Author : Manoj Joshi

Expert Speak Raisina Debates
Published on Sep 16, 2022 Updated 23 Hours ago

সাম্প্রতিক সময়ে জার্মানি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রগুলিতে চিনের উপরে নির্ভরতা হ্রাস করার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।

ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে জার্মানি নিজের জমি শক্ত করছে
ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে জার্মানি নিজের জমি শক্ত করছে

অবজার্ভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের পৃষ্ঠপোষকতায় আগস্ট মাসের মাঝামাঝি নয়াদিল্লিতে সফররত জার্মান পার্লামেন্টের সদস্যদের একটি দলের সঙ্গে কথোপকথনে এ কথা স্পষ্ট হয়েছে যে, প্রধানত ইউক্রেন সংক্রান্ত ঘটনাপ্রবাহের পর জার্মানি তার পথ পরিবর্তন করেছে। পার্লামেন্টের সদস্যরা ইউরোপ এবং ইন্দো-প্যাসিফিক উভয় ক্ষেত্রেই একটি অভিন্ন জার্মান নীতি প্রণয়নের মাধ্যমে সমগ্র রাজনৈতিক পরিসরে বৃহত্তর সচেতনতা গড়ে তোলার কথা বলেন। এখন শুধু সিদ্ধান্ত মেনে চলার অপেক্ষা। এই প্রক্রিয়ার সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হল ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের উপর মনোযোগ দেওয়া এবং জার্মানিকে তার ব্যাপক চিনা প্রতিশ্রুতির ঝুঁকি থেকে মুক্ত করা। এ ক্ষেত্রে ভারত জার্মান বিনিয়োগ এবং প্রযুক্তির এক বিকল্প গন্তব্য হয়ে ওঠার নিরিখে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।

এই আলোচনার অন্য যে বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ বলে প্রমাণিত হয়, সেটি হল ইতিবাচক পদক্ষেপ গ্রহণের সঙ্গে সঙ্গে দেশটির অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক চাপানউতোরের বাস্তবতা। এস ডি পি এবং গ্রিনস-এর মতো দলগুলি তাদের রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করতে বাধ্য হয়েছে এবং গ্রিনস নাটকীয় ভাবে মার্কিনবাদ বিরোধী থেকে পুতিনবাদ বিরোধী হয়ে উঠেছে। ইউক্রেনের প্রয়োজনের নিরিখে জার্মানির কিছুটা বিলম্বিত প্রতিক্রিয়া দেশের অভ্যন্তরীণ বিতর্কের অব্যাহত ধারাকেই প্রতিফলিত করে।

জার্মান বিমানবাহিনীর প্রধান ইঙ্গো গেরহার্তজ এ কথা স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে, ইন্দো-প্যাসিফিক পরিদর্শনকারী বিমানটি দক্ষিণ চিন সাগরের উপর দিয়ে যাত্রা করলেও সেটি অসামরিক এয়ার ট্রাফিক রুট ব্যবহার করবে।

সম্প্রতি এক্সারসাইজ র‍্যাপিড প্যাসিফিক ২০২২ কর্মসূচির অংশ রূপে দক্ষিণ জার্মানির ন্যুবার্গ অন দের দোনাউ বিমানঘাঁটি থেকে ছ’টি ইউরোফাইটার এবং কোলন থেকে তিনটি এ৩৩০ ট্যাঙ্কার যাত্রা শুরু করে এবং সরাসরি প্রত্যক্ষ একক উড়ানে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সিঙ্গাপুরে পৌঁছয়। এর আগে চারটি জার্মান এ ৪০০ এম পরিবহণ বিমান অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিত এক্সারসাইজ পিচ ব্ল্যাক-এ অন্য ১৬টি দেশের সঙ্গে যোগ দেওয়ার জন্য রওনা হয়। এই জার্মান বাহিনী এর পর জাপান এবং দক্ষিণ কোরিয়াতেও যাত্রা করবে। ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে এখনও পর্যন্ত এটি জার্মানির বৃহত্তম পিস টাইম ডিপ্লয়মেন্ট বা সেনা মোতায়েন। এর আগে দক্ষিণ চিন সাগরে গত বছর জার্মান যুদ্ধ জাহাজ মোতায়েন করা হয়েছিল, যেটি ছিল বিগত প্রায় ২০ বছরের মধ্যে সর্বপ্রথম।

উভয় পদক্ষেপেরই প্রধান উদ্দেশ্য হল ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে চিনের আগ্রাসন নিয়ন্ত্রণ করার জন্য আমেরিকার নেতৃত্বাধীন জোটে অংশগ্রহণ করার জার্মান সিদ্ধান্তের বাস্তবায়ন। জার্মান বিমানবাহিনীর প্রধান ইঙ্গো গেরহার্তজ এ কথা স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে, ইন্দো-প্যাসিফিক পরিদর্শনকারী বিমানটি দক্ষিণ চিন সাগরের উপর দিয়ে যাত্রা করলেও সেটি অসামরিক এয়ার ট্রাফিক রুট ব্যবহার করবে। তিনি আরও বলেন যে, সংশ্লিষ্ট মিশনটির উদ্দেশ্য হল অঞ্চলস্থিত জার্মানির অংশীদার দেশগুলির কাছে সংহতির বার্তা দেওয়া এবং তাদের উপস্থিতিকে কোনও দেশের জন্য কোনও রকমের দুশ্চিন্তার কারণ হিসেবে যেন না দেখা হয়।

জার্মানির নীতি পরিবর্তন

এই ঘটনাপ্রবাহ জার্মানির গতিমুখের বড় রকম পরিবর্তনের প্রকাশ। এই পরিবর্তনে নেতৃত্ব দিয়েছে অ্যাঞ্জেলা মার্কেল পরিচালিত ক্ষমতাসীন সোশ্যাল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি, যেটি শান্তিবাদের পক্ষপাতী এবং ইতিপূর্বে রাশিয়ার সঙ্গে পুনরায় সমন্বয়সাধন ও চিনের উপরে অতিরিক্ত অর্থনৈতিক নির্ভরতা সংক্রান্ত নীতি প্রণয়ন করেছে।

জার্মান-চিন অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব সুবিপুল। জার্মান রফতানির পরিমাণ দিন প্রতি ৬০০ মিলিয়ন ইউরো এবং চিনা রফতানির পরিমাণ দিন প্রতি ১.৩ বিলিয়ন ইউরোর সমতুল্য। চিনে জার্মান এফ ডি আই-এর পরিমাণ প্রায় ১০০ বিলিয়ন ইউরো। তৎকালীন জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মার্কেলের প্রভাবে চিনের সঙ্গে সম্পর্ক গভীরতর হয় এবং ইউরোপীয়রা বিনিয়োগ সংক্রান্ত একটি সর্বাত্মক চুক্তির বিষয়ে নীতিগত ভাবে মতৈক্যে পৌঁছয়। কিন্তু জিনজিয়াং প্রশ্নে ই ইউ-এর অবস্থানকে কেন্দ্র করে ক্রমবর্ধমান চাপানউতোর এই চুক্তিকে স্থগিত রেখেছে।

২০১৯ সালে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন কর্তৃক চিনকে ‘পদ্ধতিগত প্রতিদ্বন্দ্বী’ রূপে চিহ্নিত করার ঘটনা এবং হংকং ও জিনজিয়াংয়ের প্রেক্ষিতে মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য বেজিংয়ের সমালোচনা পরিবর্তনের পূর্বাভাস দিয়েছিল। ২০২০ সালে জার্মানি তার ইন্দো-প্যাসিফিক নীতি ঘোষণা করে, যেটির অন্যতম প্রধান লক্ষ্য ছিল চিন থেকে সরে এসে জাপান, আসিয়ান এবং অস্ট্রেলিয়ার মতো অঞ্চলস্থিত অন্য দেশগুলির সঙ্গে চুক্তি সাধনের মাধ্যমে জার্মান অংশীদারিত্বে বৈচিত্র্যের সূচনা ঘটানো।

মে মাসে ওয়ার্ল্ড ইকনমিক ফোরামে বক্তব্য রাখার সময়ে মার্কেলের উত্তরসূরি জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ স্কোলৎজ রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমণের নিন্দা করেন এবং দূষণমুক্ত শক্তিসম্পন্ন ভবিষ্যতের জন্য গৃহীত উদ্যোগ ত্বরান্বিত করার উপরে জোর দেন।

২০২১ সালের আগস্ট মাসে জার্মান নৌবাহিনী ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে বেয়ার্ন নামক ফ্রিগেট মোতায়েন করে। এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলে ফ্রান্স বা ব্রিটেনের (ইউ কে) মতো কোনও ভূখণ্ডগত অধিকার নেই জার্মানির। তা ছাড়া জার্মান নৌবাহিনী আকারে ছোট এবং তারা প্রধানত বাল্টিক সাগরের মধ্যেই নিজেদের কার্যকলাপ সীমাবদ্ধ রাখতে আগ্রহী। বর্তমানে এই প্রথম বারের জন্য তারা ভূমধ্যসাগর হয়ে ইন্দো-প্যাসিফিক পর্যন্ত বিস্তৃত সামুদ্রিক বাণিজ্যপথে তাদের অংশীদারিত্বের আওতাভুক্ত অঞ্চলের সুরক্ষা সুনিশ্চিত করতে তৎপর হয়েছে।

কিন্তু রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমণ এবং হংকংয়ে চিনের কার্যকলাপ প্রচলিত বিন্যাসের পরিবর্তন ঘটিয়েছে। মে মাসে ওয়ার্ল্ড ইকনমিক ফোরামে বক্তব্য রাখার সময়ে মার্কেলের উত্তরসূরি জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ স্কোলৎজ রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমণের নিন্দা করেন এবং দূষণমুক্ত শক্তিসম্পন্ন ভবিষ্যতের জন্য গৃহীত উদ্যোগ ত্বরান্বিত করার উপরে জোর দেন। চিন প্রসঙ্গে তিনি বলেন যে, দেশটিকে একঘরে করার প্রয়োজন নেই, তবে তার পাশাপাশি ‘এশিয়া এবং এশিয়ার সীমার বাইরে চিনা আধিপত্যের দাবি’র কাছে নত হওয়ারও কোনও প্রয়োজন নেই।

সাম্প্রতিক সময়ে জার্মানি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রগুলিতে চিনের উপরে নির্ভরতা হ্রাস করার চেষ্টা চালাচ্ছে। রুশ আগ্রাসনের সম্মুখীন হয়ে ইউরোপীয় দেশগুলি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে  একজোট হয়েছে। নিরাপত্তার নিরিখে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উপর তাদের নির্ভরশীলতার কথা মাথায় রেখে ইউরোপীয়রা বর্তমানে তাদের প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত ব্যয় ব্যাপক ভাবে বৃদ্ধি করেছে এবং একই সঙ্গে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে আমেরিকার নেতৃত্বাধীন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেছে। এমনকি ইউক্রেন যুদ্ধের আগেও স্কোলৎজ-চালিত জোট এ কথা স্পষ্ট করে দিয়েছিল যে, তারা অস্ট্রেলিয়া, জাপান, নিউজিল্যান্ড এবং দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে অংশীদারিত্ব বৃদ্ধি করতে চায়।

জাপান-জার্মানি সম্পর্ক এবং ইন্দো-প্যাসিফিক

ইউক্রেনে আক্রমণের ঘটনার পর থেকে জাপান এবং জার্মানি উভয়েই তাদের নীতিতে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন ঘটিয়েছে। জার্মানি আগামী চার বছর ব্যাপী অতিরিক্ত ১০০ বিলিয়ন ইউরো ব্যয় করে একটি বৃহত্তর পুনরস্ত্রীকরণ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে, যা বার্লিনকে সামরিক খাতে তার মোট জি ডি পি-র ২% খরচ করার ন্যাটো নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সাহায্য করবে। কোলন-স্থিত একটি থিঙ্ক ট্যাঙ্ক জানিয়েছে যে, জার্মানি বর্তমানে তার জি ডি পি-র ২% প্রতিরক্ষা খাতে বিনিয়োগ করার প্রতিশ্রুতি পালনে ব্যর্থ হতে পারে।

অধিক সংখ্যক ইউরোপীয় দেশের অঞ্চলটির সঙ্গে যুক্ত থাকা এবং জাপানের মতো গুরুত্বপূর্ণ মিত্র দেশের সঙ্গে সংহতি আন্তর্জাতিক ক্রমে স্থিতিশীলতা বজায় রাখার মার্কিন কৌশলের অনুকূল।

সামরিক খাতে খরচ বৃদ্ধি করার জাপানি সিদ্ধান্ত ইউক্রেনের ঘটনাপ্রবাহের তুলনায় চিনের কার্যকলাপ দ্বারা অধিকতর প্রভাবিত। ২০২১ সালের নভেম্বর মাসে জাপান ঘোষণা করে যে, সে তার প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত খরচ দ্বিগুণ করে জি ডি পি-র ২ শতাংশের সমান করবে। এমনটা বাস্তবে হলে জাপান ভারতকে অতিক্রম করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চিনের পর পৃথিবীর তৃতীয় বৃহত্তম প্রতিরক্ষা বিনিয়োগকারী হয়ে উঠবে।

এর পাশাপাশি, জাপান এবং জার্মানি নিজেদের মধ্যে সম্পর্ক সুদৃঢ় করার জন্য ইতিবাচক পদক্ষেপ গ্রহণে তৎপর হয়েছে। এই প্রসঙ্গে একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা হল ২০২১ সালে দু’দেশের প্রতিরক্ষা ও বিদেশ মন্ত্রীদের উপস্থিতিতে সর্বপ্রথম ‘২+২’ ডায়লগ। জার্মানি আলোচনার ক্ষেত্রটিকে প্রশস্ত করে এটিকে একটি শীর্ষ সম্মেলনের রূপ দিতে ইচ্ছুক, যেখানে উভয় দেশের সরকারের প্রধানরা উপস্থিত থাকবেন। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে জাপানের অন্য ইন্দো-প্যাসিফিক সংক্রান্ত সমস্যাগুলি অধিক গুরুত্বপূর্ণ। জাপান এ কথা স্পষ্ট করে দিয়েছে যে, তাইওয়ানের উপর যে কোনও ধরনের চিনা হামলাকে জরুরি অবস্থা বলে বিবেচনা করা হবে এবং তা জাপানি প্রতিক্রিয়াকে উস্কে দেবে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই পরিবর্তনকে স্বাগত জানিয়েছে। কারণ দেশটি চিনের সঙ্গে একটি কৌশলগত প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জড়িয়ে পড়েছে এবং তার মতে এই প্রতিদ্বন্দ্বিতার কেন্দ্রবিন্দু হল ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল। অধিক সংখ্যক ইউরোপীয় দেশের অঞ্চলটির সঙ্গে যুক্ত থাকা এবং জাপানের মতো গুরুত্বপূর্ণ মিত্র দেশের সঙ্গে সংহতি আন্তর্জাতিক ক্রমে স্থিতিশীলতা বজায় রাখার মার্কিন কৌশলের অনুকূল।

প্রসঙ্গত, প্রাক্তন আর অ্যান্ড এ ডব্লিউ অফিসার এবং লেখক ভাপ্পালা রামচন্দ্রন ‘দ্য ট্রিবিউন’-এ লেখা একটি নিবন্ধে বিংশ শতাব্দীর গোড়ার দিকের জার্মান পণ্ডিত কার্ল হাওশোফার-কে ইন্দো-প্যাসিফিক ধারণা প্রবর্তন করার কৃতিত্ব দেন। হাওশোফার সামরিক অ্যাটাশে রূপে জাপানে কর্মরত ছিলেন এবং ১৯২৪ সালে লেখা একটি প্রতিবেদনে তিনি ইন্দো-প্যাসিফিককে ‘রাজনৈতিক সচেতনতার জন্য প্রস্তুত একটি সংগঠিত এবং অবিচ্ছেদ্য ক্ষেত্র’ বলে অভিহিত করেন। এই ঘোষণা ১৯৪০-এর চুক্তির ভিত্তি রূপে কাজ করে, যা জাপানকে জার্মানি ও ইতালির সঙ্গে সংযুক্ত করে এবং ৭০ ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমাংশ বরাবর নিজেদের প্রভাবাধীন ক্ষেত্রগুলিকে চিহ্নিত করে ভারতকে জাপান প্রভাবিত অঞ্চলের অন্তর্ভুক্ত করে।

মতামত লেখকের নিজস্ব।

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.