Published on Feb 12, 2024 Updated 0 Hours ago

১ ফেব্রুয়ারি অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন তাঁর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক অর্থনীতির ভাষণ দিয়েছেন 

ভারতের অন্তর্বর্তী বাজেটের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস

অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের ষষ্ঠ কেন্দ্রীয় বাজেট এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকারের দ্বাদশ (১০টি পূর্ণ বাজেট এবং দুটি অন্তর্বর্তী) বাজেটটি ছিল তার ২০১৯–২০ পূর্বসূরির মতোই একটি অন্তর্বর্তী বাজেট – ভোট অন অ্যাকাউন্টস৷ ২০২৪ সালের এই বাজেটে বড় ধরনের পরিবর্তন আনার জন্য আইন প্রণয়নকারী শক্তি থাকার কথা ছিল না, কারণ শীঘ্রই সাধারণ নির্বাচন ঘোষণা করা হবে এবং ২০২৪ সালের মে মাসের মধ্যে একটি নতুন সরকার দায়িত্বে আসবে। তারপর ২০২৪ সালের জুলাই মাসে একটি পূর্ণ বাজেট পেশ হবে।

অর্থমন্ত্রী সীতারামনের অন্তর্বর্তী বাজেট ২০১৪ সাল থেকে সরকারের অর্জন সম্পর্কে কথা বলবে এবং ২০৪৭ সালের অমৃত কালের দিকে তাকাবে, এটাই প্রত্যাশিত ছিল৷ অর্থমন্ত্রী সীতারামনের কাজ নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করার পরে আমরা কিছুটা নিশ্চয়তার সঙ্গে অনুমান করেছিলাম যে, প্রধানমন্ত্রী মোদীর শেষ প্রাক–নির্বাচনী প্রধান নীতি নথি হিসাবে আসবে বাজেট ২০২৪৷ এতে অতীতকে উদযাপন করা হবে, বর্তমানকে উদ্দীপিত করা হবে, এবং ভবিষ্যতের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হবে, এ সবই স্বাভাবিক। অবশ্যই এটিকেও একটি ‘‌নির্বাচনী বাজেট’‌ হিসাবেই চিহ্নিত করা হবে। তবে তা নতুন কিছু নয়; 
অর্থমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের ১৯৯৬ সালের ভাষণের সময় থেকে অন্তর্বর্তী বাজেটের অংশ হওয়া নির্বাচনী অনুস্মারকগুলি নতুন স্বাভাবিক হয়ে উঠেছে।


অর্থমন্ত্রী সীতারামনের কাজ নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করার পরে আমরা কিছুটা নিশ্চয়তার সঙ্গে অনুমান করেছিলাম যে, প্রধানমন্ত্রী মোদীর শেষ প্রাক–নির্বাচনী প্রধান নীতি নথি হিসাবে আসবে বাজেট ২০২৪৷ এতে অতীতকে উদযাপন করা হবে, বর্তমানকে উদ্দীপিত করা হবে, এবং ভবিষ্যতের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হবে, এ সবই স্বাভাবিক।

বিশ্বব্যাপী, বাজেট ২০২৪ এমন সময়ে এসেছে যখন ভারত বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতিতে পরিণত হয়েছে।‌ শুধু তাই নয়, দেশটি এক বছরেরও কম সময়ের মধ্যে তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি, দুই বছরে ৫ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের অর্থনীতি, এবং দশক শেষের আগেই ৭ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের অর্থনীতি হওয়ার কাছাকাছি পৌঁছে যাচ্ছে। কৌশলগতভাবে, এটি একটি পরিবর্তিত আঞ্চলিক ব্যবস্থার চূড়ায় দাঁড়িয়ে আছে, এবং হয়ে উঠেছে অর্থনৈতিক বিশ্বব্যবস্থার পূর্বমুখী পরিবর্তনের একটি স্বাক্ষরকারী। ভারত ইন্দো–প্যাসিফিক অঞ্চলে একটি প্রধান খেলোয়াড় এবং আন্তর্জাতিক বিষয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ কণ্ঠস্বর হয়ে উঠেছে।

বৈশ্বিক আখ্যান নির্বিশেষে, ইউনিয়ন বাজেটগুলি হল দেশীয় সত্তা — তারা তাদের  ক্ষমতা এবং তাদের কর্তৃত্ব সীমান্তের মধ্যে থাকা শক্তি থেকে অর্জন করে, বাইরে থেকে নয়। সংখ্যা যতই বাধ্যতামূলক হোক না কেন, অর্থমন্ত্রী সীতারামনের অন্তর্বর্তী বাজেট কল্যাণ বনাম বৃদ্ধির ক্ষেত্রে সমালোচিত হবে — কর্মহীন বৃদ্ধি,
কে–আকৃতির পুনরুদ্ধার,, কোটিপতিদের ভারত ছেড়ে যাওয়ার প্রস্তুতি, দেশে অনেক ধনকুবের, এবং আরও অনেক কিছু। এর বেশিরভাগই হল অর্থনৈতিক ইস্যুতে রাজনৈতিক রঙ লাগানো।


অর্থমন্ত্রী সীতারামনের অন্তর্বর্তী বাজেট কল্যাণ বনাম বৃদ্ধির ক্ষেত্রে সমালোচিত হবে — কর্মহীন বৃদ্ধি, কে–আকৃতির পুনরুদ্ধার, কোটিপতিদের ভারত ছেড়ে যাওয়ার প্রস্তুতি, দেশে অনেক ধনকুবের, এবং আরও অনেক কিছু।

বাজেট ২০২৪–কে একইসঙ্গে বেশ কয়েকটি পরস্পরবিরোধী সমস্যা মোকাবিলা করতে হয়েছে, যেমন দারিদ্র্য ও সমৃদ্ধি, চাকরি ও দাম, এবং আর্থিকীকরণ ও বাজার। বৈষম্য একটি প্রধান বিষয়। তবে এখন ভারতের অবস্থান কিন্তু একটি স্বস্তিদায়ক গিনি কোএফিশিয়েন্টে, যা হল একটি পরিমাপ যা আমাদের জানায় যে বিভিন্ন পরিবারের মধ্যে আয় বা ভোগের বণ্টন সমবণ্টনের নীতি থেকে কতটা বিচ্যুত। ০–এর একটি গিনি সূচক নিখুঁত সমতার প্রতিনিধিত্ব করে, আর ১০০ নিখুঁত অসমতা বোঝায়। ভারতের গিনি কোএফিশিয়েন্ট ৩৪.‌২  , যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৩৯.‌৮ এবং চিনের ৩৭.১–এর চেয়ে ভাল, তবে জার্মানির  ৩১.৭ এবং জাপানের ৩২.৯-এর চেয়ে খারাপ। এটি ২০১১ সালে ছিল ৩৫.৭ ছিল (২০১২, ২০১৩ এবং ২০১৪–এর ডেটা নেই)।

আরও, সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ ভারতীয়দের আয়ের অংশ ২৭.৮ শতাংশে দাঁড়িয়েছে, যেখানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৩০.১ শতাংশ, চিনের ২৯.‌৪ শতাংশ, জাপানের ২৬.৪ শতাংশ এবং জার্মানির ২৫.২ শতাংশ। অর্থনৈতিক সমকক্ষদের মধ্যে, তাই, ভারত বৈষম্যের ফ্রন্টে স্বাচ্ছন্দ্যে অবস্থান করছে। এই প্রেক্ষাপটেই দেখা উচিত
অর্থমন্ত্রী সীতারামনের তাঁদের প্রতি সাম্প্রতিক চ্যালেঞ্জ যাঁরা একটি রাজনৈতিকভাবে উদ্দীপ্ত ও ‘‌বিষাক্ত’‌ পরিবেশে ভারতের বৃদ্ধি কে–আকৃতির পুনরুদ্ধার বলে মনে করেন

ঘটনাকে লাইনচ্যুত করার আখ্যানের এমন শক্তি যে, একটি দেশের চালিকাশক্তি হিসেবে অর্থনীতিকে রাজনীতির সামনে নত করতে হয়। যখন মোদী সরকার একটি তথ্য–সমৃদ্ধ বইয়ের মাধ্যমে তার শাসনের নয় বছর উদযাপন করেছিল, তখন তা শুরু করা হয়েছিল কল্যাণের প্রসঙ্গ দিয়ে, তারপরে ছিল বিদেশ নীতি এবং তারপর এসেছিল অর্থনীতি, অধ্যায় ৮ থেকে ১২ পর্যন্ত। এই ডেটা পয়েন্টগুলি, ডিজিটাল পেমেন্ট ও জিএসটি সংগ্রহ থেকে ইউনিকর্ন ও ব্যবসা করার সুবিধা পর্যন্ত বিভিন্ন বিষয় বাজেট ২০২৪–এ স্থান পাবে, এটাই প্রত্যাশিত ছিল।


যখন মোদী সরকার একটি তথ্য–সমৃদ্ধ বইয়ের মাধ্যমে তার শাসনের নয় বছর উদযাপন করেছিল, তখন তা শুরু করা হয়েছিল কল্যাণের প্রসঙ্গ দিয়ে, তারপরে ছিল বিদেশ নীতি এবং তারপর এসেছিল অর্থনীতি, অধ্যায় ৮ থেকে ১২ পর্যন্ত।

২০১৩ সালে মরগান স্ট্যানলি ভারতকে ‘‌ভঙ্গুর পাঁচ’‌ অর্থনীতির মধ্যে শ্রেণিবদ্ধ করেছিল। এক দশক পরে, ভারত বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতি। ২০১৪ সালে ২ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের জিডিপি–তে ভারত ছিল বিশ্বের দশম বৃহত্তম অর্থনীতি; ২০২৪ সালে ৪ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারে এটি বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতি। এই পরিবর্তনের মূলে রয়েছে মোদী সরকারের নীতি ও সংস্কার।

এর মধ্যে আছে জন ধন যোজনা, যদিও তা শুধু এর মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয় এবং বিশ্বের বৃহত্তম আর্থিকীকরণ প্রকল্প;‌
পণ্য ও পরিষেবা কর, যা ভারতের পরোক্ষ করের সংস্কার করেছে; ইনসলভেন্সি অ্যান্ড ব্যাঙ্কিং কোড, যা দেউলিয়া ঘোষণার প্রক্রিয়াগুলির সংস্কার করেছে; জনবিশ্বাস আইন, যা অপ্রাসঙ্গিক ব্যবসায়িক আইন ও ধারাগুলিকে অপরাধমুক্ত করতে শুরু করেছে; এবং শ্রম বিধি প্রতিষ্ঠা। প্রত্যক্ষ সুবিধা হস্তান্তরের পরিপূর্ণ দক্ষতা প্রান্তিকতম মহিলার জন্যও প্রশাসন ও দুর্নীতির বাধা সরিয়ে দিয়েছে।

পূর্ববর্তী অন্তর্বর্তী বাজেটগুলির মতো, অর্থমন্ত্রী সীতারামনেরও আগামী পাঁচ বছর বা তারও বেশি সময়ের জন্য একটি অর্থনৈতিক নীতির দৃষ্টিভঙ্গি নেওয়ারই কথা ছিল। তাঁর ১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯–এর বক্তৃতায় তৎকালীন অর্থমন্ত্রী পীযূষ গয়াল
‘‌ত্রয়িকা’‌র একটি ত্রিমূর্তি তুলে ধরেছিলেন, যা এখন তুঙ্গে পৌঁছেছে একটি ৫ থেকে ১০ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের জিডিপি হতে চলার সময় ‘‌দশটি মাত্রা’‌ তুলে ধরে। ‘‌‘‌এটি নিছক একটি অন্তর্বর্তীকালীন বাজেট নয়, এটি দেশের উন্নয়ন যাত্রার একটি মাধ্যম,’‌’‌ তিনি বলেছিলেন তাঁর ৯৮ অনুচ্ছেদের ৮,১১৯ শব্দের ভাষণে, যা ছিল দ্বিতীয় দীর্ঘতম অন্তর্বর্তী বাজেট বক্তৃতা (টেবিল দেখুন)।


অন্তর্বর্তী বাজেট: কে কত কিছু বলেছে
বছর                          অর্থমন্ত্রী                        অনুচ্ছেদ           শব্দ
নভেম্বর ১৯৪৭      আর কে ‌ষণ্মুখম চেট্টি         ৩৯               ৯,৯৯৮
ফেব্রুয়ারি ১৯৫২   সি ডি দেশমুখ                       ১৩               ১,৮৮৩
মার্চ ১৯৫৭             টি টি কৃষ্ণমাচারি                  ১৮                 ২,১১৬
মার্চ ১৯৬২            মোরারজি আর দেশাই          ৩৫               ৪,১৬২
মার্চ ১৯৬৭            মোরারজি আর দেশাই           ৪০               ৪,৭৬৯
মার্চ ১৯৭১             ওয়াই বি চহ্বাণ                       ৩৫               ৫,০২১
মার্চ ১৯৭৭            এইচ এম পটেল                                       ৭৯৮
মার্চ ১৯৮০            আর বেঙ্কটরামন                   ৪০                ৩,৪৩১
মার্চ ১৯৯১             যশবন্ত সিনহা                        ২৩                ২,৪৫১
ফেব্রুয়ারি ১৯৯৬   মনমোহন সিং                       ৪৩                ৬,০০২
মার্চ ১৯৯৮             যশবন্ত সিনহা                       ১৬                ১,৩৬৭
ফেব্রুয়ারি ২০০৪    যশবন্ত সিং                            ৫১                ৫,০৪৪
ফেব্রুয়ারি ২০১৪     পি চিদম্বরম                          ৮৫              ৬,৫৯৭
ফেব্রুয়ারি ২০১৯     পীযূষ গয়াল                           ৯৮              ৮,১১৯
সূত্র: কেন্দ্রীয় বাজেট নথি, অর্থ মন্ত্রক, ভারত সরকার




অবশ্যই, সবচেয়ে দীর্ঘ অন্তর্বর্তী বাজেট বক্তৃতা করেছিলেন, অর্থমন্ত্রী আর কে ষণ্মুখম চেট্টি, যিনি ১৯৪৭ সালের নভেম্বরে ৩৯টি অনুচ্ছেদে প্রায় ১০,০০০ শব্দের স্তর স্পর্শ করেছিলেন (টেবিল দেখুন)। এটি নিছক অন্তর্বর্তী বাজেট বক্তৃতা ছিল না; এটি ছিল স্বাধীনতার উদযাপন এবং স্বশাসনের স্বীকৃতি। তিনি বলেছিলেন, ‘‌‘‌দুই  শতাব্দীর মধ্যে প্রথমবারের জন্য আমাদের নিজস্ব একটি সরকার আছে, যাকে তার কাজের জন্য জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে হবে।’‌’‌ এটি একটি ‘‌অন্তর্বর্তী’‌ বাজেট ছিল, এবং তার পরে ফেব্রুয়ারি ১৯৪৮–এ পূর্ণাঙ্গ বাজেট প্রকাশিত হয়েছিল।

তৃতীয় দীর্ঘতম অন্তর্বর্তী বাজেট বক্তৃতাটি ছিল ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরমের। তিনি দুটি ইউপিএ সরকারের বিগত ১০ বছরের পক্ষে যুক্তি সাজিয়েছিলেন, যা ‘‌ভারত ও ভারতীয়দের ধীরে ধীরে স্বীকার করতে বাধ্য করেছিল যে বৃদ্ধি হল একটি বাধ্যবাধকতা’‌। খাদ্য উৎপাদন থেকে স্থাপিত শক্তি ক্ষমতা পর্যন্ত, তিনি জড়তার অভিযোগ মোকাবিলা করার জন্য পরিসংখ্যান প্রস্তাব করে বলেছিলেন, ‘‌‘‌আমি নীতি পক্ষাঘাতের যুক্তি প্রত্যাখ্যান করি।’‌’‌ তিনি তাঁদের আনা বিভিন্ন আইনের কথা মনে করিয়ে দেন:‌ জমি অধিগ্রহণ, পুনর্বাসন ও পুনর্স্থাপন আইনে ন্যায্য ক্ষতিপূরণ ও স্বচ্ছতার অধিকার; জাতীয় খাদ্য নিরাপত্তা আইন; এবং নতুন কোম্পানি আইন। তিনি জাতীয় পেনশন ব্যবস্থাকে একটি গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার হিসাবে উল্লেখ করেছিলেন, যার থেকে
কংগ্রেস সম্প্রতি হিমাচল প্রদেশ, ছত্তিশগড়, ঝাড়খণ্ড ও রাজস্থানে ইউ–টার্ন করে

সবচেয়ে সংক্ষিপ্ত অন্তর্বর্তী বাজেট ছিল অর্থমন্ত্রী এইচ এম পটেলের ১৯৭৭ সালের মার্চ মাসের বক্তৃতা। তার আগে জরুরি অবস্থার মাধ্যমে ভারতের উপর সবচেয়ে খারাপ আক্রমণ নেমে এসেছিল, যার ফলে কংগ্রেস নির্বাচনে হেরে যায়। পটেল তাঁর ৭৯৮ শব্দের বক্তৃতায় আসন্ন রাজনৈতিক পরিবর্তনকে স্বীকার করে বলেছিলেন, ‘‌‘‌আমাদের অর্থনৈতিক নীতি ও অগ্রাধিকারগুলি পুনর্নির্দেশ করার জরুরি প্রয়োজন রয়েছে।’‌’‌


সবচেয়ে সংক্ষিপ্ত অন্তর্বর্তী বাজেট ছিল অর্থমন্ত্রী এইচ এম পটেলের ১৯৭৭ সালের মার্চ মাসের বক্তৃতা। তার আগে জরুরি অবস্থার মাধ্যমে ভারতের উপর সবচেয়ে খারাপ আক্রমণ নেমে এসেছিল, যার ফলে কংগ্রেস নির্বাচনে হেরে যায়।

তার পরে আসে অর্থমন্ত্রী যশবন্ত সিনহার মার্চ ১৯৯৮–এর ১,৩৬৭ শব্দের বক্তৃতা। তিনি অর্থনৈতিক সংস্কার গভীর, সম্প্রসারিত ও ত্বরান্বিত করার বিষয়ে কথা বলেছিলেন। অর্থমন্ত্রী সি ডি দেশমুখের ১৯৫২ সালের ফেব্রুয়ারির ভাষণটি ছিল তৃতীয় সংক্ষিপ্ততম ভাষণ। এটি ছিল খাদ্য ঘাটতির সময়, এবং দেশমুখ পরিস্থিতি সম্পর্কে সচেতন ছিলেন — তাঁর ১৩টি অনুচ্ছেদের মধ্যে সাতটিতে তিনি খাদ্য ও কৃষি সম্পর্কে কথা বলেছিল।

১৯৯৬ সাল থেকে, তৎকালীন অর্থমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের দেখানো পথ ধরে, অন্তর্বর্তী বাজেটগুলি এমন প্ল্যাটফর্মে পরিণত হয়েছে যা অতীতের কাজের কথা তুলে ধরে এবং ভবিষ্যতের রাজনৈতিক অভিপ্রায়কে প্রভাবিত করে৷ মনমোহন সিং আমাদের তাঁর ১৯৯১ সালের জুলাইয়ের ঐতিহাসিক ভাষণটির কথা মনে করিয়ে দিয়েছিলেন যা ভারতীয় অর্থনীতিকে উদার করেছিল, এবং তাঁর ফেব্রুয়ারি ১৯৯৬ সালের অন্তর্বর্তী বাজেটে ‘‌এক নতুন ভারত গড়ার’‌ প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। চোদ্দ বছর পর, ফেব্রুয়ারি ২০০৪ সালের অন্তর্বর্তী বাজেটে অর্থমন্ত্রী যশবন্ত সিং পোখরান–পরবর্তী অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞাগুলির মোকাবিলা করা ও পূর্ব এশিয়ার সঙ্কট থেকে রক্ষা পাওয়া থেকে শুরু করে দুটি সীমান্ত স্থবিরতা (‌স্ট্যান্ড–অফ)‌ ও উপসাগরীয় যুদ্ধ পর্যন্ত বেশ কিছু অর্জনের কথা বলেছিলেন।


মনমোহন সিং আমাদের তাঁর ১৯৯১ সালের জুলাইয়ের ঐতিহাসিক ভাষণটির কথা মনে করিয়ে দিয়েছিলেন যা ভারতীয় অর্থনীতিকে উদার করেছিল, এবং তাঁর ফেব্রুয়ারি ১৯৯৬ সালের অন্তর্বর্তী বাজেটে ‘‌এক নতুন ভারত গড়ার’‌ প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।

এই প্রবণতা পি চিদম্বরম ও পীযূষ গোয়েল পর্যন্ত অব্যাহত ছিল। অর্থমন্ত্রী সীতারামনও যে একই পথ অনুসরণ করবেন তাতে কোনও সন্দেহ ছিল না। একমাত্র প্রশ্ন ছিল ১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪–এ কি তাঁকে ভারতের দীর্ঘতম অন্তর্বর্তী বাজেট বক্তৃতা দিতে দেখা যাবে? শেষ অবধি তা ঘটেনি (‌এটি পঞ্চম দীর্ঘতম)‌। তবে গত এক দশকে এনডিএ সরকারের অর্জন, একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন, ধারাবাহিকতা ও ফলাফলের একটি দৃঢ় নীতি অভিপ্রায়, এবং তাঁর পূর্বসূরিদের প্রবণতা থেকে বলা যায়, তেমনটা হতেই পারত।



গৌতম চিকারমানে অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট।

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.