Published on Jan 01, 2024 Updated 4 Hours ago

প্রতিরক্ষায় থিয়েটারাইজেশন–এর সময় ভারতের প্রতিরক্ষা প্রয়োজনীয়তার জন্য মহাকাশের সম্ভাবনাকে ব্যবহার করার সময় এসেছে

রাইফেল থেকে রাফাল: প্রতিরক্ষার জন্য মহাকাশ

মহাকাশ: নিরাপত্তার গুরুত্ব



পর্যবেক্ষণ, অবস্থান ও যোগাযোগ হল যে কোনও সামরিক অভিযানের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য যুদ্ধের তিনটি প্রধান বৈশিষ্ট্য  — কৌশলগত যুদ্ধ থেকে কার্যক্ষেত্রব্যাপী কৌশলগত যুদ্ধ পর্যন্ত। মহাকাশ (‌স্পেস)‌ তার অনন্য বৈশিষ্ট্যগুলির কারণে সারা বিশ্বে পৌঁছে যাওয়ার ক্ষমতা, অবিরাম নজরদারি, নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগ, দ্রুত প্রতিক্রিয়া, বিশ্বব্যাপী চালনক্ষমতা এবং মাল্টিমোডাল ইন্টিগ্রেশনের ব্যবস্থা করার ক্ষেত্রে স্থল, সমুদ্র বা বায়ুভিত্তিক প্ল্যাটফর্মের সীমাবদ্ধতাগুলিকে অতিক্রম করে সবচেয়ে প্রতিশ্রুতিসম্পন্ন শক্তি–গুণক হিসাবে আবির্ভূত হয়েছে। ১৯৪৫ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষ পর্বে এর আবির্ভাবের সময় মরিয়া জার্মানরা ফরাসি ও ব্রিটিশদের উপর পুনঃপ্রবেশকারী ভি২ রকেট নিক্ষেপ করেছিল। আজ মহাকাশ আধুনিক যুদ্ধের চূড়ান্ত পর্ব হিসাবে প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বাড়ানোর প্রচুর সুযোগ দেয়। সমস্ত সম্ভাব্য স্পর্শনীয় ও অ–অনুভবনীয় বৈশিষ্ট্যগুলিকে অন্তর্ভুক্ত করে একটি সু–সংজ্ঞায়িত স্থাপত্য রোডম্যাপ তৈরি করার জন্য বিদ্যমান সামরিক মহাকাশ সক্ষমতা ও ভবিষ্যতের মহাকাশ প্রযুক্তি সমাধানগুলির সর্বোত্তম আহরণের মধ্যে সমন্বয় স্থাপনের প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। ভারতীয় মহাকাশ সম্ভাবনা পুরোপুরি ব্যবহার করার পাশাপাশি —যার মধ্যে শুধু আকাশে প্রদক্ষিণকারী উপগ্রহগুলিই নয়, সেইসঙ্গেই স্থল ও ব্যবহারকারীর অংশগুলির একটি সমন্বিত বিকাশ জড়িত — পছন্দসই স্থানে পৌঁছনোর জন্য বিশেষ প্রযুক্তিগত অগ্রগতিগুলিকে যথাযথভাবে মিশ্রিত করার প্রয়োজন রয়েছে। এর ফলাফলগুলি সম্মিলিতভাবে শান্তি ও যুদ্ধের সময় প্রতিরক্ষার জন্য উদ্দিষ্ট ব্যবহারের সুযোগ তৈরি করে।


প্রতিরক্ষা ব্যবহারের জন্য মহাকাশের সম্ভাবনা যুদ্ধ না–করেই জয়ের মধ্যে নিহিত রয়েছে, এবং তাই ভারতকে তার সামর্থ্য বাড়াতে হবে,‌ এবং সেইসঙ্গেই অন্যত্র উপজাত হিসাবে নতুন কী উঠে আসছে তা অন্বেষণ করতে অত্যাবশ্যক মহাকাশ ক্ষেত্রগুলির বাইরের সিস্টেমগুলিতে বিনিয়োগ করতে হবে ।



মহাকাশ–প্রতিরক্ষা ম্যাট্রিক্স



মহাকাশ গত দুই দশকে বিশ্বব্যাপী প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্যভাবে সংযুক্ত হয়েছে (এমনকি ভারতেও, কিছু পরিমাণে)। ‘নিরাপত্তার জন্য মহাকাশ’‌–এর সঙ্গে সংযুক্ত দুটি স্বতন্ত্র ক্ষেত্র হল মহাকাশের মাধ্যমে প্রতিরক্ষা বাহিনীর যুদ্ধের সক্ষমতা বৃদ্ধি করা এবং মহাকাশ সম্পদের সুরক্ষা (স্পেস সিচুয়েশনাল অ্যাওয়ারনেস (এসএসএ) ও কাউন্টার–স্পেস অপারেশন নিয়ে গঠিত)। মহাকাশ সামরিক অভিযান থেকে শুরু করে প্রচলিত যুদ্ধ, অপ্রতিসম হুমকি এবং এলাকার বাইরের জরুরি অভিযান প্রতিক্রিয়ার ক্ষেত্রে স্থল, বায়ু ও সমুদ্র জুড়ে প্ল্যাটফর্মগুলিকে একীভূত করার সম্ভাবনা প্রদান করে। সংক্ষেপে মহাকাশভিত্তিক সি৪আইএসআর সিস্টেম [১] যুদ্ধক্ষেত্রে প্রতিরক্ষা বাহিনীর প্রস্তুতি ও কার্যকারিতা বৃদ্ধির একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিসর। মহাকাশ–ভিত্তিক আবহাওয়ার পূর্বাভাস, সুরক্ষিত যোগাযোগ, গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ, সার্বক্ষণিক নজরদারি, গভীর তত্ত্বাবধান, সঠিক অবস্থানে থাকা, সুনির্দিষ্ট নেভিগেশন, টার্গেটিং, ও ক্ষেপণাস্ত্র সতর্কতার প্রয়োগগুলি যখন সাইবারস্পেস ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) সঙ্গে একত্রিত হয়, তখন তা যুদ্ধে প্রতিটি সৈন্যকে একটি শক্তিশালী সিস্টেমে রূপান্তরিত করে। প্রতিরক্ষা ব্যবহারের জন্য মহাকাশের সম্ভাবনা যুদ্ধ না–করেই জয়ের মধ্যে নিহিত রয়েছে, এবং তাই ভারতকে তার সামর্থ্য বাড়াতে হবে,‌ এবং সেইসঙ্গেই অন্যত্র উপজাত হিসাবে নতুন কী উঠে আসছে তা অন্বেষণ করতে অত্যাবশ্যকীয় মহাকাশ ক্ষেত্রগুলির বাইরের সিস্টেমগুলিতে বিনিয়োগ করতে হবে। ভবিষ্যৎ যুদ্ধের পরিবর্তিত চেহারা নিয়ে বিভিন্ন তত্ত্বের সঙ্গেসঙ্গে যুদ্ধে প্রযুক্তির ব্যাঘাতমূলক ক্ষমতাগুলির কার্যকর ব্যবহার খুঁজে বার করার বিষয়টিও বিকশিত হয়েছে। যুদ্ধের সম্ভাব্য সমস্ত বিন্যাসের মধ্যে — সংক্ষিপ্ত তীব্রতার প্রচলিত যুদ্ধ থেকে শুরু করে হাইব্রিড, নেটওয়ার্ক–কেন্দ্রিক, গ্রে–জোন এবং সাম্প্রতিকতম মাল্টি–ডোমেন যুদ্ধ — একটি মিল রয়েছে, এবং তা হল ‘‌সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়া সংক্ষিপ্ত করার জন্য সি৪আইএসআর সিস্টেমের সংযুক্তিকরণ।’‌ আজ, যখন অন্যান্য নতুন পথের দিশারী সামরিক প্রযুক্তিগুলি ভালভাবে পরিপক্ব হয়েছে, তখন মহাকাশ প্রযুক্তি হাইপারসনিক গ্লাইড ভেহিকল, পুনঃব্যবহারযোগ্য লঞ্চ ভেহিকল, ইন–অরবিট রিফুয়েলিং ও রক্ষণাবেক্ষণ, কো–অরবিটাল অ্যাপ্লিকেশন, লিও–তে আইওটি কনস্টেলেশন , সিস–লুনার এক্সপ্লোরেশন, কোয়ান্টাম কমিউনিকেশন, মাল্টি–পেলোড কনস্টেলেশন, ডায়রেক্টেড এনার্জি ওয়েপনস, এবং আরও অনেক ক্ষেত্রের অগ্রগতি সূচকীয় উন্নয়ন বক্ররেখায় রয়েছে, এবং  সামরিক বিষয়ে বিপ্লব ঘটাচ্ছে।


জাতীয় নিরাপত্তার জন্য মহাকাশের ব্যবহার নিয়ে কাজ করে এমন সংস্থাগুলিকে আরও ভাল আন্তঃসংস্থা সমন্বয়, কার্যকর স্থাপত্য সংস্কার ও দৃষ্টিভঙ্গির পুনর্বিন্যাস করতে হবে, এবং পর্যায়ক্রমে রোডম্যাপ তৈরিতে প্রয়োগের মাধ্যমে সক্ষমতা বিকাশের পুনর্মূল্যায়ন করতে হবে। 



বিভিন্ন প্রযুক্তিগত সক্ষমতার ফাঁক ছাড়াও, ভারতের মতো একটি উদীয়মান মহাকাশ শক্তির সামনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জগুলির মধ্যে একটি হল মহাকাশের সংযুক্তিকরণ এবং যৌথ সি৪আইএসআর সিস্টেমগুলিকে একটি সমন্বিত সামগ্রিক পূর্ণতা দেওয়া। জাতীয় নিরাপত্তার জন্য মহাকাশের ব্যবহার নিয়ে কাজ করে এমন সংস্থাগুলিকে আরও ভাল আন্তঃসংস্থা সমন্বয়, কার্যকর স্থাপত্য সংস্কার ও দৃষ্টিভঙ্গির পুনর্বিন্যাস করতে হবে, এবং পর্যায়ক্রমে রোডম্যাপ তৈরিতে প্রয়োগের মাধ্যমে সক্ষমতা বিকাশের পুনর্মূল্যায়ন করতে হবে।



বিশ্লেষণাত্মক বুনন


১৯৫৭ সালে রাশিয়া কর্তৃক পৃথিবীর কক্ষপথে প্রথম নজরদারি উপগ্রহ স্থাপনের সঙ্গে মহাকাশ যুগ শুরু হওয়ার পর মহাকাশ–যাত্রী দেশগুলির (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া ও চিন) পরবর্তী সমস্ত উৎক্ষেপণের সামরিক অভিপ্রায় স্পষ্ট ও দ্ব্যর্থহীন ছিল। ভারতের ক্ষেত্রে, যেটি পৃথিবী পর্যবেক্ষণের জন্য প্রথম দ্বৈত–ব্যবহারের উপগ্রহ হিসাবে ১৯৮০ সালে রোহিণী–১ উৎক্ষেপণ করেছিল, বিষয়টা তেমন ছিল না। ভারতের কক্ষপথে উৎক্ষেপিত ১১৫টি সম্পদের মধ্যে, যার প্রথমটি ১৯৭৫ সালে উৎক্ষেপিত হয়েছিল, ৬৪টি উপগ্রহ এখনও কাজ করছে। ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (ইসরো) যখন  একটি বৈশ্বিক পরিমাণগত মহাকাশে ষষ্ঠ স্থান দাবি করেছিল, তখন চিন সেই সময় দ্বিতীয় স্থানে থাকা রাশিয়াকে ২০১৮ সালে  ছাড়িয়ে গিয়েছিল। রাশিয়ার ২৩০টির বিপরীতে চিনের ৬৪৫টি সম্পূর্ণ  কার্যকর উপগ্রহ আছে। চিনের কৃতিত্বের দাবি একটি অন্তহীন ও অপ্রতিরোধ্য তালিকা, যা সব ধরনের অনন্য প্রযুক্তি প্রদর্শন সহ বেশ কয়েকটি মাইলফলক নিয়ে গঠিত, যেমন আক্রমণাত্মক ও প্রতিরক্ষামূলক মহাকাশ যুদ্ধের সক্ষমতা (হার্ড ও সফট কিল); সামরিক প্রয়োগের জন্য ইয়াওগান, গাওফেন, জিলিন, শিয়ান, জিয়াংবিং–এর মতো পৃথিবী পর্যবেক্ষণ কনস্টেলেশনের সিরিজ; বিশ্বের একমাত্র কোয়ান্টাম কমিউনিকেশন স্যাটেলাইট ‘‌মাইসিয়াস’‌; গ্লোবাল নেভিগেশন স্যাটেলাইট সিস্টেম (জিএনএসএস) ‘বেইডো’ (জিপিএসের চেয়ে পরিমাণগত এবং গুণগতভাবে ভারী); বায়ু, সমুদ্র ও স্থল লঞ্চ প্ল্যাটফর্ম; একটি প্রায় সম্পূর্ণ চিনা মহাকাশ স্টেশন; ইন্টারন্যাশনাল লুনার রিসার্চ স্টেশনের সিআইএস–লুনার এক্সপ্লোরেশন প্রোগ্রাম (আইএলআরএস, রাশিয়া–চিন সহযোগিতায় তৈরি ইউএস আর্টেমিস অ্যাকর্ডের একটি  প্রতিদ্বন্দ্বী), এবং আরও অনেক কিছু।


শুধু ২০২০ সাল থেকে চিনের বার্ষিক উৎক্ষেপণ ভারতের হাতে থাকা মোট কার্যরত মহাকাশ সম্পদের প্রায় সমান।



ভারত এবং চিন, যারা ১৯৬০–এর দশকে প্রায় একই সময়ে তাদের মহাকাশ কর্মসূচি শুরু করেছিল, তারা গুণগত এবং পরিমাণগত উভয় পরিমাপে আজ সমান নয়। শুধু ২০২০ সাল থেকে চিনের বার্ষিক উৎক্ষেপণ ভারতের হাতে থাকা মোট কার্যরত মহাকাশ সম্পদের প্রায় সমান। প্রতি ১০ মিনিটেরও কম সময়ে পৃথিবীর প্রতিটি ইঞ্চি স্ক্যান করা; পজিশনিং, নেভিগেশন ও টাইমিং (পিএনটি) ডেটার সাব–সেন্টিমিটারিক টার্গেটিং প্রিসিশন; জ্যামিং ও স্পুফিং আক্রমণের বিরুদ্ধে অবিচল কোয়ান্টাম প্রযুক্তির এনক্রিপশন–সহ বিশাল ক্ষমতা অর্জন করে চিন তার নিজস্ব পিডিসি–গুলি [২] এবং মানকে নিজেই হারিয়ে দিচ্ছে, এবং তা ভারতের জন্য উদ্বেগের কারণ। আজ দুই প্রতিদ্বন্দ্বীর মধ্যে মহাকাশ পরিসংখ্যানে ন্যূনতম সূচকীয় সমতা হল ‘‌১০ গুণ’‌, তা বার্ষিক বাজেট হোক বা লঞ্চ বা গবেষণা, প্রশিক্ষণ, অ্যাকাডেমিক সুবিধা, বেসরকারি ক্ষেত্রের ব্যস্ততা বা মহাকাশ প্রদর্শনের সঙ্গে শক্তি প্রদর্শন। 



মৌলিক বাস্তবতা বিবেচনা



ভারত অসামরিক ব্যবহার ও মহাকাশ ক্ষেত্রের অনুসন্ধানে মহাকাশ প্রযুক্তির সম্ভাবনাকে পর্যাপ্তভাবে ব্যবহার করেছে, কিন্তু জাতীয় নিরাপত্তার ক্ষেত্রে এটি ব্যাপকভাবে অব্যবহৃত থেকে গিয়েছে। বাজেট, যা অবশ্যই প্রাথমিক সীমাবদ্ধতা ছিল, তা ছাড়াও প্রতিরক্ষা ব্যবহারের জন্য সর্বোত্তমভাবে মহাকাশকে ব্যবহার করার পদ্ধতিও বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয়েছিল। প্রাথমিকভাবে পদ্ধতিটি প্রতিক্রিয়াশীল ও সহায়ক ছিল:‌ প্রথমত, প্রতিরক্ষার টুকরো টুকরো ন্যূনতম চাহিদা মেটানো, এবং দ্বিতীয়ত, শুধুমাত্র বয়স হয়ে–যাওয়া সম্পদ/প্রচেষ্টাকে বাঁচিয়ে রাখা। যদিও উপরে উল্লিখিত পদ্ধতিটি প্রতিরক্ষার জন্য মহাকাশের সর্বোত্তম ব্যবহার করেনি, এটি বছরের পর বছর ধরে জাতীয় আর্থ–সামাজিক ও নিরাপত্তা পরিস্থিতি বিবেচনায় রেখে যুক্তিসঙ্গত ছিল। যাই হোক, দেখা গিয়েছে যে মহাকাশের মাধ্যমে প্রতিরক্ষার জন্য সক্ষমতা বৃদ্ধির উপর জোর দেওয়ার বেশিরভাগটাই ছিল বহিরাগত নিরাপত্তা হুমকির পরে প্রতিক্রিয়াশীল পদক্ষেপ। যেমন, এটি কাকতালীয় নয় যে
ন্যাভএলসি (ভারতীয় কনস্টেশলেশন দ্বারা নেভিগেশন), পিএনটি সীমাবদ্ধ পরিষেবা (আরএস) প্রকল্প, এবং কৌশলগত মহাকাশ–ভিত্তিক নজরদারি (এসবিএস) কর্মসূচি শুরু হয়েছিল কার্গিল সংকটের পরে। রিস্যাট স্যাটেলাইটের ক্ষেত্রেও একই অবস্থা। যদিও দ্বৈত–ব্যবহারের উভয় প্রকল্পই সক্রিয় এবং কার্যকর অবস্থায় আছে, কৌশলগত ব্যবহারের জন্য কার্যকর ব্যবহারগুলি গুণমানসম্পন্ন  অন্তিম পণ্যের অভাব এবং ব্যবহারকারী ও মহাকাশ বৃত্তাংশগুলির সহ–উন্নয়নে দীর্ঘ প্রস্তুতিপর্বের জন্য ভুগছে। এই সংকটচালিত পন্থা থেকে একটি সংকেত গ্রহণ করে প্রতিরক্ষা মহাকাশনীতি নির্দেশিকা, মতবাদ, কৌশল, সাংগঠনিক স্থাপত্য, প্রযুক্তিগত সহায়তা এবং পরিকাঠামোর পরিপ্রেক্ষিতে ব্যাপক পরিকল্পনার একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রয়োজন রয়েছে।


ভারতও ২০১৮ সালের অক্টোবরে এইচকিউ ইন্টিগ্রেটেড ডিফেন্স স্টাফ (এইচকিউ আইডিএস) এবং এর প্রযুক্তিগত সমকক্ষ প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থার (ডিআরডিও) অধীনস্থ ডিরেক্টরেট অফ স্পেশাল প্রোজেক্টস–কে নিয়ে নিজস্ব ডিফেন্স স্পেস এজেন্সি তৈরি করে, এবং ২০১৯–এর জুন মাসে এটি চালু করে। 



প্রতিরক্ষার জন্য মহাকাশের ব্যবহারে সাম্প্রতিক সামরিক উন্নয়নগুলি দেখায় যে মহাকাশ–যাত্রী দেশগুলি গত পাঁচ থেকে সাত বছরে তাদের প্রতিরক্ষা মহাকাশ সংস্থাগুলিকে তৈরি/উন্নততর করেছে। রাশিয়ার মহাকাশ বাহিনী (২০১৫), চিনা কৌশলগত সহায়তা বাহিনী (২০১৬), ইউএস স্পেস ফোর্স (২০১৯), ফ্রেঞ্চ স্পেস কমান্ড (২০১৯), ইউকে স্পেস কমান্ড (২০২১) এবং অস্ট্রেলিয়ান ডিফেন্স স্পেস কমান্ড (২০২২) এর উদাহরণ। এই প্রয়োজনীয়তা স্বীকার করে ভারতও ২০১৮ সালের অক্টোবরে এইচকিউ ইন্টিগ্রেটেড ডিফেন্স স্টাফ (এইচকিউ আইডিএস) এবং এর প্রযুক্তিগত সমকক্ষ প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থার (ডিআরডিও) অধীনস্থ ডিরেক্টরেট অফ স্পেশাল প্রোজেক্টস–কে নিয়ে নিজস্ব ডিফেন্স স্পেস এজেন্সি তৈরি করে, এবং ২০১৯–এর জুন মাসে এটি চালু করে। এইগুলি স্পষ্ট গুরুত্ব সহকারে শুরু করা এবং ২০২০ সালে প্রাইভেট স্পেস ইন্ডাস্ট্রি খোলার সাথে সাথে প্রতিরক্ষা মহাকাশ ক্ষেত্রের বিকাশের কাজ এগিয়ে চললেও রাষ্ট্রের কাঙ্ক্ষিত ব্যবহারের সর্বোত্তম সুবিধাগুলি পাওয়ার জন্য তা আরও ভালভাবে সংজ্ঞায়িত করা ও সাজানো প্রয়োজন। প্রতিরক্ষার জন্য মহাকাশ সক্ষমতার সর্বোত্তম সম্ভাবনাকে ব্যবহার করতে প্রচলিত পদ্ধতি, অস্পষ্ট নীতি এবং অনুপস্থিত স্থাপত্য ও রোডম্যাপে প্রাসঙ্গিক পরিবর্তন আনতে একটি বহুমুখী কৌশল অবলম্বন করার তাৎক্ষণিক প্রয়োজন রয়েছে। চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে এবং প্রতিরক্ষা মহাকাশ ক্ষেত্রের সুযোগগুলিকে কাজে লাগাতে ভারতের মহাকাশ ব্যবহারকে বিকশিত করতে হবে। স্থিতিস্থাপকতা, আন্তঃব্যবহারযোগ্যতা ও নমনীয়তার মতো বৈশিষ্ট্যগুলি গ্রহণ করে ভারত তার প্রতিরক্ষা মহাকাশ স্থাপত্যকে কার্যকারিতা, প্রতিক্রিয়াশীলতা ও সহনশীলতা নিশ্চিত করার আদর্শ স্তরে নিয়ে যেতে পারে। মিত্র দেশগুলি ও বাণিজ্যিক সংস্থাগুলির সঙ্গে সহযোগিতা ভারতের মহাকাশ সক্ষমতাকে আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে, এবং জাতীয় নিরাপত্তা লক্ষ্যগুলিকে সমর্থন করতে পারে। যেহেতু ভারত তার মহাকাশ উদ্যোগের বিকাশ ও প্রসারণ ঘটাচ্ছে, এটি দ্রুত পরিপক্ব মহাকাশক্ষেত্রীয় সাফল্য অর্জনের জন্য বাণিজ্যিক মহাকাশ অর্থনীতির অগ্রগতিগুলিকে পুঁজি করতে পারে। প্রতিরক্ষায় এখন থিয়েটারাইজেশন ঘটছে, ভারতের প্রতিরক্ষা প্রয়োজনীয়তার জন্য মহাকাশের সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর সময় এসেছে।



কর্নেল বালাক সিং ভার্মা, ভিএসএম, হলেন একজন আর্মি এয়ার ডিফেন্স অফিসার, যিনি আইএমএ থেকে ‌১৯৯৭ সালে একটি স্কিলকা রেজিমেন্টে কমিশনড হন।




[১] সি৪আইএসআর হল একটি সংক্ষিপ্ত রূপ যা বোঝায় কমান্ড, কন্ট্রোল, কমিউনিকেশনস, কম্পিউটার, ইন্ট্যালিজেন্স, নজরদারি এবং রিকনাইসেন্স। এই শব্দটি সাধারণত সামরিক ও প্রতিরক্ষা প্রসঙ্গে ব্যবহৃত হয় সমন্বিত সিস্টেম ও প্রযুক্তির জন্য, যা সামরিক অভিযানের বিভিন্ন দিক সমর্থন করে, যার মধ্যে সিদ্ধান্ত গ্রহণ, যোগাযোগ, ডেটা বিশ্লেষণ এবং পরিস্থিতিগত সচেতনতা রয়েছে। এই সিস্টেমগুলি দক্ষতার সঙ্গে এবং কার্যকরভাবে সামরিক কার্যক্রম সমন্বয় ও পরিচালনার জন্য অপরিহার্য।

[২] সমাপ্তির সম্ভাব্য তারিখ

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.