফ্রিকা মহাদেশের ক্রমবর্ধমান তাৎপর্য মূল্যায়ন করা কাজের হতে পারে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের প্রতিহত করার জন্য রাশিয়া দ্বিতীয় সর্বাধিক শক্তিসম্পন্ন বিশ্বশক্তি এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ঘোর প্রতিদ্বন্দ্বী চিনের দিকে ঝোঁকার সিদ্ধান্ত নেয়।

এই সন্ধিক্ষণে রাশিয়া ও চিনের মধ্যে কৌশলগত স্বার্থের মিলন তাদেরকে মার্কিন নেতৃত্বাধীন এবং ‘‌বিধিভিত্তিক’‌ আন্তর্জাতিক ব্যবস্থাকে চ্যালেঞ্জ করার জন্য একটি ঘনিষ্ঠ কৌশলগত অংশীদারির বন্ধন গড়ে তোলে। প্রেসিডেন্ট পুতিনের যদি লক্ষ্য হয় ইউক্রেন জয় করে রাশিয়ার গৌরব পুনরুজ্জীবিত করা, চিন আবার ২০২৭ সালের মধ্যে তাইওয়ানকে মূল ভূখণ্ডে পুনঃসংহত করতে আগ্রহী। উভয় দেশই বিদ্যমান বিশ্বব্যবস্থা নিয়ে অসন্তুষ্ট, এবং মার্কিন নেতৃত্বাধীন স্থিতাবস্থাকে চ্যালেঞ্জ করছে। এই বিষয়টিকে কেন্দ্র করে তাদের অনিবার্য পারস্পরিক নির্ভরতা প্রশংসনীয়ভাবে একটি নতুন বিশ্ব ব্যবস্থার রূপরেখা তৈরি করতে পারে।

অপ্রতিসম বন্ধন, কিন্তু অভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি
চিন–রাশিয়ার সম্পর্ক মূলত অভ্যন্তরীণভাবে অপ্রতিসম প্রকৃতির, কারণ চিনের অর্থনীতি রাশিয়ার চেয়ে ছয়গুণ বেশি শক্তিশালী। ২০১৪ সালে রাশিয়া ক্রিমিয়াকে সংযুক্ত করার পরে পশ্চিমী শক্তিগুলির আরোপিত নিষেধাজ্ঞার কারণে চিনের উপর রাশিয়ার বাণিজ্য নির্ভরতা বাড়তে শুরু করে। এই প্রক্রিয়ায় ২০২২ সালের মধ্যে চিন রাশিয়ার রপ্তানির ৩০ শতাংশের গ্রাহক হয়ে ওঠে এবং রাশিয়ার ৪০ শতাংশ আমদানি চিন থেকে আসতে শুরু করে। চিন তার সস্তা পণ্য দিয়ে ধীরে ধীরে রাশিয়ার উপভোক্তা বাজার দখল করছে। চিনের উপর রাশিয়ার ক্রমবর্ধমান নির্ভরতা চিনের দৃষ্টিকোণ থেকে অবশ্যই সুবিধাজনক। এই ধরনের নির্ভরতা চিনের জন্য বৃহত্তর সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করতে পারে, যেমন রাশিয়াকে কম দামে গ্যাস ও তেল দিতে বাধ্য করা; আর্কটিক অঞ্চলে চিনের নৌ–উপস্থিতি মেনে নিতে রাশিয়াকে প্ররোচিত করা; রাশিয়া থেকে সংবেদনশীল প্রযুক্তি পাওয়া; এবং সম্পদসমৃদ্ধ মধ্য এশিয়ার রাষ্ট্রগুলিতে প্রবেশ নিশ্চিত করা।

প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের ২০–২২ মার্চ মস্কো সফর, এবং নিরাপত্তা, শিল্প, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, অর্থনীতি এবং বাণিজ্য নিয়ে চিন ও রাশিয়ার মধ্যে এক ডজন দ্বিপাক্ষিক চুক্তি স্বাক্ষরও দুই দেশের মধ্যে ক্রমবর্ধমান পারস্পরিক নির্ভরতার প্রমাণ দেয়। শি–র মস্কো সফরের ঠিক আগে ইরান ও সৌদি আরবের মধ্যে শান্তি স্থাপনে চিনের ভূমিকা ছিল। যদিও শি–র মস্কো সফরে রুশ–ইউক্রেন শান্তির সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছিল, শান্তির প্রকল্পটি এখনও অধরা বলে মনে হচ্ছে। আশ্চর্যজনকভাবে, শি–র সফর এমন এক সময়ে হয়েছিল যখন আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) ইউক্রেনের রাশিয়া–অধিকৃত অঞ্চল থেকে ইউক্রেনীয় শিশুদের অবৈধভাবে রাশিয়ায় নির্বাসনে পাঠিয়ে তাদের অধিকার লঙ্ঘনের দায়ে প্রেসিডেন্ট পুতিনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছিল। এই কঠিন পরিস্থিতিতে রাশিয়ার পাশে দাঁড়িয়েছে চিন।

২০১৪ সালে রাশিয়া ক্রিমিয়াকে সংযুক্ত করার পরে পশ্চিমী শক্তিগুলির আরোপিত নিষেধাজ্ঞার কারণে চিনের উপর রাশিয়ার বাণিজ্য নির্ভরতা বাড়তে শুরু করে।

চিনের সঙ্গে একটি দৃঢ় বন্ধন তৈরির পাশাপাশি রাশিয়া বৈশ্বিক দক্ষিণে, বিশেষ করে আফ্রিকা মহাদেশে, তার উপস্থিতি আরও সংহত করার জন্য কাজ করছে। এখানেও, রাশিয়ার তুলনায় আফ্রিকায় চিনের উপস্থিতি অনেক বেশি, তবে উভয় শক্তিরই আফ্রিকায় ঐতিহ্যবাহী নব্য–ঔপনিবেশিক/সাম্রাজ্যবাদী পশ্চিমী শক্তির প্রভাব হ্রাস করার একটি অভিন্ন লক্ষ্য রয়েছে। অতএব, তারা মূল কৌশলগত এলাকায় প্রবেশাধিকার পাওয়ার দিকে মনোনিবেশ করছে। জিবুতিতে চিনের একটি সামরিক ঘাঁটি থাকলেও রাশিয়াকে অবশ্য সুদানে নৌবাহিনীর অবস্থানের সুযোগ পেতে হিমসিম খেতে হচ্ছে। উভয় দেশই উদার গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের পশ্চিমী ধারণার প্রতি উদাসীনতা দেখিয়েছে, এবং আফ্রিকার স্বৈরাচারী শাসনগুলিকে নির্লজ্জভাবে সমর্থন করেছে। স্পষ্টতই, পশ্চিমের বিপরীতে, চিন আফ্রিকায় রাশিয়ার বন্ধু। আফ্রিকায় রাশিয়ার নীতিকে আরও ভালভাবে মূল্যায়ন করা যেতে পারে সাধারণভাবে বিশ্ব রাজনীতিতে, এবং বিশেষ করে আফ্রিকার মতো বৈশ্বিক দক্ষিণের অঞ্চলে, এই অভিন্ন চিন–রাশিয়া দৃষ্টিভঙ্গিটি বিবেচনায় রেখে।

আফ্রিকায় রাশিয়ার সম্প্রসারণবাদ
২০১৯–এর অক্টোবরে রাশিয়ার সোচিতে রুশ–আফ্রিকা শীর্ষ সম্মেলনের সময় স্পষ্টভাবে বোঝা গিয়েছিল রাশিয়া কীভাবে আফ্রিকায় সুস্থিতভাবে প্রবেশ করেছে । সম্মেলনে আফ্রিকার ৫৪টি রাষ্ট্র এবং ৪২ জন রাষ্ট্রপ্রধান উপস্থিত ছিলেন। শীর্ষ সম্মেলনের সময় রাশিয়া বিভিন্ন দেশের সঙ্গে ২১টি সামরিক সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। এছাড়াও, যখন রাশিয়া–ইউক্রেন দ্বন্দ্ব শুরু হয়েছিল, ২০২২ সালের মার্চে রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ পরিষদের বৈঠকে, শুধু ২৮টি আফ্রিকি রাষ্ট্র রাশিয়ার আগ্রাসনের নিন্দা করেছিল , যার অর্থ প্রায় অর্ধেক মহাদেশ রাশিয়ার বিরুদ্ধে কোনও সুস্পষ্ট অবস্থান নেওয়া থেকে বিরত ছিল। অধিকন্তু, ইউক্রেন সংঘাতের মধ্যে প্রেসিডেন্ট পুতিন সম্প্রতি ঘোষণা করেছেন যে রাশিয়া আফ্রিকার সঙ্গে তার সম্পর্ককে ‘অগ্রাধিকার’‌ দেবে। ইউক্রেনের রপ্তানি সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি দুই মাসের মধ্যে পুনর্বিবেচনা করা না–হলে তিনি আফ্রিকার সবচেয়ে অভাবী দেশগুলিতে খাদ্যশস্য সরবরাহের আশ্বাস দেন। রাশিয়া ওষুধ পাওয়ার জন্য সহায়তা প্রদানের প্রস্তাব দিয়েছে, জ্বালানিতে সহযোগিতা প্রসারের আশ্বাস দিয়েছে এবং প্রতিশ্রুতি দিয়েছে যে এটি রুশ বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে আফ্রিকার শিক্ষার্থীদের কোটা দ্বিগুণ করবে। প্রেসিডেন্ট পুতিন আরও দাবি করেছেন যে রাশিয়া ২০২২ সালে আফ্রিকার দেশগুলির ২০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের অতীত ঋণ মকুব করেছে, এবং বলেছে যে ২০২২ সালে রাশিয়া ও আফ্রিকার মধ্যে বাণিজ্য ১৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে। এছাড়াও, রাশিয়া ইতিমধ্যেই ২০২৩–এর ২৬–২৯ জুলাই পিটার্সবার্গে দ্বিতীয় রাশিয়া–আফ্রিকা শীর্ষ সম্মেলনের জন্য প্রস্তুতি শুরু করেছে।

নিরাপত্তার ক্ষেত্রে, বড় এবং ছোট অস্ত্র সহ আফ্রিকার সামরিক সরঞ্জামের ৪৯ শতাংশ রাশিয়া থেকে আসে। আফ্রিকার প্রধান দেশ, যেমন আলজেরিয়া, অ্যাঙ্গোলা, বুরকিনা ফাসো, মিশর, ইথিওপিয়া, মালি, মরক্কো, রুয়ান্ডা ও উগান্ডা রাশিয়া থেকে অস্ত্র আমদানি করে। রাশিয়ার অস্ত্র রপ্তানি মূলত রোসোবোরোনেক্সপোর্ট  নামে একটি রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সংস্থার মাধ্যমে পরিচালিত হয়। অধিকন্তু, রাশিয়ান প্রাইভেট মিলিটারি কোম্পানি (পিএমসি) দ্বারা নিরাপত্তা প্রদানের ব্যবস্থা করা হয়। ইয়েভগেনি প্রিগজিন নামে পুতিনের একজন ঘনিষ্ঠ সহযোগী এখন প্রবল ক্ষমতাসম্পন্ন হিসাবে আবির্ভূত হয়েছেন, এবং তিনি ওয়াগনার গ্রুপ নামে একটি ট্রান্সন্যাশনাল এন্টারপ্রাইজ পরিচালনা করেন। রাশিয়া সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিক (সিএআর), ইউক্রেন, সুদান, সিরিয়া ও লিবিয়াতে ওয়াগনারের পরিষেবাগুলি ব্যবহার করেছে। এ ছাড়া প্রিগজিন ২০১৬ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করেছিল এমন একটি ইন্টারনেট গবেষণা সংস্থাকে অর্থায়নের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধজ্ঞার সম্মুখীন হয়েছেন ।

সিএআর–এ প্রিগজিন লোবায়ে ইনভেস্ট নামে একটি সংগঠন চালান যেটি সিএআর–এ রেডিও স্টেশনগুলিকে অর্থায়ন করে এবং ২৫০ জনের মতো রুশ ভাড়াটে সেনা নিয়োগের জন্য প্রশিক্ষণে অর্থায়ন করে। এছাড়াও, লোবায়ে ইনভেস্ট সিএআর–এ সোনা ও হিরা অন্বেষণের জন্য উদার ছাড় পেয়েছে। রুশিরা সিএআর–এ প্রেসিডেন্ট তুয়াদেরা-র নড়বড়ে স্বৈরাচারী শাসনকে টিকিয়ে রাখতে আগ্রহী। তাই রাশিয়া চায় যে বর্তমান প্রেসিডেন্ট তুয়াদেরা দুই মেয়াদের বেশি ক্ষমতায় থাকার অধিকার পান, যা বর্তমান সংবিধানের নির্ধারিত সীমার বাইরে। প্রেসিডেন্ট অফ দ্য কোর্ট ড্যানিয়েল ডারলানকে তুয়াদেরা একটি ডিক্রি দ্বারা অপসারণ করেছিলেন, কারণ তিনি তাঁর তৃতীয় মেয়াদের পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন বলে অভিযোগ। সিএআর–এর মতো গিনি ও মালির অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতেও রাশিয়া হস্তক্ষেপ করেছে। রাশিয়ার নীতির নিট ফলাফল হল গিনি, মালি ও সিএআর–এর মতো পূর্ববর্তী উপনিবেশগুলিতে ফ্রান্সের ক্ষয় এবং শেষ পর্যন্ত পশ্চাদপসরণ, যে ঘটনা কিনা রাশিয়ার পাশাপাশি চিনের কাছে সবচেয়ে অভিপ্রেত ফলাফল।

রাশিয়া মিশরে পারমাণবিক কেন্দ্র নির্মাণেও জড়িত আছে।

আফ্রিকায় নিষ্কাশন শিল্পে রাশিয়ার ক্রমবর্ধমান আগ্রহ একটি বিশেষ উল্লেখের দাবি রাখে। গ্যাজপ্রম, লুকোইল, রোসটেক ও রোসাটোম–সহ রুশ সংস্থা (শক্তি সংস্থা); আলরোসা (হিরের খনি) ও রুসাল (বক্সাইট খনি) ইতিমধ্যেই আফ্রিকায় কাজ করছে। প্রকৃতপক্ষে, রুশ সংস্থাগুলি আলজেরিয়া, অ্যাঙ্গোলা, লিবিয়া, নাইজেরিয়া, ঘানা, আইভরি কোস্ট ও মিশরে তেল ও গ্যাস শিল্পে জড়িত। সোনা, হি্রে, কোবাল্ট, কোল্টান ইত্যাদির ক্ষেত্রে রাশিয়া সিএআর ও গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রী কঙ্গো (ডিআরসি) থেকে যথেষ্ট ছাড় উপভোগ করে। রাশিয়ার সংস্থাগুলি গিনি থেকে বক্সাইট, মাদাগাস্কার থেকে ক্রোমাইট, সুদান থেকে সোনা ও তেল, দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে হিরে ও প্লাটিনাম, এবং অ্যাঙ্গোলা ও জিম্বাবুয়ে থেকে হিরে উত্তোলন করছে। রাশিয়া মিশরে পারমাণবিক কেন্দ্র নির্মাণেও জড়িত আছে। উপরন্তু, ২০২২ সালে ইউক্রেন সংঘাতের সময় রাশিয়ার  তেল রপ্তানির পরিমাণ ছিল দিনে ২১৪,০০০ ব্যারেল   পরিশোধিত পেট্রোলিয়াম পণ্য, যা আগের বছরের তুলনায় তিনগুণ বেশি।

উপসংহার
ইউক্রেন সংঘাত এবং পশ্চিমীদের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার কারণে চিনের ওপর রাশিয়ার নির্ভরতা বাড়ছে। যদিও দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক অপ্রতিসম, তবে উভয় শক্তিই মার্কিন নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক ব্যবস্থাকে চ্যালেঞ্জ করার জন্য নিয়োজিত রয়েছে, তবে রাশিয়া একটি জুনিয়র পার্টনার হিসাবে। যদিও চিন ও রাশিয়ার সম্পর্ক প্রথম পক্ষের আধিপত্য ও পরেরটির নির্ভরশীলতা–ভিত্তিক, রাষ্ট্রগুলির একটি অনুক্রমিক ব্যবস্থায় রাশিয়াও আফ্রিকার দেশগুলির সঙ্গে আধিপত্য–নির্ভরশীলতা সম্পর্কের পুনরাবৃত্তি করে চলেছে। অন্তত আফ্রিকায় চিন ও রাশিয়া উভয়েই পশ্চিমী প্রভাবকে খর্ব করে সহাবস্থান করছে।


রাজেন হর্ষ ইলাহাবাদ সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি, প্রয়াগরাজের প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রাক্তন উপাচার্য

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.