১০ মার্চ, ভারত প্রথম বারের মতো চারটি উন্নত দেশসম্পন্ন একটি পশ্চিমী গোষ্ঠীর সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) স্বাক্ষর করে। ইউরোপের একটি প্রধান অর্থনৈতিক ব্লক ইউরোপিয়ান ফ্রি ট্রেড অ্যাসোসিয়েশন (ইএফটিএ) সুইজারল্যান্ড, নরওয়ে, আইসল্যান্ড ও লিচেনস্টাইনের চারটি ইইউ-বহির্ভূত দেশ নিয়ে গঠিত। ১৩ মিলিয়নের স্বল্প জনসংখ্যা সত্ত্বেও ব্লকটির সম্মিলিত জিডিপি ১ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারেরও বেশি এবং এটি পণ্যের ক্ষেত্রে বিশ্বের নবম বৃহত্তম ব্যবসায়ী এবং পরিষেবার ক্ষেত্রে পঞ্চম বৃহত্তম স্থানে রয়েছে।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ), মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র (ইউএস), ব্রিটেন (ইউকে) এবং চিনের পরে ভারত হল গোষ্ঠীটির পঞ্চম বৃহত্তম বাণিজ্য অংশীদার এবং ২০২৩ সালে দ্বিমুখী বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ২৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। একই বছরে ভারতের তরফে ব্লকটিকে লোহা ও ইস্পাত, রাসায়নিক, মূল্যবান পাথর, যন্ত্রপাতি, সুতো, ওষুধ এবং ক্রীড়া সামগ্রী সমন্বিত পণ্যের ক্ষেত্রে করা রফতানির মোট পরিমাণ ছিল মাত্র ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। একই সঙ্গে ব্লক থেকে ভারতের আমদানির মূল্য ছিল প্রায় ২০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার - যার বেশির ভাগই ছিল সুইজারল্যান্ড থেকে সোনার পাশাপাশি কয়লা, রুপো, যন্ত্রপাতির সরঞ্জাম, প্রকৌশল পণ্য এবং চিকিৎসা সামগ্রী। এটি চারটি দেশের সঙ্গে ভারতের বিশাল বাণিজ্য ঘাটতিকেই প্রতিফলিত করে।
একই সঙ্গে ব্লক থেকে ভারতের আমদানির মূল্য ছিল প্রায় ২০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার - যার বেশির ভাগই ছিল সুইজারল্যান্ড থেকে সোনার পাশাপাশি কয়লা, রুপো, যন্ত্রপাতির সরঞ্জাম, প্রকৌশল পণ্য এবং চিকিৎসা সামগ্রী।
নতুন স্বাক্ষরিত ট্রেড অ্যান্ড ইকোনমিক পার্টনারশিপ এগ্রিমেন্ট (টিইপিএ) দ্বিমুখী বাজারে প্রবেশাধিকার বাড়াবে, রফতানি বৃদ্ধি করবে, শুল্ক হ্রাস করবে, বিনিয়োগকে উন্নত করবে, ব্যবসা, চাকরি ও স্থিতিস্থাপক সরবরাহ শৃঙ্খলের সুযোগ তৈরি করবে এবং সামগ্রিক অর্থনৈতিক সমন্বিতকরণ ও বৃদ্ধিকে আরও গভীর করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
চুক্তির জন্য আলোচনা ২০০৮ সালে শুরু হয়েছিল, ২০১৩ সালে সেটি স্থগিত হয় এবং ২১ দফার আলোচনার পর ২০২৪ সালে মার্চ মাসে তা সম্পন্ন হয়। বাণিজ্য মন্ত্রী পীযূষ গোয়েল চুক্তিটিকে ‘আধুনিক, ন্যায্য ও ন্যায়সঙ্গত’ বলে দাবি করার পাশাপাশি ব্লকের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের নিরিখে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক বলে উল্লেখ করেছেন।
চুক্তিতে কী কী রয়েছে?
টিইপিএ-র ১৪টি অধ্যায় রয়েছে, যার মধ্যে পণ্য, পরিষেবা, আদি নিয়ম, বুদ্ধিবৃত্তিগত সম্পত্তির অধিকার (আইপিআর), বিনিয়োগের প্রচার, সরকারি ক্রয় এবং প্রযুক্তিগত বাধা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। প্রথম বারের মতো ভারত একটি বাণিজ্য চুক্তির আওতায় শ্রমের মান, সামাজিক উন্নয়ন এবং পরিবেশ সুরক্ষা-সহ অ-বাণিজ্যিক দিকগুলিকেও অন্তর্ভুক্ত করেছে।
চুক্তির অধীনে ভারত তার শুল্ক লাইনের ৮২.৭ শতাংশ প্রস্তাব করেছে এবং ইএফটিএ দেশগুলি ৯২.২ শতাংশের প্রস্তাব দিয়েছে। অনুমান করা হয় যে, এই চুক্তিটি ১৫ বছরে ভারতে এক মিলিয়নেরও বেশি কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে এবং বেকারত্ব হ্রাস করবে, যা দেশের জন্য একটি মূল সমস্যা। এটি ব্লকের দেশগুলিতে দক্ষ ভারতীয় পেশাদারদের মসৃণ কাজের সুবিধার সুযোগ করে দেবে। এটি তথ্য প্রযুক্তি, অর্থায়ন, সামুদ্রিক, বিনোদনমূলক এবং পেশাদার পরিষেবাগুলির ক্ষেত্রে ভারতের পরিষেবা রফতানির পরিমাণ বৃদ্ধি করতে পারে।
চুক্তির একটি অনন্য উপাদান হল বিনিয়োগের অধ্যায়, যেখানে ইএফটিএ ব্লক ১৫ বছরে ভারতে ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারেরও বেশি বিনিয়োগ করার জন্য বাধ্যতামূলক প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। বেশির ভাগ বেসরকারি খাত থেকে বিনিয়োগ রাসায়নিক, ওষুধ, যন্ত্রপাতি, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, অবকাঠামো ও পরিবহণের মতো উত্পাদন ও শিল্প খাতে চালিত হবে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভারত ইতিমধ্যেই সুইস সংস্থাগুলিকে দেশটির রেল ক্ষেত্রে বিনিয়োগের জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছে। নবায়নযোগ্য, পরিকাঠামো, উদ্ভাবন এবং গবেষণা ও উন্নয়নে ব্লকের শক্তি ভারতের অগ্রাধিকারের পরিপূরক। চুক্তিটি প্রযুক্তিগত সহযোগিতাকে সহজতর করবে এবং ভারতকে বিশ্বমানের প্রযুক্তি ব্যবহারের সুযোগ করে দেবে।
বেশির ভাগ বেসরকারি খাত থেকে বিনিয়োগ রাসায়নিক, ওষুধ, যন্ত্রপাতি, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, অবকাঠামো ও পরিবহণের মতো উত্পাদন ও শিল্প খাতে চালিত হবে।
যাই হোক, চুক্তিটি অনুমোদিত এবং কার্যকর হতে কমপক্ষে এক বছর (বা তার বেশি) সময় লাগবে। সুইজারল্যান্ডের ক্ষেত্রে একটি দেশব্যাপী গণভোট অনুষ্ঠিত হতে পারে, যেটি আসলে ইন্দোনেশিয়া-ইএফটিএ এফটিএ-র অনুরূপ। সেই চুক্তিটি ২০১৮ সালে স্বাক্ষরিত হলেও ২০২১ সালে কার্যকর হয়েছিল।
বাণিজ্যের জন্য একটি নতুন পদ্ধতি
সাম্প্রতিক বছরগুলিতে ভারতের বাণিজ্যের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন এবং তার পূর্বকার সুরক্ষাবাদ ত্যাগ করার চেষ্টা লক্ষ করা গিয়েছে, যার ফলে ২০১৯ সালে আঞ্চলিক সর্বাত্মক অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব (আরসিইপি) চুক্তি থেকে শেষ মুহূর্তে ভারত বেরিয়ে আসে।
অর্থনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ভূ-রাজনৈতিক প্রয়োজনীয়তাগুলি বাণিজ্য চুক্তিতে বৃহত্তর উন্মুক্ততার দিকে এই পরিবর্তনের মূল চালিকাশক্তি হিসাবে কাজ করেছে। ইউরোপীয় দেশ ও ভারত উভয়ই বাণিজ্য অংশীদারদের নিরিখে বৈচিত্র্য আনতে এবং আরও ‘সমমনস্ক’ দেশের সঙ্গে সরবরাহ শৃঙ্খল পুনর্গঠন করতে চাইছে।
ভারত ক্রমবর্ধমান ভাবে বিশ্ব অর্থনীতিতে নিজেকে সমন্বিত করছে, যা অস্ট্রেলিয়া ও সংযুক্ত আরব আমিরশাহির (ইউএই) সঙ্গে স্বাক্ষরিত সাম্প্রতিক বাণিজ্য চুক্তিতে স্পষ্ট। এই গতিশীলতার সঙ্গে সমাপতিত হয়েছে বিস্তৃত অভ্যন্তরীণ সংস্কার, ব্যবসা করার সহজ পদ্ধতি এবং ২০৩০ সালের মধ্যে বার্ষিক রফতানি ১ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার বৃদ্ধি করার উচ্চাকাঙ্ক্ষা। ভারতের সাধারণ নির্বাচন এগিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে উইলসন সেন্টারের মাইকেল কুগেলম্যান যেমনটা দাবি করেছেন যে, দেশটির বাণিজ্য চুক্তিগুলিকে ‘জনগণপন্থী, ব্যবসাপন্থী, প্রবৃদ্ধিপন্থী এবং চাকরিপন্থী’ হিসাবে তুলে ধরা হচ্ছে৷
চুক্তির সীমাবদ্ধতা
চুক্তিটিকে সম্পৃক্ত সকল দেশের জন্য লাভজনক বলে দর্শানো হলেও ইএফটিএ ব্লকে বিদ্যমান নিম্ন শুল্ক হার এবং বেশির ভাগ আমদানি শুল্ক-মুক্ত ব্যবস্থাপনার আওতাভুক্ত হওয়ার দরুন পণ্য বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ভারতের সুবিধা সীমিত।
ভারতে গত দুই দশকে হওয়া ইএফটিএ-র ১১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগের মধ্যে ১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এসেছে সুইজারল্যান্ড থেকে। গ্লোবাল ট্যাক্স রিসার্চ ইনিশিয়েটিভ (জিটিআরআই) যেমন পুনরুক্তি করে, ৯১ শতাংশ পণ্যের আদান-প্রদান বা ব্যবসা ভারত ও সুইজারল্যান্ডের মধ্যেই হবে, যেটি ভারতের জন্য ব্লকের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক অংশীদার। ভারতীয় ভোক্তা ও আমদানিকারকদের জন্য শুল্ক হ্রাস সুইস চকলেট, বিস্কিট, ঘড়ি, ওয়াইন, যন্ত্রপাতি সরঞ্জাম এবং চিকিৎসা সরঞ্জামের মূল্য হ্রাস করবে। যাই হোক, সুইজারল্যান্ডে ভারতের রফতানির জন্য ইতিমধ্যে ৯৮ শতাংশ (প্রধানত শিল্প পণ্য সমন্বিত) পণ্যের ক্ষেত্রে শূন্য শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। এ ছাড়াও, ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাস থেকে সুইজারল্যান্ড সমস্ত দেশ থেকে শিল্প আমদানির জন্য শুল্ক বাদ দেওয়ার নীতি আরোপ করেছে, যা ভারতীয় রফতানিকারকদের সুবিধাগুলিকে সীমিত করে দেবে।
গ্লোবাল ট্যাক্স রিসার্চ ইনিশিয়েটিভ (জিটিআরআই) যেমন পুনরুক্তি করে, ৯১ শতাংশ পণ্যের আদান-প্রদান বা ব্যবসা ভারত ও সুইজারল্যান্ডের মধ্যেই হবে, যেটি ভারতের জন্য ব্লকের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক অংশীদার।
অন্য দিকে, ইএফটিএ দেশগুলির জন্য যে সুবিধাগুলি সুস্পষ্ট তা হল, ১.৪ বিলিয়ন মানুষের একটি সুবিশাল বাজারে এবং এর দ্রুত ক্রমবর্ধমান মধ্যবিত্ত শ্রেণির কাছে বৃহত্তর প্রবেশাধিকার। এই চুক্তির ফলে ভারত সুইজারল্যান্ড থেকে ৯৫ শতাংশ শিল্প পণ্যের উপর আংশিক ভাবে শুল্ক প্রত্যাহার করবে এবং সুইস পণ্যের আমদানি বৃদ্ধি করবে। নরওয়ের শিল্পমন্ত্রী জ্যান ক্রিশ্চিয়ান ভেস্ত্রের মতে, এই চুক্তিটি নরওয়েজিয়ান পণ্যের উপর প্রায় শূন্য আমদানি কর আরোপ করবে, যা বর্তমান ৪০ শতাংশ কর হারের তুলনায় অনেকটাই কম। এই ভাবে ভারতীয় শুল্ক হ্রাস এবং বর্ধিত বাজারে প্রবেশাধিকারের কারণে এই চুক্তিটি ভারতীয় রফতানির পরিবর্তে ভারতে ইএফটিএ-র রফতানিকে আরও ইতিবাচক ভাবে প্রভাবিত করবে। তা সত্ত্বেও, সুইজারল্যান্ড থেকে সোনা আমদানিকে - যা ভারত-ইএফটিএ বাণিজ্যের ৮০ শতাংশের বেশি - শুল্ক হ্রাসের আওতা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।
সর্বোপরি দুধ, কয়লা এবং সয়াবিনের মতো বেশ কিছু সংবেদনশীল ভারতীয় পণ্যের পাশাপাশি কৃষি পণ্যগুলি চুক্তির সুযোগের বাইরে রয়ে গিয়েছে। কর্মসংস্থানের ৪১ শতাংশের জন্য দায়বদ্ধ কৃষি ক্ষেত্রটি ভারতে জীবিকা নির্বাহের সবচেয়ে বড় উৎস এবং ২০১৮ সালে সর্বাত্মক কৃষি রফতানি নীতি চালু হওয়ার পর থেকে এই ক্ষেত্রে রফতানি দ্রুত বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার কৃষি রফতানিকারকদের শীর্ষ ১০ তালিকায় ভারতকে অন্তর্ভুক্ত করায়, ভারত তার কৃষি রফতানি আরও বাড়িয়ে ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। এই উচ্চাকাঙ্ক্ষা সত্ত্বেও ভারতীয় পণ্য ইউরোপীয় কৃষি পণ্য দ্বারা প্রতিস্থাপিত হওয়ার ভয় দীর্ঘ দিন ধরে এই ক্ষেত্রটিকে বাণিজ্য আলোচনায় সবচেয়ে বিতর্কিত করে তুলেছে। ভারতে বিদ্যমান বিক্ষোভ এবং কৃষকরা একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনী উপাদান হওয়ায় ভারত এই ক্ষেত্রের উন্মুক্ততাকে প্রতিরোধ করেছে। উপরন্তু, ইউরোপীয় মান এবং নিরাপত্তার গুণমানের সঙ্গে সম্মতিও একটি বড় চ্যালেঞ্জ।
ভারতে বিদ্যমান বিক্ষোভ এবং কৃষকরা একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনী উপাদান হওয়ায় ভারত এই ক্ষেত্রের উন্মুক্ততাকে প্রতিরোধ করেছে।
চুক্তির বিনিয়োগ বিভাগটি তাৎপর্যপূর্ণ হলেও ইএফটিএ দেশগুলির প্রতিশ্রুতি থেকে পেনশন এবং সার্বভৌম সম্পদ তহবিলকে বাদ দেওয়া হয়েছে। তদুপরি, বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের একটি মূল্যায়ন অনুসারে, এফডিআই বাস্তবায়িত হওয়ার জন্য আগামী ১৫ বছরে ভারতের স্বল্প জিডিপি-কে ৯ শতাংশের বেশি বৃদ্ধি করতে হবে।
অন্যান্য চুক্তির জন্য নকশা?
সাম্প্রতিক বছরগুলিতে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিস্তৃত সহযোগিতার মাধ্যমে ইউরোপীয় দেশগুলির সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক দৃঢ় হয়েছে। অর্থনৈতিক সম্পৃক্ততার গভীরতা একটি স্বাভাবিক অগ্রগতি। বিনিয়োগের অংশটি তাৎপর্যপূর্ণ হলেও চুক্তিটি ভারতীয় অর্থনীতির জন্য যথেষ্ট বাণিজ্যক সুবিধা আনবে কি না এবং প্রচলিত বাণিজ্য ভারসাম্যহীনতার সংশোধন করবে কি না, তা সময় বলবে।
আরও প্রতীকী স্তরে, ইউরোপীয় দেশগুলির একটি উন্নত ব্লকের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি চূড়ান্ত করার ভারতের ক্ষমতা আশাব্যঞ্জক, বিশেষ করে ব্রিটেন এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে ভারতের বিদ্যমান আলোচনার প্রেক্ষিতে এ কথা বলা যায়। তবুও ইএফটিএ চুক্তিটি অপেক্ষাকৃত বৃহৎ ইইউ-ভারত এফটিএর জন্য কোনও নকশা প্রদান করবে না, যা সম্পৃক্ত বাজারের আকার এবং জটিলতার কারণে আরও জটিলতর হয়ে পড়েছে।
ইএফটিএ চুক্তি থেকে কৃষিকে বাদ দেওয়ার অর্থ হল - যা ইইউ-ভারত চুক্তির জন্য আলোচনার বিষয় - এই বাধা অতিক্রম করার জন্য এবং আরও উল্লেখযোগ্য চুক্তিতে স্বাক্ষর করার জন্য আরও বেশি সচেষ্ট হতে হবে। ইতিবাচক ভাবে দেখলে, শ্রমের গুণমান এবং এই জাতীয় অন্য বিধানগুলি অন্তর্ভুক্ত করার জন্য ভারতের সম্মতি তাত্পর্যপূর্ণ। কারণ ইইউ-এর জন্য এই বিষয়গুলি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তা ছাড়া, বিনিয়োগের উপাদানটি ভারতের বাজারে প্রবেশাধিকারের বিনিময়ে অন্য উন্নত দেশগুলির সঙ্গে চুক্তির নজির স্থাপন করতে পারে।
আপাতত, ভারত ইএফটিএ চুক্তিটিকে নিয়ে সন্তুষ্ট হলেও ইইউ-এর সঙ্গে একটি এফটিএ চুক্তি সাধন করাই ভারতের প্রধান লক্ষ্য হওয়া জরুরি।
শায়রী মলহোত্র অবজার্ভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের অ্যাসোসিয়েট ফেলো।
The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.