-
CENTRES
Progammes & Centres
Location
বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিবর্তন এবং মায়ানমারের অস্থিতিশীলতার কারণে মৌলিক সংযোগ প্রকল্পগুলি স্থবির হয়ে পড়ায় ভারতের নেবারহুড ফার্স্ট এবং অ্যাক্ট ইস্ট নীতিগুলি বাধার সম্মুখীন হচ্ছে।
গত দশকে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল দেশটির বৈদেশিক নীতির আকাঙ্ক্ষার অগ্রভাগে উঠে এসেছে। আটটি রাজ্য [১] ও পাঁচটি প্রতিবেশী দেশের সীমান্তবর্তী [২] উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ভূ-কৌশলগত অবস্থানের সম্ভাবনা বাস্তবায়িত হয়েছে দেশের প্রতিবেশী প্রথম (নেবারহুড ফার্স্ট) নীতির উপর পুনরায় গুরুত্ব আরোপ এবং ২০১৪ সালে পূর্ব দিকে কাজ কর (অ্যাক্ট ইস্ট) নীতি চালু করার মাধ্যমে, যার লক্ষ্য ছিল পূর্বাঞ্চলের প্রতিবেশীদের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক জোরদার করা। এই অঞ্চলটি ভারতের বাকি অংশ এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মধ্যে একটি স্থলসেতু, বাংলাদেশের জন্য পশ্চাদভূমি, এবং নেপাল ও ভুটানের বঙ্গোপসাগরে প্রবেশের জন্য একটি ট্রানজিট অঞ্চল।
উত্তর-পূর্ব, বাংলাদেশ ও মায়ানমারে অস্থিরতা ফিরে আসার ফলে বেশ কয়েকটি দ্বিপাক্ষিক সংযোগ প্রকল্প স্থগিত হয়ে গিয়েছে।
অনেক বছর রাজনৈতিক অস্থিরতা ও জাতিগত হিংস্রতায় জর্জরিত এই অঞ্চল কৌশলগত স্পটলাইটের বাইরে ছিল। তবে, গত কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন বিদ্রোহী গোষ্ঠী ও ভারত সরকারের মধ্যে স্বাক্ষরিত শান্তিচুক্তি স্থিতিশীলতা নিয়ে এসেছে, যা উন্নয়নমূলক উদ্যোগের মাধ্যমে এই অঞ্চলের ভূ-রাজনৈতিক সম্ভাবনাকে কাজে লাগানো সম্ভব করেছে। এগুলির বেশিরভাগই অবশ্য যোগাযোগ পরিকাঠামো নির্মাণের জন্য নিবেদিত, কারণ কার্যকর নেটওয়ার্কগুলি উন্নত পরিবহণের ভিত্তি তৈরি করে এবং সেগুলি বাণিজ্য ও জ্বালানির মতো দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার অন্য ক্ষেত্রগুলির উন্নয়নের জন্য মৌলিকভাবে প্রয়োজনীয়। দুর্ভাগ্যবশত, উত্তর-পূর্ব, বাংলাদেশ ও মায়ানমারে অস্থিরতা ফিরে আসার ফলে বেশ কয়েকটি দ্বিপাক্ষিক সংযোগ প্রকল্প স্থগিত হয়ে গিয়েছে। এই অস্থির পরিবেশে, এই উদ্যোগগুলির কার্যকারিতা পুনর্বিবেচনা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
ভারত-বাংলাদেশ সংযোগের চ্যালেঞ্জ
বাংলাদেশ ভারতের চারটি উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যের সীমান্তবর্তী, [৩] যা স্থলবেষ্টিত অঞ্চলটিকে ভারতের বাকি অংশের সঙ্গে আরও ভাল স্থল-যোগাযোগ ও উন্নত বৈদেশিক বাণিজ্যের সুযোগ প্রদান করে। ভারত সরকার ও বাংলাদেশের আওয়ামি লিগ প্রশাসনের মধ্যে গত ১৫ বছরের অংশীদারিত্বে একাধিক সংযোগ প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়, যা প্রায়শই দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে ‘স্বর্ণ অধ্যায়’ হিসাবে পরিচিত। ভারত বাংলাদেশের শীর্ষ উন্নয়ন অংশীদার হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে, এবং উন্নয়ন পোর্টফোলিও হল ৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। তবে, ২০২৪ সালের আগস্টে বাংলাদেশে শাসনব্যবস্থার পরিবর্তন, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারতে বিমানযাত্রা, এবং প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রতিষ্ঠা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে নাটকীয় পরিবর্তন এনেছে। ভারতবিরোধী বক্তব্য ও হাসিনার প্রত্যর্পণ নিয়ে দ্বিধার কারণে উত্তেজনা বৃদ্ধি পেয়েছে এবং পারস্পরিক সম্পর্ক যথেষ্ট চাপের মধ্যে আছে, আর সংযোগ প্রকল্পগুলি নিয়ে অচলাবস্থা দেখা দিয়েছে।
২০২৪ সালের আগস্টে বাংলাদেশে শাসনব্যবস্থার পরিবর্তন, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারতে বিমানযাত্রা, এবং প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রতিষ্ঠা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে নাটকীয় পরিবর্তন এনেছে।
প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে সামুদ্রিক যোগাযোগ করে দেওয়ার জন্য বাংলাদেশের চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দরের ব্যবহার বৃদ্ধির সুযোগ দিয়েছিলেন। সেই অনুযায়ী ভারত ২০২৪ সালের জুন মাসে মোংলা বন্দরে একটি টার্মিনাল পরিচালনার অধিকার পায়। খুলনা-মোংলা বন্দর রেল সংযোগ নির্মাণেও ভারত অর্থায়ন করে, যা বন্দরটিকে খুলনার রেল নেটওয়ার্কের সঙ্গে সংযুক্ত করেছে। এই প্রকল্পের লক্ষ্য পশ্চিমবঙ্গ ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের মধ্যে লজিস্টিক বাধা ও পণ্য পরিবহণ খরচ কমানো। তবে, এই রুটে পরিষেবা এখনও শুরু হয়নি। ভারতের সহায়তায় নির্মিত বাংলাদেশের আশুগঞ্জ অভ্যন্তরীণ কন্টেনার বন্দরের কাজও স্থগিত করা হয়েছে। এর কাজ শেষ হলে সম্প্রতি উদ্বোধন হওয়া আখাউড়া-আগরতলা রেল সংযোগের সুবিধা হত, যার ফলে ত্রিপুরার সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য বৃদ্ধি পেত।
শাসনব্যবস্থা পরিবর্তনের পর থেকে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও বাংলাদেশের মধ্যে বাণিজ্য হ্রাস পেয়েছে বলে জানা গিয়েছে। সীমান্ত বন্ধ হয়ে যাওয়া, শুল্ক ছাড়পত্রের সমস্যা, এবং বর্ধিত নিরাপত্তা নজরদারি দুই দেশের মধ্যে পণ্যের সুষ্ঠু প্রবাহকে বাধাগ্রস্ত করছে। ২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে অক্টোবরের মধ্যে বাংলাদেশে ভারতের রপ্তানি ১৩.৩ শতাংশ কমেছে, আমদানি ২.৩ শতাংশ কমেছে। নির্মাণের শীর্ষ মরসুমে কলকাতা বন্দরের মাধ্যমে ভারত-বাংলাদেশ প্রোটোকল রুট দিয়ে ফ্লাই অ্যাশ রপ্তানিও ১৫-২৫ শতাংশ কমেছে। ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের এক সময় অতিব্যস্ত বেনাপোল-পেট্রাপোল স্থলবন্দরগুলি, যেখান দিয়ে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের প্রায় ৩০ শতাংশ আসা-যাওয়া করত, সেখানে এখন উল্লেখযোগ্যভাবে কম যানবাহন চলাচল করছে। এই হ্রাসপ্রাপ্ত কর্মকাণ্ড সীমান্ত-নির্ভর জীবিকাকে মারাত্মকভাবে প্রভাবিত করেছে। ২০২৪ সালের জুলাই থেকে তিনটি রেল পরিষেবা — মৈত্রী এক্সপ্রেস (কলকাতা-ঢাকা), বন্ধন এক্সপ্রেস (কলকাতা-খুলনা) ও মিতালী এক্সপ্রেস (শিলিগুড়ি-ঢাকা) — বন্ধ থাকায় জনসাধারণের সঙ্গে যোগাযোগও বিঘ্নিত হয়েছে। বাস পরিষেবা এবং অন্যান্য গণপরিবহণ এখনও অনুপলব্ধ, এবং বেসরকারি যানবাহনগুলি স্থলসীমান্ত অতিক্রম করার জন্য অতিরিক্ত ভাড়া নিচ্ছে।
ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের এক সময় অতিব্যস্ত বেনাপোল-পেট্রাপোল স্থলবন্দরগুলি, যেখান দিয়ে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের প্রায় ৩০ শতাংশ আসা-যাওয়া করত, সেখানে এখন উল্লেখযোগ্যভাবে কম যানবাহন চলাচল করছে।
স্বাভাবিকভাবেই, শাসনব্যবস্থা পরিবর্তনের আগে জারি করা শেষ যৌথ বিবৃতির [৪] প্রস্তাবগুলিও স্থগিত রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে উপ-আঞ্চলিক সংযোগ উন্নত করার জন্য বাংলাদেশ-ভুটান-ভারত-নেপাল (বিবিআইএন) মোটরযান চুক্তিটিকে দ্রুত কার্যকরী স্তরে নিয়ে যাওয়া, এবং গেদে (ভারত) থেকে দর্শনা (বাংলাদেশ) হয়ে চিলাহাটি (বাংলাদেশ) ও হলদিবাড়ি (ভারত) পেরিয়ে ভারত-ভুটান সীমান্তে দলগাঁও (আসাম, ভারত) রেলগেট দিয়ে হাসিমারা (ভুটানের কাছে ভারতীয় সীমান্ত শহর) পর্যন্ত পণ্য-ট্রেন পরিষেবা বাস্তবায়ন। ভৌত সংযোগ ছাড়াও, দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের জন্য আন্তঃসীমান্ত বিবিআইএন-এমভিএ লাইসেন্স ডিজিটাইজ করার মাধ্যমে ডিজিটাল সংযোগে সহযোগিতার পরিকল্পনা, এবং ভারতীয় কোম্পানি ভারতী এয়ারটেল ও জিও ইনফোকম দ্বারা ৪জি/৫জি রোলআউটও স্থগিত রয়েছে।
ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের কৌশলগত সম্ভাবনা কাজে লাগানোর বিষয়টি ঢাকার সহযোগিতার সঙ্গে জড়িত। তবে বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জগুলি এর সম্ভাবনাগুলিকে জটিল করে তোলে। বাংলাদেশ-মায়ানমার সীমান্তে বিদ্রোহী আরাকান আর্মির (এএ) রাখাইন রাজ্য দখল এই জটিলতাকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে।
মায়ানমারের 'দ্বিধা'
খবর অনুযায়ী এএ রাখাইন রাজ্যের ১৮টি শহরের মধ্যে ১৫টি এবং বাংলাদেশের সঙ্গে চিন রাজ্যের পালেতওয়ার গুরুত্বপূর্ণ সীমান্ত পয়েন্টগুলির নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। এই জায়গাগুলি কালাদান মাল্টি-মোডাল ট্রানজিট ট্রান্সপোর্ট প্রকল্পের (কেএমএমটিটিপি) জন্য গুরুত্বপূর্ণ। ভারতের মণিপুর, মিজোরাম, নাগাল্যান্ড ও অরুণাচল প্রদেশের সঙ্গে মায়ানমারের সীমান্ত আছে, এবং দেশটির সঙ্গে সংযোগ প্রকল্পগুলি পূর্বে কাজ কর নীতি ও বে অফ বেঙ্গল ইনিশিয়েটিভ ফর মাল্টি-সেক্টরাল টেকনিক্যাল অ্যান্ড ইকনমিক কোঅপারেশন (বিমস্টেক)-এর মতো বৃহত্তর আঞ্চলিক ও উপ-আঞ্চলিক উদ্যোগের অবিচ্ছেদ্য অংশ।
২০২৩ সালে কার্যকর করা এবং ২০২৪ সালে ভারত কর্তৃক সুরক্ষিত কেএমএমটিটিপি প্রকল্পের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান সিত্তে বন্দরের কাজকর্মের স্থিতিশীলতা এখন অস্থিরতার কারণে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। চিনের প্রস্তাবিত যুদ্ধবিরতি এএ-র প্রত্যাখ্যান করার ঘটনাটি দীর্ঘস্থায়ী সংঘাতের ইঙ্গিত দেয়, যা সরবরাহ শৃঙ্খল ও সরবরাহ ব্যবস্থাকে হুমকির মুখে ফেলে। ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে মায়ানমারে নিযুক্ত ভারতীয় রাষ্ট্রদূত অভয় ঠাকুরের সিত্তে বন্দর সফর এই চ্যালেঞ্জগুলির উপর নজর রাখা ও মোকাবিলার জন্য ভারতের দায়বদ্ধতা প্রতিফলিত করে।
ভারতের মণিপুর, মিজোরাম, নাগাল্যান্ড ও অরুণাচল প্রদেশের সঙ্গে মায়ানমারের সীমান্ত আছে, এবং দেশটির সঙ্গে সংযোগ প্রকল্পগুলি পূর্বে কাজ কর নীতি ও বে অফ বেঙ্গল ইনিশিয়েটিভ ফর মাল্টি-সেক্টরাল টেকনিক্যাল অ্যান্ড ইকনমিক কোঅপারেশন (বিমস্টেক)-এর মতো বৃহত্তর আঞ্চলিক ও উপ-আঞ্চলিক উদ্যোগের অবিচ্ছেদ্য অংশ।
কেএমএমটিটিপি-র জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক সংযোগ হল ১০৯ কিলোমিটার দীর্ঘ পালেতোয়া-জোরিনপুই মহাসড়ক, যা আইনি ও লজিস্টিক সমস্যার কারণে অসম্পূর্ণ থেকে গিয়েছে এবং নিরাপত্তা হুমকির কারণে আরও জটিল হয়েছে। তবে প্রাথমিক প্রতিরোধ সত্ত্বেও এএ এখন স্থানীয় স্বার্থ রক্ষার জন্য প্রকল্পটিকে সমর্থন করছে বলে মনে হচ্ছে। তবুও, জুন্টার বিমান হামলা এবং চলমান সংঘাত অগ্রগতি ব্যাহত করছে। পূর্ববর্তী চুক্তি বাতিল করার পর, ভারতের ইন্ডিয়ান রেলওয়েজ কনস্ট্রাকশন ইন্টারন্যাশনাল (আইআরকন) কাজ পুনরায় শুরু করার জন্য স্থানীয় সংস্থাগুলির সঙ্গে অংশীদারিত্ব করেছে, কিন্তু অস্থিতিশীলতা বজায় থাকায় কাজ শেষ হতে বিলম্ব হচ্ছে।
ভারতের দিকে মিজোরামে অমীমাংসিত ভূমি বিরোধ ও অপ্র্তুল পরিকাঠামো বিলম্ব আরও দীর্ঘায়িত করে। জোরিনপুইকের সঙ্গে লংটলাই ও আইজলের সংযোগকারী প্রধান মহাসড়কগুলির বর্ধিত বাণিজ্য পরিমাণ পরিচালনা করার জন্য আধুনিকীকরণের প্রয়োজন। এই সম্মিলিত চ্যালেঞ্জগুলি কালাদান করিডোর যাতে শীঘ্রই কার্যকরী দক্ষতা অর্জন করে তা নিশ্চিত করার জন্য তাৎক্ষণিক মনোযোগ দাবি করে।
আঞ্চলিক সংযোগ, বাণিজ্য ও আর্থ-সামাজিক সংযুক্তিকরণের জন্য সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ হল আইএমটি-টিএইচ, যার লক্ষ্য ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে মায়ানমারের মাধ্যমে তাইল্যান্ডের সঙ্গে সংযুক্ত করা। এই মহাসড়ককে কম্বোডিয়া, লাওস, ভিয়েতনাম এবং সম্ভাব্যভাবে বাংলাদেশে সম্প্রসারণের প্রস্তাবগুলি এর কৌশলগত গুরুত্বকে তুলে ধরে। ২০২৪ সালে ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর ভারত-মধ্যপ্রাচ্য-ইউরোপ অর্থনৈতিক করিডোর (আইএমইসি)-এর সঙ্গে প্রকল্পটির সারিবদ্ধতার উপর জোর দিয়েছিলেন, এবং ভারত মহাসাগরে স্থলভিত্তিক সংযোগ জোরদার করার পাশাপাশি প্রশান্ত মহাসাগর ও আটলান্টিককে সংযুক্ত করার সম্ভাবনা তুলে ধরেছিলেন।
৭০ শতাংশ সম্পন্ন হওয়া সত্ত্বেও মহাসড়কটি বিলম্বের সম্মুখীন হচ্ছে মায়ানমারের অস্থিতিশীলতা, মণিপুরে জাতিগত উত্তেজনা, এবং পরিকাঠামোগত চ্যালেঞ্জের কারণে, যার মধ্যে আছে তামু-কিগোন-কালেওয়া সড়কের ৬৯টি সেতুর প্রতিস্থাপন এবং ইয়ার গি বিভাগের ধীর অগ্রগতির ফলে মাত্র ২৫ শতাংশ কাজ এখনও পর্যন্ত সম্পন্ন হওয়া। ঝুঁকি হ্রাস করা এবং প্রকল্পগুলিকে সুরক্ষিত করার জন্য ভারত সরকার জুন্টার সঙ্গে এবং সম্প্রতি ইএও ও জাতীয় ঐক্য সরকারের (এনইউজি) সঙ্গে যোগাযোগ বজায় রেখেছে।
উভয় করিডোরের সফল বাস্তবায়ন শুধু অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি স্থিতিশীল করার জন্য মায়ানমারের ক্ষমতার উপর নির্ভর করে না, বরং প্রকল্পের স্থায়িত্ব ও সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য ভারতের জটিল ভূ-রাজনৈতিক বাস্তবতার মধ্যে দিয়ে এগিয়ে চলার ক্ষমতার উপরও নির্ভর করে।
মায়ানমারে ক্রমবর্ধমান সংঘাত এমন সংঘাতপ্রবণ অঞ্চলে সংযোগ প্রকল্পগুলির সঙ্গে সম্পর্কিত বৃহত্তর সুরক্ষাকরণ চ্যালেঞ্জগুলিকে আরও স্পষ্ট করে তোলে। উভয় করিডোরের সফল বাস্তবায়ন শুধু অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি স্থিতিশীল করার জন্য মায়ানমারের ক্ষমতার উপর নির্ভর করে না, বরং প্রকল্পের স্থায়িত্ব ও সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য ভারতের জটিল ভূ-রাজনৈতিক বাস্তবতার মধ্যে দিয়ে এগিয়ে চলার ক্ষমতার উপরও নির্ভর করে।
উপসংহার
ভারতের উত্তর-পূর্ব তার প্রতিবেশী প্রথম এবং পূর্বে কাজ কর নীতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। তবে, বাংলাদেশ ও মায়ানমারে চলতি অস্থিতিশীলতা আইএমটি-টিএইচ ও কালাদান প্রকল্প-সহ ভারতের সংযোগ প্রকল্পগুলিকে ব্যাহত করে চলেছে। নিরাপত্তা উদ্বেগগুলি বাস্তুচ্যুত মানুষের ক্রমবর্ধমান আগমন, বিদ্রোহী কার্যকলাপ, এবং আন্তঃসীমান্ত চোরাচালানের কারণে উদ্ভূত। একদিকে পেট্রাপোল (পশ্চিমবঙ্গ) ও ডাউকি (মেঘালয়)-র মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থলবন্দরগুলির মাধ্যমে বাণিজ্য ব্যাহত হচ্ছে, অন্যদিকে পরিকাঠামোতে বিনিয়োগ অনিশ্চিত অবস্থায় রয়েছে। মায়ানমারের অস্থিতিশীলতা শুধু মোরে (মণিপুর) ও জোখাওথার (মিজোরাম)-এর মাধ্যমে বাণিজ্য সীমাবদ্ধ করেনি, বরং গুরুত্বপূর্ণ সীমান্ত সড়ক ও রেল প্রকল্পগুলিকেও বিলম্বিত করেছে, যা আঞ্চলিক সংযুক্তিকরণকে দুর্বল করে দিয়েছে।
এই চ্যালেঞ্জগুলি মোকাবিলা করার জন্য ভারতকে সীমান্ত ব্যবস্থাপনা জোরদার করতে হবে, কূটনৈতিক প্রচেষ্টা বৃদ্ধি করতে হবে, এবং স্থিতিশীল পরিকাঠামো গড়ে তুলতে হবে। উত্তর-পূর্বাঞ্চলে অর্থনৈতিক বৃদ্ধি টেকসই করার জন্য এবং ভারতের 'প্রতিবেশী প্রথম' এবং 'পূর্বে কাজ কর' নীতির লক্ষ্য অর্জনের জন্য এই সংযোগ উদ্যোগগুলির স্থিতিশীলতা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
সোহিনী বোস অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের সহযোগী ফেলো।
শ্রীপর্ণা ব্যানার্জি অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের সহযোগী ফেলো
অনসূয়া বসু রায় চৌধুরী অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের প্রতিবেশী উদ্যোগের সিনিয়র ফেলো।
[১] ভারতের আটটি উত্তর-পূর্ব রাজ্য হল অসম, মেঘালয়, মণিপুর, মিজোরাম, ত্রিপুরা, অরুণাচল প্রদেশ, নাগাল্যান্ড ও সিকিম।
[২] ভারতের উত্তর-পূর্ব সীমান্ত আছে পাঁচটি প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে: বাংলাদেশ, মায়ানমার, নেপাল, ভুটান ও চিন।
[৩] উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য অসম, ত্রিপুরা, মিজোরাম ও মণিপুরের সঙ্গে বাংলাদেশের সীমান্ত আছে ।
[৪] প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ভারত সরকার ও বাংলাদেশ সরকারের মধ্যে শেষ যৌথ বিবৃতিটি ২২ জুন ২০২৪ তারিখে জারি করা হয়েছিল।
The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.
Sohini Bose is an Associate Fellow at Observer Research Foundation (ORF), Kolkata with the Strategic Studies Programme. Her area of research is India’s eastern maritime ...
Read More +Sreeparna Banerjee is an Associate Fellow in the Strategic Studies Programme. Her work focuses on the geopolitical and strategic affairs concerning two Southeast Asian countries, namely ...
Read More +Anasua Basu Ray Chaudhury is Senior Fellow with ORF’s Neighbourhood Initiative. She is the Editor, ORF Bangla. She specialises in regional and sub-regional cooperation in ...
Read More +