Author : Arpan Tulsyan

Published on Apr 17, 2025 Updated 0 Hours ago

প্রমাণ দেখায় যে পড়ার মাধ্যমটি জ্ঞানার্জন সংক্রান্ত মনোযোগ, ব্যস্ততা, বোধগম্যতা, এবং শিক্ষার্থীদের সামগ্রিক স্বাস্থ্যের উপর সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলতে পারে। অতএব, পাঠ্যপুস্তকের ডিজিটাইজেশনের প্রভাব নিয়ে, বিশেষ করে স্কুলের শিশুদের জন্য, আরও বেশি অভিজ্ঞতাগত পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রয়োজন।

মূল বিষয়ে ফেরা: কাগজের পাঠ্যবই কি ভবিষ্যতের পথ?

একটি আকর্ষণীয় ঘটনা হল, সুইডেন ডিজিটাল পাঠ্যপুস্তক থেকে সরে এসে কাগজের বই ফিরিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পনেরো বছর আগে এটি শ্রেণিকক্ষে ডিজিটাল পদ্ধতিতে শিক্ষাদানকারী প্রথম দেশগুলির মধ্যে একটি ছিল। এখন দেশটি মনে  করছে ডিজিটাল বইয়ের কারণে শিশুদের মনোযোগ, অধ্যবসায় এবং পড়ার ও লেখার মৌলিক দক্ষতা হ্রাস পাচ্ছে,  এবং তাই দেশটি কাগজের পাঠ্যপুস্তক পুনরায় প্রবর্তনের জন্য ১০৪ মিলিয়ন ইউরো বিনিয়োগ করছে

স্কুলের ভেতরে এবং বাইরে কীভাবে ডিজিটাল ডিভাইসগুলি ব্যবহার করা হচ্ছে তা অনুসন্ধান করা এবং এর ব্যবহার কমাতে পরবর্তী পদক্ষেপগুলি প্রস্তাব করার জন্য জাতীয় শিক্ষা সংস্থাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। প্রাক-বিদ্যালয় পাঠ্যক্রম, যে ক্ষেত্রটিতে এখনও পর্যন্ত প্রতিটি শিশুর ডিজিটাল সরঞ্জামগুলির সুযোগ থাকা উচিত বলে নির্ধারিত ছিল, এখন তা সংশোধন করে করা হয়েছে স্পষ্ট বৈজ্ঞানিক মূল্য ও স্বীকৃত শিক্ষাগত সহায়তার উপর ভিত্তি করে ডিজিটাল শিক্ষণ সহায়কগুলির 'নির্বাচিত' ব্যবহার


অস্ট্রেলিয়ার শিক্ষা কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের মধ্যে পড়ার ক্ষমতা হ্রাসের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে, এবং এর জন্য অন্তত আংশিকভাবে স্ক্রিনের সামনে বর্ধিত সময় কাটানোকে দায়ী করেছে।



এই প্রবণতা ফিনিশ স্কুলগুলিতেও দেখা যাচ্ছে, যেখানে ছোট বাচ্চাদের মনোযোগ বৃদ্ধি ও বিক্ষেপ হ্রাসের জন্য স্ক্রিন টাইম কমাতে ডিজিটাল-কেন্দ্রিক শিক্ষা বাদ দেওয়া হচ্ছে। একইভাবে, অস্ট্রেলিয়ার শিক্ষা কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের মধ্যে পড়ার ক্ষমতা হ্রাসের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে, এবং এর জন্য অন্তত আংশিকভাবে স্ক্রিনের সামনে বর্ধিত সময় কাটানোকে দায়ী করেছে। বিশেষজ্ঞরা এখন এই বিপদগুলি মোকাবিলা করার ব্যবস্থা হিসাবে মুদ্রিত বই পড়া এবং হাতে লেখা উৎসাহিত করছেন।

যুক্তরাজ্যের কেমব্রিজের হেরিটেজ স্কুল, যা দেশের একমাত্র 'স্ক্রিন-ফ্রি স্কুল' হিসাবে বিবেচিত, শিক্ষাদানের জন্য ল্যাপটপ, মোবাইল ফোন, ইন্টারনেট বা ইন্টারঅ্যাক্টিভ হোয়াইটবোর্ড ব্যবহার করে না, এবং এভাবে তারা সেরা ফলাফল অর্জন করেছে। এটি তার ভাল শিক্ষাগত ফলাফলের জন্য বই-ভিত্তিক শিক্ষা, হাতের লেখা ও কবিতা মুখস্থ করা, প্রকৃতিতে পদচারণা এবং চারুকলার উপর অধিক জোর দেওয়াকে কৃতিত্ব দেয়। স্কুলটি তার প্রযুক্তি-মুক্ত শিক্ষা পদ্ধতিকে 'উদ্ভাবনী' বলে মনে করে, এবং সানডে টাইমস -‌এর একটি নিবন্ধ একে "অনেক অভিভাবক তাদের সন্তানদের জন্য যে ধরনের শিক্ষার সন্ধান করছেন তার পথিকৃৎ" হিসাবে তুলে  ধরেছে।

গবেষণায় শিশুদের মধ্যে পড়ার দক্ষতা এবং বিনোদনমূলক পড়ার মধ্যেকার পারস্পরিকভাবে শক্তিশালী সম্পর্ক নথিভুক্ত করা হয়েছে। শিশুদের (১০-১১ বছর বয়সী; আন্তর্জাতিক পঠন সাক্ষরতা অধ্যয়নের অগ্রগতি) এবং কিশোর-কিশোরীদের (১৫ বছর বয়সী; আন্তর্জাতিক ছাত্র মূল্যায়ন কর্মসূচি)  উপর পরিচালিত বৃহৎ আকারের আন্তর্জাতিক জরিপে দেখা গিয়েছে যে, যারা আনন্দের জন্য পড়া উপভোগ করে বলে রিপোর্ট করে এমন শিশুদের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে। এটি এমন একটি সূচক যা পড়ার দক্ষতা হ্রাসকে প্রতিফলিত করে। অধিকন্তু, দীর্ঘ, রৈখিক পাঠ্যসহ ভৌত বই পড়ার প্রবণতা হ্রাস পাচ্ছে, তবে সোশ্যাল মিডিয়ার মতো মাল্টিমিডিয়া সামগ্রীর সংক্ষিপ্ত, অপ্রাসঙ্গিক স্নিপেটগুলির পাঠ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এটি স্কুল শিক্ষার মধ্যে কার্যকর শিক্ষাকে সমর্থন করার ক্ষেত্রে ই-পাঠ্যপুস্তকের ভূমিকা পুনর্মূল্যায়ন করার প্রয়োজনীয়তার ইঙ্গিত দেয়।

জ্ঞানগত মনোযোগ ও বোধগম্যতা

গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, একটি কাগজের বইয়ের ভৌত অস্তিত্ব পরিপূর্ণ ও বাস্তব অভিজ্ঞতা প্রদান করে, যেমন বই ধরা, কাগজ অনুভব করা, এবং এমনকি পৃষ্ঠাগুলি উল্টানো। এর ফলে গভীর জ্ঞানগত সম্পৃক্ততা তৈরি হয়, যা পাঠকদের তথ্য আরও পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে প্রক্রিয়াকরণ করতে দেয়। ই-বই-‌এর সঙ্গে সাধারণত হাইপারলিঙ্ক সংযুক্ত থাকে, স্ক্রোলিং ফর্ম্যাট থাকে, মাল্টিমিডিয়া বৈশিষ্ট্যগুলি অন্তর্ভুক্ত থাকে, এবং  তা প্রায়শই আকর্ষণীয় হয়। তবে, ডিজিটাল বিক্ষেপের কারণে, বিশেষ করে তরুণ পাঠকদের মধ্যে, এগুলি মনোযোগ ও বোধগম্যতা হ্রাস করে। অনলাইন পঠন পাঠকদের আচরণ ও পছন্দগুলিকেও প্রভাবিত করে, এবং ধীর, আরও মননশীল ও প্রচেষ্টামূলক পড়ার প্রেরণাকে নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করে।


কাগজ-ভিত্তিক পাঠের সুবিধাগুলি বিশেষভাবে সময়-সীমাবদ্ধ পরিস্থিতিতে এবং তথ্যগত (ধারণাগত) পাঠ্যের প্রেক্ষাপটে স্পষ্টভাবে প্রতীয়মান ছিল।



২০০০ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে প্রকাশিত কাগজ বনাম স্ক্রিন রিডিংয়ের তুলনামূলক কার্যকারিতার উপর ৫৪টি গবেষণার একটি বিস্তৃত মেটা-বিশ্লেষণ, কাগজের বই পড়ার তুলনায় স্ক্রিন রিডিংয়ের নিকৃষ্টতা নিশ্চিত করে। পর্যালোচিত নিবন্ধগুলির পদ্ধতিগত ও তাত্ত্বিক কাঠামোর মধ্যে পার্থক্য থাকা সত্ত্বেও ফলাফলগুলি সামঞ্জস্যপূর্ণ ছিল, এবং বয়স গোষ্ঠী, শিক্ষাগত স্তর, পাঠ্যের দৈর্ঘ্য ও মূল্যায়িত বোধগম্যতার ধরনের মতো বিষয়গুলির দ্বারা তা পরিবর্তিত হয়নি। কাগজ-ভিত্তিক পাঠের সুবিধাগুলি বিশেষভাবে সময়-সীমাবদ্ধ পরিস্থিতিতে এবং তথ্যগত (ধারণাগত) পাঠ্যের প্রেক্ষাপটে স্পষ্টভাবে প্রতীয়মান ছিল।

সংবেদনশীল সম্পৃক্ততা এবং ইন্টারঅ্যাক্টিভিটি

৩৯টি অন্যান্য গবেষণার একটি পর্যালোচনায় উঠে এসেছে যে ডিজিটাল বইয়ের মাল্টিমিডিয়া বৈশিষ্ট্য, যেমন সঙ্গীত ও শব্দ প্রভাব, এবং অ্যানিমেটেড ছবি ও এমবেডেড অভিধান, শিক্ষার্থীদের সম্পৃক্ততা ও প্রেরণা বৃদ্ধি করে। তবে, এই বৈশিষ্ট্যগুলির শিক্ষাগত কার্যকারিতা মূলত তাদের নকশা এবং প্রাসঙ্গিকতার উপর নির্ভর করে। ই-পাঠ্যপুস্তকগুলিকে বিভিন্ন শেখার শৈলীর সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়া যেতে পারে, যা বিভিন্ন শ্রেণিকক্ষে ব্যক্তিগতকৃত শিক্ষা বাস্তবায়নকে সহজ করে তোলে।
 
পর্যালোচনাটি এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে যে প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যস্থতায় ই-বুকগুলি ভালভাবে ডিজাইন ও বাস্তবায়িত হলে তবেই তারা কাগজের সুবিধাগুলিকে ছাড়িয়ে যেতে পারে। তবে, যদি কাগজের ও ডিজিটাল বইগুলি বেশিরভাগ ক্ষেত্রে একই রকম হয়, আর ই-বুকগুলিতে ভয়েসওভার বা পপআপের মতো কয়েকটি অ্যাড-অন থাকে, তবে মুদ্রিত বইগুলি আরও ভাল ফলাফলের দিকে চালিত করে। তাছাড়া, যদিও ডিজিটাল পাঠ্যগুলি তাদের ইন্টারঅ্যাক্টিভ বৈশিষ্ট্যগুলির কারণে শিক্ষার্থীদের সম্পৃক্ত করার ক্ষেত্রে আরও ভাল, তারা প্রায়শই কেবল উপরিভাগের সম্পৃক্ততা তৈরি করে। এর কারণ হল বহুমুখী পাঠের কারণে শিক্ষার্থীদের মনোযোগের সময় খণ্ডিত হয়ে যায়, যার বিপরীতে থাকে ঐতিহ্যবাহী পাঠ্যের আরও বিভ্রান্তিমুক্ত, কেন্দ্রীভূত ও মনোনিবেশিত পাঠ।

স্বাস্থ্য বিবেচনা

শিশুদের স্ক্রিন ব্যবহারের উপর স্বাস্থ্যসম্পর্কিত গবেষণাগুলি মূলত ইন্টারনেট ও সোশ্যাল মিডিয়া আসক্তির উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করেছে। মাত্র কয়েকটি গবেষণাই ডিজিটাল পাঠ্যপুস্তক ব্যবহারের সঙ্গে সম্পর্কিত সম্ভাব্য স্বাস্থ্য সমস্যাগুলি স্পষ্টভাবে চিহ্নিত করেছে। এরকম একটি গবেষণায় দেখা গেছে, কমপক্ষে এক বছর ধরে ই-পাঠ্যপুস্তক ব্যবহার করেছে এমন শিক্ষার্থীদের মধ্যে শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের প্রতিবন্ধকতাগুলি নগণ্য নয়। শারীরিক উদ্বেগের মধ্যে রয়েছে দৃষ্টিশক্তি (চোখের চাপ, তন্দ্রা), পেশী (ঘাড়, কব্জি বা পিঠে ব্যথা), এবং ত্বক সংক্রান্ত (শুষ্ক ত্বক ও চোখ) সমস্যা। মানসিক প্রভাবগুলির মধ্যে রয়েছে শিক্ষকদের সঙ্গে যোগাযোগ কম হওয়ার কারণে চাপ, নার্ভাসনেস, উদ্বেগ বা হতাশা বৃদ্ধি এবং ই-বুক ব্যবহারে প্রযুক্তিগত ত্রুটি বা অসুবিধা। এর ফলে মনোযোগ দেওয়ার ক্ষমতা হ্রাস পায়, যার মোকাবিলা করতে শিক্ষার্থীরা নিজেরাই লড়াই করে। সেই দিক থেকে ভৌত বই যাতে স্ক্রিনের ঝলক বা ব্যাকলাইটিং থাকে না এবং মানুষের মিথস্ক্রিয়া ও সহজ পরিচালনার জন্য আরও ভাল সুযোগ থাকে তরুণদের শরীর এবং মনের জন্য আরও স্বাচ্ছন্দ্যময় পড়ার অভিজ্ঞতা প্রদান করে।


যদিও ডিজিটাল পাঠ্যগুলি তাদের ইন্টারঅ্যাক্টিভ বৈশিষ্ট্যগুলির কারণে শিক্ষার্থীদের সম্পৃক্ত করার ক্ষেত্রে আরও ভাল, তারা প্রায়শই কেবল উপরিভাগের সম্পৃক্ততা তৈরি করে।



নীতিসমূহের প্রভাব

ই-বুকগুলি অবশ্যই কিছু সুবিধা প্রদান করে, যার মধ্যে রয়েছে উন্নত প্রাপ্তিযোগ্যতা, আরও বেশি অংশগ্রহণের সুযোগ, এবং কম সম্পদ-নিবিড় কাঠামো। কিন্তু মুদ্রিত পাঠ্যপুস্তকগুলিকে পরিত্যাগ করার দীর্ঘমেয়াদি প্রভাবগুলির সম্পূর্ণ অভিজ্ঞতাগত যাচাই ছাড়াই খুব দ্রুত এ থেকে সরে যাওয়া একটি ভুল পদক্ষেপ হতে পারে।

যাই হোক, এর অর্থ ডিজিটাল পাঠ্যপুস্তকগুলিকে সম্পূর্ণরূপে বাদ দেওয়া নয়।  পরিবর্তে, নীতিগুলি একটি বিচক্ষণ মিশ্রণ ব্যবহার করে শেখার ফলাফলগুলিকে সর্বোত্তম করার লক্ষ্যে প্রণয়ন করা প্রয়োজন, যেখানে প্রযুক্তি পাঠ্যপুস্তকগুলির মৌলিক শিক্ষাকে অগ্রাহ্য করার পরিবর্তে তার পরিপূরণ করেযেহেতু স্ক্রিন-ভিত্তিক পাঠ অনিবার্য, বিশেষ করে উচ্চশিক্ষা ও কর্মক্ষেত্রে, শিক্ষার্থীদের জ্ঞানগত ক্ষমতা বিকাশ করতে হবে এবং 'বাইলিটারেট' হতে হবে, অর্থাৎ, কাগজ ও ডিজিটাল উভয় পাঠ্যবই পড়তে, বুঝতে এবং তার সঙ্গে গভীরভাবে জড়িত হতে হবে। শুধুই কাগজ বা ডিজিটাল পদ্ধতির বাইরে যাওয়ার এই নমনীয়তা শিক্ষার্থীদের উভয় ফরম্যাট থেকে উপকৃত হতে দেবে। অতএব, 'ওয়ান-সাইজ-ফিটস-অল' পদ্ধতির পরিবর্তে জননীতির উচিত শিক্ষার্থীরা কীভাবে বিভিন্ন ধরনের শিক্ষাদান ও শিক্ষণ উপকরণের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করতে পারে, এবং কীভাবে পড়াশোনা তাদের দ্রুত বিকশিত বিশ্বে আত্মীয়তার অনুভূতি খুঁজে পেতে সহায়তা করে, তা বোঝার জন্য বিনিয়োগ করা। শিক্ষার ভবিষ্যৎ নিহিত আছে কাগজ ও ডিজিটাল উভয় মাধ্যমেই শেখার সম্পদের গতিশীল মিশ্রণ ব্যবহারের মধ্যে, যা শিক্ষার্থীদের চাহিদা, তাদের প্রাসঙ্গিক বাস্তবতা এবং পাঠ্যক্রমের লক্ষ্যের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
 



অর্পণ তুলসিয়ান অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশন-‌এর সেন্টার ফর নিউ ইকনমিক ডিপ্লোম্যাসির সিনিয়র ফেলো।

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.