Expert Speak India Matters
Published on Mar 07, 2022 Updated 1 Days ago

২০২২-২৩ সালের বাজেট তাৎক্ষণিক পদক্ষেপের বিপরীতে হেঁটে দীর্ঘমেয়াদি লাভের উপরে জোর দিয়েছে।

ভবিষ্যতের বাজেট

Image Source: Saad Akhtar — Flickr/CC BY-NC-ND 2.0

ভবিষ্যতের বাজেট

এই প্রতিবেদনটি বাজেট ২০২২: পরিসংখ্যান এবং তদুপরি সিরিজের অন্তর্গত।


জাতীয় টেলিভিশনের এক খ্যাতনামা উপস্থাপক জিজ্ঞাসা করেছিলেন, ‘এই বাজেট ঠিক কার স্বার্থে?’ — যিনি স্পষ্টতই হতাশ ছিলেন যে, সে দিনই কিছুক্ষণ আগে ঘোষিত বার্ষিক বাজেটে গরিব এবং মধ্যবিত্ত শ্রেণির জন্য নির্দিষ্ট কিছু ছিল না। এক কথায় এই প্রশ্নের উত্তর — ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য। এ বছরের বাজেটের একমাত্র লক্ষ্য ছিল দেশের অর্থনৈতিক বৃদ্ধির সূচনা করা। এই বাজেটে ভারতের বৃদ্ধির পথে সবচেয়ে উদ্বেগজনক প্রবণতা অর্থাৎ বিগত ১০ বছরে বেসরকারি বিনিয়োগ কমতে থাকার মোকাবিলা করার জন্য কৌশল গ্রহণ করা হয়েছে। সহজ ভাবে বললে, এ বছরের বাজেটে গত বছরের অতিমারির প্রভাব থেকে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের কৌশলেরই সশক্তিকরণ যা দীর্ঘমেয়াদি অর্থনৈতিক বৃদ্ধির জন্য সহায়কও বটে। বাজেটের কেন্দ্রীয় পরিকল্পনাটি হল সম্পদ সৃষ্টি এবং কাজের সুযোগ তৈরিকে অগ্রাধিকার দিয়ে উল্লেখযোগ্য ভাবে সরকারি বিনিয়োগ বৃদ্ধি করা।

সরকারি বিনিয়োগ দু’টি মূল ধারায় বিভক্ত — রেভিনিউ এক্সপেন্ডিচার (রাজস্ব ব্যয়) এবং ক্যাপিটাল এক্সপেন্ডিচার (মূলধনী ব্যয়)। রাজস্ব ব্যয়ের আওতায় সেই সব সরকারি খরচ পড়ে যা কোনও সম্পদ সৃষ্টি করে না বা দায়ভার হ্রাস করতে পারে না। এর মধ্যে বেতন, সুদ প্রদান, পেনশন, প্রশাসনিক খরচ ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত। এ কথাও বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ যে খাদ্যসুরক্ষা নীতি, এম এন আর ই জি এ এবং অন্যান্য একাধিক সরাসরি নগদ অর্থ হস্তান্তর প্রকল্পের মতো বৃহৎ জনকল্যাণমূলক প্রকল্পগুলিও এর আওতাভুক্ত। বিধ্বংসী কোভিড-১৯ অতিমারির পরবর্তী সময়ে এই প্রকল্পগুলির অধিকাংশই ভারতে একটি মানবিক সংকট এবং ক্ষুধাজনিত মৃত্যুর ঘটনা রোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।

বিগত দু’বছরের তুলনায় এই বছরের বাজেটে এই সব প্রকল্পে বিনিয়োগের সামান্য পরিমাণ বৃদ্ধি ঘটেছে। সিংহভাগ বৃদ্ধি ঘটেছে দ্বিতীয় ক্ষেত্রটিতে অর্থাৎ মূলধনী ব্যয়ের ক্ষেত্রে। এই খাতের আওতায় সম্পদ সৃষ্টিতে ব্যয়ের উপর জোর দেওয়া হয়েছে যা উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধিতে, কাজের সুযোগ সৃষ্টিতে এবং দীর্ঘমেয়াদি বৃদ্ধিতে সাহায্য করবে। গত বছরের সংশোধিত বরাদ্দ অর্থের তুলনায় আগামী অর্থবর্ষের বাজেটে মূলধনী ব্যয় বৃদ্ধির পরিমাণ দাঁড়াবে ২৪.৫%। এমনটা সম্ভব করে তোলার জন্য প্রধানমন্ত্রী গতিশক্তি প্রকল্পকে বেছে নেওয়া হয়েছে যেটির প্রধান লক্ষ্য হল সমগ্র অর্থনীতি জুড়ে গুরুত্বপূর্ণ পরিকাঠামোগুলির উন্নয়ন ত্বরান্বিত করা এবং সড়ক, রেলপথ, জলপথ ও বিমানপথের মাধ্যমে সংযোগ ব্যবস্থাকে উন্নত করা। এই পদক্ষেপ সেই সব বাজার পর্যবেক্ষক এবং অর্থনীতিবিদ দ্বারা প্রবল ভাবে সমর্থিত হবে যাঁরা অর্থনৈতিক বৃদ্ধি এবং উন্নয়ন নিয়ে গবেষণা করেন। একাধিক উন্নয়নশীল দেশের ক্ষেত্রে অকাট্য প্রমাণ পাওয়া গেছে যে সড়ক সংযোগ দারিদ্র্য হ্রাস করতে সাহায্য করে

বিগত দু’বছরের তুলনায় এই বছরের বাজেটে এই সব প্রকল্পে বিনিয়োগের সামান্য পরিমাণ বৃদ্ধি ঘটেছে। সিংহভাগ বৃদ্ধি ঘটেছে দ্বিতীয় ক্ষেত্রটিতে অর্থাৎ মূলধনী ব্যয়ের ক্ষেত্রে।

পুরনো দৃষ্টিভঙ্গি থেকে সরে এসে বর্তমান সরকার দেশে সামাজিক সুরক্ষার ধারণার পুনর্সংজ্ঞায়ন এবং সেটির বিস্তার করার চেষ্টা চালাচ্ছে। সামাজিক সুরক্ষার বিদ্যমান ধারাগুলিতে তাৎক্ষণিক সহায়তার উপর জোর দেওয়া হত এবং নগদ অর্থ প্রদান, খাদ্যশস্য ও জীবিকা সুনিশ্চিত করতে স্বল্পমেয়াদি পন্থা অবলম্বন করা হত। কিন্তু এই বছরের বাজেটে সামাজিক সুরক্ষার ধারাটিকে বিস্তৃত করা হয়েছে যাতে এটির মধ্যে সাশ্রয়ী মূল্যে আবাসন, পাইপ দ্বারা সরবরাহকৃত জল এবং নিকাশি ব্যবস্থার মতো বিষয়গুলিকেও অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এই প্রকল্পগুলিতে বাজেটে বড় অঙ্কের টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। ফলে সামাজিক নিরাপত্তার দৃষ্টিভঙ্গি থেকেও সম্পদ সৃষ্টির প্রক্রিয়াটির উপর বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে।

যদিও সরকারের তরফে দীর্ঘমেয়াদি অর্থনৈতিক বৃদ্ধির কৌশলের উপরে জোর দেওয়া হয়েছে, তবুও প্রক্রিয়াটির ভারসাম্য স্পষ্টতই নির্ভরশীল অব্যবহিত ভোগ ও চাহিদার তীব্রতার উপরে। এর প্রেক্ষিতে একাধিক সঙ্গত কারণে অনেকেই মনঃক্ষুণ্ণ হয়েছেন। অতিমারির ফলে গোটা দেশের মানুষেরই জীবিকা এবং উপার্জন তীব্র ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে যে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে, তার প্রধান প্রাপক হলেন জনসংখ্যার নিম্নস্তরের ৪০% মানুষ। যদিও আমাদের বিশ্লেষণে দেখা গেছে যে, গ্রামীণ ভারতের নিম্নস্তরের ৮০% মানুষের ক্ষেত্রেই ভোগের পরিমাণ উল্লেখযোগ্য ভাবে হ্রাস পেয়েছে। এই বিশ্লেষণ গ্রামীণ পরিবারগুলির প্রেক্ষিতে করা হলেও (উপলব্ধ পরিসংখ্যানের ভিত্তিতে) তা খুব সহজেই শহুরে পরিবারগুলির ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য বলে মনে করা যেতে পারে যে হেতু ভারতের শহরাঞ্চল জুড়ে অতিমারির তীব্রতর প্রভাব পড়েছে। ফলে মধ্যবিত্তের খরচের ক্ষেত্রে তীব্র হ্রাস লক্ষ করা গেছে যা জনসংখ্যার দরিদ্রতম এক পঞ্চমাংশের ব্যয়ের সমতুল্য।

রাজস্ব ব্যয়ের পরিবর্তে মূলধনী ব্যয়ের উপর অধিক ভরসা করার অর্থনৈতিক যুক্তিটি শক্তিশালী। আন্তর্জাতিক এবং ভারতীয় পরিসংখ্যান থেকে প্রাপ্ত প্রমাণাদি দর্শায় যে, অর্থনৈতিক কার্যকলাপের উপর রাজস্ব খরচের গুণক প্রভাব মূলধনী ব্যয়ের গুণক প্রভাবের থেকে উল্লেখযোগ্য ভাবে বেশি। এমনকি ভারতের মূলধনী ব্যয় এবং রাজস্ব খরচের পরিমাণ নির্ণয় করা হয়েছে যথাক্রমে ২.৪৫ এবং ০.৯৯। এর ফলে প্রান্তিক সরকারি বিনিয়োগকে পরিকাঠামো এবং দীর্ঘস্থায়ী সম্পদ সৃষ্টিতে ব্যবহার করা অর্থনৈতিক ভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

আন্তর্জাতিক এবং ভারতীয় পরিসংখ্যান থেকে প্রাপ্ত প্রমাণাদি দর্শায় যে, অর্থনৈতিক কার্যকলাপের উপর রাজস্ব খরচের গুণক প্রভাব মূলধনী ব্যয়ের গুণক প্রভাবের থেকে উল্লেখযোগ্য ভাবে বেশি।

অবিলম্বে ভোগের চাহিদা বাড়ানোয় সহায়তা করার বদলে দীর্ঘমেয়াদি পরিকাঠামো নির্মাণ এবং কাজের সুযোগ তৈরির উপর বাজি ধরার রাজনৈতিক যুক্তিটি যদিও ততটা স্পষ্ট নয়। বেকারত্বের পরিসংখ্যানকে ছাপিয়ে পিরিয়ডিক লেবার ফোর্স সার্ভের (পি এল এফ এস) পরিসংখ্যান থেকে এ কথা প্রমাণিত যে, উপার্জনে ব্যাপক হ্রাস ঘটেছে। যেটি সম্ভবত আরও আশ্চর্যের, তা হল উপার্জনের এই ঘাটতি ভারতের অন্য রাজ্যগুলির তুলনায় উত্তরপ্রদেশে তীব্রতর। যেমনটা নিচে সারণি ১-এ দেখা যাচ্ছে যে, অতিমারি পরবর্তী সময়ে উত্তরপ্রদেশে উপার্জন হ্রাস ঘটেছে ২৩ শতাংশ যেখানে সারা ভারতে উপার্জন হ্রাস ঘটেছে ২২%। কিন্তু এই পরিসংখ্যান উত্তরপ্রদেশের যুব সম্প্রদায়ের সর্বাধিক পরিমাণ উপার্জন হ্রাসের ঘটনাকে আরও বিশেষ ভাবে তুলে ধরে। এক দিকে যখন সারা দেশে যুব সম্প্রদায়ের উপার্জন হ্রাসের পরিমাণ প্রায় -২০%, সেখানে উত্তরপ্রদেশে এই পরিমাণ অনেকটাই বেশি, অর্থাৎ -৩০%-এরও বেশি। যে হেতু বাজেট ঘোষণার সময় উত্তরপ্রদেশে বিধানসভা নির্বাচন আসন্ন ছিল, তাই সরকারের তরফে এ বছরের বাজেট ঘোষণায় জনপ্রিয় নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিগুলি এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। দীর্ঘমেয়াদি বৃদ্ধির অঙ্গীকার অর্থনৈতিক ভাবে অর্থবহ হলেও রাজনৈতিক দিক থেকে এটি এমন এক হিসেবি ঝুঁকি যা গ্রহণ করতে বিজেপি সরকার প্রস্তুত। এটির নেপথ্যে যুক্তিটি হল প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা এবং ‘হর ঘর নাল’-এর মতো প্রকল্পগুলি মতদাতাদের ২০২২ সালের রাজ্য নির্বাচনে প্রভাবিত করবে যেমনটা ২০১৭ সালে গত বারের রাজ্য নির্বাচনে ব্যাপক ভাবে গ্রামীণ বিদ্যুৎ সংযোগ প্রকল্পের ফলে ঘটেছিল।

সারণি ১: অতিমারির পরে মাসিক উপার্জন হ্রাস

সমগ্র জনসংখ্যা ২০১৮-১৯ ২০১৯-২০ উপার্জনের পরিবর্তনের শতাংশের হার
সারা ভারত

১১,৩০২

(১১,০৫৪ থেকে ১১,৫৫০)

৯,০৩৫

(৮,৭৩৬ থেকে ৯,৩৩৪)

-২২%

(-২৬.৩% থেকে -১৮.৫%

উত্তরপ্রদেশ

৮,৬৫৪

(৮,১৬২ থেকে ৯,১৪৬)

৬,৬৫৬

(৬,১৭১ থেকে ৭,১৪১)

-২৩%

(-২৯% থেকে ১৫.৯%)

যুব সম্প্রদায় (৩০ বছর বয়সের নীচে)
সারা ভারত

৭,২৯১

(৭,০৫৪ থেকে ৭,৫২৮)

৫,৭৮৩

(৫,১৯৩ থেকে ৬,৩৭৩

-২০%

(-২৮.৭% থেকে -১১.৭%)

উত্তরপ্রদেশ

৫,০৬৫

(৪,৬০০ থেকে ৫,৫৩১)

৩,৫৩৫

(৩,০৮০ থেকে ৩,৯৯০)

-৩০.২%

(-৪০.৩% থেকে -১৮.৫))

সূত্র: পি এল এফ এস (১০১৮-১৯) এবং (২০১৯-২০)

কেন্দ্রীয় বাজেটের প্রধান খাতগুলি ছাড়াও একাধিক প্রগতিশীল এবং কৌশলগত ধারণাও তুলে ধরা জরুরি। এখানে কয়েকটি উল্লেখ করা হল:

(১) প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের পিতামাতা এবং অভিভাবকদের জন্য কর ছাড়ের প্রক্রিয়াটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। বর্তমানে ভারতে অক্ষমতা একটি অত্যন্ত ব্যক্তিগত বিষয়, যেখানে ন্যূনতম সরকারি সাহায্য পাওয়ার ফলে দায়িত্বের ভার বহন করতে হয় পরিবারগুলিকেই। এই নীতির ত্রুটিপূর্ণ দিকটি অবিলম্বে সংশোধন করা প্রয়োজন যে হেতু ভারতের মোট জনসংখ্যার ৫ শতাংশ অর্থাৎ প্রায় পাঁচ কোটিরও বেশি মানুষ শারীরিক ভাবে বিশেষ ক্ষমতাসম্পন্ন।[ক] সংশ্লিষ্ট পরিবার এবং স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী সংস্থাগুলি ক্রমবর্ধমান সচেতনতা বৃদ্ধি এবং শারীরিক অক্ষমতার সূচনা প্রদানে এগিয়ে আসার ফলে পরবর্তী আদমসুমারিতে এই সংখ্যা আরও অনেকটাই বাড়বে বলে মনে করা যায়।

(২) মানসিক স্বাস্থ্যের দিকটিকে একটি জননীতির উদ্বেগ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া এবং বিশেষ জোর দেওয়ার ব্যাপারটি স্বাগত পদক্ষেপ। এই বছরের বাজেটে মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য টেলিহেলথ পরিষেবা সম্প্রসারণের উদ্দেশ্যে ২৩টি ডিজিটাল সেন্টারের একটি নেটওয়ার্ক তৈরি করতে তহবিল বরাদ্দ করা হয়েছে। এটি আই আই টি বেঙ্গালুরুর সহায়তায় নিমহানস (এন আই এম এইচ এ এন এস) থেকে পরিচালিত হবে। যদিও অধিকাংশ সাধারণ স্বাস্থ্য পরিষেবার মতোই মানসিক স্বাস্থ্য পরিষেবার ক্ষেত্রেও প্রশিক্ষিত কর্মী ছাড়াও স্থানীয় স্তরে সহযোগিতা প্রয়োজন। আশা করা যায় ভবিষ্যতে এই টেলিহেলথ কেন্দ্রগুলিকে সম্প্রসারিত করা যাবে এবং সারা দেশে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র এবং সুস্থতা কেন্দ্রগুলির মধ্যে এগুলিকে অন্তর্ভুক্ত করা যাবে।

যদিও এ ক্ষেত্রে অসংখ্য বাজার সংক্রান্ত সুযোগ বর্তমান, দেশের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সাহায্যকারী আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকে আকৃষ্ট করতে প্রয়োজনীয় আর্থিক উপকরণের অভাব রয়েছে ভারতে।

(৩) একটি স্বাগত (এবং কৌশলগত) পদক্ষেপে বাজেটে সবুজ অর্থায়ন গ্রিন বন্ডের আকারে স্থান পেয়েছে। একটি প্রধান উদীয়মান বাজার হওয়ার সুবাদে আন্তর্জাতিক শক্তি রূপান্তরকে চালিত করার সম্ভাবনা এবং উচ্চাকাঙ্ক্ষা দুইই রয়েছে ভারতের। যদিও এ ক্ষেত্রে অসংখ্য বাজার সংক্রান্ত সুযোগ বর্তমান, দেশের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সাহায্যকারী আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকে আকৃষ্ট করতে প্রয়োজনীয় আর্থিক উপকরণের অভাব রয়েছে ভারতে। ভারতের জন্য এই গুরুত্বপূর্ণ ফারাক পূরণ করার ক্ষমতা রাখে গ্রিন বন্ড।

(৪) বার্ষিক বাজেটে নগর পরিকল্পনার উপর জোর দেওয়ার ক্ষেত্রে এ কথাটি স্পষ্ট হয়েছে যে শহরগুলির জন্য সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা প্রয়োজন এবং সারা দেশে সেগুলিকে নিজে নিজে ও এলোমেলো ভাবে বাড়তে দেওয়া যাবে না যেমনটা এত দিন হয়ে এসেছে। বর্তমানে ভারত আনুমানিক ৬৫% শহুরে[খ], তবুও শহর পরিকল্পনা এবং প্রশাসনের বিষয়গুলি প্রায়শই নীতিগ্রহণের পরে বিবেচিত হয়। অনুপযুক্ত পরিকল্পনা এবং দুর্বল নগরচালনার ফলে অদক্ষ প্রশাসন এবং নাগরিকদের জন্য নিম্ন মানের জীবনধারাই পরিলক্ষিত হয়।

সর্বোপরি স্বাস্থ্য পরিষেবা ও শিক্ষা খাতে বরাদ্দ অর্থের কোনও উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি না হওয়া সত্ত্বেও এই বাজেট যথাযথ। খুব গুরুত্বপূর্ণ হলেও ভারতে স্বাস্থ্য ও শিক্ষার বৃহত্তর সমস্যার ক্ষেত্রে অর্থায়ন একটি অংশ মাত্র। জনস্বাস্থ্য এবং জনশিক্ষার জন্য তথ্য ও প্রযুক্তিগত সমাধান এবং চটজলদি ব্যবস্থার বাইরেও সামগ্রিক পরিবর্তন আনা প্রয়োজন। উদাহরণস্বরূপ বলা যায় অতিমারির পরবর্তী সময়ে ২০২১ সালের বাজেটে ভারত জুড়ে প্রতিটি জেলা হাসপাতালে সংক্রামক রোগের ওয়ার্ড তৈরি করার জন্য একটি বড় পরিকল্পনা করা হয়েছে। এই পরিকল্পনার বাস্তবায়নে বিলম্ব হলে সেটির জন্য অপ্রতুল অর্থায়ন অথবা দেশের অক্ষমতা… কোনটি দায়ী সে বিষয়ে আমাদের অবগত হতে হবে। দুর্ভাগ্যবশত, অর্থমন্ত্রীর কাছে এগুলির মধ্যে একটিরই সমাধান সূত্র বর্তমান!


[ক] সাগর, আর এবং অন্যান্য, ‘দ্য বার্ডেন অব মেন্টাল ডিজর্ডার্স অ্যাক্রস দ্য স্টেটস অফ ইন্ডিয়া: দ্য গ্লোবাল বার্ডেন অব ডিজিজ স্টাডি ১৯৯০-২০১৭’, ল্যানসেট সায়কায়াট্রি ৭, ১৪৮-১৬১ (২০২০)।

[খ] নাইট লাইটস ডেটা-র (২০১৮) উপরে ভিত্তি করে প্রতিবেদকের হিসেব।

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.