Author : Aarthi Ratnam

Expert Speak Young Voices
Published on Oct 14, 2022 Updated 8 Days ago

অভিবাসীরা শ্রমিকের সংখ্যা হ্রাসের কুপ্রভাব কমানোর ক্ষেত্রে একটি মূলগত সমাধান হতে পারেন, এবং জি২০ দেশগুলির জন্য দীর্ঘমেয়াদি লাভে অবদান রাখতে পারেন।

‌জি২০ দেশ: অভিবাসীরা কীভাবে অর্থনৈতিক বৃদ্ধিতে সহায়তা করতে পারেন
‌জি২০ দেশ: অভিবাসীরা কীভাবে অর্থনৈতিক বৃদ্ধিতে সহায়তা করতে পারেন

বৃদ্ধদের ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা, উর্বরতা হার হ্রাস এবং আয়ুবৃদ্ধির কারণে বিশ্বজুড়ে উন্নত দেশগুলি, বিশেষ করে জি২০ অর্থনীতিগুলি, বড় জনসংখ্যাগত পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। বিষয়টি সরকারি ব্যয়ের উপর চাপ সৃষ্টি করছে, বিশেষত যখন দেশগুলি কোভিড–১৯ অতিমারি থেকে অর্থনৈতিকভাবে পুনরুজ্জীবনের চেষ্টা করছে। এই ‌প্রেক্ষাপটে সরকারগুলিকে অভিবাসীদের, বিশেষ করে যাঁরা শ্রমের উদ্দেশ্যে অভিবাসন বেছে নিয়েছেন তাঁদের স্বাগত জানানোর সুযোগের কী মূল্য দিতে হবে তা বিবেচনা করা উচিত, কারণ তাঁরা ইতিবাচক আর্থিক সুবিধা প্রদান করেন। যদিও অভিবাসীরা অর্থনৈতিক পুনরুজ্জীবনের একমাত্র সমাধান নাও হতে পারেন, তাঁরা ক্ষয়িষ্ণু শ্রমশক্তির প্রভাব প্রশমিত করতে, আর্থিক স্থায়িত্ব উন্নত করতে এবং জনসংখ্যার অনুপাতের ভারসাম্য বজায় রাখতে অবদান রাখতে পারেন।

জি২০ জনসংখ্যাগত দৃশ্যপট নিয়ে সমস্যা

বিশ্বের বয়স্ক জনসংখ্যার ৭০ শতাংশেরও বেশি আছেন জি২০ দেশগুলিতে। [] ২০১৯ সালের হিসাব অনুযায়ী বয়স্ক জনসংখ্যা (‌অর্থাৎ ৬৫ বা তার বেশি)‌ ছিল ৫০১ মিলিয়ন, যা ২০৫০ সালের মধ্যে ১ বিলিয়ন বা বিশ্বের জনসংখ্যার ২১ শতাংশ হয়ে যাবে। জি২০ দেশগুলির ক্ষেত্রে বিশেষভাবে মনে করা হচ্ছে যে তাদের জনসংখ্যার ১০ শতাংশ হবেন বয়স্ক মানুষেরা। একই সময়ের মধ্যে এটাও প্রত্যাশিত যে উচ্চ উর্বরতা থেকে নিম্ন উর্বরতার হারে স্থানান্তর ঘটবে। ১৯৫৫ সালের ৪.৯ হার থেকে আনুমানিক হিসাব হল ২০৫০ সালের মধ্যে প্রজনন হার কমে ২.৩ হবে। জনসংখ্যাগত বোঝা আরও বাড়ছে আয়ু বাড়ার কারণে:‌ ১৯৫৫ সালের ৪৬.৯ বছর থেকে ২০৫০ সালের মধ্যে তা ৭৬.৯ বছরে বৃদ্ধি পাবে বলে ধরা হয়েছে। এই সমস্ত কিছু মাথায় রেখে ২০১৫ থেকে ২০৫০ সালের মধ্যে গড় বয়স ৩২.৯ থেকে বেড়ে ৪২.৪ বছর হবে বলে অনুমান করা হচ্ছে। এই জনসংখ্যাগত পরিবর্তনের পরিণতিতে অর্থনৈতিক পুনরুজ্জীবনের গতি কমে যেতে পারে।

এই ‌প্রেক্ষাপটে সরকারগুলিকে অভিবাসীদের, বিশেষ করে যাঁরা শ্রমের উদ্দেশ্যে অভিবাসন বেছে নিয়েছেন তাঁদের স্বাগত জানানোর সুযোগের কী মূল্য দিতে হবে তা বিবেচনা করা উচিত, কারণ তাঁরা ইতিবাচক আর্থিক সুবিধা প্রদান করেন।

প্রাথমিকভাবে জি ডি পি–র একটি অংশ হিসাবে বয়স–সম্পর্কিত কর্মসূচিতে সরকারের ব্যয় বৃদ্ধি পাবে। উন্নত দেশগুলির ব্যয় ২০১৫ সালের ১৬.৪ শতাংশ থেকে বেড়ে ২০৫০ সালের মধ্যে ২১.৪ শতাংশে পৌঁছবে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে৷ স্বল্প উন্নত দেশগুলি, যারা ব্যয় বাড়াতে পারে না, তারা অপরিশোধ্য সরকারি ঋণের সম্মুখীন হবে৷ এর ফলে পরিকাঠামো বা শিক্ষার মতো অন্য ব্যয়গুলিতে তীব্র হ্রাসের প্রয়োজন হবে। অথবা এর ফলে করের পরিমাণ বৃদ্ধি পেতে পারে, যা সরকারগুলির জন্য তাদের ঋণ কমানো আরও কঠিন করে তুলবে। এইভাবে বৃদ্ধ হতে থাকা ও নিম্ন–উর্বরতা হারসম্পন্ন জনসংখ্যার অর্থনৈতিক চাপ অতিমারি থেকে পুনরুজ্জীবনে পৌঁছতে চাওয়া দেশগুলির জন্য একটি বাধা হয়ে দাঁড়াবে। অভিবাসীরা এই চাপের উপশমে একটি মুখ্য সমাধান হতে পারেন, এবং জি২০ দেশগুলির দীর্ঘমেয়াদি লাভে অবদান রাখতে পারেন।

সুযোগ হিসাবে অভিবাসীরা

উপরের চিত্র থেকে দেখা যায় যে অতিমারির কারণে জি২০ দেশগুলি বিশ্বব্যাপী অভিবাসন শাসনের কেন্দ্রে রয়েছে। ২০২০ সালের মাঝামাঝি পর্যন্ত হিসাবে বিশ্বব্যাপী অভিবাসীর সংখ্যা ধরা হচ্ছে ২৮১ মিলিয়ন, এবং তাঁদের মধ্যে ৬৪ শতাংশ জি২০ দেশগুলিতে বসবাস করছিলেন। এই বিপুল সংখ্যার পরিপ্রেক্ষিতে স্থানীয়দের মজুরি ও কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে অভিবাসনের বিরূপ অর্থনৈতিক প্রভাব সম্পর্কে উদ্বেগ রয়েছে। যাই হোক, অভিবাসনের অর্থনৈতিক প্রভাব প্রায়ই ছাপিয়ে যায় এর মানবিক বর্ণন। একটি অর্থনৈতিক দৃষ্টিকোণের মাধ্যমে এই ধরনধারণগুলি বিশ্লেষণ করা হলে তা অংশীদারদের একটি কার্যকর ও বাস্তবসম্মত প্রতিক্রিয়া শনাক্ত করার পথ করে দেবে।

অভিবাসীদের বড় সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ (৮৬.৫ শতাংশ) পড়েন কর্মজীবী বয়স–গোষ্ঠীর, অর্থাৎ ২৫–৬৪ বছরের, মধ্যে। তবে অভিবাসন বিভাগগুলির মধ্যে শুধু শ্রমসক্ষম অভিবাসীদের অর্থনৈতিকভাবে ক্রিয়াশীল হিসাবে ধরা হয়। একটি স্বেচ্ছাসেবী আন্দোলন হিসাবে বিবেচিত হওয়া সত্ত্বেও সাম্প্রতিক ঘটনাগুলি দেখায় যে বাহ্যিক কারণগুলি অর্থনৈতিক অভিবাসী ও মানবিকতার মধ্যে লাইনগুলিকে অস্পষ্ট করে দেয়। মূল পার্থক্য হল শ্রম–অভিবাসীরা মানবিক অভিবাসীদের বিপরীতে বৃহত্তর আর্থিক অবদান রাখেন। শ্রম–অভিবাসীদের নেট আর্থিক অবদান শুধুই ইতিবাচক হয় যতক্ষণ তাঁরা ৪৯ বছরের কম বয়সী। বিপরীতে, শরণার্থীদের নেট আর্থিক অবদান নেতিবাচক। যদিও অভিবাসীদের আর্থিক অনুপাত স্থানীয় কর্মসক্ষম বয়সের ব্যক্তিদের তুলনায় কম, তবে তা বয়স্ক জনসংখ্যার সমান বা বেশি। এইভাবে জি২০–র অর্থনৈতিক পুনরুজ্জীবন সমস্যার সমাধান হিসাবে দেখার প্রশ্নে অভিবাসীদের পক্ষে একটি ভাল যুক্তি আছে, এবং তা প্রাথমিকভাবে শ্রম–অভিবাসীদের অন্তর্ভুক্ত করে, যাঁরা প্রয়োজনীয় দক্ষতা নিয়ে আসেন এবং আয়োজক দেশের মানব পুঁজির ভান্ডারে পরিপূরক হয়ে উঠতে পারেন।

এই কাজগুলির জন্য কম মজুরিতে অভিবাসীদের নিয়োগ করা দেশীয় সংস্থাগুলিকে শ্রম খরচ কমাতে সক্ষম করে, এবং স্থানীয়দের জন্য এমন নতুন কাজের সুযোগ তৈরি করে যার জন্য আরও বেশি দক্ষতার প্রয়োজন হয় এবং বেশি বেতন দেওয়া হয়।

প্রায় ৬৬.২ শতাংশ শ্রম–অভিবাসী পরিষেবা ক্ষেত্রে কেন্দ্রীভূত, আর ২৬.৭ শতাংশ শিল্পে এবং ৭.১ শতাংশ কৃষিতে। এই ক্ষেত্রগুলির প্রয়োজন মৌলিক দক্ষতা, যা অভিবাসীদের আছে। এই কাজগুলির জন্য কম মজুরিতে অভিবাসীদের নিয়োগ করা দেশীয় সংস্থাগুলিকে শ্রম খরচ কমাতে সক্ষম করে, এবং স্থানীয়দের জন্য এমন নতুন কাজের সুযোগ তৈরি করে যার জন্য আরও বেশি দক্ষতার প্রয়োজন হয় এবং বেশি বেতনও দেওয়া হয়। এই ক্রাউডিং–আউট এফেক্ট দীর্ঘমেয়াদি স্থিতিশীল অর্থনৈতিক লাভের দিকে নিয়ে যেতে পারে। যাই হোক, অর্থনীতিতে অভিবাসীদের অংশগ্রহণের সুবিধা শুধুমাত্র কর্মশক্তির অংশগ্রহণে সীমাবদ্ধ নয়। জি২০ দেশগুলো আয়ের একটি বড় উৎস হিসেবে আন্তঃসীমান্ত রেমিট্যান্স (‌অর্থ প্রেরণ)‌ প্রবাহে অভিবাসীদের অংশগ্রহণকে স্বীকৃতি দেয়।

জি২০–র সৌদি আরব সম্মেলনের সময় সদস্যরা রেমিট্যান্সকে দারিদ্র্য দূরীকরণ, অর্থনৈতিক পরিকাঠামোর উন্নতি এবং ডিজিটাল আর্থিক অন্তর্ভুক্তির জন্য একটি অবিচ্ছেদ্য উপকরণ হিসাবে বিবেচনা করেছেন। আশ্রয়দাতা দেশগুলির জন্য এটি চলতি খাতের (‌কারেন্ট অ্যাকাউন্ট)‌ আকস্মিক পতন রোধ করতে, ক্রেডিট রেটিং উন্নত করতে এবং নতুন বিনিয়োগের প্রবাহকে সহজতর করতে সহায়তা করতে পারে । নজিরবিহীন সংকটের সময়ে অভিবাসীদের আনা রেমিট্যান্স বাণিজ্য ঘাটতিতে না–গিয়ে আশ্রয়দাতা দেশগুলির জন্য অর্থপ্রবাহের একটি মূল উৎস হয়ে ওঠে। এখানে একথা উল্লেখ করা গুরুত্বপূর্ণ যে অভিবাসীরা অর্থনৈতিক পুনরুজ্জীবনের একমাত্র উত্তর নয়। পরিবর্তে, তাঁদের প্রচেষ্টা এবং বৈশিষ্ট্যগুলি স্থানীয় জনগণের তৈরি করা শূন্যস্থান পূরণ করে চলতি উন্নয়ন পরিকল্পনার পরিপূরক হতে পারে। অর্থাৎ অভিবাসনকে কীভাবে দেখা হবে তার একটি বিকল্প অর্থনীতিভিত্তিক উপায় আছে, যেটি নিরাপত্তা এবং মানবিক উদ্বেগের উপর নির্ভর করে না, বরং আশ্রয়দাতা দেশগুলির টেকসই পুনর্গঠনে সহায়তা করে।

জি২০–র সৌদি আরব সম্মেলনের সময় সদস্যরা রেমিট্যান্সকে দারিদ্র্য দূরীকরণ, অর্থনৈতিক পরিকাঠামোর উন্নতি এবং ডিজিটাল আর্থিক অন্তর্ভুক্তির জন্য একটি অবিচ্ছেদ্য উপকরণ হিসাবে বিবেচনা করেছেন।

উপসংহার

জি২০–র অর্থনৈতিক পুনরুজ্জীবনের সমাধান হিসাবে অভিবাসীদের বিবেচনা করার বিষয়টি এমন একটি সময়ে সামনে এসেছে যখন এই দেশগুলি জনসংখ্যাগত পরিবর্তনের সম্মুখীন হচ্ছে। বর্তমান অতিমারি–উত্তর পুনরুজ্জীবনের পর্যায়টিতে বড় আকারের বয়স্ক জনসংখ্যার কারণে স্থানীয়ভাবে শ্রমবাজারের ঘাটতি মেটানো যাচ্ছে না। এই কারণে অভিবাসীদের, বিশেষ করে শ্রম–অভিবাসীদের, একটি অনুকূল আর্থিক জায়গা রয়েছে। তাঁরা প্রয়োজনীয় দক্ষতার অধিকারী কর্মক্ষম বয়সের জনসংখ্যার অন্তর্গত, যাঁদের একটি ইতিবাচক প্রভাব রয়েছে। এইভাবে, লক্ষ্য হল একটি সমজাতীয় শ্রম বাজারে আংশিক ভারসাম্য–পরিবর্তনের কারণ হিসাবে তাঁদের বিষয়টির বিশ্লেষণ করার পরিবর্তে একটি সাধারণ ভারসাম্য কাঠামোর মধ্যে মিশ্র ধরনের শ্রম সরবরাহে তাঁদের ক্ষমতা বিবেচনা করা। জি২০–র জনসংখ্যাগত পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে অভিবাসীরা অর্থনৈতিক বৃদ্ধির প্রতিশ্রুতি নিয়ে এসেছেন।

মতামত লেখকের নিজস্ব।

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.