Published on Mar 09, 2024 Updated 0 Hours ago

প্রতিরক্ষা প্রস্তুতির সঙ্গে জড়িত মহাকাশ নিরাপত্তায় ভারতের উদ্যোগ, একটি ব্যাপক ও সুগঠিত জাতীয় কৌশলের দাবি রাখে

কক্ষপথ থেকে লক্ষ্য: সামরিক কনঅপ–এর সঙ্গে মহাকাশ নিরাপত্তা কৌশল সংযুক্ত করা

জটিল বিশ্ব নিরাপত্তা উদ্বেগ, যার উদাহরণ ইজরায়েলে হামাসের হামলার মতো ঘটনাগুলি, একটি শক্তিশালী সি৪আইএসআর (কমান্ড, কন্ট্রোল, কমিউনিকেশন, কম্পিউটার, ইন্টেলিজেন্স, সার্ভেল্যান্স ও রিকনায়স্যান্স) নেটওয়র্কের জন্য নিরাপত্তার দাবি উত্থাপন করে। এই নেটওয়র্কটি হল মেরুদণ্ড, যা রিয়েল–টাইম ইন্টেলিজেন্স এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণের সুবিধা দেয়। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য মহাকাশ–ভিত্তিক সম্পদগুলি অপরিহার্য হাতিয়ার হিসাবে আবির্ভূত হয়েছে, যা নিরাপদ সামরিক অভিযানের অমূল্য ক্ষমতা প্রদান করে। একই সঙ্গে, ভারতের নবাগত কিন্তু ক্রমবর্ধমান সংখ্যার বেসরকারি ক্ষেত্রের স্পেস প্লেয়াররা একটি গতিশীল শক্তির প্রতিনিধিত্ব করছে এবং দেশের প্রতিরক্ষা চাহিদা পূরণে অবদান রাখতে শুরু করেছে, যা এদের মহাকাশ নিরাপত্তা কৌশল উদ্ঘাটনে গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় করে তোলে। এই কৌশলের কাঠামোটি শুধু প্রযুক্তিগত দিকগুলিকেই অন্তর্ভুক্ত করে না, সেইসঙ্গেই এর প্রয়োজন ভারতের মহাকাশ নিরাপত্তার ব্যাপকতা ও স্থিতিস্থাপকতা নিশ্চিত করার জন্য সুসমন্বিত, সমগ্র জাতিভিত্তিক দৃষ্টিভঙ্গি, যার অংশীদার হবে বেসামরিক, প্রতিরক্ষা, শিল্প, অ্যাকাডেমিয়া ও থিঙ্ক ট্যাঙ্কগুলি।


একই সঙ্গে, ভারতের নবাগত কিন্তু ক্রমবর্ধমান সংখ্যার বেসরকারি ক্ষেত্রের স্পেস প্লেয়াররা একটি গতিশীল শক্তির প্রতিনিধিত্ব করছে এবং দেশের প্রতিরক্ষা চাহিদা পূরণে অবদান রাখতে শুরু করেছে, যা এদের মহাকাশ নিরাপত্তা কৌশল উদ্ঘাটনে গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় করে তোলে।

জাতীয় মহাকাশ নিরাপত্তা নীতি

স্পেস অপারেশনের জটিল ভূচিত্র এবং মহাকাশ ব্যবহারের জন্য একটি স্পষ্ট জাতীয় নিরাপত্তা দৃষ্টিকোণ তৈরি করার পরিপ্রেক্ষিতে দুটি আপাতদৃষ্টিতে একই রকম তবে মৌলিকভাবে স্বতন্ত্র শব্দের স্পষ্টীকরণ ও পার্থক্য করা গুরুত্বপূর্ণ: মহাকাশের ‘‌সামরিকীকরণ’‌ এবং ‘‌অস্ত্রায়ণ’‌। প্রতিরক্ষার উদ্দেশ্যে মহাকাশ ব্যবহার নিয়ে আলোচনা করার সময় এই শব্দগুলি প্রায়শই বিভ্রান্তির সৃষ্টি করে এবং বিভিন্ন ফোরামের পদ্ধতির উপর প্রভাব ফেলে। সামরিকীকরণ বলতে অ–আক্রমণাত্মক, শান্তিরক্ষা, বা প্রতিরক্ষামূলক সামরিক অভিযানের সমর্থনে মহাকাশ–ভিত্তিক সম্পদের স্থাপনা ও ব্যবহারকে বোঝায়। গুরুত্বপূর্ণভাবে, এটি আক্রমণাত্মক কর্মের  জন্য মহাকাশে অস্ত্র স্থাপনের সঙ্গে জড়িত নয়। অন্যদিকে, অস্ত্রায়ণের মধ্যে রয়েছে আপত্তিকর পদক্ষেপের জন্য বিশেষভাবে তৈরি করা মহাকাশ সম্পদের  ব্যবহার, যার মধ্যে রয়েছে অ্যান্টি–স্যাটেলাইট (এস্যাট) ক্ষেপণাস্ত্র, নির্দেশিত শক্তি অস্ত্র (ডিউ), বা অন্যান্য কাউন্টার–স্পেস অস্ত্রের মতো অস্ত্র স্থাপন। এটি একটি আরও আক্রমণাত্মক ভঙ্গির প্রতিনিধিত্ব করে, যেখানে মহাকাশকে যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত করার সম্ভাবনা রয়েছে। এই দুটি বিষয়ের মধ্যে পার্থক্য বোঝা অত্যাবশ্যক, কারণ একটি মহাকাশ আইন ও নীতি প্রণয়ন করে যা মহাকাশ নিরাপত্তা বাড়ায়। এর থেকে এসেছে যুদ্ধের প্রস্তুতি বাড়ানোর জন্য মহাকাশ সমর্থন ব্যবস্থা এবং আমাদের সম্পদের সুরক্ষার জন্য কাউন্টার–স্পেস ব্যবস্থা, যা একটি শক্তিশালী জাতীয় মহাকাশ নিরাপত্তা নীতির প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেয়।

জাতীয় মহাকাশ নিরাপত্তা নীতি জাতীয় নিরাপত্তার জন্য নিরাপদ ও শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে মহাকাশ ব্যবহারের বিষয়ে ভারতের অবস্থান গঠনে এবং শক্তির প্রথম প্রয়োগকারী হওয়া এড়ানোর জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। এই নীতি প্রণয়নের জন্য মহাকাশের কৌশলগত প্রয়োগের ক্ষেত্রে কাঙ্ক্ষিত ফলাফল অর্জনে কৌশলগত নিরাপত্তা কাঠামো ও অভিযানের ধারণাকে পুনরায় সংজ্ঞায়িত করা প্রয়োজন। এটি মহাকাশ ক্রিয়াকলাপের জন্য একটি সমন্বিত ও কার্যকর পদ্ধতির ভিত্তি স্থাপন করে, যা ভারতের প্রতিরক্ষা এবং মহাকাশের রাজ্যে সম্প্রীতি ও শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান বজায় রাখার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

সামরিকীকরণ বলতে অ–আক্রমণাত্মক, শান্তিরক্ষা, বা প্রতিরক্ষামূলক সামরিক অভিযানের সমর্থনে মহাকাশ–ভিত্তিক সম্পদের স্থাপনা ও ব্যবহারকে বোঝায়। গুরুত্বপূর্ণভাবে, এটি আক্রমণাত্মক কর্মের জন্য মহাকাশে অস্ত্র স্থাপনের সঙ্গে জড়িত নয়।

২০ এপ্রিল ২০২৩–এ ভারতীয় মহাকাশ নীতির উন্মোচন করা হয়েছে, এবং এর মধ্যে বেসরকারি সংস্থাগুলির দ্বারা এন্ড–টু–এন্ড বাণিজ্যিক মহাকাশ ক্রিয়াকলাপের পরিকল্পনাগুলি বিস্তৃত করা বা মহাকাশে উপগ্রহ ও রকেট উৎক্ষেপণ থেকে শুরু করে গ্রাউন্ড স্টেশনগুলির পরিচালনা পর্যন্ত সব কিছু স্থান পেয়েছে। তবে ভারতীয় মহাকাশ নীতি প্রতিরক্ষা প্রয়োগের জন্য বিশেষভাবে তৈরি করা মহাকাশ সুরক্ষার দিকগুলিকে অন্তর্ভুক্ত করে না। জাতীয় মহাকাশ নিরাপত্তা নীতি দ্ব্যর্থহীন ও দৃঢ় নিরাপত্তা বিবেচনার সঙ্গে শান্তিপূর্ণ মহাকাশ ব্যবহারের জন্য দেশের দৃষ্টিভঙ্গি পুনর্নির্ধারণ করবে। ভারতের প্রতিরক্ষা মহাকাশ প্রস্তুতি বাড়ানোর জন্য পরবর্তীকালে প্রতিরক্ষা মহাকাশ মতবাদ ও কৌশল–সহ মহাকাশ নিরাপত্তা নীতিকে শক্তিশালী করা প্রয়োজন। সঙ্কটের সময়ে মহাকাশের বিভিন্ন অংশীদারদের মধ্যে নিরবচ্ছিন্ন সমন্বয় অপরিহার্য, এবং এই সমন্বয়টি ইউনিয়ন ওয়ার বুক[১][২]–এর মাধ্যমে অর্জন করা যেতে পারে, যা বিভিন্ন নাগরিক–প্রতিরক্ষা (‌সিভিল–ডিফেন্স)‌ মহাকাশ খেলোয়াড়দের ভূমিকা ও দায়িত্বগুলিকে স্পষ্টভাবে সংজ্ঞায়িত করবে।


দ্বৈত দ্বিধার মোকাবিলা

নীতি প্রণয়নের পরবর্তী প্রাসঙ্গিক প্রশ্ন হল, ‘‌উপগ্রহকে সামরিক, বেসামরিক বা দ্বৈত–ব্যবহার হিসাবে চিহ্নিত করা’‌। সেই অনুসারে উপগ্রহ চিহ্নিত করার জটিলতা একটি বিশ্বব্যাপী চ্যালেঞ্জ, এবং ভারতের দ্বৈত–ব্যবহারের উপগ্রহকে অগ্রাধিকার দিয়ে, ঐকমত্য তৈরি করে, এবং মহাকাশ নীতিতে একটি স্বচ্ছ ও অভিযোজিত পদ্ধতি বজায় রেখে এই জটিলতাটির মোকাবিলা করা উচিত। এই পদ্ধতিটি ভারতকে সুবিধা ও নমনীয়তা অর্জনে সাহায্য করবে, এবং আরও স্থিতিশীল ও শান্তিপূর্ণ মহাকাশ পরিবেশে অবদান রাখবে।

মহাকাশ একটি কৌশলগত ও সীমিত সম্পদ, এবং এর সুবিবেচনামূলক জাতীয় ব্যবহার অবশ্যই এই মর্যাদাকে প্রতিফলিত করবে। নির্দিষ্ট সংস্থাগুলির একচেটিয়া ব্যবহারের জন্য মহাকাশ–ভিত্তিক সম্পদের মালিকানা সীমাবদ্ধ করার ধারণাটি শেষ পর্যন্ত সমস্ত ব্যবহারকারীকে অসুবিধার মধ্যে ফেলে। দেশ গঠনে অটল প্রচেষ্টার দ্বারা চিহ্নিত ভারতের বর্তমান অর্থনৈতিক জলবায়ু মোটেই বিভাগীয় খণ্ডগুলিতে মহাকাশ–ভিত্তিক সম্পদের নির্বাচিত ব্যবহারের বিলাসিতার অনুমতি দেয় না। অতএব, মহাকাশ সম্পদের বেসামরিক ও প্রতিরক্ষা সম্পদ হিসাবে পৃথগীকরণ ও শ্রেণিবিভাগের ধারণা সম্পদের সর্বোচ্চ ব্যবহারের অনুকূল নয় এবং এর ফল ক্ষতিকারক।


সেই অনুসারে উপগ্রহ চিহ্নিত করার জটিলতা একটি বিশ্বব্যাপী চ্যালেঞ্জ, এবং ভারতের দ্বৈত–ব্যবহারের উপগ্রহকে অগ্রাধিকার দিয়ে, ঐকমত্য তৈরি করে, এবং মহাকাশ নীতিতে একটি স্বচ্ছ ও অভিযোজিত পদ্ধতি বজায় রেখে এই জটিলতাটির মোকাবিলা করা উচিত।

এই দৃশ্যটি বিবেচনা করুন: সান–সিঙ্ক্রোনাস পোলার অরবিটে (এসএসপিও) ১০টি ভিন্ন সংস্থার দ্বারা পৃথকভাবে ব্যবহৃত অনুরূপ পেলোড সহ ১০টি উপগ্রহ স্থাপনের ফলে একটিকে একবারের পর পুনরায় দেখতে পাওয়ার সময় এক সপ্তাহের বেশি হয়। কিন্তু যখন একই বহরটি সকল ব্যবহারকারীর দ্বারা সহযোগিতামূলকভাবে ব্যবহৃত হয়, তখন এই সময়টি কমে গিয়ে হয় কিছু ঘণ্টা, এবং ব্যবহারের ক্ষেত্রটিও বহুগুণ বৃদ্ধি পায়।

দ্বৈত–ব্যবহারের মহাকাশ সম্পদগুলির প্রদত্ত সুবিধা শুধুমাত্র সামরিক প্রয়োগের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়; তারা একইসঙ্গে অসামরিক ও বাণিজ্যিক উভয় ক্ষেত্রের প্রয়োজনীয়তা পূরণ করে অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।

রোডম্যাপ: মালিকানা ও ব্যবস্থাপনা 

যে কোনও মহাকাশ ব্যবহারকারীর কার্যকালীন পরিচালন প্রয়োজনীয়তাকে সমগোত্রীয় মানের অন্তিম–পণ্য এবং সময়মত ডেলিভারি হিসাবে শ্রেণিবদ্ধ করা যেতে পারে। যদিও অন্তিম–পণ্যের বিষয়টি একটি উপযুক্ত পেলোড তৈরির জন্য গবেষণার ক্ষেত্রের মধ্যে রয়েছে, ডেলিভারির বিষয়টি একটি পরিমাণগত বর্ধনের দাবি রাখে, যার ফলে পুনরায় দেখতে পাওয়ার সময়গুলি উন্নত হয়। অতএব,  ইসরোর উচিত গবেষণা চালিয়ে যাওয়া, যা থেকে ভবিষ্যৎমুখী প্রযুক্তি তৈরি হবে, এবং তারপর তা পরিপক্ব হলে সাইক্লোস্টাইলিংয়ের জন্য বেসরকারি খেলোয়াড়দের কাছে তা হস্তান্তর করা। মহাকাশ প্রতিরক্ষার ফাঁক মেটাতে লক্ষ্যযুক্ত গবেষণার জন্য প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থার (ডিআরডিও) আরও দ্রুত বেশি করে এগিয়ে আসা প্রয়োজন, যার জন্য অভিজ্ঞ ইসরো টেকনোক্র্যাটদের থেকে প্রাথমিক সহায়তা নেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে।

মহাকাশ পরিকাঠামোর মালিকানা ও পরিচালনা পরিকল্পনার বিষয়গুলি সতর্কতার সঙ্গে বিবেচনা করা প্রয়োজন। মহাকাশ সম্পদের প্রস্তুতিপর্বের সময়কাল দীর্ঘ হয়, প্রায়শই পূর্ণ কার্যকারিতা অর্জন করতে কয়েক দশক সময় লাগে। অতএব, একটি মাল্টি–সার্ভিস প্রোভাইডার পদ্ধতি একটি দেশের বহু–ব্যবহারকারীর চাহিদা মেটানোর জন্য আদর্শভাবে উপযোগী, যেমন বিশাল মানবসম্পদ বা নিরাপত্তার সমস্যা। দ্বৈত বা বহু–ব্যবহারসম্পন্ন উপগ্রহ বহর অন্তর্ভুক্ত করা প্রস্তুতির সময়কাল এবং পরিমাণগত ব্যবধান উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস করতে পারে। ৩০:৭০ অনুপাতে সরকারি–বেসরকারি সহযোগিতার সমন্বয়ে গঠিত মডেল একটি শক্তিশালী ব্যবস্থা গঠন করে, যা অতিগুরুত্বপূর্ণ সামঞ্জস্য ও অর্থনীতিও নিশ্চিত করে। ভারতে ক্রমবর্ধমান বেসরকারি মহাকাশ ক্ষেত্র গতিশীল, সক্রিয় ও উৎসাহী। এর আত্মনির্ভরশীলতা অর্জনের জন্য যা প্রয়োজন তা হল একটি সুসংজ্ঞায়িত কাঠামো, যার ভিত্তিতে বিশেষ ধরনের উপগ্রহ তৈরির জন্য একটি অ্যাসেম্বলি লাইন স্থাপন করা যায়। এই ধারণার একটি অত্যাবশ্যক দিক হল শিল্পকে তাদের নিজস্ব বিশেষ দক্ষতার পথে চালিত করা, যাতে নকল ও প্রচেষ্টার অপচয় এড়ানো যায়। ইন্ডিয়ান স্পেস অ্যাসোসিয়েশন (আইএসপিএ) ও নিউস্পেস ইন্ডিয়া লিমিটেড (এনএসআইএল)–কে একত্রে এই কাজটির দায়িত্ব নিতে হবে, এবং শিল্প প্রতিভা ও সংস্থানকে নির্দিষ্ট পরিসরে আবদ্ধ করতে হবে, যাতে সর্বোত্তম কর্মসংস্থান ও ব্যবহার অর্জন করা যায়।
 

মহাকাশ সম্পদের প্রস্তুতির সময়কাল দীর্ঘ হয়, প্রায়শই পূর্ণ কার্যকারিতা অর্জন করতে কয়েক দশক সময় লাগে।

কৌশলগত সম্প্রদায়ের জন্য অন্তিম–পণ্যের নিরাপদ ডেলিভারি নিশ্চিত করতে  এই ব্যবস্থাগুলির পরিচালনাকারী অ্যালগরিদমগুলিতে একাধিক এনক্রিপশন স্তরকে বৈশিষ্ট্যযুক্ত করা প্রয়োজন, যা বিষয়বস্তু সংক্রান্ত বিশেষজ্ঞ সরকারি সংস্থাগুলি সতর্কতার সঙ্গে তৈরি করবে৷ এটি ব্যক্তিগত মালিকানাধীন এবং টেকসই স্যাটেলাইট নেটওয়ার্কের ব্যবহারে কর্মক্ষম নমনীয়তার একটি বিস্তৃত পরিসরের নিশ্চয়তা দেয়, এবং কার্যকরভাবে সমস্ত কৌশলগত প্রয়োজনীয়তা পূরণ করে। এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ যে, একদিকে যেমন অত্যন্ত সুরক্ষিত কাস্টমাইজড গ্রাউন্ড ও ইউজার সেগমেন্ট পরিকাঠামোগুলি ব্যবহারকারীদের নিজেদের মালিকানাধীন থাকবে, তেমনই অন্যদিকে এনক্রিপ্ট করা উচ্চমূল্যের অন্তিম–পণ্যগুলি সরবরাহ করবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও সমন্বিত সরঞ্জাম দিয়ে সজ্জিত প্রাইভেট স্পেস প্লেয়াররা, এবং তারা তা করবে এমনভাবে যাতে কৌশলগত ব্যবহারকারীদের প্রয়োজন পূরণ করা হয়।

প্রস্তাবিত স্থাপত্য

মহাকাশে ভারতের জাতীয় প্রতিরক্ষা সক্ষমতাকে শক্তিশালী করার জন্য স্পেস কমিশনের কাঠামো পর্যালোচনা করা অপরিহার্য। এই কমিশনে থাকবেন জাতীয় নিরাপত্তার সঙ্গে সংযুক্ত পরিকল্পনা, ডিজাইন, বিকাশ, বাস্তবায়ন ও কৌশলগত মহাকাশ সংক্রান্ত সরবরাহকে টেকসই করার দায়িত্বপ্রাপ্ত সমস্ত অংশীদারের প্রতিনিধিরা।

বর্তমানে বিভিন্ন সংস্থা, বেসামরিক ও প্রতিরক্ষা উভয়ই স্বাধীনভাবে, প্রায়শই সীমিত এবং অস্পষ্ট দায়িত্বের সঙ্গে, খণ্ডিতভাবে পরিকল্পনা, নকশা, উন্নয়ন ও সম্পাদনের ভূমিকা পরিচালনা করে, যার ফলে একটি বিচ্ছিন্ন জাতীয় পদ্ধতির সৃষ্টি হয়। জাতীয় নিরাপত্তার জন্য মহাকাশকে সামগ্রিকভাবে বিকশিত করতে সিডিএস–কে অবশ্যই স্পেস কমিশনের অংশ করতে হবে, এবং সমস্ত সিভিল–ডিফেন্স স্পেস অংশীদারদের সঙ্গে পার্শ্বীয় ও উল্লম্ব সংযোগের সুবিধা দিতে হবে। এই পদ্ধতিটি প্রচেষ্টাকে প্রবাহিত করে, অপ্রয়োজনীয়তা হ্রাস করে, এবং মহাকাশে দক্ষতা বজায় রেখে প্রসারযোগ্যতা এবং মানককরণের জন্য একটি ঐক্যবদ্ধ ও সমন্বিত জাতীয় পদ্ধতি নিশ্চিত করে। মহাকাশ প্রযুক্তি–ভিত্তিক সামগ্রিক প্রতিরক্ষা কার্যক্রমের কার্যকারিতা বাড়ানোর জন্য মহাকাশে কার্যকরী ইউনিটগুলিকে বিকশিত করা এবং পরবর্তীকালে ডিফেন্স স্পেস এজেন্সি (ডিএসএ)–কে প্রসারিত করে ইন্ডিয়ান ডিফেন্স স্পেস কমান্ড (ইন্ডস্প্যাক)–এ পরিণত করার জরুরি ও তাৎক্ষণিক প্রয়োজন রয়েছে।


জাতীয় নিরাপত্তার জন্য মহাকাশকে সামগ্রিকভাবে বিকশিত করতে সিডিএস–কে অবশ্যই স্পেস কমিশনের অংশ করতে হবে, এবং সমস্ত সিভিল–ডিফেন্স স্পেস অংশীদারদের সঙ্গে পার্শ্বীয় ও উল্লম্ব সংযোগের সুবিধা দিতে হবে।

উপসংহার

প্রতিরক্ষা প্রস্তুতির সঙ্গে জড়িত মহাকাশ নিরাপত্তায় ভারতের উদ্যোগের একটি ব্যাপক ও সুগঠিত জাতীয় কৌশল প্রয়োজন। এটিতে অবশ্যই কৌশলগত, অসামরিক ও বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে মহাকাশকে সংহত করার জন্য একটি সামগ্রিক জাতীয় পদ্ধতি ব্যবহার করা উচিত। অন্য নেতৃস্থানীয় মহাকাশযাত্রী দেশগুলির দেখানো দিশা অনুসরণ করে ভারতকে অবশ্যই শিল্প ও প্রতিরক্ষার মধ্যে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতার সুবিধা অর্জন করতে হবে, যাতে সামরিক প্রয়োজনের জন্য উপযুক্ত সমাধানগুলি কাস্টমাইজ করা যায়৷ শিল্প, অ্যাকাডেমিয়া, থিঙ্ক ট্যাঙ্ক, স্পেস ডোমেন বিশেষজ্ঞ এবং বন্ধুত্বপূর্ণ দেশগুলির সঙ্গে প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত নিয়মিত ও অন্তর্ভুক্তিমূলক মিথস্ক্রিয়া একটি সময়সীমার মধ্যে দীর্ঘমেয়াদি জাতীয় মহাকাশ রোডম্যাপ গঠন এবং কার্যকর করবে। সমন্বিত ব্যবহারের জন্য মহাকাশ বাজেটের পুনর্মূল্যায়ন, প্রতিরক্ষা মহাকাশ গবেষণার পাশাপাশি সিভিল–ডিফেন্স স্পেস আর্কিটেকচার সামগ্রিক জাতীয় নিরাপত্তা কাঠামোয় কাঙ্ক্ষিত প্রেরণা জোগাবে।



কর্নেল বালক সিং বর্মা, ভিএসএম, একজন আর্মি এয়ার ডিফেন্স অফিসার, যিনি আইএমএ থেকে ১৯৯৭ সালে একটি শিলকা রেজিমেন্টে কমিশন লাভ করেন। তিনি বর্তমানে অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের সঙ্গে স্পেস ডোমেনে রিসার্চ ফেলো।

[i] দ্য ইউনিয়ন ওয়ার বুক অফ ইন্ডিয়া একটি নথি যা যুদ্ধের সময় সরকারের প্রতিক্রিয়া এবং কার্যাবলির রূপরেখা দেয়। রাজ্যগুলিরও তাদের রাজ্য যুদ্ধের বই রয়েছে।

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.