Published on Jan 10, 2025 Updated 0 Hours ago

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর থেকে ভারত রাশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্য অংশীদার হিসাবে আবির্ভূত হয়েছে। এই ঘটনাকে অর্থনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা উচিত

ভারত-রাশিয়া অর্থনৈতিক সম্পর্কের গভীরে ডুব দেওয়া

গত এক দশকে ভারত-রাশিয়া সম্পর্কের মূল চালিকাশক্তিগুলি বদলাতে শুরু করেছে। ভারত কম রাশিয়ান অস্ত্র, প্রযুক্তি বা সামরিক প্ল্যাটফর্ম কেনায় ঐতিহ্যগতভাবে প্রভাবশালী সামরিক-প্রযুক্তিগত অংশীদারিত্ব হ্রাস পেয়েছে। সামরিক লেনদেন ধীরগতির হয়ে যাওয়ায় অর্থনৈতিক স্তম্ভটি স্থবির হয়ে পড়ে, এবং দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ১০-১১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার চিহ্নের কাছাকাছি থমকে থাকে। যাই হোক, ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ সাল থেকে অর্থনৈতিক সম্পর্কের একটি নাটকীয় উন্নতি হয়েছে, যার ফলে ভারত রাশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্য অংশীদার হিসাবে আবির্ভূত হয়েছে। ২০২২ সালে, দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ৪৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়, এবং ২০২৩ সালের শেষ নাগাদ তা ৬৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার হয়েছে। বাণিজ্যে এই বৃদ্ধি প্রাথমিকভাবে তেল ক্রয়ের উপর ভারতীয় পরিশোধকদের ক্রমবর্ধমান ছাড় দেওয়ার কারণে ঘটেছে, কারণ ভারত রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা ব্যবস্থায় যোগ দেয়নি। তেল বাণিজ্য বৃদ্ধির পাশাপাশি বাণিজ্য ঝুড়িতে তেল-‌বহির্ভূত বাণিজ্যও সামান্য বেড়েছে। দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে এই নতুন প্রবণতার পাশাপাশি ভারত-রাশিয়া অর্থনৈতিক সহযোগিতা নিয়ে উল্লেখযোগ্যভাবে অতি-‌মূল্যায়ন হয়েছে, যা কানাডা, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, জাপান, যুক্তরাজ্য (‌ইউনাইটেড কিংডম)‌ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সমন্বিত গ্রুপ অফ সেভেন (জি৭)  দেশগুলির নিন্দার কারণ হয়েছে।



ভারত কম রাশিয়ান অস্ত্র, প্রযুক্তি বা সামরিক প্ল্যাটফর্ম কেনায় ঐতিহ্যগতভাবে প্রভাবশালী সামরিক-প্রযুক্তিগত অংশীদারিত্ব হ্রাস পেয়েছে



বাণিজ্য ঝুড়ির মধ্যে বিভিন্ন প্রবণতা

এ কোনও আশ্চর্যের বিষয় নয় যে হাইড্রোকার্বন আমদানি বাণিজ্য ঝুড়িতে প্রাধান্য পেয়েছে। ২০২৩ সালে ৬৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আমদানির মধ্যে ৫৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলারই ছিল
রাশিয়া থেকে তেল আমদানি। অনুরূপ প্রবণতা আগের বছরেও প্রতিফলিত হয়েছিল:‌ ৪৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের মোট বাণিজ্যের মধ্যে ৩৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছিল তেল আমদানি। রাশিয়া থেকে ক্রমবর্ধমান তেল ও খনিজ আমদানির সঙ্গে সামগ্রিক বাণিজ্যও বৃদ্ধি পেয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, ২০২১ সালে, দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ছিল ১২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের, যেখানে তেল ও খনিজ জ্বালানি ছিল মাত্র ৫.২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, আর তেল ছাড়া বাকি সব কিছু মিলিয়ে ছিল ৬.৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ২০২২ ও ২০২৩ সালে, তেল-বহির্ভূত বাণিজ্য ১১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে বৃদ্ধি পেয়েছে, যা একটি উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি এবং দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বৃদ্ধির ইঙ্গিত।


২০২২ সাল থেকে রাশিয়ার সার রপ্তানি উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। রাশিয়ান সারের গড় ভারতীয় আমদানি ছিল প্রায় ৬০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার; তবে, ২০২২-২৩ সালে,
সার আমদানি বেড়ে ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার হয়েছিল। পরবর্তী বছরে এটি হ্রাস পায়, যার প্রাথমিক কারণ রাশিয়া ডাই-অ্যামোনিয়াম ফসফেট বিক্রির উপর পূর্ববর্তী ছাড় আর দিচ্ছিল না। অধিকন্তু, মূল্যবান পাথর, ধাতু ও গয়না আমদানি ২০২১ সাল থেকে বৃদ্ধি পেয়েছে। একইভাবে, রাশিয়ার ভোজ্য শাকসবজি এবং প্রাণী ও উদ্ভিজ্জ চর্বি রপ্তানিও বৃদ্ধি পেয়েছে।


রাশিয়া থেকে বড় মূল্যের ভারতীয় আমদানি

পণ্য

অর্থবর্ষ ২০২১-‌২০২২ (বিলিয়ন মার্কিন ডলারে)

অর্থবর্ষ ২০২২-‌২০২৩

অর্থবর্ষ ২০২৩-‌২৪

খনিজ জ্বালানি, তেল এবং পরিশোধিত পণ্য

 ৫.২

    ৩৮ 

  ৫৪

সার

 ০.৭৭

    

  

মূল্যবান পাথর, ধাতু এবং গহনা

 ১.২৫  

     ১.৩৫

  ১.১৮

পশু বা উদ্ভিজ্জ চর্বি এবং তেল  

  ০.৫

     

  ১.৩

প্রোজেক্ট গুডস

 ০.‌৫

     ০.‌৫৬

  ০.‌ ৭৮

সূত্র: Ministry of Commerce and Industry: Tradestat

মজার বিষয় হল, রাশিয়ায় ভারতের রপ্তানিতে ঐতিহ্যগতভাবে যে পণ্যগুলির আধিপত্য ছিল তা কমে এসেছে। ওষুধ রপ্তানি ক্রমাগত কমছে। ২০২৪ সাল নাগাদ, ভারত থেকে ওষুধের রপ্তানি ৩৮৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে নেমে এসেছে (চিত্র ১.২ দেখুন)। আরও, চা, কফি ও মশলার মতো পণ্যগুলির পাশাপাশি পোশাকের বাণিজ্যের পরিমাণও ওঠানামা করেছে৷ যাই হোক, আক্রমণের পর থেকে
কিছু পণ্যের রপ্তানি বৃদ্ধি পেয়েছে, যেমন লোহা ও ইস্পাত, বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি ও কনজিউমার ইলেকট্রনিক্স, জৈব ও অজৈব রাসায়নিক, মূল্যবান ধাতুর যৌগ, রেয়ার-আর্থ ধাতু, সাবান ও উপজাত, সিরামিক পণ্য, অটোমোবাইল ও খুচরা যন্ত্রাংশ, এবং চিকিৎসা ও অস্ত্রোপচারের সরঞ্জাম। যাই হোক, আক্রমণের পর থেকে ২০২৩-২০২৪ সালে সবচেয়ে বড় ভারতীয় রপ্তানি ছিল যন্ত্রপাতি ও যান্ত্রিক সরঞ্জামের রপ্তানি, যা ৩২০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার থেকে বেড়ে ৬৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার হয়েছে। আরও, ২০২৪ সালে, এপ্রিল থেকে আগস্ট পর্যন্ত, যন্ত্রপাতি আমদানি বেড়ে ৭০০ মিলিয়ন হয়েছে।


এই পণ্যগুলির রপ্তানির পরিমাণ বৃদ্ধির একটি কারণ হল যে ভারতের মোট রপ্তানি ২০২৪ সালে ৩.১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার
থেকে বেড়ে ৪.২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার হয়েছে৷ ২০২৪-২০২৫ সালের প্রাথমিক অনুমানগুলির উপর ভিত্তি করে বলা যায়, সম্ভবত ভোক্তা পণ্য, ইলেকট্রনিক্স, যন্ত্রপাতি, এবং খুচরা যন্ত্রাংশে বাণিজ্য বাড়বে৷ রাশিয়ার অর্থনীতিতে পশ্চিমা সংস্থাগুলির শূন্যতার কারণে বাণিজ্যের উন্নতি ও অর্থনৈতিক সহযোগিতার ক্রমবর্ধমান উপায় আবির্ভূত হয়েছে, যা রাশিয়াকে তার অ্যাকাউন্টে জমা হওয়া রুপি ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে ব্যয় করার সুযোগ দিয়েছে।

 
চিত্র ১.২: রাশিয়ায় প্রধান আমদানি

পণ্য

অর্থবর্ষ ২০২১-‌২০২২ (বিলিয়ন মার্কিন ডলারে)

অর্থবর্ষ ২০২২-‌২০২৩

অর্থবর্ষ ২০২৩-‌২০২৪

ফার্মাসিউটিক্যালস

         ৪৮০

        ৪৩০

   ৩৮৬

বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি, যন্ত্রাংশ, কনজিউমার ইলেকট্রনিক্স

        ৫১৮

        ১২১ 

  ৩৪৭

যন্ত্রপাতি এবং যান্ত্রিক সরঞ্জাম

         ৩০২

         ৩২১

   ৬৫০

লোহা ও ইস্পাত

          ২৪০

        ১৬০

    ২৮৭

জৈব, অজৈব রাসায়নিক, মূল্যবান ধাতু এবং রেয়ার আর্থ যৌগ

        ২৫৭

         ৪৫২

    ৫৪৭

সূত্র: বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রক: ট্রেডস্ট্যাট

 

নিষেধাজ্ঞা এবং ভারতের প্রতিক্রিয়া

২০১৪ সাল থেকে রাশিয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছিল, কিন্তু ভারত-রাশিয়া বাণিজ্য মূলত অপরিবর্তিত থেকেছে, সরবরাহ ধাক্কা দ্বারা প্রায় কোনও সময়েই ব্যাহত হয়নি। রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের বাণিজ্য, যদিও বহুমুখী, গ্রুপ অফ ২০ (জি২০) দেশগুলির (রাশিয়া ছাড়া)
অন্যদের তুলনায় বড় পরিসরের নয়। তেল ও ফার্মা ব্যতীত রাশিয়ায় ভারতীয় অভিজাতদের জন্য কোনও বিশাল ব্যবসায়িক স্বার্থ নেই, যে কারণে বাণিজ্য ডেটা ভোগ্যপণ্য ও ইলেকট্রনিক্স ছাড়া বাণিজ্যের কোনও নতুন উপায় প্রতিফলিত করে না। ২০২২ সালের নভেম্বরে মস্কো গাড়ি, ট্রেন এবং বিমানের যন্ত্রাংশসহ সরবরাহের জন্য নয়াদিল্লিতে পণ্যের একটি তালিকা পাঠিয়েছিল। তালিকায় ৫০০ টিরও বেশি সামগ্রী ছিল। এটা স্পষ্ট যে নয়াদিল্লি রাশিয়াকে কোনও বড় মূল্যের সামগ্রী সরবরাহ করেনি, যেমন বিমানের ইঞ্জিন বা উচ্চ দ্বৈত-ব্যবহারের ক্ষমতাসম্পন্ন যন্ত্রপাতি (খুচরা যন্ত্রাংশের বাইরে), কারণ দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য তথ্য প্রতিফলিত করে যে মস্কোর অনুরোধ করা যন্ত্রাংশের বাণিজ্য ন্যূনতম হয়েছে। তার উপর, রাশিয়ায় নয়াদিল্লির প্রতিরক্ষা আমদানি দ্বিপাক্ষিক সামরিক-প্রযুক্তিগত অংশীদারি এবং যৌথ উদ্যোগ স্থাপনের উপজাত।



মার্কিন ট্রেজারি বিভাগ মস্কোতে দ্বৈত-ব্যবহারের পণ্য সরবরাহে জড়িত থাকার অভিযোগে ১৯টি ভারতীয় সংস্থার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে, যার মধ্যে মুম্বই-‌ভিত্তিক কয়েকটি ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানির বিরুদ্ধে রাশিয়ার কাছে ৪৩৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের ডেল টেকনোলজিসের সবচেয়ে উন্নত সার্ভার, ডেল পাওয়ারএজ এক্সই ৯৬৮০, পুনঃরপ্তানির অভিযোগ রয়েছে।


তা ছাড়া, বাণিজ্য তথ্য রাশিয়ার কাছে কোনও নিষিদ্ধ গুরুত্বপূর্ণ প্রযুক্তির বিক্রয় প্রতিফলিত করে না, যেমন কয়েকটি সূত্র দাবি করেছে। সূত্রগুলি ৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের ড্রোন এবং ৬০০,০০০ মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্যকে
উদ্ধৃত করে বলেছে এগুলি কিরগিজস্তানের মাধ্যমে পুনরায় রপ্তানি করা হয়েছিল। সম্প্রতি, মার্কিন ট্রেজারি বিভাগ মস্কোতে দ্বৈত-ব্যবহারের পণ্য সরবরাহে জড়িত থাকার অভিযোগে ১৯টি ভারতীয় সংস্থার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে, যার মধ্যে মুম্বই-‌ভিত্তিক কয়েকটি ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানির বিরুদ্ধে রাশিয়ার কাছে ৪৩৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের ডেল টেকনোলজিসের সবচেয়ে উন্নত সার্ভার, ডেল পাওয়ারএজ এক্সই ৯৬৮০, পুনঃরপ্তানির অভিযোগ রয়েছে। এই দাবিগুলি সত্ত্বেও, কোনও তথ্য অভিযোগগুলিকে স্পষ্টভাবে প্রমাণ করে না। উদাহরণস্বরূপ, কিরগিজস্তানের মাধ্যমে ভারতের ড্রোন রপ্তানির প্রথম দাবির বিষয়ে, সংখ্যাগুলি যোগ করলে মেলে না। ২০২২ সাল থেকে, ইলেকট্রনিক পণ্যের জন্য বিশকেকের সাথে বাণিজ্য ১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার অতিক্রম করেনি । একইভাবে, অস্ত্র ও গোলাবারুদ বা যন্ত্রাংশের ক্ষেত্রে, বাণিজ্য ৪৮০,০০০ মার্কিন ডলারের বেশি নয়। তদ্ব্যতীত, একটি বিশ্বায়িত বিশ্বে যেখানে বাণিজ্য প্রাধান্য পায়, রাশিয়ার কাছাকাছি দেশগুলিতে বাণিজ্য সংস্থাগুলি এই ধরনের সামগ্রীকে পুনরায় অন্যত্র পাঠায়। উদাহরণস্বরূপ, বেশ কয়েকটি মার্কিন এবং ইউরোপীয় সংস্থা ১.২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের মাইক্রোচিপ রপ্তানি করেছে, যেগুলি ঘুরপথে তুর্কিয়ে ও কাজাখস্তান থেকে প্রেরণ করা হয়েছিল। অতএব, অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও, বাণিজ্য পরিসংখ্যান অভিযোগের ন্যায্যতা দেয় না। সমালোচনার জবাবে ভারতের বিদেশ মন্ত্রক (এমইএ) বলেছে যে অভিযুক্ত সংস্থাগুলি কোনও ভারতীয় আইন লঙ্ঘন করেনি, কারণ নয়াদিল্লি রাষ্ট্রপুঞ্জ-অনুমোদিত নয় এমন নিষেধাজ্ঞাগুলিকে স্বীকৃতি দেয়নি।


২০২৪ সালের শুরু থেকে, রাশিয়ার বিরুদ্ধে পশ্চিমী নিষেধাজ্ঞাগুলি তীব্রতর হয়েছে, এবং ভারতকে একটি অবস্থান নিতে বাধ্য করেছে৷ উদাহরণস্বরূপ, এই বছরের শুরুর দিকে, টোটালএনার্জিস রাশিয়ার আর্কটিক এলএনজি-২ প্রকল্পে একটি
ফোর্স মেজেউর আহ্বান করেছিল, যার ফলে উৎপাদন স্থগিত হয়ে গিয়েছিল। অতীতে, রাশিয়ান আর্কটিকের কাছে নয়াদিল্লির নাগালের অংশ হিসাবে ভারতীয় সংস্থাগুলি নোভেটেকের (একটি প্রধান রাশিয়ান গ্যাস কোম্পানি) আর্কটিক এলএনজি-২ প্রকল্পে অংশীদারি কিনতে আগ্রহী ছিল। যাই হোক, রাশিয়ান লিকুইফাইড ন্যাচারাল গ্যাস (এলএনজি)  লক্ষ্য করে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) নিষেধাজ্ঞার পরবর্তী রাউন্ডগুলি নয়াদিল্লিকে ঘোষণা করতে প্ররোচিত করেছে যে এটি আর্কটিক এলএনজি ২ প্রকল্প থেকে এলএনজি কিনবে না। মজার বিষয় হল, রুশ শক্তির বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার তরঙ্গ সত্ত্বেও, ইইউ রাশিয়া থেকে এলএনজি আমদানি অব্যাহত রেখেছে। এ বছর আমদানি বেড়েছে ২০ শতাংশ। ইইউ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা এবং মেনে চলার জন্য একটি ইচ্ছানির্ভর পদ্ধতি রয়েছে। একদিকে, এটি ভারতের ক্রেমলিনের কোষাগারকে শক্তিশালী করার অভিযোগে নয়াদিল্লির সমালোচনা করে , যা ইউক্রেনে মস্কোর আক্রমণে ইন্ধন যোগায়। অন্যদিকে, ইইউ রাশিয়ার জ্বালানি ক্রয় অব্যাহত রেখেছে।



রাশিয়ান আর্কটিকের কাছে নয়াদিল্লির নাগালের অংশ হিসাবে ভারতীয় সংস্থাগুলি নোভেটেকের (একটি প্রধান রাশিয়ান গ্যাস কোম্পানি) আর্কটিক এলএনজি-২ প্রকল্পে অংশীদারি কিনতে আগ্রহী ছিল।



পেমেন্ট ইস্যু

শেষ পর্যন্ত, ভারত যদিও রাশিয়ার ব্যবসার কাছে বিশেষ
রুপি-ভোস্ট্রো অ্যাকাউন্ট সুবিধা প্রসারিত করে অর্থপ্রদানের সমস্যাগুলি মোকাবেলা করতে সক্ষম হয়েছিল, কিন্তু কিছু চ্যালেঞ্জও রয়ে গিয়েছে। সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ বোর্ড অফ ইন্ডিয়ার মতো নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলি, রাশিয়ার বৃহত্তম ব্যাঙ্ক স্‌বারব্যাঙ্ক এজি দ্বারা শুধুমাত্র হাইড্রোকার্বনে বিদেশী পোর্টফোলিও বিনিয়োগ সীমিত করেছে৷ অধিকন্তু, ফিন্যান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্স দ্বারা রাশিয়াকে একটি "উচ্চ-ঝুঁকিপূর্ণ" দেশ হিসাবে শ্রেণীবদ্ধ করার কারণে, এবং এমইএ ও মস্কোতে ভারতীয় দূতাবাসের তরফে অনুরোধ সত্ত্বেও বাণিজ্য মন্ত্রকের এক্সপোর্ট ক্রেডিট গ্যারান্টি কর্পোরেশন (ইসিজিসি) রাশিয়াকে একই বিভাগে রেখেছে।


উপসংহার

রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের বাণিজ্যকে রাজনৈতিক উপকরণের হস্তক্ষেপের মাধ্যমে নয়, সরবরাহ ও চাহিদার কারণে চালিত একটি দৃষ্টিকোণ থেকে দেখতে হবে। যদিও রাশিয়ার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য অব্যাহত এবং জোরদার হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, তৃতীয় পক্ষের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার তীব্রতা মস্কোর সঙ্গে নয়াদিল্লির অর্থনৈতিক সম্পর্ককে প্রভাবিত করতে পারে। ভারতকে একগুচ্ছ চ্যালেঞ্জ উপহার দেওয়া হয়েছে: পশ্চিমের সঙ্গে তার সহযোগিতাকে অব্যাহত রেখে মস্কোর সঙ্গে সম্পৃক্ততা বজায় রাখতে হবে, এবং এটাও নিশ্চিত করতে হবে যে তার স্বল্প ও মধ্যমেয়াদি শক্তি নিরাপত্তার চাহিদা পূরিত হয়েছে। এই চ্যালেঞ্জগুলির মধ্যে দিয়ে এগিয়ে চলা ভারতের জন্য অপরিহার্য হবে, কারণ নয়াদিল্লি একটি জটিল বৈশ্বিক ভূচিত্রে তার কৌশলগত স্বার্থের ভারসাম্য বজায় রাখতে চায়।



রাজোলি সিদ্ধার্থ জয়প্রকাশ অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের একজন রিসার্চ অ্যাসিস্ট্যান্ট

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.