Author : Nilanjan Ghosh

Expert Speak India Matters
Published on Feb 10, 2022 Updated 11 Days ago

ভারতীয় অর্থনীতি যে কঠিন চ্যালেঞ্জগুলির মুখোমুখি হবে তার মোকাবিলায় ২০২২-এর বাজেট স্বাগত, তবে এই সময়ের প্রয়োজন হল আরও সামগ্রিক দৃষ্টিভঙ্গি।

‘মিতব্যয়িতার স্ববিরোধ’‌ ফিরে দেখা:‌ সামগ্রিক উন্নয়নের চশমায় কেন্দ্রীয় বাজেট ২০২২

Source Image: Chetan Karkhanis/TravelMag — Flickr

‘মিতব্যয়িতার স্ববিরোধ’‌ ফিরে দেখা:‌ সামগ্রিক উন্নয়নের চশমায় কেন্দ্রীয় বাজেট ২০২২

এই নিবন্ধটি ‘‌বাজেট ২০২২:‌ পরিসংখ্যান  তদুপরি’‌ সিরিজের অংশ।


ভারতের ২০২২–এর কেন্দ্রীয় বাজেট আগামী ২৫ বছরের জন্য অর্থনীতির ভিত্তি স্থাপনের ও তার একটি ব্লুপ্রিন্ট তৈরির স্বীকৃত উদ্দেশ্য প্রকাশ্যে ঘোষণা করেছে। বাজেট বক্তৃতা থেকে আপাতদৃষ্টিতে মনে হয় একটা মৌলিক প্রকরণগত পরিবর্তন হয়েছে, আর তা হল প্রথাগত সামষ্টিক অর্থনৈতিক মাপকাঠিগুলি (যেমন আয় বৃদ্ধি, রাজস্ব মাপকাঠি, উপভোগ, বিনিয়োগ, সঞ্চয় ইত্যাদি) নিয়ে ব্যস্ত থাকার পরিবর্তে উন্নয়নকে আরও সামগ্রিক ভাবে দেখার চেষ্টা করা হয়েছে, এবং তা চালিত হচ্ছে বিশ্বব্যাপী স্থিতিশীল উন্নয়নের লক্ষ্য (‌এসডিজি) নির্দেশিত পথের প্রেরণায়। তবে অন্তত গত তিন বছরের কেন্দ্রীয় বাজেটেরও প্রবণতা ছিল এটাই। এই বছর অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন সম্ভবত ‘‌সবুজ রূপান্তর’‌–এর পথে যাত্রা করার উপর একটু বেশি জোর দিয়েছেন। ‘‌সাসটেনেব্‌ল’‌ শব্দটি বাজেট বক্তৃতায় একাধিক বার ব্যবহার করা হয়েছে এই বিষয়টির উপর জোর দেওয়ার জন্যই। অন্যান্য দেশের তুলনায় ভারতে অতিমারির প্রকোপ কিছু কম না–হওয়া সত্ত্বেও ভারত অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের এই পর্যায়ে বৃদ্ধির সংখ্যার দিক থেকে বিশ্বের নেতৃত্ব দিচ্ছে। কাজেই এই বিষয়টি প্রাসঙ্গিক যে তার অর্থনীতির আগামী ২৫ বছরের যাত্রাপথের উন্নয়ন সংক্রান্ত দৃষ্টিভঙ্গিতে ভারত এসডিজি চালিত বিশ্বব্যাপী উন্নয়ন–শাসনের পরিবর্তিত কাঠামোটিকে স্বীকার করে নেবে।

প্রধানমন্ত্রী মোদী তাঁর স্বাধীনতা দিবসের ভাষণে যে রূপরেখা দিয়েছিলেন, ২০২২-২৩–এর কেন্দ্রীয় বাজেটও পুরো প্রক্রিয়ার মধ্যে সেই ভাবনাই তুলে ধরার চেষ্টা করেছে। এগুলি হল: ক) সমষ্টিগত স্তরের বৃদ্ধিকে ক্ষুদ্র স্তরের মঙ্গলের পরিপূরক করে তোলা; খ) ডিজিটাল অর্থনীতি ও ফিনটেক এগিয়ে নিয়ে চলা এবং প্রযুক্তি–নির্ভর উন্নয়ন, শক্তির রূপান্তর, ও জলবায়ু সক্রিয়তা তুলে ধরা; এবং গ) বেসরকারি ও সরকারি বিনিয়োগের পরিপূরকতা থেকে উদ্ভূত ‘ভারচুয়াস সাইক্‌ল’‌ কাজে লাগানো, যেখানে সরকারি মূলধন বিনিয়োগের মাধ্যমে বেসরকারি বিনিয়োগের ‘‌ভিড় জমানো’‌ যাবে।

বিশ্বের উন্নয়ন শাসন চালিত হয় এসডিজি–গুলির দ্বারা, যা ‘‌নীতি ত্রিভুজ চ্যালেঞ্জ’‌ বা দক্ষতা, ন্যায্যতা ও স্থায়িত্বের (‌সাসটেনেবিলিটি)‌ বিরোধাভাস–সমন্বিত ত্রিত্বের অস্তিত্বকে স্বীকার করে।

আকর্ষণীয় বিষয় হল, এখানে প্রস্তাবিত হয়েছে বেশ কয়েকটি ট্রেড–অফ বা সমঝোতার ভারসাম্যের বিষয়। কেন্দ্রীয় বাজেট এইগুলির সঙ্গে মুখোমুখি লড়াইয়ের চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেছে বলে মনে হচ্ছে। দুটি দৃষ্টিকোণ থেকে এই ট্রেড-অফটি তৈরি করা যায়। বিশ্বের উন্নয়ন শাসন চালিত হয় এসডিজি–গুলির দ্বারা, যা ‘‌নীতি ত্রিভুজ চ্যালেঞ্জ’‌ বা দক্ষতা, ন্যায্যতা ও স্থায়িত্বের (‌সাসটেনেবিলিটি)‌ বিরোধাভাস–সমন্বিত ত্রিত্বের অস্তিত্বকে স্বীকার করে। যদিও মনে হচ্ছে বাজেট ‘‌নীতি ত্রিভুজ চ্যালেঞ্জ’‌ গ্রহণের চেষ্টা করেছে;‌ কিন্তু আরও সতর্ক ভাবে দেখলে বোঝা যাবে যে কিছু ট্রেড-অফ সঠিক ভাবে অনুধাবিত হয়নি। এটি পরে উন্নয়ন–শাসনের ক্ষেত্রে নীতিগত ব্যর্থতার কারণ হতে পারে।

এখানে আমরা প্রথমে ন্যায্যতা বনাম দক্ষতার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করব। বাজেটে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, মানব উন্নয়ন, এমএসএমই, অনগ্রসর শ্রেণি ও অরক্ষিত সম্প্রদায়গুলির কিছু অতি–গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে কথা বলা হয়েছে। এই পদক্ষেপ স্বাগত। কিন্তু বাজেটটি ‘প্যারাডক্স ‌অফ থ্রিফ্‌ট’‌ (‌মিতব্যয়ের স্ববিরোধিতা)‌–এর শিকার হয়েছে, এবং তা বেতনভোগী মধ্যবিত্তের জন্য কোনও ধরনের করছাড় না–দেওয়ার ঘটনা থেকে প্রমাণিত হয়। গত তিন দশক ধরে ভারতীয় বৃদ্ধির কাহিনিটি মূলত উপভোগ-চালিত। আকর্ষণীয় বিষয় হল, সাম্প্রতিক ২০২১-২২ সালের প্রথম দুই ত্রৈমাসিকে বৃদ্ধির পুনরুজ্জীবন মূলত বেসরকারি উপভোগ দ্বারা চালিত হয়েছে, যার অবদান জিডিপি–তে ৫৫ শতাংশেরও বেশি। একটি বিষয় নিশ্চিত: উপভোগের এই উপাদানটি চালিত হয়ে থাকবে মূলত বেতনভোগী মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের গোষ্ঠী দ্বারা, যাদের উপভোগের প্রান্তিক প্রবণতা ধনী ও অতি-ধনীদের তুলনায় বেশি। এই ঘটনা থেকেও বিষয়টি প্রমাণিত হয় যে ১৯৯১ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে ভারতে আয়ের ক্রমবর্ধমান বৈষম্য কিন্তু সম্পদের বৈষম্যকে দ্রুত বৃদ্ধির দিকে নিয়ে গিয়েছে। এর অর্থ হল উচ্চ আয়ের গোষ্ঠীর চেয়ে নিম্ন আয়ের গোষ্ঠীর আয় বৃদ্ধি পেলে তার উপভোগের পথে প্রবেশের অনেক বেশি সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু উচ্চ আয়ের গোষ্ঠীর আয় বৃদ্ধি পেলে সেই অতিরিক্ত আয় চলে যায় সঞ্চয়ে বা সম্পত্তি করতে, যার ফলে সম্পদ তৈরি হয়। অতএব উপভোগ-চালিত বৃদ্ধিকে উৎসাহিত করতে হলে মধ্য ও নিম্ন-আয়ের গোষ্ঠীর হাতে আরও বেশি অর্থ থাকা গুরুত্বপূর্ণ। এ কথাও মনে রাখা প্রাসঙ্গিক হবে যে ভারতীয় অর্থনীতির উপভোগের পরিসংখ্যান এখনও প্রাক- অতিমারি স্তরে পৌঁছতে পারেনি। তাই, আরও কিছু ব্যবস্থা নেওয়ার প্রয়োজন ছিল, যেমন চাহিদা তৈরির জন্য ব্যক্তিগত আয়করে ছাড় দেওয়া বা হস্তান্তরের মতো কিছু, এবং রাজস্ব ঘাটতি পূরণের জন্য সম্পদ কর বা জিএসটি যুক্তিযুক্ত করে তোলা। অতএব এই ‘‌প্যারাডক্স অফ থ্রিফ্‌ট’‌ (যার উপপাদ্য হল বৃদ্ধির জন্য ব্যক্তিগত সঞ্চয় ক্ষতিকারক) সহজেই এড়িয়ে যাওয়া যেতে পারত, এবং বৃদ্ধি ও বৈষম্যের সমস্যা একটি কেনসিয়ান প্রতিক্রিয়া প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সমাধান করা যেতে পারত।

যদি উপভোগ-চালিত বৃদ্ধিকে উৎসাহিত করতে হয়, তা হলে এটা গুরুত্বপূর্ণ যে মধ্য ও নিম্ন-আয়ের গোষ্ঠীর হাতে আরও বেশি অর্থ থাকা উচিত।

যদিও বাজেট বক্তৃতায় জিএসটি নিয়ে কথা বলার সময় ‘‌এক জাতি, এক কর’‌ উল্লেখিত হয়েছিল, এই বিষয়টি এখনও ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে গেছে। বরং, জিএসটি-র ক্ষেত্রে বাণিজ্যিক সংস্থাগুলির অনুবর্তিতার সমস্যা এখনও বড় আকারেই আছে, যার ফলে ব্যবসা করার খরচ বেড়ে যায়। বিষয়টি ব্যবসা স্বাচ্ছন্দ্যের দাবির বিপরীত। অবশ্যই, অর্থমন্ত্রী যেমন উল্লেখ করেছেন, ২০২২ সালের জানুয়ারিতে জিএসটি সংগ্রহ এযাবৎ কালের মধ্যে সর্বোচ্চ ছিল। তবে এর কারণ মূলত প্রাক-অতিমারি যুগের অনেক অফলাইন অ–নিবন্ধিত পরিষেবার অতিমারি যুগে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে স্থানান্তরিত হওয়া। এই ঘটনা এমন অনেক ব্যবসার পক্ষে শুভ নয় যেগুলি ডিজিটাল বিশ্বে স্থান করে নিতে পারেনি। অর্থাৎ, দক্ষতা ও ন্যায্যতার মধ্যে সমন্বয়ের বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্রীয় বাজেটে ভাবনাচিন্তা করা হয়নি।

এর পরে আসছে উন্নয়ন প্রক্রিয়ার স্থায়িত্ব (সাসটেনেবিলিটি)‌ নিয়ে উদ্বেগ। বাজেট দাবি করেছে যে এটি আগামী ২৫ বছরের জন্য পথ তৈরি করতে চায়। সঠিক ভাবেই রাস্তা, রেলপথ, বিমানবন্দর, বন্দর, গণপরিবহণ, জলপথ ও পিএম গতি শক্তি–র অধীনে লজিস্টিকস–এর জন্য বৃহৎ মাত্রায় পরিকাঠামো উন্নয়নের কথা বলার সময়ও জলবায়ু সংক্রান্ত সক্রিয়তা ও শক্তিক্ষেত্রে রূপান্তরের কথা বলা হয়েছে। সংযোগ অবশ্যই উন্নয়নের একটি বড় চালক, কিন্তু বৃহৎ আকারের মূলধনী ব্যয়ের মাধ্যমে পরিকাঠামো তৈরির ফলে ভূমি-ব্যবহারের চরিত্র বদলে যায়,‌ বন ও তৃণভূমি বিকল্প উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হয়, এবং তার ফলে জীববৈচিত্র্য ও বাস্তুতন্ত্র পরিষেবাগুলির ব্যাপক ক্ষতি হয়। বাজেট বক্তৃতায় অবশ্যই জলবায়ু সক্রিয়তার কথা বলা হয়েছে, তবে এ কথা স্পষ্ট হয়নি যে এই ধরনের পরিকাঠামো প্রকল্পগুলির পাশাপাশি ক্ষতিপূরণমূলক অরণ্য সৃজন বা বাস্তুতান্ত্রিক পুনরুদ্ধারের পথ অনুসরণ সেই জলবায়ু সক্রিয়তার অন্তর্ভুক্ত কি না। গবেষণায় দেখা গেছে যে বাস্তুতন্ত্র পরিষেবাগুলির ক্ষতি যদি টাকার অঙ্কে পরিমাপ করা হয়, তা প্রায়শই এই জাতীয় প্রকল্পগুলি থেকে যে লাভ পাওয়া যাবে বলে ভাবা হয় তার চেয়ে বেশি।

সংযোগ অবশ্যই উন্নয়নের একটি বড় চালক, কিন্তু বৃহৎ আকারের মূলধনী ব্যয়ের মাধ্যমে পরিকাঠামো তৈরির ফলে ভূমি-ব্যবহারের চরিত্র বদলে যায়,‌ বন ও তৃণভূমি বিকল্প উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হয়, এবং তার ফলে জীববৈচিত্র্য ও বাস্তুতন্ত্র পরিষেবাগুলির ব্যাপক ক্ষতি হয়।

একই ভাবে কেন্দ্রীয় বাজেট কমপক্ষে দুটি বিষয়ে ন্যায্যতা ও দক্ষতার সন্ধান করতে গিয়ে স্থায়িত্ব বা সাসটেনেবিলিটি–র বিষয়টি বিসর্জন দিয়েছে। প্রথমটি হল ক্রয় ও ন্যূনতম সহায়ক মূল্য (এমএসপি) পদ্ধতির মাধ্যমে ধান ও গম চাষে উৎসাহদান। বেশ বিশ্বাসযোগ্য ভাবে এই যুক্তি দেওয়া হয়েছে যে ভারতে জল নিয়ে দ্বন্দ্বের মূল কারণ কৃষির সেচের জল, এবং তা মূলত যে দুটি ‘‌আমব্রেলা ক্রপ’‌ দিয়ে খাদ্য নিরাপত্তা সংজ্ঞায়িত করা হয়, সেই গম ও ধানচাষের কারণে সৃষ্ট। বাজেট সেই আগুনে আরও ঘি ঢেলেছে। বরং, এমএসপি ব্যবহার করা যেতে পারে বাণিজ্যের শর্তাদি পরিবর্তন করতে, এবং অনেক কম জল-গ্রাহক মিলেট (‌বাজরা ইত্যাদি)‌ উৎপাদন আরও লাভজনক করে তুলতে। এটি জল সঞ্চয় করতে, জলের প্রবাহ বজায় রাখতে, এবং জল নিয়ে অন্য কিছু তীব্র দ্বন্দ্ব (যেমন কাবেরী, তিস্তা বা পাঞ্জাব-হরিয়ানা দ্বন্দ্ব) সমাধানে সাহায্য করতে পারে।

দ্বিতীয় সমস্যাটি নদীর আন্তঃসংযোগ নিয়ে। বাজেটে বলা হয়েছে, “কেন-বেতোয়া সংযোগ প্রকল্পের বাস্তবায়নের কাজ হাতে নেওয়া হবে, যার জন্য আনুমানিক ৪৪,৬০৫ কোটি টাকা ব্যয় হবে। এর লক্ষ্য কৃষকদের ৯.০৮ লক্ষ হেক্টর জমিতে সেচের সুবিধা দেওয়া, ৬২ লক্ষ মানুষের জন্য পানীয় জলের সরবরাহ করা, ১০৩ মেগাওয়াট জল এবং ২৭ মেগাওয়াট সৌর শক্তি উৎপাদন।’‌’‌ এটা দুর্ভাগ্যজনক যে এখনও পর্যন্ত কেন-বেতোয়া সংযোগের এমন কোনও সামগ্রিক মূল্যায়ন করা হয়নি যা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই ধরনের সংযোগের সামাজিক ও পরিবেশগত মূল্যের (টাকার অঙ্কে) বর্ণনা দিতে পারে। কী ভাবে ক্ষীণদৃষ্টি বৃদ্ধির উচ্চাকাঙ্ক্ষা দীর্ঘমেয়াদি স্থায়িত্বের বিষয়টিকে বাধা দেয় এটি তার একটি ধ্রুপদী উদাহরণ। বাজেটে আরও বলা হয়েছে, “পাঁচটি নদী সংযোগের খসড়া ডিপিআর … চূড়ান্ত করা হয়েছে। একবার সুবিধাভোগী রাজ্যগুলির মধ্যে ঐকমত্য তৈরি হয়ে গেলে কেন্দ্র বাস্তবায়নের জন্য সহায়তা প্রদান করবে।’‌’‌ রিডাকশনিস্ট ইঞ্জিনিয়ারিং ও সংকীর্ণ অর্থনৈতিক লাভ-কেন্দ্রিক বিস্তারিত প্রকল্প রিপোর্ট (ডিপিআর) এই ধরনের প্রকল্পগুলির ফলে যে বিশাল দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতি হয় সে সম্পর্কে অজ্ঞ। এই দাবির পক্ষে গ্লোবাল নর্থ এবং এমনকি দক্ষিণ এশিয়াতেও যথেষ্ট উদাহরণ আছে।

রিডাকশনিস্ট ইঞ্জিনিয়ারিং ও সংকীর্ণ অর্থনৈতিক লাভ-কেন্দ্রিক বিস্তারিত প্রকল্প রিপোর্ট (ডিপিআর) এই ধরনের প্রকল্পগুলির ফলে যে বিশাল দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতি হয় সে সম্পর্কে অজ্ঞ।

বাজেট অনেক ক্ষেত্রে ব্যবসাকে প্রতিযোগিতা–সক্ষম করার কথা বলেছে (এবং বিশ্বব্যাঙ্ক বিপত্তি সত্ত্বেও ‘‌ব্যবসার স্বাচ্ছন্দ্য’‌ শব্দটি ব্যবহার করেছে)। অতীতের ওআরএফ গবেষণা ইতিমধ্যেই দেখিয়েছে যে এসডিজি-র অনুসরণ ব্যবসাকে আরও প্রতিযোগিতামূলক হয়ে উঠতে সাহায্য করে৷ কাজেই বিষয়টি এমন নয় যে বৃদ্ধি আসতে হবে স্থায়িত্বের (সাসটেনেবিলিটি)‌ মূল্যে; বরং উন্নয়নের মানচিত্রে এই দুটির সংযোজন সম্ভব।

যে হেতু ভারত অতিমারির কারণে ঘটা অর্থনৈতিক মন্দা থেকে বেরিয়ে আসছে, এখন পুনরুদ্ধারের পথে একটি সামগ্রিক উন্নয়নের পথ ধরে চলতে হবে। মোটের উপর, এক্ষেত্রে দুটি মূল নীতির উপর ভিত্তি করে এগনো উচিত: ক) মানব (স্বাস্থ্য ও শিক্ষার মাধ্যমে) ও ভৌত পুঁজির বৃদ্ধি প্রাকৃতিক পুঁজির মূল্যে আসা উচিত নয়: অনুসরণ করা উচিত বিশ্বব্যাপী সর্বোত্তম সেই সব অনুশীলন যা এই তিন ধরনের পুঁজির সহাবস্থান ও বৃদ্ধি নিশ্চিত করতে পারে; এবং খ) আরও সমতাপূর্ণ ভারত গড়ার লক্ষ্যে বণ্টনের ক্ষেত্রে ন্যায়বিচার ও বৈষম্য হ্রাসের মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদি অর্থনৈতিক বৃদ্ধি ত্বরান্বিত করা:‌ এক্ষেত্রে ভারত ও গ্লোবাল সাউথের জন্য অনুসরণযোগ্য দৃষ্টান্ত হল যুক্তরাজ্য ও নর্ডিক অর্থনীতিগুলির কল্যাণমূলক রাষ্ট্র। দুর্ভাগ্যবশত, কেন্দ্রীয় বাজেট এই ধারণাই তৈরি করে যে নর্থ ব্লকে এই ধরনের চিন্তাভাবনা এখনও স্বীকৃত হয়নি।

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.