Published on Dec 29, 2023 Updated 0 Hours ago

সঠিকভাবে আইসিটি প্রতিষ্ঠার জন্য সরকারকে তিনটি সারভিস এবং তার পাশাপাশি আমলাতন্ত্র ও সিডিএস এবং সারভিসগুলির মধ্যে বকেয়া সমস্যাগুলি নিয়ে পদক্ষেপ করতে হবে এবং সেগুলি সমাধান করতে হবে৷

ইন্টিগ্রেটেড থিয়েটার কমান্ডগুলি দিনের আলো দেখতে শুরু করছে

তিনটি ভারতীয় সশস্ত্র পরিষেবা — ভারতীয় সেনাবাহিনী (আইএ), ভারতীয় নৌবাহিনী (আইএন) এবং ভারতীয় বিমান বাহিনী (আইএএফ)— ইন্টিগ্রেটেড থিয়েটার কমান্ড (আইটিসি) প্রতিষ্ঠার জন্য তাদের পার্থক্য কমিয়ে আনায় মোদী  সরকারের জমানাতেই দেশটির তার প্রথম আইটিসি দেখতে পাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। থিয়েটার কমান্ড কেন প্রয়োজনীয় তা মূল্যায়ন করা এবং থিয়েটারের সামনের চ্যালেঞ্জগুলি পর্যালোচনারও এটাই উপযুক্ত সময়। এখনও পর্যন্ত আইটিআর–এর ক্ষেত্রে ফলাফল কী হয়েছে এবং কী কী সমস্যা তাদের সামনে আছে, তা দেখা যাক।

প্রথমত, ভারতীয় সেনাবাহিনী (আইএ) ও ভারতীয় নৌবাহিনী (আইএন) ভারতীয় বিমান বাহিনীর (আইএএফ) এই দাবি মেনে নিয়েছে যে, কোনও বিমান সম্পদ থিয়েটার কমান্ডের অধীনে রাখা হবে না। পরিবর্তে, আইটিসি–র অভিযানগত প্রয়োজনীয়তা মেটানোর জন্য এগুলি আপৎকালীন পরিস্থিতিতে ব্যবহার করা হবে, তবে আইএএফ–এর অধীনে। আইএএফ–এর যুক্তি হল, যেহেতু পরিষেবাটিতে ৪২টি স্কোয়াড্রনের অনুমোদিত শক্তির জায়গায় মাত্র ৩১টি ফাইটার স্কোয়াড্রন রয়েছে, তাই বিমান সম্পদের পরিষেবা–কেন্দ্রিক নিয়ন্ত্রণ থাকা দরকার। আইএএফ–এর সম্পদের নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখার একটি সম্পূরক কারণ হল পরিষেবাটি ‘‌বায়ুশক্তির অবিভাজ্যতায়’‌ বিশ্বাস করে। এটি এই ধারণার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত যে বিমান শক্তি সমুদ্র ও স্থল বাহিনীর থেকে স্বাধীনভাবে ব্যবহার করা যেতে পারে। এটি এমন সামরিক কার্যকারিতাও তৈরি করতে পারে যা সমুদ্র বা স্থল অভিযানের থেকে স্বাধীন ও বাস্তব অভিযানগত ফলাফল দেয়।


আইএএফ–এর সম্পদের নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখার একটি সম্পূরক কারণ হল পরিষেবাটি ‘‌বায়ুশক্তির অবিভাজ্যতায়’‌ বিশ্বাস করে।



২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে পুলওয়ামা সন্ত্রাসবাদী হামলার প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য বালাকোট আকাশ হামলাকে কীভাবে এবং কেন থিয়েটার কমান্ড (টিসি)–এর থেকে স্বাধীনভাবে বিমান শক্তি ব্যবহার করতে হবে তার সবচেয়ে দৃশ্যমান উদাহরণ হিসাবে উল্লেখ করা হয়। প্রকৃতপক্ষে প্রাক্তন বিমান বাহিনী প্রধান (সিএএস) এস কৃষ্ণস্বামী যেমন পর্যবেক্ষণ করেছেন: ‘‌‘‌বালাকোট বিমান হামলা হল পেশাদারিত্বের সবচেয়ে অনন্য উদাহরণ... আমাদের বিমান বাহিনী গভীর রাতের মধ্যে সম্পূর্ণ গোপনীয়তার মধ্যে একটি দ্রুত অভিযান চালাতে সক্ষম হয়েছিল... বিভিন্ন ঘাঁটি ও কমান্ডের একাধিক বাহিনী এই মিশনে অংশ নিয়েছিল, যারা বিমান বাহিনী প্রধানের তত্ত্বাবধানে ছিল। চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ (সিডিএস)–এর অফিস থেকে কম্পোনেন্ট কমান্ডারের পরামর্শ নিয়ে গোপনীয়তার সঙ্গে এত দ্রুত এই ধরনের মিশনের পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন করা, যদি বা যৌথ কমান্ডের হাতে দায়িত্ব দেওয়াও হয়, তাহলেও তা কল্পনা করা কিছুটা কঠিন।’‌’‌

গোপনীয়তা ও গতি, যা হতচকিত করে দেওয়ার উপাদান, তা সামরিক পদক্ষেপের স্বল্পমেয়াদি কৌশলগত স্তরে সবচেয়ে কার্যকর, যেমনটা ছিল আইএএফ–এর বালাকোট আকাশ হামলার ক্ষেত্রে।



প্রাক্তন সিএএস বালাকোটে জৈশ–এ–মহম্মদ (জেএম) সন্ত্রাসবাদী প্রশিক্ষণ শিবিরের বিরুদ্ধে আইএএফ পরিচালিত আকাশ হামলার মিশনের পরিকল্পনা ও সম্পাদনে গতি ও গোপনীয়তার গুরুত্ব সম্পর্কে একটি বৈধ যুক্তি তৈরি করেছেন। সীমিত কৌশলগত লক্ষ্য বা উদ্দেশ্য–সহ এই ধরনের মিশনগুলি সারভিস দ্বারা পরিকল্পনা করা এবং কার্যকর করা যেতে পারে ঠিকই, এমনকি যদি তা একটি দুর্ভাগ্যজনক নজিরও স্থাপন করে, কিন্তু থিয়েটার কমান্ডার ও সিডিএস জড়িত না–থাকলে বৃহত্তর ও জটিল প্রথাগত অপারেশন বা মিশনের ক্ষেত্রে সেগুলি দৃষ্টান্ত  হতে পারে না। সামরিক অভিযানের এই দ্বিতীয় ধরনের উপক্ষেত্রে যৌথ পরিকল্পনা, যৌথ প্রশিক্ষণ, আন্তঃকার্যক্ষমতা, এবং একক কমান্ডারের অধীনে তা কার্যকর করা অপরিহার্য, এবং সেই কারণেই আইটিসি ও সিডিএস যুদ্ধের সময় কার্যকর ফলাফল এনে দেওয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ। গোপনীয়তা ও গতি, যা হতচকিত করে দেওয়ার উপাদান, তা সামরিক পদক্ষেপের স্বল্পমেয়াদি কৌশলগত স্তরে সবচেয়ে কার্যকর, যেমনটা ছিল আইএএফ–এর বালাকোট আকাশ হামলার ক্ষেত্রে। প্রথাগত যুদ্ধ লড়ার ক্ষেত্রে আইটিসি–র গুরুত্বকে প্রত্যাখ্যান করা দুর্ভাগ্যজনক ও উদ্বেগজনক।


নিঃসন্দেহে, আমলাতন্ত্রের আপত্তি রয়েছে, এবং অনিবার্যভাবে তারা নিজেদের অবস্থান নিশ্চিত করার চেষ্টা করবে;‌ কিন্তু এখনকার  বিশ্লেষণে যা উপেক্ষা করা হয় তা হল নির্বাচিত অসামরিক ব্যক্তিদের অনিচ্ছুক ভূমিকা।



দ্বিতীয় চ্যালেঞ্জটি হল যে পূর্ববর্তী চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ (সিডিএস) প্রয়াত জেনারেল বিপিন রাওয়াত আইটিসি–র সিদ্ধান্তকে বুলডোজ করার চেষ্টা করেছিলেন, এবং এমনকি আইএএফ–কে একটি ‘‌সহায়ক হাত’‌ হিসাবে ঘোষণা করেছিলেন, যা ভারতীয় সামরিক বাহিনীর একটি স্বাধীন বাহিনী হিসাবে আইএএফ–এর আকাশ শক্তি সম্পর্কে দীর্ঘদিনের অনুমান ও দৃষ্টিভঙ্গিকে গভীরভাবে আঘাত করেছিল। একটি বিশিষ্ট মূল্যায়ন অনুসারে, অসামরিক আমলাতন্ত্র প্রয়াত সিডিএস–এর প্রচেষ্টাকে বাধা দেয়
civilian bureaucracy, according to one prominent assessment, stymied। জেনারেল রাওয়াতের শাসনকালে থিয়েটারাইজেশনের অনুপস্থিতির কারণ যতটা না আইএএফ–এর আইটিসি প্রতিষ্ঠানে একটি বোঝা হয়ে পড়ার সম্ভাবনা, তার চেয়েও বেশি ‘‌ওয়ারেন্ট অফ প্রিসিডেন্স’‌–এ নিজেদের স্থান সম্পর্কে আমলাতন্ত্রের ক্রমবর্ধমান নিরাপত্তাহীনতা। যেহেতু সমস্ত থিয়েটার কমান্ডার হবেন, বা হওয়ার কথা, চার–তারকা পদমর্যাদার কর্মকর্তা, কাজেই তা তাঁদের সারভিস চিফদের সমতুল্য করবে be four-star rank officers making them equivalent to the service chiefs, এবং তাঁরা সরাসরি সিডিএস–এর কাছে রিপোর্ট করবেন, যিনি চিফস অফ স্টাফ কমিটি (সিওএসসি)–র স্থায়ী চেয়ারম্যান। তাই বিশেষ করে অসামরিক আমলাতন্ত্রের মধ্যে ক্রমবর্ধমান উদ্বেগ থাকে যে, থিয়েটার কমান্ডারদের (টিসি) চার তারকা পদে উন্নীত করা হলে তাঁরা গুরুত্বের দিক থেকে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের শীর্ষ অসামরিক আমলা প্রতিরক্ষা সচিবকে ছাড়িয়ে যাবেন কি না। নিঃসন্দেহে, আমলাতন্ত্রের আপত্তি রয়েছে, এবং অনিবার্যভাবে তারা নিজেদের অবস্থান নিশ্চিত করার চেষ্টা করবে;‌ কিন্তু এখনকার  বিশ্লেষণে যা উপেক্ষা করা হয় তা হল নির্বাচিত অসামরিক ব্যক্তিদের অনিচ্ছুক ভূমিকা। মোদী সরকার সিডিএস ও আইটিসি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে অত্যন্ত প্রশংসনীয় ও সাহসী সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তাই তাদেরই প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের আমলাতন্ত্র, এবং আরও সাধারণভাবে কেন্দ্রীয় সরকারের অসামরিক আমলাতন্ত্রের, প্রতিরোধ বা এমনকি ‘‌বাধা দেওয়ার’‌ কৌশলগুলি কাটিয়ে ওঠার দায়িত্ব ও ভার গ্রহণ করতে হবে। অন্যথায়, এটি ভারতের গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারের দ্বারা দায়িত্ব এড়িয়ে যাওয়ার সমতুল্য হবে। ভারতের নির্বাচিত নেতৃত্বের এইভাবে দায় এড়িয়ে যাওয়া স্বাধীনতা–উত্তর ভারতে সামরিক সংস্কার, কৌশল, পরিকল্পনা ও অভিযানগত সামরিক বিষয়গুলির সঙ্গে জড়িত হওয়ার প্রশ্নে দুর্ভাগ্যের কারণ হয়েছে। এই সমস্যাটি সংশোধন করার জন্য মোদী সরকারকে সক্রিয়ভাবে পদক্ষেপ করতে হবে, এবং তিনটি পরিষেবার পাশাপাশি আমলাতন্ত্র ও সিডিএস এবং পরিষেবাগুলির মধ্যে যে কোনও বকেয়া সমস্যা সমাধান করতে হবে।



কার্তিক ব্যোমকান্তি অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ প্রোগ্রামের একজন সিনিয়র ফেলো।

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.