Author : Mohua Mukherjee

Expert Speak Raisina Debates
Published on Feb 15, 2022 Updated 15 Days ago

সমুদ্রগুলিতে সামরিক মহড়ার ফলে সামুদ্রিক বাস্তুতন্ত্র আরও বেশি করে বিপদের মুখে পড়ছে। সামরিক কার্যকলাপে স্থিতিশীলতা আনার ক্ষেত্রে ভারত পথ দেখাতে পারে।

জলবায়ু পরিবর্তন এবং ইন্দো-প্যাসিফিকে ভূ-কৌশলগত সামুদ্রিক প্রশাসন
জলবায়ু পরিবর্তন এবং ইন্দো-প্যাসিফিকে ভূ-কৌশলগত সামুদ্রিক প্রশাসন

এই প্রতিবেদনটি ইন্দোপ্যাসিফিক অঞ্চলে স্থিতিশীল উন্নয়ন সিরিজের অন্তর্গত।


ইন্দো-প্যাসিফিক সামুদ্রিক রঙ্গমঞ্চে সংঘাত তৎপরতার প্রস্তুতিতে ব্যস্ত সামরিক নেতাদের এ বিষয়ে সচেতন হতে হবে যে তাঁরা একাধিক ধরনের যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ছেন — প্রথাগত সামরিক প্রতিদ্বন্দ্বিতার পাশাপাশি তাঁরা জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গেও যুঝছেন। এই উভয় সঙ্কটে জয়লাভ করার জন্য দেশগুলিকে নিজেদের থেকে ভিন্ন বিশেষত্বযুক্ত জোটবদ্ধ শক্তিগুলির সাহায্য নিতে হবে। এই ধরনের আন্তঃসহযোগিতা এবং সমন্বয়গুলি স্বতঃস্ফূর্ত নয়। এবং সূচনা থেকে শুরু করে নিষ্পত্তি পর্যন্ত সমগ্র প্রক্রিয়াটির যত্নশীল রূপায়ণ প্রয়োজন। এমনটা করার জন্য প্রয়োজন সুনির্দিষ্ট বৈদেশিক কূটনীতি এবং অভ্যন্তরীণ রাষ্ট্রনায়কত্ব। এই সংক্ষিপ্ত প্রতিবেদনটিতে আলোচনা করা হয়েছে কী ভাবে ভারত ইন্দো-প্যাসিফিক দেশগুলির মধ্যে সমন্বয় সাধন এবং কূটনৈতিক ভাবে নেতৃত্বদানের ভূমিকা পালনে যোগ্য প্রতিনিধি হয়ে উঠতে পারে।

ইন্দো-প্যাসিফিকে জলবায়ু পরিবর্তন

ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে ইতিমধ্যেই বিশ্ব উষ্ণায়নের বিরুদ্ধে লড়াই শুরু হয়ে গেছে। অঞ্চলটি প্রায়শই বিধ্বংসী আবহাওয়ার সম্মুখীন হয়, যার ফলে অসংখ্য প্রাণহানির ঘটনা ঘটে।() ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব দ্য রেড ক্রস অ্যান্ড রেড ক্রেসেন্ট-এর পরিসংখ্যান অনুযায়ী শুধু মাত্র ২০২১ সালেই এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলে ৫ কোটি ৭০ লক্ষ মানুষ জলবায়ু বিপর্যয় দ্বারা তীব্র ভাবে প্রভাবিত হয়েছেন। যে কোনও প্রথাগত দ্বন্দ্বে যে ভাবে আকাশ থেকে বোমা পড়ার ফলে এক মুহূর্তে সব কিছু তছনছ হয়ে যায়, ঠিক সে ভাবেই জলবায়ু বিপর্যয়গুলিতে অসংখ্য মানুষ এক লহমায় তাঁদের জীবিকা, বাসস্থান, খাদ্য এবং সামান্য সম্বলটুকু হারিয়ে ফেলেন। ফলে এই জলবায়ু পরিস্থিতিটিকে আমরা ‘যুদ্ধ’-এর সঙ্গে তুলনা করতে দ্বিধা করি না। ইন্দো-প্যাসিফিক সামুদ্রিক রঙ্গমঞ্চে ‘ওভার দ্য হরাইজন’ সামরিক যুদ্ধের জন্য যে কোনও রকমের আনুষ্ঠানিক যুদ্ধ প্রস্তুতিই জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে বিদ্যমান লড়াইকে অস্বীকার করে এগোতে পারে না, সফলও হতে পারে না। এ রকমটা হওয়ার কারণ? কারণ, বর্তমানে আন্তর্জাতিক স্তরে বিশ্ব সংক্রান্ত দায়বদ্ধতার প্রেক্ষিতে তিনটি পৃথক কর্মসূচি গৃহীত হয়েছে, যেগুলিকে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের সীমার ভিতরে ও বাইরে মেনে চলা বাধ্যতামূলক।

ইন্দো-প্যাসিফিক সামুদ্রিক রঙ্গমঞ্চে ‘ওভার দ্য হরাইজন’ সামরিক যুদ্ধের জন্য যে কোনও রকমের আনুষ্ঠানিক যুদ্ধ প্রস্তুতিই জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে বিদ্যমান লড়াইকে অস্বীকার করে এগোতে পারে না, সফলও হতে পারে না।

ছ’বছর আগে ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসে সারা বিশ্ব রাষ্ট্রপুঞ্জ দ্বারা নির্ধারিত ১৭টি স্থিতিশীল উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা (এস ডি জি) বাস্তবায়নে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়। এগুলির মধ্যে এস ডি জি ১৪তমটি ছিল ‘জলের তলার জীবন’, যেটিতে স্থিতিশীল উন্নয়নের জন্য মহাসাগর, সমুদ্র এবং সমুদ্রজাত সম্পদের সংরক্ষণ এবং স্থিতিশীল ব্যবহারের কথা বলা হয়েছে। অর্থাৎ আমরা সমুদ্রের জলের অম্লকরণ এবং অক্ষয় প্লাস্টিক এবং তেল / রাসায়নিক / দূষিত পদার্থ / শব্দদূষণের দ্বারা সামুদ্রিক বাস্তুতন্ত্রের শ্বাসরোধ করার বিরুদ্ধে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়েছি।

এই ঘটনার ঠিক ছ’সপ্তাহ পরে ২০১৫ সালের ১৫ ডিসেম্বর প্যারিসে কপ২১ সম্মেলনে বিশ্ব সম্প্রদায় বিদ্যমান জলবায়ু যুদ্ধে বিশ্বব্যাপী শান্তিস্থাপনের উপায় খুঁজে বার করার ইচ্ছা প্রকাশ করে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের অস্তিত্ব রক্ষার প্রচেষ্টায় আমরা তাপমাত্রার সীমা নির্ধারণে সম্মত হয়েছি। এর পাশাপাশি, আমরা গ্রিন হাউস গ্যাস নির্গমনের মাত্রা প্রশমনের মাধ্যমে পৃথিবীর উপর তীব্র আঘাত বন্ধ করা এবং ন্যাশনালি ডিটারমাইন্ড কন্ট্রিবিউশনস (এন ডি সি) প্রতিশ্রুতি অনুসারে আমাদের প্রাকৃতিক পুঁজি ধ্বংস করার বিরুদ্ধে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়েছি।

২০২১ সালের নভেম্বর মাসে গ্লাসগোয় কপ২৬ সম্মেলনে আমরা আমাদের শপথগুলির পুনর্নবীকরণ এবং সেগুলিকে সুগভীর করেছি। অন্যান্য জিনিসের পাশাপাশি আমরা বিশাল সামুদ্রিক অঞ্চলের রক্ষণাবেক্ষণ, সমুদ্রের অম্লকরণ এবং জলস্তরের বৃদ্ধি প্রতিহত করতে নির্দিষ্ট পদক্ষেপ গ্রহণ, দফায় দফায় প্লাস্টিক দূষণ নির্মূল করা, প্রবালপ্রাচীরের রক্ষা এবং ম্যানগ্রোভে বাস্তুতন্ত্রের যত্নশীল ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে ব্লু ইকোনমি বা সুনীল অর্থনীতির আওতায় কার্বন স্বতন্ত্রীকরণের প্রক্রিয়ায় ব্রতী হয়েছি। ভারত ২০৭০ সালের মধ্যে শূন্য নিঃসরণের লক্ষ্যমাত্রা স্থির করেছে যা পূরণ করার জন্য নিঃসরণের মাত্রা নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি ভারতকে সব রকম উপায়ে তার প্রাকৃতিক সম্পদকে রক্ষা করতে হবে।

তবে এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় প্রহেলিকাটি হল এই যে, ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে সম্ভাব্য সামরিক কার্যকলাপের প্রস্তুতি নব নির্ধারিত জলবায়ু প্রতিশ্রুতি পূরণের পথে বিশাল অন্তরায় হয়ে দাঁড়াচ্ছে। সশস্ত্র সামুদ্রিক যানগুলি তীব্র আওয়াজ উৎপন্ন করে এবং সেগুলি তীব্র দূষণকারী জ্বালানি তেল (বাঙ্কার অয়েল) দ্বারা চালিত। এই যানগুলি সব দিক থেকেই সমুদ্র স্বাস্থ্যের জন্য চরম ক্ষতিকারক।

সামরিক প্রশিক্ষণ, গোলাবারুদ বিনিময়, বিমানবাহী জাহাজ থেকে বিমান ওঠানামা, ডুবোজাহাজ অনুশীলন এবং এমনকি অস্ত্রবিহীন টহলদারি জাহাজ এই সমস্ত কার্বন নিঃসরণের পরিমাণকে আরও বাড়িয়ে তুলবে যা আমরা এবং এই অঞ্চলের অন্য দেশগুলি কমানোর চেষ্টা করছি। এটি ক্ষুদ্র উন্নয়নশীল দ্বীপ রাষ্ট্র (এস আই ডি এস) এবং সমস্ত ধরনের সামুদ্রিক বাস্তুতন্ত্রের জন্য বিপর্যয়কর হবে। সুদক্ষ সমুদ্র প্রশাসন আমাদের এই বৈপরীত্যকে মননশীল এবং স্পষ্ট ভাবে স্বীকার করার জন্য আহ্বান জানায়। সমস্যাটিকে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা না করে আমাদের উচিত সমস্ত প্রয়োজনীয় বিশেষজ্ঞ সংস্থান এবং তহবিল দিয়ে এটির সক্রিয় ভাবে মোকাবিলা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হওয়া।

মানব ইতিহাসে সম্ভবত প্রথম বারের জন্য সংঘর্ষের প্রস্তুতি নিতে হবে জলবায়ুর ক্ষতির কথা মাথায় রেখে। এটি ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলস্থিত দেশগুলির সকলের স্বার্থের অনুকূল। কারণ এই সব দেশকেই বারবার ভয়ঙ্কর জলবায়ু বিপর্যয় বা জলে নিমজ্জিত হওয়ার মতো ঝুঁকির সম্মুখীন হতে হয়। ভবিষ্যতে আবারও নতুন কোনও বিপর্যয়কে ত্বরান্বিত করবে না এমন সামরিক প্রস্তুতির জন্য তারা দাবি জানাতেই পারে। জোটবদ্ধ কতকগুলি দেশের জাতীয় সুরক্ষা বৃদ্ধির স্বার্থে ইন্দো-প্যাসিফিক মঞ্চে যা-ই ঘটুক না কেন, তাকে কখনওই বিশ্ব উষ্ণায়নের বিরুদ্ধে যুদ্ধে এস ডি জি বা কপ প্রতিশ্রুতিগুলি পূর্ণ করার পথে অন্তরায় হতে দেওয়া যাবে না। সব গুরুত্বপূর্ণ দেশের সামরিক এবং বিদেশ মন্ত্রকের শীর্ষ নেতৃত্বই এ রকমের অতিরিক্ত দায়িত্ব তৎক্ষণাৎ এবং তীব্র ভাবে অস্বীকার করতে পারেন। তাঁরা দাবি করতে পারেন যে, যুদ্ধ-পরিকল্পনায় জলবায়ু সংবেদনশীল হওয়া তাঁদের এক্তিয়ারের বাইরে এবং অবশ্যই অভূতপূর্ব।

তবে এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় প্রহেলিকাটি হল এই যে, ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে সম্ভাব্য সামরিক কার্যকলাপের প্রস্তুতি নব নির্ধারিত জলবায়ু প্রতিশ্রুতি পূরণের পথে বিশাল অন্তরায় হয়ে দাঁড়াচ্ছে।

এই মুহূর্তে প্রয়োজন শক্তিশালী নেতৃত্ব এবং এক বা একাধিক দেশের তরফে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। এই দেশগুলির উচিত অন্য দেশগুলিকে এই বিষয়ে সতর্ক করা যে, প্রতিরক্ষা বিষয়ে চিরাচরিত ভাবে এগোনর আর কোনও জায়গা নেই। সব রকমের সামরিক প্রস্তুতির সময়ে বাস্তু সংস্থান বা পরিবেশ সংক্রান্ত ক্ষতি কী ভাবে নিয়ন্ত্রণ এবং প্রশমন করা যায়, সে ব্যাপারে ভাবতে হবে। একই সঙ্গে এই সব সামরিক কার্যকলাপের প্রভাব নির্ধারণ করে সেগুলির ফলাফলগত তথ্য তুলে ধরতে হবে। অন্যথায়, আগামিদিনের ইতিহাস বইতে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল বিশ্ব উষ্ণায়নের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াইয়ে প্রকৃতির সঙ্গে এক যুদ্ধবিরতির সূচনার কথা তুলে ধরবে। যে কোনও মূল্যেই এটি প্রতিহত করতে হবে।

ঐতিহাসিক ধারার বিপরীতে গিয়ে এ বার সামুদ্রিক বাস্তুতন্ত্রের অলঙ্ঘনীয়তাকে নৌ-যুদ্ধের প্রস্তুতির সময়ে বিশ্বজনীন গুরুত্ব দিতে হবে, সামুদ্রিক যুদ্ধ প্রস্তুতির ফলে সম্ভাব্য ঝুঁকি প্রশমনের কৌশল একদম প্রথমেই নির্ধারণ করে নেওয়া উচিত। এমনটা করার জন্য পর্যাপ্ত আলাপ-আলোচনা, সমন্বয়, প্রাতিষ্ঠানিক আন্তঃসহযোগিতা এবং নির্দিষ্ট দায়বদ্ধতাগুলির নির্ধারণ আবশ্যক। পাশাপাশি প্রয়োজন ফলাফল বিশ্লেষণে প্রমাণ একত্রিতকরণ এবং একটি দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থার সঙ্গে স্বচ্ছতা ও বিশ্বাসযোগ্যতা যাচাইয়ের জন্য তা ভাগ করে নেওয়া। কাজটা মোটেও সহজ নয়। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে একটি অর্থপূর্ণ পদক্ষেপভিত্তিক সমুদ্র সংক্রান্ত প্রশাসনিক পারস্পরিক আলোচনার সূত্রপাত করা এবং সেটির নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য ভারত এক আদর্শ প্রার্থী হতে পারে।

এর ফলে এমন একটি দেশীয় টাস্ক ফোর্স গঠন করতে হবে যেখানে বৈজ্ঞানিক/বাস্তুবিজ্ঞানী সম্প্রদায়ের পাশাপাশি সামরিক পরিকল্পনাকারী সংস্থারও প্রতিনিধিরা ‘অপ্রচলিত জুটি’ বাঁধতে বাধ্য হবেন। এই জোটের অংশীদাররা একে অপরকে তাঁদের স্ব স্ব ক্ষেত্রের প্রতিবন্ধকতাগুলি সম্পর্কে বুঝিয়ে বলবেন এবং যৌথ ভাবে একটি ভাল ফলাফল সুনিশ্চিত করবেন। এক বার আন্তঃক্ষেত্রীয় টাস্ক ফোর্স গঠন ও কার্যকর হয়ে গেলে, ভারত ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের অন্য দেশগুলিকেও এটির সঙ্গে যুক্ত হতে এবং সক্রিয় ভাবে অংশগ্রহণ করার জন্য আমন্ত্রণ জানাতে পারবে।

এই ধরনের নেতৃত্ব প্রদর্শনে কেন ভারতকে এক বিশ্বস্ত অংশীদার বলে মনে করা হচ্ছে? ২০২০ সালের ৪ নভেম্বর পূর্ব এশিয়া শীর্ষ সম্মেলনে তাঁর বক্তব্যের শুরুতেই প্রধানমন্ত্রী মোদী এই ‘কেন’র উত্তর দিয়েছেন — ‘সন্ত্রাসবাদ, সহিংস চরমপন্থা, প্রাকৃতিক সম্পদ এবং ভূখণ্ডের মালিকানা-সহ সামুদ্রিক ক্ষেত্র নিয়ে তীব্র দ্বন্দ্ব বর্তমান সময়ের সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা। আনক্লস-এর মতো সামুদ্রিক অঞ্চল নিয়ন্ত্রণকারী আন্তর্জাতিক আইন এবং নিয়মাবলির উপরে ক্রমশ চাপ বাড়ছে। জলবায়ু পরিবর্তন, সমুদ্র দূষণ এবং প্রাকৃতিক সম্পদের অনিয়ন্ত্রিত এবং অত্যধিক শোষণের মতো সীমান্ত নিরপেক্ষ সমস্যাগুলি আমাদের গ্রহটিকে যে বিপন্ন করে তুলছে, সে বিষয়ে আমরা সকলে সহমত। এবং আমাদের সকলের স্বার্থেই ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলটিকে এমন এক ক্ষেত্র রূপে গড়ে তুলতে হবে যেখানে নৌচালনা, বিমানচালনা, স্থিতিশীল উন্নয়ন, বাস্তুতন্ত্র এবং সামুদ্রিক পরিবেশের রক্ষণাবেক্ষণের স্বাধীনতার পাশাপাশি সকলের জন্য স্বাধীন, মুক্ত, ন্যায্য এবং লাভজনক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ ব্যবস্থা বর্তমান।’ প্রধানমন্ত্রীর তরফে এই প্রাথমিক ইঙ্গিত ছাড়াও ভারত ইতিমধ্যেই শূন্য নিঃসরণের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলভুক্ত দেশগুলির একটি। অর্থাৎ এই কঠিন সমস্যার সমাধানে নেতৃত্বদানের এক সুযোগ থাকছে ভারতের সামনে, প্রধানমন্ত্রী মোদী জনসমক্ষে যে ইঙ্গিত পূর্বেই দিয়েছেন।

ভারত কি সফল হতে পারবে?

অভ্যন্তরীণ মুক্ত তথ্য প্রবাহ এবং আন্তঃক্ষেত্র সমন্বয়ের কোনও ঐতিহ্যবাহী ধারা ভারতীয় প্রশাসনে দেখা যায়নি। যদিও শূন্য নিঃসরণের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে পুরনো অভ্যেসগুলির বদল প্রয়োজন। যোগাযোগ, সচেতনতা বৃদ্ধি, সক্ষমতা বৃদ্ধি, সহযোগিতা, পর্যবেক্ষণ এবং তথ্য সংগ্রহের ক্ষেত্রে অবিরাম প্রচেষ্টা প্রতিটি ক্ষেত্রের মূল লক্ষ্য হবে। তা হলে এখনই নয় কেন? এই ধরনের অপ্রচলিত কথোপকথনকে বাধ্যতামূলক করতে এবং তার সমর্থন জোগাতে কতগুলি শক্তিশালী ঝুঁকি প্রশমন ব্যবস্থা কার্যকর করতে হবে, যাতে ভারতের শূন্য নিঃসরণের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন কোনও অবাঞ্ছিত ‘বন্ধুত্বপূর্ণ রোষে’ নষ্ট না হয়।


[১] অতি সম্প্রতি ১৭ ডিসেম্বর ফিলিপিনসের রাই টাইফুন, ২২ ডিসেম্বর মায়ানমারের জেড খনিতে ধ্বস নামা, ১৪ ডিসেম্বর মালয়েশিয়ায় বন্যা, ১৪ ডিসেম্বর ইন্দোনেশিয়ায় মাউন্ট সেমেরু আগ্নেয়গিরির ফেটে পড়া, ১ ডিসেম্বর দক্ষিণ ভারত / শ্রীলঙ্কায় বন্যা।

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.