Author : Abhishek Mishra

Issue BriefsPublished on Feb 18, 2024
ballistic missiles,Defense,Doctrine,North Korea,Nuclear,PLA,SLBM,Submarines

আফ্রিকাতে ফিরে যাওয়ার জন্য রাশিয়ার কম–ঝুঁকির কিন্তু উচ্চ–লাভের কৌশল

  • Abhishek Mishra

    রাশিয়ার ভূ–কৌশলগত অবস্থানের জন্য আফ্রিকা অপরিহার্য হয়ে উঠেছে, কারণ মস্কো ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে তার আক্রমণের পরবর্তী প্রতিক্রিয়া কাটিয়ে উঠতে চায়। যাই হোক, বিচ্ছিন্নতা এবং একটি সংকোচনশীল অর্থনীতির সম্মুখীন রাশিয়া বুঝতে পেরেছে যে প্রচলিত উপায়ে — যেমন বিদেশি প্রত্যক্ষ বিনিয়োগ (এফডিআই), বাণিজ্য, উন্নয়ন সহায়তা, বা সাংস্কৃতিক ও শিক্ষা বিনিময়ের মাধ্যমে — আফ্রিকাতে একটি প্রবেশবিন্দু খোঁজা এর সেরা বিকল্প নাও হতে পারে। পরিবর্তে, মস্কো আফ্রিকায় তার প্রভাব বিস্তার করার পথ বেছে নিচ্ছে একটি কম ঝুঁকিপূর্ণ, উচ্চ–লাভের কৌশল অবলম্বন করে, যা হল আফ্রিকার অভিজাতদের সঙ্গে কাজ করা, মহাদেশ জুড়ে গণতন্ত্রকে দুর্বল করা, এবং কর্তৃত্ববাদী শাসনকে সক্ষম করে তোলা। রাশিয়া ও ইউক্রেন উভয় দেশ থেকে শস্য ও তেল আমদানির উপর নির্ভরতার কারণে ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে আফ্রিকা মহাদেশের অনেক অংশে অস্থিতিশীলতা তৈরি হয়েছে। এই পটভূমিতে, চলতি যুদ্ধের মধ্যে আফ্রিকায় রাশিয়ার সম্পৃক্ততা কীভাবে বিকশিত হয়েছে তা এই নিবন্ধটি সংক্ষিপ্তভাবে পরীক্ষা করে।

Attribution:

অভিষেক মিশ্র, "রাশিয়া’‌জ লো–রিস্ক, হাই–রিওয়ার্ড স্ট্র‌্যাটেজি ফর ইটস রিটার্ন টু আফ্রিকা," ওআরএফ ইস্যু ব্রিফ নং ৬৬৬, অক্টোবর ২০২৩, অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশন।

ভূমিকা

বিভিন্ন পর্যবেক্ষক যুক্তি দিয়েছেন যে ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণকে স্পষ্টভাবে নিন্দা করতে আফ্রিকার রাষ্ট্রগুলির দ্বিধা গভীর, এবং তা সোভিয়েত যুগের সময়কার সম্পর্কের মধ্যে নিহিত। ১৯৫০–এর দশকের মাঝামাঝি আফ্রিকা ছিল ঠান্ডা যুদ্ধের একটি রণক্ষেত্র: তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন আফ্রিকার মুক্তি আন্দোলনকে সমর্থন করেছিল, এবং মহাদেশের বিভিন্ন ঔপনিবেশিকতা–বিরোধী বা মার্কিন–বিরোধী গোষ্ঠীকে অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তা সহায়তা প্রদান করেছিল। ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের বিলুপ্তি এবং এর আন্তর্জাতিক বিচ্ছিন্নতা সদ্যপ্রতিষ্ঠিত রাশিয়ান ফেডারেশনকে আফ্রিকা থেকেও বিচ্ছিন্ন হতে বাধ্য করে। সোভিয়েত–পরবর্তী রাশিয়া আফ্রিকা মহাদেশে খুব কম আগ্রহ দেখায়, এবং ২০১০–এর দশকের শেষের দিকে ক্রেমলিন আবার আফ্রিকার রাষ্ট্রগুলির সঙ্গে তার ভূ–রাজনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তোলার উচ্চাকাঙ্ক্ষা প্রদর্শন করে।

আজ, রাশিয়া আফ্রিকার রাষ্ট্রগুলির সঙ্গে, যারা এখন অ–পশ্চিমী বাজার, অংশীদার ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলির দিকে অগ্রসর হচ্ছে, তাদের সঙ্গে সম্পর্ক পুনরুজ্জীবিত করার চেষ্টা করছে৷ বিশ্লেষকেরা প্রায় দশ বছর আগে এই বর্ধিত সম্পৃক্ততা উল্লেখ করেছেন, যা ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২–এ রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমণের পরে আরও বৃদ্ধি পায়। [১] রাশিয়ার বিশ্ব অ্যাজেন্ডায় আফ্রিকা আবার আবির্ভূত হয়েছে। মহাদেশে মস্কোর আবেদনে সাহায্য করে তার সীমিত ঔপনিবেশিক অতীত। [ক], [২]

রাশিয়া নিজেকে এমন একজন বন্ধু হিসাবে উপস্থাপন করার লক্ষ্যে প্রচেষ্টা  চালাচ্ছে যে আফ্রিকার সমাজের ঐতিহ্যগত মূল্যবোধকে সম্মান করে, এর অর্থনৈতিক উন্নয়নে অংশীদার, এবং নিরাপত্তা হুমকির বিরুদ্ধে একটি শক্তি। প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও রাশিয়ার বিদেশমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ রাশিয়াকে সাম্রাজ্যবাদ–বিরোধী শক্তি হিসাবে চিত্রিত করা এবং শোষক পশ্চিমী উপনিবেশবাদীদের বিরুদ্ধে আফ্রিকার বিভিন্ন স্বাধীনতা যুদ্ধে সোভিয়েত সমর্থনের উত্তরাধিকার আফ্রিকার নেতাদের স্মরণ করিয়ে দেওয়ার প্রতিটি সুযোগকে কাজে লাগিয়েছেন। [৩]

গত এক দশকে রাশিয়া রাজনৈতিক সমর্থনের পাশাপাশি সামরিক সরঞ্জাম বিক্রি করা এবং নিরাপত্তা সহযোগিতার মাধ্যমে আফ্রিকায় প্রতিটি সম্ভাব্য সুযোগ কাজে লাগানোর প্রচেষ্টা ত্বরান্বিত করেছে। আজ রাশিয়ার উপস্থিতি এবং আফ্রিকার সঙ্গে সম্পর্কের প্রাথমিক বৈশিষ্ট্য হল রাশিয়ার রাজনৈতিক অনুপ্রেরণা, যা ব্যবহারিক যোগাযোগের ক্ষেত্রে একটি শক্তিশালী মতাদর্শগত সুর হিসাবে উঠে আসছে। এ কথা অবশ্যই ঠিক যে, যদিও আফ্রিকায় মস্কোর উপস্থিতি তীব্রভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে, বেসলাইনটি শুরুতে কম ছিল। ফলে আফ্রিকার অন্যান্য আন্তর্জাতিক উন্নয়ন অংশীদার, যেমন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, চিন বা ইউরোপীয় ইউনিয়নের তুলনায় রাশিয়ার রাজনৈতিক প্রভাব, অর্থনৈতিক ওজন ও সামরিক উপস্থিতি নগণ্য। যাই হোক, কৌশলগত বর্ণনার সারিবদ্ধতার কারণে আফ্রিকার নেতৃবৃন্দ ও অভিজাতদের জন্য রাশিয়া একটি আকর্ষণীয় অংশীদার:‌ রাশিয়া সস্তা অস্ত্র সরবরাহকারী, শক্তি, খনি, নির্মাণ, ও সার শিল্পে অর্থনৈতিক সুবিধাদানকারী; এবং তার কোনও আদর্শগত শর্তাবলি নেই। [খ]

রাশিয়া–আফ্রিকা সম্পর্কের পুনরুত্থান অক্টোবর ২০১৯–এ তুলে ধরা হয়েছিল, যখন পুতিন সোচিতে প্রথম রাশিয়া–আফ্রিকা শীর্ষ সম্মেলনের সহ–সভাপতি ছিলেন। [৪] সেখানে আফ্রিকার ৪৩টি দেশের রাষ্ট্রপ্রধানরা উপস্থিত ছিলেন। রাশিয়া তখন থেকে আফ্রিকার বিভিন্ন দেশের সঙ্গে সামরিক–প্রযুক্তিগত চুক্তি স্বাক্ষর করেছে; সুরক্ষিত লাভজনক খনি ও পারমাণবিক শক্তি চুক্তি করেছে; এবং লিবিয়া ও সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিকের (সিএআর) গৃহযুদ্ধের ফলাফলকে প্রভাবিত করেছে। রাশিয়ার ভাড়াটে সেনাবাহিনী (পিএমসি), বিশেষ করে ওয়াগনার গ্রুপ, সাহারার দক্ষিণে তাদের কাজকর্ম প্রসারিত করেছে।

রাশিয়া বর্তমানে সাব–সাহারান আফ্রিকায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স ও চিনের চেয়ে বেশি অস্ত্র রপ্তানি করে। [৫] যাই হোক, আফ্রিকার আকর্ষণ সত্ত্বেও, মহাদেশে রাশিয়ার শক্তি প্রক্ষেপণ বিভিন্ন সীমাবদ্ধতার সম্মুখীন। আফ্রিকায় রাশিয়ার দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ১৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে দাঁড়িয়েছে, যা ২০২২–২০২৩ সালের হিসাবে ভারত (৯৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার) ও তুরস্কের (৩৪.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার) থেকে কম। [৬] আফ্রিকার আর্থ–সামাজিক–রাজনৈতিক বাস্তবতা সম্পর্কে রাশিয়ার জ্ঞানও দুর্বল, যার জন্য ১৯৯০–এর দশকে কমিউনিজমের পতনের পর মহাদেশে রাশিয়ার প্রভাবের ‘‌হারানো দশক’কে‌ দায়ী করা যেতে পারে।

ইউক্রেনের যুদ্ধ আফ্রিকায় রাশিয়ার নিযুক্তির স্থিতিস্থাপকতা এবং এর সীমাবদ্ধতা উভয়কেই তুলে ধরেছে। রাশিয়া ও ইউক্রেন থেকে শস্য ও তেল আমদানির উপর আফ্রিকার দেশগুলির নির্ভরতার কারণে সরবরাহ শৃঙ্খলে যুদ্ধের সঙ্গে যুক্ত বাধা, পণ্যের অনুপলব্ধতা এবং খাদ্য ও জ্বালানির দাম বৃদ্ধি আফ্রিকায় খাদ্য নিরাপত্তাহীনতাকে বাড়িয়ে তুলেছে। [৭] আফ্রিকান ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্ক গ্রুপ (এএফডিবি) উল্লেখ করেছে যে ইউক্রেনে আক্রমণ মহাদেশে ৩০ মিলিয়ন টন শস্যের ঘাটতি সৃষ্টি করেছিল, বিশেষ করে গম, ভুট্টা ও সয়াবিনের। [৮] যাই হোক, আফ্রিকার অনেক দেশ রাশিয়ার সঙ্গে ব্যবসায়িকভাবে জড়িত থাকে। কিছু উল্লেখযোগ্য আফ্রিকী অর্থনীতি রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ পরিষদে (ইউএনজিএ) রুশ আগ্রাসনের নিন্দা বা ইউক্রেনের সঙ্গে দ্ব্যর্থহীন সংহতি প্রকাশ করা থেকে বিরত থেকেছে। [৯] এই ইস্যুতে আফ্রিকার দেশগুলির মধ্যে ক্রমাগত বিভাজনের জন্য ঐতিহাসিক ও বাস্তব উভয় কারণকেই দায়ী করা যেতে পারে।

এই নিবন্ধটি আফ্রিকার সঙ্গে রাশিয়ার ক্রমবর্ধমান সম্পৃক্ততাকে প্রতিফলিত করে। এটি এমন একটি অঞ্চল যা মস্কো ক্রমবর্ধমানভাবে তার পশ্চিম–পরবর্তী বিদেশনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র হিসাবে দেখছে। নিবন্ধের বাকি অংশে পূর্ববর্তী সোভিয়েত ইউনিয়ন ও আফ্রিকার মধ্যে ঐতিহাসিক সম্পর্ক বর্ণনা করা হয়েছে; সোভিয়েত ইউনিয়ন ও রাশিয়ার আফ্রিকা নীতির তুলনা করা হয়েছে; সমসাময়িক সময়ে আফ্রিকায় রাশিয়ার পৌঁছে যাওয়ার চেষ্টার প্রাথমিক চালিকাশক্তি ও কৌশলগত বিবেচনাগুলি অন্বেষণ করা হয়েছে; আফ্রিকার উপর ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব বিশ্লেষণ করা হয়েছে; এবং যুক্তি দেওয়া হয়েছে যে কেন মহাদেশে মস্কোর প্রভাবের অতিমূল্যায়ন না–করা বুদ্ধিমানের কাজ হবে।


সোভিয়েত–আফ্রিকা বন্ধন: একটি ঐতিহাসিক পর্যালোচনা

ঔপনিবেশিক আমলে সোভিয়েত ইউনিয়ন আফ্রিকার সঙ্গে সামান্য যোগাযোগ রক্ষা করেছিল; শুধুমাত্র জারতন্ত্রের আমল থেকেই এর আদ্দিস আবাবায় একটি দূতাবাস ছিল। যাই হোক, ১৯৫০ সাল থেকে সোভিয়েত ইউনিয়ন পশ্চিমী ব্লকের মোকাবিলায় নিজের আদর্শগত অ্যাজেন্ডাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে আফ্রিকার স্বাধীনতা আন্দোলনকে যথেষ্ট সমর্থন প্রদান করে। সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে এই ধরনের সমর্থন অর্থনৈতিক ও প্রযুক্তিগত সহায়তা, নিরাপত্তা সহযোগিতা, আফ্রিকার ছাত্র ও পার্টি ক্যাডারদের বৃত্তি ও প্রশিক্ষণ হিসাবে বাস্তবায়িত হয়েছিল।

সোভিয়েত ইউনিয়নের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে সহযোগিতা করার সিদ্ধান্ত আফ্রিকার জন্য সহজ ছিল না, প্রাথমিকভাবে আফ্রিকার রাষ্ট্রগুলির স্বায়ত্তশাসন বজায় রাখা এবং বহিরাগত খেলোয়াড়দের মহাদেশের বাইরে রাখার আকাঙ্ক্ষার কারণে। [১০] আফ্রিকার নেতারা বিদেশি সম্পৃক্ততা নিয়ে শঙ্কিত ছিলেন এবং মহাশক্তি প্রতিযোগিতায় জড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করতেন, যেমনটি ১৯৬৪ সালে কঙ্গোতে মার্কিন ও বেলজিয়ামের হস্তক্ষেপের সময় এবং ১৯৭৫ সালে অ্যাঙ্গোলার গৃহযুদ্ধের সময় ঘটেছিল।[১১]

যাই হোক, দক্ষিণ আফ্রিকা, রোডেশিয়া ও নামিবিয়ায় পর্তুগিজ উপনিবেশ এবং শ্বেতাঙ্গ–সংখ্যালঘু শাসনের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য অ–আফ্রিকী দেশগুলির সহায়তা চাওয়া থেকে আফ্রিকার নেতাদের নিরুৎসাহিত করার জন্য এই অ–সংযুক্তি যথেষ্ট শক্তিশালী ছিল না। ফলস্বরূপ, ১৯৬৪ সালে মোজাম্বিক মুক্তি আন্দোলনের মতো পর্বের সময় সোভিয়েত সমর্থন সহজেই গৃহীত হয়েছিল, এবং মোজাম্বিক লিবারেশন ফ্রন্ট (ফ্রেলিমো) পর্তুগিজদের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য সোভিয়েত সামরিক সরঞ্জাম ও প্রশিক্ষণ ব্যবহার করেছিল। [১২] এই ঘটনার ফলে আফ্রিকার দেশগুলি নব্য–ঔপনিবেশিক ও সাম্রাজ্যবাদী প্রভাবকে পশ্চিমের সমার্থক করে তোলে, [১৩] আর রাশিয়ার মতো অ–পশ্চিমী অভিনেতারা ‘‌সাম্রাজ্যবাদী’‌ ট্যাগ থেকে রক্ষা পায়।

সোভিয়েত ইউনিয়ন ও রাশিয়ার আফ্রিকা নীতি: একটি তুলনা

১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের বিলুপ্তির পরবর্তী দুই দশকের আপেক্ষিক বিচ্ছিন্নতার পর রাশিয়া আফ্রিকার মুক্তি সংগ্রামকে সমর্থন করার সোভিয়েত উত্তরাধিকারের সঙ্গে নিজেকে পুনরায় সংযুক্ত করে, এবং আফ্রিকায় উপনিবেশবাদের বিরোধিতা করার জন্য নিয়মিত এই উত্তরাধিকারের উপর নির্ভর করে এগোতে থাকে।

সোভিয়েত ইউনিয়ন ও রাশিয়া উভয়ের আফ্রিকা নীতিই ক্রমাগত আফ্রিকার দেশগুলির সার্বভৌমত্ব এবং মহাদেশে জড়িত থাকার ক্ষেত্রে পারস্পরিক স্বেচ্ছানির্ভর প্রকৃতির উপর গুরুত্ব আরোপ দিয়ে চিহ্নিত হয়েছিল। [১৪] ১৯৬০–এর দশকে সোমালিয়া এবং ১৯৭৪ সালে ইথিওপিয়াকে সোভিয়েত সমর্থন এই আফ্রিকী রাষ্ট্রগুলির আমন্ত্রণে ঘটেছিল বলে দাবি করা হয়েছিল। [১৫] একইভাবে, রাশিয়ার অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা সংস্থার (এফএসবি) সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত রুশ পুলিশ অফিসাররা আফ্রিকার দেশগুলির প্রেসিডেন্ট ও রাজনৈতিক অভিজাতদের নিরাপত্তার ভূমিকা গ্রহণ করে, যেমনটি ২০১৭ সালে সিএআর–এর ক্ষেত্রে হয়েছিল। [১৬] রাশিয়া এই ধরনের কর্মকর্তাদের উপস্থিতির কারণ হিসাবে আফ্রিকার নেতাদের ‘‌ইচ্ছা’‌র কথা বলেছিল। [১৭]

২০১৪ সালে রাশিয়া–দক্ষিণ আফ্রিকা পারমাণবিক চুক্তির পটভূমিতে দক্ষিণ আফ্রিকার আফ্রিকান ন্যাশনাল কংগ্রেস (এএনসি)–এর প্রতি রাশিয়ার সমর্থন মস্কোর বর্ণবিদ্বেষ–বিরোধী আন্দোলনে সোভিয়েত ইউনিয়নের সমর্থনকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার একটি উদাহরণ। দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক প্রেসিডেন্ট জ্যাকব জুমা সোভিয়েত ইউনিয়নে সামরিক প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছিলেন। একবার তিনি প্রেসিডেন্ট নিযুক্ত হলে জুমা ও রাশিয়া একটি পারমাণবিক শক্তি চুক্তি সম্পন্ন করে। [১৮] যদিও জুমার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগের কারণে চুক্তিটি শেষ পর্যন্ত উল্টো বিপদ ডেকে এনেছিল, চুক্তিটি আফ্রিকার মুক্তি আন্দোলনের সমর্থক হিসাবে রাশিয়ার খ্যাতিকে শক্তিশালী করে। [১৯]

সোভিয়েত ইউনিয়ন ও রাশিয়ার আফ্রিকা নীতি নির্দিষ্ট ফ্রন্টে ভিন্ন। ঠান্ডা যুদ্ধের সময় সোভিয়েত ইউনিয়ন আফ্রিকার সেই রাষ্ট্রগুলিতে সরাসরি হস্তক্ষেপ করত যেখানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের শক্তিশালী স্বার্থ ছিল। বিপরীতে, রাশিয়া এমন দেশগুলির উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করেছে যেগুলি মূলত পশ্চিমের দ্বারা উপেক্ষিত। এইভাবে রাশিয়া নিজেকে পশ্চিমের সরাসরি প্রতিদ্বন্দ্বী হিসাবে দাঁড় করানো থেকে বিরত থেকেছে, এবং এমন দেশগুলির সঙ্গে জড়িত থেকেছে যাদের কিছু বিকল্প অংশীদার রয়েছে। [২০] লিবিয়া, সুদান ও জিম্বাবোয়ের মতো দেশ, যেখানে রাশিয়া ২০১৪ সাল থেকে সক্রিয় রয়েছে, তারা সবাই যুদ্ধাপরাধের জন্য রাষ্ট্রপুঞ্জ (ইউএন) এবং/অথবা ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)-এর বহুপাক্ষিক নিষেধাজ্ঞার অধীনে রয়েছে। সিএআর ও মালির মতো দেশগুলিতে রাশিয়ার সম্পৃক্ততা ফ্রান্সের (২০১৩–আগস্ট ২০২২) এবং মালিতে মাইনাসমা (এপ্রিল ২০১৩–জুন ২০২৩) নামে পরিচিত  রাষ্ট্রপুঞ্জের শান্তিরক্ষা মিশনের প্রত্যাহারের ফলে সৃষ্ট শূন্যতার ফলাফল বলে মনে হচ্ছে।

উপরন্তু, রাশিয়ার বর্তমান পদ্ধতি ঠান্ডা যুদ্ধের সময়কার সোভিয়েত পদ্ধতির তুলনায় অনেক কম রাষ্ট্রকেন্দ্রিক। ২০১০ সালের মাঝামাঝি থেকে আফ্রিকাতে বেশিরভাগ রুশ কার্যকলাপ পুতিনের সহযোগীদের নেটওয়ার্ক দ্বারা পরিচালিত হয়েছে, যাদের অনেকে আবার রাশিয়ার রাষ্ট্র–নিয়ন্ত্রিত প্রাকৃতিক সম্পদকে নিয়ন্ত্রণ করে। ব্যবসায়ী ও পুতিনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ইয়েভগেনি প্রিগোজিন এই বছরের আগস্টে তাঁর মৃত্যুর খবর আসার আগে পর্যন্ত একটি নেটওয়ার্ক–এর তত্ত্বাবধান করছিলেন যা প্রায়ই ‘‌কোম্পানি’‌ হিসাবে উল্লেখ করা হয় এবং যার মধ্যে রয়েছে ওয়াগনার গ্রুপ নামে পরিচিত পিএমসি, যেটি লিবিয়া, সুদান, মোজাম্বিক, সিএআর ও মালিতে বেশ কয়েকটি আধা–সামরিক ও রাজনৈতিক অভিযান পরিচালনা করেছে। এই নেটওয়ার্কটি আইনত রুশ রাষ্ট্রের অংশ হিসাবে স্বীকৃত নয়, কিন্তু তা সত্ত্বেও ক্রেমলিনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে সংযুক্ত। [২১]


আফ্রিকায় রুশ নিযুক্তি

আফ্রিকায় রাশিয়ার প্রসার ঘনিষ্ঠভাবে আরও বহুমুখী বিশ্বব্যবস্থার জন্য রাশিয়ার অনুসন্ধানের পাশাপাশি রাশিয়া ও পশ্চিমের মধ্যে ক্রমবর্ধমান প্রতিযোগিতার সঙ্গে সম্পর্কিত। আফ্রিকা রাশিয়ার বিদেশ ও নিরাপত্তা নীতির জন্য অগ্রাধিকার না–হলেও রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমণের পর এর গুরুত্ব বেড়েছে, কারণ রাশিয়া ক্রমশ পশ্চিম থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে। অতিরিক্তভাবে, ঠান্ডা যুদ্ধের সময় আফ্রিকার সঙ্গে সোভিয়েত ইউনিয়নের সম্পৃক্ততা আফ্রিকার দেশগুলির জন্য খুব বেশি লাভ এনে দিতে পারেনি। সোভিয়েত ইউনিয়ন যথেষ্ট লাভের অভিজ্ঞতা লাভ করেছিল যখন আর্থিক ব্যয় বাড়তে থাকে, যার ফলে সাব–সাহারান দেশগুলির প্রায় ১৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের ঋণ তৈরি হয়, যা ১৯৯০–এর দশকে রাজনৈতিক পশ্চাদপসরণের পরে সোভিয়েত–পরবর্তী রাশিয়ার পাওনা হয়। [২২]

রাশিয়া এখন ঠান্ডা যুদ্ধের সময়কালের মতো বৃহৎ মাপের প্রতিশ্রুতিগুলি এড়িয়ে চলছে, উচ্চতর লাভ তোলার সময় তার বিনিয়োগ কম রাখার চেষ্টা করছে, এবং আফ্রিকাতে আরও বেশি নিষ্কাশনমূলক ও সুবিধাবাদী পদ্ধতির দিকে সরে যাচ্ছে।[২৩] যেমন, রাশিয়ান তেল জায়ান্ট রোসনেফ্ট মোজাম্বিক ও অ্যাঙ্গোলার মতো দেশে ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে অনুসন্ধানের জন্য চুক্তি করেছিল, যেখানে এর সিইও এবং পুতিনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ইগর সেচিন ১৯৮০–র দশকে সামরিক অনুবাদক হিসাবে কাজ করেছিলেন। [২৪]

এখন এই অঞ্চলে আগের আদর্শগত বা সামাজিক অনুরণনের অভাব সত্ত্বেও মহাদেশে একটি বাইরের শক্তি হিসাবে প্রভাব অর্জনে রাশিয়া সফল হয়েছে। এই পদ্ধতিগুলির মধ্যে একটি হল ওয়াগনার গ্রুপের ভাড়াটেদের ব্যবহার, যারা সোনার খনি নিয়ন্ত্রণ করে এবং স্বৈরাচারী নেতাদের নিরাপত্তার দায়িত্ব দখল করে। অন্য যে উপায়গুলির মাধ্যমে রাশিয়া মহাদেশে তার স্বার্থকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে তার মধ্যে আছে অপতথ্য প্রচার করে গণতন্ত্রের পক্ষে সমর্থন দুর্বল করা, নিরাপত্তা সহযোগিতা দেওয়া, শিক্ষাগত ও সাংস্কৃতিক আদান–প্রদানের ব্যবস্থা করা থেকে শুরু করে রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের (ইউএনএসসি) আফ্রিকান সদস্যদের তোষামোদ করা, যা স্পষ্ট হয়েছিল রাশিয়া–ইউক্রেন দ্বন্দ্বে আফ্রিকার দেশগুলির বিভক্ত ভোটিং প্যাটার্ন থেকে।

যাই হোক, রাশিয়া–আফ্রিকা শীর্ষ সম্মেলনের মতো প্রচলিত উপায় কাঙ্ক্ষিত ফলাফল দিতে ব্যর্থ হয়েছে। সোচিতে ২০১৯ শীর্ষ সম্মেলনে ৪৩টি দেশের তুলনায় ২৭–২৮ জুলাই, ২০২৩ তারিখে সেন্ট পিটার্সবার্গে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় রাশিয়া–আফ্রিকা শীর্ষ সম্মেলনে আফ্রিকার ১৭টি দেশের নেতারা অংশগ্রহণ করেছিলেন। উপরন্তু ব্ল্যাক সি গ্রেন ইনিশিয়েটিভ পুনর্নবীকরণের বিষয়ে, যার মাধ্যমে ইউক্রেন বেশ কয়েকটি আফ্রিকান দেশে শস্য রপ্তানি করেছিল, শীর্ষ সম্মেলনে কোনও প্রতিশ্রুতি ছিল না। [২৫] যদিও প্রেসিডেন্ট পুতিন বুরকিনা ফাসো, মালি, জিম্বাবোয়ে, সোমালিয়া, সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিক ও ইরিট্রিয়াতে ২৫,০০০-৫০,০০০ টন শস্য বিনামূল্যে রপ্তানির প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তবে এটি ব্ল্যাক সি গ্রেন ইনিশিয়েটিভ–এর আওতায় রাষ্ট্রপুঞ্জের ওয়র্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম কর্তৃক পাঠানো ৭২৫,০০০ টন শস্যের তুলনায় নগণ্য। [২৬] তার উপর, উভয় পক্ষের সৈন্য প্রত্যাহারের প্রাথমিক চুক্তি ছাড়া যুদ্ধবিরতি বা শান্তি আলোচনা পরিচালনা করতে পুতিন ও জেলেনস্কির অস্বীকৃতি ছিল ইউক্রেন ও রাশিয়ায় আফ্রিকান শান্তি মিশনকে প্রত্যাখ্যান করার সমতুল্য। [২৭]

অর্থনৈতিকভাবে, রাশিয়া আফ্রিকার দেশগুলিতে নিজস্ব কৃষি–পণ্য (শস্য), সার, ডিজিটাল, মহাকাশ, অস্ত্র ও পারমাণবিক প্রযুক্তির রপ্তানি বাড়ানোর পাশাপাশি আফ্রিকার প্রাকৃতিক সম্পদে (তেল, হিরা এবং গ্যাস) ঢোকার দিকে লক্ষ্য রাখে। রাশিয়া মহাদেশটিকে তার বৃহৎ বাজার এবং প্রচুর প্রাকৃতিক সম্পদের ভিত্তির কারণে বিশাল অর্থনৈতিক সম্ভাবনা বলে মনে করে। উদাহরণস্বরূপ, রাশিয়ান অ্যালুমিনিয়ামের একটি উল্লেখযোগ্য শতাংশ গিনি থেকে আনা বক্সাইট দিয়ে তৈরি করা হয়, যেখানে রাশিয়ার অ্যালুমিনিয়াম উৎপাদক রুসাল খনির ক্ষেত্রে বড় ধরনের ছাড় পায়। [২৮]

সামরিকভাবে, রাশিয়া নিজেকে একটি জিহাদি–বিরোধী শক্তি হিসাবে তুলে ধরে যে আফ্রিকার সেনাবাহিনীর সঙ্গে নিরাপত্তা অংশীদারিত্ব গভীর করতে এবং মূল পরিকাঠামোতে প্রবেশাধিকার পেতে চেষ্টা চালায়। আফ্রিকা রাশিয়ার অস্ত্রের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বাজার, এবং আলজেরিয়া ও মিশর তার সিংহভাগ কেনে। [২৯] ২০১৭ থেকে ২০২১–এর মধ্যে ‘‌মস্কোর সামগ্রিক অস্ত্র বিক্রির ২৭% কিনেছিল আফ্রিকার দেশগুলি, আর রাশিয়ার কোম্পানিগুলি সোভিয়েত যুগের সরঞ্জামগুলির রক্ষণাবেক্ষণ পরিষেবা প্রদান করেছিল।" [৩০]

কূটনৈতিকভাবে, রাশিয়া রাষ্ট্রপুঞ্জে তার অবস্থানের সমর্থনে আফ্রিকান ভোট চায়, যা ইউক্রেন আক্রমণের পরে ইউএনজিএ ভোটে স্পষ্ট হয়েছিল। আফ্রিকার অনেক দেশ যে ভোটদান থেকে বিরত ছিল, এমনকি ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার আগ্রাসনের নিন্দা প্রস্তাবের বিরুদ্ধেও ভোট দিয়েছে, তা তাৎপর্যপূর্ণ। [৩১]

ভৌগোলিকভাবে, বেশিরভাগ রুশ কার্যকলাপ মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকার (এমইএনএ) উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করেছে, যা আফ্রিকার দক্ষিণ অংশের সঙ্গে রাশিয়ার সম্পৃক্ততার পথ তৈরি করেছে। উত্তর আফ্রিকা রাশিয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি মস্কোকে ভূমধ্যসাগরে উপস্থিতি নিশ্চিত করতে দেয়। হর্ন অফ আফ্রিকা এবং বৃহত্তর পূর্ব আফ্রিকা রাশিয়ার জন্যও আকর্ষণীয়, কারণ চিন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, উপসাগরীয় রাষ্ট্র এবং ফ্রান্সের মতো আন্তর্জাতিক শক্তি এই অঞ্চলে প্রভাব বিস্তারের জন্য প্রতিযোগিতা করে। ২০০০–এর দশকের মাঝামাঝি থেকে, রাশিয়া ধারাবাহিকভাবে মিশর ও সুদানের মতো দেশে শস্য রপ্তানিতে তার অংশ প্রসারিত করেছে। সিরিয়ায় রাশিয়ার হস্তক্ষেপ মস্কোকে তার সামরিক সরঞ্জামের প্রদর্শন ও যুদ্ধ–পরীক্ষা করার সুযোগ দিয়েছিল, এবং এটি পরবর্তীতে সাব–সাহারান আফ্রিকায় নতুন ক্রেতা পেতে এবং এই অঞ্চলে অস্ত্র রপ্তানিতে তার অংশ বৃদ্ধি করে।

আফ্রিকার উপর ইউক্রেন সংঘাতের প্রভাব

ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণ আফ্রিকায় রাশিয়ার প্রভাবের স্থিতিস্থাপকতা এবং সীমাবদ্ধতা উভয়ই তুলে ধরে। যুদ্ধক্ষেত্র থেকে ভৌগোলিকভাবে দূরে থাকা সত্ত্বেও, এই সংঘাত আফ্রিকাতে ‌প্রভাব, বিশেষ করে অর্থনৈতিক প্রভাব, ফেলেছিল। যুদ্ধ আফ্রিকায় কৃষিপণ্যের সরবরাহ ব্যাহত করে, দাম বাড়িয়ে দেয়, এবং মহাদেশ জুড়ে খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা ও দারিদ্র্য বাড়িয়ে তোলে। উপরন্তু, কৃষ্ণ সাগরের তীরে ইউক্রেনের বিভিন্ন বন্দর, যেগুলির মাধ্যমে আফ্রিকার দেশগুলিতে সার, গম ও অপরিশোধিত তেল পাঠানো হত, সেগুলি অবরুদ্ধ করা হয়েছিল, এবং তার ফলে পণ্য চলাচলের একটি প্রধান ধমনী বন্ধ হয়ে গিয়েছিল।

এই প্রতিক্রিয়া সত্ত্বেও, রাষ্ট্রপুঞ্জের জরুরি অধিবেশনে রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমণের নিন্দা করার প্রস্তাবে ভোট দেওয়ার ক্ষেত্রে আফ্রিকার দেশগুলির ভোট বিভক্ত হয়েছিল।[৩২] আফ্রিকা মহাদেশে ৫৪টি দেশের একটি বিশাল ভোটিং ব্লক রয়েছে, যা সাধারণ পরিষদের সদস্যদের ২৮ শতাংশ। প্রথম ভোটে আফ্রিকার ২৮টি দেশ প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছে, ১৭টি বিরত থাকার পক্ষে ভোট দেয়ে, আটটি দেশ ভোটই দেয়নি এবং শুধু ইরিট্রিয়া প্রস্তাবটির বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছিল। পরবর্তী ভোটে ‘‌শুধুমাত্র ১৯ শতাংশ আফ্রিকী রাষ্ট্র রাশিয়াকে রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার কমিশন (ইউএনএইচআরসি) থেকে সাসপেন্ড করার পক্ষে ভোট দিয়েছিল, এবং তৃতীয় ভোটে, ৫৬ শতাংশ আফ্রিকী দেশ ইউক্রেনের ভূখণ্ডের অধিভুক্তির দাবিকে স্বীকৃতি না–দেওয়ার পক্ষে ভোট দিয়েছিল’‌।[৩৩]

আফ্রিকার দেশগুলির এই ধরনের ঐকমত্যের অভাব আশ্চর্যজনক নয়; আফ্রিকার দেশগুলি ‘‌নিরপেক্ষ’‌ অবস্থান নিয়েছে কারণ তারা পশ্চিমের সঙ্গে রাশিয়া ও চিনের  প্রক্সি যুদ্ধের অংশ হতে চায় না। তারা উভয় পক্ষের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক বজায় রাখা এবং ভারসাম্য বজায় রেখে তাদের বহিরাগত অংশীদারদের মধ্যে বৈচিত্র্য আনার চেষ্টা করছে। তার অতিরিক্ত, রাশিয়ার সামরিক ও বস্তুগত সমর্থন, যা কোনও অন্তর্নিহিত শর্ত ছাড়াই আসে, আফ্রিকার দেশগুলির জন্য জিহাদি বিদ্রোহের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে অপরিহার্য। ‘‌‘‌যখনই আফ্রিকার একটি কর্তৃত্ববাদী সরকার রাষ্ট্রপুঞ্জের নিষেধাজ্ঞা, জালিয়াতিমূলক নির্বাচনের অভিযোগ, বা মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য সমালোচনার সম্মুখীন হবে, তখনই রাশিয়া বিশ্ব মঞ্চে নিজেকে অভিযুক্ত শাসনের রক্ষক হিসাবে তুলে ধরবে।’‌’‌[৩৪] এটি রাশিয়াকে অপ্রতিসম, সস্তা উপায় ব্যবহার করে — যেমন শাসন সুরক্ষা, সহযোগিতা, নির্বাচনী হস্তক্ষেপ, এবং অস্বচ্ছ সম্পদের–বিনিময়ে–অস্ত্র — কর্তৃত্ববাদী নেতাদের সঙ্গে গ্রাহকবাদী সম্পর্ক গড়ে তুলতে দেয়।

আফ্রিকার ওয়াগনার গ্রুপ

ওয়াগনার গ্রুপ লিবিয়া, মোজাম্বিক, মাদাগাস্কার, সিরিয়া, সুদান, সিএআর এবং মালিতে সংঘাতে সক্রিয়ভাবে জড়িত। গ্রুপটি স্বাধীন মর্যাদাবিশিষ্ট, যা সরাসরি রুশ রাষ্ট্রের সঙ্গে সংযুক্ত নয়। এইভাবে, গ্রুপটি এমনভাবে কাজ করে যা রাশিয়ার রাষ্ট্র থেকে দূরে থেকে রাশিয়াকে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে সামরিক সহযোগিতা গড়ে তোলার একটি হাতিয়ার প্রদান করে।

আফ্রিকায় ওয়াগনার গ্রুপের কার্যক্রম মূলত নিরাপত্তা সহায়তার জন্য আফ্রিকার বিভিন্ন সরকারের অনুরোধ দ্বারা চালিত হয়, বিশেষ করে যেহেতু আফ্রিকার নেতারা মনে করেন যে পশ্চিমী রাষ্ট্রগুলি মহাদেশে নিরাপত্তা সহযোগিতা বা সামরিক বিক্রয় সহায়তা করার জন্য যথেষ্ট কাজ করেনি।[৩৫] ওয়াগনারের কৌশলকে তিন–স্তরীয় হিসাবে শ্রেণিবদ্ধ করা হয়েছে:[৩৬] প্রথমত, ওয়াগনার অপারেটিভরা জাল সমীক্ষা এবং পাল্টা বিক্ষোভ কৌশল সহ বিভ্রান্তিমূলক প্রচার চালায়। দ্বিতীয়ত, গ্রুপটি বেশিরভাগই নিষ্কাশন শিল্প, বিশেষ করে প্রিসিশন মেটাল মাইনিং অপারেশনে ছাড়ের মাধ্যমে তার পরিষেবাগুলির জন্য অর্থ সংগ্রহ করে। তৃতীয়ত, ওয়াগনার দেশের সামরিক বাহিনীর সঙ্গে জড়িত হয়, এবং রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর সঙ্গে সরাসরি সম্পর্ক তৈরি করে দেয়, যার মধ্যে থাকে প্রশিক্ষণ, আফ্রিকার নেতাদের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা এবং বিদ্রোহ–বিরোধী অভিযানের পরামর্শ দেওয়া এবং তা পরিচালনা করা।

আফ্রিকায় ওয়াগনার আধাসামরিক বাহিনীর মোতায়েন প্রথম মার্চ ২০১৯ সালে লিবিয়ায় শুরু হয়েছিল, যেখানে রুশ সামরিক বাহিনী বিদ্রোহী নেতা খলিফা হাফতারকে মুয়াম্মার গাদ্দাফির ছাঁচে নতুন শক্তিশালী মুখ হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে সমর্থন করেছিল।[৩‌৭] রুশ সমর্থনের মাধ্যমে হাফতার লিবিয়ার বেশিরভাগ সমৃদ্ধ তেলক্ষেত্রের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছিলেন, যার বিনিময়ে তিনি মস্কোকে লাভজনক তেল চুক্তির প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।[৩৮] উপরন্তু, মিশরে জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল–সিসির নেতৃত্বে ২০১৩ সালের সামরিক অভ্যুত্থানে রাশিয়া অস্ত্র ও রাজনৈতিক সমর্থন প্রদান করেছিল। ২০১৯ সালে প্রথম রাশিয়া–আফ্রিকা শীর্ষ সম্মেলনের মাধ্যমে রাশিয়া–মিশর সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছয়।

চিত্র ১: আফ্রিকায় ওয়াগনার গ্রুপের কার্যক্রম

সূত্র: আনাদোলু এজেন্সি, মার্চ ২০২১ [৩৯]

রাশিয়া হল সুদানের সেনাবাহিনীর অস্ত্রের বৃহত্তম সরবরাহকারী, এবং সুদানের সোনার খনিগুলিকে রক্ষা করার জন্য ওয়াগনার ঠিকাদারদের নিয়মিতভাবে মোতায়েন করা হয়েছে, যা পোর্ট সুদানে রাশিয়ান নৌ–সুবিধা স্থাপনের বিষয়ে আলোচনার পথ প্রশস্ত করেছে। [৪০] প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ওমর আল–বশিরকে সমর্থন করার লক্ষ্যে ২০১৮ সালে সুদানে ওয়াগনার বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছিল। রাশিয়ার মিথ্যা প্রচার বিক্ষোভকারীদের ‘‌ইসলাম–বিরোধী’‌ ও ‘‌এলজিবিটি–পন্থী’‌ হিসাবে তকমা লাগিয়ে কুখ্যাত করেছে। [৪১] ২০১৯ সালে বশির ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর রাশিয়া ২০২১ সালে  সুদানের অ–সামরিক নেতৃত্বাধীন সরকারে পরিকল্পিত রূপান্তরকে লাইনচ্যুত করে জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল–বুরহানের নেতৃত্বে সামরিক অভ্যুত্থানকে সমর্থন করেছিল।

মালি হল ওয়াগনারের সাম্প্রতিক সম্প্রসারণের লক্ষ্য। দেশটি এক দশকেরও বেশি সময় ধরে মৌলবাদী ইসলামি গোষ্ঠীগুলির একটানা বিদ্রোহের বিরুদ্ধে লড়াই করছে। ২০২২ সাল পর্যন্ত, ফ্রান্স ছিল সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে মালির প্রধান নিরাপত্তা অংশীদার, যেমনটি অপারেশন সার্ভাল (২০১৩) [গ] এবং অপারেশন বারখান (২০১৪) দ্বারা চিহ্নিত হয়েছিল। [ঘ] যাই হোক, সাহেলের মধ্যে ফরাসি–বিরোধী মনোভাব ২০২২ সালে প্রবল হয়েছিল, যার ফলে মালি ও পশ্চিম আফ্রিকায় ফ্রান্সের নিরাপত্তা উপস্থিতি হ্রাস পায়। [৪২] ওয়াগনার ক্ষমতার শূন্যতা পূরণের জন্য পদক্ষেপ নেয় এবং রাশিয়া ও মালির মধ্যে একটি সামরিক সম্পর্ক গড়ে তোলে। রাজনৈতিক অ–স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তাহীনতার মূল কারণগুলিকে মোকাবিলায় পশ্চিমী অংশীদারদের ব্যর্থতা আফ্রিকার অভিজাত ও নেতাদের মস্কোর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তোলার দিকে ঠেলে দিয়েছে। [৪৩]

মালিতে এই ধরনের উন্নয়ন স্পষ্ট হয়েছিল যখন অন্তর্বর্তী সরকার ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর বরাবর ওয়াগনার গ্রুপের ১,০০০ সেনার পরিষেবা গ্রহণ করতে সম্মত হয়েছিল। [৪৪] তাদের কাজ ছিল প্রশিক্ষণ, সুরক্ষা ও সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করা। যখন রাশিয়া–মালি সামরিক সম্পর্ক একটি প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে, সেই সময় ওয়াগনারের জন্য তহবিলের অভাব ও নিষেধাজ্ঞা সংস্থাটির জন্য একটি মৌলিক চ্যালেঞ্জ উপস্থাপন করেছিল। তা ছাড়া, সুদান ও সিএআর–এর তুলনায় মালিতে খনির ক্ষেত্রে ছাড় সুরক্ষিত করা আরও কঠিন বলে প্রমাণিত হয়েছে, যার  প্রাথমিক কারণ হল এই ধরনের ছাড়গুলি সরকার ও উপজাতীয় স্তরে কঠোর নিয়ন্ত্রণাধীন।

যদিও রাশিয়া বর্তমানে মালির পছন্দের নিরাপত্তা অংশীদার হিসাবে তার অবস্থান উপভোগ করছে, তবে সাহেলে মৌলবাদ ও চরমপন্থা মোকাবিলায় মস্কো প্যারিসের চেয়ে বেশি সাফল্য অর্জন করবে কিনা তা দেখার বিষয়। কিছু সূত্র ইঙ্গিত দেয় যে ওয়াগনার বাহিনী ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণে অংশ নেওয়ার জন্য সিএআর ও লিবিয়া থেকে ফিরে এসেছে। [৪৫] রাশিয়ার উপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞাগুলি তহবিল ও সরঞ্জাম প্রাপ্তির সুযোগকে প্রভাবিত করেছে, যা ফলস্বরূপ আফ্রিকায় ওয়াগনারের অর্থ ও পুনঃসরবরাহ ক্ষমতাকে প্রভাবিত করতে পারে। তবে ওয়াগনার মডেল যে আফ্রিকায় সফল হয়েছে তার সাম্প্রতিক উদাহরণ নাইজার, যেখানে অভ্যুত্থানপন্থী বিক্ষোভকারীদের রাশিয়ার পতাকা নেড়ে রাস্তায় বিক্ষোভ দেখাতে দেখা গিয়েছে, এবং তারা এমনকি ফরাসি দূতাবাসের একটি দরজায় আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। [৪৬] নাইজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ বাজুমের উৎখাত ২০২০ সাল থেকে পশ্চিম আফ্রিকায় ষষ্ঠ সফল অভ্যুত্থান।

আফ্রিকায় রুশ নিযুক্তির সীমা

তবে মহাদেশে রাশিয়ার প্রভাবকে অত্যধিক মূল্য না–দেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ হবে। যথেষ্ট অস্ত্র বিক্রি এবং পিএমসি–র বর্ধিত ভূমিকা সত্ত্বেও রাশিয়ার দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও রাজনৈতিক প্রভাব কম। রাশিয়ার তুলনায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইইউ, এবং চিন ও ভারতের মতো অ–পশ্চিমী দেশগুলি আফ্রিকায় বেশি প্রভাব বিস্তার করে। [৪৭] তার উপর সেখানকার আর্থ–সামাজিক–রাজনৈতিক বাস্তবতা সম্পর্কে রাশিয়ার জ্ঞান এবং আফ্রিকার বাজার সম্পর্কে বোধগম্যতা নগণ্য। উপরন্তু, প্রতিটি রুশ নির্বাচনী হস্তক্ষেপ বা বিভ্রান্তিমূলক প্রচার সফল হয়নি, যেমনটি মাদাগাস্কারে স্পষ্ট ছিল। [৪৮] তা ছাড়া, রাশিয়ার ‘‌আফ্রিকা–জুড়ে স্থানীয় সম্প্রদায় ও রাজনৈতিক–জাতিগত গোষ্ঠীগুলির সঙ্গে জড়িত থাকার ক্ষমতা ও কূটনৈতিক পরিকাঠামোর অভাব রয়েছে, যা তার এজেন্টদের কার্যকারিতাকে মারাত্মকভাবে হ্রাস করে’‌। [৪৯]

এমনকি যদি আফ্রিকার দেশগুলির সঙ্গে রাশিয়ার সামরিক সম্পৃক্ততা বাড়তেও থাকে, তবে রাশিয়ার বিনিয়োগের রিটার্ন ভূ–রাজনৈতিক ধাক্কা ও বাহ্যিক কারণগুলির শর্তসাপেক্ষ হবে। ইউক্রেন সংঘাতের পরিপ্রেক্ষিতে রাশিয়া আফ্রিকা থেকে সম্পদ সরিয়ে নিয়েছে। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনা, যেহেতু সাব–সাহারান আফ্রিকায় সোভিয়েত নিযুক্তি থেকে সবচেয়ে বড় শিক্ষা হল, প্রাপ্ত সুবিধার চেয়ে খরচ ছিল বেশি। অতএব, আরও এগিয়ে গিয়ে, রাশিয়াকে একটি বাস্তবসম্মত বৈদেশিক নীতির কৌশল বেছে নিতে হবে যার খরচ কম, কিন্তু অর্থনৈতিক সুযোগ সর্বাধিক।

উপসংহার

রাশিয়া আফ্রিকাকে গ্লোবাল সাউথের একটি প্রভাবশালী অংশ হিসেবে দেখে, যা তার একমেরু থেকে বহুমেরু বৈশ্বিক ব্যবস্থায় যাওয়ার আকাঙ্ক্ষার প্রধান অংশীদার, এবং নিষেধাজ্ঞা এড়ানোর ও মিডিয়া কার্যক্রমকে সমর্থন করার জন্য অপরিহার্য। রাশিয়া ওই মহাদেশের সেই সব অস্থিতিশীল অংশে ক্ষমতার শূন্যতা পূরণ করার চেষ্টা করছে যেখানে স্থানীয় বা আন্তর্জাতিক কুশীলবেরা স্থায়ী নিরাপত্তা সমাধান আনতে ব্যর্থ হয়েছে। এই লক্ষ্যে ওয়াগনার গ্রুপ মহাদেশের কিছু অংশে রাষ্ট্রপুঞ্জের শান্তিরক্ষা মিশন এবং তৎকালীন ঔপনিবেশিক শক্তির অদক্ষতার প্রতি জনগণের অভিযোগ ও অসন্তোষ কাজে লাগিয়ে সাফল্য পেয়েছে।

মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে পশ্চিমের দ্বৈত মানদণ্ড, নিষেধাজ্ঞা, এবং আফ্রিকার সংস্থাগুলিকে শক্তিশালী করতে বা রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জগুলি মোকাবিলা করতে ব্যর্থতা, যা আফ্রিকার দেশগুলিকে অস্থিতিশীল করেছে, তা ওয়াগনারের মতো সংস্থাগুলির জন্য দরজা খুলে দিয়েছে। [৫০] আফ্রিকার কর্তৃত্ববাদী শাসনের সঙ্গে অপ্রতিসম উপায়ে অস্বচ্ছ অস্ত্রসম্পদ চুক্তির মাধ্যমে, এবং গণতন্ত্রকে দুর্বল করে কর্তৃত্ববাদকে স্বাভাবিক করার মাধ্যমে রাশিয়া কম ঝুঁকির এবং উচ্চ লাভের একটি কৌশল অবলম্বন করেছে। রাশিয়ার ইউক্রেনে যুদ্ধের কূটনৈতিক বৈধতা অর্জনের লক্ষ্যে আফ্রিকা মৌলিক। যাই হোক, যেহেতু মহাদেশটি শক্তি প্রতিযোগিতার যুদ্ধক্ষেত্র হিসাবে আবির্ভূত হয়েছে, আফ্রিকার দেশগুলি নিরপেক্ষ থাকা ক্রমশ বেশি করে কঠিন বলে মনে করবে।[৫১]

আফ্রিকার সরকারগুলি মহাদেশে রাশিয়ার প্রবেশকে পশ্চিমের কাছ থেকে আরও সমর্থন লাভের জন্য দর–কষাকষির সুযোগ হিসাবে দেখে। সামনের দিনে, রাশিয়া সম্ভবত আফ্রিকার প্রতি ততটাই দায়বদ্ধ থাকবে যতটা ওই মহাদেশটি মস্কোকে তার কৌশলগত স্বার্থ বাড়াতে এবং আফ্রিকায় কর্তৃত্ববাদী শাসনের সঙ্গে কাজ করার জন্য পশ্চিমী সরকারগুলির সমালোচনাকে ব্যর্থ করতে সাহায্য করবে, এবং বিশ্ব মঞ্চে আরও বেশি করে রাশিয়াকে সমর্থন করবে।

এন্ডনোট

[ক] রাশিয়া কখনই আফ্রিকার জন্য হুড়োহুড়িতে অংশ নেয়নি, যদিও দক্ষিণ এশিয়ায় প্রবেশাধিকার পেতে ১৭০০–র শতাব্দীতে তারা মাদাগাস্কারকে ব্যবহার করার চেষ্টা করেছিল ভারত মহাসাগরে এর প্রধান অবস্থানের কারণে। তবে সীমিত সম্পদের কারণে তারা এই প্রচেষ্টায় ব্যর্থ হয়। অন্য উদাহরণটি ১৮৮৯ সালের, যখন রাশিয়া বর্তমান জিবুতির সাগালো গ্রামের উপর দাবি জানিয়েছিল। এই কাজটি করেছিলেন রাশিয়ান অভিযাত্রী ও সন্ন্যাসী নিকোলাই ইভানোভিচ আশিনভ। দেখুন: https://www.dailymaverick.co.za/article/2022-08-24-its-a-continent-russias-unsuccessful-and-short-lived-19th-century-african-colony-new-moscow/


[খ] আফ্রিকান দেশগুলির সঙ্গে সম্পৃক্ততার সময় রাশিয়া, পশ্চিমের মতো, আয়োজক দেশগুলির মানবাধিকার রেকর্ড, সুশাসন এবং সংবাদপত্রের স্বাধীনতার মতো পরামিতিগুলিকে গুরুত্ব দেয় না, এবং সম্পৃক্ততার জন্য কোনও শর্ত বা যোগ্যতা আরোপ করে না।

[গ] অপারেশন সার্ভাল ছিল মালিতে একটি সামরিক অভিযান যা উত্তর মালিতে ইসলামি জঙ্গিদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সহায়তার জন্য মালি সরকারের অনুরোধে ফরাসি বাহিনী দ্বারা পরিচালিত হয়েছিল। অপারেশনটি ২০১৩ সালে পরিচালিত হয়েছিল এবং ফরাসি বিমান শক্তি ও বিশেষ বাহিনীর দ্রুত মোতায়েন এবং পরে বিদ্রোহী ঘাঁটিতে স্থল হামলার কারণে এটি সফল হয়েছিল। কয়েক মাসের মধ্যে, বিদ্রোহীদের অগ্রগতি স্থগিত করা হয়েছিল, এবং গুরুত্বপূর্ণ উত্তরের শহরগুলি পুনরায় দখল করা হয়েছিল। আরও জানতে,
https://www.tandfonline.com/doi/full/10.1080/01402390.2015.1045494#abstract দেখুন।

[ঘ] অপারেশন সার্ভাল–এর পর ফ্রান্সের নেতৃত্বে অপারেশন বারখানে আনুষ্ঠানিকভাবে ১ আগস্ট ২০১৪–এ শুরু হয়েছিল এবং ৯ নভেম্বর ২০২২–এ শেষ হয়েছিল৷ অপারেশনটির অনেক বিস্তৃত ভৌগোলিক ফোকাস ছিল এবং এতে মালি, বুর্কিনা ফাসো, নাইজার, এবং চাদ জুড়ে ছড়িয়ে থাকা ৪,৫০০ ফরাসি সৈন্য অন্তর্ভুক্ত ছিল।  এই অভিযানের উদ্দেশ্য ছিল সাহেল অঞ্চলে সন্ত্রাস দমন অভিযান পরিচালনার লক্ষ্যে ফরাসি সন্ত্রাস দমনের স্তম্ভ হয়ে ওঠা। আরও জানতে,
https://hir.harvard.edu/how-france-failed-mali-the-end-of-operation-barkhane/ দেখুন।

[১] পল স্ট্রোনস্কি, "
আফ্রিকার সাহেল অঞ্চলে রাশিয়ার ক্রমবর্ধমান পদচিহ্ন," কার্নেগি এনডাউমেন্ট ফর ওয়র্ল্ড পিস, ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩।


[২] ফিলিপ বার্নার্ড, "
ইউরোপের আগ্রাসী রাশিয়া আফ্রিকায় নিজেকে সাম্রাজ্যবাদের শিকারদের রক্ষক হিসাবে উপস্থাপন করতে চেষ্টা করে," লে মঁদ, মার্চ ৬, ২০২৩।


[৩] জেড ম্যাকগ্লিন, "
কেন রাশিয়া নিজেকে ঔপনিবেশিক-বিরোধী শক্তি হিসাবে আফ্রিকানদের কাছে বাজারজাত করে," ফরেন পলিসি, ফেব্রুয়ারি ৮, ২০২৩।


[৪] এইচ এইচ এস বিশ্বনাথন, "
রাশিয়া মেকস আ কামব্যাক ইন আফ্রিকা: ফার্স্ট রাশিয়া–আফ্রিকা সামিট ইন সোচি," অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশন, নভেম্বর ৭, ২০১৯।


[৫] "
রাশিয়া সাব-সাহারান আফ্রিকাতে শীর্ষ অস্ত্র সরবরাহকারী হিসাবে আবির্ভূত হয়েছে," আফ্রিকা ডিফেন্স ফোরাম, এপ্রিল ২১, ২০২৩।


[৬] ফারজাদ রামেজানি বনেশ এবং ক্রিস ডেভনশায়ার–এলিস, "
রাশিয়া-আফ্রিকা ২০২৩–২৪ বাণিজ্য ও উন্নয়ন সম্ভাবনা," রাশিয়া ব্রিফিং, ২৭ জুলাই, ২০২৩।


[৭] ম্যাথিউ রোচ্যাট, "
ইউক্রেনের যুদ্ধ এবং আফ্রিকায় খাদ্য নিরাপত্তা," ই-ইন্টারন্যাশনাল রিলেশনস, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২২।


[৮] “
আফ্রিকান ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্ক বোর্ড খাদ্য সংকট এড়াতে $১.৫ বিলিয়ন সুবিধা অনুমোদন করেছে,” আফ্রিকান ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্ক গ্রুপ, ২০ মে, ২০২২।


[৯] পল-সাইমন হ্যান্ডি এবং ফেলিসিটি ডিজিলো, "
ইউক্রেন যুদ্ধে আফ্রিকার বিভক্ত অবস্থানকে মেলে ধরা," ইনস্টিটিউট ফর সিকিউরিটি স্টাডিজ, ২২ আগস্ট, ২০২২।


[১০] ম্যাক্সিম মাতুসেভিচ, "
সাব–সাহারান আফ্রিকায় সোভিয়েত মুহূর্ত পুনর্বিবেচনা করা," হিস্ট্রি কম্পাস ৭: (২০০৯): ১২৫৯-৬৮।


[১১] অ্যালার্ড ডুরসমা ও নিকলাস মাসুহর, "
একটি ঐতিহাসিক এবং বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে আফ্রিকায় রাশিয়ার প্রত্যাবর্তন: সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী, পৃষ্ঠপোষকতা এবং সুবিধাবাদ," সাউথ আফ্রিকান জার্নাল অন ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স, ২৯(৪): ২০২২।


[১২] জন এ মার্কাম, এডমন্ড বার্ক ৩; মাইকেল ডব্লিউ ক্লো (এডিস), কনসিভিং মোজাম্বিক, (২০১৮): পলগ্রেভ ম্যাকমিলান চ্যাম।

[১৩] অ্যালার্ড এবং নিকলাস, উদ্ধৃত কাজ, ৪১০

[১৪] অ্যালার্ড এবং নিকলাস, উদ্ধৃত কাজ, ৪১০

[১৫] রাডোস্লাভ এ ইয়র্দানিয়েভ, "
ইথিওপিয়া ও সোমালিয়ায় সোভিয়েত সম্পৃক্ততা ১৯৪৭–১৯৯১" (পিএইচ ডি ডিসার্টেশন, অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়, এপ্রিল ২০১২)।


[১৬] ম্যাথিউ অলিভিয়ার, "
সিএআর: প্রেসিডেন্ট তোয়াদেরার রাশিয়ান অভিভাবক ফেরেস্তা কারা?“" আফ্রিকা রিপোর্ট, মার্চ ১৭, ২০২১।


[১৭] স্যামুয়েল রামানি, "
মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্রে রাশিয়ার কৌশল," রয়্যাল ইউনাইটেড সার্ভিসেস ইনস্টিটিউট, ফেব্রুয়ারি ১২, ২০২১।


[১৮] কানিতাহ হান্টার এবং লিওনেল ফাউল, "
জ্যাকব জুমার গোপন পরমাণু 'স্টিচ-আপ'," মেল অ্যান্ড গার্ডিয়ান, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৪।


[১৯] অ্যান্ড্রু এস ওয়েইস ও ইউজিন রুমার, "
পরমাণু সমৃদ্ধকরণ: দক্ষিণ আফ্রিকায় রাশিয়ার দুর্ভাগ্যজনক প্রভাব প্রচারণা," কার্নেগি এনডাউমেন্ট ফর ওয়র্ল্ড পিস, ডিসেম্বর ১৬, ২০১৯।


[২০] কিম্বার্লি মার্টেন, "
আফ্রিকাতে রাশিয়ার ফিরে আসা: শীতল যুদ্ধ ফিরে আসছে?", দ্য ওয়াশিংটন কোয়ার্টারলি, ৪২, নং। ৪ (২০১৯): ১৫৫–৭০।


[২১] আন্দ্রাস রাকজ, "
ব্যান্ড অফ ব্রাদার্স: দ্য ওয়াগনার গ্রুপ অ্যান্ড রাশিয়ান স্টেট," স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজ সেন্টার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২০।


[২২] জিওভানি ফালেগ ও স্ট্যানিস্লাভ সেক্রিয়েরু, "
রাশিয়ার অভিযান সাব-সাহারান আফ্রিকায়," ইনস্টিটিউট ফর সিকিউরিটি স্টাডিজ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ব্রিফ ৬, মার্চ ২০২০।


[২৩] "
রোজনেফ্টের দৃষ্টি আফ্রিকায়, সাবেক সোভিয়েত সিইও পোস্টিং," রয়টার্স, এপ্রিল ২৩, ২০১৪।


[২৪] নিকোলাস ট্রিকেট, "
মোজাম্বিক অ্যান্ড রোজনেফ্টস হান্ট ফর ফরেন পলিসি পুল," গ্লোবাল রিস্ক ইনসাইটস, ২৫ জুলাই, ২০১৭।


[২৫] কারা আনা, "
আফ্রিকান নেতারা শস্য চুক্তি বা ইউক্রেনের যুদ্ধ শেষ করার পথ ছাড়াই রাশিয়ার শীর্ষ সম্মেলন ছেড়ে চলে যান," অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস, ৩১ জুলাই, ২০২৩।


[২৬] "
ব্ল্যাক সি ইনিশিয়েটিভের এক বছর: মূল তথ্য ও পরিসংখ্যান," ইউনাইটেড নেশনস নিউজ, ১০ জুলাই, ২০২৩।


[২৭] নসমোট গবাদামোসি, "
ইউক্রেন এবং রাশিয়ার জন্য একটি ব্যর্থ আফ্রিকান শান্তি মিশন," ফরেন পলিসি, ২১ জুন, ২০২৩।


[২৮] "
ইউসি রুসাল ও গিনি অংশীদারিত্বের উন্নয়ন শর্তাবলীতে সম্মত," এপ্রিল ২৮, ২০১৬।


[২৯] "
ইনফরগ্র‌্যাওহিক: কোন দেশগুলি সবচেয়ে বেশি রাশিয়ার অস্ত্র কেনে?I" আল জাজিরা, ৯ মার্চ, ২০২২।


[৩০] স্টকহলম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউট, "
সিপরি অস্ত্র স্থানান্তর ডেটাবেস"।


[৩১] আব্রাহাম হোয়াইট এবং লিও হোল্টজ, "
সপ্তাহের চিত্র: ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের নিন্দা জানিয়ে রাষ্ট্রপুঞ্জের প্রস্তাবে আফ্রিকান দেশগুলির ভোট," ব্রুকিংস, ৯ মার্চ, ২০২২।


[৩২] "
ইউক্রেনের বিরুদ্ধে আগ্রাসন," রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ পরিষদ, মার্চ ১, ২০২২।


[৩৩] রৌনক গোপালদাস, "
ইউক্রেনের আক্রমণ কি রাশিয়া-আফ্রিকা সম্পর্ক পরিবর্তন করবে?" কার্নেগি এনডাউমেন্ট ফর ওয়র্ল্ড পিস, এপ্রিল ২০২৩।


[৩৪] জোসেফ সিগেল, "
আফ্রিকাতে গণতন্ত্রকে দুর্বল করার জন্য হস্তক্ষেপ: প্রভাবের জন্য রাশিয়ার প্লেবুক," আফ্রিকা সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ, ফেব্রুয়ারি ২২, ২০২৩।


[৩৫] রাফেল প্যারেন্স, "
দ্য ওয়াগনার গ্রুপস’‌ প্লেবুক ইন আফ্রিকা: মালি," ফরেন পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট, ১৮ মার্চ, ২০২২।


[৩৬] রাফেল প্যারেন্স, উদ্ধৃত কাজ

[৩৭] আকরাম খারিফ, "
লিবিয়ায় ওয়াগনার – যুদ্ধ এবং প্রভাব," রোজা লুক্সেমবার্গ স্টিফটাং, জানুয়ারি ২০২২।


[৩৮] ইউরি বার্মিন, "
লিবিয়ায় রাশিয়ার শেষ খেলা," আল জাজিরা, ১১ জুলাই, ২০১৯।


[৩৯] মুস্তাফা দালা এবং হালিমে আফরা আকসয়, "
রাশিয়ার ওয়াগনার গ্রুপ আফ্রিকায় মোতায়েন করা হয়েছে," আনাদোলু এজেন্সি, ৫ মার্চ, ২০২১।


[৪০] স্যাম ম্যাগডি, "
সুদান রাশিয়ান রেড সি বেস চুক্তির পর্যালোচনা শেষ করেছে," অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস নিউজ, ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩৷


[৪১] আমগাদ ফরিদ এলতায়েব, "
সুদান: ওয়াগনার-আরএসএফ সম্পর্ক যা গণতন্ত্রীকরণের পথকে রোধ করে," আফ্রিকা রিপোর্ট, ফেব্রুয়ারি ২, ২০২৩।


[৪২] "
শেষ ফরাসি সৈন্যরা মালি ছেড়েছে, নয় বছরের মোতায়েনের সমাপ্তি," আল জাজিরা, ১৬ আগস্ট, ২০২২।


[৪৩] রাফেল প্যারেন্স, উদ্ধৃত কাজ

[৪৪] রাফেল প্যারেন্স, উদ্ধৃত কাজ

 

[৪৫] ফিলিপ ওবাজি জুনিয়র, "কুখ্যাত রাশিয়ান ভাড়াটেরা আফ্রিকা থেকে ইউক্রেনের জন্য প্রস্তুত," ডেইলি বিস্ট, ৩১ জানুয়ারি, ২০২২।


[৪৬] স্যাম মেডনিক, "
রাশিয়ার পতাকাধারী বিক্ষোভকারীরা রাজধানীতে মিছিল করার পর নাইজারে ফরাসি দূতাবাস অ্যাটাচড," অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস, ৩১ জুলাই, ২০২৩৷


[৪৭] ভিনসেন্ট রুগেট, "
রাশিয়া-আফ্রিকা: সীমাবদ্ধতার সঙ্গে বন্ধুত্ব," কনট্রোস রিস্কস, ২৮ জুলাই, ২০২৩।


[৪৮] "
আফ্রিকাতে গণতন্ত্রকে লাইনচ্যুত করার জন্য রাশিয়ান হস্তক্ষেপের সন্ধান করা," আফ্রিকা সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ, ২১ জুন, ২০২৩।


[৪৯] জিওভানি ফালেগ এবং স্ট্যানিস্লাভ সেক্রিয়েরু, উদ্ধৃত কাজ, ৬

[৫০] কলিন পি ক্লার্ক, রাফেল প্যারেন্স, ক্রিস্টোফার ফকনার ও কেন্ডাল উলফ, "
ওয়াগনার কি আফ্রিকায় ফিরে যাচ্ছেন?" ফরেন অ্যাফেয়ার্স, ১১ মে, ২০২৩।


[৫১] আলেকজান্দ্রা ডেন্ট, "
"ইউক্রেনে নিরপেক্ষ থাকা আফ্রিকান রাষ্ট্রগুলির জন্য কাজে করার চেয়ে মুখে বলা সহজ
," কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশন, জানুয়ারি ২৭, ২০২৩।

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.