Published on Apr 21, 2023 Updated 0 Hours ago

নয়াদিল্লি আইএমবিএল ও ইউএনসিএলওএস বিজ্ঞপ্তির বিপরীতে প্রকৃত পরিস্থিতির বাস্তবতা নিয়ে সজাগ, এবং ভারত সরকারের কাছে সমস্যাটি শ্রীলঙ্কার জেলেদের মতোই এ দেশের জেলেদের জীবিকার সমস্যা

কেন লাইসেন্স প্রকল্প ভারত–শ্রীলঙ্কা জেলেদের বিরোধ সমাধানের পথ নয়

শ্রীলঙ্কার জলসীমায় দক্ষিণ তামিলনাড়ুর মৎস্যজীবীদের লাইসেন্সের ভিত্তিতে মাছ ধরতে দেওয়ার জন্য প্রতিবেদিত ভারতীয় প্রস্তাবটি সে দেশের নর্দার্ন প্রভিন্সের তামিল জেলেদের কঠোর প্রতিরোধের মুখে   খারিজ হয়ে যেতে পারে। দল নির্বিশেষে শ্রীলঙ্কার পার্লামেন্ট সদস্যেরা–সহ নর্দার্ন প্রভিন্সের রাজনীতিবিদেরা সেখানকার জেলেদের সমর্থনে এককাট্টা। এর পর উভয় সরকারের সমর্থনে এবং শ্রীলঙ্কার মৎস্যমন্ত্রী ডগলাস দেবানন্দের উদ্যোগে ৩–৪ মার্চ বার্ষিক সেন্ট অ্যান্টনি’স চার্চ ভোজের সময় কাচ্ছাটিভু দ্বীপে দুই দেশের মৎস্যজীবীদের একটি বৈঠক হয়েছে।

নয়াদিল্লি একটি লাইসেন্স প্রকল্পের প্রস্তাব করেছিল, এবং শ্রীলঙ্কার বিদেশমন্ত্রী আলি সাবরি ফেব্রুয়ারিতে সে দেশের পার্লামেন্টকে বলেছিলেন অফিসারদের মধ্যে এবং স্থানীয় জেলেরা যাঁরা এর দ্বারা প্রভাবিত হতে পারেন তাঁদের সঙ্গে অভ্যন্তরীণ আলোচনার পরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এ কথা তিনি বলেছিলেন সে দেশে সফররত তাঁর ভারতীয় সমকক্ষ এস জয়শঙ্করের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করার পরেই। পরে বিষয়টি নিয়ে ফের আলোচনা হয় যখন ভারতের মৎস্য প্রতিমন্ত্রী এল মুরুগানের সঙ্গে শ্রীলঙ্কার উত্তরাঞ্চলের জাফনা শহরে সে দেশের মন্ত্রী ডগলাস দেবানন্দের দেখা হয়। প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমসিংহে সম্প্রতি ভারতের অর্থায়নে জাফনা সংস্কৃতি কেন্দ্রের উদ্বোধন করার সময় তাঁরা দু’‌জন সেখানে উপস্থিত ছিলেন।

মৎস্য সমস্যাটি দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের দীর্ঘস্থায়ী উপদ্রব, এবং মন্ত্রী দেবানন্দ বলেছেন যে প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমসিংহে ‘‌‌শীঘ্রই নয়াদিল্লি সফরে’‌ গেলে এই বিষয়টি নিয়ে আরও আলোচনা হবে।

মন্ত্রী আলি সাবরি এবং দেবানন্দের আলোচনায় স্পষ্ট হয়েছিল যে শ্রীলঙ্কা ভারতীয় জেলেদের সে দেশের জলসীমায় মাছ ধরার অনুমতি দেওয়ার যে কোনও ব্যবস্থা বিবেচনা করতে পারে, যদি এবং শুধুমাত্র ভারত ‘‌ধ্বংসাত্মক’‌ বটম ট্রলার ও সহযোগী সরঞ্জামগুলি (পার্স সেইনের মতো জাল) নিষিদ্ধ করে, এবং সেই নিষেধাজ্ঞা রূপায়িত করে। সাবরি বিশেষত দেশের স্থানীয় (তামিল) জেলেদের সঙ্গে এই সমস্যাটি নিয়ে আলোচনার প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিয়েছিলেন, এবং শ্রীলঙ্কার জলসীমায় ভারতীয় মাছ ধরার জাহাজগুলিকে কত দূর যাওয়ার অনুমতি দেওয়া যেতে পারে তাও নির্ধারণ করতে হবে বলে জানিয়েছিলেন। তিনি বলেন সব কিছু স্থির হলে সরকার তখন ভারতীয় মৎস্যজীবীদের কাছ থেকে সংগৃহীত লাইসেন্স ফি শ্রীলঙ্কার জেলেদের মধ্যে বিতরণ করার কথা বিবেচনা করতে পারে।

নিঃশেষিত স্থানীয় মজুত

মৎস্য সমস্যাটি দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের দীর্ঘস্থায়ী উপদ্রব, এবং মন্ত্রী দেবানন্দ বলেছেন যে প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমসিংহে ‘‌‌শীঘ্রই নয়াদিল্লি সফরে’‌ গেলে এই বিষয়টি নিয়ে আরও আলোচনা হবে। আলাদাভাবে, কলম্বোতে, বিদেশমন্ত্রী বলেছিলেন যে প্রস্তাবটি আলোচনার সময় স্থানীয় জেলেদের স্বার্থরক্ষা সরকারের অগ্রাধিকার পাবে।

বছরের পর বছর ধরে মাছ ধরার সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করার জন্য একাধিক উপায় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। সমস্যার কেন্দ্রবিন্দু হল এই জায়গাগুলিতে মাছ ধরার প্রাক–স্বাধীনতাকালীন ইতিহাস, যখন উভয় দেশই অভিন্ন ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের অধীনে ছিল। তখনও সময়ে সময়ে এই সমস্যাটি উত্থাপিত হয়েছিল। স্বাধীনতা–পরবর্তী সময়ে ষাটের দশকে যখন ভারত (এবং শ্রীলঙ্কাও) এক বিশাল অর্থনৈতিক সঙ্কটের সম্মুখীন হতে শুরু করে, তখন সরকার আরও বেশি সামুদ্রিক পণ্য রফতানির মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়ানোর উপায় হিসাবে পশ্চিমে প্রচলিত বটম–ট্রলিং কৌশল গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নেয়। দেশের অন্যান্য স্থানের সঙ্গে তামিলনাড়ুর দক্ষিণ উপকূলরেখা জুড়ে স্থানীয় জেলেদের সাহায্য ও প্রশিক্ষণ দিতে নরওয়ে প্রস্তুত ছিল।

সেই সময়টা ছিল এমন এক সময় যখন দুই সরকার ইউএনক্লস–১–এর আওতায় আন্তর্জাতিক সমুদ্রসীমা রেখা (আইএমবিএল) নিয়ে আলোচনা শুরু করেছিল, যার ফলে ১৯৭৪ ও ১৯৭৬ সালে সীমান্ত রেখা চুক্তি হয়েছিল। ইতিমধ্যে দক্ষিণ রামেশ্বরম অঞ্চলের ভারতীয় জেলেরা তটের কাছাকাছি ভারতের জলে মজুত রপ্তানিযোগ্য বাগদা চিংড়ির (‌শ্রিম্প)‌ সম্পদ নিঃশেষিত করে আরও চিংড়ি  ধরার জন্য শ্রীলঙ্কার উত্তরাঞ্চলের উপকূলীয় জলে চলে যাচ্ছিল, এবং এইভাবে জাফনা উপকূলের কাছাকাছি পৌঁছে যাচ্ছিল।

ইতিমধ্যে শ্রীলঙ্কায় জাতিগত যুদ্ধের কারণে, যার জন্য এলটিটিই–র একটি শক্তিশালী ‘সি টাইগারস’ শাখা এবং স্থানীয় সমর্থন ছিল, কলম্বো সরকার উত্তর ও পূর্বের তামিল জেলেদের মাছ ধরা নিষিদ্ধ করেছিল।

তবে অতীতের সঙ্গে একটা পার্থক্য ছিল। যদিও উভয় দেশের জেলেরা প্রাচীনকাল থেকে একে অন্যের জলে মাছ ধরছিল এবং তাদের পরিবারগুলিও সেখানে বসতি স্থাপন করেছিল, তাদের কাছে ছিল বিভিন্ন ধরনের পুরনো চিরাচরিত জলযান, যা সাম্প্রতিক সময়ে প্রতিস্থাপিত হয়েছে যান্ত্রিক মাছ ধরার নৌকা দিয়ে। সমস্যাটি তখনই দেখা দেয় যখন ভারতীয় জেলেরা প্রচুর সংখ্যক বটম–ট্রলার ব্যবহার করা শুরু করেন, যা বড় পার্স সেইন জাল ব্যবহার করে মাছের ডিম ও ছোট মাছ সহ সমস্ত সামুদ্রিক প্রাণকে জল থেকে তুলে নেয়, এবং এই প্রক্রিয়ায় মাছের আবাসস্থল ধ্বংস করে।

ইতিমধ্যে শ্রীলঙ্কায় জাতিগত যুদ্ধের কারণে, যার জন্য এলটিটিই–র একটি শক্তিশালী ‘সি টাইগারস’ শাখা এবং স্থানীয় সমর্থন ছিল, কলম্বো সরকার উত্তর ও পূর্বের তামিল জেলেদের মাছ ধরা নিষিদ্ধ করেছিল। তবে সময়ে সময়ে, তামিলনাড়ু ও পুদুচেরির কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের কারাইকাল ছিটমহলের ভারতীয় জেলেরা অবাধে দুই দেশের জলসীমায় চলে যেতেন। যতক্ষণ না ২০০৯ সালের মে মাসে যুদ্ধের চূড়ান্ত সমাপ্তির পরের বছরগুলিতে স্বাভাবিক অবস্থা পুনরুদ্ধার করার চেষ্টা করা হয়েছিল, ততক্ষণ এই পরিস্থিতি বজায় ছিল।

দ্বৈত সমস্যা

এক্ষেত্রে দ্বৈত সমস্যা আছে। এক, উত্তর ও পূর্ব থেকে শ্রীলঙ্কার জেলেরা যথাক্রমে দক্ষিণ রামেশ্বরম অঞ্চল ও নাগাপট্টিনাম–করাইকাল এলাকার ভারতীয় তামিল জেলেদের শ্রীলঙ্কার জলে ঢুকে পোচিংয়ের দায়ে অভিযুক্ত করেন। তাঁরা এর জন্য প্রায় পুরোপুরি বটম–ট্রলার ও পার্স সেইনের নির্বিচার ব্যবহারকে দায়ী করেন। এগুলি তাঁদের জীবিকাকে প্রভাবিত করেছে, যা তাঁরা প্রথমে তিন দশকের যুদ্ধের পরে এবং এখন কোভিড–পরবর্তী অর্থনৈতিক সঙ্কটের মুখে পুনর্নির্মাণের চেষ্টা করছেন। কোভিড সঙ্কটের ফলে শ্রীলঙ্কায় পারিবারিক আয় ও জীবনধারা এমনভাবে প্রভাবিত হয়েছে যেমন আগে কখনও হয়নি।

শ্রীলঙ্কার নৌবাহিনীও (এসএলএন) ইউএনক্লস–১ অনুসারে বিজ্ঞাপিত আইএমবিএল–এর কথিত লঙ্ঘনকে তাদের দেশের আঞ্চলিক জলসীমার, অর্থাৎ সার্বভৌমত্বের লঙ্ঘন হিসাবে দেখে, এবং তা থামানোর জন্য নৌবাহিনী কোমর বেঁধে নেমেছে। গত এক দশক বা তারও বেশি সময় ধরে এসএলএন কর্মীরা মধ্য সমুদ্রে ভারতীয় জেলেদের ভয় দেখিয়ে তাড়িয়ে দিয়েছেন, যার থেকে মৃত্যু এবং তার ফলে তামিলনাড়ুতে বিক্ষোভের ঘটনা ঘটেছে। তবে যখন যখন তাঁরা এই ধরনের লঙ্ঘনের জন্য ভারতীয় জেলেদের জলযান ও সরঞ্জামসহ গ্রেপ্তার করেছেন, তামিলনাড়ু সরকার নয়াদিল্লির সহায়তায় তাঁদের মুক্ত করতে সক্ষম হয়েছে।

শ্রীলঙ্কার নৌবাহিনীও (এসএলএন) ইউএনক্লস–১ অনুসারে বিজ্ঞাপিত আইএমবিএল–এর কথিত লঙ্ঘনকে তাদের দেশের আঞ্চলিক জলসীমার, অর্থাৎ সার্বভৌমত্বের লঙ্ঘন হিসাবে দেখে, এবং তা থামানোর জন্য নৌবাহিনী কোমর বেঁধে নেমেছে।

চূড়ান্ত ‘‌ইলম যুদ্ধ–৪’‌ যখন তুঙ্গে, সেই সময় বন্দিদের মুক্তি একটি দ্রুত রূপায়িত প্রক্রিয়া ছিল। তারপর থেকে এটি ধীরগতিসম্পন্ন হয়ে গিয়েছে, কারণ উত্তরের তামিল পার্লামেন্টারিয়ান এম এ সুমন্থিরনের অনুরোধে শ্রীলঙ্কার পার্লামেন্ট বর্তমান প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমসিংহের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রিত্বের মেয়াদে (২০১৫–১৯) এই  ধরনের লঙ্ঘনের জন্য অনেক বেশি কঠোর এবং দীর্ঘকালীন শাস্তিমূলক বিধান তৈরি করেছিল।

জীবিকার উদ্বেগ
নীতিগতভাবে নয়াদিল্লি, এবং এমনকি চেন্নাই আইএমবিএল ও ইউএনসিএলওএস বিজ্ঞপ্তির বিপরীতে প্রকৃত পরিস্থিতির বাস্তবতা নিয়ে সজাগ, এবং ভারত সরকারের কাছে সমস্যাটি শ্রীলঙ্কার জেলেদের মতোই এ দেশের জেলেদের জীবিকার সমস্যা। তাই, বিগত দুই দশক ধরে আলোচনার মাধ্যমে মীমাংসা করার সমস্ত প্রচেষ্টা ভারতীয় জেলেদের আইএমবিএল অতিক্রম করতে নিরুৎসাহিত করার পাশাপাশি কোনও–না–কোনও ভাবে সম্পদ ভাগাভাগি করাকে কেন্দ্র করেই হয়েছে। এর কারণ হল সরকারগুলি মৎস্যজীবী সম্প্রদায়ের বাস্তবতা সম্পর্কে সচেতন, যারা বিকল্প বাণিজ্যপথ হিসাবে জীবিকার নতুন উপায়ের সন্ধানে কদাচিৎ দূরবর্তী অঞ্চলে যাত্রা করে।

যাই হোক, দুই দেশের মৎস্যজীবী সমিতি থেকে শুরু করে বিদেশ ও মৎস্য মন্ত্রকের কর্মকর্তা, মন্ত্রী এবং সংশ্লিষ্ট সরকার প্রধান পর্যন্ত সব পর্যায়ের আলোচনা সত্ত্বেও সরকারগুলি কোনও সমাধান খুঁজে পায়নি। তার দিক থেকে ভারত উপকূলীয় সঙ্কট অবসানের স্থায়ী সমাধান হিসাবে দক্ষিণ তামিলনাড়ু উপকূলে জেলেদের জন্য একটি পাইলট প্রকল্প হিসাবে গভীর সমুদ্রে মাছ ধরা বিষয়টি রূপায়িত করতে শুরু করেছে, যাতে স্থানীয় জেলেদের আইএমবিএল লঙ্ঘন বা তাঁদের শ্রীলঙ্কার ভাইদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়তে না–হয়। এই ধরনের দ্বন্দ্বের দীর্ঘমেয়াদি সামাজিক–রাজনৈতিক প্রভাব জনগণ, তাদের সরকার এবং রাষ্ট্র সকলের উপরেই পড়তে পারে।

তবে মিডিয়ান লাইন অনুসরণ করার ইউএনক্লস নিয়মে আটকে না–থেকে নিজস্ব একটি আঁকাবাঁকা রেখা আঁকা এটা নিশ্চিত করেছে যে তৃতীয় দেশগুলি তাদের জলসীমায় ‘‌অনুপ্রবেশ’‌ করতে পারবে না।

এই পরিস্থিতিতে ভারত সরকার লাইসেন্সকৃত মাছ ধরার ধারণাটিকে পুনরুজ্জীবিত করেছে বলে জানা গিয়েছে, এবং তা বিভিন্ন স্তরে আলোচনার জন্য এসেছে, তবে বেশিটাই শ্রীলঙ্কার অভ্যন্তরে। উত্তর জাফনা নির্বাচনী জেলা থেকে (রাজস্ব জেলা থেকে আলাদা) দলনির্বিশেষে পাঁচজন শ্রীলঙ্কার তামিল পার্লামেন্ট সদস্য ৫ মার্চ ২০২৩ তারিখে তাঁদের মৎস্যজীবী সমিতির নেতাদের সঙ্গে বসেছিলেন, এবং শ্রীলঙ্কার সরকার যাতে ভারতের চাপের মুখে না–পড়ে তা নিশ্চিত করার জন্য একসঙ্গে কাজ করার সংকল্প করেছিলেন।

বৃহত্তর উপলব্ধি

শ্রীলঙ্কার তামিল মিডিয়ার রিপোর্ট অনুসারে যৌথ সভায় বক্তারা জোর দিয়েছিলেন যে দুই দেশের তামিলভাষী জনগণের মধ্যে ‘‌নাড়ির সম্পর্ক’‌কে নিজেদের জীবিকার বাস্তব উদ্বেগের সঙ্গে মিশিয়ে ফেলা উচিত হবে না। তাঁরা এই বিষয়টির উপরেও জোর দিয়েছিলেন যে ভবিষ্যতের আলোচনায় ভারতীয় দলটি যাতে শুধু অতীত আলোচনার অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ব্যক্তিদের সমন্বয়ে তৈরি হয় তার জন্য বিশেষভাবে চাপ দেওয়া উচিত। এটি ছিল নাম না–করে চেন্নাই শহরতলির সেই মৎস্যজীবী নেতার একটি অব্যক্ত উল্লেখ যিনি কাচ্ছাটিভুতে ভারতীয় দলের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন, কিন্তু যাঁর প্রতিদ্বন্দ্বিতাময় এলাকায় মাছ ধরার বা অতীতের আলোচনার কোনও প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা ছিল না।

তা সত্ত্বেও তামিলনাড়ুতে এখন বৃহত্তর উপলব্ধি রয়েছে যে ১৯৭৬ সালের চুক্তির আওতায় আইএমবিএল–এর শ্রীলঙ্কার অংশভুক্ত ক্ষুদ্র কাচ্ছাটিভু দ্বীপটি ফিরিয়ে নেওয়া বৃহত্তর বিরোধের সমাধান করবে না। তবে মিডিয়ান লাইন অনুসরণ করার ইউএনক্লস নিয়মে আটকে না–থেকে নিজস্ব একটি আঁকাবাঁকা রেখা আঁকা এটা নিশ্চিত করেছে যে তৃতীয় দেশগুলি তাদের জলসীমায় ‘‌অনুপ্রবেশ’‌ করতে পারবে না। রামেশ্বরমের জেলেরাও কাচ্ছাটিভু এলাকায় প্রচুর মৎস্য সম্পদ নেই বলে সহজেই মেনে নেন, যা আলোচনার মাধ্যমে নিষ্পত্তির পথটি আরও মসৃণ করে।

এটি অন্য বিষয় যে সাম্প্রতিক কাচ্ছাটিভু আলোচনায় প্রায় সম্পূর্ণভাবে রামেশ্বরমের জেলেদের সংশ্লিষ্ট পক বে অঞ্চলে দৃষ্টি নিবদ্ধ রাখা হয়েছিল। এর কারণ দ্বীপটিতে বেশিরভাগ তীর্থযাত্রীই শ্রীলঙ্কার নর্দার্ন প্রভিন্স ও ভারতের রামেশ্বরম অঞ্চল থেকে এসেছিলেন। তাই আলোচনায় নাগাপট্টিনামের জেলেরা বা তাঁদের বিপরীতে শ্রীলঙ্কার ইস্টার্ন প্রভিন্সের জেলেরা উপস্থিত ছিলেন না। ভবিষ্যতের আলোচনায় তাঁদেরও অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজন।

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.