Author : Talal Rafi

Published on Dec 19, 2024 Updated 0 Hours ago

শ্রীলঙ্কার অদক্ষ ও ব্যয়বহুল রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন উদ্যোগগুলির দেশের বর্তমান অর্থনৈতিক সঙ্কটে একটি বড় ভূমিকা রয়েছে, যে কারণে এগুলির পুনর্গঠন ও সংস্কার প্রয়োজন

রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন উদ্যোগ: শ্রীলঙ্কার অর্থনৈতিক সংকটের একটি প্রধান কারণ?

শ্রীলঙ্কায় প্রেসিডেন্ট অনুরা কুমারা দিসানায়েকের নতুন সরকার রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন উদ্যোগ (এসওই) শ্রীলঙ্কান এয়ারলাইন্স বিক্রি না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ৷ এই সিদ্ধান্তটি প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমসিংহের সরকারের কাজকেই প্রতিফলিত করে, যিনি জুলাই মাসে শ্রীলঙ্কা এয়ারলাইন্সকে বেসরকারিকরণের পরিকল্পনাও বাতিল করেছিলেন। রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন উদ্যোগগুলি কয়েক দশক ধরে শ্রীলঙ্কার অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলেছে। বিদ্যুতের ব্ল্যাকআউট এবং জ্বালানির জন্য দীর্ঘ লাইনের মধ্যে শ্রীলঙ্কা ২০২২ সালের এপ্রিল মাসে তার সার্বভৌম ঋণ পরিশোধের কিস্তি দিতে ব্যর্থ হয়েছিল , এবং এর কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের রিজার্ভ ৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের নিচে নেমে গিয়েছিল। দেশটি এখনও তার স্বাধীনতার পর থেকে সবচেয়ে খারাপ অর্থনৈতিক সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, এবং বর্তমানে তার ১৭তম আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে। এটি তার বৈদেশিক ঋণদাতাদের সঙ্গে ঋণ পুনর্গঠন আলোচনা চূড়ান্ত করার প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে।


বিদ্যুতের ব্ল্যাকআউট এবং জ্বালানির জন্য দীর্ঘ লাইনের মধ্যে শ্রীলঙ্কা এপ্রিল ২০২২ সালে তার সার্বভৌম ঋণ পরিশোধের কিস্তি দিতে হ্যর্থ হয়েছিল, এবং এর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ ৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের নিচে নেমে গিয়েছিল।



শ্রীলঙ্কার অর্থনৈতিক সঙ্কটের স্বল্পমেয়াদি কারণগুলির জন্য মূলত ২০১৯ সালে ক্ষমতায় আসা সরকারকে দায়ী করা যেতে পারে। এটি বেশ কিছু বিপর্যয়কর  অর্থনৈতিক নীতিগত ভুল করেছিল, যার মধ্যে ছিল
এমন করহ্রাস যা বহনের ক্ষমতা দেশটির ছিল না, এবং তার ফলে শ্রীলঙ্কা আন্তর্জাতিক পুঁজিবাজারে প্রবেশাধিকার হারিয়েছিল। পরে দেশটি আধুনিক মুদ্রা পদ্ধতি গ্রহণ করে মুদ্রার পেগিং করে এবং রাসায়নিক সারের উপর রাতারাতি নিষেধাজ্ঞা জারি করে। ২০২০ সালের শুরুর দিকের আগে তারা আইএমএফ-‌এর সঙ্গে যোগাযোগও করেনি। তবে শ্রীলঙ্কার অর্থনৈতিক সঙ্কটের কাঠামোগত কারণও রয়েছে: দশকের পর দশক ধরে বৃহৎ রাজস্ব ঘাটতি পূরণ করতে ঋণ নিয়ে ও নোট ছাপিয়ে অর্থায়ন (‌মানিটারি ফিনান্সিং)‌, রাজনৈতিক দলগুলির ভর্তুকি ও সরকারি চাকরির প্রতিশ্রুতি দেওয়ার সংস্কৃতি যা লোকসানে চলা এসওই তৈরি করেছে, বিশেষ করে ১৯৯০-এর দশকের মাঝামাঝি থেকে কম কর-জিডিপি অনুপাত, সুরক্ষাবাদী নীতি, মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির (এফটিএ) অভাব, ব্যবসার স্বাচ্ছন্দের ক্ষেত্রে নিম্ন অবস্থান, নীতির ক্ষেত্রে অসামঞ্জস্য, এবং সেকেলে ভূমি ও শ্রম আইন।

শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন উদ্যোগের সুযোগ নষ্টজনিত ব্যয়

ভারত তার জিডিপির
১.৫ শতাংশের বেশি সড়ক ও রেলপথে ব্যয় করবে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। তুলনামূলকভাবে, শ্রীলঙ্কার জাতীয় বিমান সংস্থাগুলি শ্রীলঙ্কার জিডিপির ১ শতাংশের বেশি লোকসান করেছে। ২০২২ সালের প্রথম চার মাসে শ্রীলঙ্কার একটি রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান (এসওই) সিলোন পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের ক্ষতির পরিমাণ ২০২৩ সালের জন্য শ্রীলঙ্কার শিক্ষা ও স্বাস্থ্য বাজেটের চেয়ে বেশি ছিল। এই দুটি তথ্য শুধুমাত্র এসওই ক্ষয়ক্ষতির আর্থিক খরচ নয়, বরং পরিকাঠামো, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যক্ষেত্রে বিনিয়োগ কম করার সুযোগ নষ্টজনিত ব্যয় (‌অপরচুনিটি কস্ট)‌ দিকেও দৃষ্টি আকর্ষণ করে, যা দীর্ঘমেয়াদি আর্থ-সামাজিক প্রভাব ফেলে।


২০২২ সালের প্রথম চার মাসে শ্রীলঙ্কার একটি রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান (এসওই) সিলোন পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের ক্ষতির পরিমাণ ২০২৩ সালের জন্য শ্রীলঙ্কার শিক্ষা ও স্বাস্থ্য বাজেটের চেয়ে বেশি ছিল।



এসওই ক্ষতির জন্য দায়ী করা যেতে পারে অ-‌ব্যবস্থাপনা, অতিরিক্ত কর্মী, আর্থিক  হিসাব প্রকাশের অভাব এবং বাজেট-‌সীমাবদ্ধতার অভাব। এটাও মজার বিষয় যে বেসরকারি ক্ষেত্রের তুলনায় এসওই-তে শ্রম খরচ
৭০ শতাংশ বেশি, যা রাজস্ব নীতির উপর চাপ বাড়ায়। ২০২১ সালে শ্রীলঙ্কায় সরকারি রাজস্বের ৮৬ শতাংশ রাষ্ট্রীয় ক্ষেত্রের কর্মচারীদের বেতন ও পেনশনের জন্য অর্থ প্রদানে ব্যয় করা হয়েছে। এটি আর্থিক নীতি-নির্ধারণের উপর সরাসরি প্রভাব ফেলে, কারণ সরকার যখন পরিকাঠামো, শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং গবেষণা ও উন্নয়নে ব্যয় করার ক্ষেত্রে গুরুতরভাবে বাধাগ্রস্ত হয়, তখন অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি মন্থর হয়।

অদক্ষ এসওই পরিচালনার ব্যয় শুধুমাত্র আর্থিক নয়, বরং সামগ্রিকভাবে অর্থনীতিতে এর ব্যাপক প্রভাব রয়েছে। যেহেতু শ্রীলঙ্কা বিশ্বের সর্বনিম্ন কর-জিডিপি অনুপাতের মধ্যে একটি, এসওই-‌গুলিকে টিকিয়ে রাখার জন্য পরবর্তী সরকারগুলি নোট ছাপিয়ে অর্থায়নের আশ্রয় নিয়েছে, যার ফলে দক্ষিণ এশিয়ার বাকি অংশের তুলনায় দেশটিতে ধারাবাহিকভাবে উচ্চ মূল্যস্ফীতির হার রয়েছে। এটি উচ্চ সুদের হারের দিকেও চালিত করেছে, যার ফলে শ্রীলঙ্কার ব্যবসার জন্য উচ্চতর ঋণ-‌ব্যয় হয়েছে, যা তাদের বিশ্বব্যাপী একটি অসুবিধার মধ্যে ফেলেছে। ট্রেজারি এছাড়াও ঋণ অর্থায়ন এবং ঋণ ব্যবহার করেছে, বিশেষ করে দুটি রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাঙ্ক থেকে, যার ফলে বেসরকারি ক্ষেত্রের উচ্চতর ঋণ-‌ব্যয় হয়েছে। মূলত এসওই-এর মাধ্যমে মানুষের নিযুক্তির ব্যবস্থা করা হয়েছে, এবং এর সংখ্যা
প্রায় ১.৪ মিলিয়ন মানুষ। এটি মোট শ্রমশক্তির ছয়জনের মধ্যে একজনকে বোঝায়, যার ফলে বেসরকারি ক্ষেত্রের জন্য শ্রমের ঘাটতি রয়েছে।


কিছু নেতিবাচক প্রভাব হল লোকসানে চলা এসওই টিকিয়ে রাখার জন্য উচ্চতর ঋণ ব্যয়, এসওই-র জন্য সরকারি ব্যয়ের কারণে মূলধন ও শ্রমের উপর প্রভাব এবং বেসরকারি ক্ষেত্রে কর্মীর অভাব।



এ কথা সত্য যে রাষ্ট্রীয় কর্মচারীদের পেনশনের ব্যবস্থা থাকায় মানুষ সরকারি চাকরি খোঁজার জন্য উৎসাহিত হন, যা আংশিকভাবে ব্যাখ্যা করে যে কেন শ্রীলঙ্কার জনসংখ্যার একটি কম শতাংশ উদ্যোক্তা হচ্ছে। কিছু নেতিবাচক প্রভাব হল লোকসানে চলা এসওই টিকিয়ে রাখার জন্য উচ্চতর ঋণ ব্যয়, এসওই-গুলির জন্য সরকারি ব্যয়ের কারণে মূলধন ও শ্রমের উপর প্রভাব এবং বেসরকারি ক্ষেত্রে কর্মীর অভাব। জ্বালানি, টেলিকম ও বন্দরের মতো গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে অদক্ষ এসওই-‌গুলি তাদের উপর নির্ভরশীল অন্য অনেক শিল্পকে ধীরগতিসম্পন্ন করে দিয়েছে। এই কারণগুলি কয়েক দশক ধরে
শ্রীলঙ্কার ধীরগতি অর্থনৈতিক বৃদ্ধিতে অবদান রেখেছে।

সুপারিশ

শ্রীলঙ্কায় রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন উদ্যোগগুলি যেহেতু বৃহত্তর অর্থনীতির অর্থনৈতিক ক্ষতি করে, তাই এই সমস্যাগুলির সম্ভাব্য সমাধানগুলি নিচে অন্বেষণ করা হয়েছে:

স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা বাড়ানো: প্রথম ধাপ হবে স্ট্যান্ডার্ড রিপোর্টিং সিস্টেম প্রতিষ্ঠা করা। এটি সরকারকে এসওই-এর কর্মক্ষমতা নিরীক্ষা ও মূল্যায়ন করতে এবং তারা কীভাবে কর্পোরেট গভর্নেন্স স্ট্যান্ডার্ড মেনে চলে তা খতিয়ে দেখার  সুযোগ দেবে। ক্লিয়ার কী পারফরম্যান্স ইন্ডিকেটর (কেপিআই) এবং তার লক্ষ্যগুলি নির্দিষ্ট করা উচিত, যার মধ্যে আর্থিক লক্ষ্য, টেকসই লক্ষ্য এবং মূলধন কাঠামোর উদ্দেশ্য অন্তর্ভুক্ত। যোগ্যতার ভিত্তিতে একটি স্বাধীন পরিচালনা পর্ষদ নিয়োগ করতে হবে। এর অর্থ এই যে পারিশ্রমিক উচ্চ স্তরে রাখা উচিত, যাতে তারা প্রতিভাবান ও যোগ্য পেশাদারদের আকর্ষণ করতে পারে। একটি কাঠামো তৈরি করা উচিত যা প্রতিষ্ঠানে স্পষ্ট দায়িত্ব এবং কর্তৃত্বের স্তর নির্ধারণ করবে। জনসাধারণের কাছে প্রাপ্তিযোগ্য বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ করার প্রয়োজনীয়তা বোঝা উচিত। যদি সরকার পরে বেসরকারিকরণের সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলে এসওই-গুলিতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা তাদের বিনিয়োগকারীদের কাছে আরও আকর্ষণীয় করে তুলবে। নিচের গ্রাফটি দেখায় যে ২০২১ সালে ৫২টি মূল এসওই-এর জন্য, তাদের অর্ধেকের বেশির কাছে কোনও উপলব্ধ আর্থিক ডেটা নেই বা শুধুমাত্র ২০১৭ পর্যন্ত ছিল।

 State Owned Enterprises A Major Cause For Sri Lanka S Economic Crisis

সূত্র: 
Publicfinance.lk

এসওই পুনর্গঠন: এসওই-‌গুলির তাদের মূল লক্ষ্যগুলিকে এমনভাবে পুনরায় সংগঠিত করতে হবে যা অর্থনৈতিক বৃদ্ধিকে উৎসাহিত করবে বা দক্ষতার সঙ্গে ও সাশ্রয়ীভাবে প্রয়োজনীয় পরিষেবা প্রদান করবে। এটি লক্ষ্যযুক্ত কর্মক্ষমতা পরামিতি অনুযায়ী ক্রিয়াকলাপগুলিকে সারিবদ্ধ করবে। যেহেতু এসওই-গুলিতে অতিরিক্ত কর্মী রয়েছে, তাদের পুনর্গঠন অপ্রয়োজনীয় কর্মী কমাতে পারে এবং দক্ষতা বাড়াতে পারে। একটি মেদহীন এসওই অতঃপর ডিজিটাইজেশন ও উদ্ভাবন  ব্যবহার করে বাকি অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, শ্রীলঙ্কা টেলিকমের বেসরকারিকরণ ১৯৯০-এর দশকে টেলিকম শিল্পের উদারীকরণকে উৎসাহিত করেছিল, যা
১৯৯৮-৯৯ সালে ৪৫ শতাংশ বার্ষিক বৃদ্ধির হার সহ টেলিকম ক্ষেত্রে দ্রুত বৃদ্ধির কারণে শ্রীলঙ্কার অর্থনীতির জন্য ব্যাপক ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছিল। নন-কোর অ্যাসেট বিক্রি করা হলে তা ভবিষ্যৎ বিনিয়োগের জন্য প্রয়োজনীয় মূলধন যোগান দিতে সাহায্য করতে পারে।


শ্রীলঙ্কা টেলিকমের বেসরকারিকরণ ১৯৯০-এর দশকে টেলিকম শিল্পের উদারীকরণকে উৎসাহিত করেছিল, যা ১৯৯৮-৯৯ সালে ৪৫ শতাংশ বার্ষিক বৃদ্ধির হারসহ টেলিকম ক্ষেত্রে দ্রুত বৃদ্ধির কারণে শ্রীলঙ্কার অর্থনীতির জন্য ব্যাপক ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছিল।



একটি সুপার হোল্ডিং কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করা: এই কৌশলটির একটি মূল সুবিধা হল সরকার নীতি-নির্ধারণ ও নিয়ন্ত্রণের উপর ফোকাস করতে পারে। শ্রীলঙ্কার অর্থ মন্ত্রক এবং সংশ্লিষ্ট বিষয়ক মন্ত্রক ব্যবস্থাপনা এবং কার্যক্ষেত্রগত সিদ্ধান্ত গ্রহণের সঙ্গে জড়িত থাকবে না। সিঙ্গাপুরের টেমাসেক হোল্ডিংস একটি সফল সুপার হোল্ডিং কোম্পানির একটি ভাল উদাহরণ। টেমাসেকের অধীনস্থ এসওই-র সিঙ্গাপুরের বেসরকারি কোম্পানিগুলির তুলনায়
উচ্চ মূল্যায়ন এবং ভাল কর্পোরেট শাসন রয়েছে। শ্রীলঙ্কা টেমাসেকের সাফল্যকে অনুকরণ করতে পারে আরও ভাল বোর্ড শাসন নিশ্চিত করার মাধ্যমে, যা ব্যবসায়িক সনদ এবং সেরা প্রতিভা নিয়োগের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে।

বেসরকারিকরণ: শ্রীলঙ্কা সরকারের জন্য এটি হবে সবচেয়ে আর্থিকভাবে আকর্ষণীয় কিন্তু রাজনৈতিকভাবে ব্যয়বহুল পদক্ষেপ। এসওই-‌গুলি বিক্রি করা হলে তা অনেক প্রয়োজনীয় মূলধন আনতে পারে, বিশেষ করে বৈদেশিক মুদ্রা, যদি বিদেশী বিনিয়োগকারীদের কাছে বিক্রি করা হয়। এটি কোষাগারের উপর চাপ কমাতে পারে এবং সরকারকে নীতিনির্ধারণ ও নিয়ন্ত্রণে মনোযোগ দিতে সাহায্য করতে পারে। ২০০৮ সালের আগে এমিরেটস দ্বারা পরিচালিত হওয়ার সময় শ্রীলঙ্কান এয়ারলাইনস-‌এর উদাহরণ প্রমাণ করে যে, বেসরকারিকরণ আরও বেশি দক্ষতা নিয়ে আসে। আদর্শভাবে, হোটেল ও খুচরা শৃঙ্খলগুলির মতো এসওই-‌গুলি সম্পূর্ণরূপে বেসরকারিকরণ করা যেতে পারে। তার পরে শিল্পগুলির উদারীকরণ ও বেসরকারিকরণের আগে প্রতিযোগিতার ব্যবস্থা করাও গুরুত্বপূর্ণ। সরকার বেসরকারি সংস্থাগুলির প্রদত্ত কর রাজস্বের মাধ্যমেও লাভ তুলতে পারে, যা শ্রীলঙ্কাকে আরও বেশি বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে চালিত করবে, কারণ একটি বেসরকারি কোম্পানি একটি এসওই-‌র চেয়ে আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীদের কাছে বেশি আকর্ষণীয়। একটি সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের দিকেও নজর দেওয়া যেতে পারে, যেখানে বেসরকারি ক্ষেত্র ন্যায্য অংশের মালিক এবং ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকে।


নির্দিষ্ট উদ্যোগের বিশদ মূল্যায়ন এবং এর কার্যপরিচালন ক্ষেত্রের সামগ্রিক ভূচিত্র অনুসরণ করে বিকল্পগুলির সংমিশ্রণ পরীক্ষা করতে হবে।



উপসংহার

যেহেতু শ্রীলঙ্কার এসওই-গুলির বিভিন্ন কাঠামোগত সমস্যা রয়েছে, তাই সবার জন্য একই ধাঁচের সমাধান সম্ভব নাও হতে পারে। নির্দিষ্ট উদ্যোগের বিশদ মূল্যায়ন এবং এর কার্যপরিচালন ক্ষেত্রের সামগ্রিক ভূচিত্র অনুসরণ করে বিকল্পগুলির সংমিশ্রণ পরীক্ষা করতে হবে। কিছু সমাধান, যেমন জবাবদিহিতা বৃদ্ধি, এসওই পুনর্গঠন, এবং বেসরকারিকরণ রাজনৈতিক খরচ এবং ট্রেড ইউনিয়নের চাপের কারণে ব্যাপকভাবে করা সম্ভব হয়নি। সিঙ্গাপুরে টেমাসেকের মতো একটি সুপার হোল্ডিং কোম্পানিও মন্ত্রীদের মধ্যে অ-‌জনপ্রিয় হয়ে উঠত, কারণ এটি এসওই-গুলির নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা মন্ত্রকের আওতা থেকে দূরে নিয়ে যাবে। কিন্তু এখন সাধারণ মানুষের মধ্যে ঐকমত্য রয়েছে যে এসওই-এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। সরকারের অন্যান্য বিকল্প, যেমন কর বাড়ানো বা রাষ্ট্রীয় ব্যয় কমানো কিন্তু সাধারণ জনগণের মধ্যে অনেক বেশি অ-‌জনপ্রিয় হবে।

‌আইএমএফ-এর আর্থিক সংহতি লক্ষ্যমাত্রা পূরণের জন্য শ্রীলঙ্কার এসওই-গুলির পুনর্বিন্যাস অনিবার্য হবে। জবাবদিহিতা বৃদ্ধি, পুনর্গঠন, বেসরকারিকরণ ও সুপার হোল্ডিং কোম্পানি ব্যবহার করা হল সেই কার্যকর বিকল্প যা শ্রীলঙ্কার ব্যয়ভিত্তিক রাজস্ব একত্রীকরণে সাহায্য করতে পারে, দেশীয় ব্যাঙ্কগুলির উপর চাপ কমাতে পারে, এবং এর ফলে অর্থের প্রাপ্তিযোগ্যতা বাড়ানো যাবে এবং বেসরকারি ক্ষেত্রের জন্য শ্রম খরচ কমানো যাবে।



তালাল রফি অর্থনীতিবিদ এবং ওয়ার্ল্ড ইকনমিক ফোরামের বিশেষজ্ঞ সদস্য।

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.