-
CENTRES
Progammes & Centres
Location
ডিজিটাল উদ্ভাবনী বাস্তুতন্ত্রগুলি বিশ্বব্যাপী উন্নয়নের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, তবে সুষম বৃদ্ধির লক্ষ্যে তাদের কর্মক্ষমতার সর্বোত্তম ব্যবহার করার জন্য অভিযোজন ক্ষমতা প্রয়োজন
ডিজিটালাইজেশন ও ডিজিটাল প্রযুক্তি সেই সব গুরুত্বপূর্ণ পরিষেবাগুলিকে সমর্থন করে যেগুলির লক্ষ্য আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন, যেমন স্বাস্থ্যসেবা, জনসেবা, জ্বালানি ও শিক্ষার মতো ক্ষেত্রগুলি। তার উপর, যেহেতু এই প্রযুক্তিগুলির প্রক্রিয়া-দক্ষতা উন্নত করা এবং শেষ মাইল পর্যন্ত প্রাতিষ্ঠানিক শূন্যতাগুলি ভরাট করার ক্ষমতা আছে, তাই সেগুলির উন্নয়নমূলক ফলাফলকে ত্বরান্বিত করারও সম্ভাবনা রয়েছে। এর ফলে উন্নয়ন অনুশীলনের মধ্যে উন্নয়নের জন্য আইসিটি-র জায়গায় ডিজিটাল উন্নয়নে একটি দৃষ্টান্তগত পরিবর্তন হয়েছে। যাই হোক, ডিজিটাল প্রযুক্তির পূর্বাভাসিত উন্নয়ন কিন্তু ডিজিটাল প্রযুক্তিতে অসম সুযোগের কারণে বিদ্যমান বৈষম্যকে আরও বাড়িয়ে তোলারও ক্ষমতা রাখে। বিশ্ব জনসংখ্যার এক-তৃতীয়াংশ, অর্থাৎ ২.৬ বিলিয়ন মানুষ, ২০২৩ সালেও অফলাইনে থেকে গিয়েছেন। তাই, উন্নয়নের জন্য ডিজিটাল প্রযুক্তির প্রতিশ্রুত সম্ভাবনা পূরণের জন্য বর্তমান অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে তাদের প্রতিশ্রুত সম্ভাবনাকে সর্বাধিক করা প্রয়োজন।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই), ডিজিটাল পরিকাঠামো, সোশ্যাল মিডিয়া, রোবোটিক্স, ব্লকচেন, ইন্টারনেট অফ থিংস (আইওটি), ডিজিটাল ব্যবসায়িক প্ল্যাটফর্ম ও অ্যালগরিদমিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের ব্যবস্থার মতো নতুন ও উদীয়মান প্রযুক্তিগুলিতে অংশীদার ও খেলোয়াড়, প্রযুক্তি, প্রক্রিয়া, সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের মধ্যে উচ্চমানের সংযোগ ও পারস্পরিক নির্ভরতা জড়িত। ডিজিটাল প্রযুক্তির বিকাশ ও স্থাপনা একটি অত্যন্ত বিশেষায়িত ও মূলধন-নিবিড় প্রয়াস। এটি একাধিক খেলোয়াড়, প্রযুক্তি ও ব্যবস্থা (সিস্টেম)-কে জড়িত করে ডিজিটাল উদ্ভাবনী বাস্তুতন্ত্রগুলির উত্থানের দিকে চালিত করেছে, কারণ কোনও একক সংস্থার কাছে এই ধরনের পরিবর্তন বোঝা এবং উৎপাদনের জন্য সম্পদ, ক্ষমতা বা বৈধতা নেই। বিভিন্ন খেলোয়াড়, ব্যবস্থা ও প্রক্রিয়াগুলির সম্পৃক্ততার পরিপ্রেক্ষিতে, এটি জটিলতার বিভিন্ন মাত্রায় পৌঁছে গিয়েছে, যা ব্রডব্যান্ড প্রাপ্যতা, নীতি ও ক্ষেত্রগত কৌশল, ডিজিটাল অন্তর্ভুক্তি এবং অনুশীলনের উদ্ভাবনী সম্প্রদায়ের বিকাশকে অন্তর্ভুক্ত করে এবং তা অতিক্রম করে যায়।
ডিজিটাল প্রযুক্তির বিকাশ ও স্থাপনা একটি অত্যন্ত বিশেষায়িত ও মূলধন-নিবিড় প্রয়াস।
রূপান্তরমূলক আর্থ-সামাজিক প্রভাব তৈরি করার জন্য ডিজিটাল প্রযুক্তির সম্ভাব্য প্রতিশ্রুতি থাকা সত্ত্বেও ডিজিটাল বৈষম্য ও বিভাজনগুলি দীর্ঘকাল ধরে এই প্রযুক্তিগুলির কার্যকারিতাকে সীমাবদ্ধ করে রেখেছে। যাই হোক, ইন্টারনেট প্রসার ও সংযোগ ক্রমাগত বৃদ্ধি পেয়েছে। ইন্টারনেট সংযোগের বৃদ্ধি নিম্ন আয়ের দেশগুলিতে সর্বোচ্চ থেকে গিয়েছে, যেখানে ২০২২-২৩ সালের তুলনায় ইন্টারনেট ব্যবহারকারী ১৭ শতাংশ বেড়েছে। এটি 'প্রতিকূল ডিজিটাল সংযোজন ' বা এমন অবস্থা সংক্রান্ত উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে যেখানে সুবিধাবঞ্চিত জনসংখ্যা ডিজিটাল ক্ষেত্রের মধ্যে এলেও আরও সুবিধাপ্রাপ্ত গোষ্ঠীগুলি প্রক্রিয়াটি থেকে অসামঞ্জস্যপূর্ণ মূল্য তুলে নিতে পারে, যার ফলে বিদ্যমান বৈষম্য আরও বেড়ে যায়। গিগ অর্থনীতি এর দৃষ্টান্তমূলক উদাহরণ, যা কর্মসংস্থানের সম্ভাবনার উন্নতি সত্ত্বেও মূল্য নীতি ও নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থায় প্ল্যাটফর্ম লক-ইন এড়ানোর প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেছে। এই বৈপরীত্যমূলক ঝুঁকি ও সুযোগগুলি নির্ধারণ করে দেয় কীভাবে ডিজিটাল উদ্ভাবনী বাস্তুতন্ত্রগুলি থেকে উন্নয়ন সংক্রান্ত ফলাফল পাওয়া যাবে। এই বিষয়টি সেই শর্তগুলি অনুধাবনের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে যা দিয়ে ডিজিটাল উদ্ভাবন বাস্তুতন্ত্রগুলিকে অভিযোজিত প্রত্যাশিত সুবিধাগুলি সরবরাহ করার জন্য সর্বোত্তম পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া যেতে পারে।
ডিজিটাল উদ্ভাবন বাস্তুতন্ত্রের বহুস্তরের আবশ্যিকতা: স্থানীয়দের মুখোমুখি হওয়া
ইন্টারন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়ন (আইটিইউ)-এর মতো বহুপাক্ষিক সংস্থাগুলি স্থিতিশীল উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জনের জন্য ডিজিটাল উদ্ভাবন বাস্তুতন্ত্রকে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করে। এই বাস্তুতন্ত্রের কার্যকারিতা পরিমাপ করতে আইসিটি, উদ্ভাবন, ও উদ্যোক্তাবৃত্তি (এন্টারপ্রেনারশিপ), যেগুলি বৃদ্ধি ও অর্থনৈতিক কর্মক্ষমতার তিনটি ইঞ্জিন হিসাবে বিবেচিত হয়, সেগুলির ক্ষেত্রে আইটিইউ নিজস্ব সূচক ব্যবহার করে। এগুলির প্রস্তুতি মূল্যায়নের জন্য ব্যবহৃত তিনটি সূচক — যেমন আইসিটি উন্নয়ন সূচক, গ্লোবাল ইনোভেশন ইনডেক্স, এবং গ্লোবাল এন্টারপ্রেনারশিপ সূচক — বাস্তুতন্ত্রের কার্যকারিতা মূল্যায়নের জন্য সামষ্টিক অর্থনৈতিক সূচকগুলিকে বিবেচনা করে। ২০২১ সালের হিসাবে, শুধুমাত্র ৩০টি দেশ তিনটি সূচকের ক্ষেত্রেই ভাল পারফর্ম করেছে বলে জানা গিয়েছে। যাই হোক, এমনকি যখন এই শর্তগুলি পূর্ণ হয়, তখনও বাস্তবে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম, পরিকাঠামো, ও সিস্টেমগুলির শেষ মাইল পর্যন্ত বাস্তবায়ন প্রায়ই স্থানীয় প্রাসঙ্গিক অবস্থার মুখোমুখি পৌঁছে ধাক্কা খায়।
অভিজ্ঞতানির্ভর (এমপিরিকাল) গবেষণা দেখিয়েছে কীভাবে শীর্ষস্তরের প্রচেষ্টা প্রায়ই স্থানীয় স্তরে বাস্তবায়নের সময় বাধার সম্মুখীন হয়। নীতিনির্ধারণ, সূচক ও প্রণোদনার মতো আনুষ্ঠানিক প্রাতিষ্ঠানিক প্রচেষ্টাগুলি যখন অপ্রতুল প্রযুক্তিগত ও মানবিক ক্ষমতা, বিদ্যমান কাজের অনুশীলনের ধারা বা প্রাতিষ্ঠানিক ইতিহাসের মতো অনানুষ্ঠানিক বাধাগুলির সম্মুখীন হয়, তখন বাস্তবায়নে প্রত্যাশিত ফলাফল পাওয়া যায় না।
এই বাস্তুতন্ত্রের কার্যকারিতা পরিমাপ করতে আইসিটি, উদ্ভাবন, ও উদ্যোক্তাবৃত্তি (এন্টারপ্রেনারশিপ), যেগুলি বৃদ্ধি ও অর্থনৈতিক কর্মক্ষমতার তিনটি ইঞ্জিন হিসাবে বিবেচিত হয়, সেগুলির ক্ষেত্রে আইটিইউ নিজস্ব সূচক ব্যবহার করে।
ইথিওপিয়া ও তাজিকিস্তানে জন-স্বাস্থ্যপরিচর্যায় হেলথ ইনফরমেশন সিস্টেমের বাস্তবায়নের প্রয়াস থেকে বোঝা যায় স্থানীয় প্রেক্ষাপটের বিস্তারিত জ্ঞান জনস্বাস্থ্য পরিষেবার ডিজিটাইজেশনের মতো নীতিগত প্রয়াসগুলিকে সর্বোত্তম করার পথে কী ভূমিকা পালন করতে পারে। ইথিওপিয়াতে কম বেতন ও কর্মীদের নিম্ন প্রেরণার স্তর কাগজ-ভিত্তিক বা কম্পিউটারাইজড দুই ধরনের ব্যবস্থাতেই পরিবর্তনের উদ্যোগকে বাধা দেয়। উপরন্তু, নতুন বাস্তবায়ন খেলোয়াড়ের প্রবেশ নতুন ডেটা শ্রেণীবিভাগ ব্যবস্থা চালু করে, যা স্থানীয় সুবিধাগুলি পরিচালনা করার জন্য অপ্রস্তুত ছিল। তাজিকিস্তানে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা ডেটা সংগ্রহ, প্রক্রিয়া ও বিশ্লেষণের জন্য একটি নমনীয় ও বিকেন্দ্রীভূত ব্যবস্থার দিকে প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে আগেকার সোভিয়েত যুগের কেন্দ্রীভূত পরিকল্পনার নীতিগুলি প্রতিরোধ তৈরি করেছিল। গ্রামীণ চিলিতে ইন্টারনেট ব্যবহার, ঘানায় জনপ্রশাসনের ডিজিটাল রূপান্তর, এবং দক্ষিণ আফ্রিকায় শিশুদের ডিজিটাল সাক্ষরতার অনুশীলনগুলি বোঝার চেষ্টা করে অনুরূপ অন্তর্দৃষ্টি সংগ্রহ করা হয়েছে। এটি বাস্তুতন্ত্রের কর্মক্ষমতাকে প্রভাবিত করে এমন বহুস্তরীয় প্রভাবগুলিকে বিবেচনায় নেওয়ার সময় শুধু জাতীয় স্তরের সামষ্টিক অর্থনৈতিক সূচকগুলির পরিপ্রেক্ষিতে বাস্তুতন্ত্রের কর্মক্ষমতার অনুভূমিক সুযোগের দিকে না–তাকিয়ে তার বাইরে যাওয়ার গুরুত্ব তুলে ধরে। এই বিষয়টি বোঝা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে যে বাস্তুতন্ত্র অগ্রাধিকার প্রদানের জন্য স্থানীয় প্রেক্ষাপটের প্রতি সংবেদনশীল হতে পারে।
অভিযোজন ক্ষমতা নির্মাণ
বিভিন্ন খেলোয়াড়, ব্যবস্থা, ক্ষেত্র ও কার্যকলাপ, যেগুলি ডিজিটাল উদ্ভাবন বাস্তুতন্ত্রের বৈশিষ্ট্যগুলিকে চিহ্নিত করে, সেগুলি বিপুল সংখ্যক উপাদান ব্যবস্থা ও খেলোয়াড়ের প্রতিনিধিত্ব করে। এর ফলে একযোগে অ-রৈখিক মিথস্ক্রিয়া উদ্ভূত হয় এবং তা থেকে জটিল আচরণ তৈরি হয়। বাস্তুতন্ত্রগুলিকে ব্যবস্থার বিভিন্ন অংশের পরিবর্তনের উপর ভিত্তি করে ক্রমাগত মানিয়ে নিতে হবে, তা সে সরবরাহ সমস্যা, নীতি পরিবর্তন বা প্রযুক্তিগত অগ্রগতি যাই হোক না কেন। বৈশ্বিক উন্নয়নের মধ্যে, ফিডব্যাক লুপ শেষ মাইলে স্থানীয় প্রেক্ষাপটে প্রসারিত হয় এবং শীর্ষে সূচিত পরিবর্তনগুলি পরিচালনা করে। ফলস্বরূপ, ডিজিটাল উদ্ভাবন বাস্তুতন্ত্রগুলিকে উদ্দিষ্ট উন্নয়ন ফলাফল প্রদানের জন্য স্থানীয় প্রাসঙ্গিক প্রতিক্রিয়ার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে এবং তা চালনা করতে সক্ষম হতে হবে।
ডিজিটাল উদ্ভাবন বাস্তুতন্ত্রের জন্য অভিযোজন ক্ষমতা তৈরি করা ডিজিটাল প্রযুক্তির প্রতিশ্রুত সম্ভাবনার ভারসাম্য বজায় রাখতে এবং সংশ্লিষ্ট ঝুঁকিগুলি হ্রাস করতে সক্ষম করবে।
অভিযোজন ক্ষমতা বাস্তুতন্ত্রের পরিবেশের পরিবর্তনের সঙ্গে সামঞ্জস্য সাধন এবং মোকাবিলা করার ক্ষমতাকে বোঝায়। ডিজিটাল উদ্ভাবন বাস্তুতন্ত্রের জন্য অভিযোজন ক্ষমতা তৈরি করা ডিজিটাল প্রযুক্তির প্রতিশ্রুত সম্ভাবনার ভারসাম্য বজায় রাখতে এবং সংশ্লিষ্ট ঝুঁকিগুলি হ্রাস করতে সক্ষম করবে। বাস্তুতন্ত্রের অভিযোজন ক্ষমতাকে সর্বোত্তম করতে এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের ফলাফলগুলিকে সর্বাধিক করার জন্য বহুপাক্ষিক সংস্থাগুলিকে প্রক্রিয়াগত নির্দেশিকা তৈরি করতে হবে এবং সর্বোত্তম অনুশীলনগুলি নথিভুক্ত করতে হবে, যাতে ফিডব্যাক লুপগুলির এমন উপযুক্ত ব্যবস্থা তৈরি করতে সরকারি প্রশাসন ও ডিজিটাল উদ্ভাবনী বাস্তুতন্ত্রগুলি উৎসাহিত হয় যা দিয়ে সর্বোত্তম ফলাফল সরবরাহ করা যায়। এর সঙ্গে প্রতিকূল পরিণতি প্রশমিত করার জন্য রক্ষাকবচ ও গার্ডরেলের উন্নয়নও জড়িত হওয়া উচিত। বিদ্যমান সূচকগুলির পাশাপাশি, বাস্তুতন্ত্রের কার্যকারিতার মূল্যায়নে এমন মানদণ্ডও অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজন যা ফিডব্যাক লুপ, ঝুঁকি ও দুর্বলতার মূল্যায়ন এবং প্রক্রিয়াগত সুরক্ষাগুলি নিশ্চিত করে বাস্তুতন্ত্র বিকাশের ফলাফলগুলিকে সর্বাধিক অন্তর্ভুক্ত করে।
অনুলেখা নন্দী অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের ফেলো
The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.
Dr. Anulekha Nandi is a Fellow - Centre for Security, Strategy and Technology at ORF. Her primary area of research includes digital innovation management and ...
Read More +