Author : Ramanath Jha

Published on Jan 04, 2024 Updated 0 Hours ago

গণতান্ত্রিক দেশগুলিতে সাম্প্রতিক প্রতিবাদ ও বিক্ষোভের নতুন বৈশিষ্ট্যগুলি উদ্বেগের কারণ

গণ‌–বিক্ষোভের কেন্দ্র হিসেবে শহরগুলি

সরকার–বিরোধী প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ ক্রমশই ‘‌পুনরাবৃত্তি, ব্যাপ্তি ও আকারে’‌র  দিক থেকে আর সম্ভবত অতীতের সঙ্গে তুলনীয় থাকছে না, বরং হয়ে দাঁড়াচ্ছে বিশ্বব্যাপী গণতন্ত্রের একটি বৈশিষ্ট্য। এই ঘটনা চলতি দশক ও গত দশকটিকে ‘‌গণ প্রতিবাদের যুগ’‌ হিসাবে চিহ্নিত করতে প্ররোচিত করে।‌ বিশ্বব্যাপী মনোযোগ আকর্ষণ করেছে এমন কিছু উল্লেখযোগ্য গণবিক্ষোভ ছিল আন্না হাজারের আন্দোলন, যার দৃষ্টি ছিল দুর্নীতির দিকে এবং তা একটি রাজনৈতিক দলের জন্মের অনুঘটক হিসাবে কাজ করেছিল;‌ পুলিশের বাড়াবাড়ির বিরুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও বিশ্বজুড়ে ‘‌ম্যাটার প্রোটেস্ট’‌;‌ ব্রিটেনে কোভিড–১৯ লকডাউন, ভ্যাকসিন রোলআউট এবং নিম্ন মজুরির  প্রতিবাদে বিক্ষোভ;‌ কানাডায় ভ্যাকসিন নেওয়ার আদেশের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ;‌ পুলিশের গুলিচালনা নিয়ে ফ্রান্সে দাঙ্গা;‌ মহিলাদের জন্য পোষাক কোড বাধ্যতামূলক করার বিরুদ্ধে ইরানে বিক্ষোভ;‌ হংকং ও পাকিস্তানে রাজনৈতিক বিক্ষোভ;‌ বাংলাদেশে নতুন নির্বাচনের দাবিতে বিক্ষোভ, ইজরায়েলে বিচার ব্যবস্থার সংস্কারের বিরুদ্ধে দীর্ঘ প্রতিবাদ;‌ এবং আফ্রিকান দেশগুলির একটি ক্লাস্টারে (দক্ষিণ আফ্রিকা, কেনিয়া, তিউনিসিয়া, সেনেগাল ও নাইজেরিয়া) জীবনযাত্রার ক্রমবর্ধমান ব্যয়, দুর্নীতি, বেকারত্ব ও অর্থনৈতিক সঙ্কটের বিরুদ্ধে আন্দোলন।


সমস্যাগুলির জটিলতা, প্রতিযোগিতামূলক স্বার্থ, এবং গণতন্ত্রে নাগরিকদের প্রদত্ত স্বাধীনতাগুলি জনগণের গোষ্ঠীগুলিকে আইনত তাদের অসন্তোষ প্রকাশ্যে প্রকাশ করার, এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণকারীদের সামনে তাদের পাল্টা দাবি রাখার সুযোগ দেয়।



গণ–আন্দোলন প্রত্যক্ষ করেছে এমন দেশগুলির মধ্যে অগণতান্ত্রিক দেশগুলিও আছে, যেমন চিনের একাধিক শহরে
লকডাউন–বিরোধী বিক্ষোভ। তবে এই নিবন্ধটিকে গণতন্ত্রের মধ্যে প্রতিবাদের আলোচনায় সীমাবদ্ধ রাখা হয়েছে। সমস্যাগুলির জটিলতা, প্রতিযোগিতামূলক স্বার্থ, এবং গণতন্ত্রে নাগরিকদের প্রদত্ত স্বাধীনতাগুলি জনগণের গোষ্ঠীগুলিকে আইনত তাদের অসন্তোষ প্রকাশ্যে প্রকাশ করার, এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণকারীদের সামনে তাদের পাল্টা দাবি রাখার সুযোগ দেয়। এটা বোধগম্য যে গণতন্ত্রে, বিশেষত ভারতের মতো বিশাল ও বৈচিত্র্যময় গণতন্ত্রে, এই ধরনের ঘটনাগুলির একটি বড় অংশ থাকবে। যাই হোক, প্রতিবাদের নিছক সংখ্যাবৃদ্ধি অযৌক্তিক উদ্বেগের কারণ হওয়া উচিত নয়, কারণ ভিন্নমতের অনুমতি দেওয়া এবং বাকস্বাধীনতার প্রচার করা গণতন্ত্রের বৈশিষ্ট্য। এটি বিশেষ করে ভারতের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য, কারণ ভারতীয় সংবিধানের ১৯ অনুচ্ছেদ সমস্ত ভারতীয় নাগরিককে বাক ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং অস্ত্র ছাড়া শান্তিপূর্ণভাবে একত্রিত হওয়ার অধিকার দেয়।

প্রতিবাদ সম্পর্কে ক্রমবর্ধমান উদ্বেগ এই ঘটনাগুলির কিছু নতুন বৈশিষ্ট্য থেকে উদ্ভূত হয়। প্রথমত, বড় শহরগুলি বিক্ষোভের প্রধান কেন্দ্র হয়ে উঠেছে। একটি যুগে যখন একটি স্থানীয় সমস্যাকে বিশ্বব্যাপী দর্শকদের সামনে উপস্থাপিত করা সহজ, প্রতিবাদের আয়োজকেরা দৃশ্যমানতার সুযোগটি ছেড়ে দিতে পারেন না। এই দৃশ্যমানতাই জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে বিপুল সংখ্যক মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। এমনকি যদি মানুষের একটি ভগ্নাংশও নিউজ চ্যানেলে দৃশ্যমান বিষয়বস্তু বা সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারিত ভিডিও দেখেন, এবং সেখানে মন্তব্য করতে থাকেন, তবে তা বেশিরভাগ প্রশাসনকে বিচলিত করার জন্য যথেষ্ট হয়। যেহেতু শহরগুলি দৃশ্যমানতার জন্য সমস্ত উপাদান সরবরাহ করে, তাই শহরগুলি বিক্ষোভকারীদের ক্ষমতায়িত করে। বেশিরভাগ মিডিয়া চ্যানেল ও প্রেস শহরভিত্তিক; সোশ্যাল মিডিয়া এখানে সবচেয়ে বেশি সক্রিয়, এবং শহরগুলিতে বিশাল জনসংখ্যা রয়েছে যারা সরাসরি প্রতিবাদ প্রত্যক্ষ করে। উদ্বেগের বিষয় হল যে অনেক প্রতিবাদ যার রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে, সেগুলি এই ধরনের আন্দোলনকে অস্ত্রে রূপান্তরিত করতে চায় শাসক জমানাকে শেষ করতে, বা তাদের দাবি মেনে নিতে বাধ্য করতে।


এখানে বড় শহরগুলি চমৎকার হাতিয়ার হয়ে ওঠে, কারণ তারা বিক্ষোভকারীদের রাস্তায় বসে বা রাস্তা অবরোধ করে বা রেলওয়ের মতো অন্যান্য পরিবহণ পরিকাঠামো অবরুদ্ধ করে চলাচল ও পণ্য পরিবহণে বাধা দেওয়ার মাধ্যমে লক্ষ লক্ষ নাগরিককে অসুবিধায় ফেলার ক্ষমতা প্রদান করে।



অস্ত্রায়নের এই প্রক্রিয়ায়, নাগরিকদের মুক্তিপণ আদায়ের জন্য আটকে রেখে গুলি করার লক্ষ্য হিসেবে ব্যবহার করা হয়। এখানে বড় শহরগুলি চমৎকার হাতিয়ার  হয়ে ওঠে, কারণ তারা বিক্ষোভকারীদের রাস্তায় বসে বা রাস্তা অবরোধ করে বা রেলওয়ের মতো অন্যান্য পরিবহণ পরিকাঠামো অবরুদ্ধ করে চলাচল ও পণ্য পরিবহণে বাধা দেওয়ার মাধ্যমে লক্ষ লক্ষ নাগরিককে অসুবিধায় ফেলার ক্ষমতা প্রদান করে। যদিও দেশের আইন গণবিক্ষোভের উপর ‘‌যৌক্তিক বিধিনিষেধ’‌ রাখে, তাহলেও এমন ঘটনা ঘটে। কারও দেশের সার্বভৌমত্ব ও অখণ্ডতার সঙ্গে আপস করা, রাষ্ট্রের নিরাপত্তা বিরূপভাবে প্রভাবিত করা, বা জনশৃঙ্খলা বিঘ্নিত করা উচিত নয়। এই শর্তগুলি ভারতীয় দণ্ডবিধি, পুলিশ আইন, ও ফৌজদারি কার্যবিধিতে বর্ণিত আছে। তাই ট্রাফিক প্রবাহকে বাধাগ্রস্ত করে বা গণপরিসরে উপদ্রব সৃষ্টি করে এমন আন্দোলন আইনের আওতার মধ্যে পড়ে না।

সাধারণত, শহরগুলিতে বিক্ষোভের জন্য মনোনীত স্থান থাকে, বা নগর পুলিশের তরফে গণবিক্ষোভের জন্য নির্বাচিত স্থানটিকে অনুমোদন করা হয়। যে কোনও ক্ষেত্রে, পুলিশের পূর্বানুমতি বাধ্যতামূলক। গণ–আন্দোলন যা জনসাধারণের শান্তি–শৃঙ্খলাকে বিঘ্নিত করে, তা আইনের সীমানা অতিক্রম করে। যাই হোক, আইনটি প্রায়শই উপেক্ষা করা হয়, কারণ আন্দোলনের উদ্দেশ্য হল আইন যা অনুমোদন করে না তা করা।

এই প্রেক্ষাপটে সক্ষমকারী হিসেবে
প্রযুক্তির ভূমিকাকে  অবমূল্যায়ন করা যায় না। প্রযুক্তি ভিড়কে অসৎ উদ্দেশ্যে কাজে লাগানো, জাল উপাদান প্রচার করা, আবেগ জাগানো এবং অতিরিক্ত ভিড়ের ক্রোধকে কাজে লাগানো সম্ভবপর করে। মোবাইল ফোন ও সোশ্যাল মিডিয়া শক্তিশালী যোগাযোগ যন্ত্র হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। রিং লিডার ও জনতাকে উস্কানিদাতারা সাধারণত অত্যাধুনিক সরঞ্জাম ও পদ্ধতি ব্যবহার করে পর্দার আড়ালে থেকে কাজ করে, এবং তাদের দ্রুত চিহ্নিত করা বা খুঁজে বার করা খুব সহজ নয়। একে সাহায্য করে দেশের রাজনীতির অত্যন্ত ভগ্ন প্রকৃতি, এবং চরম পন্থা ব্যবহার করা এবং আন্তর্জাতিক সমর্থন ও অর্থ আকর্ষণ করার ইচ্ছা, যার সবেরই লক্ষ্য সহিংস বিশৃঙ্খলা তৈরি করা। যারা অকথ্য ক্ষতি করতে প্রস্তুত এমন সহিংস অপরাধীদের সাথে মিলিতভাবে উচ্ছৃঙ্খল ও উজ্জীবিত গোষ্ঠীর ভিড়ের মাধ্যমে শাসক দল ও সরকারগুলিকে কোণঠাসা করার প্রয়াস এখন একটি ব্যাপকভাবে প্রত্যক্ষ করা ঘটনা হিসাবে আবির্ভূত হয়েছে।


রিং লিডার ও জনতাকে উস্কানিদাতারা সাধারণত অত্যাধুনিক সরঞ্জাম ও পদ্ধতি ব্যবহার করে পর্দার আড়ালে থেকে কাজ করে, এবং তাদের দ্রুত চিহ্নিত করা বা খুঁজে বার করা খুব সহজ নয়। 



বিক্ষোভ যখন নাগরিক উপদ্রবে পরিণত হয়, তখন তার ফলাফল হতে পারে দু’‌ধরনের। প্রশাসন বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আলোচনার জন্য চাপে পড়তে পারে, যার ফলে তাদের দাবি আংশিকভাবে বা পুরোটাই মেনে নেওয়া হতে পারে। বিকল্পভাবে, প্রশাসন বিক্ষোভকারীদের উপেক্ষা করতে পারে, যার ফলে হিংসা এবং বড় আকারের সম্পত্তির ক্ষতি ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। পুলিশ তখন বলপ্রয়োগ করতে বাধ্য হতে পারে, এবং এই প্রক্রিয়ায় বিক্ষোভকারীরা নিহত বা আহত হতে পারেন, যা পরে বলপ্রয়োগের ফলাফলের ভিত্তিতে প্রশাসনকে নিষ্ঠুর ও বর্বর হিসাবে দেখানোর জন্য তুলে ধরা এবং ব্যবহার করা যেতে পারে। এটি সরকার এবং ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে জনসাধারণের ঘৃণা সৃষ্টি করবে, এবং স্থানীয়ভাবে বা জাতীয়ভাবে তাদের ভোট কমবে বা নির্বাচন হারার কারণ হবে বলে মনে করা হয়। এটা স্পষ্ট যে আধুনিক বিক্ষোভ মোকাবিলার জন্য পুলিশ বাহিনীর উচ্চস্তরের প্রস্তুতি ও প্রশিক্ষণ, এবং বেশি সংখ্যায় পুলিশ কর্মীদের প্রাপ্যতা প্রয়োজন।

 

ভারতে সাম্প্রতিক দুটি গণবিক্ষোভ উপরে উপস্থাপিত বিশ্লেষণ যুক্তিপূর্ণ করে তোলে। একটি ছিল ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের (সিএএ) বিরুদ্ধে প্রতিবাদ। অন্যটি ছিল ২০২০–২১ সালে কৃষকদের বিক্ষোভ। পার্লামেন্টে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাশ হওয়ার পর প্রথমটি সংগঠিত হয়েছিল। বিক্ষোভকারীরা দাবি করেছিল যে সিএএ কার্যকর করা উচিত নয় এবং প্রস্তাবিত জাতীয় নাগরিক নিবন্ধন (এনআরসি)–এর প্রস্তুতি রদ করা উচিত। কৃষকদের আন্দোলন মূলত তিনটি কৃষি আইনের বিরুদ্ধে ছিল যা আন্দোলনকারীদের দৃষ্টিতে কৃষকদের ক্ষতির জন্য কৃষির ‘‌কর্পোরেটাইজেশন’‌ চেয়েছিল। এই আইনগুলি অবশেষে বাতিল করা হয়েছিল। এই উভয় ঘটনাই হিংস্রতা এবং বিক্ষোভের মধ্যে আটকা–পড়া নাগরিকদের জন্য দীর্ঘস্থায়ী দুর্দশার দিকে চালিত করেছিল। এছাড়া ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞের পাশাপাশি প্রাণহানির ঘটনাও ঘটেছে।

বিক্ষোভকারীরা দাবি করেছিল যে সিএএ কার্যকর করা উচিত নয় এবং প্রস্তাবিত জাতীয় নাগরিক নিবন্ধন (এনআরসি)–এর প্রস্তুতি রদ করা উচিত।



উদ্বেগের বিষয় ছিল যে প্রশাসনকে দোদুল্যমান দেখা গিয়েছে, এবং দীর্ঘ সময় ধরে এই সিদ্ধান্তই নেওয়া সম্ভব হয়নি যে প্রতিবাদকারীদের (যারা স্পষ্টভাবে আইনের সীমানা অতিক্রম করেছিল) উপর হস্তক্ষেপ করা এবং তাদের জমায়েতকে ভেঙে দেওয়া হবে, না নিরাপদে খেলাই শ্রেয় এবং পরিস্থিতি আপনা থেকেই স্তিমিত হয়ে পড়ার জন্য  অপেক্ষা করা হবে। লক্ষ লক্ষ নিত্যযাত্রীদের মূল্যে উল্লেখযোগ্য পরিবহণ রুটের মধ্যে দীর্ঘ সময় ধরে আন্দোলন চলতে দেওয়ায় প্রশাসন অপেক্ষা করে দেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বলে ধারণা তৈরি হয়। ২০১৬ সালে হরিয়ানায় জা্ঠ আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে
প্রকাশ সিং কমিটির রিপোর্টে দেখা গিয়েছে যে রাজ্য স্তরে প্রশাসনিক পক্ষাঘাত হয়েছিল এবং জেলা স্তরে বল প্রয়োগে দ্বিধা ছিল, যা আইন বজায় রাখার প্রশাসনের সাংবিধানিক দায়িত্ব বর্জনের  ইঙ্গিত দেয়। উপরে উল্লিখিত দুটি ক্ষেত্রেও অনুরূপ উপসংহার টানা যেতে পারে। এই দুই ক্ষেত্রেও শক্তি প্রয়োগের পরে রাজনৈতিক–সহ বিভিন্ন প্রতিক্রিয়ার মুখোমুখি হতে অনিচ্ছা ছিল।


এই পটভূমির আলোকে এটা স্পষ্ট যে, চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে গণ–বিক্ষোভকে জনশৃঙ্খলার দৃষ্টিকোণ সহ বিভিন্ন দিক থেকে দেখা যেতে পারে। প্রশাসনের এই অনীহা ভবিষ্যতে আরও আন্দোলনকে উৎসাহিত করবে।



রমানাথ ঝা অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের একজন ডিস্টিংগুইশড ফেলো

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.