এই নিবন্ধটি ইন্টারন্যাশনাল উইমেন’স ডে সিরিজের অংশ।
গণতন্ত্রের প্রাথমিক কাজ হল জনগণের ক্ষমতায়ন। সমাজের সকল অংশকে, বিশেষ করে প্রান্তিক গোষ্ঠীর ক্ষমতায়নের প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে, একটি রাজনৈতিক ব্যবস্থা হিসাবে গণতন্ত্র বাধ্যতামূলকভাবে প্রতিনিধিত্বের দাবিগুলি তুলে ধরে। গণতন্ত্রের প্রাথমিক কর্তব্য এখনো সাধারণ মানুষকে তাঁদের পছন্দের রাজনৈতিক প্রতিনিধি নির্বাচন করার জন্য ক্ষমতা প্রদান করা, যাঁরা তাঁদের পক্ষে ভোটারদের শাসন এবং উন্নয়নমূলক আকাঙ্ক্ষা পূরণ করবেন। নারীরা আন্তর্জাতিক জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেকের প্রতিনিধিত্ব করেন এবং তা সত্ত্বেও গভীর ভাবে প্রোথিত পিতৃতান্ত্রিক রীতিনীতি, সামাজিক কুসংস্কার ও কাঠামোগত প্রতিবন্ধকতার কারণে নারীরা বিভিন্ন দেশে চিরাচরিত ভাবে প্রান্তিকই রয়ে গিয়েছেন। এ ভাবে, বিশ্বব্যাপী গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক ব্যবস্থার সূচনা ও সমন্বিতকরণের মাধ্যমে গণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠানগুলি দ্বারা সমতাবাদী দৃষ্টিভঙ্গি নারীর সামাজিক-রাজনৈতিক উন্নতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে।
প্রতিনিধিত্বের দাবিগুলিকে সামনে তুলে আনা
আইনের প্রশাসনের উপর ভিত্তি করে গণতন্ত্রের রাজনৈতিক কাঠামো সকলকে সমান রাজনৈতিক সুযোগ প্রদান করে। এটি নারী-সহ সমাজের সকল অংশকে নির্বাচক হিসেবে নির্বাচনে ভোট দিয়ে এবং রাজনৈতিক প্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার মাধ্যমে তাঁদের রাজনৈতিক সংস্থা গড়ে তুলতে সক্ষম করে। যেহেতু নির্বাচনী রাজনীতি নারীর বহুমাত্রিক ক্ষমতায়নের অন্যতম প্রধান উপায়, তাই ভোটার, প্রতিনিধি ও নেতা হিসেবে নারীর সংযুক্তি বেসরকারি ও সরকারি উভয় ক্ষেত্রেই নারীদের কাঠামোগত প্রান্তিকতা ও অবহেলা প্রশমনের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। গণতন্ত্রের প্রতিনিধিত্বের মৌলিক কাজ তিনটি উপায়ে নারীর ক্ষমতায়নের জন্য সহায়ক হয়েছে।
যেহেতু নির্বাচনী রাজনীতি নারীর বহুমাত্রিক ক্ষমতায়নের অন্যতম প্রধান উপায়, তাই ভোটার, প্রতিনিধি ও নেতা হিসেবে নারীর সংযুক্তি বেসরকারি ও সরকারি উভয় ক্ষেত্রেই নারীদের কাঠামোগত প্রান্তিকতা ও অবহেলা প্রশমনের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
প্রথমত, প্রতীকী প্রতিনিধিত্বের পরিপ্রেক্ষিতে, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার সাহায্যে আইনসভা বা সরকারে রাজনৈতিক ক্ষমতার উচ্চ পদে নারীদের প্রবেশ ও নিয়োগ রাজনীতিতে পুরুষতান্ত্রিক আলোচনাকে চ্যালেঞ্জ করার ক্ষেত্রে ব্যাপক ভাবে সাহায্য করেছে। ক্ষমতার উচ্চ পদে নারীর সংখ্যা ন্যূনতম হলেও রাজনীতির পুরুষশাসিত জগতের দৃশ্যমান বলয় ভেঙে রাজনীতিতে তাঁদের উপস্থিতি নারীদের জনজীবনে অংশগ্রহণে অনুপ্রাণিত করে। দ্বিতীয়ত, গণতন্ত্র নারীদের বর্ণনামূলক প্রতিনিধিত্বও প্রদান করে, যখন তাঁরা নারী বিধায়ক এবং রাজনৈতিক দল, সংসদ, মন্ত্রিসভা বা অন্যান্য সরকারি সংস্থায় প্রতিনিধিত্ব করেন। নারীরা রাজনীতি ও প্রশাসনের কাঠামো এবং প্রতিষ্ঠানে প্রবেশ করার সঙ্গে সঙ্গে সরকারি ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রে তাঁদের উপস্থিতি বিষয়টিকে আরও লিঙ্গ-অন্তর্ভুক্ত করে তোলে। কারণ নারীরা নীতি পছন্দ ও সিদ্ধান্তগুলি গঠন করতে সক্ষম হন, যা জাতি গঠনের প্রক্রিয়াগুলিতে মৌলিক ভাবে অবদান রাখে। তৃতীয়ত, প্রতীকী ও বর্ণনামূলক উপস্থাপনা ছাড়াও গণতন্ত্রের প্রতিনিধিত্বমূলক দাবির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক হল এর সারগর্ভ প্রভাব। রাজনীতিতে নারীর প্রতিনিধিত্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপগুলির মধ্যে অন্যতম হল রাজনীতিতে নারীর উপস্থিতি নারী সম্প্রদায়ের কল্যাণের উপর সুনির্দিষ্ট ভাবে মনোযোগ প্রদান করার পাশাপাশি যথেষ্ট ও সুনির্দিষ্ট নীতি উদ্ভাবন এবং হস্তক্ষেপের দিকে চালিত করে। যেহেতু এই সংক্রান্ত বোঝাপড়া রয়েই গিয়েছে এবং যেহেতু নারী প্রতিনিধিরা নারীর চাহিদা, আকাঙ্ক্ষা ও চ্যালেঞ্জগুলি বোঝার জন্য আরও সক্ষম, তাই তাঁরা নারীর সমস্যাগুলিকে নিজেদের নীতিগত অগ্রাধিকার হিসাবে গ্রহণ করবেন, যা নারীর মুক্তিতে দীর্ঘমেয়াদি ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। সুতরাং, গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক ব্যবস্থা দ্বারা প্রতিষ্ঠিত এই ধরনের প্রতিনিধিত্বের সুযোগ নারীর সামগ্রিক ক্ষমতায়নের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ অনুঘটক হিসেবে কাজ করে।
রাজনীতিতে নারী: আরও এক বার প্রচেষ্টার সময়?
নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নকে তিনটি বিস্তৃত পরিকাঠামোয় মূল্যায়ন করা যেতে পারে। প্রথমত, ভোটার হিসেবে নারীর ভূমিকা নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতা পরিমাপের সবচেয়ে মৌলিক অথচ সাধারণ পরামিতি। দ্বিতীয়ত, জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধি হিসেবে সরকারের আইনসভা ও নির্বাহী ক্ষেত্রে নারী প্রতিনিধিদের উপস্থিতি জরুরি। তৃতীয়ত, গণতন্ত্রে শাসনের গুরুত্বপূর্ণ স্থানীয় কাঠামোয় নারীর উপস্থিতি দরকার, যেখানে মৌলিক কল্যাণ সরবরাহের বিকেন্দ্রীভূত মডেল সুনিশ্চিত করা হয়। সাম্প্রতিক দশকে বেশ কয়েকটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ‘ভোটারের ভোটে সুপরিচিত (লিঙ্গ) সমতা’ সারা বিশ্বের অনেক বিশিষ্ট গণতন্ত্রে, বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ভারতের মতো গণতন্ত্রে অর্জিত হয়েছে। বৃহত্তর রাজনৈতিক সচেতনতা ও অনুকূল সামাজিক-রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে নারী ভোটাররা ক্রমবর্ধমান ভাবে নির্বাচনে নিজেদের ভোট প্রদান করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। যাই হোক, গবেষণায় আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে জাতীয় নির্বাচনে নারীদের ভোটদান বৃদ্ধি পেলেও অনেক অঞ্চলে প্রাদেশিক বা স্থানীয় পর্যায়ের নির্বাচনে তাঁদের অংশগ্রহণ সীমিতই থেকে গিয়েছে। গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক ব্যবস্থার মধ্যে রাজনৈতিক কাঠামোর সহায়ক স্তরের গুরুত্ব থাকা সত্ত্বেও এমনটা ঘটে থাকে।
বৃহত্তর রাজনৈতিক সচেতনতা ও অনুকূল সামাজিক-রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে নারী ভোটাররা ক্রমবর্ধমান ভাবে নির্বাচনে নিজেদের ভোট প্রদান করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন।
২০২৪ সালের প্রথম দিক পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, এমন ২৬টি দেশ রয়েছে, যেখানে ২৮ জন নারী রাষ্ট্র ও/অথবা সরকার প্রধান হিসেবে কাজ করছেন। উল্লেখ্য যে, ১৫টি দেশে একজন নারী রাষ্ট্রপ্রধান এবং ১৬টি দেশে একজন নারী সরকার প্রধান রয়েছেন। ইউএন উইমেন দ্বারা সঙ্কলিত তথ্যে দেখানো হয়েছে যে, বিশ্বের নির্বাচিত সরকার জুড়ে সরকারের নির্বাহী শাখার মন্ত্রিসভায় ২২.৮ শতাংশ মন্ত্রী পদে নারীরা প্রতিনিধিত্ব করেন। দেশ জুড়ে জাতীয় সংসদের একক বা নিম্নকক্ষে সাংসদদের ২৬.৫ শতাংশ (গড়) নারী রয়েছেন, যা ১৯৯৫ সালের ১১ শতাংশের তুলনায় যথেষ্ট বৃদ্ধিকেই দর্শায়। বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে আইনসভায় নারী প্রতিনিধিত্বের অবস্থা ব্যাপক ভাবে পরিবর্তিত হয়। লাতিন আমেরিকা এবং ক্যারিবীয় অঞ্চলের সংসদীয় আসনের ৩৬ শতাংশ নারী এবং ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকার সাংসদদের ৩২ শতাংশ আসনে রয়েছেন নারী। সাব-সাহারান আফ্রিকায় ২৬ শতাংশ বিধায়ক নারী রয়েছেন। এই শতাংশের হারে পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ২২ শতাংশ, ওশিয়ানিয়ায় ২০ শতাংশ, মধ্য ও দক্ষিণ এশিয়ায় ১৯ শতাংশ এবং উত্তর আফ্রিকা ও পশ্চিম এশিয়ায় ১৮ শতাংশ।
১৪১টি দেশ থেকে প্রাপ্ত ২০২৩ সালের তথ্য অনুসারে, স্থানীয় পরামর্শদাতা সংস্থাগুলিতে ৩ মিলিয়নেরও বেশি (৩৫.৫ শতাংশ) নির্বাচিত নারী সদস্য রয়েছেন, যা অবশ্যই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান এবং যাঁরা বিকেন্দ্রীভূত প্রশাসনের মূল সুর বজায় রেখে মৌলিক উন্নয়নমূলক পরিষেবা প্রদান করেন। স্থানীয় পর্যায়েও আঞ্চলিক বৈচিত্রগুলি স্পষ্টতই অব্যাহত রয়েছে। ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাস পর্যন্ত মধ্য ও দক্ষিণ এশিয়ার স্থানীয় সংস্থাগুলিতে নারীদের প্রতিনিধিত্বের হার ৪১ শতাংশ; ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকায় ৩৭ শতাংশ; ওশিয়ানিয়া অঞ্চলে ৩২ শতাংশ; পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ৩১ শতাংশ; লাতিন আমেরিকা এবং ক্যারিবীয় অঞ্চলে ২৭ শতাংশ; সাব-সাহারান আফ্রিকায় ২৫ শতাংশ; এবং পশ্চিম এশিয়া ও উত্তর আফ্রিকায় ২০ শতাংশ। তাই, গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার তৃণমূল স্তরে নারীর অংশগ্রহণ সারা বিশ্বের দেশগুলিতে বৃদ্ধি পেলেও তা আরও জোরদার করা দরকার।
চ্যুতিরেখার চিহ্নিতকরণ
উপরোল্লিখিত তথ্যগুলি দর্শায় যে, বিশ্বের সমস্ত দেশে সব স্তরে নারীর রাজনৈতিক প্রতিনিধিত্ব বৃদ্ধি পেলেও নারীরা উল্লেখযোগ্য ভাবে পুরুষদের পিছনেই রয়ে গিয়েছেন এবং পুরুষরা এখনও ক্ষমতার রাজনীতির কাঠামোয় আধিপত্য বিস্তার করেন। নারীদের রাজনৈতিক ক্ষমতা সংক্রান্ত বিদ্যমান গবেষণাগুলি চারটি প্রধান প্রতিবন্ধকতাকেই দর্শায়, যা নারীদের রাজনীতিতে অংশগ্রহণ থেকে বিরত রাখে এবং তাঁদের রাজনৈতিক ক্ষমতাকে খর্ব করে। প্রথমত, অনমনীয় পিতৃতান্ত্রিক নিয়মের অধীনে অসামঞ্জস্যপূর্ণ পরিস্থিতি নারীদের সামাজিকীকরণ ও দক্ষতা বিকাশের পথকে অস্পষ্ট করে দেয় এবং রাজনীতিতে সফল পেশা গড়ার লক্ষ্যে দক্ষতা অর্জনে নারীদের সম্ভাবনা হ্রাস করে। সুযোগের অভাব এবং গভীর ভাবে প্রোথিত সামাজিক কুসংস্কার দর্শায় যে, নারীরা জনসাধারণের দায়িত্ব পালনে সক্ষম নন। এবং এই ভাবনা নারীদের এ হেন এক স্ব-ভাবমূর্তি তৈরির দিকেই চালিত করে যে, তাঁরা রাজনীতির মতো একটি প্রতিবন্ধকতামূলক কাজের জন্য অযোগ্য এবং নারীরা নিজেদের ‘চিরাচরিত’ ভূমিকা পালনের জন্যই যথাযোগ্য। রাজনৈতিক দলগুলির মতো রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলিতেও পুরুষদের আধিপত্য দেখা যায়, যাঁরা তাঁদের নিজ নিজ রাজনৈতিক পেশায় উন্নতিকে সুনিশ্চিত করার জন্য নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার প্রয়োজনে নারী নেত্রীদের প্রবেশাধিকার দিতে অনিচ্ছুক। দ্বিতীয়ত, সামাজিক পিতৃতান্ত্রিক কুসংস্কারে আবদ্ধ ভোটাররা নারীদের রাজনীতিতে অংশগ্রহণের সম্ভাবনাকে ঘৃণা ও সংশয়ের চোখে দেখেন। নানাবিধ গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, ভুল ধারণা এবং লিঙ্গ পক্ষপাত - যা নারীদের রাজনৈতিক জীবন ও প্রশাসনিক ঝামেলা ও অশান্তি সহ্য করতে অক্ষম বলে মনে করে - প্রায়শই ভোটারদের প্রতিনিধি হিসাবে নারী নেতাদের বেছে নেওয়া থেকে বিরত রাখে।
সুযোগের অভাব এবং গভীর ভাবে প্রোথিত সামাজিক কুসংস্কার দর্শায় যে, নারীরা জনসাধারণের দায়িত্ব পালনে সক্ষম নন। এবং এই ভাবনা নারীদের এ হেন এক স্ব-ভাবমূর্তি তৈরির দিকেই চালিত করে যে, তাঁরা রাজনীতির মতো একটি প্রতিবন্ধকতামূলক কাজের জন্য অযোগ্য এবং নারীরা নিজেদের ‘চিরাচরিত’ ভূমিকা পালনের জন্যই যথাযোগ্য।
এ ছাড়াও, পরিবার পরিচালনা ও সন্তান লালন-পালনের ক্ষেত্রে নারীদের চিরাচরিত ভূমিকা রাজনীতির প্রতি পূর্ণ-সময়ের প্রতিশ্রুতি প্রদান থেকে তাঁদের বিচ্যুত করবে… এমন আশঙ্কা ভোটারদের অনেকের মানসিকতায় জায়গা করে নিয়েছে এবং নারী ও পুরুষ উভয়ই এ হেন মনোভাব পোষণ করে থাকেন। তৃতীয়ত, রাজনীতিতে নারীদের যে বৈষয়িক উদ্বেগ ও চরমপন্থাগুলির সম্মুখীন হতে হয়, তা নারী নেত্রীদের জন্য একটি কঠিন চ্যালেঞ্জ হিসেবেই রয়ে গিয়েছে। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা ক্রমবর্ধমান ভাবে একটি অত্যন্ত ব্যয়বহুল প্রচেষ্টা হয়ে উঠেছে, যার জন্য কার্যকর নির্বাচনী প্রচার চালাতে বিপুল ব্যয়ের প্রয়োজন। চিরাচরিত ভাবে পুরুষদের তুলনায় আর্থিক ভাবে বেশি নির্ভরশীল নারীরা প্রায়শই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করাকে আর্থিক ভাবে অসম্ভব বলে মনে করেন। চতুর্থত, সাধারণ ভাবে জনজীবনে এবং বিশেষ করে রাজনীতিতে, সারা বিশ্বের নারীরা মারাত্মক কটূক্তি, শারীরিক হেনস্থার পাশাপাশি মৌখিক আক্রমণ এবং কঠোর/অপ্রীতিকর মন্তব্যের সম্মুখীন হন, যা প্রায়শই রাজনীতিতে নারীদের অংশগ্রহণকে রোধ করতে ও নারীদের সুনাম কালিমালিপ্ত করতে ব্যবহৃত হয়।
সারগর্ভ প্রতিনিধিত্বের দিকে
বলাই বাহুল্য, সাম্প্রতিক দশকগুলিতে বিশ্বব্যাপী প্রাণবন্ত নির্বাচনী গণতন্ত্রের সমন্বিতকরণের মাধ্যমে রাজনীতিতে নারীর অংশগ্রহণ ও প্রতিনিধিত্ব যথেষ্ট পরিমাণে অনুপ্রেরণা পেয়েছে। এ ছাড়াও, গবেষণার একটি উদীয়মান সংস্থা রাজনীতিতে নারীরা যে প্রধান ভূমিকা পালন করেন তা প্রকাশ করেছে, যা প্রশাসন ও জনকল্যাণের পরামিতিগুলিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে এবং নীতিনির্ধারণের ক্ষেত্রে নারীকেন্দ্রিক বিষয়গুলির প্রতি আরও জোরালো মনোযোগ দেয়। যাই হোক, বিশ্বব্যাপী গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে নারীদের আরও প্রভাবশালী প্রতিনিধিত্ব সুনিশ্চিত করার জন্য প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার এবং সামাজিক পরিবর্তনের মাধ্যমে স্থায়ী কাঠামোগত বাধাগুলি দূর করার জন্য আরও স্থিতিশীল প্রচেষ্টার প্রয়োজন।
অম্বর কুমার ঘোষ অবজার্ভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের অ্যাসোসিয়েট ফেলো।
The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.