Author : Gurjit Singh

Published on Aug 02, 2023 Updated 0 Hours ago

ভারতের জি২০ প্রেসিডেন্সি আফ্রিকার দেশগুলির সঙ্গে তার সম্পর্ক নতুন করে ঝালিয়ে নেওয়ার সুযোগ দিয়েছে

আফ্রিকার দিকে মন দেওয়ার সময় এসেছে

ভারতের জি২০ প্রেসিডেন্সি দেশটির আফ্রিকা নীতিকে আরও গতিশীল করার ক্ষমতা দিয়েছে। একটি সংস্কারকৃত আফ্রিকা নীতি কিন্তু গ্লোবাল সাউথ–এর কণ্ঠস্বর (ভিওজিএস) হিসাবে ভারতের জি২০ প্রেসিডেন্সিকে আরও উজ্জ্বলতা দেবে।

মোদীর জমানায় আফ্রিকা নীতিকে পুনরুজ্জীবিত করতে শুরু করেছিল সফল ভারত–আফ্রিকা ফোরাম সামিট (আইএএফএস ৩), যাতে ৫৪টি আফ্রিকী দেশ অংশগ্রহণ করেছিল। ২০১৬ ও ২০১৮ সালে মোদীর আফ্রিকা সফর এবং ২০১৮ সালে উগান্ডায় আফ্রিকার জন্য ১০টি নীতির ঘোষণা ছিল গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ। এখন এ সবের অতিমা্রি–পরবর্তী ও ইউক্রেন সংকট–পরবর্তী পুনর্মূল্যায়ন প্রয়োজন। বিদেশ মন্ত্রীর উগান্ডা ও মোজাম্বিক সফরের পরিপ্রেক্ষিতে এর লক্ষণ স্পষ্ট হচ্ছে। ব্রিকস মন্ত্রীদের বৈঠকে দক্ষিণ আফ্রিকায় গেলে তিনি আফ্রিকার অন্যান্য দেশ সফরের সুযোগ পাবেন।

যেহেতু ভারত গ্লোবাল সাউথের কণ্ঠস্বর, তাই আফ্রিকার পক্ষে কথা বলা বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। আফ্রিকা অতিমা্রি ও ইউক্রেন সংঘাতের থেকে গভীরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভিওজিএস শীর্ষ সম্মেলনে আফ্রিকার দেশগুলির অংশগ্রহণ তাদের প্রত্যাশা তুলে ধরেছে, আর ভারতের জি২০ সভাপতিত্ব সেই প্রত্যাশা পূরণের সম্ভাবনা তৈরি করেছে।

কীভাবে ভারতের আফ্রিকা নীতি প্রসারিত করা সম্ভব?
ভারত তার প্রেসিডেন্সি থাকাকালীন এবং তার পরেও তার বিদ্যমান আফ্রিকা নীতিকে আরও এগিয়ে নিতে কৌশলগতভাবে কী করতে পারে?

প্রথমত, ভারতের উচিত জি২০ সম্মেলনের আগে আইএএফএস ৪–এর আয়োজন করা। এটি কিছু সময়ের জন্য মুলতুবি ছিল, এবং অতিমা্রি ও আফ্রিকান ইউনিয়ন (এইউ)–এর সঙ্গে অন্যদের শীর্ষ সম্মেলন মুলতুবি হওয়ার কারণে ২০২০ থেকে বিলম্বিত হয়েছে। এখন যদি আইএএফএস ৪ দ্রুত অনুষ্ঠিত হয়, তাহলে এটি জি২০–তে গ্লোবাল সাউথ–এর এবং বিশেষ করে আফ্রিকার প্রতিনিধিত্বকারী হিসাবে ভারতের মর্যাদা বাড়িয়ে তুলবে। ২০২১ সাল থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র–আফ্রিকা নেতাদের শীর্ষ সম্মেলন, চিন–আফ্রিকা সহযোগিতা ফোরাম , ইউরোপ–আফ্রিকা শীর্ষ সম্মেলন, আফ্রিকার উন্নয়ন সম্পর্কিত টোকিও আন্তর্জাতিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। রাশিয়া–আফ্রিকা শীর্ষ সম্মেলন জুলাই ২০২৩–এর জন্য নির্ধারিত ছিল৷ জি২০ শীর্ষ সম্মেলনের পরে আইএএফএস ৪ আয়োজনের সুযোগ কমে যাবে, কারণ ২০২৪ ভারতে নির্বাচনী বছর৷

আফ্রিকা বুঝতে পেরেছে যে তাদের স্থায়ী ভিত্তিতে রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের আসন পাওয়ার দেরি আছে, এবং তাই তারা জি২০–র স্বীকৃতি পেতে চায়।

দ্বিতীয়ত, ভারতের উচিত আফ্রিকান ইউনিয়নকে জি২০–র ২১তম সদস্য হিসাবে অন্তর্ভুক্ত করা এবং একে স্থায়ী আমন্ত্রিত থেকে সদস্যপদে উন্নীত করার চেষ্টা করা। এইউ ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে এইউ শীর্ষ সম্মেলনে জি২০–তে স্থান দাবি করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। আফ্রিকা বুঝতে পেরেছে যে তাদের স্থায়ী ভিত্তিতে রাষ্ট্রপুঞ্জের  নিরাপত্তা পরিষদের আসন পাওয়ার দেরি আছে, এবং তাই তারা জি২০–র স্বীকৃতি পেতে চায়। বর্তমানে আফ্রিকান ইউনিয়ন কমিশন ও আফ্রিকান ইউনিয়ন নিউ পার্টনারশিপ ফর আফ্রিকা’‌স ডেভেলপমেন্ট (এইউ–নেপাড) উভয়ই স্থায়ী আমন্ত্রিত, এবং দক্ষিণ আফ্রিকা হল জি২০–র সদস্য একমাত্র আফ্রিকী দেশ। এইউ–নেপাড আমন্ত্রণটি বিশেষভাবে তৈরি করা হয়েছিল যখন নেপাড একটি পৃথক সত্তা ছিল। যেহেতু এটি এখন এইউ ডেভেলপমেন্ট এজেন্সি (এইউডিএ) হিসাবে একীভূত হয়েছে, তাই এইউ–কে ২১ তম সদস্য করা এবং আমন্ত্রিতদের তালিকা থেকে এইউ–নেপাড বাদ দেওয়া যুক্তিসঙ্গত হবে।

আন্তর্জাতিক মঞ্চে আফ্রিকার প্রতিনিধিত্ব একটি ধারাবাহিক যুদ্ধ। কয়েক দশক ধরে ভারত আন্তর্জাতিক উচ্চ আসনে আফ্রিকার স্থানের জন্য লড়াই করেছে, এবং বান্দুং–এ রাষ্ট্রপুঞ্জ, বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা এবং অন্যান্য সংস্থায় আফ্রিকার দেশগুলির প্রবেশকে সমর্থন করেছিল। এইউ–তে ঐকমত্য গড়ে তোলার জন্য কূটনৈতিক মূলধন ব্যয় হবে, কারণ অন্য প্রতিযোগীরাও চেষ্টা করবে। তবে ভারত আফ্রিকার জয়ের জন্য কাজ করতে পারে।

এর মধ্যে ব্রিকস–এর সম্প্রসারণের চেষ্টাও করা হচ্ছে। যখনই এই সম্প্রসারণ ঘটুক, ভারতের উচিত তখনই ব্রিকস–এ নিয়ে আসার জন্য আফ্রিকার দেশগুলির পক্ষে সওয়াল করা। বর্তমানে জি২০ ও ব্রিকস–এর মধ্যে দক্ষিণ আফ্রিকাই একমাত্র আফ্রিকান দেশ। যেহেতু জি২০ সম্প্রসারণের সীমাবদ্ধতা আছে, তাই ব্রিকস–এ নাইজেরিয়া, মিশর ও কেনিয়ার মতো দেশগুলিকে সমর্থন করা একটি ভাল বিকল্প হতে পারে। মরিশাস ছাড়াও নাইজেরিয়া ও মিশর হল আফ্রিকার অন্য দুটি দেশ যাদের ভারত জি২০–তে অতিথি হিসাবে আমন্ত্রণ জানিয়েছে। এটি ব্রিকসের সম্প্রসারণকে চিন–নেতৃত্বাধীন মহড়ায় পরিণত হওয়ার পথে বাধা দিতেও সাহায্য করবে।

ভারত অধ্যবসায়ের সঙ্গে ও নিয়মিতভাবে উদ্যোগী হয়ে সিকিউরিটি অ্যান্ড গ্রোথ ফর অল ইন দ্য রিজিয়ন (সাগর) ও ইন্দো–প্যাসিফিক ওশনস ইনিশিয়েটিভ (আইপিওআই)–এর মধ্যে দিয়ে ইন্দো–প্যাসিফিক নীতি বাস্তবায়িত করছে। যা গুরুত্বপূর্ণ তা হল আফ্রিকাকে ভারতের ইন্দো–প্যাসিফিক নীতিতে একীভূত করা, এবং আইপিওআই–এর অধীনে সহযোগিতা ভারত মহাসাগরের উপকূলবর্তী দেশগুলির কাছে পৌঁছে দেওয়া। মরিশাস, সেশেলস, মাদাগাস্কার, মোজাম্বিক ও অন্যদের সঙ্গে ভারতের দ্বিপাক্ষিক কৌশলগত সম্পর্ক রয়েছে, তবে ভারত মহাসাগর ও লোহিত সাগরের উপকূলবর্তী দেশগুলির সঙ্গে একটি কৌশলগত প্রকৃতির আরও ব্যাপক ও সামঞ্জস্যপূর্ণ সম্পর্ক তৈরি করা গুরুত্বপূর্ণ। এভাবে ভারতের কৌশলগত স্বার্থের জন্য গুরুত্বপূর্ণ দেশগুলিকে কেন্দ্রে রেখে ভারতের আফ্রিকা নীতিকে পুনর্গঠন করা সম্ভব। এই কৌশলগত আলোকে ভারতের উচিত তার উন্নয়ন সহযোগিতা, বেসরকারি ক্ষেত্রের এফডিআই এবং সহযোগিতার অন্য রূপগুলিকে বিকশিত করা, যাতে এই দেশগুলির সঙ্গে একটি ঘনিষ্ঠ সম্পৃক্ততা তৈরি হতে পারে।

ভারত অধ্যবসায়ের সঙ্গে ও নিয়মিতভাবে উদ্যোগী হয়ে সিকিউরিটি অ্যান্ড গ্রোথ ফর অল ইন দ্য রিজিয়ন (সাগর) ও ইন্দো–প্যাসিফিক ওশনস ইনিশিয়েটিভ (আইপিওআই)–এর মধ্যে দিয়ে ইন্দো–প্যাসিফিক নীতি বাস্তবায়িত করছে।

ভারত সম্প্রতি ২০ টি দেশের সঙ্গে ভারত–আফ্রিকা সামরিক মহড়া আফইনডেক্স–এর দ্বিতীয় সংস্করণের আয়োজন করেছে। সে সময় প্রথমবারের মতো সেনাপ্রধানদের সম্মেলনও অনুষ্ঠিত হয়। আফইনডেক্স একটি উচ্চতা অর্জন করছে এবং ধীরে ধীরে বর্ধিত হচ্ছে; তবে এর আরও সংহতি প্রয়োজন। যে সব দেশের সঙ্গে ভারতের কৌশলগত সম্পর্ক রয়েছে, তাদের অবশ্যই এতে অংশগ্রহণ করতে হবে। যেমন আফইনডেক্স–এ উল্লেখযোগ্যভাবে মরিশাস ও মোজাম্বিক অনুপস্থিত ছিল, এবং পরবর্তী সংস্করণে এর সংশোধন করা উচিত। একই ভাবে, চিফস অফ স্টাফ কনক্লেভের আরও কৌশলগত ওজন প্রয়োজন। যে দেশগুলির সঙ্গে ভারত সম্পর্ক গড়ে তুলতে চায় তাদের উপযুক্ত প্রতিনিধি পাঠানো উচিত, এবং তাদের দূতাবাস থেকে কাউকে পাঠিয়ে দেওয়া বা অনুপস্থিত থাকা উচিত নয়। আফ্রিকায় ১৮টি নতুন মিশনের পর ভারতের আরও বেশি কূটনৈতিক প্রভাব প্রয়োগ করা উচিত।

এই পদ্ধতির অগ্রগতি হয়েছে ২০২২ সালে ভারত আফ্রিকা প্রতিরক্ষা মন্ত্রীদের বৈঠকে ২২ মন্ত্রীর যোগদান, এবং ২০২১ সালে ডিফএক্সপো–র পাশাপাশি অনুষ্ঠিত ভারত মহাসাগরের প্রতিরক্ষা মন্ত্রীদের বৈঠকে ২৬ জন মন্ত্রীর যোগদানের মাধ্যমে ৷ এক সময়ে এতজন মন্ত্রীকে ভারতে আনা অবশ্যই সহজ নয়৷ তবে একটি নির্দিষ্ট পদ্ধতির প্রয়োজন যাতে করে যে বিশেষ দেশগুলির সঙ্গে ভারত সম্পর্ক গড়ে তুলতে চায় তারা নিশ্চিতভাবে অংশগ্রহণ করে।

ভারতের প্রতিরক্ষা রপ্তানির জন্য নতুন ও বিস্তৃত বাজার খোঁজারও প্রয়োজন আছে। যেসব দেশে ভারতীয় সামরিক বাহিনী সক্রিয় ছিল, যেখানে ভারত প্রশিক্ষণ সুবিধাকেন্দ্র তৈরিতে সাহায্য করেছে, এবং যেখানে ভারতীয় সৈন্যরা শান্তিরক্ষা মিশনে অংশগ্রহণ করেছে, তাদের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করা যেতে পারে। এই বড় উন্মুক্ত ক্ষেত্রটিকে কাজে লাগানো আবশ্যক।

ইন্ডিয়ান ওশান রিম অ্যাসোসিয়েশন (আইওআরএ) হল একটি প্রাকৃতিক ক্ষেত্র যেখানে আফ্রিকার ভারত মহাসাগরের উপকূলবর্তী দেশগুলির সঙ্গে ভারত জড়িত। তানজানিয়া, কেনিয়া ও মোজাম্বিকের মতো দেশগুলিকে আইওআরএ–র সভাপতিত্ব নেওয়ার জন্য ভারতের উৎসাহিত করা উচিত, কারণ দক্ষিণ আফ্রিকা ছাড়া আইওআরএ সদস্য অন্য নয়টি আফ্রিকী দেশ কখনও মরিশাস–ভিত্তিক সংস্থাটির সভাপতিত্ব করেনি। ভারতকে এমন একটি দেশকে সহায়তা করার প্রস্তাব দেওয়া উচিত যেটি স্বেচ্ছায় আইওআরএ–এর সভাপতিত্ব নেবে, এবং এর প্রস্তুতি, কাজকর্ম ও সাফল্যের জন্য কাজ করবে।

এটা স্পষ্ট যে আফ্রিকা ও অন্যত্র সঙ্কট পরিস্থিতি বারবার তৈরি হতে থাকে, যেমনটি সম্প্রতি সুদানে দেখা গেছে। ভারতের এই অঞ্চলের দেশগুলির সঙ্গে কৌশলগত সম্পৃক্ততা থাকা দরকার, যাতে উদ্ধারকাজ ও মানবিক সহায়তাদান এবং দুর্যোগ ত্রাণ (এইচএডিআর) কার্যকরভাবে করা যায়;‌ কারণ ঘূর্ণিঝড় ও অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগও একটি পুনরাবৃত্ত সমস্যা। অতীতে ভারত জিবুতিকে ইয়েমেন থেকে মানুষকে সরিয়ে নেওয়ার জন্য একটি ঘাঁটি হিসাবে ব্যবহার করেছে; আবার সুদানে ক্ষতিগ্রস্তদের উদ্ধারের সময় সৌদি আরবের জেদ্দা   ছিল পছন্দের জায়গা। সাউথ আফ্রিকান ডেভেলপমেন্ট কমিউনিটি (এসএডিসি), ইস্ট আফ্রিকান কমিউনিটি (ইএসি) ও ইন্টারগভর্নমেন্টাল অথরিটি অন ডেভেলপমেন্ট (আইজিএডি)–এর মতো ভারত মহাসাগরের পার্শ্ববর্তী আঞ্চলিক অর্থনৈতিক সম্প্রদায়ের (আরইসি) সঙ্গে অংশীদারিত্ব সম্প্রসারণ তাদের নীতিগুলিকে কৌশলগত অভিপ্রায়ের বিকাশে সহায়তা করবে।

যেসব দেশে ভারতীয় সামরিক বাহিনী সক্রিয় ছিল, যেখানে ভারত প্রশিক্ষণ সুবিধাকেন্দ্র তৈরিতে সাহায্য করেছে, এবং যেখানে ভারতীয় সৈন্যরা শান্তিরক্ষা মিশনে অংশগ্রহণ করেছে, তাদের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করা যেতে পারে।

হর্ন অফ আফ্রিকা এমন একটি গভীরভাবে বিচ্ছিন্ন পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে যেখানে  শুধু বড় শক্তিই নয়, আঞ্চলিক শক্তিগুলিও একটি বিভাজনকারী ভূমিকা পালন করছে। এই অঞ্চলে সঙ্কট সর্বদা আকাশছোঁয়া থাকে। উদ্ধারকাজ ও মানবিক সহায়তার জন্য প্রস্তুতি একটি সুশীল ও প্রতিরক্ষামূলক দৃষ্টিভঙ্গি, তবে গ্লোবাল সাউথ–এ ভারতের ভূমিকা এবং নিজের কৌশলগত স্বায়ত্তশাসনের কারণে দেশটি সম্ভবত হর্ন অফ আফ্রিকার দেশগুলির সঙ্গে আরও ভালভাবে যুক্ত থাকতে পারে এবং অন্য বন্ধুদের সঙ্গে মিলে স্থিতিশীলতার উপযোগী ভূমিকা পালন করতে পারে। বর্তমানে এই কাজটি অত্যন্ত কঠিন বলে মনে হচ্ছে, কিন্তু এর জন্য মনোযোগ ও প্রচেষ্টা প্রয়োজন। ট্র্যাক–২ স্তরেও ‘সাইলেন্স দ্য গানস’–এর জন্য আফ্রিকার ইচ্ছাকে সমর্থন করার একটি বাস্তব প্রয়াস প্রয়োজন। ভারত হর্ন অফ আফ্রিকার জন্য একজন বিশেষ দূত নিয়োগ করে তাঁর শুভ প্রভাব ব্যবহার করা ও ভারতের অংশীদারিত্ব বাড়ানোর কথা বিবেচনা করতে পারে।

জোটনিরপেক্ষ আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার জন্য ভারতের নতুন প্রচেষ্টা স্বাগত। উগান্ডা বর্তমানে এই ফোরামের সভাপতিত্ব করছে। এ থেকে বোঝা যায় যে ভারত গ্লোবাল সাউথের প্রতিষ্ঠানগুলির সঙ্গে পুনরায় যুক্ত হতে চলেছে, এবং যেখানে প্রয়োজন সেখানে তাদের সমর্থন ও গাইড করতে চলেছে। একই সময়ে ভারত ইউএনএসসি–সহ রাষ্ট্রপুঞ্জের সংস্কারের প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে চাইছে। এক্ষেত্রে আফ্রিকার সমর্থন অত্যাবশ্যক। ভারত কি আফ্রিকার সঙ্গে আরও বেশি আত্মবিশ্বাসের সাথে কাজ করতে পারে, যাতে তারা তাদের কমন আফ্রিকান পজিশন বা ইজুলউইনি ঐকমত্যের থেকে আরও বেশি ফলপ্রসূ সম্ভাবনার দিকে এগিয়ে যেতে পারে? এটি আফ্রিকার দেশগুলির জন্য ইউএনএসসি–তে প্রতিনিধিত্ব পাওয়ার আরও ভাল সুযোগ তৈরি করতে পারে। এ কথা উপলব্ধি করতে হবে যে ইজুলউইনি ঐকমত্য এখন গ্লোবাল সাউথের অন্য সদস্যদের সঙ্গে কার্যকর জোট গঠনে বাধা দেওয়ার পাশাপাশি আফ্রিকার উচ্চাকাঙ্ক্ষার ক্ষেত্রে একটি বাধা হয়ে উঠছে।

পরিশেষে, এইউ পরিপক্ব হওয়ার সময়ে ভারতের জন্য তার নতুন কার্যকর অবস্থানগুলিকে সংযুক্ত করার সময় এসেছে৷ আফ্রিকা মহাদেশীয় মুক্ত বাণিজ্য এলাকা গতিশীল অবস্থায় রয়েছে। এর বাস্তবায়ন আরও ভালভাবে করতে ভারত একে ও আরইসি–কে প্রযুক্তিগত দক্ষতা ও সহায়তা দিতে পারে। একইভাবে, আফ্রিকা সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোলকে (আফ্রিকা সিডিসি) একটি এইউ এজেন্সিতে উন্নীত করার বিষয়টি অবশ্যই উল্লেখ করা উচিত। ভারত হল আফ্রিকায় ফার্মাসিউটিক্যালস ও ভ্যাকসিনের বৃহত্তম সরবরাহকারী। একে সিডিসি ও নতুন উদীয়মান আফ্রিকান মেডিসিন এজেন্সির সঙ্গে জড়িত করে একটি কার্যকর অংশীদারিত্বে উন্নীত করা যেতে পারে।


গুরজিৎ সিং জার্মানি, ইন্দোনেশিয়া, ইথিওপিয়া, আসিয়ান ও আফ্রিকান ইউনিয়নে ভারতের প্রাক্তন রাষ্ট্রদূত।

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.