Published on Oct 18, 2024 Updated 0 Hours ago

লোক দেখানোর জন্য আফগানিস্তান-ভিত্তিক সন্ত্রাসবদী সংগঠনগুলির মোকাবিলা করতে তালিবানের অনিচ্ছা বা অক্ষমতা এখন সন্ত্রাসবাদ প্রতিরোধে ভারত-রুশ সহযোগিতাকে ঘনিষ্ঠ করেছে।

সন্ত্রাসবাদের হুমকি মোকাবিলা: আফগানিস্তানে রাশিয়া ও ভারত

২০২৪ সালের মার্চ মাসে মস্কোর ক্রোকাস শহরের কেন্দ্রে ইসলামিক স্টেট অফ খোরাসান প্রদেশ (আইএসকেপি)-‌এর সন্ত্রাসবাদী হামলার পর থেকে মস্কো সন্ত্রাসের আশ্রয়স্থল হিসাবে আফগানিস্তানের পুনরুত্থান রোধ করার প্রচেষ্টা জোরদার করেছে। এটি করার একটি উপায়, যেমন রাশিয়ার পদক্ষেপগুলি ইঙ্গিত করে, তালিবানের সঙ্গে আরও বেশি সম্পৃক্ততা। সম্প্রতি গোষ্ঠীটিকে ২০০৩ সালের সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের তালিকা থেকে বাদ দিতে রাশিয়ার বিদেশ মন্ত্রক ও বিচার মন্ত্রক প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের কাছে একটি প্রস্তাব পাঠিয়েছে। আফগানিস্তান-‌ভিত্তিক সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় ভারত ও রাশিয়ার সহযোগিতার প্রেক্ষিতে আফগানিস্তানের নতুন অগ্রগতি এবং সন্ত্রাস দমনে ভারত-রাশিয়া সহযোগিতার অনুধাবন গুরুত্বপূর্ণ।

নিজেদের স্বার্থ রক্ষা করা

তালিবানকে সন্ত্রাসবাদী তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার জন্য রাশিয়ার সিদ্ধান্ত আকস্মিক নয়, এবং একে একটি
'সীমিত ঝুঁকি' দৃশ্য হিসাবে দেখা যেতে পারে। গোষ্ঠীটি এখনও রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের নিষেধাজ্ঞার অধীনে রয়েছে, এবং এই পরিস্থিতিতে স্বীকৃতি দেওয়া পর্যন্ত না-‌গিয়ে মস্কোর সিদ্ধান্তের লক্ষ্য তালিবান-চালিত ইসলামিক আমিরশাহির থেকে কিছু সুবিধা অর্জন করা। কাবুলের পতনের পর থেকে রাশিয়া তালিবানের সঙ্গে জড়িত আছে — এর কূটনীতিকরা থেকে গিয়েছিলেন এবং এর দূতাবাস খোলা ছিল। মস্কো ২০২২ সালের আগস্টে তালিবান-নিযুক্ত কূটনীতিককেও স্বীকৃতি দিয়েছে, এবং এই বছরের ফেব্রুয়ারিতে একটি সামরিক অ্যাটাশে গ্রহণ করেছে। এটি ২০২১ ও ২০২২ সালে মস্কো ফরম্যাট আলোচনার জন্য, এবং ২০২২ ও ২০২৪ সালে দু’‌বার সেন্ট পিটার্সবার্গ ইন্টারন্যাশনাল ইকনমিক ফোরামের জন্য, গোষ্ঠীটিকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল। দেশটির বিশেষ দূত সম্প্রতি সাংহাই সহযোগিতা সংস্থায় (এসসিও) কাবুলের সম্ভাব্য অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে ইঙ্গিতও দিয়েছেন, অবশ্য যদি তাদের স্বীকৃতি দেওয়া হয়।

রাশিয়া তার ২০২৩ সালের কনসেপ্ট অফ ফরেন পলিসি-‌তে সহযোগিতার জন্য আফগানিস্তানকে ইউরেশীয়
পরিসরের সঙ্গে একীভূত করার দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য প্রকাশ করেছে। এইভাবে তালিবানের প্রতি মস্কোর দৃষ্টিভঙ্গির পিছনে একটি শক্তিশালী ভূ-অর্থনৈতিক কারণও রয়েছে, এবং সন্ত্রাসের তালিকা থেকে গোষ্ঠীটির  অপসারণ দ্বিপাক্ষিক অর্থনৈতিক সম্পর্ককে সহজতর করবে বলে আশা করা হচ্ছে। উজবেকিস্তান-আফগানিস্তান-পাকিস্তান রেলপথ এবং তুর্কমেনিস্তান-আফগানিস্তান-পাকিস্তান-ভারত গ্যাস লাইনের আফগান অংশটির মতো প্রকল্পগুলি আফগানিস্তানে অর্থনৈতিক কার্যকলাপকে উন্নত করতে পারে, উন্নত আঞ্চলিক সংযোগের দিকে চালিত করতে পারে, এবং সন্ত্রাসবাদী অনুপ্রবেশ রোধে সীমান্ত পরিকাঠামো উন্নত করতে পারে। মস্কোর জন্য এক স্থিতিশীল আফগানিস্তানকে মধ্য এশিয়া এবং শেষ পর্যন্ত রাশিয়ায় সন্ত্রাসবাদের বিস্তার রোধ করার জন্য প্রতিরোধের প্রাচীর হিসাবে দেখা হয়।

২০২২ সালের জুন থেকে কাবুলে ভারতের দূতাবাসে একটি প্রযুক্তিগত দল নিযুক্ত রয়েছে। এই গোষ্ঠীর সঙ্গে নয়াদিল্লির যোগাযোগও বেড়েছে। ভারতীয় কর্মকর্তারা আফগানিস্তানকে সাহায্যের ব্যবস্থা করা এবং
আফগান ব্যবসায়ীদের চাবাহার বন্দর ব্যবহার করা নিয়ে আলোচনা করার জন্য মার্চ ২০২৪-এ আইইএ-র ভারপ্রাপ্ত অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছেন। আফগানিস্তান চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট দেশের ব্যবসায়ীদের দ্বারা বন্দরের ব্যবহার নিয়ে আলোচনা করার জন্য ইন্ডিয়ান পোর্টস গ্লোবাল লিমিটেডের সঙ্গে একটি অনলাইন বৈঠকও করেছে। তালিবান-নিযুক্ত কূটনীতিকরা আনুষ্ঠানিকভাবে ভারত কর্তৃক স্বীকৃত না-‌হলেও আফগান প্রজাতন্ত্র যুগের রাষ্ট্রদূত এবং মুম্বইয়ের কনসাল জেনারেল পদত্যাগ করেছেন।


২০২২ সালের জুন থেকে কাবুলে ভারতের দূতাবাসে একটি প্রযুক্তিগত দল নিযুক্ত রয়েছে। এই গোষ্ঠীর সঙ্গে নয়াদিল্লির যোগাযোগও বেড়েছে। ভারতীয় কর্মকর্তারা আফগানিস্তানকে সাহায্যের ব্যবস্থা করা এবং আফগান ব্যবসায়ীদের চাবাহার বন্দর ব্যবহার করা নিয়ে আলোচনা করার জন্য মার্চ ২০২৪-এ আইইএ-র ভারপ্রাপ্ত অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছেন।



তালিবানের নারী ও সংখ্যালঘুদের অধিকার বজায় রাখা এবং একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক সরকার প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরার সময় ভারত জোর দিয়ে বলেছে যে, আফগানিস্তানকে সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীর আশ্রয়স্থল হিসাবে ব্যবহার করা উচিত নয়, এবং এদের মোকাবিলার দায়িত্ব তালিবানের উপরেই অর্পণ করা হয়েছে। ভারত লস্কর-এ-তৈবা (এলইটি) ও জইশ-ই-মহম্মদ (জেএম) এবং আন্তর্জাতিক গোষ্ঠীগুলির মতো ভারত-বিরোধী সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীগুলিকে তার নিরাপত্তা ও কৌশলগত স্বার্থের জন্য একটি বড় বিপদ হিসাবে দেখে। ভারতের জন্য আফগানিস্তানে এলইটি এবং জেইএম-এর উপস্থিতি এবং জম্মু ও কাশ্মীরকে অস্থিতিশীল করার ক্ষমতা নিয়ে আশঙ্কা একটি প্রধান উদ্বেগের বিষয়। অ্যানালিটিকাল সাপোর্ট অ্যান্ড স্যাংশনস মনিটরিং টিম-‌এর ১৩তম প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, জেইএম আফগানিস্তানে প্রশিক্ষণ শিবিরগুলি বজায় রেখেছে, যার মধ্যে কিছু তালিবানের সরাসরি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে এবং এলইটি তালিবানের অপারেশনগুলিতে অর্থ ও প্রশিক্ষণ সহায়তা প্রদান করছে। নয়াদিল্লির জন্য আফগানিস্তানের স্থিতিশীলতা মধ্য এশীয় প্রজাতন্ত্রগুলিতে পৌঁছনোর জন্যও গুরুত্বপূর্ণ।

সন্ত্রাসের আশ্রয়স্থল?

আফগানিস্তানে ইসলামিক আমিরশাহির বিগত আড়াই বছরের শাসন প্রমাণ করেছে আফগানিস্তানকে সন্ত্রাসবাদীদের আশ্রয়স্থল এবং আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী হামলার সমন্বয়ের একটি কেন্দ্র হিসাবে ব্যবহার রোধ করার জন্য দোহা চুক্তিতে দেওয়া প্রতিশ্রুতি তারা পূরণ করতে পারেনি। রাষ্ট্রপুঞ্জের অ্যানালিটিকাল সাপোর্ট অ্যান্ড স্যাংশনস মনিটরিং টিম-‌এর জানুয়ারি ২০২৪-এর প্রতিবেদনে আল কায়দা ও তালিবানের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তুলে ধরা হয়েছে। আল কায়দা সারা বিশ্ব থেকে গোষ্ঠীটির সমর্থকদের আফগানিস্তানে স্থানান্তরিত করার জন্য, এবং
তালিবানের অনুশীলনগুলিকে অনুকরণ করে ‘পশ্চিমী’ ও ‘জিওনিস্ট’ শক্তির বিরুদ্ধে সম্মিলিত সংগ্রাম শুরু করার জন্য, আহ্বান জানিয়েছে। গোষ্ঠীটির এখন ৩৪টি প্রদেশের ১০টিতে উপস্থিতি রয়েছে, এবং তারা নতুন প্রশিক্ষণ শিবির, মাদ্রাসা ও সেফ হাউস খুলেছে। তালিবান আল কায়দা-‌সহ কিছু গোষ্ঠীর সঙ্গে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক উপভোগ করলেও, আইএসকেপি-র মতো গোষ্ঠীর শক্তি বৃদ্ধি ক্ষমতার উপর তালিবানের নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি এই অঞ্চলের সামগ্রিক নিরাপত্তার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ তৈরি করে।

সুতরাং, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অনেকেই মনে করেন, এই বিপদ মোকাবিলা করার জন্য তালিবানের সঙ্গে এক ধরনের সম্পৃক্ততা প্রয়োজন। নিষিদ্ধ তালিকা থেকে তালিবানদের বাদ দেওয়ার জন্য মস্কোর প্রস্তাবকেও কৌশলে আরও জায়গা পাওয়ার জন্য একটি পদক্ষেপ হিসাবে দেখা হচ্ছে। কিন্তু তালিবান এই সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীগুলোর উপর কার্যকরভাবে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম বা ইচ্ছুক কি না, তা অনুমান করা কঠিন। আইএসকেপি দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়ার উপর নতুন করে জোর দিচ্ছে, এবং এই অঞ্চলগুলিতে তার প্রসার বিস্তৃত করছে। আইএসকেপি
ভারতের সঙ্গে তালিবানের সম্পৃক্ততার সমালোচনা করেছে, এবং এই গোষ্ঠীটি ও আল কায়দা উভয়েরই নয়াদিল্লির অভ্যন্তরীণ উন্নয়নের বিষয়ে মন্তব্য করার কিছু উদাহরণ রয়েছে।

রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের সহযোগিতাকে নয়াদিল্লির তালিবানের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার একটি
গেটওয়ে হিসাবে দেখা হয়। গত বছর আমিরশাহির কিছু সদস্যের সঙ্গে ভারতের বৈঠক রাশিয়ার সহায়তার কারণে ফলপ্রসূ হতে দেখা গিয়েছিল। গত মাসে আফগানিস্তানে রাশিয়ার বিশেষ দূত জমির কাবুলভ নয়াদিল্লির আমন্ত্রণে ভারত সফর করেন। সফরের সময়, মস্কোতে হামলার পর, সন্ত্রাসের বিপদ সম্পর্কে মস্কো ও নয়াদিল্লি উভয়েরই উদ্বেগ নির্দেশিত হয়েছিল৷

আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের পর ইরান, রাশিয়া ও চিন ওই দেশটিতে তাদের সম্পৃক্ততা বাড়িয়ে দেয়, এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে এই অঞ্চল থেকে দূরে রাখার পারস্পরিক লক্ষ্যে একত্র হয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রকাশ্যে আফগানিস্তানকে রাশিয়ার সঙ্গে কৌশলগত প্রতিযোগিতার একটি প্ল্যাটফর্ম হিসাবে দেখা থেকে বিরত থাকলেও এই তিন দেশ একে সেভাবেই দেখে। গত মে মাসে মস্কো ও বেজিং সে দেশে সামরিক পরিকাঠামো স্থাপনের জন্য যে কোনও প্রচেষ্টা প্রতিরোধ করার জন্য তাদের সংকল্প পুনর্ব্যক্ত করেছে, এবং আফগানিস্তানে সহযোগিতা বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। উপরে যেমন আলোচনা করা হয়েছে, ভারত ও রাশিয়া উভয়ই দেশে অভিন্ন উদ্বেগ ভাগ করে নেয়, যা তাদের দ্বিপাক্ষিক ও বহুপাক্ষিক উভয় চ্যানেলের মাধ্যমে একসঙ্গে কাজ করার সুযোগ দেয়। বিশেষজ্ঞরা আফগানিস্তানে সন্ত্রাসবাদের হুমকি মোকাবিলা করার জন্য এসসিও-আঞ্চলিক সন্ত্রাসবিরোধী কাঠামো (এসসিও-আরএটিএস) গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন, কারণ এটি সদস্য দেশগুলির স্বার্থের প্রতি বিদ্বেষপূর্ণ কিছু গোষ্ঠী বা ব্যক্তিদের সম্পর্কে তথ্য ভাগ করে নেওয়া, মাদক চোরাচালান আটকানো , এবং যৌথ সন্ত্রাসবিরোধী মহড়া পরিচালনা ইত্যাদির মাধ্যমে সহযোগিতা প্রসারিত করে।


আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের পর ইরান, রাশিয়া ও চিন ওই দেশটিতে তাদের সম্পৃকতা বাড়িয়ে দেয়, এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে এই অঞ্চল থেকে দূরে রাখার পারস্পরিক লক্ষ্যে একত্রিত হয়।



যাই হোক, যদিও ভারত রাশিয়ার নেতৃত্বে কয়েকটি উদ্যোগে জড়িত এবং এসসিও-র সদস্য, তাহলেও রাশিয়া, চিন, ইরান ও পাকিস্তান ভারতকে বাদ দিয়ে অন্য কিছু গোষ্ঠীর সঙ্গে জড়িত। সেই গোষ্ঠীর সঙ্গে তাদের সম্পৃক্ততাও নয়াদিল্লির থেকে আলাদা, যেটি তার নিজস্ব কৌশলগত কারণে আফগান জনগণের স্বার্থের প্রতি তার প্রতিশ্রুতির ভারসাম্য বজায় রাখতে অপেক্ষাকৃত বেশি সচেতন। এই মতপার্থক্য থাকা সত্ত্বেও, নয়াদিল্লিকে অবশ্যই রাশিয়ার সঙ্গে কাজ করতে হবে যাতে আফগানিস্তানের নিরাপত্তা পরিস্থিতির উন্নতি হয়।

তালিবানের জঙ্গি-‌বিরোধী ভূমিকা

তালিবান আইএসকেপি থেকে বিপদের সম্পূর্ণ মাত্রা স্বীকার করা থেকে বিরত রয়েছে। এর সিনিয়র নেতারা জনসভায় এটিকে
ছোট করে দেখান এবং বাইরের সমর্থনের প্রয়োজন অস্বীকার করেন। রাষ্ট্রপুঞ্জের মতে, আইএসকেপি-‌র বাহ্যিক ক্রিয়াকলাপের দিকে না তাকিয়ে গোষ্ঠীটি দেশে তাদের ক্ষমতার জন্য কতটা অভ্যন্তরীণ বিপদ হয়ে উঠছে তার মোকাবিলা করাই তালিবানের অগ্রাধিকার। তালিবান গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে তার জঙ্গি-বিরোধী প্রচেষ্টা বাড়িয়েছিল ঠিকই, কিন্তু আইএসকেপি আক্রমণের সংখ্যা হ্রাস তালিবানের সন্ত্রাসবিরোধী ক্ষমতার কার্যকারিতার কারণে নয়, বরং সম্ভবত আইএসকেপি-র নিজস্ব কৌশল পরিবর্তনের কারণে ঘটেছে।

তালিবান আইএসকেপি থেকে বিপদের সম্পূর্ণ মাত্রা স্বীকার করা থেকে বিরত রয়েছে। এর সিনিয়র নেতারা জনসভায় এটিকে ছোট করে দেখান এবং বাইরের সমর্থনের প্রয়োজন অস্বীকার করেন।



এদিকে, তালিবান চিনের সীমান্তে তুর্কিস্তান ইসলামিক পার্টির (ইটিআইএম-‌ও বলা হয়) উপস্থিতি বা পাকিস্তানে টিটিপি-র অবিরাম আক্রমণ সম্পর্কে চিনের উদ্বেগের সমাধান করতেও ব্যর্থ হয়েছে। যদিও প্রাথমিক মাসগুলিতে রাশিয়া আইএসকেপি মোকাবিলায় তালিবানের প্রচেষ্টার প্রশংসা করেছিল, তারা এ কথাও বলেছিল যে এই গোষ্ঠীটিকে আরও বেশি কিছু করতে হবে। ইরানে ও তুর্কিয়েতে হামলার অপরাধীদের আফগানিস্তানে প্রশিক্ষণ পাওয়ার বিষয়েও প্রতিবেদন ছিল। হাক্কানি নেটওয়ার্ক ও আইএসকেপির মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ককে অন্যতম কারণ হিসেবে দেখা হয় যার জন্য এই গোষ্ঠীটি আইএসকেপি-‌র শক্তিবৃদ্ধির বিরুদ্ধে লড়াই করতে ব্যর্থ হয়েছে।

উপসংহার

লোক দেখানোর জন্য আফগানিস্তান-ভিত্তিক সন্ত্রাসবাদী সংগঠনগুলির মোকাবিলা করতে তালিবানের অনিচ্ছা বা অক্ষমতার কারণে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এখন  ব্যস্ততা বৃদ্ধি করেছে ‌এমন এক অস্থিতিশীলতার মোকাবিলা করার জন্য যেখানে আমিরশাহি বিভিন্ন গোষ্ঠীকে আর ম্যানেজ করতে পারবে না। কিন্তু বৃহত্তর সম্পৃক্ততা আবার গোষ্ঠীটিকে বৈধতা প্রদানের ঝুঁকি নিয়ে আসে, যদিও কাবুল কর্তৃক গৃহীত সন্ত্রাস-বিরোধী পদক্ষেপ এবং বিস্তৃত ভিত্তিমূলক শাসন বা নারীর অধিকার ও স্বাধীনতার প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের দিকে অগ্রগতির কোনও নিশ্চয়তা নেই।

এখনও অবধি চিন, রাশিয়া, ইরান, তুর্কিয়ে ও অন্যরা ২০২১ সালে আফগানিস্তান থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আকস্মিক ও বিশৃঙ্খল সেনা প্রত্যাহারের ফলে সৃষ্ট শূন্যতা পূরণ করার চেষ্টা করছে। রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের তালিবানের সঙ্গে জড়িত হওয়ার মাত্রা এবং চিনের সঙ্গে গোষ্ঠীটির ক্রমবর্ধমান বন্ধুত্ব নিয়ে কিছু মতপার্থক্য থাকলেও নয়াদিল্লি এই খেলায় নিজের জায়গা খুঁজে নিতে রাশিয়ার সঙ্গে তার সহযোগিতার গতি বজায় রাখবে, কারণ উভয় দেশ নিরাপত্তা-সম্পর্কিত এবং অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার বিষয়ে পারস্পরিক উদ্বেগের শরিক।



শিবম শেখাওয়াত অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের জুনিয়র ফেলো।

রাজোলি সিদ্ধার্থ জয়প্রকাশ অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের রিসার্চ অ্যাসিস্ট্যান্ট।

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.

Authors

Shivam Shekhawat

Shivam Shekhawat

Shivam Shekhawat is a Junior Fellow with ORF’s Strategic Studies Programme. Her research focuses primarily on India’s neighbourhood- particularly tracking the security, political and economic ...

Read More +
Rajoli Siddharth Jayaprakash

Rajoli Siddharth Jayaprakash

Rajoli Siddharth Jayaprakash is a Research Assistant with the ORF Strategic Studies programme, focusing on Russia's domestic politics and economy, Russia's grand strategy, and India-Russia ...

Read More +