-
CENTRES
Progammes & Centres
Location
শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমসিংহে যে দ্বীপদেশটির উত্তর জলসীমায় ভারতীয় জেলেদের দ্বারা ‘অবৈধ মৎস্য শিকার’-এর সমস্যার ‘এককালীন ও চূড়ান্ত সমাধান’ করতে চাইছেন, তার প্রেক্ষিত বোঝা জরুরি। বিক্রমসিংহের ভাবনায় ভাগ করে নেওয়া / সহযোগিতামূলক মৎস্য শিকারের আকারে যে কোনও ধরনের বিনিময় জড়িত থাকার ধারণা সংক্রান্ত ভারতীয় অনুমান ভিত্তিহীন। বরং পরিবর্তে প্রেসিডেন্ট ভারতীয় বটম-ট্রলার এবং পার্স সেন জাল ব্যবহার করে চোরা শিকার নিষিদ্ধ করার বিষয়ে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। উল্লিখিত দু’টি উপাদানের ব্যবহার উভয় দেশেই নিষিদ্ধ এবং মনে হচ্ছে, প্রেসিডেন্ট এ বিষয়ে চূড়ান্ত পদক্ষেপ নিতে বদ্ধপরিকর।
সূত্র অনুসারে, প্রেসিডেন্ট বিক্রমসিংহে এ বিষয়ে সচেতন যে, ‘সমস্যাটি অবিরাম বেড়ে চলেছে এবং তা উভয় দেশের সরকারকে লজ্জার মুখে ফেলছে’। এর পর তিনি ভারত সরকারের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করার জন্য বিশেষজ্ঞ সমন্বিত শ্রীলঙ্কার প্রতিনিধি দলকে নেতৃত্ব প্রদানের জন্য প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ের চিফ অফ স্টাফ সাগালা রত্নায়েকের নাম উল্লেখ করেছেন।
বিক্রমসিংহের ভাবনায় ভাগ করে নেওয়া / সহযোগিতামূলক মৎস্য শিকারের আকারে যে কোনও ধরনের বিনিময় জড়িত থাকার ধারণা সংক্রান্ত ভারতীয় অনুমান ভিত্তিহীন।
শ্রীলঙ্কার প্রতিনিধিদলের ধরন এবং তাদের বৈঠকের স্থান এখনও পর্যন্ত অস্পষ্ট। তবে নয়াদিল্লিতে উচ্চ পর্যায়ের আনুষ্ঠানিক আলোচনায় যোগদানের আগে যদি শ্রীলঙ্কার প্রতিনিধিদল স্থানীয় কর্মকর্তা ও মৎস্যজীবী গোষ্ঠীর সঙ্গে আলোচনার জন্য প্রথমে চেন্নাইতে অবতরণ করেন, তা হলে তা কার্যকরী হবে।
উৎসব বয়কটের ডাক
তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্টালিন এবং পুদুচেরির মুখ্যমন্ত্রী এন রঙ্গস্বামী উভয়েই শ্রীলঙ্কা নৌবাহিনী (এসএলএন) দ্বারা ভারতীয় জেলেদের গ্রেফতার এবং/অথবা হয়রানি করার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং বিদেশমন্ত্রী (ইএএম) ডক্টর এস জয়শঙ্করকে চিঠি লিখেছেন। এর পাশাপাশি ব্যাপক জরিমানা ও কারাগার বাসের বিধান প্রদানকারী শ্রীলঙ্কার দেশীয় আইনের আওতায় দামী ভারতীয় জাহাজ এবং যন্ত্রাংশ আটক করার বিষয়টি সম্পর্কেও চিঠিতে জানানো হয়েছে। তাঁদের পূর্বসূরিরাও তাঁদের সময়ে তদানীন্তন প্রধানমন্ত্রী ও বিদেশমন্ত্রীদের এ বিষয়ে অবগত করেছিলেন। তামিল মৎস্যজীবীদের মতে, বাস্তব পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে।
তবুও, আন্তর্জাতিক সামুদ্রিক সীমারেখা (আইএমবিএল) লঙ্ঘন করে ‘চোরা মৎস্য শিকার’ সংক্রান্ত ঘটনায় অতীতে শ্রীলঙ্কার এক আদালত ভারতীয় মৎস্যজীবীদের সাজা দেয়। এই ঘটনার প্রতিবাদে এই বছর ক্ষুদ্র কাচ্চাতিভু দ্বীপে বার্ষিক সেন্ট অ্যান্টনি গির্জার উৎসব বয়কট করার তামিলনাড়ুর মৎস্যজীবীদের সিদ্ধান্ত প্রশ্নাতীত নয়। এর কারণ প্রথমে তামিলনাড়ু সরকার এবং পরে ভারত সরকার শ্রীলঙ্কা সরকারের উপর চাপ প্রয়োগ করতে বাধ্য হয়েছিল যাতে ২০০৯ সালে শ্রীলঙ্কার ‘এলটিটিই যুদ্ধ’ শেষ হওয়ার কয়েক দশক পরে হতে চলা এই উৎসবে তাদের অংশগ্রহণ সুনিশ্চিত করা যায়।
কাচ্চাতিভুগামী জেলে সম্প্রদায় এবং অন্যান্য তীর্থযাত্রীদল এই বছর জনসমক্ষে প্রতিবাদ করেন। কারণ ট্রলার-মৎস্যজীবীরা একতরফা ভাবে বয়কটের কথা ঘোষণা করেছিলেন এবং কোস্ট গার্ডের সহায়তায় সংশ্লিষ্ট মানুষজনের চলাচলে সহায়তা প্রদানকারী সরকার এই বছরের তীর্থযাত্রা বাতিল করে দিয়েছিল।
এমনটা অসম্ভব নয় যে, ভবিষ্যতে শ্রীলঙ্কা সরকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের মাঝেই ইতিমধ্যে উত্তেজনাপূর্ণ অঞ্চলে নতুন চাপের সূচনা করে বার্ষিক উত্সবের ভবিষ্যৎ সংস্করণে ভারতীয় মৎস্যজীবীদের অংশগ্রহণকে বাধা দিতে এই বছরের বয়কটের কথা দর্শাতে পারে। তেমনটা না ঘটলেও কাচ্চাতিভুগামী জেলে সম্প্রদায় এবং অন্যান্য তীর্থযাত্রীদল এই বছর জনসমক্ষে প্রতিবাদ করেন। কারণ ট্রলার-মৎস্যজীবীরা একতরফা ভাবে বয়কটের কথা ঘোষণা করেছিলেন এবং কোস্ট গার্ডের সহায়তায় সংশ্লিষ্ট মানুষজনের চলাচলে সহায়তা প্রদানকারী সরকার এই বছরের তীর্থযাত্রা বাতিল করে দিয়েছিল।
বটম-ট্রলিং (মৎস্য শিকারের এক বিশেষ পদ্ধতি)
এই জটিল সমস্যার একাধিক স্তর রয়েছে এবং ‘চূড়ান্ত সমাধান’ করার আগে সেই সমস্যা সম্পূর্ণ রূপে বোঝা ও স্বীকার করা জরুরি… তা সেই সমস্যা যা-ই হোক না কেন। প্রাথমিক ভাবে, সমস্যাটি দুই দেশের তামিলভাষী জেলেদের সঙ্গে সম্পর্কিত। সাধারণ পরিস্থিতিতে এই দু’টি দল প্রজন্ম এবং শতাব্দী ধরে একে অপরের সঙ্গে ‘নাড়ির টান’-এ যুক্ত। কিন্তু যখন জীবিকার সমস্যা প্রকট হয়, তখন এই টান ছিন্ন হয়ে যায়।
এ ভাবে, শ্রীলঙ্কার তামিল (এসএলটি) মৎস্যজীবীরা উত্তরে ও কখনও কখনও পূর্বে আন্তর্জাতিক সামুদ্রিক সীমারেখা (আইএমবিএল) লঙ্ঘন ও শ্রীলঙ্কার প্রাপ্য মাছ থেকেই ‘নির্বিচারে শিকার’-এর কারণে দক্ষিণ তামিলনাড়ু ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল পুদুচেরির কারাইকাল ছিটমহলের ভারতীয় মৎস্যজীবীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছে। অবিলম্বে ভারতীয় জেলেরা তাঁদের ছোট জাহাজ এবং মাছ ধরার জাল নষ্ট করে ফেলেন। মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদে তাঁদের ঐতিহ্যগত মাছ ধরার ক্ষেত্রগুলি, বিশেষ করে প্রবাল প্রাচীর - যেখানে দামী চিংড়ি বাসা বাঁধে – ব্যাপক ধ্বংসের কারণ হতে পারে, যার ফলে মাছের মজুদ আরও হ্রাস পাবে।
সাধারণ পরিস্থিতিতে এই দু’টি দল প্রজন্ম এবং শতাব্দী ধরে একে অপরের সঙ্গে ‘নাড়ির টান’-এ যুক্ত। কিন্তু যখন জীবিকার সমস্যা প্রকট হয়, তখন এই টান ছিন্ন হয়ে যায়।
এসএলটি মৎস্যজীবী এবং তাঁদের সংগঠনের মতে - যারা পর্যায়ক্রমিক ভাবে সংগঠিত প্রতিবাদ চালিয়ে এসেছে - ভারতীয় মৎস্যজীবীরা ইতিমধ্যেই খারাপ বলে পরিচিত বাণিজ্যিক অনুশীলনের কারণে পক উপসাগরে শ্রীলঙ্কার মৎস্যভাণ্ডারে ক্ষয় ঘটিয়েছে। অতীতের আলোচনার মাধ্যমে তাঁরা ভারতীয় মৎস্যজীবীদের নিজেদের জলসীমায় প্রবেশ করতে দেওয়ার বিষয়ে বিবেচনা করতে সম্মত হয়েছিলেন শুধু এই শর্তে যে, ভারতীয় মৎস্যজীবীরা আর বটম-ট্রলিং (মাছ ও কাঁকড়া ধরার এক বিশেষ পদ্ধতি) করবেন না। পূর্ব সম্মত সুযোগের সময়সীমা এসে চলেও গিয়েছে। কিন্তু বাস্তব পরিস্থিতি বদলায়নি।
দুই জাতীয় সরকার সংশ্লিষ্ট মৎস্যজীবী সম্প্রদায়ের দুর্দশার জন্য কার্যকরী, বন্ধুত্বপূর্ণ এবং সৌহার্দ্যমূলক সমাধান খুঁজে বের করার চেষ্টা চালাচ্ছে। এই প্রেক্ষাপটে ভারতও নিজেদের জেলেদের জীবিকার সমস্যার স্থায়ী সমাধানের জন্য ক্রমশ সজাগ হয়ে উঠেছে। এই মৎস্যজীবীরা প্রজন্ম ও শতাব্দীব্যাপী এই জলরাশিতে মৎস্যশিকার করে এসেছে। এটি আন্তর্জাতিক ভাবে স্বীকৃত ধারার আওতাভুক্ত। সেখানে বলা হয়েছে যে, রাজনৈতিক ভাবে সৃষ্ট সীমানা যেমন মৎস্যজীবীদের কার্যকলাপকে খর্ব করতে পারে না, ঠিক যেমনই মৎস্যজীবীরা কৃত্রিম ভাবে সৃষ্ট আইএমবিএল জুড়ে মাছের চলাচলকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না।
তা সত্ত্বেও ভারতে বটম-ট্রলিংয়ের সমস্যাটি সক্রিয় এবং এই অনুশীলন শ্রীলঙ্কার মতো দেশে এখন নিষিদ্ধ। তবে ভারতে এই আইনের প্রয়োগটি শিথিল, যার ফলে শ্রীলঙ্কার তামিল মৎস্যজীবীরা (দেশের উপকূলে অন্যত্র সিংহলি মৎস্যজীবীদের মতো) তাদের নিজস্ব আঞ্চলিক জলসীমায় নিজেদের জন্য বটম-ট্রলিং সুবিধার দাবি করে চলেছে। ভবিষ্যতে এটি একটি সুবিশাল সমস্যা হয়ে উঠতে পারে।
আঞ্চলিক অখণ্ডতা
১৯৭৪ এবং ১৯৭৬ সালে হওয়া দু’টি চুক্তির মাধ্যমে ভারত ও শ্রীলঙ্কা ইউএন কনভেনশন অন দ্য ল অব দ্য সি-এর (আনক্লজ) অধীনে আইএমবিএল-কে চিহ্নিত করেছিল। এর ফলে ভারতীয় জেলেদের অন্য দিকে পারাপারের বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছিল। ১৯৬৬ সালে ভারতীয় টাকার অবমূল্যায়নের পর অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার কর্মসূচির অংশ হিসাবে ভারত তখনও নরওয়ের অর্থায়িত বটম-ট্রলিং চালু করতে পারেনি। তাই বর্তমান সমস্যাগুলি তখনও এত প্রকট হয়ে ওঠেনি।
আইএমবিএল-এর লঙ্ঘন এবং ‘চোরা শিকার’ সেই সময়ে প্রায় অজানাই ছিল। কারণ এ হেন প্রয়োগকারী উভয় পক্ষেই শিথিল ছিল। যাই হোক, প্রাক-ট্রলিং ও প্রাক-আইএমবিএল যুগেও মাঝে মাঝে দুই দেশের জেলেদের মধ্যে মাঝ-সমুদ্রে ঘটা সংঘর্ষের খবর পাওয়া যেত। সেই সংঘর্ষগুলিতে এমন আচরণ করা হত, যেমনটা সেই সময়ে তো বটেই এবং এমনকি এখনও মাঝ-সমুদ্রে ও তামিলনাড়ু জুড়ে উপকূল বরাবর জেলেদের গ্রামগুলিতে প্রায়শই ঘটে থাকে।
আইএমবিএল-এর লঙ্ঘন এবং ‘চোরা শিকার’ সেই সময়ে প্রায় অজানাই ছিল। কারণ এ হেন প্রয়োগকারী উভয় পক্ষেই শিথিল ছিল।
তার পরে শ্রীলঙ্কায় আসে তামিল জঙ্গিবাদের যুগ, যার একটি মূল উপাদানই ছিল সামুদ্রিক/ ‘নৌ’ ব্যবস্থা এবং নতুন শতকে এসএলএন ক্ষমতায় আসার আগে পর্যন্তও যেখানে এলটিটিই-র ‘সি টাইগারস’ প্রকাশ্যেই আধিপত্য বিস্তার করেছিল। ২০০৯ সালে জাতিগত যুদ্ধের সমাপ্তির অর্থ ছিল প্রথমে ভারতীয় মৎস্যজীবীদের প্রত্যাবর্তন এবং পরে শ্রীলঙ্কার মৎস্যজীবীরা তা অনুসরণ করেছিল।
শ্রীলঙ্কার তামিল সম্প্রদায়ের মধ্যে থেকে ‘সি টাইগারস’-সদৃশ আচরণের সম্ভাব্য পুনরুত্থান রোধ করার জন্য ও গত কয়েক দশক যাবৎ পক বে-তে ভারতের জেলেদের দমন করার উদ্দেশ্যে সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষা করার নামে এসএলএস এর আগেও আক্রমণ হানা বা গুলি চালানোর জন্য পরিচিত ছিল এবং এর ফলে মাঝে মাঝে মৃত্যুও হয়েছে। গত কয়েক দশকে এবং আরও বেশি সময় ধরে এ হেন পদ্ধতিতে মৃত্যুর সংখ্যা কম হলেও গ্রেফতারের সংখ্যা এবং আদালতের নির্দেশিত শাস্তির সংখ্যা ক্রমশ বেড়েছে।
২০১৮ সালে বর্তমান প্রেসিডেন্ট বিক্রমসিংহে যখন প্রধানমন্ত্রী ছিলেন, তখন একজন প্রবীণ তামিল সাংসদ এম এ সুমন্থিরনের নামাঙ্কিত একটি প্রাইভেট মেম্বার বিলকে সরকার চোরাকারবারিদের শাস্তি বাড়ানোর কাজে গ্রহণ করেছিল। এটি ছিল বর্তমানে মৎস্যমন্ত্রী ও তদানীন্তন সহ তামিল সাংসদ ডগলাস দেবানন্দ সম্পর্কিত প্রতিযোগিতামূলক রাজনীতি। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীই এখন প্রেসিডেন্ট এবং এই বাস্তবতা ভুলে যাওয়া সম্ভব নয়।
কাচ্চাতিভু সমস্যা
আইএমবিএল চুক্তি থেকেই উদ্ভূত হয়েছে কাচ্চাতিভু সমস্যা, যেখানে ভারত আনক্লজ-এর মিডিয়ান লাইন মার্কার বা মধ্যরেখা সূচক থেকে সরে আসতে সম্মত হয়েছে এবং একই সঙ্গে এ হেন এক সহিংস লঙ্ঘনে সম্মত হয়েছে, যা কাচ্চাতিভুকে শ্রীলঙ্কার দিকে ঠেলে দিয়েছে। ৯০-এর দশকের গোড়ার দিকে তামিলনাড়ু সরকার দাবি করেছিল যে, দ্বীপটি জেলেদের বচসার একটি কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে। যদিও রামেশ্বরমের মৎস্যজীবীরা মনে করেছিলেন যে, উল্লিখিত জলরাশিতে তেমন মাছ ছিল না।
এক দশক আগে বিরোধের সমস্ত প্রেক্ষিত বিবেচনা করে ভারত ও তামিলনাড়ু সরকার একসঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত ভারতীয় মৎস্যজীবীদের ‘গভীর সমুদ্রে মাছ ধরা’র প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য একটি কর্মসূচি চালু করে এবং তাদের বহু দিন ধরে মাছ ধরার জন্য প্রয়োজনীয় লং-লাইনার কিনতে উৎসাহিত করার উদ্দেশ্যে যথেষ্ট তহবিল বরাদ্দ করেছিল। কর্মসূচিটি অবশ্য বাস্তবায়িত হয়নি। কারণ শ্রীলঙ্কার বিরোধের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা ‘রামেশ্বরম এলাকার মৎস্যজীবী’রা চিরাচরিত ভাবে এক রাতের বেশি সমুদ্রে কাটানোর জন্য অভ্যস্ত নন। কেন্দ্রে ও রাজ্যে রাজনৈতিক পরিবর্তন এবং ২০১৭ সালে ‘ঘূর্ণিঝড় ওখি’র আবির্ভাব – যার ফলে কন্যাকুমারী জেলার দক্ষিণতম প্রান্ত ও সংলগ্ন দক্ষিণ কেরলের বহু সংখ্যক মৎস্যজীবীর মৃত্যু হয় - এই কর্মসূচিতে বাধা সৃষ্টি করেছিল।
কর্মসূচিটি অবশ্য বাস্তবায়িত হয়নি। কারণ শ্রীলঙ্কার বিরোধের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা ‘রামেশ্বরম এলাকার মৎস্যজীবী’রা চিরাচরিত ভাবে এক রাতের বেশি সমুদ্রে কাটানোর জন্য অভ্যস্ত নন।
বর্তমানে ভারতের কাছে নষ্ট করার মতো সময় নেই। দূরবর্তী উপসাগরীয় দেশগুলিতে দক্ষিণ তামিলনাড়ুর জেলেদের পর্যায়ক্রমিক গ্রেফতার ছাড়াও মলদ্বীপের জলসীমায় ভারতীয় মৎস্যজীবীদের গ্রেফতারের হার বৃদ্ধি পেয়েছে। এই সমস্যাকে দ্বিপাক্ষিক রাজনৈতিক চাপানউতোরের সঙ্গে একই পঙ্ক্তিতে ফেলা ঠিক হবে না। গত বছরের শেষের দিকে ‘ভারত-বান্ধব’ প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ সোলিহের ক্ষমতায় থাকার শেষের দিনগুলিতে মলদ্বীপের জাতীয় প্রতিরক্ষা বাহিনী (এমএনডিএফ) তামিলনাড়ু থুথুকুডিতে তাদের জলরাশিতে চোরাশিকারের ঘটনার দরুন একটি ভারতীয় মাছ ধরার জাহাজের উপর ২.২৭ কোটি ভারতীয় টাকার সমতুল্য পরিমাণ শুল্ক আরোপ করেছিল। অতি সম্প্রতি, এমএনডিএফ নিয়ম লঙ্ঘনের জন্য আর একটি ভারতীয় মাছ ধরার জাহাজকে আটক করেছে।
শ্রীলঙ্কার জলসীমায় ভারতীয় জেলেদের জন্য স্বীকৃত মৎস্য শিকার-সহ যে কোনও ধরনের সহযোগিতামূলক মৎস্য শিকারের পথের সন্ধান শুনতে সহজ লাগলেও, আদতে তা নয়। শ্রীলঙ্কা সরকার ও দ্বীপদেশটির মৎস্যজীবীরা কেউই এই ধরনের নিয়মের সঙ্গে সম্মত হবে না যতক্ষণ না ভারতীয় জেলেরা বটম ট্রলার ও পার্স সেন জালের ব্যবহার বন্ধ করেন। এর ফলে গভীর সাগরে মাছ ধরার বিষয়টিই একমাত্র কার্যকর বিকল্প হয়ে ওঠে, যেখানে ভারতের সরকারকে ক্ষতিগ্রস্ত জেলেদের অর্থায়ন, প্রশিক্ষণ ও উৎসাহ প্রদানের জন্য আরও ব্যাপক ও অবিরাম প্রচেষ্টা চালাতে হবে। এর ফলে গভীর সমুদ্রে মৎস্য শিকার ট্রলারের পরিবর্তে অন্যতম বিকল্প হয়ে উঠবে। এই প্রক্রিয়ার সূচনা ঘটেছিল ছয়ের দশকে এবং সেই সময়ে এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে উঠলেও বর্তমানে মৎস্যজীবীদের কাছে এমনটা ছাড়া আর কোনও বিকল্প নেই।
এন সত্য মূর্তি চেন্নাইভিত্তিক নীতি বিশ্লেষক এবং রাজনৈতিক ভাষ্যকার।
The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.
N. Sathiya Moorthy is a policy analyst and commentator based in Chennai.
Read More +