Author : Nilanjan Ghosh

Published on Jan 14, 2024 Updated 0 Hours ago

হানি ও ক্ষয়ক্ষতি বা এলঅ্যান্ডডি তহবিলের গুরুত্ব কতটা তার পুনরাবৃত্তির প্রয়োজন খুবই কম। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে কীভাবে এর মোকাবিলা করা সম্ভব

হানি ও ক্ষয়ক্ষতি অর্থায়নে সমস্যা: প্রশ্নের উত্তর নেই, উদ্বেগও মনোযোগ আকর্ষণে ব্যর্থ

লস ‌অ্যান্ড ড্যামেজ (এলঅ্যান্ডডি) বা হানি ও ক্ষয়ক্ষতি তহবিল প্রতিষ্ঠা করা কপ–২৭–এর একটি উল্লেখযোগ্য মাইলফলক। এটি ছিল বিশ্ব উষ্ণায়ন ও জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে মারাত্মকভাবে প্রভাবিত উন্নয়নশীল ও স্বল্পোন্নত দেশগুলির বছরের পর বছর নিরলস সমর্থনের চূড়ান্ত পরিণতি। এই তহবিলের প্রাথমিক উদ্দেশ্য হল জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বিরূপ প্রভাবের সম্মুখীন দেশগুলিকে আর্থিক সহায়তা দেওয়া। তহবিলের কার্যক্রমের সার্বিক তত্ত্বাবধানের জন্য বিভিন্ন ভৌগোলিক অঞ্চলের ২৪ জন সদস্যের সমন্বয়ে একটি ট্রানজিশনাল কমিটি গঠন করা হয়েছিল। কমিটির টার্মস অফ রেফারেন্স–এর মধ্যে ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে সংযুক্ত আরব আমিরশাহির (ইউএই) দুবাইতে কপ২৮–এ কমিটির সুপারিশগুলি উপস্থাপন করার কথা বলা ছিল, এবং সেখান থেকে এই তহবিলের আনুষ্ঠানিক সূচনা হয়েছে।



————————
এই তহবিলের প্রাথমিক উদ্দেশ্য হল জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বিরূপ প্রভাবের সম্মুখীন দেশগুলিকে আর্থিক সহায়তা দেওয়া।
————————

জলবায়ু সংকট আরও খারাপ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এর প্রভাবগুলি — যেমন সমুদ্রে জলস্তরের উচ্চতা বৃদ্ধি, অবিরাম তাপপ্রবাহ, মরুকরণ, সমুদ্রের অম্লকরণ, এবং বন্যা, খরা, সাইক্লোন ও দাবানলের পুনরাবৃত্তির হারে পরিবর্তন — মানব সমাজের জন্য হানি ও ক্ষয়ক্ষতির কারণ হবে, যা দীর্ঘমেয়াদি এবং প্রায়শই স্থায়ী। জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত রাষ্ট্রপুঞ্জের ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন (ইউএনএফসিসিসি)–এর কাঠামো স্বীকার করে যে জলবায়ু পরিবর্তন এমন কিছু ‘‌অপরিবর্তনীয় প্রভাব’‌ ফেলছে যা অভিযোজন দিয়ে হ্রাস করা যায় না। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে, এই হানি ও ক্ষয়ক্ষতি তারা বহন করে যারা সবচেয়ে কম নির্গমনকারী। উদাহরণ স্বরূপ, আফ্রিকা মহাদেশ,
বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনে তার ন্যূনতম অবদান সত্ত্বেও, জলবায়ুগতভাবে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ভূখণ্ডগুলির মধ্যে একটি, যেখানে জি২০ দেশগুলি বিশ্বব্যাপী গ্রিনহাউস নির্গমনের প্রায় ৭৫ শতাংশের জন্য দায়ী। অতএব, জলবায়ু ন্যায়বিচার, বণ্টনমূলক ন্যায়বিচার এবং ন্যায়বিচারের দৃষ্টিকোণ থেকে ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।


জলবায়ু সংকট আরও খারাপ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এর প্রভাবগুলি — যেমন সমুদ্রে জলস্তরের উচ্চতা বৃদ্ধি, অবিরাম তাপপ্রবাহ, মরুকরণ, সমুদ্রের অম্লকরণ, এবং বন্যা, খরা, সাইক্লোন ও দাবানলের পুনরাবৃত্তির হারে পরিবর্তন — মানব সমাজের জন্য হানি ও ক্ষয়ক্ষতির কারণ হবে, যা দীর্ঘমেয়াদি এবং প্রায়শই স্থায়ী।

ইউনাইটেড নেশনস এনভায়রনমেন্ট প্রোগ্রামের ২০২৩ অ্যাডাপটেশন গ্যাপ রিপোর্ট অনুসারে, উন্নয়নশীল দেশগুলিতে অভিযোজনের জন্য আর্থিক প্রয়োজনীয়তাগুলি ১০ থেকে ১৮–র একটি ফ্যাক্টর দ্বারা আন্তর্জাতিক পাবলিক ফাইন্যান্স প্রবাহকে ছাড়িয়ে গিয়েছে, যা পূর্বের অনুমানের তুলনায় ৫০ শতাংশের বেশি বৃদ্ধির প্রতিনিধিত্ব করে। বর্তমান মডেলগুলি এ কথাই তুলে ধরে যে, এই দেশগুলিতে অভিযোজন খরচ এই দশক জুড়ে বছরে প্রায় ২১৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার হবে। অধিকন্তু, কার্যকরভাবে অভ্যন্তরীণ অভিযোজন অগ্রাধিকারগুলির দিকে নজর দেওয়ার জন্য এই দেশগুলির প্রতি বছর আনুমানিক ৩৮৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রয়োজন হবে। সাধারণভাবে, হানি ও ক্ষয়ক্ষতি অর্থায়নকে অভিযোজন ও প্রশমন অর্থায়নের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত করা প্রয়োজন।

২০১৩ সালে ইউএনএফসিসিসি এই হানি ও ক্ষয়ক্ষতি সমস্যা সমাধানের জন্য ওয়ারশ ইন্টারন্যাশনাল মেকানিজম (ডব্লিউআইএম) তৈরি করেছিল। যাই হোক, এর প্রাথমিক দৃষ্টি ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার দিকেই বেশি ছিল এবং বিশ্বব্যাপী আর্থিক সক্রিয়তাকে উদ্দীপিত করার প্রচেষ্টা অপ্রতুল ছিল। এই কৌশলটির গুরুত্বপূর্ণ সীমাবদ্ধতাই প্রশমন ও অভিযোজনের জন্য অনুসৃত পদ্ধতির প্রতিফলন ঘটাচ্ছে। ডব্লিউআইএম তৈরির উদ্দেশ্য ছিল জলবায়ু পরিবর্তনের এমন প্রভাবগুলির মোকাবিলা করা যা প্রশমন ও অভিযোজনের সুযোগের বাইরে। অতএব, হানি ও ক্ষয়ক্ষতির জন্য এই কৌশলগুলির উপর নির্ভর করা মৌলিকভাবে ত্রুটিপূর্ণ।
জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত আন্তঃসরকারি প্যানেল উল্লেখ করেছে যে, দৃঢ় অভিযোজন ও প্রশমন ব্যবস্থা সত্ত্বেও হানি ও ক্ষয়ক্ষতির ক্ষেত্রে জলবায়ু পরিবর্তনের অনিবার্য পরিণতিগুলি অব্যাহত থাকবে।

অতএব, এলঅ্যান্ডডি তহবিলের গুরুত্ব কতটা তার পুনরাবৃত্তির প্রয়োজন খুবই কম। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে কীভাবে এর মোকাবিলা করা সম্ভব‌। এটিই হবে প্রধান চিন্তার বিষয় যা এলঅ্যান্ডডি-র জন্য তহবিলের প্রবাহকে প্রভাবিত করবে। এই ‘‌কীভাবে’‌ প্রশ্নটি চারটি বিষয় থেকে উঠে এসেছে, যেমনটি আমরা এই প্রবন্ধে শ্রেণিবদ্ধ করেছি।
 

সংজ্ঞাগত সমস্যা


প্রথম এবং প্রধান উদ্বেগের বিষয়টি এলঅ্যান্ডডি–র বর্ণনা সংক্রান্ত। হানি ও ক্ষয়ক্ষতি ‌বলতে কী বোঝায় তার কোনও সুনির্দিষ্ট সংজ্ঞা নেই, যার ফলে ব্যাখ্যার জন্য অনেকটা জায়গা ফাঁকা থেকে যায়। কীভাবে দুর্বল দেশগুলির ক্ষতি পূরণ করা যায় সেই প্রসঙ্গে
বয়েড ও সহ–লেখকেরা এলঅ্যান্ডডি–তে পরিপ্রেক্ষিতের একটি সুবিস্তৃত দিগন্ত নিয়ে আলোচনা করেছেন, যা অভিযোজন ও প্রশমন থেকে শুরু করে অস্তিত্বগত পর্যন্ত হতে পারে। তারা কোন দৃষ্টিকোণ থেকে বিষয়টি দেখছে ইউএনএফসিসিসি তা নির্দিষ্ট করেনি। শারম আল–শেখ বাস্তবায়ন পরিকল্পনা এলঅ্যান্ডডি–র ধ্বংসাত্মক অর্থনৈতিক এবং অ–অর্থনৈতিক হানি (‌লস)‌ নিয়ে আলোচনা করে, যার মধ্যে বাধ্যতামূলক স্থানচ্যুতি এবং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য, মানুষের যাতায়াত ও স্থানীয় সম্প্রদায়ের জীবন ও জীবিকার উপর প্রভাব অন্তর্ভুক্ত। অন্যদিকে, ক্ষতিগুলিকে (ড্যামেজ)‌ পরিকাঠামো ও সম্পত্তির ক্ষতি হিসাবে শ্রেণিবদ্ধ করা হয়, যা একটি দেশের অর্থনৈতিক, পরিবেশগত ও সামাজিক অবস্থাকে উল্লেখযোগ্যভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে। অর্থনৈতিক হানি ও ক্ষয়ক্ষতি, উদাহরণস্বরূপ, প্রাকৃতিক দুর্যো্গে যখন ঘরবাড়ি, স্কুল বা রাস্তার মতো পরিকাঠামো ধ্বংস হয়, সেগুলি আর্থিকভাবে পরিমাপযোগ্য। সংস্কৃতির মতো অ–অর্থনৈতিক ক্ষতি অ–পরিমাপযোগ্য।


শারম আল–শেখ বাস্তবায়ন পরিকল্পনা এলঅ্যান্ডডি–র ধ্বংসাত্মক অর্থনৈতিক এবং অ–অর্থনৈতিক হানি (‌লস)‌ নিয়ে আলোচনা করে, যার মধ্যে বাধ্যতামূলক স্থানচ্যুতি এবং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য, মানুষের যাতায়াত ও স্থানীয় সম্প্রদায়ের জীবন ও জীবিকার উপর প্রভাব অন্তর্ভুক্ত।

অধিকন্তু, এই সংজ্ঞাগুলি ব্যাপক ও বিস্তৃত। এলঅ্যান্ডডি–র একটি স্বীকৃত সংজ্ঞা এবং শ্রেণিবিভাগ না–হওয়া পর্যন্ত অর্থায়নের সমস্যা থেকে যায়। অন্যদিকে, সাহিত্য এক্স–অ্যান্টি (এলঅ্যান্ডডি সম্পর্কিত একটি ঘটনা ঘটার আগে) এবং এক্স–পোস্ট (যখন এলঅ্যান্ডডি-র একটি ঘটনা ইতিমধ্যেই ঘটেছে) পর্যাপ্তভাবে স্বীকার করে। যদিও এক্স–অ্যান্টি শ্রেণিবিভাগের লক্ষ্য ভবিষ্যতে ঘটতে পারে এমন এলঅ্যান্ডডি মোকাবিলা ও প্রতিরোধ করা (এমনকি ডব্লিউআইএম–ও সে বিষয়ে কথা বলে), বড় সমস্যা হল কীভাবে তাদের অভিযোজন অর্থ থেকে আলাদা করা সম্ভব। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

আরোপণ সমস্যা


আরোপণের সমস্যাটি বিভিন্ন সূত্র থেকে উদ্ভূত হয়। প্রথমটি হল, হানি ও ক্ষয়ক্ষতির কোন দিকটির জন্য জলবায়ু পরিবর্তনকে দায়ী করা যেতে পারে। যেমন, গঙ্গা–ব্রহ্মপুত্র–মেঘনা বদ্বীপের ভারতীয় সুন্দরবন শুধুমাত্র সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির কারণেই নয়, মূলধারার গঙ্গা থেকে এর শাখানদীগুলিতে পলি প্রবাহ হ্রাসের কারণেও সঙ্কুচিত হচ্ছে। পলি প্রবাহের হ্রাস মূলত পশ্চিমবঙ্গের ফারাক্কা শহরে গঙ্গার উপর একটি ব্যারাজের উজানে পলি আটকে যাওয়ার কারণে। কাজেই ভারতীয় সুন্দরবনের সঙ্কোচনের জন্য শুধু বঙ্গোপসাগরে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধিকে দায়ী করা ঠিক নয়।

আরও প্রশ্ন হল: কে অর্থ প্রদান করবে? কপ২৭ আলোচনার নানা ঝড়ঝাপটার মধ্যে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন হানি ও ক্ষয়ক্ষতির তহবিলকে একটি মোচড় দিয়ে সম্মতি দিয়েছে: শুধুমাত্র ইউএনএফসিসিসি যাদের 'প্রধান অর্থনীতি' বলে চিহ্নিত করেছে তাদের অর্থ দেওয়া উচিত। এইখানেই সমস্যা:‌ চিন বিশাল গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমনের জন্য কুখ্যাত হলেও ইউএনএফসিসিসি নিয়মের অধীনে ‘‌উন্নয়নশীল’‌ দেশ। ফলে বিভাজন রেখাগুলি অস্পষ্ট হয়ে যায়। এটি একটি জলবায়ু ধাঁধা যা প্রশ্ন তোলে — আমরা কীভাবে একটি উষ্ণ বিশ্বে একটি দাতা দেশকে সংজ্ঞায়িত করব?


মূল্যায়ন সমস্যা


কপ২৬–এ ফিরে গেলে দেখতে পাই, সেখানে উন্নত দেশগুলি প্রতি বছর উন্নয়নশীল বিশ্বের জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার জোগাড় করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। সেই প্রতিশ্রুতি এখনও হাওয়ায় ভেসে বেড়াচ্ছে। ২০২৫–এর দিকে দ্রুত এগিয়ে গেলে এই মূল্য ট্যাগ বার্ষিক ১ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছতে পারে, আর ২০৩০ সালের মধ্যে ১.৭ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার হতে পারে। এবং সকলেই জানেন, এমনকি এই পরিসংখ্যানগুলি শুধু হিমশৈলের উপরিভাগ হতে পারে।

এলঅ্যান্ডডি–এর মূল্যায়নের সমস্যা নিয়ে এতদিন খুবই কম কথা বলা হয়েছে। যদি ‘‌হানি ও ক্ষয়ক্ষতি’‌ অর্থায়ন একটি ক্ষতিপূরণ প্রক্রিয়া হয়, তাহলে এই অর্থায়নের ভিত্তি হতে পারে এমন আদর্শ নীতিগুলি কী হওয়া উচিত? এখানে দুটি প্রশ্ন আছে। প্রথমত, যদি একটি সেতু, বাঁধ বা সম্পত্তি হারিয়ে যায় এবং/অথবা ক্ষতিগ্রস্ত হয়, আমরা কি হানির বার্ষিক স্টক মূল্যায়ন করব? না কি আমরা সর্বজনীন পণ্যের হানির মাধ্যমে হারানো সংশ্লিষ্ট সুযোগগুলি বিবেচনা করব? সেক্ষেত্রে, যদি একটি জীবিকাসক্ষম পরিকাঠামোর হানি হয়, এবং এটিকে পুনরুজ্জীবিত করতে ১০ বছর সময় লাগে, তাহলে হানির পরিমাণকে প্রকাশ করা প্রয়োজন পরবর্তী ১০ বছরের জন্য লাভ বা আয়ের ক্ষতির প্রবাহের নেট প্রেজেন্ট ভ্যালু (এনপিভি)–র পরিপ্রেক্ষিতে, এবং তার মধ্যে উপযুক্ত ছাড়ের হার (‌রেট অফ ডিসকাউন্ট)‌ ধরতে হবে। এটি একটি উপাদান।

অধিকন্তু, জলবায়ু পরিবর্তন বাস্তুতন্ত্র পরিষেবা এবং বিশেষত সংস্থান পরিষেবাগুলির ক্ষতির কারণ হয়, যার সঙ্গে জীবিকা জড়িত।
অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের গবেষণা দেখায় যে বাস্তুতন্ত্র নির্ভরতা অনুপাত, যা হল বাস্তুতন্ত্র পরিষেবার মান এবং সম্প্রদায়ের আয়ের অনুপাত, অনেক দারিদ্রপীড়িত অঞ্চলে একের চেয়ে বেশি। সুতরাং, যখন জলবায়ু পরিবর্তন বাস্তুতন্ত্রের কাঠামো ও কার্যকারিতার ক্ষতি করে, যার ফলে বাস্তুতন্ত্র পরিষেবাগুলিতে ক্ষতি হয়, তখন দরিদ্র সম্প্রদায় এই ধরনের অপরিবর্তনীয় ক্ষতি থেকে যথেষ্ট পরিমাণে ভোগে। একটি বিকল্প ব্যবস্থা বা বাস্তুতন্ত্র, যা জনসম্প্রদায়কে একই সুবিধা প্রদান করতে পারে, তৈরি করতে কয়েক বছর সময় লাগতে পারে। তাই, এনপিভি মানদণ্ড বিবেচনা করে ভবিষ্যতের দশকের ক্ষতি পূরণ করা দরকার।



অর্থায়নের উপায় এবং উপকরণ


তারপরে আসে অর্থায়নের উপকরণ এবং উপায়গুলির বিষয়। এটি অনুদান হিসাবে দিতে হবে, ঋণ নয়। রাজনৈতিক বা বাণিজ্য–সম্পর্কিত পক্ষপাত থেকে মুক্ত অনুদানভিত্তিক তহবিল স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) ও ক্ষুদ্র উন্নয়নশীল দ্বীপরাষ্ট্রগুলির  (এসআইডিএস) জন্য উপলব্ধ হওয়া উচিত। এই বিশেষায়িত অর্থায়ন বিভিন্ন আর্থিক ব্যবস্থার সুবিধা নিতে পারে। যেমন, সেক্রেটারি–জেনারেলের একটি প্রস্তাব একটি কার্যকর বিকল্প হিসাবে জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে লাভের উপর কর বসানোর পরামর্শ দেয়। একটি বিকল্প পদ্ধতির মধ্যে ঋণ  অদলবদল জড়িত, যেখানে বিদ্যমান ঋণ জলবায়ু প্রতিক্রিয়ার দিকে তহবিল পুনঃনির্দেশিত করার জন্য মাফ করা হয়। উপরন্তু, বেসরকারি ক্ষেত্রকে এই খেলায় আনতে উদ্ভাবনী পণ্য, যেমন এলঅ্যান্ডডি ক্রেডিট ট্রেডিং, এলঅ্যান্ডডি বন্ড ইত্যাদির কথা ভাবতে হবে। নিয়ন্ত্রণ একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। যদি সরকার মুনাফা অর্জনকারী কর্পোরেশনগুলির জন্য তাদের সিএসআর তহবিলের ৫০ শতাংশ (বা কোনও নির্দিষ্ট সংখ্যা) এলঅ্যান্ডডি ও অভিযোজনে ব্যয় করার জন্য আইন পাস করে, তাহলে এটি এমন পরিসরে সামগ্রিক জলবায়ু অর্থায়নের লক্ষ্যকে সহায়তা করবে যেখানে অর্থ অপরিহার্য হলেও তার অভাব রয়েছে। এই নির্দিষ্ট ধরনের অর্থায়ন জলবায়ু অর্থ সংস্থার বর্তমান ব্যবধানগুলি পূরণ করতে ব্যবহার করা যেতে পারে, যেমন সবুজ জলবায়ু তহবিল।

এখান থেকে আমরা কোথায় যাব?

জ্ঞানের ফাঁকের কারণে প্রশ্নগুলি উত্তরহীন থেকে যাচ্ছে। কোনও সন্দেহ নেই যে এলঅ্যান্ডডি অর্থায়নের সংজ্ঞা, সহযোগিতামূলক প্রচেষ্টা এবং উদ্ভাবনী অর্থায়নের বিষয়ে বিশ্বব্যাপী ঐকমত্য প্রয়োজন। তবুও, প্রাতিষ্ঠানিক প্রশ্নগুলি বড়: কে অর্থ প্রদান করবে? কে পাবে? আমরা কীভাবে ক্ষতিগ্রস্তকে সনাক্ত করতে পারি? কীভাবে আমরা এই তহবিলের প্রবাহ চালনা করব? এই প্রশ্নগুলো মৌলিক।



নীলাঞ্জন ঘোষ অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের সেন্টার ফর নিউ ইকনমিক ডিপ্লোম্যাসির পরিচালক।

বিবেক কুমার অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের একজন ইন্টার্ন।

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.