Image Source: Getty
স্বল্প মূল্যের জেনেরিক ওষুধ ও টিকা সরবরাহকারী হিসাবে ভারত কয়েক দশক ধরে আন্তর্জাতিক স্তরে ‘বিশ্বের ওষুধের দোকান’ হিসাবে বিখ্যাত। যাই হোক, দেশে অভিনব ওষুধের উন্নয়ন অনেকাংশে অনাবিষ্কৃত রয়ে গিয়েছে। ন্যাফিথ্রোমাইসিন – যে ওষুধটি ২০২৫ সালে মিকনাফ ব্র্যান্ডের অধীনে বিক্রি হবে বলে আশা করা হচ্ছে - একটি অসাধারণ পরিবর্তন সূচিত করতে পারে। বায়োটেকনোলজি ইন্ডাস্ট্রি রিসার্চ অ্যাসিস্ট্যান্স কাউন্সিল-এর (বিআইআরএসি) গুরুত্বপূর্ণ সহায়তায় ওকহার্ট দ্বারা দেশীয় ভাবে তৈরি এই ন্যাফিথ্রোমাইসিন সংক্রমণ প্রতিরোধের জন্য ভারতের প্রথম দেশীয় ভাবে উদ্ভাবিত অভিনব অ্যান্টিবায়োটিক। এটি অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স-এর (এএমআর) আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য সংক্রান্ত জরুরি অবস্থা মোকাবিলায় সহায়তা করবে। এই অ্যান্টিবায়োটিক ড্রাগ-প্রতিরোধী কমিউনিটি-অ্যাকোয়ার্ড ব্যাকটেরিয়াল নিউমোনিয়া (সিএবিপি) নির্মূলের লক্ষ্যে তৈরি করা হয়েছে এবং এটি চিকিৎসা ক্ষেত্রে যুগান্তকারী সাফল্য, যা ওষুধ উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে ভারতের সম্ভাবনাকেই দর্শায়।
বায়োটেকনোলজি ইন্ডাস্ট্রি রিসার্চ অ্যাসিস্ট্যান্স কাউন্সিল-এর (বিআইআরএসি) গুরুত্বপূর্ণ সহায়তায় ওকহার্ট দ্বারা দেশীয় ভাবে তৈরি এই ন্যাফিথ্রোমাইসিন প্রতিরোধ সংক্রমণের জন্য ভারতের প্রথম দেশীয় ভাবে উদ্ভাবিত অভিনব অ্যান্টিবায়োটিক।
ন্যাফিথ্রোমাইসিনের উদ্ভাবন এক উল্লেখযোগ্য সময়েই হয়েছে। নিউমোনিয়া বিশ্বে মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ হিসাবে উঠে এসেছে এবং এএমআর অনেক চিকিৎসাকে অকার্যকর করে এই নিউমোনিয়ার সঙ্কটকে আরও জটিল করে তোলে। ১৯৮০-র দশক থেকে বিশ্বে কোনও নতুন ধারার অ্যান্টিবায়োটিক তৈরি না হওয়ায়, ভারতের এই উদ্ভাবন জাতীয় ও বিশ্ব স্বাস্থ্য ক্ষেত্র… উভয়ের জন্য নতুন করে আশার আলো দেখাতে পারে।
নতুন অ্যান্টিবায়োটিকের প্রয়োজনীয়তা
এএমআরকে ‘নীরব অতিমারি’ বলা হয়, যা আধুনিক চিকিৎসায় কয়েক দশকের অগ্রগতিকে নস্যাৎ করে দেওয়ার হুমকি দেয়। এএমআর-এর দরুন ২০৫০ সাল নাগাদ প্রতি বছর ১০ মিলিয়ন মানুষের মৃত্যু হবে বলে অনুমান করা হচ্ছে। নিউমোনিয়া হল সেই মৃত্যুর কারণগুলির মধ্যে অন্যতম, যা নিম্ন-মধ্যম আয়ের দেশগুলিকে অসামঞ্জস্যপূর্ণ ভাবে ধ্বংস করে দিতে সক্ষম। প্রতি বছর ৪ মিলিয়ন সিএবিপি-র প্রতিবেদিত ঘটনার হার-সহ বিশ্বব্যাপী নিউমোনিয়ায় মৃত্যুর ২৩ শতাংশের জন্য ভারত একাই দায়বদ্ধ।
ওষুধ শিল্প ক্ষেত্রে অ্যান্টিবায়োটিক তৈরি না করার পদক্ষেপ এই পরিস্থিতিকে আরও গুরুতর করে তুলেছে। অ্যান্টিবায়োটিকের জন্য একটি ভিন্ন অর্থনৈতিক মডেল রয়েছে। তবে স্বল্পমেয়াদি চিকিত্সা চক্র, প্রতিরোধকে আটকানোর ক্ষেত্রে সীমিত ব্যবহার ও মূল্যের চাপ এ হেন ওষুধের বিকাশে বিনিয়োগকেও বাধা দিয়েছে। তাই অ্যান্টিবায়োটিক গবেষণা ও উদ্যোগের মূলধন বিনিয়োগ হ্রাস পেয়েছে এবং এই পরিসরে ওষুধের উদ্ভাবন অনেকাংশেই বন্ধ হয়ে গিয়েছে। আমাদের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা পুরনো এবং পুরনো ওষুধের উপরই নির্ভরশীল, যা প্যাথোজেন দ্বারা চালিত হয়। ন্যাফিথ্রোমাইসিন তাই দর্শায় যে, কী ভাবে নির্দিষ্ট সরকারি-বেসরকারি সহযোগিতা গুরুত্বপূর্ণ পরিসরে বাজারের ব্যর্থতাটাকেও কাটিয়ে উঠতে পারে।
আমাদের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা পুরনো এবং পুরনো ওষুধের উপরই নির্ভরশীল, যা প্যাথোজেন দ্বারা চালিত হয়। ন্যাফিথ্রোমাইসিন তাই দর্শায় যে, কী ভাবে নির্দিষ্ট সরকারি-বেসরকারি সহযোগিতা গুরুত্বপূর্ণ পরিসরে বাজারের ব্যর্থতাটাকেও কাটিয়ে উঠতে পারে।
আন্তর্জাতিক স্তরে অ্যান্টিবায়োটিক নির্মাণের শৃঙ্খলের মধ্যে অগ্রাধিকারের অভাবের কারণেও এই সঙ্কট আরও জটিল হয়ে উঠেছে। এক দিকে যখন ক্যানসার ও ডায়াবেটিসের মতো রোগের জন্য গবেষণা ও উন্নয়ন (আরঅ্যান্ডডি) খাতে বছরে বিলিয়ন বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করা হয়, তখন অ্যান্টিবায়োটিক – যা কিনা স্বল্পমেয়াদি চিকিত্সার দরুন কম মুনাফা তুলতে পারে এবং যার উপর বৃহত্তর ব্যবহারের বিধিনিষেধও আরোপ করা হয়েছে — নিয়ে তেমন চিন্তাভাবনাই করা হয় না। বাজারের ব্যর্থতার সমস্যাটি অপ্রতুল সংস্থান-সহ ছোট সংস্থা ও শিক্ষাগত প্রতিষ্ঠানের উপর আরও বোঝা চাপিয়ে দিয়েছে। এই সংস্থাগুলির মধ্যে অনেকেই ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল স্টেজ পর্যন্ত প্রতিশ্রুতিশীল আবিষ্কারকে এগিয়ে নিতে পারে। সর্বোপরি, যখন অভিনব অ্যান্টিবায়োটিক বাজারে প্রবেশ করে, তাদের বেশির ভাগই বিদ্যমান শ্রেণি থেকেই উদ্ভূত এবং বিবর্তিত ‘সুপারবাগ’-এর বিরুদ্ধে সীমিত কার্যকারিতাই দর্শায়। বিদ্যমান চিকিত্সাগুলির প্রতি তাদের প্রতিরোধ এবং নিউমোনিয়া, সেপসিস, রক্ত প্রবাহের সংক্রমণের মতো জীবননাশক সংক্রমণ ঘটাতে সক্ষম হওয়ার দরুন গ্রাম-নেগেটিভ ব্যাকটেরিয়ার মতো জটিল রোগজীবাণুগুলির জন্য ওষুধ তৈরি করাও আর জরুরি তালিকায় পড়ে না।
ন্যাফিথ্রোমাইসিন-এর নেপথ্যে বিজ্ঞান
ন্যাফিথ্রোমাইসিন-এর ক্লিনিক্যাল ও ব্যবহারিক শ্রেষ্ঠত্ব ওষুধটিকে অনুশীলনকারী ও রোগী উভয়ের কাছে আরও আকর্ষণীয় করে তুলবে। ওষুধটি তার ক্ষমতার দিক থেকে অ্যাজিথ্রোমাইসিনের চেয়ে দশ গুণ বেশি কার্যকর, মাত্র তিন দিনের স্বল্পতম পদ্ধতির মধ্যেই তুলনামূলক ফলাফল দেয়, রোগীর সমস্যার সমাধান করে উল্লেখযোগ্য ফলাফল প্রদান করে। সর্বোপরি এটি ড্রাগ-প্রতিরোধী লক্ষণ-সহ স্বাভাবিক ও অস্বাভাবিক… দুই ধরনের প্যাথোজেনকেই নির্মূল করতে পারে, যা সিএবিপি-র বিরুদ্ধে প্রাথমিক চিকিত্সা হিসেবে এর মূল্যকে দর্শায়।
ওষুধটি তার ক্ষমতার দিক থেকে অ্যাজিথ্রোমাইসিনের চেয়ে দশ গুণ বেশি কার্যকর, মাত্র তিন দিনের স্বল্পতম পদ্ধতির মধ্যেই তুলনামূলক ফলাফল দেয়, রোগীর সমস্যার সমাধান করে উল্লেখযোগ্য ফলাফল প্রদান করে।
এই ওষুধ বেশ নিরাপদও। ন্যাফিথ্রোমাইসিন খুব কমই গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল বা অন্ত্রজনিত পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে এবং তেমন কোনও ওষুধের সঙ্গে মিথস্ক্রিয়া করে না বললেই চলে। ফলে ওষুধটি বিপুল সংখ্যক জনসাধারণের জন্য নিরাপদ হয়ে উঠেছে। কোনও গুরুতর বা প্রতিকূল ঘটনা না ঘটার দরুন সব ধরনের ডোজ (মাত্রা) স্তরেই এই ওষুধ ভাল মতো কার্যকর হয়েছে। এই কার্যকারিতা ও নিরাপত্তা ন্যাফিথ্রোমাইসিন-কে আন্তর্জাতিক বিকল্প করে তোলে, বিশেষ করে যেহেতু এটি গত তিন দশকেরও বেশি সময়ের মধ্যে নির্মাণ করা তার ঘরানার প্রথম অ্যান্টিবায়োটিক। ক্লিনিক্যাল বা চিকিৎসাক্ষেত্রে প্রতিশ্রুতি ছাড়াও এটি বিশ্বমানের ওষুধ উৎপাদনের বুদ্ধিমত্তার ক্ষেত্রে ভারতের দক্ষতাকেই দর্শায়। ন্যাফিথ্রোমাইসিন বিদ্যমান শ্রেণির ডেরিভেটিভ ওষুধ (অর্থাৎ ন্যাফিথ্রোমাইসিন থেকে উৎপন্ন নানা ওষুধ) থেকে সরে এসে ব্যতিক্রম হয়ে উঠেছে এবং এটি দর্শায় যে, জনস্বার্থে সরকারি এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলি সহযোগিতা করে একজোটে কাজ করলে কী ধরনের অগ্রগতি সম্ভব।
সরকারি-বেসরকারি সহযোগিতা সংক্রান্ত গবেষণা
এএআর-এর বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক পদক্ষেপ একটি জটিল পর্যায়ে পৌঁছেছে, যেখানে রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ পরিষদে (ইউএনজিএ) এএমআর-এর সমস্যা সমাধানে ‘সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের সুবিধাগুলিকে স্বীকৃতি দেওয়া’র প্রয়োজনীতা দর্শিয়ে একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকও হয়েছে। দুই আন্তর্জাতিক অলাভজনক অংশীদারিত্বের নেতৃত্বে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল পণ্যের উৎপাদন ও স্থিতিশীল লভ্যতা সুনিশ্চিতকারী কমব্যাটিং অ্যান্টিবায়োটিক-রেজিস্ট্যান্ট ব্যাকটেরিয়া বায়োফার্মাসিউটিক্যাল অ্যাক্সিলারেটর (সিএআরবি-এক্স) এবং গ্লোবাল অ্যান্টিবায়োটিক রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টনারশিপ (জিএআরডিপি) দ্বারা করা অগ্রগতি থেকে শিক্ষা নিয়ে পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) বায়োফার্মার পণ্য তৈরি ও বাণিজ্যিকীকরণের জন্য একটি অনন্য প্রক্রিয়া উপস্থাপন করেছে। ভারতের তরফে পিপিপি স্বাস্থ্য স্থিতিস্থাপকতা অর্জনে দেশের ন্যাশনাল হেলথ মিশন বা জাতীয় স্বাস্থ্য অভিযানের কেন্দ্রীয় পথগুলির মধ্যে একটি।
বিআইআরএসি-র প্রবিধানে পণ্য বিকাশের বিভিন্ন পর্যায় সফল ভাবে চালিত করার জন্য উপযুক্ত শিল্প অংশীদারদের সঙ্গে উদ্ভাবনী গবেষণা প্রযুক্তিগুলিকে সংযুক্ত করে শিক্ষাগত গবেষণা ও শিল্পের মধ্যে ব্যবধান দূর করার উল্লেখ রয়েছে। যেমন পরিশোধন বাণিজ্যিকীকরণের সম্ভাবনা-সহ ধারণার প্রমাণ, তার জন্য ইনকিউবেশন সহায়তা প্রদান করে স্টার্ট-আপ, মূল্যায়ন ও বৈধতাকে সহায়তা করা এবং স্টার্ট-আপের জন্য পর্যাপ্ত তহবিলের সুযোগগুলিকে চিহ্নিত করা।
বায়োটেকনোলজি ডিপার্টমেন্টের (ডিবিটি) অধীনে একটি অলাভজনক ও জনসাধারণের ক্ষেত্রের উদ্যোগ বায়োটেকনোলজি ইন্ডাস্ট্রি রিসার্চ অ্যাসিস্ট্যান্স কাউন্সিল (বিআইআরএসি) ন্যাফিথ্রোমাইসিন-এর তৃতীয় স্তরের চিকিৎসা সংক্রান্ত পরীক্ষানিরীক্ষার জন্য ৮ কোটি ভারতীয় টাকা (অর্থাৎ ৯৪৫০০০ মার্কিন ডলার) বিনিয়োগ করেছে। বিআইআরএসি-এর লক্ষ্য হল উচ্চ মানের পণ্যগুলির গবেষণা ও উদ্ভাবনী উন্নয়নকে সশক্ত করার জন্য ভারতের জৈব অর্থনীতিকে দৃঢ় করা, যা ২০৩০ সালের মধ্যে ৩০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছবে বলে আশা করা হচ্ছে। ভারতে একটি স্টার্ট-আপ খোলার সমৃদ্ধ পরিবেশও রয়েছে, যেখানে ২০২৩ সালে ৮০০০টিরও বেশি স্টার্ট-আপ বায়োটেক ক্ষেত্রে খোলা হয়েছে। বিআইআরএসি-র প্রবিধানে পণ্য বিকাশের বিভিন্ন পর্যায় সফল ভাবে চালিত করার জন্য উপযুক্ত শিল্প অংশীদারদের সঙ্গে উদ্ভাবনী গবেষণা প্রযুক্তিগুলিকে সংযুক্ত করে শিক্ষাগত গবেষণা ও শিল্পের মধ্যে ব্যবধান দূর করার উল্লেখ রয়েছে। যেমন পরিশোধন বাণিজ্যিকীকরণের সম্ভাবনা-সহ ধারণার প্রমাণ, তার জন্য ইনকিউবেশন সাপোর্ট বা উন্মেষমূলক সহায়তা প্রদান করে স্টার্ট-আপ তৈরি, মূল্যায়ন ও বৈধতাকে সহায়তা করা এবং স্টার্ট-আপের জন্য পর্যাপ্ত তহবিলের সুযোগগুলিকে চিহ্নিত করা। অন্যান্য উল্লেখযোগ্য অগ্রগতির মধ্যে রয়েছে যৌথ ভাবে সিরাম ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়া, ডিবিটি, বিআইআরএসি এবং বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন দ্বারা যৌথ ভাবে সৃষ্ট সিইআরভিএভিএসি, যা একটি কোয়াড্রিভ্যালেন্ট হিউম্যান প্যাপিলোমাভাইরাস (কিউএইচপিভি) টিকা। এর পাশাপাশি হয়েছে জাইকভ-ডি, যেটি বিশ্বের প্রথম ডিএনএ-ভিত্তিক কোভিড-১৯ টিকা এবং এটি ডিবিটি ও বিআইআরএসি-র সঙ্গে অংশীদারিত্বে জাইডাস ক্যাডিলা দ্বারা নির্মিত।
বাধা নির্মূল করা: ন্যাফিথ্রোপমাইসিন-এর ভারতের জন্য কী সম্ভাবনা রয়েছে?
এএমআর একটি জনস্বাস্থ্য জরুরি অবস্থার প্রতিনিধিত্ব করে, যা নতুন ওষুধের আবিষ্কারের প্রয়োজনীয়তাকেই দর্শায়। অ্যান্টিবায়োটিক নির্মাণ ও বাণিজ্যিকীকরণের জন্য প্রায় ১০-১৫ বছর সময় লাগে। ভারতের ন্যাফিথ্রোমাইসিন-এর সময় লেগেছিল প্রায় ১৪ বছর। এর পাশাপাশি নতুন অ্যান্টিবায়োটিকের উপর কাজ করার বিষয়টি আন্তর্জাতিক বায়োফার্মাসিউটিক্যাল সংস্থাগুলির তরফে বিনিয়োগের তুলনায় কম মুনাফার (আরওআই) কারণে তেমন ইতিবাচক সাড়া পায়নি। প্রি-ক্লিনিক্যাল পর্যায় থেকে বাণিজ্যিকীকরণের পর্যায় পর্যন্ত নানাবিধ রূপান্তরের চ্যালেঞ্জ, দীর্ঘস্থায়ী অবস্থার তুলনায় চিকিত্সা পদ্ধতির তুলনামূলক ভাবে স্বল্প সময়কাল এবং ‘শেষ অবলম্বন’মূলক চিকিত্সা হিসাবে তাদের ব্যবহার অভিনব অ্যান্টিবায়োটিক আবিষ্কারের পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বায়োটেকনোলজি ইনোভেশন অর্গানাইজেশন-এর (বিশ্বের সর্ববৃহৎ বায়োটেক ট্রেড অর্গানাইজেশন) রিপোর্টে বলা হয়েছে যে, ৮০ শতাংশ নতুন অ্যান্টিবায়োটিক আবিষ্কারের কৃতিত্বের দায় যায় ছোট সংস্থাগুলির কাছেই এবং মাত্র ১২ শতাংশ অ্যান্টিবায়োটিক উৎপাদন করে বড় মাপের সংস্থাগুলি। ক্ষুদ্র ও মাঝারি মানের সংস্থাগুলি এখনও একই মুনাফা ও বাণিজ্যিকীকরণের মতো প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হচ্ছে। এই ঘাটতির দরুন সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বগুলি প্রয়োজনীয় বায়োফার্মা পণ্যগুলির আবিষ্কারকে ত্বরান্বিত করার এবং ভারতের স্বাস্থ্যসেবা বাস্তুতন্ত্রকে সশক্ত করার সুযোগকে কাজে লাগাতে পারে।
ভারতের বায়োইথ্রি (বায়োটেকলজি ফর ইকোনমি, এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড এমপ্লয়মেন্ট অর্থাৎ অর্থনীতি, পরিবেশ ও কর্মসংস্থানের জন্য জৈবপ্রযুক্তি) এবং বায়ো-রাইড (বায়োটেকনোলজি – রিসার্চ, ইনোভেশন অ্যান্ড অঁন্ত্রপ্রনরশিপ ডেভেলপমেন্ট অর্থাৎ গবেষণা, উদ্ভাবন ও উদ্যোক্তা উন্নয়ন) নীতিগুলি - যেগুলি ১০০০০ কোটি টাকা (১১.৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার) বিনিয়োগ আকৃষ্ট করবে - ভারতের জৈব নির্মাণ ক্ষেত্রের নেতৃত্ব দেবে।
ভারতের বায়োইথ্রি (বায়োটেকলজি ফর ইকোনমি, এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড এমপ্লয়মেন্ট অর্থাৎ অর্থনীতি, পরিবেশ ও কর্মসংস্থানের জন্য জৈবপ্রযুক্তি) এবং বায়ো-রাইড (বায়োটেকনোলজি – রিসার্চ, ইনোভেশন অ্যান্ড অঁন্ত্রপ্রনরশিপ ডেভেলপমেন্ট অর্থাৎ গবেষণা, উদ্ভাবন ও উদ্যোক্তা উন্নয়ন) নীতিগুলি - যেগুলি ১০০০০ কোটি টাকা (১১.৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার) বিনিয়োগ আকৃষ্ট করবে - ভারতের জৈব নির্মাণ ক্ষেত্রের নেতৃত্ব দেবে। বর্তমানে ভারতের জৈব অর্থনীতি গত দশকে উল্লেখযোগ্য ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে এবং ২০২৩ সালের শেষের দিকে তা ১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার থেকে বেড়ে ১৫১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পরিণত হয়েছে। ভারতের স্টার্ট-আপ ক্ষেত্রটির সম্প্রসারিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে এবং আগামী বছরের মধ্যে ১০০০০ বায়োটেক স্টার্ট-আপ শুরু হতে পারে। ভারতের জনভিত্তি অত্যন্ত নবীন এবং জনসংখ্যার ৪৭ শতাংশের বয়স ২৫ বছরের নীচে। এটি এমন দক্ষ কর্মশক্তির প্রতিনিধিত্ব করে যা জৈব অর্থনীতিতে অবদান রাখতে পারে। ক্রমবর্ধমান স্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা ও কম সংখ্যক অ্যান্টিবায়োটিক আবিষ্কারের প্রেক্ষিতে ভারত পিপিপি-কে কাজে লাগিয়ে তার বায়োফার্মা ক্ষেত্রকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে, যা স্বাস্থ্য সঙ্কটের মধ্য দিয়ে চলা জনসংখ্যার জন্য অনন্য প্রযুক্তিগত সুবিধা প্রদান করে। ভারতের প্রায়োরিটি প্যাথোজেন লিস্ট বায়োফার্মা শিল্পকে জরুরি ভাবে প্রয়োজনীয় অ্যান্টিবায়োটিক নির্মাণের জন্য একটি পথনির্দেশিকা দিতে পারে। প্যাথোজেনের উচ্চ সংক্রমণের হার ও বর্তমানে উপলব্ধ চিকিত্সা প্রতিরোধ করার ক্ষমতার কারণে একটি ব্যাপক আন্তর্জাতিক হুমকি পরিলক্ষিত হচ্ছে এবং এই প্যাথোজেনগুলি বিনিয়োগের অগ্রাধিকার এবং তহবিল ও প্রণোদনার আহ্বান প্রয়োজনীয়তাকে দর্শায়।
লক্ষ্মী রামকৃষ্ণন অবজার্ভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের হেলথ ইনিশিয়েটিভ-এর অ্যাসোসিয়েট ফেলো।
কে এস উপলব্ধ গোপাল অবজার্ভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের হেলথ ইনিশিয়েটিভ-এর অ্যাসোসিয়েট ফেলো।
The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.