Author : Nilanjan Ghosh

Originally Published Observer Research Foundation Published on Dec 02, 2022 Commentaries 0 Hours ago

মিলেটের, যেমন রাগির, উচ্চ সহায়ক মূল্য প্রাপ্য, কারণ সেগুলি পুষ্টি ও জল দক্ষতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ

রবিশস্যের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য ভুল সঙ্কেত পাঠাল
রবিশস্যের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য ভুল সঙ্কেত পাঠাল

বিভিন্ন কারণ বিবেচনা করে নির্ধারিত ছয়টি রবি শস্যের—গম, বার্লি, ছোলা, মসুর ডাল, রেপসিড ও সরিষা, এবং কুসুম (‌স্যাফফ্লাওয়ার)‌—ন্যূনতম সহায়ক মূল্য (এম এস পি) সুপারিশ করেছে সি এ সি পি ৷

বিবেচিত কারণগুলির মধ্যে রয়েছে ফসলের উৎপাদন খরচ, অভ্যন্তরীণ ও বৈশ্বিক বাজারে জোগান ও চাহিদার পরিস্থিতি, বাণিজ্যের সুযোগসহ দেশীয় ও বিশ্ব মূল্য, কৃষি ও অ–কৃষি ক্ষেত্রের মধ্যে বাণিজ্যের শর্তাবলি, জমির সর্বোত্তম ব্যবহার, জল ও অন্যান্য উৎপাদন সম্পদ, অর্থনীতির বাকি অংশের উপর মূল্যনীতির সম্ভাব্য প্রভাব, এবং উৎপাদন খরচের চেয়ে ন্যূনতম ৫০ শতাংশ বেশি দেওয়া।

যদিও উপর উপর দেখলে তালিকাটি সর্বাত্মক বলে মনে হয়, বর্তমান সময়ের চ্যালেঞ্জগুলির প্রেক্ষিতে দুটি উদ্বেগের কারণ কিন্তু বিবেচিত হচ্ছে না, এবং সে কারণেই এম এস পি ফর্মুলায় পরিবর্তনের প্রয়োজন।

জমির পরিমাণ  জলের ব্যবহার

কতটা জমি ব্যবহার করা হবে এবং এম এস পি–র ওঠাপড়ার মধ্যে কার্যকারণ সম্পর্ক দেখানোর জন্য যথেষ্ট তথ্যভিত্তিক প্রমাণ রয়েছে। সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে জলনিবিড় ফসলের ক্রমবর্ধমান এম এস পি কাবেরী ও তিস্তা নদীর অববাহিকায় কোনও কোনও ক্ষেত্রে জল নিয়ে দ্বন্দ্বের কারণ হয়েছে।

একটি কারণ হল যে  চাল ও গমের এম এস পি, যেখানে ভারতীয় খাদ্য কর্পোরেশনের মতো সরকারি সংস্থাগুলি সংগ্রহে ভূমিকা পালন করে, বাজার মূল্যের জন্য একটি রেফারেন্স তৈরি করেছে। ১৯৭০–এর দশকের শেষের দিকে এম এস পি চালু হওয়ার পর থেকে এটি চাল ও গমের জন্য ‘ন্যূনতম’‌‌ মূল্য নির্ধারণকারী হয়ে উঠেছে।

সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে জলনিবিড় ফসলের ক্রমবর্ধমান এম এস পি কাবেরী ও তিস্তা নদীর অববাহিকায় কোনও কোনও ক্ষেত্রে জল নিয়ে দ্বন্দ্বের কারণ হয়েছে।

১৯৮০ থেকে ২০০০ সালের মধ্যে চাল ও গমের এম এস পি ‘‌মোটা’‌ খাদ্যশস্যের (যেমন জোয়ার, বাজরা ও রাগি) তুলনায় অনেক দ্রুত হারে বৃদ্ধি পেয়েছিল, যা শেষ পর্যন্ত বাণিজ্যের শর্তাবলি (প্রতিযোগী ফসলের, যেমন ধান ও বাজরা, দামের অনুপাত হিসাবে সংজ্ঞায়িত) জলনিবিড় শস্যের পক্ষে নিয়ে আসে।

এর ফলে জমির ব্যবহার হতে থাকে জলগ্রাসকারী প্রধান খাদ্যশস্যগুলির জন্য, যার ফসল–জলের প্রয়োজনীয়তা শুষ্ক বাজরার চেয়ে বহুগুণ বেশি। কাবেরী ও তিস্তার ক্ষেত্রে শুষ্ক মরসুমে ধানের প্রবর্তন এবং তার সম্প্রসারণ সেচের উপর নির্ভরতা তৈরি করেছে, যার ফলে জলের চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে।

এম এস পি ফরমুলায় জমি ও জলের ব্যবহার বিবেচনা করার দাবি করা হ‌লেও এখানে উল্লেখ করা দরকার যে এম এস পি–র মাধ্যমে রবি মিলেটগুলিকে (যেমন রাগি) তুলে ধরা প্রয়োজন। এর কারণ হল গম সহ অন্য অনেক বিকল্পের তুলনায় মিলেট কম জল গ্রহণকারী। কিন্তু রবি মিলেটগুলির জন্য কোনও এম এস পি ঘোষণা করা হয়েছে বলে মনে হয় না।

এই প্রক্রিয়ায় নির্দিষ্ট ফসলের জন্য সেচের জলের প্রয়োজনীয়তার অনুমানগুলি বিবেচনা করা, মিলেটগুলিকে অন্তর্ভুক্ত করে রবিশস্যকে পুনরায় সংজ্ঞায়িত করা, এবং কম জলগ্রহণকারী ফসলের জন্য অধিক জলগ্রহণকারী ফসলের থেকে উচ্চতর এম এস পি ঘোষণা করা গুরুত্বপূর্ণ।

ফাইবারের ক্ষেত্রে রাগি হল সবচেয়ে জলসাশ্রয়ী ফসল;‌ তারপরেই আসে বার্লি ও ভুট্টা, যেগুলি একই ধরনের জলদক্ষতা প্রদর্শন করে।

আকর্ষক বিষয় হল ধান ও রাগি দুটোকেই সি এ সি পি  খরিফ শস্যের অন্তর্ভুক্ত করেছে, যদিও দুটোই রবিশস্য ও গ্রীষ্মকালে উৎপাদিত হয়, যার ফলে এগুলি সম্পূর্ণরূপে সেচের উপর নির্ভরশীল।

পুষ্টি নিরাপত্তা

এম এস পি ফরমুলায় অনুপস্থিত আরেকটি বিবেচ্য হল পুষ্টি নিরাপত্তা। আদর্শভাবে, এম এস পি জমানায় সেই ফসলগুলিকে দাম দেওয়া উচিত যেগুলির এককপ্রতি সম্পদ ব্যবহারের জন্য পুষ্টির উচ্চতর মান রয়েছে (সারণি দেখুন)।

সারণি (একটি ও আর এফ গবেষণার ফলাফল) থেকে এ কথা স্পষ্ট যে রাগি ক্যালোরি উৎপাদনে সবচেয়ে দক্ষ জল–ব্যবহারকারী। বাজরা এবং তার পরে গম ও রাগি লোহা উৎপাদনে জলের দক্ষতার দিক থেকে ভাল ফল করে। ফাইবারের ক্ষেত্রে রাগি হল সবচেয়ে জলসাশ্রয়ী ফসল;‌ তারপরেই আসে বার্লি ও ভুট্টা, যেগুলি একই ধরনের জলদক্ষতা প্রদর্শন করে।

কার্বোহাইড্রেট উৎপাদনে ভুট্টা সবচেয়ে দক্ষ জল ব্যবহারকারী, রাগি দ্বিতীয় ও গম তৃতীয়। ফ্যাট উৎপাদনের ক্ষেত্রে বাজরা প্রথম স্থান নেয়, তারপরে রাগি ও গম। ক্যালসিয়াম উৎপাদনের ক্ষেত্রে রাগির ফল সেরা। গম ও রাগি সমান ভালভাবে ফসফরাস উৎপাদন করে প্রতি ইউনিট জলে ।

এম এস পি সুপারিশের মধ্যে পুষ্টির দিকটি অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজন, এবং অধিক পুষ্টিকর ফসলের উচ্চতর সহায়ক মূল্য নির্দিষ্ট করা উচিত।

তবে এখনও পর্যন্ত এম এস পি ফরমুলায় স্বাস্থ্য ও পুষ্টির দিকটি বিবেচনায় নেওয়া হয়নি। ঋতু নির্বিশেষে, এম এস পি সুপারিশের মধ্যে পুষ্টির দিকটি অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজন, এবং অধিক পুষ্টিকর ফসলের উচ্চতর সহায়ক মূল্য নির্দিষ্ট করা উচিত।

এই ক্ষেত্রে যেখানে আমরা গমের প্রতি একটি স্পষ্ট পক্ষপাত খুঁজে পাই, সেখানে এই বিষয়টি যথেষ্ট স্পষ্ট যে পুষ্টি নিরাপত্তার দৃষ্টিকোণ থেকে দেখলে এম এস পি–কে অবশ্যই রাগিকেও সমর্থন করতে হবে।


লেখক অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনএর একজন ডিরেক্টর এবং ইন্ডিয়ান সোসাইটি ফর ইকোলজিক্যাল ইকনমিক্সএর প্রেসিডেন্ট

এই ভাষ্যটি প্রথমে ‘দ্য হিন্দু বিজনেস লাইন’-এ প্রকাশিত হয়েছিল।

মতামত লেখকের নিজস্ব।

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.