Author : Girish Luthra

Occasional PapersPublished on Dec 13, 2022
ballistic missiles,Defense,Doctrine,North Korea,Nuclear,PLA,SLBM,Submarines

রাশিয়া–ইউক্রেন দ্বন্দ্ব ও নিষেধাজ্ঞা: অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক প্রভাবের মূল্যায়ন

  • Girish Luthra

    আধুনিক সময়ে নিষেধাজ্ঞার ব্যবস্থাগুলি নীতির প্রধান উপকরণ হিসাবে বিকশিত হয়েছে, এবং শীতল যুদ্ধের সমাপ্তির পর থেকে সেগুলির ব্যবহার দ্রুত বৃদ্ধি পেয়েছে। রাশিয়া–ইউক্রেন সংঘাতের প্রেক্ষাপটে ২০১৪ সাল থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন ব্যাপকভাবে নিষেধাজ্ঞাগুলি ব্যবহার করেছে, আর ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের পরে বাস্তবায়িত হয়েছে নতুন একপ্রস্ত ধারালো ও সর্বাত্মক নিষেধাজ্ঞা৷ এই গবেষণাপত্রটি রাশিয়া, নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা দেশগুলি, এবং বাকি বিশ্বের উপর নিষেধাজ্ঞার রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক প্রভাব পরীক্ষা করেছে।

    আরোপণ: গিরিশ লুথরা, ‘‌‘‌রাশিয়া–ইউক্রেন কনফ্লিক্ট অ্যান্ড স্যাংশনস: অ্যান অ্যাসেসমেন্ট অফ দ্য পলিটিকাল অ্যান্ড ইকনমিক ইমপ্যাক্ট,’‌’‌ ও আর এফ অকেশনাল পেপার নং ৩৭৪, অক্টোবর ২০২২, অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশন।

ভূমিকা

রাজনৈতিক উদ্দেশ্য সাধনের জন্য অর্থনৈতিক অস্ত্রের ব্যবহার দীর্ঘদিন ধরে রাষ্ট্রীয় কৌশলের একটি অঙ্গ, যদিও এর ব্যবহারের পদ্ধতিগুলি ক্রমাগত বিকশিত হয়েছে। বিংশ শতাব্দীতে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা ব্যবহার করার অনুশীলন— ব্যাখ্যা করে বললে বৈদেশিক নীতির কারণে বাণিজ্য ও আর্থিক ব্যবস্থাপনা প্রত্যাহার—প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় আকার নিতে শুরু করে। ধারণাটি যুদ্ধকালীন অবরোধ ও নিষেধাজ্ঞার ব্যাপক ব্যবহার থেকে অনুপ্রাণিত ছিল, এবং ১৯১৯ সালে লিগ অফ নেশনস–এর চুক্তিতে (অনুচ্ছেদ ১৬) আনুষ্ঠানিকভাবে অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল। ‘অর্থনৈতিক অস্ত্র’‌ বলে আখ্যাত নিষেধাজ্ঞাগুলিকে যুদ্ধের প্রতিষেধক হিসাবেও কল্পনা করা হয়েছিল।[১]

আন্তঃযুদ্ধকালীন সময়ে নিষেধাজ্ঞাগুলি সীমিত সাফল্য পেলেও ব্যবহৃত হয়েছিল যুদ্ধ প্রতিরোধের একটি মূল হাতিয়ার হিসাবে, এবং নতুন উদার আন্তর্জাতিকতার গঠনে তা একটি প্রধান ভূমিকা পালন করেছিল। রাষ্ট্রপুঞ্জের সনদের ৪১ অনুচ্ছেদের অধীনেও নিষেধাজ্ঞার ব্যবস্থা বহাল রাখা হয়েছিল,[২] যার ফলে তার বৈধতা ও আইনি ভিত্তি স্থায়ী হয়।[৩] যদিও শীতল যুদ্ধের সময় অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার ব্যবহার ধীরে ধীরে স্বাভাবিক করা হয়েছিল, তবে শীতল যুদ্ধের পরবর্তী সময়ে সেগুলির ব্যবহার নাটকীয়ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছিল, বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হাতে (চিত্র ১ দেখুন)।

চিত্র ১: অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার ঘটনা (১৯৫০–২০১৯)

সূত্র: গ্লোবাল স্যাংশনস ডেটাবেস[৪]

আধুনিক অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার কার্যকারিতা নিয়ে বছরের পর বছর ধরে বিতর্ক চলেছে। উদ্দেশ্যমূলক রাজনৈতিক ফলাফল অর্জনে তাদের সাফল্য বা ব্যর্থতা নির্ধারণের জন্য নিষেধাজ্ঞাগুলিকে ব্যাপকভাবে বিশ্লেষণও করা হয়েছে। অনেকে যুক্তি দিয়েছেন যে নিষেধাজ্ঞা, বিশেষ করে একতরফা নিষেধাজ্ঞা, খুব কমই কাজ করে এবং তা অনেক ক্ষেত্রেই অনৈতিক। তাছাড়া এর অনেক অবাঞ্ছিত পরিণতি হতে পারে।[৫]   কেউ কেউ বলেছেন যে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার উপযোগিতা এই কারণে সীমিত যে আধুনিক রাষ্ট্রগুলি কম ভঙ্গুর বা দুর্বল।[৬] নিষেধাজ্ঞার সমর্থকেরা অবশ্য যুক্তি দেন যে এই ধরনের পদক্ষেপগুলিকে একটি স্বতন্ত্র নীতিবিকল্প হিসাবে দেখা উচিত;‌ কারণ অন্য বিকল্পগুলির সঙ্গে তুলনামূলক বিশ্লেষণ ছাড়াই সাফল্য বা ব্যর্থতার আয়না দিয়ে দেখা হলে তা অর্থবহ হবে না।[৭] ঘটনাচক্রে, অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার কার্যকারিতা মূল্যায়ন করা কঠিন, কারণ এখন সেগুলি একটি পরিপূরক নীতির হাতিয়ার হয়ে উঠেছে, এবং খুব কমই বিচ্ছিন্নভাবে প্রযুক্ত হয়।[৮]

চলতি রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধের মধ্যে বেশ কয়েকটি দেশ রাশিয়ার বিরুদ্ধে অত্যন্ত উচ্চ মাত্রায় এবং পরিসরে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা প্রয়োগ করেছে। যুদ্ধক্ষেত্রে, প্রতিবেশী এলাকায় এবং বৈশ্বিক পর্যায়ে এই নিষেধাজ্ঞার প্রভাব এখনও উন্মোচিত হচ্ছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তী বিভিন্ন সময়ে রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা প্রয়োগ করা হলেও এই গবেষণাপত্রটি রাশিয়া–ইউক্রেন সংঘর্ষের প্রেক্ষাপটে ব্যবহৃত অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার ব্যাপক অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক প্রভাব পরীক্ষা করেছে। এই মূল্যায়নটি ২০১৪ সালে রাশিয়ার ক্রিমিয়াকে সংযুক্ত করা এবং পূর্ব ইউক্রেনে অন্যান্য কার্যকলাপের পরে প্রাথমিকভাবে ব্যবহৃত নিষেধাজ্ঞাগুলি, ২০১৪–২১ সময়কালে সেগুলির ক্রমবর্ধমান বৃদ্ধি, এবং চলতি যুদ্ধের সময় আরোপিত নিষেধাজ্ঞার নতুন পরিসরের (২০২২–এর ফেব্রুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর এর মধ্যে) সঙ্গে সম্পর্কিত। তবে এই পেপারটি এই অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞাগুলির সাফল্য বা ব্যর্থতা বিশ্লেষণ করতে আগ্রহী নয়।

২০১৪ থেকে ২০২১–এর মধ্যে রাশিয়ার উপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা

পূর্ব ইউরোপে ভূখণ্ডগত দাবির একটি দীর্ঘ ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট রয়েছে, তবে শীতল যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর থেকেই ইউরোপীয় নিরাপত্তা কাঠামো নিয়ে পশ্চিম ও  রাশিয়ার মধ্যে একটি বড় ধরনের মতবিরোধ রয়েছে। নর্থ অ্যাটলান্টিক ট্রিটি অরগানাইজেশন (ন্যাটো)–এর ক্রমান্বয় সম্প্রসারণ রাশিয়ার জন্য সমস্যাসঙ্কুল ছিল, এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন দীর্ঘদিন ধরে অনুভব করেছিলেন যে পশ্চিমীরা রাশিয়ার বিরুদ্ধে তাদের ভূ–রাজনৈতিক উচ্চাকাঙ্ক্ষার অংশ হিসেবে ইউক্রেনের জাতীয় পরিচয়ের বিবর্তনকে তুলে ধরছে।[৯] ২০০৮ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ইস্টার্ন পার্টনারশিপ চালু করে, যা ছিল পূর্ব ইউরোপীয় দেশগুলির সঙ্গে একটি অর্থনৈতিক সহযোগিতার ব্যবস্থা এবং তা অ্যাসোসিয়েশন এগ্রিমেন্টের ভিত্তি প্রদান করেছিল।[ক] ২০১৩ সালের নভেম্বরে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ভিক্টর ইয়ানুকোভিচের সময় ইউক্রেন ইইউ–র সঙ্গে বাণিজ্যের জন্য অ্যাসোসিয়েশন এগ্রিমেন্টে স্বাক্ষর করতে অস্বীকার করে। রাশিয়া ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে বিকল্প হিসাবে ইউক্রেনকে একটি ঋণ প্রদান করেছিল, যার বিরুদ্ধে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে বিক্ষোভ হয়। এটি সাধারণত ময়দান বিদ্রোহ হিসাবে উল্লেখিত হয়।[খ] এরপর ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৪–এ ইয়ানুকোভিচকে ক্ষমতাচ্যুত করে একটি অন্তর্বর্তী সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়। রাশিয়া দাবি করেছিল যে ক্ষমতাচ্যুত করানোর কাজটির পিছনে ছিল পশ্চিমীদের মদত;‌ আর ইইউ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বলেছিল যে গণঅভ্যুত্থান ও বিক্ষোভ দমনে ইয়ানুকোভিচ সরকারের শক্তি প্রয়োগের কারণে এটি ঘটেছিল। এর পাঁচ দিন পরে, ২৭ ফেব্রুয়ারি, রাশিয়ার বিশেষ দলগুলি ক্রিমিয়ার সেভাস্তোপল বিমানবন্দরের নিয়ন্ত্রণ নেয়। ইতিমধ্যে পূর্ব ইউক্রেনের ডনবাস অঞ্চল নিয়ে গঠিত লুহানস্ক ও দোনেৎস্ক ওব্লাস্ট (প্রদেশ) দেশ থেকে স্বাধীনতা ঘোষণা করে লুহানস্ক গণপ্রজাতন্ত্র ও দোনেৎস্ক গণপ্রজাতন্ত্র গঠন করে। ২০১৪ সালের মার্চের মাঝামাঝি রাশিয়া ক্রিমিয়ার সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেয়, এবং সেখানে একটি নতুন সরকার প্রতিষ্ঠা করে। পরবর্তী সময়ে রুশ বিশেষ দলগুলি ডনবাস অঞ্চলে ঢুকে যায়।

২০১৪ সালের মার্চে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইইউ রাশিয়ার ক্রিমিয়াকে সংযুক্ত করা ও পূর্ব ইউক্রেনে পদক্ষেপের কারণে তার বিরুদ্ধে লক্ষ্যযুক্ত অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। নিষেধাজ্ঞাগুলি প্রাথমিকভাবে ক্রিমিয়া ও পূর্ব ইউক্রেনের সঙ্গে সম্পর্কিত ব্যক্তি ও ব্যবসার উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে করা হলেও ধীরে ধীরে সেই বছরের মধ্যেই রুশ অর্থনীতির অন্যান্য সত্তা ও ক্ষেত্রেও প্রসারিত হয়েছিল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইইউ–এর নিষেধাজ্ঞা ব্যবস্থাগুলি ব্যাপকভাবে একই রকম ছিল:‌ সেগুলি আর্থিক, তেল ও গ্যাস, প্রতিরক্ষা ও প্রযুক্তি ক্ষেত্রের ব্যক্তি ও সত্তার উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করেছিল (সারণি ১ দেখুন)। ইইউ এবং মার্কিন অর্থনীতিতে সম্ভাব্য  প্রতিকূল প্রভাব হ্রাস করার বিষয়টি মাথায় রেখে দাম আরোপ করার জন্য সেগুলি রুশ অর্থনীতিকে মূল লক্ষ্য করেছিল। বিষয়টি ই ইউ–র জন্য বিশেষভাবে প্রাসঙ্গিক ছিল, কারণ ২০১৩ সালে রাশিয়ার ৫৩ শতাংশ রপ্তানি ও ৪৬ শতাংশ পণ্য আমদানির অংশীদার ছিল ই ইউ, এবং রাশিয়ার বিদেশি ব্যাঙ্ক ঋণের ৭৫ শতাংশ এসেছিল ইউরোপীয় ব্যাঙ্কগুলি থেকে।[১০] এই সতর্কতা অবলম্বনের কারণ ছিল বহু দশক পরে একটি প্রধান বিশ্ব অর্থনীতির বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হচ্ছিল, এবং প্রেরক দেশগুলির (নিষেধাজ্ঞা আরোপকারী দেশগুলি) উপর এর প্রভাব সীমিত করা অপরিহার্য ছিল।

রাশিয়ার বিরুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইইউ কর্তৃক আরোপিত নিষেধাজ্ঞায় রাষ্ট্রপুঞ্জের অনুমোদন ছিল না, যদিও রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ পরিষদে ইউক্রেনের আঞ্চলিক অখণ্ডতার উপর একটি প্রস্তাব গৃহীত হয়েছিল, এবং ক্রিমিয়ার অবৈধ দখলকে স্বীকৃতি না–দেওয়ার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অনুরোধ করা হয়েছিল।[১১]

সারণি ১: রাশিয়ার উপর মার্কিন এবং ই ইউ নিষেধাজ্ঞার সংক্ষিপ্ত বিবরণ (২০১৪ সালে আরোপিত)

সূত্র: রেডিয়ো ফ্রি ইউরোপ/রেডিয়ো লিবার্টি[১২]

‌রাশিয়া ২০১৪ সালের অগস্টে পাল্টা নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করেছিল, যা প্রাথমিকভাবে ইইউ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে নির্দিষ্ট খাদ্য ও খামারজাত সামগ্রী আমদানি নিষিদ্ধ করে। এটি নির্দিষ্ট ব্যক্তিদের রাশিয়া ভ্রমণও নিষিদ্ধ করেছিল। এই ব্যবস্থাটি অন্যদের লক্ষ্যে পরিণত করার পরিবর্তে স্বনির্ভর হওয়ার পরিকল্পনার অংশ হিসাবে খাদ্যপণ্যের উপর পাল্টা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল, এবং যে কোনও বড় খাদ্য ঘাটতি কাটিয়ে উঠতে আমদানি প্রতিস্থাপনের পরিকল্পনার অংশ ছিল।

২০১৫ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ধীরে ধীরে ২০১৪ সালে আরোপ করা নিষেধাজ্ঞাগুলিকে শক্তিশালী করেছে। মার্কিন নির্বাচন প্রক্রিয়ায় কথিত রুশ  হস্তক্ষেপ, অপরাধমূলক সাইবার কার্যকলাপ, মানবাধিকার লঙ্ঘন, রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের অভিযোগ, অস্ত্র বিস্তার, উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে অবৈধ বাণিজ্য, এবং সিরিয়া ও ভেনিজুয়েলাকে সমর্থনের অভিযোগ–সহ বিস্তৃত উদ্দেশ্য অন্তর্ভুক্ত করার জন্য নিষেধাজ্ঞার ব্যবস্থা প্রসারিত করা হয়।[১৩] ২০১৭ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ২০১৪ থেকে ইউক্রেন সম্পর্কিত নিষেধাজ্ঞার উপর চারটি প্রেসিডেন্টের নির্বাহী আদেশকে বিধিবদ্ধ করেছিল কাউন্টারিং রাশিয়ান ইনফ্লুয়েন্স ইন ইউরোপ অ্যান্ড ইউরেশিয়া অ্যাক্ট–এর মাধ্যমে। এই ব্যবস্থাটি প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে আমেরিকার বৃহত্তর লড়াইয়ের অংশ ছিল।[১৪] এরপর ২০২০ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ার ডিপ ওয়াটার, আর্কটিক অফশোর, ও তেল উৎপাদনের সম্ভাবনাময় শেল প্রকল্পগুলির উন্নয়ন সম্পর্কিত বাণিজ্য নিষিদ্ধ করে।[১৫]

২০১৪ সালে ই ইউ নিষেধাজ্ঞা প্রক্রিয়ার সমান্তরালে জি৮ শীর্ষ সম্মেলনের প্রস্তুতি স্থগিত করে, যা জুনে রাশিয়ার সোচিতে নির্ধারিত ছিল। সেই বছর রাশিয়াকে জি৮ থেকে বাদ দেওয়া হয়, এবং ইকনমিক কোঅপারেশন অ্যান্ড ডেভলপমেন্ট সংস্থায় অন্তর্ভুক্ত করার আলোচনা স্থগিত করা হয়।[১৬] ইইউ স্থির করে যে রাশিয়াকে সংঘাত প্রশমনের জন্য নির্দিষ্ট পদক্ষেপ করতে হবে, এবং তারা ২০১৪ সালে ইউক্রেন, জর্জিয়া ও মলদোভার সঙ্গে অ্যাসোসিয়েশন চুক্তি স্বাক্ষর করে। ফেব্রুয়ারি ২০১৫-এ ই ইউ মিনস্ক চুক্তিতে[গ] তার সমর্থন ঘোষণা করে, এবং তারপরে সেই চুক্তি বাস্তবায়নের সঙ্গে নিষেধাজ্ঞার ব্যবস্থাকে সংযুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেয়। ইউরোপীয় কাউন্সিল পর্যায়ক্রমে পরবর্তী বছরগুলিতে ২০১৪–র নিষেধাজ্ঞার পরিধি প্রসারিত এবং দীর্ঘায়িত করেছে। ২০১৯ সালের মার্চে ইইউ কের্চ প্রণালী ও আজভ সাগরে সংঘাত বৃদ্ধির প্রতিক্রিয়ায় ব্যক্তি ও সত্তার উপর অতিরিক্ত নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে।[১৭]

নিষেধাজ্ঞার প্রভাব

● অর্থনৈতিক: অন্য নীতি, বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক কারণগুলি আরোপিত  নিষেধাজ্ঞার প্রভাবগুলিকে পৃথক করার পথে অন্তরায় হয়, আর সেই কারণে ইউক্রেন পরিস্থিতির উপর ২০১৪–২০২১ সময়কালে রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার অর্থনৈতিক প্রভাব সঠিকভাবে মূল্যায়ন করা কঠিন। এই চ্যালেঞ্জটি আরও জটিল হয়েছে রাশিয়ার গৃহীত প্রশমন ব্যবস্থার প্রভাব মূল্যায়নের সীমাবদ্ধতার কারণে, যার মধ্যে আছে আমদানি প্রতিস্থাপন, বাণিজ্য বৈচিত্র্যকরণ, বিকল্প উৎস থেকে বিনিয়োগ চাওয়া, এবং মুদ্রার অবমূল্যায়ন। সেই সময়ে তেলের উচ্চ মূল্য থাকা সত্ত্বেও ২০১২ ও ২০১৩ সালেই রাশিয়ার অর্থনীতি মন্থর হয়ে গিয়েছিল। ২০১৪–র জুন থেকে ২০১৫ সালের প্রথম দিকের মধ্যে অপরিশোধিত তেলের দাম প্রায় ৫০ শতাংশ হ্রাস পায়, এবং ২০১৬ সালের শুরুর দিকেই তলানিতে নেমে যায়।[১৮] ২০১৯ সালে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আই এম এফ) মূল্যায়ন করে যে ২০১৪–২০১৮ সময়কালে নিষেধাজ্ঞাগুলি রুশ জিডিপি–তে বার্ষিক ০.২ শতাংশ নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছিল, যেখানে তেলের দাম হ্রাস বার্ষিক ০.৭ শতাংশের মতো বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছিল।[১৯] তবে রুশ অর্থনীতিতে প্রভাব সম্পর্কে তাদের মূল্যায়নে বিভিন্ন উৎস ভিন্নমত পোষণ করে (টেবল ২ দেখুন)।

সারণি ২: রুশ অর্থনীতির মূল সূচক (২০১৪–২০১৯)

সূত্র: বিশ্বব্যাঙ্কের তথ্য,[২০] সেন্ট্রাল ব্যাঙ্ক অফ রাশিয়া,[২১] এবং ওয়র্ল্ড ইনটিগ্রেটেড ট্রেড সলিউশনস[২২]।

‌রুশ বৈদেশিক ঋণ ২০১৪ সালের ৫৫৩.১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার থেকে ২০১৯ সালে ৪৮৪.২৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে হ্রাস পেয়েছে, কারণ পশ্চিমী ব্যাঙ্ক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলি ক্রেডিট বিধিনিষেধ আরোপ করেছে, এবং ঋণের পুনর্অর্থায়ন করা নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা রুশ কোম্পানিগুলির জন্য কঠিন হয়ে উঠেছে।[২৩] বিদেশি প্রত্যক্ষ বিনিয়োগ (এফডিআই) কমে যাওয়ার কারণে এবং বিদেশি পুঁজির প্রবেশ হ্রাসের কারণে রাশিয়ার অর্থনীতি প্রভাবিত হয়েছিল। একটি সমীক্ষায় ২০১৪–২০২০ সময়কালে সমন্বিত ক্ষতি ৬৪৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার (ঋণ হারানোর কারণে ৪৭৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, ১৬৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এফডিআই হারানোর কারণে) বলে অনুমান করা হয়েছে।[২৪]  এই ক্ষতিগুলির সঙ্গে পুঁজির বড় ধরনের বহিঃপ্রবাহ এবং একটি সতর্ক সামগ্রিক অর্থনৈতিক (‌ম্যাক্রোইকনমিক)‌ নীতি সংযুক্ত ছিল, যা রুশ সরকারকে কর বাড়াতে  ও সরকারি খরচ কমাতে বাধ্য করেছিল। এটি রুশ নেতৃত্বকে আরও কেন্দ্রীভূত রাজনৈতিক অর্থনীতির পথে যাওয়ার নীতির ন্যায্যতা প্রমাণ করার সুযোগ দেয়।[২৫] এই সময়ে রাশিয়াও জোর দিয়ে বলেছিল যে নিষেধাজ্ঞার অর্থনৈতিক প্রভাব নগণ্য ছিল, কারণ মুদ্রাস্ফীতি কম ছিল, বৈদেশিক ঋণ কম ছিল, চলতি খাতে যথেষ্ট উদ্বৃত্ত ছিল এবং শক্তিশালী আন্তর্জাতিক মুদ্রার সঞ্চয় ছিল।

● রাজনৈতিক: ২০১৪ সালে শুরু হওয়া নিষেধাজ্ঞাগুলির রাজনৈতিক উদ্দেশ্য ছিল রাশিয়াকে আন্তর্জাতিকভাবে বিচ্ছিন্ন করা; ইউক্রেনে সামরিক অভিযান প্রসার থেকে রাশিয়াকে নিবৃত্ত করা; এবং অর্থনৈতিক খরচ আরোপ করে একটি অনুকূল রাজনৈতিক মীমাংসায় পৌঁছনো, যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইইউ দ্বারা কল্পনা করা ইউরোপীয় নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক শৃঙ্খলার পথ প্রশস্ত করবে। প্রাথমিকভাবে, নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিষয়টি ফেব্রুয়ারি ২০১৫ সালের মিনস্ক চুক্তির সফল বাস্তবায়নের সঙ্গে সম্পর্কিত ছিল, যার মধ্যে দোনেৎস্ক ও লুহানস্ক অঞ্চলে একটি পূর্ণ যুদ্ধবিরতি, সমস্ত ভারী অস্ত্র প্রত্যাহার, একটি বাফার জোন তৈরি করা, সমগ্র দ্বন্দ্ব–অঞ্চলে ইউক্রেনীয় নিয়ন্ত্রণ, স্থানীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের উপর আলোচনা, এবং ২০১৫ সালের শেষ নাগাদ দোনেৎস্ক ও লুহানস্কের জন্য বিশেষ মর্যাদা সহ ইউক্রেনের একটি নতুন সংবিধান অন্তর্ভুক্ত ছিল।[২৬] যাই হোক, মিনস্ক চুক্তি বাস্তবায়িত হয়নি প্রধানত দুই পক্ষের মধ্যে আস্থার অভাবের কারণে। এদিকে বিতর্কিত অঞ্চলে লড়াই ও গোলাবর্ষণ অব্যাহত রয়েছে, কিছু অংশে অচলাবস্থা রয়েছে। নিষেধাজ্ঞাগুলি রাশিয়া বা বিদ্রোহীদের তাদের নিয়ন্ত্রণাধীন অঞ্চলগুলি থেকে সরে যেতে বাধ্য করেনি।[২৭] ন্যাটো ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ২০১৬–১৭ সালে পূর্ব ইউরোপীয় ন্যাটো দেশগুলিতে অতিরিক্ত সৈন্য মোতায়েন করেছিল,[২৮] মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ২০১৮ থেকে ইউক্রেনে কিছু উন্নত অস্ত্র সরবরাহ শুরু করে,[২৯] এবং মার্কিন–ন্যাটো–ইউক্রেন সামরিক অনুশীলনও ২০১৮ সালে শুরু হয়েছিল।[৩০] ২০২১ সালে, বৃহৎ আকারে সৈন্য ও ভারী অস্ত্রশস্ত্র মোতায়েনের পাশাপাশি রাশিয়া দাবি করেছিল যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো পূর্ব ইউরোপে সামরিক কার্যক্রম বন্ধ করবে, ন্যাটোর আরও সম্প্রসারণ বন্ধ করবে, এবং প্রতিশ্রুতি দেবে যে ইউক্রেন কখনই ন্যাটোতে যোগদান করবে না।[৩১] স্পষ্টতই, পশ্চিমী নিষেধাজ্ঞাগুলি পূর্ব ইউরোপ ও ইউক্রেনে রাশিয়ার রাজনৈতিক লক্ষ্য ও কৌশলগুলিকে ম্লান করতে ব্যর্থ হয়েছে।

সামগ্রিকভাবে, নিষেধাজ্ঞাগুলি রাশিয়ান অর্থনীতিতে একটি প্রতিকূল (কিন্তু খুব গুরুতর নয়) প্রভাব ফেলেছিল। এটি রাশিয়াকে ভবিষ্যতে পুরো দফার নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে তার অর্থনৈতিক দুর্বলতা সর্বাধিক হ্রাস করার জন্য তৈরি হতে সক্ষম করেছে। [৩২] রাজনৈতিক পর্যায়ে এর প্রভাব ছিল নগণ্য। পুতিনের জন্য রাশিয়ায় জনসমর্থন শক্তিশালী ছিল, আর আন্তর্জাতিক স্তরে রাশিয়াকে কার্যকরভাবে বিচ্ছিন্নও করা যায়নি।[৩৩] নিষেধাজ্ঞাগুলি একটি পূর্ণ মাত্রার যুদ্ধকে বিলম্বিত করেছে, তবে থামাতে পারেনি।

২০২২ সালে রাশিয়ার বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা

২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেন কৌশলগত অংশীদারির উপর একটি যৌথ বিবৃতি জারি করে,[৩৪] যার মধ্যে ছিল নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা সহযোগিতা গভীর করার প্রতিশ্রুতি, রাশিয়াকে তার আগ্রাসনের জন্য দায়ী করা, ইউক্রেনের ইউরো–আটলান্টিক আকাঙ্ক্ষাকে সমর্থন করা এবং ইউক্রেনকে নিরাপত্তা সহায়তা প্রদান করা। এরপরেই, রাশিয়া শক্তি প্রয়োগের হুমকি দেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে ইঙ্গিত পাওয়া যায়। পশ্চিমী দেশগুলি ও রাশিয়ার মধ্যে একটি সমাধান খুঁজে বের করতে এবং যুদ্ধ প্রতিরোধ করতে কূটনৈতিক আলোচনায় সামান্য অগ্রগতি হয়। রাশিয়াকে নিরস্ত করার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ২৫ জানুয়ারি ২০২২–এ ঘোষণা করেছিল যে যদি রাশিয়া ইউক্রেনকে আবার আক্রমণ করে তবে সে এবং তার মিত্র ও অংশীদাররা রাশিয়ার বিরুদ্ধে ‘‌কঠোর’‌ অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে তৈরি আছে, এবং এই নিষেধাজ্ঞাগুলি ‘দ্বন্দ্বের সিঁড়ির শীর্ষ বিন্দুতে শুরু হবে এবং সেখানেই থাকবে’‌।[৩৫] ১৯ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলন সহ বিভিন্ন ফোরামে নিষেধাজ্ঞার হুমকির পুনরাবৃত্তি হয়েছিল।[৩৬]  লুহানস্ক ও দোনেৎস্ক অঞ্চলের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে স্বীকৃতি দিয়ে পুতিন একটি ডিক্রিতে স্বাক্ষর করার পরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইইউ, ব্রিটেন ও আরও কয়েকটি অংশীদার ২১ ফেব্রুয়ারি থেকে নিষেধাজ্ঞা জারি করতে শুরু করেছিল। ২৪ ফেব্রুয়ারি রুশ বাহিনী ইউক্রেন আক্রমণ করে;‌ পুতিন ‘‌একটি বিশেষ সামরিক অভিযান পরিচালনার বিষয়’‌ নিয়ে টেলিভিশন ভাষণে দিয়েছিলেন, যা রাশিয়ার সামরিক অভিযানের পক্ষে বিশদ যুক্তি দেয়।[৩৭] তিনি জোর দিয়ে বলেন যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি করা শীতল যুদ্ধ–উত্তর আন্তর্জাতিক স্থাপত্য, ন্যাটোর ক্রমাগত পূর্বমুখী সম্প্রসারণ, এবং এক অবান্ধব ইউক্রেনের প্রতি বহিরাগত সমর্থন রাশিয়ার কাছে সামরিক পদক্ষেপ করা ছাড়া আর কোনও বিকল্প রাখেনি। তিনি সামরিক অভিযানের উদ্দেশ্য সম্পর্কে বলেছিলেন:‌  ‘‘‌সেই মানুষদের রক্ষা করা যারা আট বছর ধরে কিয়েভের শাসনে অপমান ও গণহত্যার সম্মুখীন হচ্ছে। এই লক্ষ্যে, আমরা ইউক্রেনকে নিরস্ত্রীকরণ এবং ডি–নাৎসিফাই করার চেষ্টা করব।’‌’‌

রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞাগুলি ছিল দ্রুত, কঠোর ও সমন্বিত; যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর বেশ কয়েকটি দেশ নিয়মিতভাবে সময়ের ব্যবধানে অতিরিক্ত নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করেছে। যুদ্ধ বিভিন্ন ফ্রন্টে ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে রাশিয়াও কিছু পাল্টা নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে পশ্চিমী নিষেধাজ্ঞার প্রভাব সীমিত করার ব্যবস্থা ঘোষণা করেছে (সারণি ৩ দেখুন)।

সারণি ৩: ইউএস এবং ইইউ নিষেধাজ্ঞার ওভারভিউ, এবং রাশিয়ার পাল্টা নিষেধাজ্ঞা (ফেব্রুয়ারি-সেপ্টেম্বর ২০২২)

সূত্র:‌ পিটারসন ইনস্টিটিউট ফর ইন্টারন্যাশনাল ইকনমিক্স[৩৮]

নিষেধাজ্ঞার প্রভাব

২০২২ সালে রাশিয়ার উপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞার প্রভাব সঠিকভাবে মূল্যায়ন করা কঠিন, কারণ সেগুলি একটি দীর্ঘস্থায়ী রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধ, ইউক্রেনে পশ্চিমী দেশগুলির সামরিক সহায়তা, কোভিড–১৯ থেকে পুনরুদ্ধার সংক্রান্ত নীতিগুলির পারস্পরিক ক্রিয়া–প্রতিক্রিয়া ও উদ্যোগ এবং অসংখ্য বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক চ্যালেঞ্জসহ অন্যান্য নানা কারণের সঙ্গে যুক্ত। রাশিয়া বলে চলেছে যে পশ্চিমী নিষেধাজ্ঞাগুলি তার উপর সীমিত সামগ্রিক প্রভাব ফেলেছে, যা পশ্চিমের দাবির বিপরীত।

● অর্থনৈতিক: ফেব্রুয়ারি ও মার্চ মাসে রাশিয়ার অর্থনৈতিক ও আর্থিক ক্রিয়াকলাপ ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল যখন এটি বিশ্বের সবচেয়ে বেশি নিষেধাজ্ঞাধীন দেশ হয়ে ওঠে, এবং বড় ধরনের বাণিজ্য ও অর্থায়ন ব্যাঘাতের সম্মুখীন হয়। রাশিয়ার আর্থিক ভাবে ও মুদ্রানীতির মাধ্যমে হস্তক্ষেপের মধ্যে ছিল পুঁজি নিয়ন্ত্রণ, রুশদের বিদেশে হার্ড কারেন্সি স্থানান্তর করা থেকে বিরত রাখা, কিছু পণ্য ও কাঁচামাল রপ্তানি নিষিদ্ধ করা, রুবলে গ্যাস পেমেন্ট বাধ্যতামূলক করা, বিকল্প পেমেন্ট সিস্টেমে চলে যাওয়া এবং বাণিজ্য ও বিনিয়োগে বৈচিত্র্য আনা।[৩৯] রাশিয়া সরকারি ব্যয় এবং করত্রাণ বৃদ্ধি করেছে প্রথম মাসে আনুমানিক ৩৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, এবং এপ্রিলে অতিরিক্ত ৭৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।[৪০] অনেক আন্তর্জাতিক ব্যবসা রাশিয়া ছেড়ে চলে গেছে বা তাদের কাজকর্ম বন্ধ করে দিয়েছে। চিনা মিডিয়া জোর দিয়ে বলেছে যে নিষেধাজ্ঞার অংশ হিসাবে বহুজাতিকদের উপর পশ্চিমী দেশগুলির প্রযুক্ত নিয়ন্ত্রণ ও প্রভাব এক বিপজ্জনক উদাহরণ স্থাপন করবে।[৪১]

এপ্রিল মাসে বিশ্বব্যাঙ্ক অনুমান করেছিল যে রাশিয়ান জিডিপি সম্ভবত ২০২২ সালে ১১.২ শতাংশ সঙ্কুচিত হবে।[৪২] এপ্রিল–মে মাসে কিছু অন্যান্য অর্থনৈতিক পূর্বাভাস ৮ শতাংশ থেকে ১০.৪ শতাংশের মধ্যে সংকোচনের ইঙ্গিত দেয়।[৪৩] অক্টোবরে প্রকাশিত আইএমএফ-এর ওয়র্ল্ড ইকনমিক আউটলুক অনুমান করেছে যে রাশিয়ার জিডিপি–র ২০২২ সালে ৩.৪ শতাংশ সংকোচন হবে, যদিও আগের অনুমান ছিল জুলাইয়ে মাইনাস ৫ শতাংশ এবং এপ্রিলে মাইনাস ৮.৫ শতাংশের।[৪৪] এতে আরও বলা হয়েছে যে রাশিয়া অপরিশোধিত এবং অ–শক্তি রপ্তানি প্রত্যাশার চেয়ে ভাল ধরে রেখেছে। রাশিয়ার অর্থনৈতিক উন্নয়ন মন্ত্রক অনুমান করেছে যে দেশের অর্থনীতি ২০২২ সালে ৪.২ শতাংশ, ২০২৩ সালে ২.৭ শতাংশ হ্রাস পাবে এবং ২০২৪ সালে ৩.৭ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে।[৪৫] ইউক্রেন আক্রমণের পরের সপ্তাহগুলিতে রুশ রুবল তার সর্বনিম্ন স্তরে নেমে গেলেও জুন ২০২২–এর মধ্যে বিশ্বের সেরা পারফরমিং কারেন্সি হয়ে ওঠে।[৪৬] মে মাসে প্রকাশিত একটি মার্কিন কংগ্রেসনাল গবেষণা পত্রে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে যে যদিও রুশ বাণিজ্য মারাত্মকভাবে প্রভাবিত হয়েছিল, তবুও শক্তি রপ্তানি থেকে আশাতীত আয়ের ফলে ২০২২–এর জন্য তার বর্তমান খাতের উদ্বৃত্ত ২৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে।[৪৭] এটি শক্তি রপ্তানির জন্য রাশিয়ার উপর ইউরোপীয় নির্ভরতার ফলে নিষেধাজ্ঞার অধীনে অনুমোদিত ছাড়গুলির কারণে ঘটেছে।[৪৮]

পরিমাণ ও মূল্য হ্রাস সত্ত্বেও রাশিয়ার রপ্তানি মডেল কিছুটা স্থিতিস্থাপকতা দেখিয়েছে।[৪৯]  রাশিয়া তার শক্তি ও পণ্যের জন্য বিকল্প বাজার খুঁজে পেতে সক্ষম হয়েছিল, কারণ সে চিন ও ভারতসহ কিছু দেশে এটি আকর্ষণীয় মূল্যে সরবরাহ করার প্রস্তাব দিয়েছিল। রাশিয়া অবশ্য ইনপুট, যন্ত্রাংশ ও প্রযুক্তির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে এবং তার ফলে আমদানিতে তীব্র হ্রাসের সঙ্গে সংগ্রাম করেছে—যা গত এক দশকে তার জিডিপি–র প্রায় ২০ শতাংশ ছিল।[‌৫০] প্রতিরক্ষা, অটোমোবাইল ও প্রকৌশল সামগ্রীর মতো ক্ষেত্রগুলিতে বিরূপ প্রভাব পড়েছে। মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণের ক্ষেত্রে এভিয়েশন সেক্টর চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছে।[‌৫১] অগস্টে পরিচালিত ইয়েল ইউনিভার্সিটির একটি সমীক্ষা এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে যে নিষেধাজ্ঞা মোকাবিলায় রাশিয়ার আর্থিক এবং মুদ্রাগত হস্তক্ষেপ টেকসই ফলাফল দেবে না, তাদের অর্থনীতি ইতিমধ্যে সমষ্টিগত স্তরে ভুগছে, এবং যদি প্রেরক দেশগুলো ঐক্যবদ্ধ থাকে তাহলে দেশটি দীর্ঘমেয়াদে ‘অর্থনৈতিকভাবে তলিয়ে যাওয়ার’‌ দিকে এগিয়ে চলেছে।[‌৫২]

সামগ্রিকভাবে, সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রাশিয়ার অর্থনীতিতে প্রভাব প্রতিকূল হয়েছে, তবে বিপর্যয়কর নয়। মাঝারি মেয়াদে অবশ্য প্রভাব উল্লেখযোগ্য হতে পারে। অন্যদিকে, ইউক্রেন খুব উচ্চ মানবিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক খরচ–সহ যুদ্ধের ফলে বিধ্বস্ত হয়েছে। ২০২২ সালে ইউক্রেনের জিডিপি ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ সঙ্কুচিত হবে বলে মনে করা হচ্ছে, এবং তা বেশি করে হবে যুদ্ধের কারণে, নিষেধাজ্ঞা ও পাল্টা নিষেধাজ্ঞার প্রভাবের কারণে ততটা নয়।

২০১৪–২০ সময়কালের বিপরীতে ২০২২ সালে আরোপিত নিষেধাজ্ঞাগুলি প্রেরক এবং অন্যান্য দেশের উপর উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলেছে। মার্কিন অর্থনীতি প্রধানত উচ্চ শক্তির দাম, উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি এবং ক্রমবর্ধমান সুদের হারের কারণে প্রভাবিত হয়েছে। রাশিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ বাণিজ্য ও আর্থিক সম্পর্কের কারণে ইউরোপীয় ইউনিয়নের অর্থনীতিতে প্রভাব আরও গুরুতর হয়েছে। মে মাসে ইউরোপীয় কমিশন (ইসি) ইইউ ও ইউরো অঞ্চলের জন্য একটি অন্ধকার চিত্রের পূর্বাভাস দিয়েছে, যদিও প্রতিটি ইইউ রাষ্ট্রের দুর্বলতা পৃথক ধরনের, এবং তা দুর্বলতা সূচকে ইসি দ্বারা নির্দেশিত হয়েছে।[৫৩] ইসি নিম্ন বৃদ্ধি ও উচ্চ মূল্যস্ফীতির পূর্বাভাস দিয়েছে, এবং যোগ করেছে যে মূল্যায়নকে ঘিরে ঝুঁকির ভারসাম্য প্রতিকূল ফলাফল সম্পর্কে সঠিক ছিল না। মে মাসে ইউরোপিয়ান ব্যাঙ্ক ফর রিকনস্ট্রাকশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (ইবিআরডি) একটি গভীর প্রভাবের ইঙ্গিত দিয়েছে, এবং নভেম্বর ২০২১–এর অনুমান থেকে ইবিআরডি এলাকায় উৎপাদন সংক্রান্ত পূর্বাভাস ৩.১ শতাংশ কমিয়েছে।[৫৪] মে মাসে জার্মানি ১৯৯১ সাল থেকে শুরু করে এই প্রথম তার প্রথম মাসিক বাণিজ্য ঘাটতি রিপোর্ট করেছে, এবং ব্রিটেন ১৯৫৫ সাল থেকে সর্বোচ্চ বাণিজ্য ঘাটতির রিপোর্ট পেশ করেছে।[৫৫] যুদ্ধের আগে ইউরোপ ইতিমধ্যেই শক্তির ঘাটতি ও উচ্চ মূল্যের সম্মুখীন হয়েছিল, এবং নিষেধাজ্ঞাগুলি উল্লেখযোগ্যভাবে এই সমস্যাগুলিকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে।[৫৬] গ্যাসের দাম কম দামের পাইপলাইন গ্যাসের পরিবর্তে উচ্চমূল্যের তরল প্রাকৃতিক গ্যাসের (এলএনজি) ভিত্তিতে হিসাব করা হয়েছে। বৈচিত্র্য আনা এবং ২০১৪ সাল থেকে রাশিয়ার উপর নির্ভরতা কিছুটা কম করা সত্ত্বেও ইইউ ২০২১ সালেও সেই দেশ থেকে ৩৯.২ শতাংশ গ্যাস, ২৪.৮ শতাংশ অপরিশোধিত তেল এবং ৪৬ শতাংশ কয়লা আমদানি করেছিল।[৫৭] ২০২২ সালের প্রথমার্ধে ইইউ ও ব্রিটেনে এলএনজি–র বৃহত্তম সরবরাহকারী হয়ে ওঠে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।[৫৮] ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেন আক্রমণের পর থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২২ পর্যন্ত ইইউ রাশিয়া থেকে ১০০ বিলিয়ন ইউরোর বেশি মূল্যের কয়লা, তেল ও গ্যাস আমদানি করেছে। এটি রাশিয়া থেকে জ্বালানি আমদানি  হ্রাসের পরেও চড়া দামের ফল। অগস্ট ২০২২ থেকে কয়লা আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা সক্রিয়ভাবে কার্যকর করা যায়নি। ২০২২ সালের প্রথমার্ধে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সামগ্রিকভাবে আনুমানিক ১১ শতাংশ মোট গ্যাস খরচ কমেছে, কিন্তু তার ফল পাওয়া যায়নি তেলের পণ্যের ব্যবহার ৮ শতাংশ, কঠিন কয়লার ৭ শতাংশ এবং লিগনাইটের ১২ শতাংশ বৃদ্ধির ফলে।[৫৯] ইইউ শক্তি সংরক্ষণ, নিম্ন চাহিদা, শক্তির দাম নিয়ন্ত্রণে আর্থিক সহায়তা এবং সরবরাহের উৎসের বৈচিত্র্যকরণ রূপায়িত করতে, এবং তার সম্পূর্ণ শক্তি অতিক্রমণ পরিকল্পনা পুনর্বিবেচনা করতে বাধ্য হয়েছে। ঐকমত্য গড়ে তোলার জন্য যথেষ্ট প্রচেষ্টার পর, ইইউ রাশিয়ার তেল আমদানির মূল্য নির্ধারণের একটি পরিকল্পনাও ঘোষণা করেছে, যদিও এই লেখার সময় পর্যন্ত মূল্য নির্ধারণের সূত্রটি প্রকাশ করা হয়নি।[৬০]

রাশিয়ার উপর নিষেধাজ্ঞাগুলি এমন সময়ে এসেছিল যখন সরবরাহ শৃঙ্খলগুলি ইতিমধ্যে কোভিড–১৯ অতিমারি এবং চিনের শূন্য–কোভিড নীতি দ্বারা পরীক্ষার মুখে পড়েছিল। বিশ্বজুড়ে দেশগুলি কোভিড–১৯–এর পরবর্তী অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের আশা করলেও নিষেধাজ্ঞাগুলি উচ্চ মূল্যস্ফীতি (শক্তি, খাদ্য, সার ও অন্যান্য ক্ষেত্রে), ইনপুট খরচ বৃদ্ধি, জোগান ও চাহিদা ক্ষেত্রে ধাক্কার সংমিশ্রণ, বৈশ্বিক আর্থিক অবস্থা, বাণিজ্য বৃদ্ধিতে মন্থরতা, এবং ক্রমাগত সরবরাহ শৃঙ্খলগত বাধার কারণে বিদ্যমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জগুলিকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে। বিশ্বজুড়ে মূল্যস্ফীতির উচ্চ মাত্রার প্রাথমিক কারণ হল রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা।[৬১]  আইএমএফ এপ্রিল ও জুলাই ২০২২–এ বেসলাইন বৈশ্বিক বৃদ্ধির অনুমানকে যথাক্রমে ৩.৬ এবং ৩.২ শতাংশে নামিয়ে এনেছে, যা এ কথাই তুলে ধরেছে যে নিম্নমুখী ঝুঁকিগুলি বাস্তবায়িত হচ্ছে।[৬২] অক্টোবরের শুরুতে আইএমএফ প্রধান জোর দিয়ে বলেছিলেন যে এই অনুমানগুলি আরও কমিয়ে দেওয়া হবে, এবং বিশ্বব্যাপী মন্দার ঝুঁকি বাড়ছে।[৬৩] এপ্রিল মাসে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা ঘোষণা করেছিল যে বিশ্ব বাণিজ্য বৃদ্ধি ২০২২ সালে ৪.৭ শতাংশ থেকে কমে ২.৪ শতাংশ থেকে ৩ শতাংশের মধ্যে দাঁড়াতে পারে।[৬৪] উদীয়মান বাজার অর্থনীতিতেও বিরূপ প্রভাব পড়েছে। অনেক উন্নয়নশীল অর্থনীতি তীব্র  ঋণের চাপ (কিছু ক্ষেত্রে ঋণ পরিশোধে খেলাপি), বৈদেশিক মুদ্রার সঞ্চয় হ্রাস এবং মুদ্রা বাজারে অস্থিরতার সম্মুখীন হয়েছে। প্রধানত দরিদ্র দেশগুলি বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, এবং কিছু ক্ষেত্রে পরিস্থিতি হিংসাত্মক প্রতিবাদ ও অভ্যন্তরীণ অশান্তির দিকে নিয়ে গিয়েছে।[৬৫] রাশিয়ার বৈদেশিক মুদ্রার মজুত আটক করে রাখাও বিশ্বব্যাপী আর্থিক বাজারকে ক্ষুণ্ণ করছে বলে ধরা হয়েছিল। এই ঘটনাটি পশ্চিমীরা যে আন্তর্জাতিক নিয়মভিত্তিক আদেশকে সংরক্ষণ করতে চায়, তার উপর আস্থাকেই ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।[৬৬]

যদিও রাশিয়া স্বল্পমেয়াদে কিছু পরিমাণে অভূতপূর্ব নিষেধাজ্ঞার আক্রমণকে প্রতিরোধ করতে সক্ষম হয়েছে, এটি অনেক কাঠামোগত সমস্যার সম্মুখীনও হয়েছে। রাশিয়ার অর্থনীতির জন্য নিষেধাজ্ঞার দীর্ঘমেয়াদি ফলাফল তাৎপর্যপূর্ণ হতে পারে, যদিও তীব্রতার মাত্রা বিভিন্ন কারণের উপর নির্ভর করবে। আরোপকারী দেশগুলির, বিশেষ করে ইইউ–র জন্য, অর্থনৈতিক ক্ষয়ক্ষতি প্রাথমিকভাবে যা অনুমিত ছিল তার চেয়ে বেশি হয়েছে৷ অধিকন্তু, নিষেধাজ্ঞার মাত্রা ও গতি বৈশ্বিক অর্থনীতি এবং বৃহত্তর গ্লোবাল সাউথ–এর জন্য অনিচ্ছাকৃত নেতিবাচক ফলাফল নিয়ে এসেছে। কিছু ক্ষেত্রে প্রভাব গুরুতর হয়েছে, যা রাজনৈতিক ও সামাজিক অস্থিরতা এবং অগণিত মানুষের কষ্টের কারণ হয়েছে। তাদের অর্থনৈতিক বাধ্যবাধকতা দ্বারা চালিত এশিয়া, আফ্রিকা ও লাতিন আমেরিকার অনেক দেশ পশ্চিমী নিষেধাজ্ঞাগুলিকে সমর্থন করেনি।[৬৭]

● রাজনৈতিক: ফেব্রুয়ারিতে যুদ্ধের সূচনা দেখায় যে রাশিয়া পূর্ববর্তী নিষেধাজ্ঞাগুলির কারণে তার রাজনৈতিক উদ্দেশ্যগুলি অনুসরণ করা থেকে বিরত হয়নি। পুরনো ও নতুন নিষেধাজ্ঞাগুলি মিলেও এমন একটি সংক্ষিপ্ত যুদ্ধের দিকে নিয়ে যেতে পারেনি যা দ্রুত শেষ হয়ে যাবে। যুদ্ধের অগ্রগতির সঙ্গেই প্রাথমিক পর্যায়ে অনেক ত্রুটির কারণে রাশিয়াকে তার কৌশল পরিবর্তন করে পূর্ব ও দক্ষিণ ইউক্রেনে তার সামরিক অভিযানকে কেন্দ্রীভূত করতে হয়েছিল। নিষেধাজ্ঞা এবং ইউক্রেনকে প্রদত্ত সামরিক সহায়তা — প্রাথমিকভাবে প্রতিরক্ষামূলক অস্ত্র, সরঞ্জাম ও গোলাবারুদ, এবং পরে আক্রমণাত্মক ও প্রতিরক্ষামূলক অস্ত্র, বুদ্ধিমত্তা ও অন্যান্য সহায়তার সংমিশ্রণ — মস্কোকে যুদ্ধ এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য কৌশল পরিবর্তনে অবদান রেখেছিল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সবচেয়ে বড় দাতা হিসাবে অগস্ট ২০২২ পর্যন্ত প্রায় ১২.৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের সামরিক সহায়তা প্রদান করেছে। যদিও জি৭ গোষ্ঠী নিষেধাজ্ঞার সমর্থনে এবং ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তা প্রদানের জন্য একত্রিত হয়েছে, বেশিরভাগ জি২০ দেশ, যারা বিশ্ব জনমতের অনেক বেশি প্রতিনিধিত্ব করে, নিষেধাজ্ঞাগুলিকে সমর্থন করেনি। এইভাবে রাশিয়াকে বিচ্ছিন্ন করার অভিযান শুধুমাত্র সীমিত সাফল্য পেয়েছে।[৬৯]

ফেব্রুয়ারির শেষে বেলারুশে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে সরাসরি আলোচনা শুরু হলে যুদ্ধবিরতির জন্য কূটনৈতিক প্রচেষ্টা শুরু হয়। কিন্তু তিন দফা আলোচনায় কোন‌ও সাফল্য আসেনি। রাশিয়ার দাবিগুলির মধ্যে ছিল নিরপেক্ষতা প্রকাশের জন্য ইউক্রেনের সংবিধান পরিবর্তন করা, রাশিয়ার ভূখণ্ড হিসাবে ক্রিমিয়াকে এবং স্বাধীন ভূখণ্ড হিসাবে লুহানস্ক ও দোনেৎস্ক প্রজাতন্ত্রকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেওয়া, এবং ইউক্রেনের পক্ষ থেকে সামরিক পদক্ষেপ বন্ধ করা। ইউক্রেন নিরপেক্ষতা ইস্যুতে কিছুটা নমনীয়তার ইঙ্গিত দিয়েছিল, তবে রাশিয়ার দখলকৃত অঞ্চলগুলিতে  ইউক্রেনের সার্বভৌম নিয়ন্ত্রণ ফিরে পেতেও চেয়েছিল। আলোচনায় প্রভাব বিস্তারকারী প্রধান খেলোয়াড় হিসেবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইইউ চেয়েছিল যাতে ইউক্রেন রাশিয়ার সামরিক পদক্ষেপের চাপের কাছে নতি স্বীকার না–করে। ব্যর্থ মিনস্ক চুক্তিতে ভুলের উপলব্ধি[৭০] উভয় পক্ষের কাছে গ্রহণযোগ্য যুদ্ধবিরতি অর্জন করা কঠিন করে তুলেছে। পশ্চিমীরা মনে করেছিল যে অঞ্চলগুলির তৎকালীন নিয়ন্ত্রণের বা তার কাছাকাছি পরিস্থিতির ভিত্তিতে যুদ্ধবিরতি রাশিয়ার বিজয় হিসাবে বিবেচিত হবে। তুরস্কে পরবর্তী আলোচনা এবং মার্চ মাসে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বৈঠকও অচলাবস্থা ভাঙতে ব্যর্থ হয়েছে।[৭১] ক্রমাগত যুদ্ধ এবং ফলস্বরূপ ধ্বংসের সঙ্গে নতুন নিষেধাজ্ঞা, পাল্টা নিষেধাজ্ঞা এবং ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তা বৃদ্ধি করা হয়েছিল, যা উভয় পক্ষের অবস্থানকে ধীরে ধীরে কঠোর করেছে। যুদ্ধের পুঞ্জীভূত মূল্য আলোচনার জন্য পরিসর উল্লেখযোগ্যভাবে সংকুচিত করেছে। মার্চের পর থেকে আর কোনও সরাসরি আলোচনা হয়নি, এবং পশ্চিমী দেশগুলো কোন শর্তের অধীনে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করবে তার ইঙ্গিতও দেয়নি। যুদ্ধ ও নিষেধাজ্ঞাগুলি ইইউ–এর মধ্যে, এবং ইইউ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে, শক্তিশালী ঐক্য এবং রাজনৈতিক সংহতি গড়ে তুলেছে। পশ্চিমী মিত্রেরা একটি শক্তিশালী ও সম্প্রসারিত ন্যাটো, সামরিক ব্যয় বৃদ্ধি এবং কঠোর সামরিক অবস্থানের জন্য চাপ দিয়েছে। রাশিয়ার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা উন্নত করতে ইউরোপের সামরিক সক্ষমতার সম্প্রসারণ শুরু করা হয়েছে।

রাশিয়ার প্রতিরক্ষা উৎপাদন, মেরামত ও সহায়তা কার্যক্রম নিষেধাজ্ঞার দ্বারা প্রতিকূলভাবে প্রভাবিত হয়েছে, তবুও রাশিয়া এখনও পর্যন্ত ইউক্রেনে তার যুদ্ধ প্রয়াসকে ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছে। কিন্তু দেশটির সামরিক অভিযানের পরিধি প্রসারিত করার ক্ষমতা হ্রাস পেয়েছে। নিষেধাজ্ঞার কারণে রাশিয়ার রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গিতে কোনও দৃশ্যমান পরিবর্তন হয়নি, এবং আলোচনার মাধ্যমে নিষ্পত্তির সম্ভাবনাও ক্ষীণ। কৃষ্ণ সাগরে ইউক্রেনীয় বন্দরগুলি থেকে শস্য রপ্তানির অনুমতি দেওয়ার জন্য জুলাই মাসে রাষ্ট্রপুঞ্জ ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে চুক্তি যুদ্ধবিরতির জন্য একটি স্তম্ভ হতে পারে বলে আশা জাগিয়েছিল। তার বিপরীতে জাহাজে করে চালান শুরু হওয়ার পরেপরেই সামরিক অভিযান আরও উচ্চগতির একটি পর্যায়ে প্রবেশ করে। রাশিয়াও অগস্ট ও সেপ্টেম্বরে কিছু মূল কৌশলগত বিপর্যয়ের শিকার হয়েছিল, এবং প্রায় ৩০০,০০০ সংরক্ষিত বাহিনীকে আহ্বান করে একটি ‘‌আংশিক মোতায়েন’‌ ঘোষণা করতে বাধ্য হয়েছিল।[৭২] তাড়াহুড়ো করে অনুষ্ঠিত গণভোটের পর পুতিন সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে একটি চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন যার মধ্যে ‘দোনেৎস্ক ও লুগানস্ক জনগণের প্রজাতন্ত্র এবং জাপোরোজিয়ে ও খেরসন অঞ্চলগুলির রাশিয়ায় যোগদান’‌ অন্তর্ভুক্ত ছিল।[৭৩] তাঁর ভাষণে পুতিন ‘‌ডনবাস বাদ রেখে’‌ শান্তি আলোচনার পুনরুজ্জীবনের প্রস্তাব করেছিলেন, যা কার্যকরভাবে নিকটবর্তী সময়ে কোনও সরাসরি আলোচনার সম্ভাবনা বাতিল করে দেয়। রাশিয়া ‘‌নতুন সীমান্ত লাইন’‌ ধরে রাখা এবং রক্ষা করার লক্ষ্যে অবিচল রয়েছে বলে মনে হচ্ছে;‌ উল্টোদিকে সহায়তা ও নিষেধাজ্ঞার সমর্থনপুষ্ট ইউক্রেন আরও প্রতিশোধ নেওয়ার এবং রাশিয়াকে আরও পিছনে ঠেলে দেওয়ার প্রশ্নে আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠেছে। রাশিয়া নতুন অঞ্চলগুলি নিয়ে অচলাবস্থা পছন্দ করবে;‌ উল্টোদিকে পশ্চিমের নতুন সংযুক্তির স্বাভাবিকীকরণের কোনও প্রস্তাব গ্রহণ করার সম্ভাবনা নেই। যুদ্ধ ও নিষেধাজ্ঞা আরও দীর্ঘায়িত হওয়ার ফলে অবশ্য রাশিয়ার জন্য উপলব্ধ বিকল্পগুলি সঙ্কুচিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

যুদ্ধের প্রথম কয়েক মাসে নিষেধাজ্ঞাগুলি পশ্চিমী দেশগুলির প্রত্যাশা অনুযায়ী ফলদায়ী হয়নি।[৭৪] ফলে এই অভিযান চালিয়ে যাওয়ার জন্য রাশিয়ার রাজনৈতিক ইচ্ছাও দৃঢ় হয়েছে, এমনকি তা করার জন্য উপলব্ধ উপায়ের উপর বিরূপ প্রভাব পড়া সত্ত্বেও। তবে মধ্য থেকে দীর্ঘমেয়াদে নিষেধাজ্ঞাগুলি রাশিয়াকে দুর্বল করে পশ্চিমের রাজনৈতিক উদ্দেশ্যগুলিতে যুক্তিসঙ্গত অবদান রাখতে পারে। বৈশ্বিক পর্যায়ে এই যুদ্ধ–সহায়তা ও নিষেধাজ্ঞার নতুন মডেল উদ্বেগ ও আশঙ্কা তৈরি করেছে, এবং নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে শক্তি প্রক্ষেপণের সীমা উন্মোচিত করেছে। তা ছাড়াও যুদ্ধ এবং নিষেধাজ্ঞাগুলি সংঘাতের অঞ্চলের বাইরেও অনেক ভূ–রাজনৈতিক পরিবর্তন ও নতুন সমীকরণের সূচনা করেছে।

উপসংহার

২০১৪ সালের মার্চে রাশিয়া–ইউক্রেন দ্বন্দ্ব শুরু হওয়ার সময় থেকে দেখা গেছে সাম্প্রতিক বছরগুলিতে একটি নীতিসংক্রান্ত অস্ত্র হিসাবে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার ব্যবহার বেড়েছে। রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞাগুলি, প্রধানত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইইউ আরোপিত, অন্যান্য অনেক নীতি–সক্রিয়তা দিয়ে পরিপূরণ করা হয়েছে, এবং সেগুলির সামগ্রিক প্রভাব অন্যান্য আন্তর্জাতিক, আঞ্চলিক ও স্থানীয় কারণ দ্বারা প্রভাবিত হয়েছে।

এই নিষেধাজ্ঞা এবং পাল্টা নিষেধাজ্ঞার অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক প্রভাব মূল্যায়ন করার জন্য এগুলিকে দুটি স্বতন্ত্র পর্ব হিসাবে দেখতে হবে: প্রথমটি ২০১৪ থেকে ২০২১ পর্যন্ত; এবং দ্বিতীয়টি ফেব্রুয়ারি ২০২২ থেকে। প্রথম পর্যায়ে নিষেধাজ্ঞা আরোপকারী দেশগুলির উপর গুরুতর পরিণতি এড়াতে যথাযথ যত্নসহকারে ধীরে ধীরে নিষেধাজ্ঞাগুলির পরিধি ও তীব্রতা প্রসারিত করা হয়েছিল। আরোপকারী দেশগুলির লক্ষ্য ছিল রাশিয়ার থেকে সীমিত বিযুক্তিকরণ। এই সময়ের মধ্যে রাশিয়ার অর্থনীতি দুর্বল হয়ে পড়ে, যদিও নিষেধাজ্ঞার প্রভাব খুব একটা উল্লেখযোগ্য ছিল না। রাশিয়াও প্রভাব হ্রাসের জন্য ব্যবস্থা নিয়েছে, এবং সেই সঙ্গেই ভবিষ্যতে প্রত্যাশিত বৃহত্তর নিষেধাজ্ঞার জন্য নিজেকে প্রস্তুত করতে এই বর্ধিত সময়কাল ব্যবহার করেছে। রাজনৈতিক স্তরে, নিষেধাজ্ঞাগুলি রাশিয়াকে তার লক্ষ্য পরিবর্তন করতে প্রভাবিত করেনি। মিনস্ক চুক্তি ও পরবর্তী আলোচনা কোনও মীমাংসায় পৌঁছতে ব্যর্থ হয়, এবং একটি পূর্ণ মাত্রার যুদ্ধ বিলম্বিত হলেও তা রোধ করা যায়নি। এই নিষেধাজ্ঞাগুলি, বা তারপর অতিরিক্ত, ব্যাপক ও সমন্বিত নিষেধাজ্ঞা প্রয়োগের হুমকিগুলি ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেন আক্রমণ থেকে রাশিয়াকে বিরত করেনি৷ ২০১৪–২০২১ সময়কালে নিষেধাজ্ঞাগুলির বৈশ্বিক প্রভাব ন্যূনতম ছিল, এবং তা ছিল নিছকই সীমিত সুযোগের একটি ক্রমবর্ধমান পদ্ধতি যা আন্তর্জাতিক আর্থিক, বাণিজ্য, ও ভূ–রাজনৈতিক স্থাপত্যকে পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে সক্ষম করেছে।

দ্বিতীয় পর্যায়ের (ফেব্রুয়ারি ২০২২ থেকে শুরু হওয়া) নিষেধাজ্ঞাগুলি কিন্তু আরও অনেক ব্যাপক, সমন্বিত ও তীক্ষ্ণ। প্রথম পর্বের বিপরীতে এই নিষেধাজ্ঞাগুলি পূর্ণ মাত্রার যুদ্ধ এবং ইউক্রেনের জন্য ব্যাপক সামরিক সহায়তার সমান্তরালে চলেছে। প্রাথমিক মাসগুলিতে রাশিয়ার অর্থনৈতিক ও আর্থিক কার্যকলাপ মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়েছিল, তবে দেশটি বিভিন্ন নীতিসংক্রান্ত পদক্ষেপের মাধ্যমে স্বল্পমেয়াদে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে, আর এই ক্ষেত্রে দেশটিকে উল্লেখযোগ্যভাবে সহায়তা করেছে শক্তির চড়া দাম ও বড় ধরনের রপ্তানি আয়। যাই হোক, রাশিয়ার অর্থনীতি দীর্ঘমেয়াদি পরিণতির সম্ভাবনা–সহ কাঠামোগতভাবে প্রভাবিত হচ্ছে। রাশিয়া তার যুদ্ধ প্রচেষ্টা এবং তার জন্য জনসমর্থন বজায় রাখতে সক্ষম হলেও তার প্ল্যাটফর্ম ও সরঞ্জাম, রসদ, কর্মী, সহায়তা পরিষেবা এবং ইন্টার–এজেন্সি সমন্বয়ের প্রাপ্যতা ও রক্ষণাবেক্ষণের উপর চাপ স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। নিষেধাজ্ঞাগুলি রাশিয়ার যুদ্ধ কৌশলের বিকল্পগুলিকে সীমিত করতে অবদান রেখেছে, যদিও রাশিয়া চারটি ইউক্রেনীয় অঞ্চলকে আনুষ্ঠানিকভাবে সার্বভৌম  রাশিয়ার ভূখণ্ডে অন্তর্ভুক্ত করার পর সেগুলিকে সামরিকভাবে রক্ষা করতে দায়বদ্ধ রয়েছে। ইতিমধ্যে ইউক্রেনীয় পরিচয় শক্তিশালী হয়েছে, এবং ন্যাটোর সম্প্রসারণ ও শক্তিশালীকরণের প্রক্রিয়াটিও গতি পেয়েছে। রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমণের পর সুইডেন ও ফিনল্যান্ড ন্যাটোতে যোগদানের অভিপ্রায় ঘোষণা করেছে, এবং (জুলাই পর্যন্ত) যোগদানের আলোচনা শেষ করে আনুষ্ঠানিক যোগদানের জন্য অপেক্ষা করছে। সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ঘোষণা করেন যে দেশটি আনুষ্ঠানিকভাবে ন্যাটো সদস্যপদ পাওয়ার জন্য আবেদন করবে। নিষেধাজ্ঞাগুলি উভয় পক্ষের অবস্থানকে কঠোর করতেও অবদান রেখেছে, এবং আলোচনার মাধ্যমে নিষ্পত্তির সম্ভাবনাকে মারাত্মকভাবে সীমিত করেছে।

নিষেধাজ্ঞা আরোপকারী দেশগুলি, বিশেষত ইইউ, ২০২২ সালে নিষেধাজ্ঞাগুলির বড় ধরনের অর্থনৈতিক প্রভাবের মুখোমুখি হয়েছে, যা পুরোপুরি প্রত্যাশিত ছিল না। অর্থনৈতিক মন্দার আশঙ্কা বড় আকার ধারণ করছে, এবং রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তা স্থাপত্যের একটি বড় ধরনের পুনর্বিন্যাস ঘটছে। নিষেধাজ্ঞা এবং পাল্টা নিষেধাজ্ঞাগুলি একটি উল্লেখযোগ্য বৈশ্বিক প্রভাবের দিকে চালিত করেছে, এবং অনেক উন্নয়নশীল দেশের জন্য গুরুতর অর্থনৈতিক সমস্যা তৈরি করেছে।

সংঘাত দীর্ঘায়িত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নিষেধাজ্ঞাগুলি রাশিয়াকে উল্লেখযোগ্যভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করবে এবং রাজনৈতিক ফলাফলকেও প্রভাবিত করবে। একই সময়ে, কোনও মীমাংসা বা যুদ্ধবিরতি না–হওয়া এবং নিষেধাজ্ঞাগুলি প্রত্যাহার করার প্রক্রিয়া শুরুর আগে পর্যন্ত আরোপকারী দেশগুলি ও বৃহত্তর বিশ্বও গুরুতর পরিণতি ভোগ করতে থাকবে।

নিষেধাজ্ঞা এবং পাল্টা নিষেধাজ্ঞার সামগ্রিক প্রভাব ক্রমাগত বিকশিত হতে থাকে। তাই তার থেকে উপযুক্ত পাঠ গ্রহণ করতে অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক লক্ষ্য অর্জনে সেগুলির অবদানকে দীর্ঘ সময়ের পরিধিতে মূল্যায়ন করতে হবে। তবে এই ধরনের একটি ‘‌অর্থনৈতিক অস্ত্র’‌-র বর্ধিত এবং ঘন ঘন ব্যবহারের সম্ভাবনা উদীয়মান ভূ–রাজনৈতিক ও ভূ–অর্থনৈতিক ভূদৃশ্যকে প্রভাবিত করবে।

পাদটীকা

[ক] অ্যাসোসিয়েশন চুক্তি হল ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও একটি তৃতীয় দেশের (অথবা, এই বিশেষ উদাহরণে, ইস্টার্ন পার্টনারশিপে যোগদানকারী দেশগুলির একটি দলের) মধ্যে একটি আইনগতভাবে বাধ্যতামূলক চুক্তি, যা সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলির মধ্যে সহযোগিতার জন্য একটি কাঠামো হিসাবে কাজ করে।

[খ] ময়দান নেজালেজনোস্টি বা স্বাধীনতা ময়দান নামক কিয়েভের কেন্দ্রীয় স্কোয়ার।

[গ] রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধবিরতি এবং স্বাভাবিক অবস্থা পুনরুদ্ধারের জন্য ২০১৪ এবং ২০১৫ সালে চুক্তি। উভয় পক্ষের আস্থার অভাব এবং অ–বাস্তবায়নের কারণে চূড়ান্ত চুক্তিটি পরে বানচাল হয়ে যায়।

[১] নিকোলাস মাল্ডার, দ্য ইকনমিক ওয়েপন: দ্য রাইজ অফ সাংশনস অ্যাজ  টুল অব মডার্ন ওয়র (ইয়েল ইউনিভার্সিটি প্রেস, ২০২২)।

[২] “নিষেধাজ্ঞা”, রাষ্ট্রপুঞ্জ নিরাপত্তা পরিষদ।

[৩] ঘাসেম জামানি ও কাজেম গারিব আবাদি, “লেজিটিম্যাসি অ্যান্ড লিগালিটি অফ ইউনিল্যাটরাল ইকনমিক স্যাংশনস আন্ডার ইন্টারন্যাশনাল ল”, জুডিশিয়াল ল ভিউজ, ভলিউম ২০, ইস্যু ৭২, (২০১৬)।

[৪] বিশ্বব্যাপী নিষেধাজ্ঞা ডেটাবেস, “গ্লোবাল স্যাংশনস ডেটাবেস – জিএসডিবি”।

[৫] ড্যানিয়েল ডব্লিউ ড্রেনজার, “সিরিয়াস অ্যাবাউট স্যাংশনস”, দ্য ন্যাশনাল ইন্টারেস্ট, নং ৫৩ (১৯৯৮): ৬৬-৭৪।

[৬] রবার্ট এ. পেপ, “হোয়াই ইকনমিক স্যাংশনস ডু নট ওয়র্ক”, ইন্টারন্যাশনাল সিকিউরিটি, ভলিউম ২২, নং ২ (১৯৯৭): ৯০-১৩৬।

[৭] ডেভিড এ. বল্ডউইন, ইকনমিক স্টেটক্রাফ্ট (প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটি প্রেস, ২০২০)।

[৮] মার্টেন স্মিট, “অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হতে পারে?”, বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা, স্টাফ ওয়ার্কিং পেপার, ইআরএসডি-২০১৮-০৩।

[৯] জফরে মানকফ, রাশিয়া ওয়র ইন ইউক্রেন: আইডেনটিটি, হিস্ট্রি, অ্যান্ড কনফ্লিক্ট, সেন্টার ফর স্ট্র‌্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজ, ২০২২।

[১০] সুজান অক্সেনস্টিয়ারনা ও পার ওলসন, দ্য ইকনমিক স্যাংশনস এগেনস্ট রাশিয়া: ইমপ্যাক্ট অ্যান্ড প্রসপেক্টস অফ সাকসেস, সুইডিশ প্রতিরক্ষা গবেষণা সংস্থা, এফওআই-আর-৪০৯৭, ২০১৫।

[১১] রাষ্ট্রপুঞ্জ, “সাধারণ পরিষদ ক্রিমিয়া অঞ্চলের অবস্থার পরিবর্তনগুলিকে স্বীকৃতি না দেওয়ার জন্য রাষ্ট্রগুলিকে আহ্বান জানিয়ে প্রস্তাব গ্রহণ করে- রাষ্ট্রপুঞ্জ প্রেস,” ২৭মার্চ, ২০১৪।

[১২] ইভান গুটারম্যান ও ওয়াজটেক গ্রোজেক, “আ টাইমলাইন অফ অল রাশিয়া-রিলেটেড স্যাংশনস,” রেডিও ফ্রি ইউরোপ / রেডিও লিবার্টি, ২০১৪।

[১৩]মার্কাস লু, “আ রিসেন্ট হিস্ট্রি অফ ইউ এস স্যাংশনস অন রাশিয়া”, মার্কাস লু, ভিজ্যুয়াল ক্যাপিটালিস্ট, ২০২২।

[১৪] মার্কিন আন্তর্জাতিক বাণিজ্য প্রশাসন, “রাশিয়া-কান্ট্রি কমার্শিয়াল নির্দেশিকা- গাইড”।

[১৫] ভ্লাদিমির সোল্ডাতকিন ও ওকসানা কোবজেভা, “এক্সপ্যান্ডেড  ইউ এস স্যাংশনস মে অ্যাফেক্ট রাশিয়া’জ ফরেন এক্সপ্যানশন ইন অয়েল অ্যান্ড গ্যাস,” রয়টার্স, নভেম্বর ১, ২০১৭, বিভাগ:‌ ইন্টিগ্রেটেড অয়েল অ্যান্ড গ্যাস।

[১৬] ও ই সি ডি, “রাশিয়ার সঙ্গে যোগদান প্রক্রিয়া এবং ইউক্রেনের সঙ্গে সহযোগিতার অবস্থা সম্পর্কে ও ই সি ডি-র বিবৃতি – ও ই সি ডি,” www.oecd.org, ১৩ মার্চ, ২০১৪।

[১৭] ইউরোপীয় কাউন্সিল, “টাইমলাইন-ইউক্রেন নিয়ে রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞামূলক ব্যবস্থা”, ইউরোপীয় ইউনিয়নের কাউন্সিল।

[১৮] ইক্কা কোরহোনেন, “ইকনমিক স্যাংশনস অন রাশিয়া অ্যান্ড দেয়ার এফেক্টস”, এন ওয়াই ইউ জর্ডান সেন্টার ফর দ্য অ্যাডভান্সড স্টাডি অফ রাশিয়া, ২৮ অক্টোবর, ২০২১।

[১৯] আন্তর্জাতিক মুদ্রা ভান্ডার, রাশিয়ান ফেডারেশন- আর্টিকেল ৪ স্টাফ রিপোর্ট, ওয়াশিংটন ডিসি, আইএমএফ ২০১৯।

[২০] বিশ্বব্যাঙ্ক গ্রুপ, “জিডিপি (বর্তমান মার্কিন ডলারে) – রাশিয়ান ফেডারেশন | ডেটা”।

[২১] ব্যাঙ্ক অফ রাশিয়া, “রাশিয়ান ফেডারেশনের আন্তর্জাতিক রিজার্ভ (সময় মেয়াদের শেষ) | ব্যাঙ্ক অফ রাশিয়া”।

[২২] বিশ্ব সমন্বিত বাণিজ্য সমাধান, “রাশিয়ান ফেডারেশন পণ্য রপ্তানি ও আমদানি ২০১৯- ডব্লিউআইটিএস ডেটা,” Worldbank.org, ২০১৯৷

[২৩] অ্যান্ডারস আসলুন্ড, “ওয়েস্টার্ন ইকনমিক স্যাংশনস অন রাশিয়া ওভার ইউক্রেন ২০১৪-২০১৯”, সিইসিফো ফোরাম, ভলিউম ২০ (২০১৯)।

[২৪] অ্যান্ডারস আসল্যান্ড ও মারিয়া স্নেগোভায়া, রাশিয়ার উপর পশ্চিমী নিষেধাজ্ঞার প্রভাব এবং কীভাবে সেগুলি আরও কার্যকরী করা যায়, অ্যাটলান্টিক কাউন্সিল রিপোর্ট, ০৩ মে ২০২১।

[২৫] রিচার্ড কানোলি, “ওয়েস্টার্ন ইকনমিক স্যাংশনস অ্যান্ড রাশিয়া’‌জ প্লেস ইন দ্য গ্লোবাল ইকনমি”, ই-ইন্টারন্যাশনাল রিলেশনস, (২০১৫)।

[২৬] “ইউক্রেন যুদ্ধবিরতি: নতুন মিনস্ক চুক্তির মূল পয়েন্টস”, বিবিসি নিউজ, ফেব্রুয়ারি ১২, ২০১৫।

[২৭] অ্যাডাম ডুবার্ড, “২০১৪ অ্যান্ড নাউ: উইল স্যাংশনস এন্ড পুটিন’‌স ক্যালকুলেশনস”, ফ্রেডরিখ নওম্যান ফাউন্ডেশন, ০৩ মার্চ, ২০২২।

[২৮] ন্যাটো, “পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্বে ন্যাটোর উপস্থিতি বৃদ্ধি করা,” ন্যাটো, ২০১৯।

[২৯] দ্য ইকনমিস্ট, “হাউ ওয়েস্টার্ন গভর্নমেন্টস আর গেটিং মিলিটারি গিয়ার ইনটু ইউক্রেন,” দ্য ইকনমিস্ট, মার্চ ২, ২০২২।

[৩০] পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্বে ন্যাটোর উপস্থিতি বৃদ্ধি করা, ২০১৯।

[৩১] সেন্টার ফর প্রিভেন্টিভ অ্যাকশন, “গ্লোবাল কনফ্লিক্ট ট্র্যাকার – কনফ্লিক্ট ইন ইউক্রেন”, কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশনস।

[৩২] পিটার ভ্যান বার্গিজিক, “ইকনমিক স্যাংশনস অ্যান্ড এবং রাশিয়া’‌জ ওয়র অন ইউক্রেন: আ ক্রিটিকাল কম্প্যারেটিভ অ্যাপরাইজাল”, ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ সোশ্যাল স্টাডিজ, ইরাসমাস বিশ্ববিদ্যালয়, রটারডাম, মার্চ ২০২২।

[৩৩] লারা গেইগার, “২০১৪ স্যাংশনস এগেনস্ট রাশিয়া ফেলড , ইজ দ্য সেকেন্ড টাইম দ্য চার্ম?” কলম্বিয়া পলিটিকাল রিভিউ, এপ্রিল ০৭, ২০২২।

[৩৪] ইউএস-ইউক্রেন কৌশলগত অংশীদারি সংক্রান্ত যৌথ বিবৃতি, হোয়াইট হাউস, ০১ সেপ্টেম্বর, ২০২১।

[৩৫] রাশিয়া ইউক্রেন অর্থনৈতিক প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা, হোয়াইট হাউস, ২৫ জানুয়ারি ২০২২-এ সিনিয়র প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের পটভূমিতে প্রেস কল।

[৩৬] প্রেসিডেন্ট ভন ডের লেইন, মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলন, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০২২, ইউরোপীয় কমিশন।

[৩৭] “ইউক্রেনে ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ ঘোষণাকারী ভ্লাদিমির পুতিনের ভাষণের সম্পূর্ণ পাঠ”, দ্য প্রিন্ট, ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২২।

[৩৮] পিটারসন ইনস্টিটিউট ফর ইন্টারন্যাশনাল ইকনমিকস, “রাশিয়া’‌জ ওয়র অন ইউক্রেন:‌ এ স্যাংশন টাইমলাইন | পিআইআইই,” www.piie.com, ১৪ মার্চ, ২০২২।

[৩৯] গিরিশ লুথরা, “দ্য রাশিয়া-ইউক্রেন ওয়র, ইকনমিক স্যাংশনস অ্যান্ড গ্লোবাল হেডউইন্ডস”, ওআরএফ, ২২ জুলাই, ২০২২।

[৪০] আলেকজান্ডার ওসিপোভিচ, “রাশিয়া টার্নস অন স্পেন্ডিং ট্যাপস টু ব্লান্ট ইকনমিক ইমপ্যাক্ট  অফ ওয়র অ্যান্ড স্যাংশনস”, দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল, ০২ মে, ২০২২।

[৪১] ঝেংজুন ঝাং ও ইয়ানিয়ান লি, “হোয়াই ইউ এস স্যাংশনস অন ‘স্টেট কনট্রোলড’ চাইনিজ কোম্পানিজ স্ম্যাক অফ হিপোক্র‌্যাসি”, সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট, ০৫ মে, ২০২২।

[৪২] প্রধান অর্থনীতিবিদের অফিস, অঞ্চলে যুদ্ধ-ইউরোপ ও মধ্য এশিয়া অর্থনৈতিক আপডেট, বসন্ত ২০২২, বিশ্ব ব্যাঙ্ক গ্রুপ।

[৪৩] ডি লেমোস পেইসোটো স্যামুয়েল ও অন্যরা, “ইউক্রেন-সাপ্তাহিক ডাইজেস্টে রাশিয়ার যুদ্ধের অর্থনৈতিক প্রতিক্রিয়া”, ইউরোপীয় পার্লামেন্ট, মে ১৭, ২০২২।

[৪৪] বৈশ্বিক অর্থনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি আপডেট: বিষণ্ণ ও আরও অনিশ্চিত, আন্তর্জাতিক মুদ্রা ভান্ডার, জুলাই ২০২২।

[৪৫] ইভজেনি গন্টমাখর, অ্যাপরাইজিং রাশিয়া’‌‌জ ওয়রটাইম ইকনমি, জিআইএস রিপোর্ট অনলাইন, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২২।

[৪৬] জেসন কারাইন, “রাশিয়ান রুবল কিপস রাইজিং, হিটিং এ সেভেন ইয়ার হাই”, নিউ ইয়র্ক টাইমস, ২২ জুন, ২০২২।

[৪৭] রেবেকা এম নেলসন, ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার যুদ্ধ: নিষেধাজ্ঞার অর্থনৈতিক প্রভাব, কংগ্রেসনাল রিসার্চ সার্ভিস, মে ০৩, ২০২২।

[৪৮] রবিন রাইট, “হোয়াই স্যাংশনস টু অফন ফেল”, দ্য নিউ ইয়র্কার, মার্চ ০৭, ২০২২।

[৪৯] আনা পেস্তোভা, মিখাইল মামনভ, ও স্টিভেন অনগেনা, “দ্য প্রাইস অফ ওয়র: ম্যাক্রোইকনমিক এফেক্টস  অফ দ্য ২০২২ স্যাংশনস অন রাশিয়া”, ভক্সিউ কলাম, সি ই পি আর, এপ্রিল ১৫, ২০২২।

[৫০] বিশ্বব্যাঙ্ক, “পণ্য ও পরিষেবার আমদানি (জিডিপি–র%) – রাশিয়ান ফেডারেশন- ডেটা”।

[৫১] তন্ময় কদম, “রাশিয়া’‌স স্ট্যাগারিং মুভ ব্যাটারড বাই স্যাংশনস, মস্কো টার্নস টু ইরান ফর হেল্প অন এয়ারক্র‌্যাফ্ট রিপেয়ার অ্যান্ড মেনটেন্যান্স”, ইউরেশিয়ান টাইমস, ০২ মে, ২০২২।

[৫২] জফরে এ সোনেনফেল্ড ও অন্যরা, “বিজনেস রিট্রিটস অ্যান্ড স্যাংশনস আর ক্রিপলিং দ্য রাশিয়ান ইকনমি”, ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়, (২০২২)।

[৫৩] ইউরোপীয় কমিশন, বসন্ত ২০২২ অর্থনৈতিক পূর্বাভাস: রুশ আক্রমণ ইউরোপীয় ইউনিয়নের অর্থনৈতিক স্থিতিস্থাপকতার পরীক্ষা, ইউরোপীয় কমিশন, মে ২০২২।

[৫৪] মার্কাস ওয়ারেন, ইউক্রেনের যুদ্ধ ও ইবিআরডি অঞ্চলে মুদ্রাস্ফীতির মন্থর বৃদ্ধি,  ইউরোপীয়ান ব্যাঙ্ক ফর রিকনস্ট্রাকশন অ্যান্ড ডেভলপমেন্ট, মে ১০, ২০২২।

[৫৫] সন্দীপন দেব, “ইউক্রেন ক্রাইসিস: আ ওয়র দ্যাট ইজ হার্টিং দ্য ওয়েস্ট দ্যান রাশিয়া”, ফার্স্ট পোস্ট, ০৭ জুলাই, ২০২২।

[৫৬] ব্রেন্ডা শ্যাফার, “উইথ উইন্টার কামিং, ইউরোপ ইজ ওয়াকিং অফ আ ক্লিফ”, ফরেন পলিসি, ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২২।

[৫৭] অঙ্কিতা দত্ত, “অ্যাসেসিং ইউরোপ’‌স স্পাইরালিং এনার্জি ক্রায়সিস”, ওআরএফ, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২২।

[৫৮] মেরিটাইম এক্সিকিউটিভ, “ইউ এস বিকামস লারজেস্ট এলএনজি এক্সপোর্টার ইন ২০২২ ড্রিভন বাই ইউরোপীয়ান ডিমান্ড,” দ্য মেরিটাইম এক্সিকিউটিভ, ২৬ জুলাই, ২০২২।

[৫৯] ক্রিস ক্যাম্পবেল, “ক্লাইমেট গ্রাফিক অফ দ্য উইক: ইইউ পেমেন্টস ফর রাশিয়ান ফুয়েল সিন্স ওয়র রিচ বিয়ন্ড €১০০ বিলিয়ন,” ফিনান্সিয়াল টাইমস, অক্টোবর ৮, ২০২২।

[৬০] “ইইউ লাইকলি টু ক্যাপ রাশিয়ান অয়েল ওভার ইউক্রেন ওয়র, অ্যানেক্সেশন অফ ফোর রিজিয়নস”, মিন্ট, ০৫ অক্টোবর, ২০২২।

[৬১] টি কে অরুণ, “ইউক্রেন ওয়র: আ ট্রেড অফ বিটউইন ওয়েস্টার্ন লসেস অ্যান্ড ডেভলপিং ওয়র্লড মিজারি”, মানি কন্ট্রোল, ২৫ জুলাই,২০২২।

[৬২] “ওয়র্ল্ড ইকোনমিক আউটলুক আপডেট: গ্লুমি অ্যান্ড মোর আনসারটেন, জুলাই ২০২২”।

[৬৩] দ্য টাইমস অফ ইন্ডিয়া, “ওয়র্ল্ড ব্যাঙ্ক, আইএমএফ সি রাইজিং রিস্কস অফ গ্লোবাল রিসেশন – টাইমস অফ ইন্ডিয়া,” দ্য টাইমস অফ ইন্ডিয়া, ০৭ অক্টোবর, ২০২২।

[৬৪] কল্‌ম কিন, “রাশিয়া’‌জ ওয়র লিভস ইউরোপিয়ান ইকনমি ইন রুইনস”, ফরেন পলিসি, ১২ এপ্রিল, ২০২২।

[৬৫] ব্রহ্ম চেলানি, “হোয়াই স্যাংশনস এগেনস্ট রাশিয়া মে নট ওয়র্ক”, দ্য হিল, ০২ মে, ২০২২।

[৬৬] অরবিন্দ সুব্রামানিয়ান ও জোশ ফুলম্যান, “দ্য ওয়েস্ট হ্যাজ গট ইটস রাশিয়া স্যাংশনস রং”, বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড, ১২ মে, ২০২২।

[৬৭] সারাহ ওয়েস্টউড, “হুইচ কান্ট্রিজ হ্যাভ ডিসাইডেড নট টু স্যাংশন রাশিয়া?” ওয়াশিংটন একজামিনার, ০৩ মার্চ, ২০২২।

[৬৮] এলিস স্পেরি, “ইউ এস মিলিটারি এড টু ইউক্রেন গ্রোজ টু হিস্টরিক প্রোপোরশানস — অ্যালং উইথ রিস্কস,” দ্য ইন্টারসেপ্ট, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২২।

[৬৯] অ্যালান ক্রফোর্ড ও অন্যান্য, “দ্য ইউ এস লেড ড্রাইভ টু আইসোলেট রাশিয়া অ্যান্ড চায়না ইজ ফলিং শর্ট”, ব্লুমবার্গ, আগস্ট ০৮, ২০২২।

[৭০] হুগো ফন এসেন ও আন্দ্রেয়াস উমল্যান্ড, “দ্য রোড টু আ সিজফায়ার ইন ইউক্রেন ইজ ফুল অফ পিটফলস”, ফরেন পলিসি, জুলাই ০৭, ২০২২।

[৭১] “ইউক্রেন অ্যান্ড রাশিয়া হোল্ড থার্ড রাউন্ড অফ টকস”, ডিডাব্লিউ, মার্চ ০৭, ২০২২।

[৭২] পল সোনে ও অন্যরা, “র‌্যাপিড লস অফ টেরিটরি ইন ইউক্রেন রিভিলস স্পেন্ট রাশিয়ান মিলিটারি”, দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২২।

[৭৩] “সাইনিং অফ ট্রিটিজ অন অ্যাকসেশন অফ ডোনেটস্ক অ্যান্ড লুগানস্ক পিপলস রিপাবলিকস অ্যান্ড জাপোরোজিয়ে অ্যান্ড খেরসন রিজিয়নস টু রাশিয়া”, দ্য ক্রেমলিন, মস্কো, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২২।

[৭৪] “আর স্যাংশনস ওয়র্কিং? দ্য লেসেনস ফ্রম আ নিউ ইরা অফ ইকনমিক ওয়রফেয়ার”, দ্য ইকনমিস্ট, অগস্ট ২৫, ২০২২।

মতামত লেখকের নিজস্ব।

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.