Author : N. Vedachalam

Published on Oct 12, 2023 Updated 0 Hours ago
ভারতের জলবায়ু লক্ষ্যে লিথিয়াম–ভিত্তিক এনার্জি স্টোরেজের ভূমিকা

বিদ্যুতের গ্রিডের সঙ্গে পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি ব্যবস্থার কার্যকর একীকরণ ও বৈদ্যুতিক যানবাহন (ইভি) ব্যবহার ত্বরান্বিত করা, উভয় ক্ষেত্রেই এনার্জি স্টোরেজ হল চাবিকাঠি। এই সংক্ষিপ্ত নিবন্ধটি লিথিয়াম–আয়ন (লি–আয়ন) ব্যাটারির প্রযুক্তিগত প্রবণতা নিয়ে আলোচনা করে এবং ভারতীয় শক্তি ও পরিবহণ ক্ষেত্রে এনার্জি স্টোরেজের প্রয়োজনীয়তার মূল্যায়ন করে। এখানে সারা বিশ্বজুড়ে উপকূলীয় ও উপকূল থেকে দূরবর্তী অবস্থানে কোথায় কোথায় লিথিয়াম ও কোবাল্ট পাওয়া যায় তার দিকে নজর দেওয়া হয়েছে; এবং লিথিয়াম ব্যাটারির পুনর্ব্যবহারযোগ্য ক্ষমতা বৃদ্ধি ও লিথিয়াম ব্যাটারির কাঁচামাল সরবরাহ শৃঙ্খল সুরক্ষিত করার জন্য দেশগুলির প্রচেষ্টা পরীক্ষা করে দেখা হয়েছে। নিবন্ধে অনুমান করা হয়েছে যে ভারতের শক্তি ও পরিবহণ ক্ষেত্রে সবুজ রূপান্তর আনতে প্রয়োজন ১২২ কিলোটন লিথিয়াম, ব্যাটারি গবেষণায় ভারী বিনিয়োগ, ব্যাপক উৎপাদন ক্ষমতা, বিদেশি সহযোগিতা, পরিবেশগত স্থায়িত্বের জন্য পুনর্ব্যবহারযোগ্য সুবিধা, এবং বিদেশ থেকে লিথিয়াম সম্পদ কেনা।


আরোপণ: বেদাচলম নারায়ণস্বামী, “দ্য রোল অফ লিথিয়াম–বেসড এনার্জি স্টোরেজ ইন ইন্ডিয়া’‌জ ক্লাইমেট গোলস,” ওআরএফ ইস্যু ব্রিফ নং ৬৪২, মে ২০২৩, অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশন।


ভূমিকা

পরিচ্ছন্ন শক্তি প্রযুক্তিতে বিশ্বব্যাপী বিনিয়োগ এখন ২.৬ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে। [১] গত তিন দশকে বেশ কয়েকটি বিশ্ব সম্মেলনের সিদ্ধান্ত অনুসরণ করে দেশগুলি তাদের কার্বন পদচিহ্ন কমাতে নিজেদের ন্যূনতম বাধ্যবাধকতা নির্ধারণ করেছে, এবং তাদের উৎপাদন ও শক্তির ব্যবহারে অধিকতর স্বচ্ছতা ও দায়বদ্ধতা নিয়ে এসেছে। ভারত ২০৩০ সালের মধ্যে তার ক্রমবর্ধমান নন–ফসিল জ্বালানি–ভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ৫০ শতাংশে উন্নীত করা, ২০০৫–এর মাত্রা থেকে ৩৫ শতাংশ নির্গমন তীব্রতা কমানো, এবং ২০৭০ সালের মধ্যে কার্বন–নিরপেক্ষ হওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। [২]

নবায়নযোগ্য শক্তির বর্ধিত ব্যবহার ও বৈদ্যুতিক গতিশীলতায় প্রাথমিক রূপান্তর এই লক্ষ্যগুলি অর্জনে এবং ভারতের হাইড্রোকার্বন আমদানি বিল কমাতে অবদান রাখবে। পরবর্তী দশকে লিথিয়াম–ভিত্তিক ব্যাটারিগুলি শক্তি ও পরিবহণে এনার্জি স্টোরেজ সিস্টেম (ইএসএস) স্থাপনে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

এই সংক্ষিপ্ত নিবন্ধে ভারতের শক্তি ও গতিশীলতা ক্ষেত্রে সবুজ রূপান্তর অর্জনের জন্য মূল প্রয়োজনগুলি নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। লেখক পূর্বানুমান করার জন্য ইন্ডিয়া এনার্জি সিকিউরিটি সিনারিও ২০৪৭ (আইইএসএস) মডেলিং অ্যান্ড সিমুলেশন সফটওয়্যার [ক] ব্যবহার করেছেন।

লিথিয়াম ব্যাটারি প্রযুক্তির ‌পর্যালোচনা

প্রথম বাণিজ্যিক লিথিয়াম–আয়ন (লি–আয়ন) ব্যাটারি ১৯৮৫ সালে বিকশিত হয়েছিল, এবং তখন থেকে প্রযুক্তিটি ক্রমশ উন্নত হয়েছে। এর সুবিধার মধ্যে রয়েছে উচ্চতর শক্তির ঘনত্ব (প্রতি কিলোগ্রাম ৭৫–২০০ ওয়াট–ঘণ্টা) [খ] ও নির্দিষ্ট ঘনত্ব (১৫০–৩১৫ ওয়াট–ঘণ্টা প্রতি লিটার), চক্রের স্থায়িত্ব, দক্ষতা এবং নির্ভরযোগ্যতা। পোর্টেবল ইলেকট্রনিক্স, পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি, স্মার্ট বৈদ্যুতিক গ্রিড, সড়ক যান ও সবুজ/হাইব্রিড জাহাজসহ বৈদ্যুতিক পরিবহণ, বিমান চালনা, মহাকাশ ও জলের নিচে ব্যবহার সহ লি–আয়ন ব্যাটারি প্রযুক্তিগুলির একটি বড় পদচিহ্ন রয়েছে।

অন্যান্য প্রযুক্তির তুলনায় লি–আয়ন–ভিত্তিক ইএসএস–এর পরিপক্বতার স্তর চিত্র ১–এ দেখানো হয়েছে। [৩] লি–আয়ন সেলগুলি ক্যাথোড (ঋণাত্মক) ইলেক্ট্রোড হিসাবে লিথিয়াম ট্রানজিশনাল মেটাল অক্সাইড, অ্যানোড (ধনাত্মক) ইলেক্ট্রোড হিসাবে গ্রাফাইট, এবং ইলেক্ট্রোলাইট হিসাবে অ–জলীয় কার্বনেটেড তরল ব্যবহার করে। সেলের চার্জ ও ডিসচার্জ ঘটে থাকে লিথিয়াম আয়নগুলির ইন্টারক্যালেশন ও ডি–ইন্টারকেলেশনের মাধ্যমে। চার্জিং প্রক্রিয়া চলাকালীন লিথিয়াম আয়নগুলি ক্যাথোড থেকে অ্যানোডে ইলেক্ট্রোলাইট জুড়ে স্থানান্তরিত হয়। ব্যবহৃত ইলেক্ট্রোড রসায়নের উপর ভিত্তি করে লিথিয়াম সেলের কর্মক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে পরিবর্তিত হয়।

চিত্র ১। এনার্জি স্টোরেজ সিস্টেমের প্রযুক্তিগত পরিপক্বতা

সূত্র:‌ মিতালি, দিনকরণ, ও মোহাম্মদ [৪]

ইলেক্ট্রোলাইট ও লিথিয়েটেড [সি] কার্বন হিসাবে কঠিন পলিমারের ব্যবহার লি–আয়ন সেলগুলির নিরাপত্তাকে ব্যাপকভাবে উন্নত করেছে। পরিপক্ব লিথিয়াম–ভিত্তিক সেল প্রযুক্তির প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলি সারণি ১–এ দেখানো হয়েছে। এলএফপি ও এলটিও যেমন খরচ কমায়, তেমনই নিরাপত্তা বাড়ায়। খরচ/কেডব্লিউএইচ হিসাবের ভিত্তি হল মার্কিন শক্তি বিভাগের ২০২২ সালের অনুমান, যেখানে কমপক্ষে ১০০,০০০ ইউনিট/বছরের আয়তনে উৎপাদনের জন্য ব্যবহারযোগ্য শক্তির হিসাব করা হয়েছে। ক্যাথোডের সংমিশ্রণে কোবাল্টের উপাদান কমলে তা খরচ কমায়, এবং অন্যান্য অ্যানোড প্রযুক্তির সঙ্গে সমন্বয়ে শক্তির ঘনত্ব বাড়ায়। আগামী লিথিয়াম ধাতব ক্যাথোডগুলি কোবাল্টের উপর নির্ভর না–করে সিলিকন কম্পোজিটের তৈরি অ্যানোডগুলির মাধ্যমে কর্মক্ষমতা উন্নত করবে বলে আশা করা হচ্ছে। লি–এয়ার ও লি–সালফার ব্যাটারির উপর গবেষণাও দ্রুত এগিয়ে চলেছে, কিন্তু তাদের প্রযুক্তি–প্রস্তুতির মাত্রা এখনও অনেক কম। সেগুলি ২০৩০–এর আগে বাণিজ্যিকভাবে উপলব্ধ নাও হতে পারে। [৫]

সারণি ১। লিথিয়ামভিত্তিক ইএসএসএর তুলনামূলক বৈশিষ্ট্য

সূত্র:‌ হ্যাড্রিয়েন, ল্যাগাডিক ও লুভেট [৬]

শক্তি ক্ষেত্রে লিথিয়াম ব্যাটারি
শক্তি ক্ষেত্রে চাহিদার পরিবর্তন, সর্বোচ্চ হ্রাস, কম্পাঙ্ক নিয়ন্ত্রণ, ভোল্টেজ সমর্থন এবং পুনর্নবীকরণযোগ্য সংস্থান একীকরণের কার্যকর ব্যবস্থাপনার জন্য ইএসএস–এর প্রয়োজন হয় (চিত্র ২ দেখুন)। [৭]

চিত্র ২। প্রয়োগের উপর ভিত্তি করে এনার্জি স্টোরেজ প্রযুক্তি

সূত্র:‌ লেখকের নিজস্ব

বিশ্বব্যাপী ইনস্টল করা ইএসএস–এর ক্ষমতা (পাম্প করা হাইড্রো বাদে) সারণি ২–এ দেখানো হয়েছে। ইলেক্ট্রো–রাসায়নিক–ভিত্তিক ইএসএসগুলি সর্বাধিক ব্যবহৃত হয়। ২৯২টি প্রকল্প জুড়ে ক্রমিকভাবে প্রায় ৬০০ মেগাওয়াটের ইনস্টলেশন ক্ষমতা–সহ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তালিকার শীর্ষে রয়েছে, তার পরে দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান ও জার্মানি রয়েছে যথাক্রমে ৩০০, ২৫০ ও ১২০ মেগাওয়াট–সহ।[৮] চিত্র ৩ বিভিন্ন ব্যাটারি রসায়নের ভাগ দেখায়, যা এই ধরনের স্টোরেজ ক্যাটারিংয়ে বিভিন্ন শক্তি ও সময়কালের জন্য ব্যবহৃত হয়।

সারণি ২। লিভিত্তিক ইএসএসএর তুলনামূলক বৈশিষ্ট্য

সূত্র:‌ মার্কিন শক্তি বিভাগ ও ন্যাশনাল এনার্জি টেকনোলজি [৯]

বিশ্ব স্তরে ইলেক্ট্রো–কেমিক্যাল–ভিত্তিক ইএসএস–এর মধ্যে সোডিয়াম–সালফার (এনএ–এস) ব্যাটারির অংশ ৫৯ শতাংশ, লি–আয়ন ২১ শতাংশ, সীসা–অ্যাসিড ১৩ শতাংশ, নিকেল–ক্যাডমিয়াম (এনআই–সিডি) ৫ শতাংশ, এবং রিডাক্স (রিডাকশন–অক্সিডেশন) ফ্লো রসায়ন ২ শতাংশ। এটি দেশগুলির মধ্যে তাদের পাওয়ার সিস্টেমের চাহিদার প্রকৃতি ও স্থিতিশীলতার প্রয়োজনীয়তা, ব্যাটারির কাঁচামালের অভ্যন্তরীণ প্রাপ্যতা, এবং প্রচলিত নীতির উপর ভিত্তি করে পরিবর্তিত হয়। চিনে লি–আয়ন, সীসা–অ্যাসিড ও রিডাক্স ফ্লো ব্যাটারির ব্যবহার যথাক্রমে ৭৪ শতাংশ, ১৭ শতাংশ ও ৯ শতাংশ; জাপানে এনএ–এস, লি–আয়ন, ফ্লো ও সীসা–অ্যাসিড ব্যাটারি যথাক্রমে ৪৮ শতাংশ, ৩৮ শতাংশ, ৮ শতাংশ ও ৪ শতাংশ অনুপাতে ব্যবহৃত হয়। এনএ–এস ব্যাটারি জাপান সহ বিশ্বব্যাপী কর্তৃত্বের আসনে রয়েছে। [১০]

চিত্র ৩। শক্তি ক্ষেত্রে ইলেক্ট্রোকেমিক্যাল ইএসএসএর ভাগ

সূত্র: https://netl.doe.gov/

ভারতের শক্তি ক্ষেত্রে প্রায় ১১ শতাংশ ইএসএস ব্যবহার করা হয় পুনর্নবীকরণযোগ্য বিদ্যুতের জন্য ব্যাকআপ হিসাবে, [ঘ] ১৬ শতাংশ বিদ্যুতের গুণমান ব্যবস্থাপনার জন্য, এবং অবশিষ্ট ৭৩ শতাংশ বিদ্যুৎ হ্রাস ও বিভ্রাট কাটিয়ে উঠতে। একটি সফটওয়্যার টুল ‘‌ইন্ডিয়া এনার্জি সিকিউরিটি সিনারিও (আইইএসএস) ২০৪৭, মডেলিং অ্যান্ড সিমুলেশনস’‌, [১১] ব্যবহার করে ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছে যে যদি একটি দৃঢ় প্রয়াস করা হয়, [ঙ] তবে ক্রমবর্ধমান পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি স্থাপনের ক্ষমতা ২০২২ সালের প্রায় ১১৯ জিডব্লিউ থেকে বেড়ে ২০৩০ সালে হবে ১৭৫ গিগাওয়াট।

পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তির ব্যবহার বৃদ্ধির জন্য, যার মধ্যে প্রায় ১০,০০০ বিতরিত মিনি ও মাইক্রো গ্রিড (প্রধান পাওয়ার গ্রিডের সঙ্গে সংযুক্ত নয়) থাকবে, অনেক বেশি স্টোরেজ ক্ষমতার প্রয়োজন হবে। শক্তির জন্য এর পরিমাণ প্রায় ৫৫ গিগাওয়াট এবং বিদ্যুতের প্রয়োজনের জন্য আরও ৪৫ গিগাওয়াট বলে অনুমান করা হয়েছে। সিমুলেশনের ফলাফলগুলি ২০৪৭ পর্যন্ত প্রতি পাঁচ বছরের ব্যবধানে শক্তি স্টোরেজ পোর্টফোলিও কেমন দাঁড়াবে তা পাম্পড–হাইড্রো, ইলেক্ট্রো–কেমিক্যাল ও অন্যান্য প্রযুক্তি অনুসারে শ্রেণিবদ্ধ করে চিত্র ৪–এ দেখানো হয়েছে। [১২] এই গণনা অনুসারে ইলেক্ট্রো–কেমিক্যালে মোট বিনিয়োগভিত্তিক ইএসএস ২০৩৭ থেকে পাম্প করা হাইড্রো স্টোরেজকে ছাড়িয়ে যাবে।

চিত্র ৪। ২০৪৭ পর্যন্ত ইএসএস পোর্টফোলিও

ইলেক্ট্রো–কেমিক্যালভিত্তিক ইএসএস প্রকল্পগুলির জন্য মূলধন খরচের প্রয়োজন আইইএসএস ২০৪৭ সিমুলেশন ব্যবহার করে ইনস্টলড জেনারেশন ক্ষমতার প্রয়োজনীয়তার ভিত্তিতে, এবং ওয়র্ল্ড এনার্জি কাউন্সিল দ্বারা প্রদত্ত বিভিন্ন ব্যাটারি রসায়নের জন্য মূলধন খরচ মডেল অনুসরণ করে, গণনা করা হয়েছে। সমস্ত ইলেক্ট্রোকেমিক্যাল ব্যাটারির খরচ, সেগুলি রেডক্স ফ্লো, এনএ–এস, সীসা–অ্যাসিড বা লি–আয়ন যাই হোক না কেন, এই দশকে কমবে বলে আশা করা হচ্ছে (চিত্র ৫ দেখুন)।

চিত্র ৫। ব্যাটারির জন্য মূলধন খরচ (২০২০ ও ২০৩০)

সূত্র:‌ লেখকের নিজস্ব

ইএসএস চাহিদা মেটাতে যদি ইলেক্ট্রোকেমিক্যাল ব্যাটারি ব্যবহার করা হয়, তাহলে ২০৩০ সাল পর্যন্ত প্রতিটি ধরনের ব্যাটারির জন্য মোট বিনিয়োগের প্রয়োজন চিত্র ৬–এ দেখানো হয়েছে। সীসা–অ্যাসিড ব্যাটারিগুলি সবচেয়ে সস্তা, তবে দক্ষতা এবং শক্তির ঘনত্ব কম। লি–আয়ন সবচেয়ে সাশ্রয়ী হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

চিত্র ৬। ইএসএস, বিভিন্ন ব্যাটারি রসায়নের জন্য, তুলনামূলক ক্রমবর্ধমান মূলধন খরচ

সূত্র:‌ লেখকের নিজস্ব

বৈদ্যুতিক গতিশীলতায় লিথিয়াম ব্যাটারি

বৈদ্যুতিক গাড়ির (ইভি) সুবিধাগুলি সুস্পষ্ট: শূন্য টেল–পাইপ নির্গমন, সামগ্রিক নির্গমন হ্রাস, শক্তি সুরক্ষা বৃদ্ধি, এবং উচ্চ নির্ভরযোগ্যতা। [চ] ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সি (আইইএ) আরও উল্লেখ করেছে যে ইভি ম্যানুফ্যাকচারিংয়ের ফলে নির্গমন গ্যাসোলিন গাড়ির তুলনায় প্রায় ৫০ শতাংশ কম এবং ডিজেল গাড়ির তুলনায় ৪০ শতাংশ কম হবে। [১৩] নীতিনির্ধারক ও স্বয়ংচালিত শিল্প উভয়ের কাছ থেকেই ইভি–র জন্য সমর্থন ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে, আর সরকার শূন্য–নিঃসরণকারী যানবাহন, কঠোর জ্বালানি অর্থনীতির মান, এবং ইভি–র জন্য আর্থিক প্রণোদনা (কিছু দেশে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত) দিচ্ছে। আইইএ পূর্বাভাস দিয়েছে যে ইভি–র জন্য ব্যাটারির চাহিদা ২০২০ থেকে ২০৪০–এর মধ্যে ৪০ গুণ বৃদ্ধি পাবে। [১৪] বিশ্বব্যাপী, ২০২০ সালে, আইসিই–এর পরিবর্তে ইভি গাড়ির ব্যবহার প্রায় ৩০ মিলিয়ন টন কার্বন ডাই অক্সাইড (এমটিসিওটু) নির্গমন কমিয়েছে।

সারণি ৩। ইভি ও চার্জিং ইনফ্রাস্ট্রাকচার, ২০২১

সূত্র:‌ ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সি [১৫]

২০৩০ সালের মধ্যে, যদি বর্তমান ইভি নীতিগুলি অব্যাহত থাকে, তাহলে চিনের মোট যানবাহন বহরে ইভি–র অনুমিত অংশ হবে ৫০ শতাংশ, জাপানের ৩৭ শতাংশ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৩০ শতাংশ, কানাডার ৩০ শতাংশ এবং ভারতের ২৯ শতাংশ। বিশ্বব্যাপী গড় দাঁড়াবে ২২ শতাংশের মতো।

আইইএ প্রতি বছর একটি ‘ওয়র্ল্ড এনার্জি আউটলুক’ প্রকাশ করে সরকার কর্তৃক প্রণীত নতুন শক্তি নীতির প্রভাব বিশ্লেষণ করে, যা শক্তি খরচের একটি ‘‌নিউ পলিসিজ সিনারিও’‌ (এনপিএস)। সারণি ৪–এর প্রথম কলামটিতে এর ২০২২ সালের প্রতিবেদনে ২০৩০ সালের মধ্যে হালকা–শুল্ক ইভি (অর্থাৎ ইভি প্যাসেঞ্জার কার)–র বিশ্বব্যাপী ভবিষ্যদ্বাণী দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও একটি বিশ্বব্যাপী প্রচারাভিযান রয়েছে ‘EV30@30’, যার লক্ষ্য ২০৩০ সালের মধ্যে বৈশ্বিক যানবাহন বিক্রয়ের ৩০ শতাংশে ইভি বিক্রয়কে উন্নীত করা। সংশ্লিষ্ট লক্ষ্য পরিসংখ্যান দ্বিতীয় কলামে দেওয়া হয়েছে।[১৬]

সারণি ৪। ইভি অনুপ্রবেশ এবং সুবিধার পূর্বাভাস

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে বিশ্বের ২০টি সবচেয়ে দূষিত শহরের মধ্যে ১৪টি ভারতে, যা দেশের জন্য ইভি গ্রহণ করা আরও বাধ্যতামূলক করে তুলেছে। ন্যাশনাল ইলেকট্রিক মোবিলিটি মিশন প্ল্যান (এনইএমএমপি) ২০২০, ফাস্টার অ্যাডপশন অ্যান্ড ম্যানুফ্যাকচারিং অফ হাইব্রিড অ্যান্ড ইলেকট্রিক ভেহিকলস (এফএএমই) (দুটি ধাপে, এফএএমই ১ (২০১৫–১৯) এবং এফএএমই ২ (২০১৯–২০২৪)), এবং ন্যাশনাল ই–মোবিলিটি প্রোগ্রাম হল ২০৩০ সালের মধ্যে ৩০ শতাংশ ইভি ব্যবহার অর্জনের কিছু প্রচেষ্টা। [১৭]

সারণি ৫। এফএএমইর প্রধান বৈশিষ্ট্য

সারণি ৬। ২০৩০ সালের মধ্যে ভারতে ইভির অনুমিত ব্যবহার

বেশ কয়েকটি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল তাদের নিজস্ব ইভি নীতি প্রণয়ন করেছে।

সারণি ৭। ইভি ব্যবহার প্রসারের জন্য নির্বাচিত রাজ্য/কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির কৌশল

ইভি ব্যবহারের ক্ষেত্রে প্রধান চ্যালেঞ্জগুলি হল গাড়ির উচ্চ খরচ, ব্যাটারি প্রযুক্তির জ্ঞানের অভাব, ব্যাটারি আমদানির উচ্চ খরচ, ব্যাটারির কাঁচামালের কম স্থানীয় প্রাপ্যতা, এবং বিদ্যুতের চাহিদার উপর ব্যাটারি চার্জিং পরিকাঠামোর সম্ভাব্য প্রভাব। সর্বোপরি, চার্জিং পরিকাঠামো ব্যাপকভাবে উপলব্ধ করা অত্যাবশ্যক; আশা করা হচ্ছে যে তা পরবর্তী ১০ বছরে ঘটবে, এবং একটি ইভি ও একটি আইসিই গাড়ির মালিকানার মোট খরচ (টিসিও) সমান হবে। বিশ্বব্যাপী, আজও, সমস্ত ইভি বিক্রয়ের ৩৩ শতাংশ হয় মাত্র ১৪টি শহরে, যেখানে চার্জিং পরিকাঠামো স্থাপন করা হয়েছে।

ভারতের জাতীয় ই–মোবিলিটি প্রোগ্রামের একটি মূল চালক হল এফএএমই প্রকল্প। ২০১৯ সালের এপ্রিলে শুরু হওয়া দ্বিতীয় ধাপটি চার্জিং পরিকাঠামোর উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে ২৪টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের ৬২টি শহরে ২,৬৩৬টি চার্জিং স্টেশন স্থাপনের জন্য ১৩৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বরাদ্দ করেছে। এফএএমই ১–এ চার্জিং স্টেশনগুলি সীমাবদ্ধ ছিল মেগাসিটি ও জাতীয় মহাসড়কে, তাও জাতীয় মহাসড়কে  প্রতি ৩×৩ কিমি গ্রিডে বা ১০০ কিমি–তে মাত্র একটি পাবলিক চার্জিং স্টেশন স্থাপনে।

অনেক ভারতীয় রাজ্য স্থানীয় চার্জিং প্রয়োজনীয়তা মেটাতে নীতিগ্রহণ করে কেন্দ্রের প্রচেষ্টাকে পরিপূরণ করছে। জিএসটি কাউন্সিল (যা পণ্য ও পরিষেবা কর নীতিগুলি নিয়ন্ত্রণ করে) চার্জিং স্টেশনগুলির জন্য জিএসটি ১৮ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করেছে। [১৮] ২০২৩ সালের প্রথম দিকে এফএএমই উদ্যোগের অধীনে সরকার ৩২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের প্রণোদনা প্রদান করেছে, যার ফলে ১.৬ মিলিয়ন ইভি বিক্রি হয়েছে (ভারতের যানবাহনের সংখ্যার প্রায় ১ শতাংশ)। ইলেকট্রিক বাস এখনও পর্যন্ত ১,৪৪৭টি মোতায়েন করা হয়েছে, যেখানে চার্জিং স্টেশন স্থাপন করা হয়েছে ৫৩২টি। এটি ইতিমধ্যে ২০০,০০০ টন জ্বালানি সংরক্ষণ করেছে এবং কার্বন ডাই অক্সাইড (সিওটু) নির্গমন ৪০০,০০০ টন হ্রাস করেছে বলে অনুমান করা হয়েছে।

চিত্র ৭। গ্রিডভিত্তিক ইভি চার্জিং পরিকাঠামোর বৃদ্ধি

আইইএসএস ২০৪৭ সিমুলেশন ব্যবহার করে দেখা যায় যে গ্রিড–ব্যাকড চার্জিং পরিকাঠামো ২০৩০ সালের মধ্যে প্রায় ১০ শতাংশ অন–রোড যানবাহনকে সমর্থন করবে (শক্তি খরচ প্রায় ১৪০ টিডব্লিউএইচ), এবং ২০৪৭ সালের মধ্যে প্রায় ৩৩ শতাংশকে (শক্তি খরচ ২৮০ টিডব্লিউএইচ)। বাকি ইভিগুলি স্ট্যান্ড–অ্যালোন ক্যাপটিভ সিস্টেম ব্যবহার করে বা ব্যাটারি–সোয়াপিং সুবিধার উপর ভিত্তি করে চার্জ করা হবে। এটি ২০৩০ সালের মধ্যে ১৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং ২০৪৭ সালের মধ্যে ৫৩০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের অপরিশোধিত তেল আমদানি সাশ্রয় করবে। এটি সড়ক পরিবহণ ক্ষেত্র থেকে ২০৩০ সালের মধ্যে ১ গিগাটন (১ বিলিয়ন মেট্রিক টন) এবং ২০৪৭ সাল নাগাদ ৫.৫ গিগাটন সিওটু নির্গমন কমিয়ে দেবে (‌সারণি ৭)। [১৯]

বিভিন্ন ক্ষেত্রজুড়ে ভারতে ইএসএস–এর বর্তমান শেয়ার এবং ২০৩২ সালে অনুমান করা অংশ সারণি ৮-এ দেখানো হয়েছে।

সারণি ৮। ইএসএস প্রয়োজনীয়তা (২০২৩ ও ২০৩২)

সূত্র:‌ ইন্ডিয়ান স্মার্ট গ্রিড ফোরাম [২০]

লিথিয়াম প্রয়োজনীয়তা এবং পুনর্ব্যবহারযোগ্যতা

বর্তমানে বিশ্বব্যাপী লিথিয়াম ব্যাটারি উৎপাদন ক্ষমতা প্রায় ৮ জিডব্লিউএইচ/বছর; ২০২৫ সালের পরে যে কারখানাগুলি চালু হবে তা এই ক্ষমতা ৩৫ জিডবলিউএইচ/বছরে উন্নীত করবে বলে আশা করা হচ্ছে। এর জন্য ১২৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার পর্যন্ত বিনিয়োগের প্রয়োজন হবে, যার মধ্যে ২০৩০ সালের মধ্যে ৩.৫ টিডব্লিউএইচ–এর ক্রমিক ক্ষমতা সহ ৩০টি বড় ব্যাটারি উৎপাদন কারখানা স্থাপন করা অন্তর্ভুক্ত। ‘‌বড়’‌ হল অপারেটিভ শব্দ, যেহেতু ব্যাটারি উৎপাদনে আয়তনের সাশ্রয়যোগ্যতাগুলি লিথিয়ামের খরচ কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। একটি সরকারি সমীক্ষায় ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে যে ৫ জিডবলিউএইচ/বছর ক্ষমতার একটি লি–আয়ন ব্যাটারি প্ল্যান্ট স্থাপনের জন্য ১৪৮ মার্কিন ডলার/কেডবলিউএইচ (মোট খরচ ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার) খরচ হবে, কিন্তু ২০০ জিডবলিউএইচ ক্ষমতা সম্পন্ন একটির জন্য মাত্র ৮৪ মার্কিন ডলার/কেডবলিউএইচ লাগবে। ২০৩০ সাল পর্যন্ত মোট ৬০৯ জিডবলিউএইচ শক্তির (গতিশীলতার জন্য ৩৯১.৬ জিডবলিউএইচ এবং শক্তির জন্য ২১৮ জিডবলিউএইচ) (সারণি ৬) জন্য ভারতের লিথিয়ামের প্রয়োজন অনুমান করা হয়েছে প্রায় ০.২ কেজি/কিলোওয়াট বা ১২২ কিলোটন।[২১]

বিশ্বের প্রায় অর্ধেক লিথিয়াম ও তামা উৎপাদন বর্তমানে উচ্চ জলের চাপের এলাকায় কেন্দ্রীভূত। লিথিয়াম খনন জলের সম্পদ এবং জলাভূমির সুরক্ষাকে বিরূপভাবে প্রভাবিত করে, কারণ এক টন লিথিয়াম আহরণের জন্য প্রায় ২,০০০ টন জলের প্রয়োজন হয়। লিথিয়াম খনন, এবং প্রকৃতপক্ষে অন্যান্য অনেক কৌশলগত ও বিরল ধাতু, খননের সময়ে বিষাক্ত উপপণ্য মুক্ত করতে পারে। তা ছাড়া শেষ হয়ে যাওয়া লিথিয়াম ব্যাটারি, যদি ট্রিট না করা হয়, তবে তার স্বাস্থ্য ও পরিবেশগত বিপদ রয়েছে। সুতরাং, লি–আয়ন ব্যাটারির পুনর্ব্যবহার অত্যাবশ্যক।[২২] পুনর্ব্যবহার করা শুধু নিষ্পত্তির প্রয়োজনীয়তাকে শেষ করে না, বরং তাজা ব্যাটারির জন্য কাঁচামালের প্রয়োজনীয়তাও হ্রাস করে। ২০৩০ সালের মধ্যে ১১ মিলিয়ন টনের বেশি শেষ–হওয়া লি–আয়ন ব্যাটারির পুনর্ব্যবহার করতে হবে, কিন্তু সেখানে অপেক্ষাকৃত কম রিসাইক্লিং ইউনিট রয়েছে, যেখানে প্রতি বছর ধারণক্ষমতা মাত্র ৩২৫ কেটি।[২৩]

সারণি ৯। লিআয়ন ব্যাটারি রিসাইক্লিং ইউনিট (বিদ্যমান এবং পরিকল্পিত)‌

সূত্র:‌ উইনডিশচ–কার্ন এবং অন্যরা;[২৪] ব্যম ও অন্যরা[২৫]

ফুরিয়ে যাওয়া লি–আয়ন ব্যাটারি সংগ্রহ, সঞ্চয়, পরিবহণ ও পুনর্ব্যবহার করার জন্য সুস্পষ্ট নির্দেশিকা তৈরি করা নিয়ে এখনও কাজ করা হচ্ছে। অনুমান করা হয় যে ২০২৫ সাল নাগাদ ব্যবহৃত মোট লিথিয়াম ব্যাটারির ৯ শতাংশ, সেইসঙ্গে কোবাল্ট ব্যাটারির ২০ শতাংশ, পুনর্ব্যবহার করা হবে৷ কনসালটেন্সি ফার্ম জেএমকে রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালিটিক্স–এর একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে ভারতীয় লি–আয়ন ব্যাটারির পুনঃচক্রীকরণ বাজার ২০২০ সালের প্রায় ৩ জিডবলিউএইচ থেকে ২০৩০ সালের মধ্যে প্রায় ৮০০ জিডবলিউএইচ–এ বৃদ্ধি পেতে চলেছে, যা পুনঃচক্রীকরণের জন্য ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বাজারের সুযোগ তৈরি করবে৷

লিথিয়াম ও কোবাল্ট সম্পদ প্রাপ্যতার চ্যালেঞ্জ

কাঁচামাল একটি ব্যাটারির খরচের ৪০ শতাংশ, যেখানে উৎপাদন ও প্যাকেজিং খরচ হল ৩০ শতাংশ। নিউ পলিসিজ সিনারিও (এনপিএস) অনুযায়ী অদূর ভবিষ্যতে, লি–আয়ন ব্যাটারিগুলি বেশিরভাগই হবে লিথিয়াম–নিকেল–ম্যাঙ্গানিজ–কোবাল্ট (এনএমসি) ব্যাটারি, আর তার মধ্যে এমএমসি ৬২২ হবে ৪০ শতাংশ ও এনএমসি ৮১১ হবে ৫০ শতাংশ। বাকি ১০ শতাংশ হবে লিথিয়াম–নিকেল–কোবাল্ট–অ্যালুমিনিয়াম অক্সাইড (এনসিএ) ব্যাটারি। এইভাবে, লি–আয়ন ব্যাটারির জন্য লিথিয়াম ছাড়াও প্রচুর পরিমাণে কোবাল্ট, ম্যাঙ্গানিজ, অ্যালুমিনিয়াম ও নিকেলের প্রয়োজন হবে। ২০৩০ সাল পর্যন্ত এইগুলির বিশ্বব্যাপী বছরপ্রতি প্রয়োজনীয়তা অনুমান করা হয়েছে কোবাল্ট  ১৭০ কিলোটন, ম্যাঙ্গানিজ ১০৫ কিলোটন, এবং নিকেল ৮৫০ কিলোটন। লিথিয়ামের জন্য আনুমানিক হিসাব হল বছরপ্রতি ১৫৫ কিলোটন। এগুলি কতটা প্রাপ্তিযোগ্য?

নিকেলের বিশ্বব্যাপী নিষ্কাশন হয় প্রতি বছর প্রায় ২,০০০ কিলোটন, এবং এটি প্রধানত উচ্চমানের ইস্পাত উৎপাদনের জন্য ব্যবহৃত হয়। ব্যাটারির জন্য শুধুমাত্র একটি ছোট ভগ্নাংশ ব্যবহার করা হয়। কোবাল্ট ও লিথিয়ামের ক্ষেত্রে, ২০২০ সালে, তাদের মোট চাহিদার প্রায় ৬ শতাংশ ও ৯ শতাংশ ইভি শিল্প থেকে এসেছে। তাদের দাম বর্তমানে এইরূপ: ম্যাঙ্গানিজ প্রতি টন ৩,০০০ মার্কিন ডলার, নিকেল প্রতি টন ২০,০০০ মার্কিন ডলার, লিথিয়াম প্রতি টন ৩০,০০০ মার্কিন ডলার, এবং কোবাল্ট প্রতি টন ৫০,০০০ মার্কিন ডলার। প্রধানত অনুমানমূলক মজুদ ও কৌশলগত সংগ্রহের কারণে কোবাল্ট ও লিথিয়ামের স্পট প্রাইস গত চার বছরে ২.৫ থেকে ৪ গুণ বেড়েছে (চিত্র ৮)। [২৬] এর ফলে ব্যাটারির দামও বেড়েছে। ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অফ কঙ্গোয় (ডিআরসি)  রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে ২০১৬–১৯ সালে কোবাল্টের দাম টন প্রতি ৪০,০০০ মার্কিন ডলার থেকে বেড়ে ৯০,০০০ মার্কিন ডলার হয়ে যায়। কঙ্গো বিশ্বব্যাপী চাহিদার ৭০ শতাংশ পূরণ করে।

চিত্র ৮। ব্যাটারি ধাতুর দাম বৃদ্ধি এবং ব্যাটারির দামের উপর প্রভাব

সূত্র:‌ ইউএস জিওলজিক্যাল সার্ভে [২৭]

ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক গুরুত্বের কারণে লিথিয়ামকে ‘‌সাদা পেট্রোলিয়াম’‌ বলা হয়। তার উপর লিথিয়াম, কোবাল্ট ও নিকেল সম্পদগুলি শুধুমাত্র কয়েকটি দেশে কেন্দ্রীভূত, যেমনটি সারণি ১০–এ দেখানো হয়েছে। সারণি ১১ এই ধাতুগুলির প্রতিটির জন্য শীর্ষ তিনটি খনিজ প্রক্রিয়াকরণের দেশগুলির তালিকা দিয়েছে৷ লিথিয়াম উৎপাদন ২০১০ সালের ২৮,০০০ টন থেকে বেড়ে ২০২০ সালে ৯৫,০০০ টন হয়েছে। [২৮]

সারণি ১০। শীর্ষ খনিজ উৎপাদনকারী দেশ

সারণি ১১। শীর্ষ তিনটি খনিজ প্রক্রিয়াকরণের দেশ

চিত্র ৯–এ কোবাল্টের ভৌগোলিক বণ্টন দেখানো হয়েছে। বিশ্বের স্থলজ কোবাল্ট সম্পদের প্রায় অর্ধেক আছে ডিআরসি–তে, মোট ৬.৯ মিলিয়ন টন। গভীর মহাসাগরের তলদেশে আরও অনেক বেশি কোবাল্ট আছে, প্রায় ১২০ মিলিয়ন টন, কিন্তু এর প্রায় পুরোটাই এখনও অব্যবহৃত।

চিত্র ৯. স্থল অঞ্চলে কোবাল্টের ভৌগোলিক বিতরণ

সূত্র:‌ ইউএস জিওলজিক্যাল সার্ভে [২৯]

লি–আয়ন ব্যাটারি সরবরাহ শৃঙ্খলের ভৌগোলিক বিস্তার চিত্র ১০–এ উপস্থাপন  করা হয়েছে, কোথায় লিথিয়াম খনন করা হয়, কোথায় এটি প্রক্রিয়াকরণ করা হয় এবং কোথায় বেশিরভাগ সেল ও ইভি তৈরি করা হয় তার বিবরণ–সহ। চিন বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম লিথিয়াম উৎপাদনকারী, তবে চিনা সংস্থাগুলি বিশ্বব্যাপী লিথিয়াম উৎপাদনের অর্ধেক এবং লি–আয়ন ব্যাটারি উৎপাদনের ৭০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ করে।

চিত্র ১০। বিশ্বব্যাপী ইভি ব্যাটারি সরবরাহ শৃঙ্খলের ভৌগোলিক বণ্টন

সূত্র:‌ ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সি [৩০]

ভারত কোথায় দাঁড়িয়ে? জিম্বাবোয়ের পরে ভারতে বিশ্বের বৃহত্তম ম্যাঙ্গানিজ আকরিক মজুদ রয়েছে। ম্যাঙ্গানিজ আকরিকের আনুমানিক মজুদ ৪০৬ মিলিয়ন টন, যার মধ্যে ১০৪ মিলিয়ন টন প্রমাণিত, ১৩৫ টন বিশ্বাসযোগ্য, এবং ১৬৭ টন সম্ভাব্য। ভারতে ১৮৯ মিলিয়ন টন নিকেল রয়েছে, যার ৯৩ শতাংশই ওডিশায় রয়েছে। লিথিয়াম সম্পদ প্রায় ১,৬০০ টন বলে অনুমান করা হয়। রাজস্থান ও গুজরাটের ব্রাইন পুল, ওডিশা ও ছত্তিশগড়ের মাইকা বেল্ট, এবং কর্ণাটকের মান্ডা অঞ্চলের মতো বিভিন্ন রাজ্যে লিথিয়াম আহরণের জন্য অনুসন্ধানমূলক কাজ চলছে। খনি মন্ত্রক তিনটি সংস্থাকে নিয়ে [জি] একটি যৌথ উদ্যোগ খনিজ বিদেশ ইন্ডিয়া লিমিটেড (কাবিল) তৈরি করেছে, যা বিদেশে কৌশলগত খনিজ সম্পদ আহরণ ও বিকাশ করতে চায়, বিশেষ করে লিথিয়াম ও কোবাল্ট। ভারতে কোবাল্টের কোনও আমানত নেই। ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে ভারত জম্মু ও কাশ্মীরের রিয়াসি জেলায় ৫.৯ মিলিয়ন-টনস্ট্যাশ লিথিয়াম মজুদ আবিষ্কারের কথা ঘোষণা করেছে।

উপকূলদূরবর্তী সম্পদ

জলের নিচের (নীল) খনিজ সম্পদের মধ্যে রয়েছে সমুদ্রতলের হাইড্রো–থারমাল ভেন্টের চারপাশে পলি–মেটালিক সালফাইড (যাতে প্রায়ই তামা থাকে), [জ] জলের নিচের পাহাড়ে কোবাল্ট–সমৃদ্ধ আবরণ, [ঝ] এবং সমুদ্রের তলদেশের নিচে পলি–মেটালিক ম্যাঙ্গানিজ। [ঞ] কোবাল্ট ক্রাস্ট মাইনিংয়ের সম্ভাব্য স্থানগুলির মধ্যে রয়েছে মার্কিন মালিকানাধীন জনস্টন দ্বীপের একচেটিয়া অর্থনৈতিক অঞ্চল, ফরাসি পলিনেশিয়া, কিরিবাতি প্রজাতন্ত্র, ফেডারেটেড স্টেটস অফ মাইক্রোনেশিয়া, এবং মার্শাল দ্বীপপুঞ্জের চারপাশের জল। এগুলি সবই প্রশান্ত মহাসাগরে (চিত্র ১১)। প্রশান্ত মহাসাগরের কিছু অংশে পলি–মেটালিক নডিউল সঞ্চয় আবিষ্কৃত হয়েছে — ক্ল্যারিওন–ক্লিপারটন জোন (সিসিজেড), পেনহ্যাইন বেসিন, পেরু অববাহিকা, এবং সেন্ট্রাল ইন্ডিয়ান ওশান বেসিনে (সিআইওবি)। যাই হোক, এগুলির খননের ফলে সম্ভাব্য পরিবেশগত ক্ষতির পরিপ্রেক্ষিতে প্রথমে খননের পরিবেশবান্ধব পদ্ধতিগুলির বিকাশ করতে হবে। [৩১]

চিত্র ১১। প্রধান সামুদ্রিক খনিজ আমানতের মানচিত্রায়ন

সূত্র:‌‌ বেদাচলম, রবীন্দ্রন, ও আত্মানন্দ [৩২]

ইউনাইটেড নেশনস ইন্টারন্যাশনাল সিবেড অথরিটি সারা বিশ্বে ১.৪ মিলিয়ন বর্গ কিলোমিটারেরও বেশি এলাকাজুড়ে বিভিন্ন দেশে খনিজ অনুসন্ধানের জন্য এবং বাণিজ্যিক খননের জন্য বিধি তৈরি করতে ২৭টি বরাত দিয়েছে।

উপকূলীয় খনিজ উত্তোলনের অর্থনীতিটি ব্যবহৃত খনিজ সংগ্রহের প্রযুক্তি, প্রাপ্ত খনিজগুলির মান ও টনের পরিমাণ, এবং সমুদ্রগর্ভের অবস্থার উপর নির্ভর করে। সমুদ্রতটের মাটির বৈশিষ্ট্য এবং ক্রলার–ভিত্তিক মাইনিং মেশিনের জন্য প্রযুক্তি ভারত, বেলজিয়াম ও স্পেনের মতো দেশে তৈরি করা হয়েছে, যার মধ্যে ভারতের ভারাহা, বেলজিয়ামের পাটানিয়া–২ ও স্পেনের অ্যাপোলো ২ রয়েছে। ৩৫ টন–এর পাটানিয়া–২ সিসিজেড–এ ৪,৫০০ মিটার গভীরতায় তার কার্যক্ষমতা প্রদর্শন করে ম্যাঙ্গানিজ নোডিউলস সংগ্রহ করেছে। অ্যাপোলো–২ প্রোটোটাইপটি দক্ষিণ স্পেনের উপকূলে বেশ কয়েক কিলোমিটার সমতল ও অসমতল নরম কর্দমাক্ত সমুদ্রতলে পরীক্ষা করা হয়েছে। সেখানে এটি কার্যকর প্রমাণিত হলেও কিছু জটিল বিষয়ও আলোতে এনেছে, যেগুলির জন্য আরও মনোযোগ দেওয়া প্রয়োজন। বেলজিয়ামের ২০২৪ সালে পাটানিয়া ৩ চালু করার কথা রয়েছে, যার ভেতরে নিষ্কাশিত নডিউলগুলিকে পৃষ্ঠতলের জাহাজে টেনে তোলার জন্য একটি ‘‌রাইজার অ্যান্ড লিফট’‌ ব্যবস্থা থাকবে। ভারতের আর্থ সায়েন্সেস–ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ওশান টেকনোলজি (এমওইএস–এনআইওটি) [৩৩] সিআইওবি–তে ৫,২৭০ মিটার গভীরতায় ভারতের খনন মেশিন ভারাহা পরীক্ষা করেছে, যেখানে এটি নরম পলি ও গভীর জলে কার্যকরভাবে চালিত হয়েছিল। এমওইএস–এনআইওটি একটি ক্র‌্যাশার ও উচ্চ ক্ষমতার পাম্পের মাধ্যমে ভারাহাকে উন্নত করছে। এমওইএস–এনআইওটি–র ৬,০০০ মিটার গভীরতার রিমোটলি অপারেটেড ভেহিকেল (রোজাব৬০০০) এবং ৬,০০০ মিটার গভীরতার স্বয়ংচালিত আন্ডারওয়াটার ভেহিকেল ওশান মিনারেল এক্সপ্লোরার (ওমি ৬০০০) টেকসই গভীর–সমুদ্রে খনিজ অনুসন্ধান করতে সক্ষম৷ ডিপ ওশন মিশন কর্মসূচির অধীনে ভারত বর্তমানে গভীর সমুদ্রে মানব মিশন চালনা করার জন্য এবং গভীর সমুদ্রের খনিজ সম্পদের সুনির্দিষ্ট মানচিত্রায়ন করার জন্য একটি ৬০০০ মিটার গভীরতার মানসম্পন্ন মানব বৈজ্ঞানিক সাবমারসিবল (মৎস্য৬০০০) তৈরি করছে। [৩৪]

খনন ক্ষমতা প্রদর্শনের পাশাপাশি পরিবেশগত প্রভাব মূল্যায়ন (ইইআইও) প্রতিবেদনটি এই সরকারগুলি ইন্টারন্যাশনাল সিবেড অথরিটির কাছে পেশ করবে। রাষ্ট্রীয় এক্তিয়ারের বাইরের সমুদ্রের জন্য একটি ব্যাপক সমুদ্রতল খননবিধিও তৈরি করতে হবে।

উপসংহার

ব্যাটারি প্রযুক্তির সাম্প্রতিক মূল্যায়ন বলছে যে আগামী দশকে এনার্জি স্টোরেজের জন্য লি–আয়ন ব্যাটারি সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত ব্যাটারি হবে। ভারতের উচ্চাভিলাষী জলবায়ু লক্ষ্য অর্জনের জন্য শক্তি ও বৈদ্যুতিক গতিশীলতা, এই উভয় ক্ষেত্রেই এনার্জি স্টোরেজের স্থাপনা বাড়াতে কার্যকর নীতির প্রয়োজন। প্রচলিত যানবাহন ও ইভির মধ্যে দামের ব্যবধান পূরণ করতে, আরও চার্জিং স্টেশন তৈরি করতে, মান নির্দিষ্টকরণ করতে, এবং পুনর্ব্যবহারকে উৎসাহিত করে লিথিয়াম ব্যাটারির অর্থনৈতিক মূল্য সর্বাধিক স্তরে উন্নীত করতে প্রণোদনা দেওয়া প্রয়োজন, যা পরিবেশগত স্থায়িত্বকেও উন্নীত করবে। যাই হোক, এটি নিশ্চিত করতে হবে যে অর্থনীতি ও কর্মসংস্থানের উপর ন্যূনতম প্রভাব সহ উত্তরণটি যেন মসৃণ হয়। বড় আকারের ব্যাটারি উৎপাদন কেন্দ্রগুলিতে বিনিয়োগের কথা ঘোষণা করা হয়েছে, যা ব্যাটারির খরচ কমিয়ে দেবে। ভারতের অভ্যন্তরে লিথিয়াম সম্পদের সন্ধান করা, এবং একইসঙ্গে বিদেশে খনিতে কৌশলগত বিনিয়োগ করা উভয়ই অপরিহার্য।

বর্তমানে বিশ্বে লি–আয়ন ব্যাটারির স্থাপিত ক্ষমতা প্রায় ৫০০ গিগাওয়াট ঘণ্টা — চিনে ৭২ শতাংশ, এশিয়ার বাকি অংশে ১৩ শতাংশ, উত্তর আমেরিকায় ৯ শতাংশ এবং ইউরোপে ৬ শতাংশ। এটি ২০৩০ সালের মধ্যে ৩,০০০ গিগাওয়াট ঘণ্টায় উন্নীত হওয়ার পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে, যেখানে চিনের অংশ দাঁড়াবে ৬৭ শতাংশ, এশিয়ার বাকি অংশে কমে হবে ৫ শতাংশ, আর ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকার অংশ বেড়ে গিয়ে যথাক্রমে ১৭ শতাংশ ও ১১ শতাংশ হবে। বিশ্বব্যাপী লি–আয়ন ব্যাটারি সরবরাহ শৃঙ্খলের ভৌগোলিক বণ্টন এবং খনির কাজে লিথিয়ামের উচ্চ চাহিদা দেশগুলির কৌশলগত বিনিয়োগ মূল্য এবং প্রতিযোগিতার উপর প্রভাব ফেলতে বাধ্য।

বিশ্বব্যাপী লিথিয়াম শৃঙ্খলে চিনের আধিপত্য স্পষ্ট। যদিও এটি শুধুমাত্র পঞ্চম বৃহত্তম লিথিয়াম উৎপাদনকারী, এটি বিশ্বব্যাপী লিথিয়াম উৎপাদনের অর্ধেক নিয়ন্ত্রণ করে। অন্য দেশগুলিও, নিশ্চিতভাবে বলা যায়, কঠোর পরিশ্রম করছে। বিতরণকৃত ব্যাটারি স্টোরেজ এবং শক্তিদক্ষ প্রযুক্তিতে ভর্তুকি দেওয়ার জন্য জাপান প্রায় ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বরাদ্দ করেছে। দেশটি লি–আয়ন ব্যাটারি স্থাপন করে এমন বাড়ি ও ব্যবসার জন্য খরচের ৬৬ শতাংশ ভর্তুকি দেয়, এবং আগামী দশকে বিশ্বের অর্ধেক ব্যাটারি উৎপাদন করবে বলে আশা করছে। ইউকে ঘোষণা করেছে ফ্যারাডে চ্যালেঞ্জ, যার মধ্যে ব্যাটারি গবেষণায় ০.৩২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করা হয়েছে। ইউএস ডিপার্টমেন্ট অফ এনার্জি ইতিমধ্যে অ্যানোড ও ক্যাথোড উভয়ের জন্য বাণিজ্যিকভাবে মাপযোগ্য উৎপাদন প্রক্রিয়াগুলিতে গবেষণায় ৮.৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করেছে।

ভারত ২০১৮–২২ এর মধ্যে ১.২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের লি–আয়ন ব্যাটারি আমদানি করেছে, যা ২০৩০ সালের মধ্যে প্রায় ৫০ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে। এটি হ্রাস করা প্রয়োজন, এবং সরকার ভারতে উৎপাদন কেন্দ্র স্থাপন করানোর জন্য নেতৃস্থানীয় গিগা–ব্যাটারি নির্মাতাদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে। একটি মার্কিন সংস্থা গুজরাটে একটি ব্যাটারি প্যাক উৎপাদন কেন্দ্রে ৫০০মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করছে৷

ভারতে মোটরগাড়ি ও সেলের নির্মাতারা উভয়ই এখনও শিখছে। ভারতের ব্যাটারি পোর্টফোলিওতে বৈচিত্র্য আনা অপরিহার্য, বিশেষ করে যেহেতু লিথিয়াম ও কোবাল্ট উভয়েরই দেশীয় সরবরাহ বর্তমানে নগণ্য। জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত গ্লাসগো কনফারেন্স অফ পার্টিস (কপ) ২০২১–এ প্রদত্ত প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী যদি ভারত ২০৭০ সালের মধ্যে নেট–শূন্য নির্গমনের লক্ষ্য অর্জন করতে চায় তাহলে সরকারি ও বেসরকারি উভয় ক্ষেত্রেই সোডিয়াম–আয়নের মতো বিকল্প ব্যাটারি প্রযুক্তির গবেষণায় বিনিয়োগ করতে হবে।


ডঃ এন বেদাচলম ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ওশান টেকনোলজির সিনিয়র বিজ্ঞানী এবং প্রোগ্রাম ডিরেক্টর, যা আর্থ সায়েন্স মন্ত্রকের অধীনে একটি স্বায়ত্তশাসিত সমুদ্র গবেষণা কেন্দ্র৷ তিনি এর আগে বিড়লা গ্রুপ, জেনারেল ইলেকট্রিক এবং অ্যালস্টম পাওয়ার কনভার্সন, ফ্রান্সের সঙ্গে কাজ করেছেন।


এন্ডনোট
[ক] আইইএসএস ২০৪৭ হল একটি এনার্জি সিনারিও বিল্ডিং টুল, যা ২০৪৭ পর্যন্ত ভারতের জন্য বিভিন্ন শক্তির চাহিদা ও সরবরাহ ক্ষেত্রের জন্য সম্ভাব্য ভবিষ্যৎ  শক্তি পরিস্থিতির একটি পরিসীমা অন্বেষণ করতে ব্যবহার করা যেতে পারে।

[খ]শক্তির ঘনত্ব হল একটি ব্যাটারিতে তার ওজনের তুলনায় যে পরিমাণ শক্তি থাকে, আর নির্দিষ্ট ঘনত্ব হল শক্তি প্রতি ইউনিট আয়তন। এটি ওয়াট–ঘণ্টা প্রতি কিলো (ডব্লিউএইচ/কেজি) এবং ওয়াট–ঘণ্টা প্রতি লিটারে (ডবলিউএইচ/এল) পরিমাপ করা হয়।

[গ] লিথিয়াম বা লিথিয়াম যৌগ দ্বারা সংস্থাপিত।

[ঘ] সৌর ও বায়ু শক্তি উভয়ই সহজাতভাবে শক্তির ‘অশান্ত’ উৎস, ২৪/৭ কখনওই পাওয়া যায় না।

[ঙ] যদি মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) বৃদ্ধির হার গড়ে ৮.৭ শতাংশ হয়, যদি জিডিপিতে উৎপাদনের অংশ বার্ষিক ১.১৩ শতাংশ বৃদ্ধি পায়, এবং নগরায়ণ বছরে ০.৭ শতাংশ বৃদ্ধি পায়।

[চ] এর কারণ হল তাদের ইঞ্জিনে প্রথাগত ইন্টারনাল কম্বাশন ইঞ্জিনের (আইসিই) তুলনায় কম যন্ত্রাংশ থাকে।

[ছ] এগুলি হল ন্যাশনাল অ্যালুমিনিয়াম কোম্পানি (ন্যালকো), হিন্দুস্তান কপার লিমিটেড (এইচসিএল) এবং মিনারেল এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড কনসালটেন্সি লিমিটেড (এমইসিএল)।

[জ] এগুলি লবণাক্ত জলের কারণে সৃষ্ট সমুদ্রের ভূত্বক থেকে জেট স্প্রে, এবং প্রায়শই এতে মূল্যবান খনিজ থাকে।

[ঝ] তলদেশের পাহাড়।

[ঞ]সমুদ্রের তল বরাবর একটি সমতল।

[১]মার্কিন শক্তি বিভাগ এবং জাতীয় শক্তি প্রযুক্তি ল্যাবরেটরি, প্রোজেক্ট পোর্টফোলিও ক্রসকাটিং রিসার্চ প্রোগ্রাম: এনার্জি স্টোরেজ, মে ২০২২, https://netl.doe.gov/sites/default/files/2022-05/ES-Portfolio_20220506.pdf.

[২] সতী, অখিলেশ, লিডিয়া পাওয়েল, ও বিনোদ কুমার তোমর, “ইন্ডিয়া’‌জ কপ২৬ প্লেজেস: অ্যাম্বিশাস, বাট অ্যাম্বিগুয়াস,” (২০২১), https://www.orfonline.org/expert-speak/indias-cop26-pledges-ambitious-but-ambiguous/

[৩] মিতালি জে, এস দীনকরণ, এবং এ এ মোহাম্মদ, “এনার্জি স্টোরেজ সিস্টেম: আ রিভিউ,” এনার্জি স্টোরেজ অ্যান্ড সেভিং (২০২২):১৬৬-২১৬,
https://doi.org/10.1016/j.enss.2022.07.002

[৪] মিতালি, দীনকরণ, এবং মোহাম্মদ, “এনার্জি স্টোরেজ সিস্টেম: আ রিভিউ “

[৫] ব্যাজোলে, হ্যাড্রিয়েন, মেরিয়ন ল্যাগাডিক, এবং নিকোলাস লুভেট, “লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারির ভবিষ্যৎ: বিশেষজ্ঞদের ধারণা, বাজারের প্রবণতা এবং মূল্যের পরিস্থিতির খতিয়ান,” এনার্জি রিসার্চ অ্যান্ড সোশাল সায়েন্স ৯৩ (২০২২): ১০২৮৫০।

[৬] হ্যাড্রিয়েন, ল্যাগাডিক এবং লুভেট, “লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারির ভবিষ্যৎ: বিশেষজ্ঞদের ধারণা, বাজারের প্রবণতা এবং মূল্যের পরিস্থিতির খতিয়ান”

[৭] বেদাচলম এন এবং এম এ আত্মানন্দ, “কৌশলগত ভারতীয় বিদ্যুৎ ক্ষেত্রে শক্তি সঞ্চয়ের প্রয়োজনীয়তার মূল্যায়ন,” দ্য ইলেকট্রিসিটি জার্নাল ৩১, নং ৭ (২০১৮): ২৬-৩২, https://doi.org/10.1016/j.tej.2018.08.003.

[৮] ইউএস ডিপার্টমেন্ট অফ এনার্জি এবং ন্যাশনাল এনার্জি টেকনোলজি ল্যাবরেটরি, প্রোজেক্ট পোর্টফোলিও ক্রসকাটিং রিসার্চ প্রোগ্রাম: এনার্জি স্টোরেজ, ২০২২

[৯]ইউএস ডিপার্টমেন্ট অফ এনার্জি এবং ন্যাশনাল এনার্জি টেকনোলজি ল্যাবরেটরি, প্রোজেক্ট পোর্টফোলিও ক্রসকাটিং রিসার্চ প্রোগ্রাম: এনার্জি স্টোরেজ, ২০২২

[১০] ইউ এস ডিপার্টমেন্ট অফ এনার্জি এবং ন্যাশনাল এনার্জি টেকনোলজি ল্যাবরেটরি, প্রোজেক্ট পোর্টফোলিও ক্রসকাটিং রিসার্চ প্রোগ্রাম: এনার্জি স্টোরেজ, ২০২২

[১১] নীতি আয়োগ, ২০২৩, ভারত সরকার, ভারতীয় শক্তি নিরাপত্তা পরিস্থিতি ২০৪৭, https://pib.gov.in/newsite/printrelease.aspx?relid=126412

[১২] শক্তি বিভাগ, রিপোর্ট: শক্তি সঞ্চয় প্রযুক্তি এবং খরচ বৈশিষ্ট্য, পিএনএনএল–২৮৮৬৬, ২০২১, https://www.energy.gov/sites/default/files/2019/07/f65/Storage%20Cost%20and% 20Performance%20Caracterization%20Report_Final.pdf

[১৩]আন্তর্জাতিক শক্তি সংস্থা (আইইএ), প্যারিস, রিপোর্ট: বৈদ্যুতিক যানবাহন, ২০২২, https://www.iea.org/reports/electric-vehicles

[১৪] আন্তর্জাতিক শক্তি সংস্থা (আইইএ), প্যারিস, রিপোর্ট: পরিচ্ছন্ন শক্তিতে রূপান্তরে খনিজের ভূমিকা–পরিচ্ছন্ন শক্তিতে রূপান্তরে খনিজ প্রয়োজনীয়তা, ২০২১, https://www.iea.org/reports/the-role-of-critical-minerals-in-clean-energy-transitions/mineral-requirements-for-clean-energy-transitions

[১৫] আন্তর্জাতিক শক্তি সংস্থা, গ্লোবাল ইলেকট্রিক ভেহিকল আউটলুক ২০২২ – ক্রস মডেল বিদ্যুদয়নের দিকে, https://www.iea.org/reports/global-ev- 2021,https://www.iea.org/reports/the-role-of-critical-minerals-in-clean-energy-transitions/mineral-requirements-for-clean-energy-transitions

[১৬] ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সি, গ্লোবাল ইলেকট্রিক ভেহিকল আউটলুক ২০২২– ক্রস মডেল ইলেকট্রিফিকেশনের দিকে, ২০২২।

[১৭]ভারত সরকার, ব্যাকগ্রাউন্ড নোট: ই-বাহন: সমস্যা, প্রতিশ্রুতি এবং চ্যালেঞ্জ, LARRDIS NO. AJNIFM/3/2022, https://parliamentlibraryindia.nic.in/lcwing/E-vehicles-Issues%20Promises%20and%20Challenges.pdf

[১৮] রুমি আইজাজ, “ইলেকট্রিক ভেহিকলস ইন ইন্ডিয়া: ফিলিং দ্য গ্যাপস ইন  অ্যাওয়ারনেস অ্যান্ড পলিসি,” ওআরএফ অকেশনাল পেপার নং ৩৭৩, অক্টোবর ২০২২, অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশন।

[১৯] এন বেদাচলম, “বিল্ডিং রেজিলিয়েন্স ইন ইন্ডিয়ান পাওয়ার সেকটর,” ওআরএফ অকেশনাল পেপার নং ৩৬৩, আগস্ট ২০২২, অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশন।

[২০] ইন্ডিয়ান স্মার্ট গ্রিড ফোরাম, রিপোর্ট: এনার্জি স্টোরেজ সিস্টেম – রোডম্যাপ ফর ইন্ডিয়া, ২০১৯-২০৩২, https://www.niti.gov.in/sites/default/files/2019-10/ISGF-Report-on- Energy-Storage-System-%28ESS%29-Roadmap-for-India-2019-2032.pdf.

[২১] পাগলিয়ারো, মারিও ও ফ্রান্সেস্কো মেনেগুজ্জো, “লিথিয়াম ব্যাটারি পুনর্ব্যবহার ও পুনঃচক্রীকরণ: একটি বৃত্তাকার অর্থনীতির অন্তর্দৃষ্টি,” হেলিয়ন ৫, নং ৬ (২০১৯): ইও১৮৬৬।

[২২] ভেরা, মারিয়া এল, ওয়াল্টার আর টরেস, ক্লডিয়া আই গ্যালি, আলেকজান্ডার চ্যাগনেস, এবং ভিক্টোরিয়া ফ্লেক্সার, “ব্রিন থেকে সরাসরি লিথিয়াম নিষ্কাশনের পরিবেশগত প্রভাব,” নেচার রিভিউজ আর্থ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট (২০২৩): ১-১৭, https://doi.org/10.1038/s43017-022-00387-5

[২৩]ঝো, লি-ফেং, ডংরুন ইয়াং, তাও ডু, হে গং, এবং ওয়েন-বিন লুও, “ব্যয়কৃত লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারির পুনর্ব্যবহার করার বর্তমান প্রক্রিয়া,” ফ্রন্টিয়ার্স ইন কেমিস্ট্রি ৮ (২০২০): ৫৭৮০৪৪, https://doi.org/10.3389/fchem.2020.578044.

[২৪] উইন্ডিশ-কার্ন, স্টেফান, ইভা জেরল্ড, টমাস নিগল, আলেকজান্ডার জান্ড্রিক, মাইকেল আলটেনডর্ফার, বেটিনা রুট্রেখ্ট, সিলভিয়া শেরহাউফার ও অন্যরা, “লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারির জন্য রিসাইক্লিং চেন: বর্তমান চ্যালেঞ্জ, সুযোগ এবং প্রক্রিয়া নির্ভরতার একটি সমালোচনামূলক পরীক্ষা,” ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট ১৩৮(২০২২): ১২৫-১৩৯, https://doi.org/10.1016/j.wasman.2021.11.038

[২৫] ব্যম, জাচারি জে, রবার্ট ই বার্ড, জিয়াং ইউ, এবং জিয়া মা, “লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারি পুনর্ব্যবহার ─ কৌশল এবং প্রবণতার পর্যালোচনা,” (২০২২) ৭১২-৭১৯,: https://doi.org/10.1021/acsenergylett.1c02602.

[২৬] কাভানাগ, লরেন্স, জেরোম কেওহান, গুইওমার গার্সিয়া ক্যাবেলোস, অ্যান্ড্রু লয়েড, ও জন ক্লিয়ারি, “বিশ্বের লিথিয়াম উৎস—ইলেকট্রিক যান শিল্পে ব্যবহার এবং শিল্পের ভবিষ্যৎ: একটি পর্যালোচনা,” রিসোর্সেস ৭, নং ৩ (২০১৮): ৫৭, https://doi.org/10.3390/resources7030057

[২৭] ইউএস জিওলজিক্যাল সার্ভে, মিনারেল কমোডিটি সারভিসেস ২০১৯,
https://d9-wret.s3.us-west-2.amazonaws.com/assets/palladium/production/atoms/files/mcs2019_all.pdf

[২৮] বেদাচলম এন, এম রবীন্দ্রন, এবং এম এ আত্মানন্দ, “কৌশলগত ভারতীয় নীল অর্থনীতির জন্য প্রযুক্তিগত উন্নয়ন,” মেরিন জিওরিসোর্স অ্যান্ড জিওটেকনোলজি ৩৭, নং ৭ (২০১৯): ৮২৮-৮৪৪, https://doi.org/10.1080/1064119X.2018.1501625

[২৯] ইউএস জিওলজিক্যাল সার্ভে, মিনারেল কমোডিটি সারভিসেস

[৩০] ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সি প্রকাশনা, গ্লোবাল সাপ্লাই চেন অফ ইভি ব্যাটারিজ, ২০২২,
https://www.iea.org/reports/global-supply-chains-of-ev-batteries

[৩১] বেদাচলম, রবীন্দ্রন, এবং আত্মানন্দ, “কৌশলগত ভারতীয় নীল অর্থনীতির জন্য প্রযুক্তি উন্নয়ন”

[৩২] বেদাচলম, রবীন্দ্রন, এবং আত্মানন্দ, “কৌশলগত ভারতীয় নীল অর্থনীতির জন্য প্রযুক্তি উন্নয়ন”

[৩৩] মিনিস্ট্রি অফ আর্থ সায়েন্সেস (এমওইএস),https://moes.gov.in/.2022

[৩৪] বেদাচলম, রবীন্দ্রন, এবং আত্মানন্দ, “কৌশলগত ভারতীয় নীল অর্থনীতির জন্য প্রযুক্তির উন্নয়ন”

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.