Published on Jan 29, 2023 Updated 0 Hours ago

ভারতীয় টেকফিনের উত্থান নিয়ন্ত্রক চ্যালেঞ্জের সৃষ্টি করেছে, যার সমাধান  করা জরুরি

ভারতীয় টেকফিন: নিয়ন্ত্রণবিধিগুলি কি যথেষ্ট?

ভারতীয় বাজারে ফিনটেক ব্যবহার না করলেও তার কথা অন্তত অনেকেই শুনেছেন। ফিনটেক-ভোক্তা না হলেও কেউ কেউ তার বৃদ্ধি, মাত্রা সংক্রান্ত প্রতিবন্ধকতা, ভোক্তাদের সংযোগ এবং সুবিধার পাশাপাশি সম্ভাব্য অপব্যবহারের কথা অবশ্যই শুনে থাকবেন।

ফিনটেকের সঙ্গে টেকফিনকে গুলিয়ে ফেললে হবে না। টেকফিনগুলি আসলে যে ভাবে তাদের ব্যবসা তৈরি করা হয়, ব্যবসায়িক মডেল, রাজস্ব নগদীকরণ, প্রযুক্তিগত দক্ষতা, ইক্যুইটি মূলধন সংগ্রহের ক্ষমতা  এবং মূল ভোক্তাদের প্রদেয় সুযোগ-সুবিধার উপর নির্ভর করে ফিনটেকের চেয়ে আলাদা হয়ে ওঠে। তার নেটওয়ার্ক, প্রযুক্তি এবং মঞ্চগত ভোক্তার লভ্যতা ব্যবহার করে, ভোক্তাদের সম্পর্কে তারা প্রচুর পরিমাণে তথ্য সংগ্রহ করে এবং সাধারণত  একটি অ-আর্থিক সম্পর্ক থেকে সেই থেকে তথ্য সংগৃহীত হয়। আর্থিক পরিষেবাগুলি প্রদান করার জন্য তাদের রিয়েল টাইমে এই তথ্য বিশ্লেষণ করার  সংস্থান এবং ক্ষমতা রয়েছে। তাত্ত্বিকভাবে দেখতে গেলে, তারা ‘একের জন্য সমাধান’ অর্থাৎ ‘সলিউশন ফর ওয়ান’কে আরও বৈচিত্রায়ন করতে পারে এবং  এহেন প্রস্তাব সকল ভোক্তার কাছে আকর্ষণীয় হতে পারে। জনপ্রিয় বিশ্বব্যাপী টেকফিনের উদাহরণগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল আলিবাবা, অ্যামাজন, অ্যাপল, বাইদু, ফেসবুক, গুগল এবং টেনসেন্ট। টেকফিনের গ্রাহকদের ডিজিটাল ফুটপ্রিন্টকে আর্থিক সমাধান প্রদানের জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে।

টেকফিনগুলি আসলে যে ভাবে তার ব্যবসা তৈরি করা হয়, ব্যবসায়িক মডেল, রাজস্ব নগদীকরণ, প্রযুক্তিগত ক্ষমতা, ইক্যুইটি মূলধন এবং মূল ভোক্তাদের প্রদেয় সুযোগ-সুবিধার উপর নির্ভর করে ফিনটেকের চেয়ে আলাদা হয়ে ওঠে।

১৫ বছর আগে যখন গ্লোবাল ফিন্যান্সিয়াল ক্রাইসিস (জিএফসি) হয়েছিল, তখন বেসরকারি বিনিয়োগকারীরা গ্রাহকদের আর্থিক সমস্যা সমাধানের নতুন উপায়ের উপর বাজি ধরতে শুরু করে। তখন থেকেই ফিনটেক পরিসরের বিকাশ এবং বৃদ্ধির গতি তরতরিয়ে বাড়তে থাকে। এটি ভোক্তাদের প্রয়োজন সমাধানের জন্য আর্থিক পরিষেবাগুলিতে প্রযুক্তির ব্যবহার শুরু করে। ফিনটেক বিপ্লবের পর আর্থিক পরিষেবার ক্ষেত্রে অনেক ইতিবাচক উন্নয়ন দেখা গিয়েছে, যা ভোক্তাদের সুবিধার উদ্দেশ্যে নানা সমস্যার সমাধান করেছে এবং আগামী দিনেও তা অব্যাহত থাকবে। যদি কেউ মনে করেন যে, ফিনটেক সংস্থাগুলির উপর আর্থিক নিয়ন্ত্রকদের দ্বারা পর্যবেক্ষণ চালানো প্রতিবন্ধকতাময়, তা হলে আর এক বার ভেবে দেখা উচিত। বর্তমানে ভারতের সম্ভাব্য প্রথম টেকফিন সংস্থা জিও ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস (জিএফএস) সামনে আসছে। রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ প্রদত্ত একটি ঘোষণা এই ইঙ্গিতই দেয় যে, এটি তার আর্থিক পরিষেবার কর্মসূচিগুলিকে একটি নতুন সত্তায় একত্র করবে।

অন্তর্নিহিত অর্থায়ন

বাজারে বিভিন্ন জটিল আর্থিক পণ্য থাকা সত্ত্বেও, গ্রাহকদের শুধুমাত্র তিনটি প্রয়োজনের জন্য আর্থিক পণ্যের দরকার পড়ে:

১) কোনও কারণে ধার (ঋণ শিল্প)

২) উদ্বৃত্ত তহবিল বিনিয়োগ (বিনিয়োগ খাত)

৩) ব্যক্তির জীবন, সম্পত্তি, স্বাস্থ্য ইত্যাদির বিমা (বিমা খাত)

এই চাহিদাগুলির মধ্যে অন্য দু’টির তুলনায় ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রে গ্রাহকরা ভিন্নভাবে আচরণ করেন। এ ক্ষেত্রে তাঁরা অনেক বেশি ধৈর্যশীল এবং অপেক্ষা করতে ইচ্ছুক। কিন্তু ভোক্তাকে নামমাত্র পরিমাণও বিনিয়োগ করানো কঠিন। যেখানে প্রথাগত অর্থদাতারা ব্যাঙ্কের আওতায় প্রায় না-থাকা এবং একেবারেই না-থাকা ব্যক্তিদের পরিষেবা দেওয়ার সুযোগ হাতছাড়া করেছিল, সেখানে ফিনটেক গ্রাহকদের ডিজিটাল তথ্যকে কাজে লাগিয়ে নতুন ক্রেডিট স্কোরিং মডেলগুলি ব্যবহার করার মাধ্যমে সেই গ্রাহকদের পরিষেবা প্রদান করেছে। বিশেষ করে মালিকানাধীন ক্রেডিট স্কোরিং অ্যালগরিদম এবং বিভিন্ন তথ্যের উৎস ব্যবহার করে এটি এমন একটি পরিসর, যা নিয়ন্ত্রকদের জন্য এখনও উদ্বেগজনক বলে মনে করা হচ্ছে। ঠিক এখানেই জেএফএস তাদের ব্যবসার মতোই মনোযোগ দিয়েছে এবং সম্প্রতি গণমাধ্যমে দেওয়া বিবৃতিতে ঘোষণা করেছে যে: ‘প্রথাগত ক্রেডিট ব্যুরো-ভিত্তিক আন্ডাররাইটিংকে পরিপূরক এবং সম্পূরক করার জন্য মালিকানাধীন তথ্য বিশ্লেষণের উপর ভিত্তি করে ভোক্তা এবং বণিক ঋণদান ব্যবসার উপরে জোর দেওয়া হবে।’ জেএফএস অর্থপ্রদান, বিমা, ডিজিটাল ব্রোকিং এবং সম্পদ ব্যবস্থাপনা জুড়ে আর্থিক পরিষেবার নানা পরিসর বাড়ানোর অভিপ্রায়ের প্রতিও ইঙ্গিত দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ভোক্তাদের জন্য প্রদত্ত সুযোগগুলির নিয়ন্ত্রক সীমা একাধিক আর্থিক নিয়ন্ত্রকদের মধ্যে প্রসারিত হবে।

জেএফএস অর্থপ্রদান, বিমা, ডিজিটাল ব্রোকিং এবং সম্পদ ব্যবস্থাপনা জুড়ে আর্থিক পরিষেবার নানা পরিসর বাড়ানোর অভিপ্রায়ের প্রতিও ইঙ্গিত দিয়েছে।

অন্তর্নিহিত অর্থায়ন বলতে একটি অ-আর্থিক মঞ্চে আর্থিক পরিষেবাগুলির সমন্বয়কে বোঝায়। এটি সম্ভবত এর আগে সুযোগ না-পাওয়া বা নতুন ঋণগ্রহীতাদের আনুষ্ঠানিক আর্থিক পরিষেবার সুযোগ বাড়াতে পারে। এই  ভোক্তাদের সাধারণত প্রচলিত তথ্য নেই, যা ব্যাঙ্কগুলি ক্রেডিট স্কোরিংয়ের জন্য ব্যবহার করতে পারে। অন্তর্নিহিত অর্থায়ন বিকল্প তথ্যভিত্তিক আন্ডাররাইটিংয়ের অনুমতি দিয়ে এটিকে মোকাবিলা করে, অর্থাৎ ঋণগ্রহীতাদের কাছ থেকে লব্ধ তথ্যের বিশ্লেষণ – যেমন অ্যাপ, টেক্সট, ডিভাইস লোকেশন, কল লগ এবং কনট্যাক্টস-সহ মোবাইল ডিভাইস ডেটা – যা ঋণদাতাদের একটি শক্তিশালী সিদ্ধান্তগ্রহণকারী ব্যবস্থা তৈরি করতে সাহায্য করে। এই ব্যবস্থাটি লেনদেন ইত্যাদির মতো তথ্যের অন্য রূপগুলি ছাড়াও ঋণযোগ্যতার জন্য প্রক্সি হিসেবে কাজ করে। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, অন্তর্নিহিত বিমা হল এমন একগুচ্ছ বিমা পণ্য, যেগুলি কোনও পণ্য বা পরিষেবা ক্রয়ের সময়ে সৃষ্টি হয়। অর্থাৎ যখন ভোক্তারা একটি টিভি বা ওয়াশিং মেশিন কেনেন, তাঁরা এর জন্য বিমা কভারেজ কেনেন না। কারণ এটি একটি অনুভূত প্রয়োজন নয়। কিন্তু ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মগুলি সাধারণত মূল পণ্য বিক্রয়ের সঙ্গে একগুচ্ছ বিমা পণ্যকে জুড়ে দিতে সফল হয়।

রিলায়েন্স বহুজাতিকের একাধিক ভোক্তা এবং পণ্য বিভাগে ভারতের বৃহত্তম খুচরো বিক্রেতা হয়ে ওঠার ক্ষমতা রয়েছে— এটি এমন এক তথ্যবিন্দু যা ঘনসন্নিবদ্ধ ভোক্তা ব্যবহারের সঙ্গে সংযুক্ত করবে, বিশেষত যখন তারা হোয়াটসঅ্যাপ-এর মতো মঞ্চের পরিষেবাগুলির সঙ্গে দৈনিক কেনাকাটাকেও সংযুক্ত করে। তারা সর্ববৃহৎ টেলিকম কোম্পানিরও মালিক। ইন্টারনেট পরিসরে এর ইক্যুইটি বিনিয়োগকারী হিসেবে কয়েকটি বৈশ্বিক বৃহৎ মঞ্চ রয়েছে। সর্বোপরি, এটির নিজের আওতায় একটি পেমেন্ট ব্যাঙ্কও রয়েছে। এ ছাড়াও এটি নিউ আমব্রেলা এন্টিটি (এনইউই) শংসাপত্রের (ভারতব্যাপী খুচরো অর্থ প্রদান প্রক্রিয়াকরণ ব্যবস্থা) জন্যও আবেদন করেছে। টেকফিন সাধারণত যা প্রদান করে, তার মধ্যে রয়েছে: ডেটাকে একটি পরিসরের আওতায় আনার উৎস হিসেবে অ-আর্থিক ভোক্তা স্পর্শবিন্দু এবং ভোক্তাদের ডিজিটাল ফুটপ্রিন্ট।

অর্থ বাজারে জেএফএসএর প্রভাব

ঐতিহ্যগত ভাবে যে কোনো বড় শক্তিই বাজারের পরিসর এবং ভোক্তাদের সামনে পণ্যের সম্ভার বৃদ্ধি করার জন্য বিনিয়োগে উৎসাহী এবং তা এই ক্ষেত্রে ইতিবাচকতাই বহন করে।

  • ফিনটেক-গুলির এখনও পর্যন্ত নীতি ও রাজনৈতিক পরিসরে উচ্চতা ও অবস্থানের অভাব ছিল এবং ভারতের ডিজিটাল দক্ষতা প্রদর্শনের জন্য তাকে শুধুমাত্র পোস্টার বয় হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। তারা ঐতিহ্যগত দায়িত্বশীল অর্থদাতাদের লবির তুলনায় কৌশলগত ভাবে নিজেদের গুরুত্ব তুলে ধরতে ব্যর্থ হয়েছে। ডিজিটাল অর্থায়ন পরিসরে সুবিশাল আরআইএল-এর প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গে এটি তাদের জন্য জোয়ার আনতে পারে। ডিজিটাল অর্থায়নের জন্য ভোক্তা বাজার আরও বিস্তৃত এবং গভীরতর হবে। অনুমান করা যায়, এই পরিসরে বড় শক্তিগুলির প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গে নিয়ন্ত্রক দ্বারগুলিও প্রসারিত হতে পারে এবং এখনও পর্যন্ত যা দেখা গিয়েছে, তার চেয়ে নতুন পণ্য পেশ করার অনুমতি দেবে। ডিজিটাল অর্থায়নের জন্য নিয়ন্ত্রকদের কাছে এখনও স্পষ্ট ভবিষ্যতের পথনির্দেশিকা নেই। ডিজিটাল অর্থায়নের নিয়ম ও প্রবিধানগুলি ধীর গতিতে বিবর্তিত হয়েছে এবং সম্ভবত কিছুটা অবিশ্বাসী সুরেও অনুরণিত হয়েছে। তাই এই প্রশ্ন রয়েই গিয়েছে যে, এটি কী আদৌ নিয়ন্ত্রকদের দ্বারা এখনও পর্যন্ত করা ফিনটেক মতাদর্শের অনুশীলনে পরিবর্তন আনতে সক্ষম?
  • এই ধরনের নতুন সূচনা যে তীব্র প্রতিযোগিতার জন্ম দেবে, তা গ্রাহকদের কাছে কম খরচে আর্থিক পণ্যকে লভ্য করে তুলবে এবং যা প্রতিষ্ঠানগুলি প্রদান করতে বাধ্য হবে। এ ছাড়াও, বিদ্যমান সংস্থাগুলি তাদের পরিষেবা প্রদানে উন্নতি সাধন করবে।
  • ফিনটেক ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতা করার জন্য উচ্চ মূল্য চোকাতে হবে। কর্মচারীদের ক্ষয়ক্ষতি বা শিকার হওয়ার মতো কারণগুলিও বাড়তে পারে। এটি প্রতিভা ধরে রাখার খরচও বাড়িয়ে দেবে।
  • আরআইএল-এর প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গে এমনটাও সম্ভব হতে পারে যে, তারা এই আর্থিক পরিষেবা প্রদানের জন্য আলাদা ইক্যুইটি তহবিল বরাদ্দ করতে পারে। এটি হলে তা সম্ভবত উচ্চ বেঞ্চমার্ক মূল্যায়নেই হবে। সফল ফিনটেক সংস্থাগুলি তাদের পরবর্তী পর্যায়ের তহবিল বা এমনকি অর্থ প্রত্যাহারের জন্য এই বেঞ্চমার্ক মূল্যায়ন ব্যবহার করে উপকৃত হতে পারে। প্রথাগত অর্থদাতারাও এই ধরনের শেয়ারের সম্ভাব্য ক্রেতা হতে পারে, যাতে এটি তাদের বাজারে প্রতিযোগিতামূলক হিসেবে থাকার অনুমতি দেয়। যাই হোক, দুর্বল বা অনুল্লেখযোগ্য ফিনটেকগুলির ঝাঁপ বন্ধ করে দিতে বা কম মূল্যে বিক্রিত হতে দেখাও অস্বাভাবিক নয়।
  • জেএফএস-এর কাছে উপলব্ধ সুবিশাল ঋণ শৃঙ্খলের লভ্যতা থাকবে— হয় ইকুইটি ক্যাপিটাল বেস হিসাবে বা ফান্ডিংয়ের স্বল্প খরচে, অথবা উভয় ক্ষেত্রেই এবং তা মালিকদের কর্পোরেট শক্তির বদান্যতায় সম্ভব। এটি তাদের দ্বারা বাজারে কম হারে ঋণ প্রদানের প্রস্তাব দিতে পারে। আগামী তিন থেকে পাঁচ বছরের মধ্যে তারা কতটা বাজারের অংশীদারিত্ব অর্জন করতে সক্ষম হবে, তার উপর নির্ভর করে তারা ভোক্তা ঋণের বাজার কীভাবে গঠন করে তা প্রভাবিত করতে পারে।
  • কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) / মেশিন লার্নিং (এমএল) পরিসরে নতুন উদীয়মান প্রযুক্তিগুলি এই টেকফিনের দৌড়ে পরীক্ষিত হবে এবং বিস্তৃত পরিসরে ব্যবহারের জন্য বাণিজ্যিক ভাবে তা স্থাপন করা হবে। এ ভাবে আর্থিক নিয়ন্ত্রকদের প্রাচীনকে বাদ দিতে এবং পরিসরের নিয়ন্ত্রণ ও তত্ত্বাবধানের নতুন উপায় শিখতে বাধ্য করবে।

টেকফিন নিয়ন্ত্রণ

এখনও পর্যন্ত ভারতীয় আর্থিক নিয়ন্ত্রকরা ফিনটেককে ব্যাঙ্কিং লাইসেন্স থেকে দূরে সরিয়ে রেখেছে এবং শুধুমাত্র আর্থিক মূল্য শৃঙ্খলের স্বল্প প্রবেশাধিকার দিয়েছে। ব্যাঙ্কিংনিয়ন্ত্রক আরবিআই কর্পোরেট হাউসগুলিকে সর্বজনীন ব্যাঙ্কিং সেক্টরে প্রবেশের অনুমতি প্রদান করেনি। এটি ব্যাঙ্ক, অন্যান্য আর্থিক এবং অ-আর্থিক গোষ্ঠী সত্তার মধ্যে সংযুক্ত ঋণ এবং আদানপ্রদান প্রতিরোধ করার কাজেই ব্যবহৃত। আর একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ হল বৃহৎ সমষ্টির জন্য তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করার প্রয়োজনীয়তা, যার মধ্যে তাদের ব্যবসায়িক কার্যকলাপ জুড়ে সুসংহত তত্ত্বাবধানও অন্তর্ভুক্ত। বর্তমান পথ হল টেলিকম ক্ষেত্রে উপস্থিত কর্পোরেট হাউসগুলির পেমেন্ট ব্যাঙ্ক লাইসেন্সের লব্ধতা। টেলিকম, ফিন্যান্স এবং তথ্যের সমন্বয়ের সঙ্গে সঙ্গে আমরা কি কর্পোরেট হাউসগুলির দ্বারা পূর্ণাঙ্গ ব্যাঙ্কিং কার্যক্রমের অনুমতি দেওয়ার জন্য অবস্থানের নিয়ন্ত্রক পরিবর্তন দেখতে সক্ষম হব?

এখনও পর্যন্ত ভারতীয় আর্থিক নিয়ন্ত্রকরা ফিনটেককে ব্যাঙ্কিং লাইসেন্স থেকে দূরে সরিয়ে রেখেছে এবং শুধুমাত্র আর্থিক মূল্য শৃঙ্খলের স্বল্প প্রবেশাধিকার দিয়েছে।

ভারতীয় নিয়ন্ত্রকরা সাধারণভাবে শিল্প উদ্ভাবনকে উৎসাহ জুগিয়ে আসছে। তাদের নিজস্ব প্রযুক্তি ব্যবহারের ক্ষমতা, বিশেষত তত্ত্বাবধায়ক পরিসর ও ব্যবস্থাপনায় এবং গুরুত্বপূর্ণ ভাবে অন্যান্য আর্থিক ও একাধিক নিয়ন্ত্রকদের সঙ্গে কাজ করার ক্ষমতার উন্নতি করতে হবে। এদের বেশির ভাগই এখনও তাদের নিয়ন্ত্রিত সংস্থা বা বাজারের রিয়েল-টাইম ডিজিটাল তত্ত্বাবধানের জন্য ডিজিটাল সরঞ্জামগুলির ব্যবহার করেনি। নিয়ন্ত্রকদের পক্ষে, তাদের প্রযুক্তির প্রচেষ্টা এবং ডিজিটাল দক্ষতা তৃতীয় পক্ষের পরামর্শদাতাদের কাছ থেকে নেওয়া ঠিক হবে না, কারণ তারা শিল্পে অংশগ্রহণকারীদেরও পরামর্শ দেয়। নিয়ন্ত্রকদের অ্যাপের মতো নিয়ন্ত্রক বিকাশের কথা ভাবতে হবে, যেগুলি নিয়মিত হালনাগাদ করা সম্ভব। তারা প্রযুক্তি এবং অর্থের সংমিশ্রণের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে তাদের প্রবিধান, নির্দেশিকা এবং বিজ্ঞপ্তিরও সংস্কার করতে পারে। কারণ ডিজিটাল যুগে কোনও সংস্কারই নিখুঁত এবং চূড়ান্ত হতে পারে না।

টেকফিন নিয়মবিধি এমন হওয়া জরুরি, যেখানে আমাদের নীতি এবং নিয়ন্ত্রক পরিসরে তাদের প্রকৃত স্বাধীনতা এবং ডিজিটাল অর্থায়নের জন্য নিয়ন্ত্রক ব্যবস্থাগুলি পরিচালনা করার ক্ষমতা পরীক্ষিত হবে। জেএফএস-কে টেকফিনের অনুরূপ আচরণ করতে হলে, নিয়ন্ত্রকরা তার উপর কতটা নিয়ন্ত্রণ করবে, তা স্পষ্ট করতে হবে। এই নজির-সহ অন্য কর্পোরেট হাউস বা টেলিকম বা প্রযুক্তি প্রধানদের আর্থিক পরিষেবাগুলিতে প্রবেশ করার আকাঙ্ক্ষা আসলে এখন শুধু সময়েরই অপেক্ষা। এটি কি ‘ডিজিটাল অনলি’ বা ‘শুধুমাত্র ডিজিটাল’ ব্যাঙ্কগুলির পূর্বসূরি হিসাবে নিয়ন্ত্রকদের মুক্তমনস্কতার পরিচয় প্রদান করবে? কারণ ফিনটেক এবং টেকফিন  ডিজিটাল স্পর্শবিন্দুর মাধ্যমে ভোক্তাদের পরিষেবা দেয় এবং অল্পবয়সি ভোক্তা জনসংখ্যার কাছে তাদের আবেদন থাকতে পারে যারা ডিজিটাল-ফার্স্ট বা ডিজিটাল-অনলি গ্রাহক।

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.