-
CENTRES
Progammes & Centres
Location
ভারতকে অবশ্যই এই বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে যে ডেটার আন্তঃসীমান্ত প্রবাহ নিয়ে আলোচনা করার সময় উন্নয়নশীল দেশগুলির চাহিদা যেন বিবেচনা করা হয়
ডেটা প্রবাহ ও গোপনীয়তা – জি ২০ সভাপতি হিসাবে ভারতের ভূমিকা
ডিজিটাল পরিসর দ্রুত বিকশিত হচ্ছে। যদিও আমরা এখনও ডিজিটাল বিপ্লবের প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছি, এর আনা পরিবর্তনগুলি কিন্তু চ্যালেঞ্জমুক্ত নয়। এই কারণেই সেগুলি নিয়ে আলোচনা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
জি২০–র জন্য ইন্দোনেশিয়ার অ্যাজেন্ডায় তিনটি প্রধান বিভাগের একটি হিসাবে ডিজিটাল রূপান্তর অন্তর্ভুক্ত ছিল। এটি কোভিড–১৯ অতিমারি থেকে সমস্ত দেশের সম্মিলিত পুনরুদ্ধারের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত হয়। ডিজিটাল রূপান্তরের অ্যাজেন্ডার মধ্যে ডিজিটাল ডেটা এবং গোপনীয়তার সমস্যা সমাধানের প্রয়োজনও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। উন্নত দেশগুলি, যারা অসংখ্য ডিজিটাল প্রযুক্তির বিকাশের সূচনা করেছিল, তারা স্বাভাবিকভাবেই বহুবিধ সুবিধার প্রাপক হয়ে ওঠে। ফলস্বরূপ, এই দেশগুলির অন্তর্গত সংস্থা বা সত্ত্বাগুলি ডিজিটাল ক্ষেত্রটিকে নিয়ন্ত্রণ করতে থাকে। অনেক দেশ ও বাণিজ্যিক সংস্থা ডিজিটাল বিপ্লবের মাধ্যমে আনা সুযোগগুলিকে নিজেদের পুঁজি করার চেষ্টা করলেও মেটা, গুগল, অ্যামাজন, মাইক্রোসফ্ট ও অ্যাপলের মতো মাত্র কয়েকজন খেলোয়াড় এই ক্ষেত্রটিতে আধিপত্য বিস্তার করেছে, যাদের সবাই উন্নত অর্থনীতিতে কেন্দ্রীভূত। যেহেতু তাদের কাছে প্রচুর পরিমাণে ডেটা উপলব্ধ রয়েছে, তাই তাদের প্রচুর শক্তি রয়েছে । একই কথা তারা যে দেশগুলির সংস্থা, সেই দেশগুলি সম্পর্কেও প্রযোজ্য। জি ২০ তাই ডেটা প্রবাহ এবং সার্বভৌমত্ব নিয়ে আলোচনার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ফোরাম হয়ে ওঠে।
উন্নত দেশগুলি, যারা অসংখ্য ডিজিটাল প্রযুক্তির বিকাশের সূচনা করেছিল, তারা স্বাভাবিকভাবেই বহুবিধ সুবিধার প্রাপক হয়ে ওঠে।
যদিও জিডিপি, রপ্তানি ইত্যাদিতে ডেটার অবাধ প্রবাহের সুবিধাগুলি ব্যাপকভাবে আলোচনা করা হয়েছে, অনেক উন্নত এবং উন্নয়নশীল দেশের কাছে ডেটার গোপনীয়তা রক্ষার বিষয়টি কিন্তু অনেক বেশি গুরুত্ব পেয়েছে। জনগণ ও সরকার তাদের উৎপন্ন ডেটার উপর আরও কর্তৃত্ব এবং স্বায়ত্তশাসনের দাবি করতে শুরু করেছে। সেই লক্ষ্যে, জি২০ ডিজিটাল মিনিস্টেরিয়াল মিটিং ২০২১–এ ডেটা ফ্রি ফ্লো উইথ ট্রাস্ট (ডি এফ এফ টি) অনুমোদিত হয়েছে, এবং সেই প্রক্রিয়াগুলি গ্রহণের প্রস্তাব করেছে যা পরস্পরবিরোধী স্বার্থের ভারসাম্য বজায় রাখে। ডি এফ এফ টি ডেটা গভর্নেন্সের উপর উন্নয়ন–সমর্থক প্রবিধানগুলি গ্রহণ করতে এবং নিম্নলিখিত বিষয়গুলিকে তুলে ধরতে উৎসাহিত করে: ঝুঁকির স্তরের উপর ভিত্তি করে ডেটার শ্রেণিবিভাগ, যা ডেটার অবাধ প্রবাহ, ডেটা গোপনীয়তা এবং সার্বভৌমত্ব–ভিত্তিক উন্নয়ন বা উদ্ভাবনের লেনদেনকে বাধা দেওয়ার ঝুঁকির স্তরের ভিত্তিতে সূচিত হবে; দেশগুলি যাতে বহুপাক্ষিক স্থাপনায় দায়িত্বশীলভাবে ডেটা স্থানান্তর ও অন্যান্য অনুশীলন চালিয়ে যেতে পারে তার জন্য দেশগুলিকে প্রবিধান তৈরি করতে উৎসাহিত করা; এবং দৈনন্দিন ও জটিল অর্থনৈতিক সমস্যা সমাধানে ডেটার আরও গবেষণা মূল্য অন্তর্ভুক্ত করা।
যাই হোক, ভারত ডি এফ এফ টি–র জন্য ওসাকা ট্র্যাকের সাইড লাইনে অনুষ্ঠিত আলোচনায় অংশ নেয়নি, এবং ডেটা ব্যবহার সম্পর্কে আশঙ্কার কারণে তা গ্রহণ করতে দ্বিধা বোধ করছে। আশঙ্কার মধ্যে আছে একবার ডেটা অন্য দেশে চলে গেলে সেগুলির দেশে উৎপন্ন ডেটার সমতুল নিরাপত্তা না–থাকার মতো বিষয়গুলি। উপরন্তু, অনেক অ–শিল্পোন্নত দেশের মতো ভারত এখনও তার তথ্য নিরাপত্তা ও ওয়েব–ভিত্তিক প্রবিধান তৈরি করছে।
ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্সি টেকসই ডিজিটাল রূপান্তরকে অগ্রসর করার জন্য আস্থার সঙ্গে ডেটার অবাধ প্রবাহ এবং আন্তঃসীমান্ত ডেটা প্রবাহ সক্ষমতার জন্য পূর্ববর্তী জি২০ প্রেসিডেন্সিগুলির কাজকে স্বীকৃতি দিয়েছিল। এটি এখনকার আঞ্চলিক ও বহুপাক্ষিক ব্যবস্থা সহ বিদ্যমান নিয়ন্ত্রক নীতিগুলির মধ্যে অভিন্নতা, পরিপূরকতা এবং অভিসারী উপাদানগুলি চিহ্নিত করে পূর্বের আলোচনার ভিত্তিতে এমন পথে আরও অগ্রসর হয়েছে যা ডেটার মুক্ত প্রবাহে এবং আন্তঃসীমান্ত ডেটা প্রবাহে গতি আনে৷ সেই সময়ে দুটি দৃঢ় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়: ডেটা গভর্নেন্সের বিভিন্ন স্তর অনুধাবনের সুবিধার্থে গ্রহণীয় ব্যবস্থাগুলি চিহ্নিতকরণের উপর বহু–অংশীদারভিত্তিক সংলাপের একটি কর্মশালা, এবং মানবকেন্দ্রিক পদ্ধতির সঙ্গে তাল রেখে আন্তঃপরিচালনযোগ্য ডিজিটাল পরিচয় কাঠামোর বিকাশ, যা মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ডিজিটাল পরিচয় সমাধানগুলিকে সহজতর করে, যেমন গোপনীয়তার প্রশ্নে স্বেচ্ছাচারী বা বেআইনি হস্তক্ষেপ থেকে মুক্ত থাকার অধিকার।
উন্নয়নমুখী প্রেক্ষাপটে ডি এফ এফ টি–র বিকাশ ও অগ্রগতির জন্য সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পক্ষের মধ্যে আস্থা বৃদ্ধি, হ্যাকিং এবং সাইবার আক্রমণের ঘটনাগুলি হ্রাস করা, এবং ডিজিটাল ক্ষেত্রকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য ক্রমাগত আলোচনার পাশাপাশি এই ক্ষেত্রটির খুঁটিনাটি থেকে ব্যাপকতর দ্যোতনা অনুধাবন করা প্রয়োজন।
তার নিজের প্রেসিডেন্সির সময় ভারতকে অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে যে ডেটার আন্তঃসীমান্ত প্রবাহ নিয়ে আলোচনা করার সময় উন্নয়নশীল দেশগুলির চাহিদা যেন বিবেচনা করা হয়। ভূ–রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার এই যুগে, যেখানে উন্নত এবং উদীয়মান অর্থনীতি একইভাবে ডিজিটাল স্পেসের উপর অত্যধিক নির্ভরতার কারণে সাইবার আক্রমণ ও অন্যান্য ডিজিটাল নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিপদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ, সেই সময় এ কথা বোঝা অপরিহার্য যে দরিদ্র দেশগুলিকে সাইবার প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা শক্তিশালী করতে সাহায্য করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ কথা বোঝাও সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ যে শুধু স্থানীয়ভাবে ডেটা সংরক্ষণ করা ব্যয়বহুল, কারণ এর উপযোগিতা এর ব্যবহারের মধ্যে নিহিত। সুতরাং, আন্তঃসীমান্ত ডেটা প্রবাহ দায়িত্বশীলতার সঙ্গে ব্যবহার করা উচিত। উন্নয়নমুখী প্রেক্ষাপটে ডি এফ এফ টি–র বিকাশ ও অগ্রগতির জন্য সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পক্ষের মধ্যে আস্থা বৃদ্ধি, হ্যাকিং ও সাইবার আক্রমণের ঘটনাগুলি হ্রাস করা, এবং ডিজিটাল ক্ষেত্রকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য ক্রমাগত আলোচনার পাশাপাশি এই ক্ষেত্রটির খুঁটিনাটি থেকে ব্যাপকতর দ্যোতনা অনুধাবন করা প্রয়োজন। শেষ বিষয়টি বিশেষ করে বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন স্বার্থের বোঝাপড়া তৈরি করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ, যা জি২০–র লক্ষ্য। ডেটা প্রবাহের জন্য মান ও পদ্ধতির বিকাশের অর্থ মূলত সাইবার পরিকাঠামো তৈরি করা, যা সকলের উপকার করে। বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার সম্ভব করার জন্যই যেহেতু ডিজিটাল রূপান্তর পরিকল্পনা করা হয়েছে, তাই ব্যবসা, প্ল্যাটফর্ম ও সরকারের মধ্যে আস্থা তৈরি করে এর সম্ভাবনাকে উন্মুক্ত করা আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ। প্রবিধানে অভিন্নতা এনে এবং অভিন্ন অধিকার প্রদানের মাধ্যমে বিভিন্ন দেশ জুড়ে প্রবিধান ও মানকে সামঞ্জস্যপূর্ণ করার প্রয়োজন রয়েছে। এটি ডেটার মসৃণ প্রবাহকে সক্ষম করবে, উদ্ভাবন বাড়াবে এবং অর্থপূর্ণ কর্মসংস্থান তৈরি করবে, যার ফলে শুধু প্রতিযোগিতার মাধ্যমেই নয়, বরং বর্ধিত পছন্দের মাধ্যমেও ভোক্তা উদ্বৃত্ত বৃদ্ধি পাবে, যা শেষ পর্যন্ত অতিমারি-পরবর্তী পুনরুদ্ধারের দিকে পরিচালিত করবে।
লেখক এই নিবন্ধে গবেষণা ইনপুট দেওয়ার জন্য তনুশ্রী শশীতালকে ধন্যবাদ জানাচ্ছেন।
মতামত লেখকের নিজস্ব।
The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.
Apoorva Lalwani was an Associate Fellow with ORFs Geoeconomic Studies Programme. Her research focuses on data localisation multi-modal connectivity and WTO issues and their impact ...
Read More +