ভারত সরকার তার অর্থনৈতিক উন্নয়ন নীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসাবে প্রযুক্তি স্টার্টআপগুলির উপর জোর দিচ্ছে এবং সেগুলির সাফল্য উদযাপন করছে। প্রধানমন্ত্রী মোদী সম্প্রতি উল্লেখ করেছিলেন যে, ভারতীয় ‘ইউনিকর্ন’ (অর্থাৎ ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বা তার বেশি মূল্যের) প্রযুক্তি স্টার্টআপ সংস্থাগুলির সংখ্যা ২০২১ সাল থেকে দ্বিগুণ হয়েছে৷ এই স্টার্টআপগুলি জলবায়ু প্রযুক্তির মতো কিছু ক্ষেত্রে বিরাট প্রতিশ্রুতি বহন করে৷ অন্যদিকে, ভারত স্টার্টআপের জন্য তৃতীয় বৃহত্তম বাস্তুতন্ত্র হিসাবে আবির্ভূত হলেও তহবিল একটি ক্রমবর্ধমান সমস্যা হয়ে উঠছে, এবং ২০২২ সালে ইউনিকর্নের সংখ্যা অর্ধেকে নেমে এসেছে। অনলাইন টেক স্টার্টআপ হল এমন একটি ক্ষেত্র যেখানে মোটেই তেমন সাফল্য আসছে না।
বাড়ি থেকে কাজ (ওয়র্ক–ফ্রম–হোম)–এর মতো অফিস–মিথস্ক্রিয়ায় নাটকীয় বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন পরিষেবার জন্য অনলাইন পরামর্শ, বিশেষ করে স্বাস্থ্যসেবা, স্কুল ও কলেজ ও অন্যান্য শিক্ষাকেন্দ্রে অনলাইন ক্লাস এবং অন্য অনলাইন পরিষেবা ও প্ল্যাটফর্মগুলির সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
এই ভারতীয় প্রযুক্তি স্টার্টআপগুলি দু’বছরব্যাপী অতিমারির সময় খুবই ভাল ফল করেছে। বাড়ি থেকে কাজ (ওয়র্ক–ফ্রম–হোম)–এর মতো অফিস–মিথস্ক্রিয়ায় নাটকীয় বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন পরিষেবার জন্য অনলাইন পরামর্শ, বিশেষ করে স্বাস্থ্যসেবা, স্কুল ও কলেজ ও অন্যান্য শিক্ষাকেন্দ্রে অনলাইন ক্লাস, এবং অন্য অনলাইন পরিষেবা ও প্ল্যাটফর্মগুলির সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছিল। রাতারাতি ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্ম, ডিজিটাল পেমেন্ট সিস্টেম, ভিডিও পরামর্শ ও এডটেক ব্যবহার করে প্রযুক্তিগত সমাধান বা ইলেকট্রনিক যোগাযোগ সবই জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। কিন্তু অতিমারি এখন তুলনামূলকভাবে নিয়ন্ত্রণে, এবং মানুষ স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসছেন: আর সেই সঙ্গে অনলাইন পরিষেবা প্রদানকারী ভারতীয় স্টার্টআপগুলির ভবিষ্যৎ অন্ধকার দেখাতে শুরু করেছে। সাম্প্রতিক সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনেও দেখা যাচ্ছে, এই ধরনের টেক স্টার্টআপ সংস্থাগুলোর ভবিষ্যৎ তেমন উজ্জ্বল নয়। টাকার উৎস শুকিয়ে যাচ্ছে এবং সব স্টার্টআপ টিকে থাকতে পারবে না। তার উপর ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণ, বিশ্বব্যাপী মূল্যস্ফীতির হার বৃদ্ধি, এবং সম্ভাব্য মন্দার আশঙ্কার মতো বিষয়গুলিও সাধারণভাবে অনেক স্টার্টআপের ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা কমিয়ে দিয়েছে।
স্টার্টআপগুলিকে টিকিয়ে রাখার জন্য গুরুত্বপূর্ণ পুঁজির ঘাটতি, এবং এর ফলে খরচ কমানোর জন্য ছাঁটাই, একাধিক সংস্থার একত্রীকরণ এবং সংস্থাগুলিকে সংহত করার মতো ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এমনকি তাদের কিছু উঠেও গিয়েছে। টেক মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ইনক৪২ –এর মতে, ২০২২ সালে আটটি স্টার্টআপ বন্ধ হয়ে গেছে। এর মধ্যে রয়েছে ম্যাট্রিক্স পার্টনার–সমর্থিত সাস স্টার্টআপ ‘প্রোটন’, যা সঠিক পণ্য–বাজার সমন্বয় খুঁজে না–পাওয়ায় ২০২২ সালের জানুয়ারিতে তার কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়। প্রোটন ছিল একটি বেঙ্গালুরু ও সানফ্রান্সিসকো–ভিত্তিক স্টার্টআপ, যা আইনজীবী, গ্রাফিক ডিজাইনার ও পুষ্টিবিদদের মতো পেশাদারদের ‘অনলাইনে তাঁদের ব্যবসা চালু করতে, ভিডিও তৈরি করতে, লাইভ সেশন চালনা করতে, অর্থপ্রদানের লিঙ্ক তৈরি করতে এবং তাদের ব্যবসার আর্থিক কার্যকারিতা ট্র্যাক করতে একটি প্ল্যাটফর্ম দেওয়ার উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করেছিল। সংস্থাটি সিড ফান্ড হিসাবে ৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার তুলেছিল। ফ্লিপকার্টের প্রাক্তন আধিকারিক অনিল গোটেটি ও মৌসম ভাট প্রতিষ্ঠিত সংস্থাটি তার বিনিয়োগকারীদের ৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ফেরত দিয়ে দিয়েছে।
একইভাবে ’উদয়’, আরেকটি স্টার্টআপ যা এডটেক–এ যুক্ত ছিল, গত বছর এপ্রিলে তার কার্যক্রম বন্ধ করেছে। গুরুগ্রাম–ভিত্তিক স্টার্টআপটি অতিমারি–পরবর্তী বিশ্বে ব্যবসায় টিকে থাকার উপায় খুঁজে পাচ্ছিল না। স্টার্টআপটির সহ–প্রতিষ্ঠাতা সৌম্যা যাদব বলেছেন যে, সংস্থাটি ‘প্রথমবারের মতো অতিমারি–পরবর্তী বিশ্বকে প্রত্যক্ষ করছে’। তিনি যোগ করেছেন, ‘‘বাচ্চারা স্কুলে ফিরে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে অনলাইন লাইভ লার্নিং–এর মূল মডেলের প্রসার ঘটাতে বাধার সম্মুখীন হয়েছি। আমরা একাধিক ভিন্ন কৌশল এবং সংলগ্ন মূলবিন্দুগুলির মূল্যায়ন করেছি, তবে সেগুলির কোনওটিই যথেষ্ট প্রতিশ্রুতিসম্পন্ন ছিল না।’’ শাটডাউনের জন্য কর্মচারীদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার পরে বাকি মূলধন বিনিয়োগকারীদের ফেরত দেওয়া হয়েছিল। উদয়–এর প্রতিষ্ঠাতা অবশ্য স্পষ্ট করেছেন যে, কোনও আর্থিক সঙ্কট প্রতিষ্ঠানটি বন্ধের দিকে চালিত করেনি, তবে অতিমারি–পরবর্তী পরিস্থিতিতে ব্যবসা বৃদ্ধি করা একটি চ্যালেঞ্জ হিসাবে প্রমাণিত হচ্ছে। উদয় হল লিডো লার্নিং-এর পর দ্বিতীয় এডটেক স্টার্টআপ যা কার্যক্রম শেষ করে দেয়। রনি স্ক্রুওয়ালা–পোষিত লিডো লার্নিং গত বছরের জানুয়ারিতে তার কার্যক্রম বন্ধ করে। সংস্থাটি আর্থিক সমস্যার সম্মুখীন হয়েছিল এবং তার কার্যক্রম বন্ধ করছে বলে স্টার্টআপের প্রতিষ্ঠাতা সাহিল শেঠ ঘোষণা করার কয়েক মাস আগেই বিলম্বিত অর্থপ্রদান বা বেতন না–পাওয়ার বিষয়ে কথা বলতে বেশ কয়েকজন কর্মচারী সোশ্যাল মিডিয়ার আশ্রয় নিয়েছিলেন। ।
স্টার্টআপগুলিকে টিকিয়ে রাখার জন্য গুরুত্বপূর্ণ পুঁজির ঘাটতি, এবং এর ফলে খরচ কমানোর জন্য ছাঁটাই, একাধিক সংস্থার একত্রীকরণ এবং সংস্থাগুলিকে সংহত করার মতো ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এমনকি তাদের কিছু উঠেও গিয়েছে।
অন্যান্য এডটেক স্টার্টআপ যেমন বেদান্তু ও ইউনাঅ্যাকাডেমি–ও গুরুতর আর্থিক সংকটের সম্মুখীন হয়েছে, যার ফলে শত শত কর্মী ছাঁটাই হয়েছে বা কিছু শাখা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। যেমন, গত বছরে বেদান্তু ৬২০ জনের মতো কর্মী ছাঁটাই করেছিল। ইউনাঅ্যাকাডেমি গত বছরের শুরুতে তার মেডিকেল পরীক্ষার প্রস্তুতি শাখা ইউএসএমএলই বন্ধ করে দেয়। নভেম্বর পর্যন্ত ইউনাঅ্যাকাডেমি তিন দফা ছাঁটাই করেছে: এপ্রিল মাসে তার বিক্রয় ও বিপণন দল থেকে ৬০০–৮০০ কর্মীকে, জুনে আরও ১৫০ জনকে এবং নভেম্বরে আরও ৩৫০ জনকে। ইউনাঅ্যাকাডেমির প্রতিদ্বন্দ্বী বাইজু’স –ও ধাক্কা খেয়েছে, এবং প্রায় ২,৫০০ কর্মী ছাঁটাই করেছে বলে জানা গিয়েছে। শিক্ষাক্ষেত্রের আরেকটি স্টার্টআপ, বেঙ্গালুরু–ভিত্তিক সুপারলার্ন, ‘তহবিলের অভাব ও বিনিয়োগকারীদের আস্থা হ্রাস’–এর কারণে জুন মাসে তার কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে। উদয়ের মতোই সুপারলার্ন প্রাক–অতিমারি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসার পরে বাজারের বৃদ্ধি ঘটানো বা এমনকি টিকে থাকাও কঠিন বলে মনে করেছিল। ম্যাট্রিক্স পার্টনার–এর সমর্থিত আরেকটি স্টার্টআপ ক্রেজো.ফান অর্থের অভাবে জুন মাসে কার্যক্রম শেষ করেছে। একটি টাউন হলে স্টার্টআপের সহ–প্রতিষ্ঠাতারা তাঁদের ব্যবসায়িক কার্যক্রম শেষ করার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন। পরবর্তিকালে অঙ্কিত আগরওয়াল ও বিকাশ বনসল তাঁদের কর্মচারীদের জানিয়েছিলেন যে ‘অর্থের অভাব এবং পরবর্তীতে স্কুল ফের খোলার কারণে’ এমনটি ঘটেছিল। তারপর আরেকটি এডটেক স্টার্টআপ, নয়ডাভিত্তিক কিউইন১ , তহবিলের অনুপলব্ধতার সর্বশেষ শিকারে পরিণত হয়েছে, এবং তাদের কার্যক্রম বন্ধ করেছে।
প্রযুক্তি ক্ষেত্রের অন্যান্য অংশও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ই–কমার্স উদ্যোগগুলির মধ্যে নন্দন নিলেকানি সমর্থিত বিটুবি প্ল্যাটফর্ম শপএক্স আগস্টে তার কার্যক্রম শেষ করেছে, ‘কারণ সংস্থা যথেষ্ট নগদ প্রবাহ তৈরি করতে পারেনি এবং ইনফোসিসের সহপ্রতিষ্ঠাতা নিলেকানি ও সিঙ্গাপুরভিত্তিক ফাং গ্রুপের বিনিয়োগ শাখা এফএসএক্স পিটিই লিমিটেড–সহ তার বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে নেওয়া একাধিক ঋণ শোধ করতে পারেনি’।
একইভাবে, ভবিশ আগরওয়ালের নেতৃত্বাধীন ওএলএ তার তিনটি শাখা ওলা ড্যাশ, ওলা প্লে ও ওলা ফুডস বন্ধ করে দিয়েছে। অনিশ্চয়তার কারণে বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক সংস্থা তাদের ভারতের কার্যক্রম বন্ধ করেছে। ভারতের কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে এমন কিছু প্রধান সংস্থার মধ্যে রয়েছে সিঙ্গাপুর ভিত্তিক ই–কমার্স কোম্পানি শোপি, অ্যামাজনের তিনটি শাখা অ্যামাজন অ্যাকাডেমি, অ্যামাজন ফুডস ও অ্যামাজন ডিস্ট্রিবিউশন, এবং চিনা ফোন কোম্পানি শাওমি, যেটি ইতিমধ্যে প্লে স্টোর থেকে তার ফিনটেক (আর্থিক প্রযুক্তি) অ্যাপস মি পে এবং ডিজিটাল লেনদেন অ্যাপ মি ক্রেডিট বার করে নিয়েছে।
ভারতীয় স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার অপ্রতুলতা বেশ কিছু স্টার্টআপ তৈরির জায়গা করে দিয়েছে, এবং এইভাবে অনলাইন ফার্মেসি, বাড়িতে স্বাস্থ্যসেবা পরিষেবা, এবং ফিটনেস ও ওয়েলনেস সংস্থাগুলি তৈরি হয়েছে এবং তাদের সম্ভাবনা রয়েছে।
এডটেক সম্ভবত সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তবে বায়োটেক ও স্বাস্থ্যসেবা ক্ষেত্রের এবং ই–কমার্স ও ফিনটেক স্টার্টআপগুলি চলতি বছরে ততটা খারাপভাবে প্রভাবিত হবে না। ভারতীয় স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার অপ্রতুলতা বেশ কিছু স্টার্টআপ তৈরির জায়গা করে দিয়েছে, এবং এইভাবে অনলাইন ফার্মেসি, বাড়িতে স্বাস্থ্যসেবা পরিষেবা, এবং ফিটনেস ও ওয়েলনেস সংস্থাগুলি তৈরি হয়েছে এবং তাদের থেকে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। স্বাস্থ্যসেবা ক্ষেত্রের স্টার্টআপগুলি ১৩১টি চুক্তিতে প্রায় ২.২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের তহবিল পেয়েছে বলে জানা গিয়েছে। তারা একটি আকর্ষণীয় ব্যবসায়িক মডেলও খুঁজে পেয়েছে বলে মনে হচ্ছে, যা তাদের আগামী বছরগুলিতে যুক্তিসঙ্গত সাফল্যের পথে চালিত করতে পারে। তা সত্ত্বেও, গত দুই বছরে এই ক্ষেত্রটিতে চাহিদা বৃদ্ধি এবং উল্লেখযোগ্য বাড়বাড়ন্তের পর আগামী দুই বছরে কিছুটা ভারসাম্যের খেলা চলতে পারে। স্টার্টআপগুলির আর্থিক সঙ্কট ও পর্যাপ্ত প্রতিক্রিয়ার অভাবের মোকাবিলা করার আর একটি সম্ভাব্য উপায় হল বিভিন্ন এডটেক ও ই–কমার্স প্ল্যাটফর্মগুলিকে একীভূত করা, এবং তাই অনুমান করা যেতে পারে যে আগামী বছরগুলিতে কিছু সংযুক্তিকরণ ও অধিগ্রহণ হবে ৷ এন্টারপ্রাইজটেক ক্ষেত্রে ইতিমধ্যেই এমন কিছু ঘটনা দেখা গিয়েছে। স্টার্টআপগুলি, অন্তত কয়েকটি এক্সক্লুসিভ সেক্টরের মধ্যে, মোটামুটি প্রাধান্য পেয়েছে, এবং মনে হচ্ছে যে অর্থায়ন ও বাজার সম্পর্কিত সমস্যাগুলি সমাপ্ত না–হওয়া পর্যন্ত, যার জন্য মোটামুটি বছর দুয়েক সময় লাগবে, ঝড়ঝাপটা চললেও তারা টিকে যাবে৷
সামগ্রিকভাবে তাই ভারতীয় প্রযুক্তি স্টার্টআপগুলি থেকে একটি মিশ্র ছবি উঠে আসে। শক্তিশালী সরকারি সমর্থন একটি ইতিবাচক দিক, যদিও নীতির স্তরের সমর্থন ভারতীয় আমলাতন্ত্রের সঙ্গে কাজ করার সময় মোটেই সর্বদা পাওয়া না। কিন্তু ভারতের টেক স্টার্টআপগুলির রাষ্ট্রীয় হস্তক্ষেপের চেয়ে বরং বড় সমস্যা হতে পারে তাদের ব্যবসায়িক মডেল ও বাজারে প্রতিযোগিতা।
The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.