Published on Jul 10, 2023 Updated 0 Hours ago
সীমান্ত বিরোধের অবসান: ভারত–নেপাল বাধ্যবাধকতা

ভারত ও নেপালের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে, যার ভিত্তি ইতিহাস, সংস্কৃতি ও ধর্মের সংযোগ;‌ তবে তাদের সম্পর্ক সীমান্ত সংঘাতের দ্বারাও আকীর্ণ। যদিও এই পার্থক্য থাকা সত্ত্বেও দুই দেশ তাদের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতে পেরেছে, তবুও সমস্যার একটি স্থায়ী সমাধান খুঁজে পেলে তারা উভয়েই উপকৃত হবে। এই নিবন্ধটিতে ভারত ও নেপাল উভয়ের তরফে সীমান্ত বিরোধ সমাধানের প্রচেষ্টার কথা তুলে ধরা হয়েছে। এখানে উভয় দেশের সার্বভৌমত্ব, ভূখণ্ডগত অখণ্ডতা ও স্বাধীনতার প্রতি সম্মান তুলে ধরা সহ গুরুত্বপূর্ণ নীতিগত বাধ্যবাধকতা, এবং সেইসঙ্গে আন্তঃসীমান্ত অপরাধের মতো সুনির্দিষ্ট চ্যালেঞ্জ সমাধানের জন্য সহযোগিতামূলক উদ্যোগ অনুসরণের সুপারিশ করা হয়েছে। আরও বাস্তবসম্মত সীমান্ত ব্যবস্থাপনা কৌশল ও আন্তঃসীমান্ত পরিকাঠামোর উন্নয়নও এ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ।


আরোপণ: সরোজ আরিয়াল ও মনীশ জং পুলামি, ‘‌ফাইন্ডিং অ্যান এন্ড টু বর্ডার ডিসপিউটস:‌ দ্য ইন্ডিয়া–নেপাল ইমপ্যারেটিভ’‌, ওআরএফ ইস্যু ব্রিফ নং ৬৩৩, এপ্রিল ২০২৩, অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশন


ভূমিকা
ভারত ও নেপাল ঐতিহাসিক, সাংস্কৃতিক ও ভৌগোলিক সম্পর্কের ভিত্তিতে সুদীর্ঘ সম্পর্কের ভাগীদার। তাদের মধ্যে রয়েছে উন্মুক্ত সীমান্ত ও মানুষের সঙ্গে মানুষের গভীর সম্পর্ক। যাই হোক, এই সম্পর্কটি মাঝে মধ্যে উত্তেজনা ও মতবিরোধ দ্বারা চিহ্নিত হয়েছে, যেগুলি প্রধানত সীমান্ত ও জল ভাগাভাগি সম্পর্কিত।[১] যদিও ভারত ঐতিহাসিকভাবে নেপালের বৃহত্তম ব্যবসায়িক অংশীদার, সহায়তা প্রদানকারী ও বিনিয়োগকারী, নেপাল কিন্তু প্রায়ই ভারতকে তার অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের জন্য অভিযুক্ত করে।[২] নেপাল বছরের পর বছর ধরে ভারত ও তার প্রতিদ্বন্দ্বী চিন উভয়ের সঙ্গেই তার সম্পর্কের ভারসাম্য বজায় রাখার চেষ্টা করেছে।[৩] ভারতের সঙ্গে নেপালের সম্পর্ক সর্বাগ্রে তাদের ভৌগোলিক নৈকট্য এবং অভিন্ন সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্কের কারণে গুরুত্বপূর্ণ থেকেছে।[৪] সাম্প্রতিক বছরগুলিতে চিনের সঙ্গে নেপালের ক্রমবর্ধমান সম্পৃক্ততা, এবং সেই প্রেক্ষাপটে ভারতের আঞ্চলিক কৌশলগত উদ্বেগ এখন সম্পর্কের মধ্যে আরও জটিলতা যুক্ত করেছে।[৫]

বিশেষ করে নেপালের নতুন সংবিধান এবং নেপালি রাজনীতিতে ভারতের হস্তক্ষেপের অভিযোগের প্রেক্ষাপটে গত বেশ কয়েক বছরে ভারত ও নেপালের মধ্যে সীমান্ত উত্তেজনাও বেড়েছে। ২০১৫ সালে নেপালের সদ্যপ্রবর্তিত সংবিধান নিয়ে ভারত নিজের অসন্তোষ দেখানোর জন্য নেপালের উপর অনানুষ্ঠানিক অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল। ঘটনাটি নেপালের অর্থনীতিকে মারাত্মকভাবে প্রভাবিত করেছিল, এবং তাদের সম্পর্কের মধ্যে টানাপড়েন নিয়ে এসেছিল।[৬] ভারতীয় কর্তৃপক্ষ দাবি করে যে ঘটনাটি যানবাহন চলাচলে বাধার কারণে ঘটেছিল, আর এই বাধা তৈরি করেছিল ট্রানজিট পয়েন্টে নেপালি জাতিগত সংখ্যালঘুদের বিক্ষোভ, যারা নতুন সংবিধান মেনে নিতে অসম্মত ছিল।[৭] কয়েক বছর পর, ২০২০ সালে, কালাপানি–লিম্পিয়াধুরা–লিপুলেখ ত্রিপক্ষীয় সংযোগস্থ এলাকা নিয়ে দুই দেশের মধ্যে আঞ্চলিক বিরোধ শুরু হয়।[৮] উভয়েই এই অঞ্চলের মালিকানা দাবি করেছিল।[৯] যদিও সফল কূটনৈতিক আলোচনার পর বিরোধটি আর বাড়েনি, তবে এটি সম্পর্কের ভঙ্গুরতা এবং উভয়ের মধ্যে অব্যাহত সম্পৃক্ততা ও সহযোগিতার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে।[১০]

ভারত ও নেপালের মধ্যে সীমান্ত উত্তেজনা সমাধানে ব্যাপক চ্যালেঞ্জ রয়েছে, যার মধ্যে একটি হল আস্থার অভাব।[১১] উত্তেজনা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে নেপালের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ভারতের হস্তক্ষেপের অভিযোগ এবং চিনের সঙ্গে নেপালের ক্রমবর্ধমান সম্পর্কের কারণে। তাছাড়া দুই দেশের মধ্যে সীমান্ত উন্মুক্ত হওয়ার কারণে অবৈধ অভিবাসন ও চোরাচালানের মতো সমস্যা দেখা দিয়েছে।[১২]

সীমান্ত বিরোধ: ঐতিহাসিক দৃষ্টিভঙ্গি
নেপাল ও ভারতের মধ্যে সীমান্ত ১,৭০০ কিলোমিটার দীর্ঘ, এবং এর একটি জটিল ইতিহাস রয়েছে যা কয়েক শতাব্দীব্যাপী বিস্তৃত।[১৩] সীমান্তটি চিহ্নিত হয়েছে মূলত ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ও নেপালের মধ্যে স্বাক্ষরিত ১৮১৬ সালের সুগৌলি চুক্তির উপর ভিত্তি করে, যা ইঙ্গ–নেপাল যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটিয়েছিল।[১৪] চুক্তিটি দুই দেশের মধ্যে সীমানা নির্ধারণ করে, এবং পরবর্তী চুক্তি ও বোঝাপড়াগুলি সেই সীমান্তকে আরও স্পষ্টভাবে চিহ্নিত করে।[১৫] সুগৌলি চুক্তির ৫ নং ধারায় মহাকালী নদীকে (বা চুক্তিতে উল্লেখিত কালী নদীকে) পশ্চিম সীমানা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।[১৬] চুক্তিটি মহাকালী নদীর উৎপত্তি নির্দেশ না–করলেও হাইড্রোগ্রাফিক অধ্যয়ন লিম্পিয়াধুরাকে এর উৎপত্তিস্থল হিসেবে দেখায়, এবং এটিকে ভারত, নেপাল ও চিনের মধ্যে ত্রিপক্ষীয় সংযোগস্থলে পরিণত করে।[১৭] দুই দেশ এই সীমান্তে প্রতিদ্বন্দ্বিতা চালিয়ে যাচ্ছে।

নিশ্চিতভাবে বলা যায় ভারত ও নেপাল দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র প্রতিবেশী নয় যারা যারা সীমান্ত বিরোধের মুখোমুখি হচ্ছে।[১৮] এই অঞ্চলে ঔপনিবেশিক শাসনের আবির্ভাবের সঙ্গে ‘‌সার্বভৌমত্ব’‌ ও ‘‌ভূখণ্ড’‌ সংক্রান্ত ধারণার পরিবর্তনগুলি সীমান্ত বিরোধে অবদান রেখেছে; আর সীমান্তের চিত্রায়ণ এই অঞ্চলটিকে একটি ‘পরিবর্তনশীল সাংস্কৃতিক সত্ত্বা’‌ থেকে সীমান্ত দ্বারা সংজ্ঞায়িত ভূখণ্ডে পরিবর্তিত করেছে।[১৯] কৌশলগত ও প্রশাসনিক উদ্দেশ্যে দক্ষিণ এশিয়ার পুনর্গঠনের একটি দীর্ঘ উত্তরাধিকার রয়েছে, যা সমসাময়িক বিরোধগুলিকে প্রভাবিত করে।[২০] যেমন ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সীমান্ত বিরোধ, এবং পাকিস্তান ও আফগানিস্তান অথবা ভারত ও চিনের মধ্যকার সীমান্ত বিরোধের শিকড় ঔপনিবেশিক আমলে নিহিত।[২১] একইভাবে, নেপাল ও ভারতের মধ্যে সীমান্ত বিরোধ ১৯ শতকে শুরু হয়েছিল, যখন ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি তার এলাকা সম্প্রসারিত করতে চেয়ে ১৮১৬ সালে নেপালের সঙ্গে সুগৌলি চুক্তি স্বাক্ষর করে।[২২]  কিন্তু নেপাল এই চুক্তির ‘‌দ্ব্যর্থতা’‌ ও ‘অস্পষ্টতা’‌র বিষয়টি উত্থাপন করে, যার ফলে সঠিক সীমানা নির্ধারণ নিয়ে বিরোধ দেখা দেয়।[২৩] ব্রিটিশরা পরে একতরফাভাবে সীমানা নির্ধারণ করে তা চিহ্নিত করে।[২৪]

নেপাল ও ভারতের মধ্যে সীমান্ত বিরোধ মূলত নেপালের পশ্চিম ও পূর্বাঞ্চলে কেন্দ্রীভূত।[২৫] পশ্চিমের বিতর্কিত এলাকা হল কালাপানি–লিম্পিয়াধুরা–লিপুলেখ ত্রিসংযোগস্থল।[২৬] নেপাল ভারতকে ‘‌কার্টোগ্রাফিক অ্যাসারশন’‌–এর দায়ে অভিযুক্ত করেছে।[২৭] অন্যদিকে ভারত যুক্তি দেয় যে এলাকাটি তার নিজস্ব ভূখণ্ডের অংশ, এবং ১৯৬০–এর দশক থেকে ভারত সেখানে তার সামরিক উপস্থিতি বজায় রেখেছে।[২৮] পূর্বে বিরোধ রয়েছে নেপালের নাওয়ালপারাসি জেলার দক্ষিণ অংশে অবস্থিত সুস্তা এলাকা নিয়ে।[২৯] ভারত ও নেপাল উভয়েরই দাবিকৃত এই এলাকাতে দুই সীমান্ত বাহিনীর মধ্যে মাঝে মাঝে সংঘর্ষ ঘটে থাকে।[৩০],[৩১]

অন্যান্য অংশেও সীমান্ত নিয়ে বিক্ষিপ্ত বিরোধ রয়েছে, যেমন মেচি নদী ও কালী নদী অঞ্চলে।[৩২] এই বিরোধগুলি দখল, ভূমি ব্যবহার ও আন্তঃসীমান্ত অপরাধ সংক্রান্ত বিষয়গুলির সঙ্গে সম্পর্কিত।

জলবণ্টন নেপাল ও ভারতের মধ্যে বিরোধের আরেকটি উৎস। দুই দেশ কোশী, গণ্ডকী ও মহাকালী–সহ বেশ কয়েকটি নদীর অংশীদার, এবং জলসম্পদ ভাগাভাগির বিষয়ে বেশ কয়েকটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে।[৩৩] কিন্তু তারপরেও তারা এই চুক্তিগুলির ব্যাখ্যা এবং তাদের বাস্তবায়নের পদ্ধতিতে, বিশেষত জলবিদ্যুৎ প্রকল্প এবং এই নদীগুলি থেকে জল সরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে, দ্বিমত পোষণ করে।[৩৪] নেপাল ভারতকে শুষ্ক মরসুমে জল আটকে রাখার দায়ে অভিযুক্ত করে, আর ভারত নেপালের জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের প্রভাব নিয়ে উদ্বিগ্ন।[৩৫] এই সমস্যাগুলির সমাধানের জন্য দুই দেশের মধ্যে ক্রমাগত সংলাপ ও সহযোগিতা, এবং উভয়ের স্বার্থ বিবেচনা করে পারস্পরিকভাবে গ্রহণযোগ্য সমাধান খুঁজে বার করার জন্য দায়বদ্ধতা প্রয়োজন।

তার উপর ভারত–নেপাল সম্পর্কের ক্ষেত্রে সীমান্ত এলাকা দখল একটি পুনরাবৃত্ত সমস্যা হয়ে উঠেছে। নেপাল ভারতকে নেপালের ভূখণ্ড, বিশেষ করে সীমান্ত এলাকায় যেখানে সীমানা স্পষ্ট নয়, সেখানে দখলদারির দায়ে অভিযুক্ত করেছে।[৩৬] এর ফলে দুই দেশের সীমান্ত বাহিনীর মধ্যে মাঝেমধ্যে সংঘর্ষ বাধে। নেপালে সীমান্ত এলাকায় ভারতীয় নাগরিকদের জমি ও সম্পত্তি অধিগ্রহণ করা নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে, এবং তা ভারতবিরোধী মনোভাব জাগিয়ে তুলেছে;‌ অন্যদিকে ভারতে সীমান্তের দুই পারে নেপালি নাগরিকদের চলাচল নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে। নেপালের বিশ্লেষকরা আরও বলছেন যে লক্ষ্মণপুর, রসিয়াওয়াল–খুরলোটান, মহালিসাগর, কোহালাওয়াস ও কুনাউলির মতো বিভিন্ন জায়গায় ভারতের বাঁধ ও পাড়–নির্মাণের কারণে প্রতি বছর বর্ষার মরসুমে তাঁদের এলাকাগুলি ব্যাপক বন্যার শিকার হচ্ছে।[৩৭] বন্যা উভয় দেশের জন্যই মরসুমি সমস্যা।[৩৮]

সীমানা স্তম্ভগুলি হারিয়ে যাওয়ার বিষয়টি মতপার্থক্যকে আরও জটিল করেছে। দুই দেশের সীমান্তে ৮,০০০–এরও বেশি সীমানা স্তম্ভ থাকলেও প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা মানবিক কর্মকাণ্ডের কারণে তাদের অনেকগুলির আর কোনও সন্ধান নেই।[৩৯] বিতর্কিত সীমান্ত এলাকায়, যেমন সুস্তা, আরা, নালা ও তাল বাগোন্ডায় সীমান্ত স্তম্ভগুলি কোথাও খুঁজে পাওয়া যায় না।[৪০] এর ফলে দুই দেশের মধ্যে সীমানা নির্ভুলভাবে নির্ণয় করা কঠিন হয়ে পড়েছে, আর পরিণতিতে ওই সব এলাকায় জমি ও সম্পত্তির মালিকানা নিয়ে বিরোধ এবং দুই পক্ষের সীমান্ত বাহিনীর মধ্যে মাঝে মাঝে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। নিখোঁজ সীমান্ত স্তম্ভ প্রতিস্থাপনের চেষ্টা চলছে, কিন্তু অগ্রগতি ধীরগতির।[৪১]

এছাড়াও কৈলালীতে লালবোঝি ও ভজনী, বারদিয়ার গুলারিয়া এলাকার চৌগুরজি, কাঞ্চনপুরের পরাসন পারাতল, পূর্ব–পশ্চিম মহাসড়কের দিকে কোশি বাঁধের ১.৫ কিমি, ইলামের শ্রীয়ন্তু গুফাপাতাল, চিতওয়ানের সোমেশ্বর, বারার ঝিটকাইয়া ও ডাঙের কৈলাবাসের দশ গজ এলাকার সীমান্তেও দখলদারির সমস্যা রয়েছে।[৪২] নেপালের সঙ্গে ভারতের সীমান্ত ভাগ করে নেওয়া ২৬টি জেলার মধ্যে ২১টি জেলার ৫৪টি স্থানে ভারত ভূখণ্ড লঙ্ঘনের অভিযোগ এনেছে।[৪৩] আবার নেপালি বিশ্লেষকেরা অভিযোগ করেন যে নেপালের ৬০,০০০ হেক্টরেরও বেশি জমি ভারতীয় পক্ষের দ্বারা দখল করা হয়েছে।[৪৪] ভারত সে দেশে সফরে আসা নেপালের কর্মকর্তাদের বলেছে যে এই অভিযোগগুলো কূটনৈতিকভাবে খতিয়ে দেখা হবে এবং সমাধান করা হবে।

একই সময়ে নেপালের অভ্যন্তরে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা এবং ক্রমাগত ক্ষমতার লড়াই এই আঞ্চলিক বিরোধগুলির পুনরাবৃত্তির একটি নির্দিষ্ট ধরন তৈরি করেছে। জনসমর্থন পেতে আগ্রহী নেপালের রাজনৈতিক দলগুলি ভারতের সঙ্গে দেশের সীমান্ত বিরোধ নিয়ে রাজনীতি করেছে৷[৪৫],[৪৬] তাদের অবিরাম ক্ষমতার লড়াইয়ের মধ্যে নেপালের রাজনৈতিক অভিজাতরা ভারত নামের একটি প্রতিপক্ষ তৈরি করতে চেয়েছে। তারা ভারতবিরোধী মনোভাব উস্কে দিয়েছে, ‘চিন কার্ড’ খেলেছে, এবং নেপালি জনগণের মধ্যে জনপ্রিয় জাতীয়তাবাদ (এবং তার সংকীর্ণতাবাদী প্রকাশ) জাগিয়ে তোলার চেষ্টা করেছে।

সমাধান খুঁজে পেতে অতীতের প্রচেষ্টা
ভারত ও নেপাল তাদের সীমান্ত বিরোধের একটি গ্রহণযোগ্য সমাধানের চেষ্টা করার জন্য গত বহু বছরে বেশ কয়েক দফা আলোচনা করেছে, কিন্তু তার অগ্রগতি ধীর এবং বিক্ষিপ্ত। ১৯৮১ সালে, দুই দেশ একটি যৌথ কারিগরি স্তরের সীমানা কমিটি গঠন করে[৪৭], যেটিকে জরিপ পরিচালনা করার এবং সীমান্তের অবস্থান স্পষ্ট করার জন্য সীমান্ত এলাকার মানচিত্র তৈরি করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল।[৪৮] বিদেশমন্ত্রীদের পর্যায়ে বহু দ্বিপাক্ষিক আলোচনা হয়েছে; উচ্চপর্যায়ের সফর হয়েছে যার আলোচ্য ছিল সীমান্ত বিরোধের কূটনৈতিক সমাধান নিয়ে আলোচনা এবং সীমান্তে পরিকাঠামো উন্নয়নের প্রচেষ্টা। তবে এসব উদ্যোগ সীমান্ত বিরোধ নিষ্পত্তিতে ব্যর্থ হয়েছে।

সীমানা কমিটির কাজটি ভারত ও নেপালের সীমান্ত সংক্রান্ত বিভিন্ন ব্যাখ্যার কারণে জটিল হয়েছে, এবং উভয় পক্ষই ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক ন্যায্যতা দাবি করেছে। কমিটির কাজে প্রশাসনিক বাধাও রয়েছে।[৪৯] ১৯৮১ থেকে ২০০৭ সালের মধ্যে সীমান্ত কমিটি মোট ১,২৩৩ কিমি স্থলসীমান্ত এবং ৬৪৭ কিমি নদীসীমানা চিহ্নিত করেছিল। এটি কালাপানি ও সুস্তা অঞ্চলে বিরোধ নিষ্পত্তি করতে পারেনি উভয় পক্ষের অমীমাংসিত দাবির কারণে।[৫০] তবে কমিটি ভারতের সার্ভেয়ার জেনারেল ও নেপালের জরিপ বিভাগের মহাপরিচালক দ্বারা যৌথভাবে স্বাক্ষরিত ১৮২টি স্ট্রিপ–ম্যাপ তৈরি করেছে, এবং ৮,৫৫৩টি সীমানা স্তম্ভকে চিত্রিত করেছে।[৫১]

১৯৮৭ সালে উভয় পক্ষ ভারত–নেপাল যৌথ কমিশন তৈরি করেছিল। এটি ছিল একটি উচ্চস্তরের দ্বিপাক্ষিক প্রক্রিয়া, যার দায়িত্ব ছিল সীমান্ত বিরোধের সমাধান সহ পারস্পরিক স্বার্থের বিভিন্ন সমস্যা মোকাবিলার পথ তৈরি করা।[৫২] যৌথ কমিশন সীমান্ত বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য একটি প্রক্রিয়া হিসাবে কাজ করার চেষ্টা করেছিল, এবং উভয় পক্ষকে পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও বোঝাপড়ার চেতনায় গঠনমূলক সংলাপ ও আলোচনার সুযোগ করে দিয়েছিল।[৫৩] কিছু বছর ধরে এটি অগ্রগতি পর্যালোচনা এবং বকেয়া বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা করার জন্য পর্যায়ক্রমে মিলিত হয়েছিল;। কিন্তু কমিশন খুব কম কিছুই অর্জন করতে পেরেছিল, এবং শেষ পর্যন্ত নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছিল। দুই দশক বিরতির পর ২০১৪ সালে একে পুনরুজ্জীবিত করা হয়, এবং ২০২০ সালের আগস্টে এর অষ্টম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে উভয় পক্ষ সীমান্ত বিরোধ–সহ বিভিন্ন বিষয় আলোচনা করেছিল।[৫৪]

১৯৯৬ সালে দুই দেশ মহাকালী চুক্তি স্বাক্ষর করে, যার লক্ষ্য ছিল মহাকালী নদীর জল বণ্টনের মীমাংসা করা।‌ সীমান্ত বিরোধ সমাধানের জন্য একটি বিধান (ধারা ৯) এতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল।[৫৫] চুক্তিটি জল সম্পদের জন্য একটি জয়েন্ট কমিটি (জেসিডবলিউআর) এবং একটি জয়েন্ট টেকনিক্যাল লেভেল বাউন্ডারি (জেটিএলবি) প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে কাজটি করার চেষ্টা করেছিল,[৫৬] কিন্তু তার কোনও দৃশ্যমান ফলাফল পাওয়া যায়নি।

এই কমিটি গঠনের পাশাপাশি দুই পক্ষই বেশ কয়েকটি উচ্চপর্যায়ের সফরের মাধ্যমে তাদের বিরোধ সমাধানের পথ প্রশস্ত করার চেষ্টা করেছে। এর মধ্যে ২০১৮ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেপাল সফর এবং ২০২০ সালে নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা ওলির ভারত সফরও আছে।[৫৭] জয়েন্ট টেকনিক্যাল লেভেল বাউন্ডারি কমিটির বৈঠক এবং দুই সরকারের বিদেশসচিব ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীদের মধ্যে বৈঠক–সহ দুই দেশের মধ্যে বিভিন্ন সময়ে আলোচনাও হয়েছে।[৫৮]

আর একটি উল্লেখযোগ্য পদ্ধতি হল বিশিষ্ট ব্যক্তিদের গোষ্ঠী (ইপিজি)। এটি ২০১৬ সালে দুই দেশের প্রতিষ্ঠিত একটি উচ্চস্তরের সংস্থা, যা বিশেষত ১৯৫০ সালের শান্তি ও বন্ধুত্ব চুক্তি এবং সীমান্ত বিরোধসহ বকেয়া সমস্যাগুলির বিষয়ে সুপারিশ করার জন্য তৈরি করা হয়েছিল।[৫৯] এই গোষ্ঠীতে প্রত্যেক পক্ষ থেকে চারজন বিশিষ্ট ব্যক্তিকে নেওয়া হয়েছিল। এর দায়িত্ব ছিল দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের সমস্ত দিক পরীক্ষা করা, এবং ভবিষ্যতের সম্ভাব্য পদক্ষেপের জন্য সুপারিশ করা।[৬০] এখন অকার্যকর এই ইপিজি জুলাই ২০১৮ সালে তার রিপোর্ট চূড়ান্ত করলেও এখনও দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীদের কাছে তার প্রতিবেদন জমা দেয়নি।[৬১]

যদিও রিপোর্টটি সীমান্ত বিরোধের অবিলম্বে সমাধানের দিকে চালিত করেছে বলে মনে হচ্ছে না, তবে এটি একটি উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ হতে পারে।[৬২] যাই হোক, ঘটনা হল ভারত বা নেপাল কেউই ইপিজি–র রিপোর্ট আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রহণ করেনি।[৬৩],[৬৪]

একইভাবে, বেশ কয়েকটি পরিকাঠামো প্রকল্প যৌথভাবে প্রস্তাব করা হয়েছে, যেমন কাঠমান্ডু–রক্সাউল রেলওয়ে, পঞ্চেশ্বর বহুমুখী প্রকল্প, এবং নতুন সীমান্ত চেক পোস্ট নির্মাণ, যা আরও ভাল সংযোগ তৈরি করে সীমান্ত বিরোধ সমাধানে সাহায্য করতে পারে। প্রকৃতপক্ষে, দুই দেশই সীমান্ত এলাকায় পরিকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য কাজ করছে। ২০১৮ সালে নেপাল ও ভারত একটি আন্তঃসীমান্ত পেট্রোলিয়াম পাইপলাইন উদ্বোধন করেছে, যা অর্থনৈতিক সহযোগিতা বাড়াবে এবং জ্বালানির জন্য তৃতীয় দেশের উপর নির্ভরতা হ্রাস করবে বলে আশা করা হচ্ছে।[৬৫] তবে বিভিন্ন অন্তরায় এই প্রকল্পগুলির বাস্তবায়নে বাধা সৃষ্টি করেছে, যার মধ্যে রয়েছে তহবিল সংক্রান্ত সমস্যা, আমলাতান্ত্রিক বাধা, এবং পরিবেশগত প্রভাবের বিষয়ে উদ্বেগ।[৬৬]

পূর্ববর্তী অনুচ্ছেদগুলিতে আলোচিত সমস্ত প্রচেষ্টা সত্ত্বেও উভয় দেশের জন্য আরও আশাবাদী ফলাফল অর্জন করা এখনও সম্ভব হয়নি, এবং এর কারণ অনেক।

প্রথমত, স্পষ্টভাবে সংজ্ঞায়িত সীমানার অভাব রয়েছে।[৬৭] উভয় দেশেরই সীমান্ত নিয়ে বিভিন্ন দাবি, পাল্টা দাবি এবং ব্যাখ্যা রয়েছে।[৬৮] অবৈধ পাচার বা অভিবাসনের মতো অবৈধ আন্তঃসীমান্ত কার্যকলাপ যা পরিস্থিতিকে আরও খারাপ করে, তা স্পষ্টভাবে সংজ্ঞায়িত সীমান্ত ছাড়া নিরীক্ষণ ও নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন।[৬৯] দ্বিতীয়ত, দুই দেশের নেতাদের গ্রহণযোগ্য ও স্থিতিশীল সমাধানের লক্ষ্যে কাজ করার জন্য যথেষ্ট রাজনৈতিক ইচ্ছা বা দায়বদ্ধতা আছে বলে মনে হয় না।[৭০] বেশ কয়েক দফা আলোচনা ও চুক্তি হওয়া সত্ত্বেও উভয় পক্ষের ক্রমাগত প্রচেষ্টা না–থাকার কারণে অগ্রগতি ধীর এবং অপ্রতুল হয়েছে।

আন্তঃসীমান্ত অপরাধ এবং বেআইনি কার্যকলাপের ব্যাপক ঘটনা সমস্যা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। ছিদ্রযুক্ত এবং দুর্বলভাবে নিয়ন্ত্রিত সীমান্ত সেই অপরাধীদের যাতায়াত সহজ করেছে যারা চোরাচালান এবং মানব ও মাদক পাচারের মতো কাজকর্মে জড়িত। এতে দুই দেশের মধ্যে আরও উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে, এবং উভয় পক্ষই একে অপরকে দোষারোপ করছে।[৭১]

সীমান্ত শাসনের জন্য আইনি কাঠামোর অভাবও বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।[৭২] আন্তঃসীমান্ত কার্যক্রমের জন্য সুস্পষ্ট নির্দেশিকা ও বিধিবিধান ছাড়া সীমান্তের ওপারে চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা এবং বিরোধের নিষ্পত্তি কঠিন হয়ে পড়েছে। একটি সঠিক আইনি কাঠামো সীমানা স্পষ্ট করতে, আন্তঃসীমান্ত কার্যকলাপ চিহ্নিত করতে, এবং বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য ব্যবস্থা তৈরি করতে সাহায্য করতে পারে। অধিকন্তু, আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক শক্তিসহ বহিরাগত কুশীলব এবং তাদের স্বার্থের সম্পৃক্ততা নেপাল–ভারত সীমান্ত বিরোধ সমাধানের প্রচেষ্টাকে জটিল করে তুলতে পারে।[৭৩] এই ধরনের কুশীলবদের নিজেদের অ্যাজেন্ডা ও স্বার্থ থাকতে পারে, যা আলোচনাকে প্রভাবিত করতে পারে এবং একটি পারস্পরিক লাভজনক চুক্তিতে পৌঁছনো আরও কঠিন করে তুলতে পারে। বাহ্যিক সম্পৃক্ততা উত্তেজনা বাড়াতে পারে, এবং সমাধান সহজতর করার পরিবর্তে পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলতে পারে।[৭৪] নেপালে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা এবং ক্ষমতার লড়াই উভয় দেশের জন্যই আরও অসুবিধা নিয়ে এসেছে।

সুপারিশ
ভারত ও নেপালের উচিত তাদের সীমান্ত বিরোধের একটি পারস্পরিক গ্রহণযোগ্য সমাধান খোঁজার জন্য একে অপরের সার্বভৌমত্ব ও ভূখণ্ডগত অখণ্ডতার প্রতি সম্মান  রেখে কাজ করা। মতভেদগুলির সমাধান করা শুধু নেপাল ও ভারতকে উপকৃত করবে না, বরং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ও সহযোগিতার ক্ষেত্রেও অবদান রাখবে। এই আলোচনা সফল করার জন্য ঐতিহাসিক প্রমাণ, মানচিত্র ও অন্যান্য প্রাসঙ্গিক নথির মাধ্যমে একে অপরকে অবহিত করা উচিত।

দীর্ঘমেয়াদে, ভারত ও নেপাল একটি ব্যাপক সীমান্ত ব্যবস্থাপনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে তাদের সীমান্ত বিরোধের সমাধান করতে পারে, যার মধ্যে রয়েছে যৌথ সীমানা জরিপ, সীমান্ত নির্ধারণ ও সীমান্ত নজরদারি। উপরন্তু, উভয় দেশ পারস্পরিক আস্থা ও বোঝাপড়া গড়ে তোলার জন্য জনগণের মধ্যে যোগাযোগ, সাংস্কৃতিক বিনিময় ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে কাজ করতে পারে, এবং সীমান্ত বিরোধ নিষ্পত্তিতে অবদান রাখতে পারে।

এই নিবন্ধে ভারত ও নেপালের সীমান্ত বিরোধ নিষ্পত্তির পথ খোঁজার নীতিগুলিকে পুনর্ব্যক্ত করা হল৷

১। সার্বভৌমত্ব, ভূখণ্ডগত অখণ্ডতা এবং স্বাধীনতার প্রতি শ্রদ্ধা
সার্বভৌমত্ব, ভূখণ্ডগত অখণ্ডতা ও স্বাধীনতার প্রতি শ্রদ্ধা হল অপরিহার্য উপাদান, এবং উভয় দেশকে অবশ্যই বিরোধপূর্ণ ভূখণ্ডের উপর একে অপরের বৈধ দাবি স্বীকার করতে হবে এবং একটি পারস্পরিক গ্রহণযোগ্য সমাধান খোঁজার লক্ষ্যে কাজ করতে হবে।[৭৫] বিরোধের যে কোনও সমাধানের ভিত্তি হওয়া উচিত ঐতিহাসিক প্রমাণের ন্যায্য ও সৎ মূল্যায়ন এবং আন্তর্জাতিক আইনের বিধান।[৭৬] পারস্পরিক বোঝাপড়া এবং একের অপরের সার্বভৌমত্ব ও ভূখণ্ডগত অখণ্ডতার প্রতি শ্রদ্ধা অবশ্যই দ্বন্দ্বের সম্ভাব্য বৃদ্ধি রোধ করতে পারে, যা এই অঞ্চলের স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তাকে প্রভাবিত করবে। পরিশেষে, ভারত ও নেপালের মধ্যে সীমান্ত বিরোধের একটি স্থায়ী সমাধান শুধুমাত্র পারস্পরিক শ্রদ্ধা, শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান ও সহযোগিতার নীতিগুলিকে সমুন্নত রাখার মাধ্যমেই অর্জন করা যেতে পারে।

২। আলোচনার মাধ্যমে সীমান্ত বিরোধের নিষ্পত্তি
আলাপ–আলোচনা ও কূটনৈতিক নিষ্পত্তি গুরুত্বপূর্ণ।[৭৭] কূটনীতিই উভয় দেশকে আলোচনার টেবিলে আসতে, একে অপরের উদ্বেগ ও স্বার্থ স্বীকার করতে, এবং  পারস্পরিকভাবে গ্রহণযোগ্য সমাধান খুঁজে পেতে বাধ্য করতে পারে। আলোচনার মাধ্যমে উভয় দেশই একটি সুস্পষ্ট সীমান্ত নির্ধারণ করতে পারে, বিতর্কিত এলাকায় সীমানা নির্ধারণ করতে পারে, এবং কার্যকর সীমান্ত ব্যবস্থাপনার জন্য একটি প্রক্রিয়া তৈরি করতে পারে।[৭৮]  সমঝোতাভিত্তিক মীমাংসা অন্য গুরুত্বপূর্ণ সমস্যাগুলিরও — যেমন আন্তঃসীমান্ত বাণিজ্য, পর্যটন, ও সাংস্কৃতিক বিনিময়, যা সবই পারস্পরিকভাবে লাভজনক হতে পারে — মোকাবিলা করতে পারে।

৩। সীমানা নির্ধারণ ও চিহ্নিতকরণের কাজ চালিয়ে যাওয়ার প্রতি দায়বদ্ধতা
সীমান্তে দুই দেশের সীমানা নির্ধারণ ও চিহ্নিতকরণের অর্থ হল দুই দেশের মধ্যে একটি দ্ব্যর্থহীন সীমান্ত প্রতিষ্ঠা করা।[৭৯] এই প্রক্রিয়ার সঙ্গেই যৌথভাবে সীমানা জরিপ করা হবে, মানচিত্র ও অন্যান্য প্রাসঙ্গিক নথি প্রস্তুত করা হবে, এবং সীমান্ত চিহ্নিতকারী মার্কার স্থাপন করা হবে।[৮০] সীমান্ত নির্ধারণ ও চিহ্নিতকরণের মাধ্যমে উভয় দেশ একে অপরের সার্বভৌমত্ব ও ভূখণ্ডগত অখণ্ডতার প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করতে পারে। এই প্রক্রিয়াটি বিতর্কিত এলাকার অবস্থান স্পষ্ট করতে সাহায্য করবে, এবং ভবিষ্যতে ভুল বোঝাবুঝি বা সীমান্তের ভুল ব্যাখ্যা প্রতিরোধ করবে।

অধিকন্তু, সীমান্ত নির্ধারণ ও চিহ্নিতকরণ কার্যকর সীমান্ত ব্যবস্থাপনার জন্য একটি প্রক্রিয়া তৈরি করতে পারে, এবং দুই দেশের মধ্যে শান্তিপূর্ণ ও স্থিতিশীল সম্পর্ককে উন্নত করতে পারে।[৮১] এটি আন্তঃসীমান্ত বাণিজ্য, পর্যটন ও সাংস্কৃতিক বিনিময়কে সহজতর করতে পারে, এবং উভয় দেশকে অর্থনৈতিক ও সামাজিকভাবে উপকৃত করবে।

৪। আন্তঃসীমান্ত অপরাধ সমাধানে সহযোগিতামূলক প্রচেষ্টা
আন্তঃসীমান্ত অপরাধ উভয়ের জন্যই একটি উল্লেখযোগ্য চ্যালেঞ্জ, যার মধ্যে রয়েছে মানব পাচার, মাদক চোরাচালান এবং আগ্নেয়াস্ত্র ও গোলাবারুদের অবৈধ চলাচল।[৮২] উপরন্তু, সীমান্তের ছিদ্রযুক্ত প্রকৃতি একে অবৈধ ক্রিয়াকলাপের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ করে তোলে, যেমন নিষিদ্ধ পণ্য ও গবাদি পশুর চোরাচালান, নকল মুদ্রা ও অর্থ পাচার।[৮৩] এই অপরাধে প্রায়ই সীমান্তের ওপারের সংগঠিত সিন্ডিকেট জড়িত থাকে, যার ফলে তাদের সনাক্তকরণ ও প্রতিরোধ কঠিন হয়ে পড়ে। সহযোগিতার মধ্যে যৌথ টহল, গোয়েন্দা তথ্য ভাগাভাগি এবং আন্তঃসীমান্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা স্থাপন অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে,[৮৪] এবং এগুলি বিশ্বাস গড়ে তুলতে ও সহযোগিতাকে উন্নীত করতে সাহায্য করতে পারে। আন্তঃসীমান্ত অপরাধ ও অন্যান্য চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে উভয় দেশ অর্থনৈতিক ও সামাজিকভাবে উপকৃত হতে পারে, যা এই অঞ্চলের সামগ্রিক স্থিতিশীলতা ও উন্নয়নে অবদান রাখতে পারে।

৫। বাস্তবসম্মত সীমান্ত ব্যবস্থাপনা
কার্যকরভাবে সীমান্ত পরিচালনার বাস্তব সমাধান সামগ্রিক বিরোধ সমাধানে সহায়তা করতে পারে। সম্ভাব্য ব্যবস্থার মধ্যে রয়েছে চেকপয়েন্ট স্থাপন, আধুনিক নজরদারি প্রযুক্তির ব্যবহার এবং সীমান্ত নিরাপত্তা বাহিনীর সক্ষমতা বৃদ্ধি করা।[৮৫] এর সঙ্গে সীমান্ত অঞ্চলে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের প্রসারও জড়িত, যেমন আন্তঃসীমান্ত বাণিজ্য, যা দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদার করতে পারে এবং উত্তেজনা কমাতে পারে।[৮৬] বাস্তবসম্মত সীমান্ত ব্যবস্থাপনার অর্থ হল উভয় দেশকে এমনভাবে সহযোগিতা ও প্রচেষ্টাকে সমন্বিত করতে হবে যাতে মসৃণ ও দক্ষ সীমান্ত ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা যায়। উভয়ই তাদের সীমান্ত নিরাপত্তা বাড়াতে পারে, আন্তঃসীমান্ত অপরাধ রোধ করতে পারে এবং বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ বাস্তবায়নের মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ সম্পর্ক উন্নীত করতে পারে। বাস্তবসম্মত সীমান্ত ব্যবস্থাপনা গঠনমূলক সংলাপ ও আলোচনার জন্য একটি অনুকূল পরিবেশ তৈরি করে সীমান্ত বিরোধের সমাধানকে সহজতর করতে পারে।

উপরন্তু, সীমান্ত পরিকাঠামো উন্নত করার জন্য রাস্তা ও সীমান্ত পোস্ট নির্মাণের মতো পরিকাঠামো প্রকল্পগুলির বাস্তবায়ন সীমান্ত ব্যবস্থাপনা উন্নত করতে পারে এবং অবৈধ আন্তঃসীমান্ত কার্যকলাপ হ্রাস করতে পারে।

৬। আন্তঃসীমান্ত পরিকাঠামোর উন্নয়ন
আন্তঃসীমান্ত পরিকাঠামো উন্নয়ন দুই দেশের মধ্যে আন্তঃসংযোগ ও আন্তঃনির্ভরশীলতা বৃদ্ধি করে সীমান্ত বিরোধ নিষ্পত্তিতে সাহায্য করতে পারে।[৮৭] রাস্তা, সেতু, রেলপথ ও অন্যান্য পরিবহণ সংযোগের মতো পরিকাঠামোর উন্নয়ন আন্তঃসীমান্ত বাণিজ্য এবং মানুষের সঙ্গে মানুষের আদান–প্রদান সহজতর করতে পারে।[৮৮] এটি অর্থনৈতিক সুযোগও বাড়াতে পারে, যা দারিদ্র্য কমাতে সাহায্য করে এবং সীমান্তবর্তী এলাকার মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নত করে। পরিকাঠামোগত উন্নয়নের ফলে বর্ধিত আন্তঃসংযোগ ও আন্তঃনির্ভরতা দুই পক্ষের মধ্যে আস্থা গড়ে তুলতে এবং সম্পর্ক জোরদার করতে সাহায্য করবে, এবং তার ফলে বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য একটি অনুকূল পরিবেশ তৈরি হবে।[৮৯] এটি সীমান্ত ব্যবস্থাপনা ও যৌথ পরিকাঠামো উন্নয়নের মতো ক্ষেত্রগুলিতে সহযোগিতা বৃদ্ধি করতে পারে, যা দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক ও সামাজিক সম্পর্ককে আরও গভীর করবে।

৭। সীমান্ত শাসনের জন্য আইনি কাঠামো
সীমান্ত শাসনের জন্য একটি সুনির্দিষ্ট আইনি কাঠামো ভারত ও নেপালের মধ্যে সীমান্ত বিরোধ সমাধানে অবদান রাখতে পারে।[৯০] এই ধরনের কাঠামো বাণিজ্য, অভিবাসন, ও যৌথ পরিকাঠামো প্রকল্পের, এবং সেইসঙ্গে বিরোধ নিষ্পত্তির প্রক্রিয়া সহ আন্তঃসীমান্ত কার্যক্রমের জন্য স্পষ্ট নির্দেশিকা প্রদান করতে পারে।[৯১] আইনি কাঠামো কার্যকর করা হলে তা আন্তঃসীমান্ত আইন প্রয়োগকারী ব্যবস্থা তৈরি করে আন্তঃসীমান্ত অপরাধ ও অবৈধ কার্যকলাপ কমাতে সাহায্য করবে।[৯২] উপরন্তু, এটি দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা ও সমন্বয় বাড়াবে, এবং এইভাবে আস্তে আস্তে আন্তঃসংযোগ ও আন্তঃনির্ভরতা বৃদ্ধি পাবে। এটি পারস্পরিক আস্থা ও বোঝাপড়া বাড়িয়ে তুলবে, এবং শেষ পর্যন্ত আরও কার্যকর সীমান্ত ব্যবস্থাপনা ও বিরোধ নিষ্পত্তির দিকে চালিত করবে। অধিকন্তু, একটি আইনি কাঠামো বিনিয়োগকারীদের ও বেসরকারি ক্ষেত্রগুলিকে আন্তঃসীমান্ত পরিকাঠামো প্রকল্পগুলিতে বিনিয়োগের জন্য আরও বেশি নিশ্চয়তা প্রদান করবে, যা সীমান্ত অঞ্চলে অর্থনৈতিক বৃদ্ধি ও উন্নয়নকে উৎসাহিত করবে।

উপসংহার
ভারত ও নেপালের মধ্যে সীমান্ত বিরোধ তাদের সীমানা নির্ধারণে অস্পষ্টতা–কেন্দ্রিক, বিশেষ করে কালাপানি–লিপুলেখ এলাকায়, এবং মাঝে মাঝে তা উত্তেজনা ও কূটনৈতিক চাপ তৈরি করে। এই সীমান্ত বিরোধগুলির কারণ খুঁজে পাওয়া যায়   ঔপনিবেশিক যুগ ও বিভিন্ন ঐতিহাসিক চুক্তিতে, যার ফলে উভয়ের মধ্যে সীমান্ত নির্ধারণে অস্পষ্টতা দেখা দেয়। বছরের পর বছর ধরে সীমান্ত বিরোধ সমাধানের প্রচেষ্টার মধ্যে কূটনৈতিক আলোচনা, উচ্চপর্যায়ের আলোচনা ও প্রযুক্তিগত কমিটি গঠন অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। কিন্তু অগ্রগতি হয়েছে অনিয়মিত, এবং সমস্যাগুলি অমীমাংসিতই থেকে গেছে, যা দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা ও মতবিরোধের দিকে চালিত করেছে।

সামগ্রিকভাবে, ভারত ও নেপালের মধ্যে সীমান্ত বিরোধ সমাধানে সার্বভৌমত্ব, ভূখণ্ডগত অখণ্ডতা ও স্বাধীনতার প্রতি সম্মান গুরুত্বপূর্ণ। উভয় দেশকেই তাদের জাতীয় স্বার্থ সমুন্নত রেখে একে অপরের ভূখণ্ডগত সার্বভৌমত্ব ও অখণ্ডতাকে স্বীকার ও সম্মান করতে হবে। আলোচনা ও দর–কষাকষির মাধ্যমে বিরোধের কূটনৈতিক নিষ্পত্তি প্রয়োজন, এবং তার জন্য উভয় দেশকে পারস্পরিকভাবে গ্রহণযোগ্য সমাধানের জন্য গঠনমূলক আলোচনায় জড়িত থাকতে হবে। সীমান্ত নির্ধারণ ও চিহ্নিতকরণের প্রতি দায়বদ্ধতা এবং আন্তঃসীমান্ত অপরাধ সমাধানে সহযোগিতা অবশ্যই ভবিষ্যৎ বিরোধের সম্ভাবনা প্রতিরোধ করা ও স্থিতিশীল শান্তির প্রসারের জন্য অপরিহার্য। বাস্তবসম্মত সীমান্ত ব্যবস্থাপনা ও ব্যবহারিক সমাধানের উপর গুরুত্ব আরোপ কার্যকর সীমান্ত ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে পারে, এবং উত্তেজনা বৃদ্ধিতে বাধা দিতে পারে।


সরোজ আরিয়াল পোল্যান্ডের ওয়ারশ ইউনিভার্সিটির ফ্যাকাল্টি অফ পলিটিক্যাল সায়েন্স অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজ–এর একজন পিএইচডি গবেষক।

মনীশ জং পুলামি ভারতের নয়াদিল্লিতে সাউথ এশিয়ান ইউনিভার্সিটির ইন্টারন্যাশনাল রিলেশনস বিভাগের একজন রিসার্চ স্কলার


এন্ডনোট
(‌হাইপারলিঙ্কের জন্য দেখুন:‌ https://www.orfonline.org/research/finding-an-end-to-border-disputes/)

[১] কনস্ট্যান্টিনো জেভিয়ার, “ভারত-নেপাল সীমান্ত বিরোধের ব্যাখ্যা,” ব্রুকিংস ইনস্টিটিউট, ১১ জুন, ২০২০।
[২] গৌরব ভট্টরাই, নেপাল বিটুইন চায়না অ্যান্ড ইন্ডিয়া: ডিফিকাল্টি অফ বিইং নিউট্রাল (নিউ ইয়র্ক: পলগ্রেভ ম্যাকমিলান, ২০২২), পৃ. ৪৯।
[৩] ভট্টরাই, নেপাল বিটুইন চায়না অ্যান্ড ইন্ডিয়া: ডিফিকাল্টি অফ বিইং নিউট্রাল
[৪] গৌরব ভট্টরাই, “নেপালের বৈদেশিক সম্পর্কের উপর লিপুলেখের চিন-ভারত সৌহার্দ্যের প্রভাব,” ইউনিটি জার্নাল ৪, নং ১ (২০২৩)।
[৫] ভট্টরাই, “নেপালের বৈদেশিক সম্পর্কের উপর লিপুলেখের চিন-ভারত সৌহার্দ্যের প্রভাব ,”
[৬] ভুবনেশ্বর পন্ত, “নেপালের উপর ভারতের অঘোষিত অবরোধের আর্থ-সামাজিক প্রভাব,” রিসার্চ নেপাল জার্নাল অফ ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ ১, নং ১ (২০১৮)।
[৭] পন্ত, “নেপালের উপর ভারতের অঘোষিত অবরোধের সামাজিক-অর্থনৈতিক প্রভাব”
[৮] জেভিয়ার, “ভারত-নেপাল সীমান্ত বিরোধের ব্যাখ্যা”
[৯] জেভিয়ার, “ভারত-নেপাল সীমান্ত বিরোধের ব্যাখ্যা”
[১০] ভারত খানাল, “উত্তর-পশ্চিম সীমান্তের ভূ-কৌশলগত প্রয়োজনীয়তা: ত্রিভুজাকার অঞ্চল কালাপানি – লিপুলেখ এবং নেপালের লিম্পিয়াধুরা,” ইউনিটি জার্নাল ২, নং ১ (২০২১)।
[১১] বুদ্ধি নারায়ণ শ্রেষ্ঠ, ইন্টারন্যাশনাল বাউন্ডারিজ অফ নেপাল (নয়াদিল্লি: নিরালা প্রকাশনা, ২০২২)।
[১২] শ্রেষ্ঠ, ইন্টারন্যাশনাল বাউন্ডারিজ অফ নেপাল
[১৩] শ্রেষ্ঠ, ইন্টারন্যাশনাল বাউন্ডারিজ অফ নেপাল
[১৪] বুদ্ধি নারায়ণ শ্রেষ্ঠ, নেপাল’‌স বর্ডার ম্যানেজমেন্ট (কাঠমান্ডু: ভূমিচিত্র কোং প্রাইভেট লিমিটেড, ২০০৩)।
[১৫] শ্রেষ্ঠ, নেপাল’‌স বর্ডার ম্যানেজমেন্ট
[১৬] দ্বারিকা ধুঙ্গেল ও অন্যরা, “নেপালের উত্তর-পশ্চিম সীমানা,” জার্নাল অফ ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স ৩, নং ১ (২০২০)।
[১৭] ধুঙ্গেল ও অন্যরা, “নেপালের উত্তর-পশ্চিম সীমানা”
[১৮] সন্দীপ কুমার মিশ্র, “দক্ষিণ এশিয়ায় ভূখণ্ডগত বিবাদের ঔপনিবেশিক উৎস,” দ্য জার্নাল অফ টেরিটোরিয়াল অ্যান্ড মেরিটাইম স্টাডিজ ৩, নং ১  (২০১৬)।
[১৯] মিশ্র, “দক্ষিণ এশিয়ায় ভূখণ্ডগত বিবাদের ঔপনিবেশিক উৎস,”
[২০] জাহির বাবর, দ্য সায়েন্স অফ এম্পায়ার: সায়েন্টিফিক নলেজ, সিভিলাইজেশন  অ্যান্ড কলোনিয়াল রুল ইন ইন্ডিয়া (নিউ ইয়র্ক: স্টেট ইউনিভার্সিটি অফ নিউ ইয়র্ক প্রেস, ১৯৯৬)।
[২১] মিশ্র, “দক্ষিণ এশিয়ায় ভূখন্ডগত বিবাদের ঔপনিবেশিক উৎস,”
[২২] জগৎ কে ভুসাল, “ভারত দ্বারা কার্টোগ্রাফিক আগ্রাসনের বিবর্তন: লিম্পিয়াধুরা থেকে লিপুলেকের একটি অধ্যয়ন,” দ্য জিওগ্রাফিক জার্নাল অফ নেপাল, ১৩, নং ১ (২০২০)।
[২৩] ভুসাল, “ভারত দ্বারা কার্টোগ্রাফিক আগ্রাসনের বিবর্তন: লিম্পিয়াধুরা থেকে লিপুলেকের একটি অধ্যয়ন”
[২৪] শ্রেষ্ঠ, নেপাল’‌স বর্ডার ম্যানেজমেন্ট
[২৫] শ্রেষ্ঠ, ইন্টারন্যাশনাল বাউন্ডারিজ অফ নেপাল
[২৬] সুমিত্রা কারকি, “আ ভিউ ফ্রম কাঠমান্ডু: ডেসিফারিং দ্য কালাপানি-লিপুলেখ কনানড্রাম,” অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশন (ওআরএফ)।
[২৭] ভুসাল, “ভারতের দ্বারা কার্টোগ্রাফিক আগ্রাসনের বিবর্তন: লিম্পিয়াধুরা থেকে লিপুলেকের একটি অধ্যয়ন”
[২৮] রাঘবেন্দ্র প্রতাপ সিং, “নেপালের ভূ-রাজনৈতিক অবস্থান এবং ভারতীয় নিরাপত্তার উপর তার প্রভাব,” দ্য ইন্ডিয়ান জার্নাল অফ পলিটিক্যাল সায়েন্স ৭, নং ১৪ (২০১০)।
[২৯] শ্রেষ্ঠ, ইন্টারন্যাশনাল বাউন্ডারিজ অফ নেপাল
[৩০] তোয়া নাথ বড়াল, “সীমান্ত বিরোধ এবং দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উপর তার প্রভাব: নেপাল-ভারত আন্তর্জাতিক সীমান্ত ব্যবস্থাপনার একটি নিদর্শন,” এপিএফ কমান্ড অ্যান্ড স্টাফ কলেজের জার্নাল ১, নং ১ (২০১৮)।
[৩১] বড়াল, “সীমান্ত বিরোধ এবং দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উপর তার প্রভাব: নেপাল-ভারত আন্তর্জাতিক সীমান্ত ব্যবস্থাপনার একটি নিদর্শন”
[৩২] ভুসাল, “ভারতের দ্বারা কার্টোগ্রাফিক আগ্রাসনের বিবর্তন: লিম্পিয়াধুরা থেকে লিপুলেকের একটি অধ্যয়ন”
[৩৩] অমিত রঞ্জন, “কনট্যুরস অফ ইন্ডিয়া – নেপাল রিলেশনশিপ অ্যান্ড ট্রান্স–বাউন্ডারি রিভার ওয়াটার ডিসপিউটস,” জার্নাল অফ ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স ১, নং ১ (২০১৬)।
[৩৪] রঞ্জন, “কনট্যুরস অফ ইন্ডিয়া – নেপাল রিলেশনশিপ অ্যান্ড ট্রান্স–বাউন্ডারি রিভার ওয়াটার ডিসপিউটস,”
[৩৫] ঈশিতা দত্ত, সমৃদ্ধি পাঠক ও সোনাল মিত্র, ইন্দো-নেপাল ওয়াটার শেয়ারিং অ্যান্ড ট্রেড লিংকেজ, নিউ দিল্লি, দ্য সেন্টার ফর সিকিউরিটি স্টাডিজ, জিন্দাল স্কুল অফ ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স, ২০২১।
[৩৬] জ্ঞানেন্দ্র পউড়িয়াল, “নেপাল ও ভারতের মধ্যে সীমান্ত বিরোধ,” রিসার্চার ১, নং ২ (২০১৩)।
[৩৭] পউড়িয়াল, “নেপাল ও ভারতের মধ্যে সীমান্ত বিরোধ”
[৩৮] রামস্বামী আর আইয়ার, “ফ্লাডস, হিমালয়ান রিভারস, নেপাল: সাম হেরেসিস,” ইকনমিক অ্যান্ড পলিটিক্যাল উইকলি ৪৩, নং ৪৬ (২০১৩)।
[৩৯] বুদ্ধি নারায়ণ শ্রেষ্ঠ, কেস স্টাডি : আন্তর্জাতিক সীমানা জরিপ এবং ভারতের সঙ্গে নেপালের দক্ষিণ-পূর্ব অংশের সীমানা নির্ধারণ, ইস্তাম্বুল, এফআইজি কংগ্রেস, ২০১৮।
[৪০] পাউড়িয়াল, “নেপাল ও ভারতের মধ্যে সীমান্ত বিরোধ”
[৪১] শ্রেষ্ঠ, নেপাল’‌স বর্ডার ম্যানেজমেন্ট
[৪২] পউড়িয়াল, “নেপাল ও ভারতের মধ্যে সীমান্ত বিরোধ”
[৪৩] পউড়িয়াল, “নেপাল ও ভারতের মধ্যে সীমান্ত বিরোধ”
[৪৪] পউড়িয়াল, “নেপাল ও ভারতের মধ্যে সীমান্ত বিরোধ”
[৪৫] শুভজিৎ রায়, “ভারত: সীমান্ত ইস্যুতে রাজনীতিকরণ এড়িয়ে চলুন; নেপাল দ্বিপাক্ষিক ব্যবস্থা চায়,” ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, ৩ এপ্রিল, ২০২২।
[৪৬] সরোজ কুমার আরিয়ান ও মনীশ জং পুলামি, “দ্য ট্রাজেক্টোরি বিটুইন টেরিটোরিয়াল ডিসপিউটস, ন্যাশনালিজম, অ্যান্ড জিওপলিটিক্স: আ কেস স্টাডি অফ দ্য কালাপানি বর্ডার ডিসপিউট বিটুইন ইন্ডিয়া অ্যান্ড নেপাল,” জিওপলিটিক্স (২০২৩)।
[৪৭] শ্রেষ্ঠ, নেপাল’‌স বর্ডার ম্যানেজমেন্ট
[৪৮] শ্রেষ্ঠ, নেপাল’‌স বর্ডার ম্যানেজমেন্ট
[৪৯] বিষ্ণু রাজ উপ্রেতি, “ভারত-নেপাল সীমান্ত বিরোধ সমাধানের উপায়,” মাইরিপাবলিকা, ২৯ মে, ২০২০।
[৫০] শ্রেষ্ঠ, ইন্টারন্যাশনাল বাউন্ডারিজ অফ নেপাল
[৫১] শ্রেষ্ঠ, ইন্টারন্যাশনাল বাউন্ডারিজ অফ নেপাল
[৫২] উপ্রেতি, “ভারত-নেপাল সীমান্ত বিরোধ সমাধানের উপায়”
[৫৩] কেশব গিরি, “ইন্ডো-নেপাল বর্ডার ডিসপিউটস অ্যান্ড মিথস অফ ইন্টারন্যাশনাল রিলেশানস,” অস্ট্রেলিয়ান আউটলুক, ৩ জুন, ২০২০।
[৫৪] উপ্রেতি, “ভারত-নেপাল সীমান্ত বিরোধ সমাধানের উপায়”
[৫৫] শ্রেষ্ঠ, নেপাল’‌স বর্ডার ম্যানেজমেন্ট
[৫৬] রঞ্জন, “কনট্যুরস অফ ইন্ডিয়া – নেপাল রিলেশনশিপ অ্যান্ড ট্রান্স–বাউন্ডারি রিভারস ওয়াটার ডিসপিউটস,”
[৫৭] মুলমি, “ভারত-নেপাল সীমান্ত বিরোধে এগিয়ে যাওয়ার উপায় কী?”
[৫৮] জেহরা, “ভারত ও নেপালের ধীরগতির সীমান্ত বিরোধ”
[৫৯] অনিল গিরি, “তিন বছর ধরে উপেক্ষিত ইপিজি রিপোর্ট তার প্রাসঙ্গিকতা হারাচ্ছে,” কাঠমান্ডু পোস্ট, ৫ আগস্ট, ২০২১।
[৬০] গিরি, “তিন বছর ধরে উপেক্ষিত ইপিজি রিপোর্ট তার প্রাসঙ্গিকতা হারাচ্ছে”
[৬১] গিরি, “তিন বছর ধরে উপেক্ষিত ইপিজি রিপোর্ট তার প্রাসঙ্গিকতা হারাচ্ছে”
[৬২] জেভিয়ার, “ভারত-নেপাল সীমান্ত বিরোধের ব্যাখ্যা”
[৬৩] গিরি, “তিন বছর ধরে উপেক্ষিত ইপিজি রিপোর্ট তার প্রাসঙ্গিকতা হারাচ্ছে”
[৬৪] জেভিয়ার, “ভারত-নেপাল সীমান্ত বিরোধের ব্যাখ্যা”
[৬৫] কৃষ্ণা প্রসাইন, “ঝাপায় দ্বিতীয় আন্তঃসীমান্ত পেট্রোলিয়াম পাইপলাইন প্রকল্প আরও এক ধাপ কাছে চলে এল,” কাঠমান্ডু পোস্ট, ৮ জানুয়ারি, ২০২১।
[৬৬] মুকেশ শ্রীবাস্তব ও রাজীব কুমার, “ভারত-নেপাল তাদের অংশীদারিতে জ্বালানি জোগাচ্ছে ১ম আন্তঃসীমান্ত তেল পাইপলাইন দিয়ে,” ডিপ্লোম্যাটিস্ট, ৩ জানুয়ারি, ২০২০।
[৬৭] শ্রেষ্ঠ, নেপাল’‌স বর্ডার ম্যানেজমেন্ট
[৬৮] শ্রেষ্ঠ, নেপাল’‌স বর্ডার ম্যানেজমেন্ট
[৬৯] মনীশ জং পুলামি, “ইনট্রোডিউসিং দ্য আইডিয়া অফ বর্ডার গভরন্যান্স ফর নেপাল-ইন্ডিয়া ওপন বর্ডার,” জার্নাল অফ পলিটিক্যাল সায়েন্স ২৫, নং ১ (২০২৩)।
[৭০] মোহক গম্ভীর, “ভারতের সঙ্গে সীমান্ত সমস্যা: নেপালের অভ্যন্তরীণ রাজনীতির  নতুন অনুঘটক,” সেন্টার ফর ল্যান্ড অ্যান্ড ওয়ারফেয়ার স্টাডিজ, ৩১ জানুয়ারি, ২০২২।
[৭১] পুলামি, “ইনট্রোডিউসিং দ্য আইডিয়া অফ বর্ডার গভরন্যান্স ফর নেপাল-ইন্ডিয়া ওপন বর্ডার”
[৭২] পুলামি, “ইনট্রোডিউসিং দ্য আইডিয়া অফ বর্ডার গভরন্যান্স ফর নেপাল-ইন্ডিয়া ওপন বর্ডার”
[৭৩] ভট্টরাই, “নেপালের বৈদেশিক সম্পর্কের উপর লিপুলেখের চিন-ভারত সৌহার্দ্যের প্রভাব ,”
[৭৪] ভট্টরাই, “নেপালের বৈদেশিক সম্পর্কের উপর লিপুলেখের চিন-ভারত সৌহার্দ্যের প্রভাব ,”
[৭৫] জেভিয়ার, “ভারত-নেপাল সীমান্ত বিরোধের ব্যাখ্যা”
[৭৮] মুলমি, “ভারত-নেপাল সীমান্ত বিরোধে এগিয়ে যাওয়ার উপায় কী?”
[৭৭] কল্লোল ভট্টাচার্য, “প্রধানমন্ত্রী দেউবা ভারত-নেপাল সীমান্ত বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য প্রক্রিয়া খুঁজছেন,” দ্য হিন্দু, ২ এপ্রিল, ২০২২।
চলা[৭৮] মুলমি, “ভারত-নেপাল সীমান্ত বিরোধে এগিয়ে যাওয়ার উপায় কী?”
[৭৯] শ্রেষ্ঠ, নেপালের বর্ডার ম্যানেজমেন্ট
[৮০] শ্রেষ্ঠ, নেপালের বর্ডার ম্যানেজমেন্ট
[৮১] হিন্দুস্তান টাইমস, “পুনঃসীমান্তকরণের পরে ভারত-নেপাল সীমান্তের দৈর্ঘ্য পরিবর্তিত হতে পারে: কর্মকর্তারা,” হিন্দুস্তান টাইমস, ডিসেম্বর ১২, ২০১৭।
[৮২] পুলামি, “ইনট্রোডিউসিং দ্য আইডিয়া অফ বর্ডার গভরন্যান্স ফর নেপাল-ইন্ডিয়া ওপন বর্ডার”
[৮৩] দীপেশ কুমার কে সি , “নেপালে আন্তঃসীমান্ত অপরাধ এবং এর নিরাপত্তাজনিত উদ্বেগ,” জার্নাল অফ এপিএফ কমান্ড অ্যান্ড স্টাফ কলেজ ২, নং ১ (২০১৮)।
[৮৪] পুলামি, “ইনট্রোডিউসিং দ্য আইডিয়া অফ বর্ডার গভরন্যান্স ফর নেপাল-ইন্ডিয়া ওপন বর্ডার”
[৮৫] পুষ্পিতা দাস, “ম্যানেজিং ইন্ডিয়া’‌জ ল্যান্ড বর্ডারস: লেসনস ফ্রম ইউএস এক্সপেরিয়েন্স,” স্ট্র্যাটেজিক অ্যানালিসিস ৩৬, নং ১ (২০১২)।
[৮৬] রাধিকা হালদার, “লকডাউনস অ্যান্ড ন্যাশনাল বর্ডারস: হাউ টু ম্যানেজ দ্য নেপাল–ইন্ডিয়া বর্ডার ক্রসিং ডিউরিং কোভিড–১৯,” লন্ডন স্কুল অফ ইকনমিকস, ১৯ মে, ২০২০।
[৮৭] প্রদ্যুম্ন বি রানা ও বিনোদ কর্মাচার্য, নেপালের জন্য একটি সংযোগ-চালিত উন্নয়ন কৌশল: একটি ভূমি-আবদ্ধ থেকে একটি ভূমি-সংযুক্ত রাষ্ট্র, এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্ক ইনস্টিটিউট, ২০১৪।
[৮৮] নেপালের জন্য একটি সংযোগ-চালিত উন্নয়ন কৌশল: একটি ভূমি-আবদ্ধ থেকে একটি ভূমি-সংযুক্ত রাষ্ট্র
[৮৯] রিয়া সিনহা ও কনস্ট্যান্টিনো জেভিয়ার, “ভারত-নেপাল সীমান্ত জুড়ে পরিকাঠামো: একটি ফোটো-প্রবন্ধ,” সেন্টার ফর সোশ্যাল অ্যান্ড ইকনমিক প্রোগ্রেস, জানুয়ারি ১৯, ২০২১।
[৯০] পুলামি, “ইনট্রোডিউসিং দ্য আইডিয়া অফ বর্ডার গভরন্যান্স ফর নেপাল-ইন্ডিয়া ওপন বর্ডার”
[৯১] হরি বংশ ঝা, “রিওপনিং নেপাল–ইন্ডিয়া বর্ডার,” অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশন (ওআরএফ), নভেম্বর ২, ২০২১।
[৯২] ঝা, “নেপাল-ভারত সীমান্ত পুনরায় খোলা”

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.