Published on Mar 23, 2023 Updated 0 Hours ago

ভারতের সাংবিধানিক প্রতিশ্রুতি এবং অনুশীলনের অনবদ্য আখ্যান থেকে জি২০ সদস্য দেশগুলির এবং বিশ্বের অনেক কিছু শেখার আছে।

ভারতের সাংবিধানিক স্থিতিস্থাপকতা: জি২০ দেশগুলির জন্য শিক্ষা

ভারতের ৭৪তম প্রজাতন্ত্র দিবস সেই ঐতিহাসিক মুহূর্তটিকে চিহ্নিত করে, যখন ১৯৫০ সালের ২৬ জানুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে গৃহীত ভারতীয় সংবিধান ভারতকে একটি সার্বভৌম প্রজাতন্ত্র হিসাবে ঘোষণা করে। এ বছরটি শুধুমাত্র একটি বর্ণময় গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র হিসাবে তার সফরের ৭৪তম বর্ষপূর্তির জন্যই গুরুত্বপূর্ণ নয়, বরং একই সঙ্গে বিশ্বের সবচেয়ে উন্নত এবং উদীয়মান অর্থনীতিগুলির সমন্বয়ে গঠিত একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মঞ্চ জি২০-র সভাপতিত্ব গ্রহণের জন্যও উল্লেখযোগ্য। জি২০-তে ভারতের নেতৃস্থানীয় ভূমিকা নিঃসন্দেহে সমসাময়িক বৈশ্বিক রাজনীতিতে তার ক্রমবর্ধমান গুরুত্ব এবং প্রভাবের বহিঃপ্রকাশ। বিশ্বের কাছে তার সুবিশাল শক্তি, উল্লেখযোগ্য অর্জন এবং গণতান্ত্রিক স্থিতিস্থাপকতা প্রদর্শন করার এটি একটি উপযুক্ত মুহূর্ত।

সামাজিক, সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক এবং আঞ্চলিক জটিলতা ও বৈষম্যের আধিক্যের সঙ্গে পরিপূর্ণ একটি সামাজিক পরিসরে দেশ গঠনের পাহাড়প্রমাণ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার ক্ষমতার মধ্যেই ভারতের সাফল্যের কাহিনি নিহিত।

বহুমাত্রিক বৈচিত্র্যের সঙ্গে বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্র হিসাবে ভারতের অগ্রগতি একটি অত্যন্ত আকর্ষক এবং অসামান্য কাহিনি তুলে ধরে, যা ভালভাবে নথিভুক্ত, পর্যাপ্তভাবে আলোচিত এবং চর্চার একটি সমৃদ্ধ ঘরানার অন্তর্ভুক্ত। সামাজিক, সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক এবং আঞ্চলিক জটিলতা ও বৈষম্যের আধিক্যের সঙ্গে পরিপূর্ণ একটি সামাজিক পরিসরে দেশগঠনের পাহাড়প্রমাণ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার ক্ষমতার মধ্যেই ভারতের সাফল্যের কাহিনি নিহিত। এই ক্ষেত্রে ভারতীয় সংবিধান একটি অপরিহার্য ও অনন্য উপস্থাপনা, যা গত সাত দশকে ভারতীয় জাতি-রাষ্ট্রের জন্য একটি আলোকবর্তিকা হিসাবে কাজ করেছে এবং বৈশ্বিক মঞ্চে একটি প্রধান গণতান্ত্রিক শক্তি হিসাবে দেশটিকে প্রতিষ্ঠা, স্থিতিশীলতা ও উন্নয়নের পথে চালিত করেছে। যদিও স্বাধীনতার পর থেকে সংবিধানের আকার এবং মূল ভাবের মধ্যে ভারতীয় রাজনীতির মিথস্ক্রিয়াগুলির একটি ব্যাপক এবং বৈচিত্র্যময় মাত্রা পরিলক্ষিত হয়েছে, যার সব ক’টি এই প্রতিবেদনের ক্ষুদ্র পরিসরে আলোচনা করা সম্ভব নয়। ভারতের সাংবিধানিক শক্তি এবং স্থিতিস্থাপকতার নিরিখে তিনটি উল্লেখযোগ্য দিক নিয়ে এখানে আলোচনা করা হয়েছে।

১. প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক সংহতি

ভারতীয় সংবিধানের খসড়া তৈরির সময় বিশ্বব্যাপী রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের উদ্বেগ প্রকাশ করার সঙ্গে সংবিধান প্রণেতারা সেই সময় নিরক্ষরতা এবং ব্যাপক দারিদ্র্যের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হন। এর মধ্যেও তাঁরা স্বাধীনতার পরপরই ভারতে বহুদলীয় গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক ব্যবস্থার পথ সুপ্রশস্ত করেছিলেন। সমস্ত সংশয় দূর করে ভারত একটি সাংবিধানিকভাবে অনুমোদিত স্বাধীন নির্বাচন কমিশনের অধীনে তুলনামূলকভাবে অবাধ ও সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক নির্বাচনের সফল অনুষ্ঠান প্রত্যক্ষ করেছে, যা তার গণতান্ত্রিক পরিচয়কেই সুসংহত করে। এমন একটি সময়ে যখন বেশিরভাগ উত্তর-ঔপনিবেশিক দেশ তীব্র রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার সঙ্গে লড়াই করছিল, তখন ভারতের  নিজস্ব প্রশাসনিক চ্যালেঞ্জগুলি অতিক্রম করে নির্বাচনী গণতন্ত্র গ্রহণ এবং ক্রমাগত অনুশীলন করার ক্ষমতা উন্নয়নশীল বিশ্বের গণতন্ত্রের ভবিষ্যতের জন্য আশার আলোকবর্তিকা হিসাবে কাজ করেছিল। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ভারত শুধুমাত্র যথেষ্ট আর্থ-সামাজিক উন্নয়নেরই সাক্ষী হয়নি, নাগরিকদের, বিশেষ করে যুবকদের রাজনৈতিক অংশগ্রহণও বহুগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। ভারতের জাতীয় ও  রাজ্য উভয় নির্বাচনেই ভোটারদের ভোটদান সময়ের সঙ্গে সঙ্গে চিত্তাকর্ষকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল, নারী ভোটারদের অংশগ্রহণ কয়েক বছর ধরে স্পষ্টতই বৃদ্ধি পেয়েছে এবং বর্তমানে তা পুরুষ ভোটারদের সমতুল্য হয়ে উঠেছে। ভারত একটি বহুদলীয় ব্যবস্থা গ্রহণের ফলে একটি অত্যন্ত প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচনী পরিসর তৈরি হয়েছে, যেখানে বহু রাজনৈতিক দল (বর্তমানে ২০০০টির বেশি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল আছে) বিভিন্ন নির্বাচনী এলাকার একাধিক স্বার্থের প্রতিনিধিত্বকারী হিসাবে আবির্ভূত হয়েছে। যাই হোক, ভারতের নির্বাচনী রাজনীতির জটিল এবং বহুমুখী বিন্যাসের সামনে যে কোনও চ্যালেঞ্জ নেই, এমন নয়। যেহেতু রাজনীতির মঞ্চ এবং গণজাগরণ নিরবচ্ছিন্নভাবে নতুন প্রতিযোগী আকাঙ্ক্ষা, প্রতিনিধিত্ব এবং পুনর্বণ্টনের দাবি নিয়ে দ্বন্দ্বের উত্থানের সঙ্গে উদ্ভূত ক্ষমতার টানাপড়েনের মোকাবিলা ও আলোচনা করে, তাই নির্বাচনী সংস্কার, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক রূপান্তর এবং বৃহত্তর দায়বদ্ধতামূলক ব্যবস্থারও প্রয়োজন রয়েছে।

সমস্ত সংশয়কে দূর করে ভারত একটি সাংবিধানিকভাবে অনুমোদিত স্বাধীন নির্বাচন কমিশনের অধীনে তুলনামূলকভাবে অবাধ ও সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক নির্বাচনের সফল অনুষ্ঠান প্রত্যক্ষ করেছে, যা তার গণতান্ত্রিক পরিচয়কেই সুসংহত করে।

২. দ্বন্দ্ব ব্যবস্থাপনা এবং দক্ষ প্রশাসন

দ্বিতীয়ত, ভারতীয় সংবিধান একটি যুক্তরাষ্ট্রীয় রাজনৈতিক ব্যবস্থা প্রদান করেছে, যেখানে কেন্দ্রের পাশাপাশি রাজ্য সরকারগুলির স্পষ্টভাবে ক্ষমতার স্বাধীন এক্তিয়ার রয়েছে। ১৯৪৭ সালের দেশভাগ এবং তার সঙ্গে সম্পর্কিত সামাজিক-রাজনৈতিক অস্থিরতা সংবিধান প্রণেতাদের একটি শক্তিশালী কেন্দ্রীয় সরকার তৈরি করতে বাধ্য করলেও, যে বিষয়গুলি আঞ্চলিক বা স্থানীয় স্তরে আরও ভালভাবে পরিচালিত হতে পারে, সেগুলি রাজ্যগুলির কাছে ন্যস্ত করা হয়েছে। ভারতের ভৌগোলিক এবং জনসংখ্যাগত ব্যাপ্তি এবং বৈচিত্র্যের কথা মাথায় রেখে, রাজ্যগুলিকে প্রাদেশিক স্তরে শাসন করার ক্ষমতা দেওয়া আঞ্চলিক স্বার্থগুলিকে আরও ভালভাবে উপস্থাপন করে এবং প্রশাসনিক ব্যবস্থাকে উন্নয়নের প্রয়োজনগুলির প্রতিক্রিয়ায় আরও কার্যকর হতে সক্ষম করে। এ ছাড়াও ১৯৯০-এর দশকের গোড়ার দিকে পরবর্তী সাংবিধানিক সংশোধনীগুলি গ্রামীণ এবং শহুরে উভয় ক্ষেত্রেই স্থানীয় স্বায়ত্তশাসনের তৃতীয় স্তরের নিরিখে যুক্তরাষ্ট্রীয় প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা প্রদান করে, যা তৃণমূলে রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের দিকে পরিচালিত করে এবং গণতন্ত্রকে আরও গভীর করে তোলে। এ ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্রীয় রাজনৈতিক ব্যবস্থা রাজনৈতিক সমঝোতার একটি কার্যকর উপকরণ হিসাবে কাজ করে। স্বাধীনতার পর দক্ষিণ ভারত এবং উত্তর  পূর্ব ভারতে উল্লেখযোগ্য বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলনগুলি শেষ পর্যন্ত জাতীয় সংহতির চেতনায় শান্তিপূর্ণভাবে সমাধান করা হয়েছিল। কারণ এই আন্দোলনগুলির অধিকাংশই ভারতীয় ইউনিয়নের মধ্যে পৃথক প্রদেশ তৈরির উদ্দেশ্যে সংঘটিত হয়েছিল, বেশিরভাগই ভাষার উপর ভিত্তি করে। সুতরাং সংবিধান দ্বারা প্রদত্ত রাজ্যগুলির সীমানা পুনর্নিধারণ করার নমনীয়তা ভারতকে কার্যকরভাবে আলোচনা করার এবং শেষ পর্যন্ত কিছু অত্যন্ত চরমপন্থী স্বায়ত্তশাসন আন্দোলন সমাধান করার ক্ষমতা জুগিয়েছে, যা স্বাধীনতার পর প্রাথমিক পর্যায়ে ভারতের ঐক্যকে বিপদের মুখে ফেলতে পারত। সেই সময়ে অন্যান্য কয়েকটি সদ্য-স্বাধীন দেশে ভাষাভিত্তিক বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলনগুলি দীর্ঘস্থায়ী গৃহযুদ্ধ এবং এমনকি আঞ্চলিক বলকানাইজেশনের দিকে পরিচালিত করেছিল। এর পাশাপাশি সামরিক অভিযান ছাড়াও ভারতের অন্তর্ভুক্তিমূলক মডেল, শান্তিপূর্ণ আলাপ-আলোচনা এবং বিভিন্ন আঞ্চলিক স্বার্থের ক্ষমতায়ন নিঃসন্দেহে ভারতের সাংবিধানিক স্থিতিস্থাপকতাকে সুদৃঢ় করেছিল। যাইহোক, যুক্তরাষ্ট্রীয় দ্বন্দ্ব এবং পক্ষপাতমূলক রাজনীতি ভারতের যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসনব্যবস্থাকে ক্ষতিগ্রস্ত করে, দীর্ঘমেয়াদি প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারের মাধ্যমে যার উপযুক্ত প্রতিকার প্রয়োজন।

ভারতীয় সংবিধান একটি যুক্তরাষ্ট্রীয় রাজনৈতিক ব্যবস্থা প্রদান করেছে, যেখানে কেন্দ্রের পাশাপাশি রাজ্য সরকারগুলির স্পষ্টভাবে ক্ষমতার স্বাধীন এক্তিয়ার রয়েছে।

৩. নাগরিকদের ক্ষমতায়নকে অগ্রাধিকার দেওয়া

তৃতীয় খণ্ডে ভারতীয় সংবিধান তার নাগরিকদের জন্য আইনগতভাবে প্রয়োগযোগ্য মৌলিক অধিকারের বিস্তৃত পরিসর প্রদান করেছে, যা যেকোনও গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। জীবন ও মর্যাদার অধিকারের মৌলিক নীতি; আইনের দৃষ্টিতে সমতা; অন্যায্য বৈষম্য দূরীকরণ; অবাধ মেলামেশা করার অধিকার এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতা শুধুমাত্র আইনগতভাবে প্রয়োগযোগ্য অধিকারের শাসনই তৈরি করেনি, যা নাগরিকদের বেআইনি দখল ও বাড়াবাড়ি থেকে রক্ষা করে, বরং এটি ধীরে ধীরে জনসচেতনতা গঠন এবং নাগরিক ও গণতান্ত্রিক অধিকার সম্পর্কে জনসাধারণের আলোচনাকে সহজতর করে তুলেছে। এর ফলে ব্যক্তিস্বাধীনতা এবং মানুষের কাছে গণতান্ত্রিক রাজনীতি দ্বারা প্রদত্ত রাজনৈতিক দায়বদ্ধতার পথ সম্পর্কে নাগরিকদের সচেতনতা বৃদ্ধি পেয়েছে। দীর্ঘমেয়াদে নাগরিকদের অধিকারকে শক্তিশালী করার জন্য এই ধরনের একটি অনুকূল পরিবেশ স্বায়ত্তশাসিত নাগরিক সমাজ মঞ্চ এবং স্বার্থ ও চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীগুলির বৃদ্ধি এবং রাজনৈতিক অভিজাতদের কাছে সংবেদনশীল প্রশাসনের দাবি তুলে ধরার পথ প্রশস্ত করেছে, যা অনেক সময় বড় সংস্কারের দিকে পরিচালিত করে। আর একটি সাংবিধানিক উদ্ভাবন হল ভারতীয় সংবিধানের চতুর্থ খণ্ডে অন্তর্ভুক্ত রাজ্য নীতির নির্দেশিকা নীতি (ডিপিএসপি)। ডিপিএসপি-র সাংবিধানিক আদেশ নাগরিকদের জন্য ভারতীয় রাষ্ট্রের কর্তব্যকে চিহ্নিত করে দিয়েছে। তার নাগরিকদের মৌলিক মর্যাদার জীবন প্রদান করার জন্য জীবিকার পর্যাপ্ত উপায়, সুষম উন্নয়ন ও সম্পদের বণ্টন, শিশু, মহিলা, দুর্বল ও অরক্ষিত অংশগুলির জন্য বিশেষ সুরক্ষা, যথাযথ স্বাস্থ্য পরিষেবা এবং অন্যান্য ধরনের সহায়তা সুনিশ্চিত করার জন্য এটিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আইনগতভাবে প্রয়োগযোগ্য না হলেও সংবিধানের এই বিধানগুলি ভারতের জন্য – কেন্দ্র ও রাজ্য উভয় স্তরে – গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি এবং প্রেরণা প্রদান করে, যাতে একগুচ্ছ কল্যাণমূলক ব্যবস্থা, মৌলিক ব্যক্তিগত পণ্যগুলির লভ্যতা, অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল মানুষের উল্লেখযোগ্য অংশের জন্য প্রয়োজনীয় সামাজিক সুরক্ষা ব্যবস্থা প্রদানের কাজ করে। ডিপিএসপি নির্বাচনী রাজনীতির সুযোগ-সুবিধা-সহ ভারতকে একটি সংবেদনশীল কল্যাণমূলক রাষ্ট্রব্যবস্থা গ্রহণ ও প্রসারিত করতে উদ্দীপনা জুগিয়েছে। মৌলিক মর্যাদার সঙ্গে জীবনযাপনের জন্য দরিদ্র অংশগুলিকে প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করলেও কল্যাণমূলক পরিষেবা ব্যবস্থাগুলি এখনও অনেকাংশে অপ্রতুল, তাদের বণ্টন ব্যবস্থা অনেক সময় অসামঞ্জস্যপূর্ণ এবং সেগুলি প্রায়শই নির্দিষ্ট জনগোষ্ঠীকে বাদ দেওয়ার নীতিগত দুর্বলতায় জর্জরিত। তাই এগুলির উন্নতি এবং উদ্ভাবন প্রয়োজন

ডিপিএসপি-র সাংবিধানিক আদেশ নাগরিকদের জন্য ভারতীয় রাষ্ট্রের কর্তব্যকে চিহ্নিত করে দিয়েছে। তার নাগরিকদের মৌলিক মর্যাদার জীবন প্রদান করার জন্য জীবিকার পর্যাপ্ত উপায়, সুষম উন্নয়ন ও সম্পদের বণ্টন, শিশু, মহিলা, দুর্বল ও অরক্ষিত অংশগুলির জন্য বিশেষ সুরক্ষা, যথাযথ স্বাস্থ্য পরিষেবা এবং অন্যান্য ধরনের সহায়তা সুনিশ্চিত করার জন্য এটিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

মুক্তির প্রতিশ্রুতিময় স্থাপনা

ভারতীয় সংবিধান সাত দশক আগে প্রণীত হলেও প্রশাসনের একটি গতিশীল স্থাপনা হিসাবে তাকে কল্পনা করা হয়েছে, যেটিকে ভারতীয় প্রজাতন্ত্রের মূল ভিত্তিগত নীতিগুলির সঙ্গে আপস না করে সময়ের পরিবর্তিত চাহিদার সঙ্গে তাল মিলিয়ে সংস্কার শুরু করার জন্য প্রয়োজনীয় নমনীয়তা প্রদান করা হয়েছিল। রাষ্ট্র গঠনের চ্যালেঞ্জ, বিশেষ করে স্বাধীনতার পর প্রাথমিক বছরগুলিতে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে আইনের শাসনের প্রাধান্য, সামঞ্জস্যপূর্ণ নিয়ন্ত্রণ ও ভারসাম্য-সহ ক্ষমতার পৃথগীকরণ এবং শাসনের পৃথগীকৃত চাহিদা মেটাতে একটি স্তরবিশিষ্ট যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামো হল কিছু মৌলিক নীতি, যা ভারতীয় রাষ্ট্রকে গুরুতর পরিস্থিতির মোকাবিলা ও পরিচালনা করতে সহায়তা করেছিল। সংবিধান শুধু যে সময়ের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে, তাই নয়। এটি নির্বাচনী রাজনীতির নতুন পথও খুলে দিয়েছে যা গণতন্ত্রকে গভীরতর করে তুলতে সাহায্য করেছে। যাই হোক, সাংবিধানিক প্রতিশ্রুতিগুলিকে বাস্তবে কার্যকর করতে গণ আলাপ-আলোচনা এবং রাজনৈতিক সংস্কৃতির একটি মুখ্য ভূমিকা রয়েছে এবং এভাবে ভারত বিশ্বের কাছে যে সাংবিধানিক স্থিতিস্থাপকতা প্রদর্শন করেছে, তা লালন করার জন্য এই ধরনের অনুকূল পরিস্থিতিগুলিকে নিরলসভাবে সংরক্ষণ এবং সশক্ত করে তুলতে হবে। ভারতের ৭৪তম প্রজাতন্ত্র দিবসের গৌরবময় মুহূর্তে, যখন ভারত জি২০-র সভাপতিত্ব করছে, তখন ভারতের সাংবিধানিক প্রতিশ্রুতি এবং অনুশীলনের অনবদ্য আখ্যান জি২০ সদস্য এবং বিশ্বের কাছে শিক্ষণীয় হয়ে থাকবে।

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.