-
CENTRES
Progammes & Centres
Location
এনইপি ভারতের ১০০ শতাংশ স্কুলে দক্ষতা শিক্ষাকে একীভূত করার একটি উচ্চাভিলাষী লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে, যেখানে ২০৩০ সালের মধ্যে কমপক্ষে ৫০ শতাংশ শিক্ষার্থীর কাছে তা পৌঁছে দেওয়া হবে।
জাতীয় শিক্ষানীতি (এনইপি), ২০২০ তিনটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জকে স্বীকৃতি দেয়, যার জন্য শিক্ষাগত প্রতিক্রিয়া প্রয়োজন। প্রথমত, মেশিন লার্নিং, বিগ ডেটা এবং জেনারেটিভ আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই)-এর মতো উদীয়মান প্রযুক্তিগুলি আগামীকালের কর্মীদের মধ্যে অভিযোজনযোগ্যতা (কীভাবে শিখতে হয় তা শেখা) এবং উচ্চমানের দক্ষতা দাবি করে। দ্বিতীয়ত, জলবায়ু পরিবর্তন, প্রাকৃতিক সম্পদের অবক্ষয় এবং দূষণের কারণে সৃষ্ট পরিবেশগত চ্যালেঞ্জগুলির জন্য বিশ্বের খাদ্য, জল, শক্তি ও স্যানিটেশন চাহিদা মেটাতে উদ্ভাবনী ও টেকসই সমাধানের প্রয়োজন। তৃতীয়ত, এই চ্যালেঞ্জগুলির মোকাবিলার প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য, এনইপি প্রাথমিক শ্রেণি থেকে একটি নতুন যুগের দক্ষতা-কেন্দ্রিক শিক্ষাকে অগ্রাধিকার দেয়, যা একটি আন্তঃবিষয়ক পদ্ধতির উপর ভিত্তি করে তাত্ত্বিক শ্রেণিকক্ষ জ্ঞানকে ব্যবহারিক প্রয়োগের সঙ্গে মিশ্রিত করে।
নতুন রোগ, মহামারি ও অতিমারির ক্রমবর্ধমান ঝুঁকি উন্নত চিকিৎসা গবেষণা এবং অর্থনৈতিক স্থিতিস্থাপকতার প্রয়োজনীয়তা আরোপ করে।
দক্ষতা শিক্ষা বাস্তবায়নের দিকে পদক্ষেপ
ছোটবেলা থেকেই দক্ষতা শিক্ষা বাস্তবায়নের জন্য, ভারতের বৃহত্তম জাতীয় বোর্ড যার অধীনে ৩০,৬৩৪টি স্কুল আছে, সেই কেন্দ্রীয় মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড (সিবিএসই) উল্লেখযোগ্য উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। মাধ্যমিক (৬-৮) শ্রেণিতে সিবিএসই কোডিং, ডেটা সায়েন্স, ডিজাইন চিন্তাভাবনা এবং গণমাধ্যমের মতো ৩৩টি বিষয়ে ১২-১৫ ঘণ্টার দক্ষতা মডিউল চালু হয়েছে। মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণিতে (৯-১২) ৪২টি বিষয়ের তালিকা থেকে একটি দক্ষতা বিষয় ষষ্ঠ ঐচ্ছিক হিসাবে বেছে নেওয়া যেতে পারে। ভবিষ্যতের কেরিয়ারের সুবিধা এবং শিক্ষার্থীদের কর্মসংস্থানের জন্য এই বিষয়গুলি নির্দিষ্ট জাতীয় দক্ষতা যোগ্যতা কাঠামো (এনএসকিউএফ) স্তরের সঙ্গে সমতাপূর্ণ করা হয়েছে। ১০ জানুয়ারি ২০২৫-এ একটি নীতি আপডেট বলেছে, শিক্ষার্থীদের কোনও একটি অ্যাকাডেমিক বিষয়ে ফেল করলে, ঐচ্ছিক বিষয়ের নম্বর দিয়ে সেটি প্রতিস্থাপনের সুযোগ দেওয়া হবে, যা তাদের শিক্ষাগত যাত্রায় আরও নমনীয়তা প্রদান করে।
স্কুলগুলিতে দক্ষতা শিক্ষা একীভূত করার জন্য সিবিএসই-এর দৃষ্টিভঙ্গি থেকে তিনটি দিক স্পষ্ট হয়ে ওঠে। প্রথমত, এটি থ্রিডি (ত্রিমাত্রিক) প্রিন্টিং, ড্রোন প্রযুক্তি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মতো অত্যাধুনিক প্রযুক্তির পাশাপাশি কাশ্মীরি সূচিকর্ম, মৃৎশিল্প এবং ভেষজ ঐতিহ্যের মতো ঐতিহ্যবাহী বিষয়গুলির উপর কোর্স করার সুযোগ দেয়। দ্বিতীয়ত, এটি স্থানীয় শিল্পের প্রয়োজনের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের দক্ষতা বিকাশের চাহিদার ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য স্কুলগুলিকে একটি নমনীয় পাঠ্যক্রম তৈরি করতে উৎসাহিত করে, যা আশেপাশের প্রেক্ষাপটে কাজের সম্ভাবনার জন্য উপযুক্ত। তৃতীয়ত, শিল্প অগ্রণীদের সঙ্গে সহযোগিতায় সিবিএসই সক্রিয়ভাবে পাঠ্যক্রম নকশা, শিক্ষাদানের সংস্থান, এবং এই বিষয়গুলি কার্যকরভাবে বাস্তবায়নে স্কুলগুলির জন্য হ্যান্ডহোল্ডিং এবং পরামর্শদান কর্মসূচির সুযোগ দেয়।
এটি স্থানীয় শিল্পের প্রয়োজনের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের দক্ষতা বিকাশের চাহিদার ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য স্কুলগুলিকে একটি নমনীয় পাঠ্যক্রম তৈরি করতে উৎসাহিত করে, যা আশেপাশের প্রেক্ষাপটে কাজের সম্ভাবনার জন্য উপযুক্ত।
২০২৪ সালের আগস্টে, সিবিএসই তার অনুমোদিত স্কুলগুলিকে সমস্ত প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম এবং প্রযুক্তিসহ কম্পোজিট স্কিল ল্যাব স্থাপনের নির্দেশ দেয়। তিন বছরের মধ্যে প্রতিষ্ঠিত এই ল্যাবগুলির লক্ষ্য হল শিক্ষার্থীদের ক্রমাগত হাতে-কলমে অভিজ্ঞতা এবং শিল্প-সংযুক্ত প্রশিক্ষণ প্রদান করা।
কাউন্সিল ফর দ্য ইন্ডিয়ান স্কুল সার্টিফিকেট এক্সামিনেশনস (সিআইএসসিই)-এর মতো অন্য বোর্ডগুলিও নতুন যুগের বিষয়গুলি প্রবর্তন করে এবং উদীয়মান শিল্প প্রবণতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ পাঠ্যক্রম তৈরি করার জন্য ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি (আইআইটি) দিল্লির মতো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে অংশীদারিত্ব করে দক্ষতা শিক্ষার প্রসার ঘটাচ্ছে।
গত কয়েক বছরে এই ধরনের ক্রমবর্ধমান প্রচেষ্টা ভবিষ্যতের পরিবর্তিত চাহিদা মেটাতে ভারতের প্রস্তুতি উন্নত করেছে, দেশকে কিউএস ওয়র্ল্ড ফিউচার স্কিল ইনডেক্সে বিশ্বব্যাপী ২৫ নম্বরে স্থান দিয়েছে, আর ‘কাজের ভবিষ্যৎ’ সূচকে একটি উল্লেখযোগ্য দ্বিতীয় স্থান।
দক্ষতা শিক্ষা থেকে প্রাপ্ত সুবিধা
প্রতি বছর ৯.৭ মিলিয়ন সম্ভাব্য কর্মী তার শ্রমশক্তিতে যোগ করার মাধ্যমে, ভারত প্রাথমিক দক্ষতা অর্জনের উদ্যোগ থেকে উল্লেখযোগ্য আর্থ-সামাজিক সুবিধা অর্জন করছে। একটি প্রাথমিক সুবিধা হল অ্যাকাডেমিক শিক্ষা এবং এর ব্যবহারিক বাস্তব-বিশ্বের প্রয়োগের মধ্যে ব্যবধান পূরণ করা, যা ভবিষ্যতের কর্মীদের আরও অভিযোজিত এবং নিয়োগযোগ্য করে তোলে। কারপেন্ট্রি, কৃষি, বিপণন ও বিক্রয়ের মতো দক্ষতা বিষয়গুলি শিক্ষার্থীদের তাদের শ্রেণিকক্ষের জ্ঞান বাস্তব উপায়ে অনুশীলন করতে দেয়, যা একটি সামগ্রিক এবং আকর্ষণীয় শেখার অভিজ্ঞতা সক্ষম করে।
জাতীয় শিক্ষাগত গবেষণা ও প্রশিক্ষণ কাউন্সিল (এনসিইআরটি ২০১৭) -এর একটি প্রভাব গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, নিয়োগযোগ্য দক্ষতা অর্জনের পাশাপাশি এই দক্ষতা শিক্ষা শিক্ষার্থীদের ধরে রাখা, অ্যাকাডেমিক আগ্রহ, পরীক্ষার ফলাফল এবং আত্মবিশ্বাসের স্তর উন্নত করতে সহায়তা করে। বিভিন্ন কেরিয়ারের পথের প্রাথমিক অভিজ্ঞতা শিক্ষার্থীদের আগ্রহ ও মেধা অন্বেষণ করতে দেয়, শিল্পের চাহিদার সঙ্গে তাদের দক্ষতার সামঞ্জস্য করার সুযোগ দেয়।
একটি প্রাথমিক সুবিধা হল অ্যাকাডেমিক শিক্ষা এবং এর ব্যবহারিক বাস্তব-বিশ্বের প্রয়োগের মধ্যে ব্যবধান পূরণ করা, যা ভবিষ্যতের কর্মীদের আরও অভিযোজিত এবং নিয়োগযোগ্য করে তোলে।
ওয়ার্ল্ড ফিউচার স্কিলস ইনডেক্সে দেখা গেছে যে ভারত এআই, সবুজ ও ডিজিটাল দক্ষতার মতো বিষয়গুলিতে শিক্ষার্থীদের প্রস্তুত করার ক্ষেত্রে পিছিয়ে রয়েছে। স্কুলগুলিতে প্রাথমিক দক্ষতা শিক্ষার প্রসারের উন্নতির সঙ্গে এই ব্যবধান শীঘ্রই পূরিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, বর্তমান শিক্ষাবর্ষে (২০২৪-২৫) ৪,৫৩৮টি সিবিএসই-অনুমোদিত স্কুলের ৮,০০,০০০-এরও বেশি শিক্ষার্থী মাধ্যমিক এবং উচ্চ-মাধ্যমিক স্তরে এআই কোর্স অধ্যয়নের জন্য বেছে নিয়েছে, যা ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত দক্ষতার চাহিদা বৃদ্ধির প্রতিফলন।
কারিগরি দক্ষতার পাশাপাশি, দক্ষতা শিক্ষা যোগাযোগ, সৃজনশীলতা, সহযোগিতা এবং সমস্যা সমাধানের মতো গুরুত্বপূর্ণ জীবন দক্ষতাগুলিকেও উৎসাহিত করে। এটি অভিযোজনযোগ্যতা, স্থিতিস্থাপকতা এবং সামাজিক দায়িত্বের মতো মূল্যবোধের সঙ্গে একটি বৃদ্ধিমুখী মানসিকতা গড়ে তোলে, যা ঐতিহ্যবাহী চাকরির বাজারের বিকশিত হওয়া এবং নতুন শিল্পের আবির্ভাবের সময় ক্রমবর্ধমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে । উদাহরণস্বরূপ, অনেক শিক্ষার্থী তাদের ভবিষ্যতের কর্মসংস্থানের জন্য ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাগত বিষয়গুলিকে গুরুত্বপূর্ণ মনে নাও করতে পারে, কিন্তু অনলাইনে আবেদন জমা দেওয়া, পেশাদার ইমেল লেখা, মৌলিক হিসাবরক্ষণ এবং ই-ইনভয়েস তৈরি করার মতো নিয়োগযোগ্য দক্ষতা অর্জন করতে চাইতে পারে।
বাজার-প্রস্তুত শ্রম ভারতকে অভ্যন্তরীণ কর্মসংস্থানের চাহিদা এবং বিশ্বব্যাপী দক্ষ শ্রম ঘাটতি উভয়ই আরও ভালভাবে মোকাবিলা করার অবস্থানে রাখবে, বিশেষ করে উন্নত অর্থনীতিতে যেখানে বয়স্ক জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে লড়াই করতে হচ্ছে। গ্লোবাল নর্থের দেশগুলি দক্ষ পেশাদার সরবরাহের জন্য ভারতের মতো জনসংখ্যার দিক থেকে তরুণ দেশগুলির উপর ক্রমবর্ধমানভাবে নির্ভরশীল হয়ে উঠছে। ভারত যদি তার দক্ষতা পাঠ্যক্রমগুলিতে বিশ্বব্যাপী মানগুলিকে একীভূত করে, এবং আন্তর্জাতিক শ্রমবাজারের প্রয়োজনীয়তার সঙ্গে তার দক্ষতা শিক্ষা ব্যবস্থাকে কৌশলগতভাবে সামঞ্জস্যপূর্ণ করে, তাহলে এটি ইন্ডাস্ট্রি ৪.০-এর যুগে বিশ্বব্যাপী কর্মীবাহিনীতে একটি গুরুত্বপূর্ণ অবদানকারী হিসাবে তার ভূমিকাকে শক্তপোক্ত করতে পারে।
এটি অভিযোজনযোগ্যতা, স্থিতিস্থাপকতা এবং সামাজিক দায়িত্বের মতো মূল্যবোধের সঙ্গে একটি বৃদ্ধিমুখী মানসিকতা গড়ে তোলে, যা ঐতিহ্যবাহী চাকরির বাজারের বিকশিত হওয়া এবং নতুন শিল্পের আবির্ভাবের সময় ক্রমবর্ধমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে।
ভারতে দক্ষতা শিক্ষার প্রতিবন্ধকতা
সক্ষম নীতিগত পরিস্থিতি সত্ত্বেও, ভারত দক্ষতা শিক্ষার ক্ষেত্রে কমপক্ষে তিনটি বিস্তৃত বাধার মুখোমুখি। প্রথমটি হল এর পরিকাঠামো এবং সম্পদের সীমাবদ্ধতা। সর্বশেষ ইউনিফাইড ডিস্ট্রিক্ট ইনফরমেশন সিস্টেম ফর এডুকেশন প্লাস রিপোর্ট (ইউডিআইএসই+ ২০২৩-২৪) অনুসারে, সারা দেশের মাত্র ৫৭.২ শতাংশ স্কুলে কার্যকরী কম্পিউটার রয়েছে, ৫৩.৯ শতাংশে ইন্টারনেট সংযোগ রয়েছে, ৫৫.৯ শতাংশ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সমন্বিত বিজ্ঞান ল্যাব সুবিধা রয়েছে, এবং ১৭.৫ শতাংশে শিল্প ও কারুশিল্পের সুবিধা রয়েছে। এই ফাঁকগুলি দক্ষতা শিক্ষা প্রদানে বাধা তৈরি করতে পারে।
দ্বিতীয়ত, বেশিরভাগ স্কুলের শিক্ষকদের দক্ষতা কোর্স প্রদানের জন্য পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় না। সিবিএসই-র সক্ষমতা বৃদ্ধির কর্মসূচি এবং সম্পদ উন্নয়ন সত্ত্বেও, স্কুলগুলি তাদের পাঠ্যক্রমে রোবোটিক্স বা এআই-এর মতো নতুন যুগের কোর্সগুলিকে অন্তর্ভুক্ত করতে লড়াই করে। বাস্তবক্ষেত্র থেকে প্রাপ্ত উপাখ্যানগুলি থেকে জানা যায় যে, স্কুলগুলি এই প্রোগ্রামগুলি প্রদানের জন্য বেসরকারি বিক্রেতাদের সহযোগিতার দিকে ঝুঁকছে। তবে, এটি সুবিধাবঞ্চিত এলাকার শিক্ষার্থীদের জন্য ক্রয়ক্ষমতা এবং প্রবেশাধিকার নিয়ে প্রশ্ন উত্থাপন করে।
এর পাশাপাশি, তৃতীয় বাধা হল ভারতের কঠোর স্কুল ব্যবস্থা, যেখানে শিক্ষাগত বিষয়গুলির উপর প্রচুর মনোযোগ দেওয়া হয়। অভিভাবক ও শিক্ষকেরা দক্ষতা শিক্ষার মূল্য পুরোপুরি উপলব্ধি নাও করতে পারেন, এবং স্কুলগুলিও এই ধরনের উদ্যোগের জন্য পর্যাপ্ত সময় বরাদ্দ করতে পারে না, কারণ তারা মাধ্যমিক শ্রেণিতে বোর্ড পরীক্ষার প্রতিযোগিতামূলক চাপের মুখে অন্য দিকে মন দিতে নারাজ। ঐতিহ্যবাহী পদ্ধতির বিপরীতে, দক্ষতা শিক্ষাকে প্রায়শই মূলধারার শিক্ষাগত পথে লড়াই করা শিক্ষার্থীদের জন্য একটি বিকল্প হিসাবে দেখা হয়।
সিবিএসই-র সক্ষমতা বৃদ্ধির কর্মসূচি এবং সম্পদ উন্নয়ন সত্ত্বেও, স্কুলগুলি তাদের পাঠ্যক্রমে রোবোটিক্স বা এআই-এর মতো নতুন যুগের কোর্সগুলিকে অন্তর্ভুক্ত করতে লড়াই করে।
ভবিষ্যতের পথ
ভারতের স্কুলগুলিতে দক্ষতা শিক্ষায় ভর্তির হার মাত্র ৪ শতাংশ, যেখানে পশ্চিমী দেশগুলির পাশাপাশি অন্য এশীয় দেশগুলিতে এই হার অনেক বেশি (চিত্র দেখুন)।
চিত্র: অন্যান্য দেশের তুলনায় ভারতে দক্ষতা শিক্ষায় ভর্তির হার
উৎস: জবস অ্যাট ইওর ডোরস্টেপ, ২০২৪। বিশ্বব্যাঙ্ক
দক্ষতা শিক্ষার এই প্রবল চাহিদা এবং এনইপি নির্ধারিত মানদণ্ডের আলোকে, বেশ কয়েকটি সরকারি ও বহুপাক্ষিক সংস্থাকে ভারতে দক্ষতা শিক্ষার কার্যকর সংযুক্তির জন্য সুপারিশ প্রদান করতে বলা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে পরিকাঠামো শক্তিশালীকরণ এবং দক্ষতা শিক্ষার সুযোগ সম্প্রসারণের জন্য বৃহৎ, পরিকাঠামো-সক্ষম স্কুলগুলিকে দক্ষতা কেন্দ্র হিসাবে স্থাপন করা। এরপর এগুলি তাদের আশেপাশের ছোট স্কুলগুলির সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করতে পারে, এবং হাব-অ্যান্ড-স্পোক মডেল অনুসরণ করে সমস্ত স্কুলে দক্ষতা শিক্ষা সম্প্রসারণ করতে পারে।
অতিরিক্তভাবে, পাঠ্যক্রম নকশায় সরঞ্জাম, সংস্থান ও প্রযুক্তিগত নির্দেশিকা প্রদানে সহায়তা করার জন্য পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) অন্বেষণ করা হয়েছে। দ্রুত কভারেজ ও মান নিশ্চিত করার জন্য বিভিন্ন অংশীদারদের মধ্যে — যেমন অ্যাকাডেমিক ও প্রশাসনিক প্রতিষ্ঠান, শিল্প, নাগরিক সমাজ গোষ্ঠী, সিএসআর এবং বহুপাক্ষিকদের মধ্যে — সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণেরও সুপারিশ করা হয়েছে।
অপ্রতুল শিক্ষক প্রস্তুতি, অপ্রতুল পর্যবেক্ষণ এবং শিথিল স্বীকৃতি প্রক্রিয়া কর্মসূচিটির কার্যকারিতাকে দুর্বল করে দিতে পারে, যার ফলে কম কর্মসংস্থান এবং দক্ষতা-শিল্পের মধ্যে অমিল অব্যাহত থাকে।
এই পরিস্থিতিতে, ভারসাম্যপূর্ণ দৃষ্টিভঙ্গি বজায় রাখার জন্য সতর্কতার কিছু কারণ স্বীকার করা গুরুত্বপূর্ণ। প্রথমত, দক্ষতা শিক্ষা কর্মসূচির সম্প্রসারণ এবং নীতিগত লক্ষ্য অর্জনের প্রচেষ্টা কখনও কখনও মানের পরামিতিগুলিকে উপেক্ষা করতে পারে। অপ্রতুল শিক্ষক প্রস্তুতি, অপ্রতুল পর্যবেক্ষণ এবং শিথিল স্বীকৃতি প্রক্রিয়া কর্মসূচিটির কার্যকারিতাকে দুর্বল করে দিতে পারে, যার ফলে কম কর্মসংস্থান এবং দক্ষতা-শিল্পের মধ্যে অমিল অব্যাহত থাকে।
আরেকটি অসুবিধা হল পাঠ্যক্রমকে সজীব রাখা এবং শিল্পের ক্রমবর্ধমান চাহিদার সঙ্গে ক্রমাগত খাপ খাইয়ে নেওয়া। দ্রুত বিকশিত বিশ্বব্যাপী শ্রমবাজার এবং প্রযুক্তিগত অগ্রগতির জন্য দক্ষতা শিক্ষাকে প্রাসঙ্গিক রাখতে প্রয়োজন একটি গতিশীল পদ্ধতি গ্রহণ করা, শিল্প অংশীদারদের কাছ থেকে রিয়েল-টাইম প্রতিক্রিয়া নেওয়া, এবং শ্রমবাজার বিশ্লেষণ অন্তর্ভুক্ত করা। এর সঙ্গে রয়েছে নমনীয় কোর্স কাঠামো, যার মধ্যে থাকবে ক্রমাগত পাঠ্যক্রম আপডেট করা এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও অগ্রণী শিল্পগুলির মধ্যে অংশীদারিত্ব শক্তিশালী করা। এই ধরনের পদক্ষেপ নিশ্চিত করে যে শিক্ষার্থীরা চাকরির বাজারের পরিবর্তনশীল চাহিদা পূরণের জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতা অর্জন করবে।
পরিশেষে, একটি উল্লেখযোগ্য ঝুঁকি হল মানসম্পন্ন দক্ষতা শিক্ষায় অসম প্রবেশাধিকার, যেখানে প্রান্তিক শিক্ষার্থীরা পরিকাঠামোর অভাব ও ডিজিটাল বিভাজন ছাড়াও দুর্বল মৌলিক সাক্ষরতা ও সংখ্যাজ্ঞানের (এফএলএন) ফলাফলের মুখোমুখি হচ্ছে। অতএব, মোবাইল প্রশিক্ষণ ইউনিট, বৃত্তি বা উপবৃত্তি এবং সম্প্রদায়-ভিত্তিক কর্মসূচির মতো লক্ষ্যভিত্তিক হস্তক্ষেপ ছাড়া, দক্ষতা শিক্ষা স্কুল শিক্ষায় বিদ্যমান বৈষম্যগুলিকে সেতুবন্ধন করার পরিবর্তে আরও গভীর করতে পারে।
অর্পণ তুলসিয়ান অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের সেন্টার ফর নিউ ইকনমিক ডিপ্লোম্যাসির সিনিয়র ফেলো।
The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.
Arpan Tulsyan is a Senior Fellow at ORF’s Centre for New Economic Diplomacy (CNED). With 16 years of experience in development research and policy advocacy, Arpan ...
Read More +