Author : Rajen Harshé

Expert Speak India with Africa
Published on Sep 01, 2022 Updated 28 Days ago

ভারতে আয়োজিত সদ্যসমাপ্ত সি আই আই-এক্সিম ব্যাঙ্ক কনক্লেভ বাণিজ্য এবং উদ্যোগী পদক্ষেপের মাধ্যমে ভারত-আফ্রিকা সম্পর্কের প্রসার ঘটানোর আগ্রহকেই তুলে ধরেছে।

সপ্তদশ সি আই আই-এক্সিম ব্যাঙ্ক কনক্লেভ: ভারত-আফ্রিকা গ্রোথ পার্টনারশিপের ভবিষ্যৎ
সপ্তদশ সি আই আই-এক্সিম ব্যাঙ্ক কনক্লেভ: ভারত-আফ্রিকা গ্রোথ পার্টনারশিপের ভবিষ্যৎ

ভারত সরকারের বিদেশ মন্ত্রক (এম ই এ) এবং শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রকের (এম সি আই) সহায়তায় ২০০৫ সালে ভারত-আফ্রিকা অংশীদারিত্বের কর্মসূচি সংক্রান্ত সি আই আই-এক্সিম ব্যাঙ্ক কনক্লেভের সূচনা হয় এবং পরবর্তী কালে এটির নামকরণ করা হয় ভারত-আফ্রিকা প্রবৃদ্ধি অংশীদারিত্ব বা গ্রোথ পার্টনারশিপ। ভারত-আফ্রিকা গ্রোথ পার্টনারশিপ সংক্রান্ত ১৭তম সি আই আই-এক্সিম ব্যাঙ্ক কনক্লেভটি ২০২২ সালের ১৯ ও ২০ জুলাই নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত হয় এবং এটিতে গাম্বিয়া, জাম্বিয়া ও মরিশাসের ভাইস-প্রেসিডেন্টরা অংশগ্রহণ করেন। ভারতের উপরাষ্ট্রপতি বেঙ্কাইয়া নাইডু, বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এবং বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গোয়েলের সঙ্গে আফ্রিকার ১৭টি দেশের ৪০ জন মন্ত্রী সমাবেশটিতে উপস্থিত ছিলেন। সমাবেশটি নীতিনির্ধারক, আমলা এবং ব্যবসা ও শিল্পের কর্ণধারদের কাছে ভারত-আফ্রিকা প্রবৃদ্ধি অংশীদারিত্বের পর্যালোচনার সুযোগ করে দেয়।

এক নতুন পরিপ্রেক্ষিতে সমাবেশ

কোভিড-১৯ অতিমারির প্রকোপ হ্রাস পাওয়া এবং ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে বিদ্যমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের মাঝেই শীর্ষ সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হয়। এক দিকে বিশ্ব জুড়ে কোভিড-১৯ অতিমারির ভয়াবহতা যেমন অংশগ্রহণকারী দেশগুলিকে বিশ্বের বিভিন্ন অংশে ভঙ্গুর স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর প্রতি সংবেদনশীল করে তোলে, তেমনই অন্য দিকে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ খাদ্য ও জ্বালানি নিরাপত্তা সংক্রান্ত সমস্যাগুলিকে তীব্র ভাবে প্রকট করে তোলে। যুদ্ধটি আরও দেখিয়েছে যে, কীভাবে একটি ভৌগোলিক ক্ষেত্রের চাপানউতোর সারা বিশ্বকে প্রভাবিত করতে পারে এবং সঙ্কটের মুখে ঠেলে দিতে পারে।

সমাবেশটি নীতি নির্ধারক, আমলা এবং ব্যবসা ও শিল্পের কর্ণধারদের কাছে ভারত-আফ্রিকা প্রবৃদ্ধি অংশীদারিত্বের পর্যালোচনার সুযোগ করে দেয়।

একই সঙ্গে এ কথাও স্পষ্ট হয়ে যায় যে, সমগ্র প্রকল্পটিকে এক নতুন পরিপ্রেক্ষিতে দেখতে হবে। কারণ ২০২১ সালের জানুয়ারি মাস থেকে একটি মহাদেশীয় বাণিজ্যিক অঞ্চল রূপে এ এফ সি এফ টি এ কার্যকর হয়েছে। এর পাশাপাশি কৃষি, ফার্মাসিউটিক্যাল, স্বাস্থ্য পরিষেবা, ডিজিটাল ও ভৌত পরিকাঠামো, শিক্ষা, দক্ষতা ও ক্ষমতা বৃদ্ধি, স্টার্ট আপ বা নতুন ব্যবসা, আন্তর্জাতিক সৌর জোট (আই এস এ), তথ্যপ্রযুক্তি, ব্যাঙ্কিং, তেল ও গ্যাস, খনি, বয়নশিল্পের মতো একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে ভারত-আফ্রিকা উন্নয়ন  আন্তঃসহযোগিতা বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ভারতের সরকারি এবং বেসরকারি উভয় ক্ষেত্রের সংস্থাগুলি এই সব আন্তঃসহযোগিতামূলক প্রচেষ্টায় মুখ্য ভূমিকা পালন করতে পারে। বর্তমান অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে ভারত-আফ্রিকা বাণিজ্যিক সম্পর্কের গভীরতা বৃদ্ধি ভারত ও আফ্রিকা উভয়ের জন্যই উন্নয়ন, বিনিয়োগ এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধি করবে।

বাণিজ্য এবং বিনিয়োগ

কোভিড-১৯ অতিমারি বিশ্বের ভিত নাড়িয়ে দেওয়ার আগে পর্যন্ত ভারত-আফ্রিকা বাণিজ্যিক সম্পর্ক ক্রমশ গভীর হচ্ছিল এবং ২০১৮-১৯ অর্থবর্ষে ৬৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের পারস্পরিক বাণিজ্যের সুবাদে ভারত-আফ্রিকার চতুর্থ বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদারে পরিণত হয়। ভারত আফ্রিকার ভূখণ্ডে অতিরিক্ত ১৮টি কূটনৈতিক মিশনের সূচনা করে মোট দূতাবাসের সংখ্যা ৪৭-এ নিয়ে যেতে চায়। এখনও পর্যন্ত ৪৩টি আফ্রিকান দেশে ভারতের কূটনৈতিক সক্রিয়তা রয়েছে। আশ্চর্যজনক ভাবে ২০২০-২১ অর্থবর্ষে আফ্রিকার সঙ্গে ভারতের বাণিজ্যের পরিমাণ পূর্ববর্তী বছরের ৫৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার থেকে বেড়ে দাঁড়ায় ৮৯.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে। পীযূষ গোয়েলের মতে, ভারত এবং আফ্রিকার মধ্যে বাণিজ্যিক আদানপ্রদানে যথেষ্ট ভারসাম্য রয়েছে। কারণ রফতানিকৃত বাণিজ্য এবং পরিষেবার মূল্য ৪০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার হওয়ার পাশাপাশি আমদানিকৃত বাণিজ্য এবং পরিষেবার মূল্যও ৪৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের সমান। এস জয়শঙ্করের মতে, ১৯৯৬ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত আফ্রিকায় ভারতের মোট বিনিয়োগের পরিমাণ ৭৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা ভারতকে আফ্রিকায় সর্বোচ্চ পাঁচটি বিনিয়োগকারী দেশের মধ্যে একটি করে তুলেছে। এ ছাড়া ভারত আফ্রিকাকেও ডিউটি ফ্রি ট্যারিফ প্রেফারেন্স (ডি এফ টি পি) স্কিমের আওতায় এনেছে, যার ফলে মোট ট্যারিফ লাইনের ৯৮.২ শতাংশ করমুক্ত প্রবেশাধিকার লাভ করবে এবং এমনটা হওয়ার ফলে ৩৩টি দেশ আরও সুবিধে লাভ করবে। ভারত আফ্রিকার জন্য তার বাজারের পথ খুলে দিয়েছে। উচ্চ পর্যায়ের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সফর ইন্দো-আফ্রিকান সম্পর্ক সুদৃঢ় করে তুলেছে। গত আট বছরে ভারতের তরফে এহেন সফরের সংখ্যা ৩৬, যেখানে আফ্রিকার তরফে এই সংখ্যা ১০০। এর পাশাপাশি যথাক্রমে ২০০৮, ২০১১ এবং ২০১৫ সালে ইন্ডিয়া-আফ্রিকা ফোরাম সামিট (আই এ এফ এস) বা ভারত-আফ্রিকা ফোরাম শীর্ষ সম্মেলনের মাধ্যমটি ইন্দো-আফ্রিকান উন্নয়ন আন্তঃসহযোগিতার পথ সহজতর করে তুলেছে। ভারত আফ্রিকার জন্য ১২.৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের রেয়াতি ঋণ সহায়তা প্রদান করেছে। আফ্রিকায় উন্নয়ন সম্পর্কিত প্রকল্পগুলির সঙ্গেও ভারত যুক্ত।

বর্তমান অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে ভারত-আফ্রিকা বাণিজ্যিক সম্পর্কের গভীরতা বৃদ্ধি ভারত ও আফ্রিকা উভয়ের জন্যই উন্নয়ন, বিনিয়োগ এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধি করবে।

আফ্রিকায় ভারতীয় প্রকল্পের পরিস্থিতি

এখনও পর্যন্ত ভারত আফ্রিকায় ১৯৭টি প্রকল্প সম্পূর্ণ করেছে, ৬৫টি প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ চলছে এবং ৮১টি বাস্তবায়ন-পূর্ববর্তী অবস্থায় রয়েছে। এ ছাড়াও ভারত আফ্রিকাকে ৭০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থ সহায়তা প্রদান করেছে। জল প্রকল্প, গ্রামাঞ্চলে সৌর বিদ্যুদয়ন, সেচ, পরিবাহী সংযোগ, বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র, সিমেন্ট, চিনি এবং বস্ত্র কারখানা, রেল পরিকাঠামো, প্রযুক্তি উদ্যান ইত্যাদি-সহ প্রকল্পগুলির সামগ্রিক পরিসর সুবিস্তৃত। আফ্রিকার পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৮ সালের জুলাই মাসে কাম্পালায় উগান্ডার পার্লামেন্টে তাঁর ভাষণে প্রধানমন্ত্রী মোদী ১০টি নীতির কথা বলেন, যেগুলি আন্তঃসহযোগিতার বৈচিত্র্যময় ক্ষেত্রগুলিতে ভারতের আফ্রিকা-নীতিকে পরিচালিত করে। এ কথা উল্লেখযোগ্য যে, কোভিড-১৯ অতিমারির আপৎকালীন পরিস্থিতিতে ভারত ৩২টি আফ্রিকান দেশকে ১৫০ টন চিকিৎসা সরঞ্জাম ও ওষুধের সহায়তা প্রদান করে।

ভারত প্রতি বছরই তার উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় অন্যান্য দেশকে ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের অনুদান দেয় এবং ৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের সমান অর্থ ঋণ প্রদান করে। অনেক বছর ধরেই ভারত আফ্রিকায় বিভিন্ন প্রকল্পে বিনিয়োগ করে চলেছে এবং সেই সুবাদে আফ্রিকা মহাদেশে ভারতের এক তাৎপর্যপূর্ণ প্রতীকী উপস্থিতি বর্তমান। উদাহরণ স্বরূপ বলা যায় যে, গাম্বিয়ায় ভারত শুধু মাত্র ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি বিল্ডিংটিই নির্মাণ করেনি, জল সরবরাহ, কৃষি এবং খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ সংক্রান্ত প্রকল্পের সূচনা করেছে। এর পাশাপাশি ভারত ঘানায় প্রেসিডেন্ট ভবন, জিবৌতিতে প্রথম দুধের কারখানা এবং সুদান ও রোয়ান্ডায় বিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মাণের মতো কাজগুলি করছে।

উদাহরণ স্বরূপ বলা যায় যে, গাম্বিয়ায় ভারত শুধু মাত্র ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি বিল্ডিংটিই নির্মাণ করেনি, জল সরবরাহ, কৃষি এবং খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ সংক্রান্ত প্রকল্পের সূচনা করেছে।

সদ্য সমাপ্ত ১৭তম শীর্ষ সম্মেলনটিতে কয়েকটি দেশভিত্তিক আলোচনাপর্বের আয়োজন করা হয়, যেগুলি ছিল নামিবিয়া, মরিশাস এবং গাবোনের মতো দেশ সংক্রান্ত। নামিবিয়া ইউরেনিয়াম, তামা, হিরে এবং ফসফেটের মতো প্রাকৃতিক সম্পদে পরিপূর্ণ। নামিবিয়ায় ভারত একটি তথ্যপ্রযুক্তি উৎকর্ষ কেন্দ্র নির্মাণ করছে। বর্তমান শীর্ষ সম্মেলনটির পাশাপাশি ভারত ইতিমধ্যেই নামিবিয়ার সঙ্গে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও জীববৈচিত্র্যের স্থিতিশীল ব্যবহার, স্বামী / স্ত্রী এবং দূতাবাস কর্মীদের উপর নির্ভরশীল আত্মীয়-পরিজনের জন্য লাভজনক কর্মসংস্থানের উদ্দেশ্যে তিনটি মউ স্বাক্ষর করেছে। এ ছাড়াও ভারতের ন্যাশনাল ফরেনসিক সায়েন্স ইউনিভার্সিটি (এন এফ এস ইউ) এবং নামিবিয়ান পোলিশ ফরেনসিক সায়েন্স ইনস্টিটিউটের (এন পি এফ এস আই) মধ্যে একটি মউ স্বাক্ষরিত  হয়েছে। সর্বোপরি, ভারত মরিশাসকে আফ্রিকায় প্রবেশের দরজা বলে মনে  করে। কারণ এটিই একমাত্র দেশ যার ভারতের সঙ্গে কম্প্রিহেনসিভ ইকনমিক কোঅপারেশন পার্টনারশিপ এগ্রিমেন্ট (সি ই সি পি এ) রয়েছে। মরিশাসে ভারতীয় উদ্যোগগুলির মধ্যে মেট্রো এক্সপ্রেস, নতুন সুপ্রিম কোর্ট ভবন এবং সামাজিক আবাসন নির্মাণের মতো প্রকল্পগুলি উল্লেখযোগ্য। একই রকম ভাবে ২০২২ সালের মে মাসে ভারতের উপরাষ্ট্রপতি বেঙ্কাইয়া নাইডুর সফরের পরে খনিজ তেল সমৃদ্ধ দেশ গাবোনও ভারতের সঙ্গে তার সম্পর্ক মজবুত করতে তৎপর হয়ে উঠেছে।

দক্ষতা বৃদ্ধি এবং মানবিক সহায়তা

ভারত বরাবরই আফ্রিকায় দক্ষতা উন্নয়ন এবং সক্ষমতা বৃদ্ধির উদ্যোগে সক্রিয় থেকেছে। এমনকি ২০১৫ সালের তৃতীয় আই এ এফ এস সমাবেশ চলাকালীন ভারতে পঠনপাঠনে আগ্রহী ৫০,০০০ আফ্রিকান ছাত্রছাত্রীর জন্য ভারত বৃত্তি ঘোষণা করে। এর মধ্যে ৩২,০০০ জনকে ইতিমধ্যেই বৃত্তি প্রদান করা হলেও সমগ্র প্রকল্পটির বাস্তবায়ন অতিমারির কারণে কিছুটা বিলম্বিত হয়ে পড়েছে। তা সত্ত্বেও একথা উল্লেখযোগ্য যে, ১৯৬৪ সালে সূচনা হওয়ার পর থেকেই ভারত তার ইন্ডিয়ান টেকনিক্যাল এবং ইকনমিক কোঅপারেশন (আই টি ই সি) প্রকল্পের অধীনে আফ্রিকান ছাত্রছাত্রীদের পাশাপাশি সরকারি আধিকারিকদেরও ধারাবাহিক ভাবে প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছে। ডিজিটাল টুল বা প্রযুক্তির মাধ্যমে আফ্রিকার সঙ্গে মিথস্ক্রিয়া বৃদ্ধি করার উদ্দেশ্যে ভারত ২০১৯ সালে ই-আরোগ্য ভারতী এবং ই-বিদ্যাভারতী নেটওয়ার্কের মাধ্যমে প্যান আফ্রিকান ই-নেটওয়ার্কের দ্বিতীয় পর্যায়ের সূচনা করেছে। প্রথমটির মাধ্যমে ১০০০ জন ডাক্তার / নার্স / প্যারামেডিককে বিনামূল্যে চিকিৎসা সংক্রান্ত শিক্ষা প্রদান ও টেলিমেডিসিনের দ্বারা আফ্রিকান দেশগুলিকে বিনামূল্যে চিকিৎসা প্রদান করা হয় এবং দ্বিতীয়টির লক্ষ্য হল পাঁচ বছর ব্যাপী ৪০০০ জন ছাত্রছাত্রীকে বিনামূল্যে টেলি এডুকেশন প্রদান করা। এই উদ্যোগগুলির আওতায় ১৯টি আফ্রিকান দেশের যুব সম্প্রদায়ের মানুষেরা বিভিন্ন ডিপ্লোমা এবং ডিগ্রি কোর্সে নাম নথিভুক্ত করেছেন। এ ছাড়াও ভারত তথ্যপ্রযুক্তি কেন্দ্র, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি উদ্যান এবং উদ্যোক্তা উন্নয়ন কেন্দ্রের মাধ্যমে আফ্রিকার ডিজিটাল রূপান্তরে সাহায্য করছে।

ভারত-আফ্রিকা উন্নয়ন আন্তঃসহযোগিতা বিভিন্ন ক্ষেত্রে ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। ইতিমধ্যেই ভারতের সরকারি ও বেসরকারি ক্ষেত্রের একাধিক সংস্থা আফ্রিকায় তাদের সংযোগ শৃঙ্খল বিস্তার করেছে।

২০১৯ সালে ভারত ‘সহায়তা’র মাধ্যমে ঘূর্ণিঝড়-বিধ্বস্ত মোজাম্বিককে সাহায্য ও ত্রাণ সহায়তা প্রদান করেছে। ২০২০ সালে ভারত অপারেশন ভ্যানিলার মাধ্যমে মাদাগাস্কারের বন্যাপীড়িত মানুষদের ত্রাণ সরবরাহের পাশাপাশি জাপানি জাহাজ ওয়াকাশিও-র গ্রাউন্ডিংয়ের ফলে তেল ছড়িয়ে পড়া নিয়ন্ত্রণ করতে মরিশাসকে প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রদান করে।

উপসংহার

এক কথায় ভারত-আফ্রিকা উন্নয়ন আন্তঃসহযোগিতা বিভিন্ন ক্ষেত্রে ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। ইতিমধ্যেই ভারতের সরকারি ও বেসরকারি ক্ষেত্রের একাধিক সংস্থা আফ্রিকায় তাদের সংযোগ শৃঙ্খল বিস্তার করেছে। ও এন জি সি বিদেশ, গুজরাত স্টেট পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন, অয়েল ইন্ডিয়া এবং ইন্ডিয়ান রেলওয়েজের মতো সরকারি সংস্থাগুলি রিলায়েন্স, টাটা আফ্রিকা হোল্ডিংস, এয়ারটেল, গোদরেজ, আর্সেলর মিত্তল ইত্যাদি ব্যক্তিগত মালিকানাধীন সংস্থাগুলি অংশীদারিত্বের মাধ্যমে আফ্রিকায় কাজ করছে। বর্তমানে কাজ চলছে এমন সব ক’টি প্রকল্পের কার্যকর এবং সময়োচিত বাস্তবায়নের দ্বারা  ভারত-আফ্রিকা প্রবৃদ্ধি অংশীদারিত্ব গভীরতর করে তোলার সুযোগ রয়েছে। উদাহরণ স্বরূপ বলা যায়, সি আই আই এক্সিম ব্যাঙ্কের মাধ্যমে এম ই এ এবং এম সি এ-র মধ্যে নিরবচ্ছিন্ন সমন্বয় গড়ে তোলা আরও ভাল ফলাফল সুনিশ্চিত করতে পারে। একই রকম ভাবে এক্সিম ব্যাঙ্কের সদর দফতর মুম্বই এবং জোহানেসবার্গ (দক্ষিণ আফ্রিকা), আদ্দিস আবাবা (ইথিওপিয়া) এবং আবিদজান-এর (আইভরি কোস্ট) মতো স্থানীয় কার্যালয়গুলির মধ্যে লাইন অব ক্রেডিট বা ঋণসীমা সংক্রান্ত প্রক্রিয়া ও বিষয়গুলি নিয়ে বর্ধিত আন্তঃসহযোগিতার মাত্রা ভারত-আফ্রিকা অংশীদারিত্বে নতুন উদ্দীপনার সঞ্চার করতে পারে। সর্বোপরি আফ্রিকান ছাত্রছাত্রী এবং আধিকারিকেরা প্রশিক্ষণ লাভ করতে ভারতে এলে বা আফ্রিকার মাটিতে ভারতীয় নিয়োগকর্তাদের আফ্রিকার কর্মীদের সঙ্গে আচার-আচরণে জাতি এবং জাতিগত বৈষম্য সংক্রান্ত বিষয়গুলি সম্পর্কে আরও বেশি সংবেদনশীল হতে হবে।

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.