Author : Eka Siradze

Published on May 08, 2023 Updated 0 Hours ago

জাতিগত সংখ্যালঘুদের একীভূত করার জন্য জর্জিয়া তাদের ভাষায় তাদের মধ্যে উচ্চশিক্ষার প্রসারের জন্য ১+৪ প্রোগ্রাম ব্যবহার করছে

স্থিতিশীল উন্নয়নের লক্ষ্য অর্জনে শিক্ষার ভূমিকা

“এক পৃথিবী, এক পরিবার, এক ভবিষ্যৎ”, ভারতের জি২০ প্রেসিডেন্সির এই থিমটি ব্যক্তিগত জীবনশৈলীর পাশাপাশি জাতীয় উন্নয়নের স্তরে লাইফ (পরিবেশের জন্য জীবনশৈলী)–এর ধারণাটিকেই তুলে ধরে, যা বিশ্বব্যাপী রূপান্তরমূলক কর্মের দিকে এবং ফলস্বরূপ একটি পরিচ্ছন্নতর, সবুজ, ও নীল ভবিষ্যতের দিকে চালিত করে। এই থিমটি ২০১৫ সালে রাষ্ট্রপুঞ্জের সদস্য দেশগুলির দ্বারা গৃহীত এসডিজি–গুলির সঙ্গে সরাসরি অনুরণিত হয়, যেখানে সর্বজনীন আহ্বান ছিল দারিদ্র্যের অবসান, গ্রহকে রক্ষা করা, এবং প্রত্যেকের জীবন ও সম্ভাবনাকে উন্নত করা। সেইসঙ্গেই সেখানে এই সত্য স্বীকৃত হয়েছিল যে জাতিগত সংখ্যালঘু–সহ সমাজের সব ক্ষেত্রের মানুষের শিক্ষায় প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করতে না পারলে স্থিতিশীল উন্নয়ন অর্জন করা যাবে না। এই নিবন্ধটির উদ্দেশ্য হল একটি বহুজাতিক এবং বহুভাষিক রাষ্ট্র হিসাবে এই ক্ষেত্রে জর্জিয়ার অভিজ্ঞতা ভাগ করে নেওয়া: ক) রাষ্ট্রীয় প্রোগ্রাম ‘‌১+৪’‌ এর মাধ্যমে নির্দিষ্ট জাতিগত সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর তরুণ সদস্যদের উচ্চশিক্ষার সুযোগ প্রদান করা। এটা স্বীকৃত যে জাতিগত সংখ্যালঘু–সহ সমাজের সব ক্ষেত্রের মানুষের শিক্ষার সুযোগ ছাড়া স্থিতিশীল উন্নয়ন অর্জন করা যাবে না।

২০২১ সালের জুলাই মাসে জর্জিয়া সরকারের গৃহীত রাষ্ট্রীয় নাগরিক সমতা ও সংহতি কৌশল ২০২১–২০৩০  (জর্জিয়া, ২০২২)–এ বলা হয়েছে সরকার সে দেশের স্থিতিশীল উন্নয়নে জাতিগত সংখ্যালঘুদের অবদানকে সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলির একটি হিসাবে মনে করে। যাই হোক, নেতিবাচক সোভিয়েত উত্তরাধিকার — সীমান্ত এলাকায় বসবাসকারী জাতিগত সংখ্যালঘুদের মধ্যে রাষ্ট্রভাষা সম্পর্কে অজ্ঞতা — রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক জীবনে জাতিগত সংখ্যালঘুদের পূর্ণ একীকরণের পথে প্রধান বাধা হিসেবে থেকে গেছে। গত ৩০ বছরে শিক্ষাব্যবস্থায় কিছু সফল সংস্কার করা হয়েছে (যেমন, ২০০৪ সালে বোলোগনা সিস্টেমের সঙ্গে একীকরণ, ‘জর্জিয়ার সঙ্গে শিখুন এবং শেখান’‌ প্রকল্পের মাধ্যমে ইংরেজি ভাষা শিক্ষার বিকাশ ও প্রসার ইত্যাদি), তবে জর্জিয়ায় জাতিগত সংখ্যালঘু শিক্ষার সমস্যা সমাধানের জন্য ১+৪ প্রোগ্রামটি হল একক সবচেয়ে সফল প্রোগ্রাম।

জর্জিয়ার সংবিধান, সাধারণ শিক্ষা সংক্রান্ত জর্জিয়ার আইন the Law of Georgia on General education , ও জাতীয় পাঠ্যক্রম জাতিগত সংখ্যালঘুদের তাদের মাতৃভাষায় সম্পূর্ণ সাধারণ শিক্ষা গ্রহণের অধিকারের নিশ্চয়তা দেয়। যাই হোক, এ কথা প্রমাণিত যে স্বাধীনতার পরে জর্জিয়ান রাষ্ট্র উত্তরাধিকারসূত্রে যে নেতিবাচক ঐতিহাসিক উত্তরাধিকার পেয়েছিল — আর্মেনিয়ান ও আজারবাইজানি, এই দুটি প্রধান জাতিগত সংখ্যালঘুদের ঘনবসতিপূর্ণ অঞ্চলগুলিতে জর্জিয়ান ভাষার জ্ঞানের অভাব — শুধু সমগ্র জনসংখ্যার একত্রীকরণেই বাধা সৃষ্টি করে না, সেইসঙ্গেই এই বৃহৎ সংখ্যক সংখ্যালঘুদের বাধা দেয় উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করতে, যা শুধু জর্জিয়ানেই সম্ভব। ফলে তারা একটি স্থিতিশীল অর্থনীতি ও সমাজ গঠনে সম্পূর্ণরূপে একীভূত হতে পারে না। এই সমস্যা সমাধানের জন্য প্রয়োজন ছিল ব্যতিক্রমী প্রচেষ্টা এবং সরকারের তরফে একটি সামগ্রিক দৃষ্টিভঙ্গি। এই প্রয়াসের লক্ষ্য শুধু রাষ্ট্রভাষা শিক্ষাকে শক্তিশালী করা নয়, যা একটি দীর্ঘ ও সময়সাপেক্ষ প্রক্রিয়া, বরং জাতিগত সংখ্যালঘু ও টাইটিউলার মানুষের কুসংস্কার ও প্রতিরোধকেও কাটিয়ে ওঠা।

অতএব, প্রতিক্রিয়া হিসাবে, ২০০৯ সালে জর্জিয়ার শিক্ষা ও বিজ্ঞান মন্ত্রণালয় (এমওইএস) একটি উচ্চাভিলাষী ১+৪ কর্মসূচির বাস্তবায়ন শুরু করে।

১+৪ প্রোগ্রামের পেছনের ধারণাটি হল তাদের স্থানীয় (আজারবাইজানীয় ও আর্মেনিয়ান) ভাষায় (৩টি বাধ্যতামূলক বিষয়ে রাষ্ট্রীয় পরীক্ষার পরিবর্তে) শুধু সাধারণ দক্ষতার পরীক্ষা নেওয়ার মাধ্যমে ইউনিফাইড স্টেট পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া সহজতর করা, যার পরে ছাত্ররা সুযোগ পাবে জর্জিয়ান ভাষা নিবিড়ভাবে অধ্যয়ন করার জন্য ১ বছরের প্রস্তুতিমূলক কোর্স নিতে এবং তাদের পছন্দের বিভাগে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে।

প্রণোদনার শুরুতে মাত্র কিছু আজেরি ও আর্মেনিয়ান সংখ্যালঘু ছাত্র ১+৪ প্রোগ্রামে নথিভুক্ত হয়েছিল। তবে পরবর্তী বছরগুলিতে পরিস্থিতির উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়েছে। এখন প্রতি বছর সারা দেশে প্রায় ১,৩০০ শিক্ষার্থী উচ্চশিক্ষায় নাম লেখাতে এই প্রোগ্রামটি ব্যবহার করেছে। ওএসসিই হাইকমিশনার অন ন্যাশনাল মাইনরিটিজ (এইচসিএমএম)–এর কমিশন করা ‘‌আ স্টাডি অফ মাল্টিলিঙ্গুয়াল এজুকেশন ইন জর্জিয়া’‌ (২০১৫) অনুসারে, “জর্জিয়ার জাতিগত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের তরুণরা তাদের আর্থ–সামাজিক সুযোগ উন্নত করার উপায় হিসাবে জর্জিয়ান ভাষা শিখতে ক্রমশ বেশি করে আগ্রহী হচ্ছে।’‌’‌

যদিও ২০১০ সাল থেকে প্রোগ্রামের সুবিধাভোগীর সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে, তবুও এর আরও উন্নতির জন্য জায়গা রয়েছে। পরিসংখ্যান স্পষ্টভাবে দেখায় যে ‘‌১+৪’‌ সুবিধাভোগীদের শতাংশ মোট ছাত্র–আবেদনকারী জনসংখ্যার প্রায় ৫ শতাংশ। তুলনা করার জন্য, জর্জিয়ার সাধারণ জনসংখ্যা শুমারি (১০১৪) অনুসারে, জর্জিয়ার জনসংখ্যার ১৩.২ শতাংশ জাতিগতভাবে অ–জর্জিয়ান নাগরিক। এঁদের  মধ্যে আজারবাইজানীয় (৬.৩ শতাংশ), ও আর্মেনিয়ান (৪.৫ শতাংশ)৷

 জর্জিয়ানভাষী নয় এমন নথিভুক্ত শিক্ষার্থীদের সংখ্যা বছর অনুযায়ী:

পরবর্তী পদক্ষেপ হিসাবে এইচইআই–গুলি ১+৪ প্রোগ্রামের শিক্ষার্থীদের ইন্টার্নশিপের জন্য শূন্যপদ বরাদ্দ করতে বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় সংস্থার সঙ্গে সহযোগিতা করে। যেমন, জর্জিয়া আইভি–র অগ্রণী পাবলিক এইচইআই জাভাখিশভিলি তিবিলিসি স্টেট ইউনিভার্সিটি রাষ্ট্রীয় সংস্থা, স্থানীয় স্ব–সরকার সংস্থা এবং রাষ্ট্রীয় আইনের আইনি সংস্থাগুলিতে এক থেকে ছয় মাসের ইন্টার্নশিপের (বার্ষিক মোট ৫০০টি স্থান দেওয়া হয়) ব্যবস্থা করে।

সমীক্ষাগুলি দেখায় যে ১+৪ প্রোগ্রাম শুরু হওয়ার পর থেকে সিভিল সার্ভিসে (বিশেষ করে স্থানীয় পর্যায়ে) জাতিগত সংখ্যালঘুদের অংশগ্রহণ/কর্মসংস্থান ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পাচ্ছে, যদিও এটি এখনও নির্দিষ্ট অঞ্চলগুলির প্রভাবশালী জনসংখ্যার মধ্যে শতাংশের অনুপাতকে পুরোপুরি প্রতিফলিত করে না।

১+৪ প্রোগ্রাম যথেষ্ট সাফল্য পেয়েছে এবং প্রোগ্রামটির ইতিবাচক প্রভাব অসংখ্য আন্তর্জাতিক সংস্থা, যেমন ইসিআরআই,  এসিএফসিএন এম ও অন্যরা, উল্লেখ করেছে। কিন্তু ১২ বছরের অর্জিত অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে সংক্ষেপে বলা যেতে পারে যে প্রধান লক্ষ্যটি অর্জন করতে এবং প্রধান চ্যালেঞ্জগুলির মোকাবিলা করতে একটি বহুমুখী পদ্ধতি এবং বিভিন্ন ধরনের চ্যালেঞ্জের একযোগে প্রতিক্রিয়া প্রয়োজন, যার জন্য সরকারি সংস্থাগুলির পক্ষ থেকে অতিরিক্ত আর্থিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক প্রচেষ্টা প্রয়োজন। ১+৪ প্রোগ্রামটির আরও আধুনিকীকরণ ও বিকাশ প্রয়োজন, যেমন বর্তমান বাস্তবতার সঙ্গে মানানসই করা এবং চলতি চ্যালেঞ্জগুলির মোকাবিলা করা, বিশেষ করে ‘‌১+৪’‌ স্নাতকদের জন্য কর্মসংস্থান নীতি তৈরির ক্ষেত্রে।

পরিশেষে, যখন আমরা সোভিয়েত উত্তরাধিকারের কথা বলছি, তখন অন্যান্য প্রাক্তন সোভিয়েত প্রজাতন্ত্রের অনুশীলনের উল্লেখ আকর্ষণীয় ‌হলেও এই সংক্ষিপ্ত নিবন্ধে আমরা নিজেদের দক্ষিণ ককেশীয় প্রজাতন্ত্রগুলির — জর্জিয়া, আজারবাইজান ও আর্মেনিয়ার — অনুশীলনের পর্যবেক্ষণের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখছি। এ কথা উল্লেখ করা উচিত যে আর্মেনিয়া প্রজাতন্ত্রে জাতীয় সংখ্যালঘুদের জন্য শিক্ষার বিষয়টি আলোচ্যসূচিতে নেই, কারণ আর্মেনিয়া একটি একজাতি রাষ্ট্র। আজারবাইজানে, যেখানে ঐতিহাসিকভাবে জাতিগত জর্জিয়ান সংখ্যালঘুরা বসবাস করেন, মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে জর্জিয়ান ভাষায় একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ রয়েছে, যদিও উচ্চশিক্ষার প্রেক্ষাপটে কোনও বিশেষ কর্মসূচি নেই।


(এই প্রবন্ধটি ‘‌জি২০–থিঙ্ক২০ টাস্ক ফোর্স ৩: লাইফ, রেজিলিয়েন্স অ্যান্ড ভ্যালুজ ফর ওয়েলবিয়িং’‌ ধারাভাষ্য সিরিজের একটি অংশ)

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.