ঘড়ির কাঁটার আবর্তনের মতো ভারতজুড়ে বার্ষিক বন্যা জল ও পরিচ্ছন্নতা (স্যানিটেশন) ব্যবস্থাকে ব্যাহত করে, এবং মহিলা ও মেয়েদের প্রায়শই অলক্ষিত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা ঝুঁকির মুখোমুখি করে। বাংলাদেশের পরে ভারত বিশ্বের দ্বিতীয় সবচেয়ে বেশি বন্যা-কবলিত দেশ — এর ৪০ মিলিয়ন হেক্টর জমি বন্যার ঝুঁকিতে রয়েছে। বন্যা নিরাপদ পানীয় জল ও পরিচ্ছন্নতা সুবিধার প্রাপ্তিযোগ্যতাকে ব্যাহত করে, জনসম্প্রদায়গুলিকে এবং বিশেষ করে মহিলা ও মেয়েদের স্বাস্থ্যের ক্ষতির ঝুঁকিতে ফেলে, এবং দেশকে ‘স্থিতিশীল উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিজি) ৬: বিশুদ্ধ জল ও পরিচ্ছন্নতা’ থেকে পিছিয়ে দেয়৷
বাংলাদেশের পরে ভারত বিশ্বের দ্বিতীয় সবচেয়ে বেশি বন্যা-কবলিত দেশ — এর ৪০ মিলিয়ন হেক্টর জমি বন্যার ঝুঁকিতে রয়েছে।
মানুষের সক্ষমতা ও সুযোগ তাদের আন্তঃসম্পর্কিত পরিচয় দ্বারা আকৃতি পায়। এইভাবে বন্যা জল, পরিচ্ছন্নতা ও স্বাস্থ্যবিধির (ওয়াশ) প্রাপ্যতায় বিদ্যমান লিঙ্গ বৈষম্যকে বাড়িয়ে তোলে। ওয়াশ পরিকাঠামো ও দুর্যোগের স্থিতিস্থাপকতা উন্নত করার জন্য চলতি প্রচেষ্টা সত্ত্বেও, নীতিগুলিতে প্রায়ই লিঙ্গ-সংবেদনশীল দৃষ্টিভঙ্গির অভাব থাকে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা এবং ওয়াশ নীতিগুলি খুব কমই মহিলাদের অনন্য চাহিদাগুলি বিবেচনা করে, যার ফলে হস্তক্ষেপগুলি লিঙ্গনির্দিষ্ট দুর্বলতাগুলির মোকাবিলাকে অন্তর্ভুক্ত করে না, বা সেগুলির ক্ষেত্রে কার্যকর হয় না। ২৮টি রাজ্যের জলবায়ু সক্রিয়তা পরিকল্পনার প্রায় ৪৩ শতাংশ লিঙ্গনির্দিষ্ট ওয়াশ বিবেচনাকে উপেক্ষা করে। ভারতে বন্যার সময় ওয়াশ এবং মাতৃস্বাস্থ্য পরিষেবাগুলিতে মহিলা ও মেয়েদের প্রয়োজনীয়তা পূরণ করার জরুরি প্রয়োজন রয়েছে।
মূল চ্যালেঞ্জ ও সুপারিশ
ক। লিঙ্গ-বিচ্ছিন্ন, বন্যা-প্রতিরোধী পরিচ্ছন্নতা সুবিধা স্থাপন করা
বন্যার মতো জরুরি পরিস্থিতিতে নারী ও মেয়েরা যে সব বড় চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয় তার মধ্যে একটি হল নিরাপদ পরিচ্ছন্নতা সুবিধাপ্রাপ্তির অভাব। বন্যার সময় অধিকাংশ গৃহস্থালি ও কমিউনিটি টয়লেট হয় নিমজ্জিত বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। মহিলা ও মেয়েরা খোলা জায়গায় মলত্যাগ করতে বাধ্য হন, যা তাঁদের নিরাপত্তা ও গোপনীয়তার সঙ্গে আপস করে। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, যে সব মহিলা খোলা জায়গায় মলত্যাগের অভ্যাস করেন তাঁদের অ-সঙ্গী যৌন হিংসার সম্মুখীন হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রগুলিতে প্রায়শই নারী ও পুরুষদের জন্য আলাদা টয়লেটের ব্যবস্থা থাকে না। অনেক ক্ষেত্রে সুবিধাগুলি প্রত্যন্ত বা খারাপভাবে আলোকিত এলাকায় স্থাপন করা হয়, যা যৌন হয়রানি ও আক্রমণের ঝুঁকি বাড়ায়। ফলস্বরূপ, অনেক মহিলা ও মেয়েরা এই সুবিধাগুলি ব্যবহার না করার পথ বেছে নেন, এমনকি তাঁদের স্বাস্থ্য ও সুস্থতার মূল্যেও।
অনেক ক্ষেত্রে সুবিধাগুলি প্রত্যন্ত বা খারাপভাবে আলোকিত এলাকায় স্থাপন করা হয়, যা যৌন হয়রানি এবং আক্রমণের ঝুঁকি বাড়ায়।
লিঙ্গ-বিচ্ছিন্ন, বন্যা-প্রতিরোধী পরিচ্ছন্নতা সুবিধা স্থাপন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। স্বল্পমেয়াদে, পোর্টেবল স্যানিটেশন সলিউশন, যেমন ইকো-টয়লেটগুলি, বড় আকারে ব্যবহার করা যেতে পারে। বেসরকারি বিক্রেতাদের সঙ্গে সরকারি চুক্তির মাধ্যমে এগুলিকে দ্রুত মোতায়েন করা যেতে পারে। মহাত্মা গান্ধী ন্যাশনাল রুরাল এমপ্লয়মেন্ট গ্যারান্টি অ্যাক্ট (মনরেগা)-এর মাধ্যমে কমিউনিটি কর্মীদের নিয়োগ করে ল্যাটরিনগুলি যাতে ভালভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করা যায়, তা নিশ্চিত করার কথাও বিবেচনা করা যেতে পারে। মাঝারি মেয়াদে জাতীয় গ্রামীণ পরিকাঠামো উন্নয়ন সংস্থা (এনআরআইডিএ) দ্বারা প্রিফ্যাব্রিকেটেড ফ্লাড-রেজিলিয়েন্ট টয়লেট ব্লকের মতো বড় মাপের সমাধানগুলিকে অগ্রাধিকার দেওয়া যেতে পারে। এই কাঠামোগুলি যদি এবং যখন প্রয়োজন হয় দ্রুত একত্রিত বা স্থানান্তরিত করা যেতে পারে। তাছাড়া, স্যানিটেশন সুবিধার চারপাশে সৌরচালিত আলোর ইউনিট স্থাপন করা হলে তা নিরাপত্তা বাড়াতে পারে এবং লিঙ্গভিত্তিক হিংস্রতা প্রতিরোধে সাহায্য করতে পারে, বিশেষ করে রাতের বেলায়। দীর্ঘমেয়াদে, এই সুবিধাগুলিকে জেলাস্তরের দুর্যোগ প্রস্তুতি পরিকল্পনার পাশাপাশি জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনে একীভূত করা উচিত, যাতে সেগুলি রক্ষণাবেক্ষণ এবং নিরাপদ ব্যবহার সম্ভব হয়।
খ। পরিচ্ছন্ন জলের ক্রমাগত সরবরাহ নিশ্চিত করা
নারী ও মেয়েরা অন্যায়ভাবে আরেকটি যে উল্লেখযোগ্য চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয় তা হল বিশুদ্ধ জলের সীমিত প্রাপ্তিযোগ্যতা। বন্যা ঐতিহ্যগত জলের উৎসকে দূষিত করে, কারণ বন্যার জল রোগ বহনকারী প্যাথোজেন ও রাসায়নিক দূষণ বহন করে। মহিলারা, যাঁরা প্রাথমিকভাবে জল সংগ্রহের দায়িত্ব বহন করেন, অনিরাপদ জলের উৎসের উপর নির্ভর করতে বাধ্য হয়৷ বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে দীর্ঘ দূরত্ব ভ্রমণ করার সময় বিশুদ্ধ জল আনতে তাঁরা বিপদেও পড়তে পারেন। অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রগুলি প্রায়ই সীমিত জল সরবরাহ করে। মহিলা ও মেয়েরা ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যবিধি রক্ষার জন্য পর্যাপ্ত জল নাও পেতে পারেন, বিশেষ করে ঋতুস্রাবের সময়।
মহিলা ও মেয়েরা ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যবিধি রক্ষার জন্য পর্যাপ্ত জল নাও পেতে পারেন, বিশেষ করে ঋতুস্রাবের সময়।
সুতরাং, বন্যার সময়, শুদ্ধ ও নিরাপদ জলের ক্রমাগত প্রাপ্তি নিশ্চিত করা গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষ করে নারী ও মেয়েদের জন্য। স্বল্পমেয়াদে, পোর্টেবল ওয়াটার পিউরিফিকেশন কিট ও ফিল্টার বন্যা মরসুমের আগে উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বিতরণ করা উচিত। মহিলাদের দ্বারা পরিচালিত পরিবার এবং গর্ভবতী বা স্তন্যদানকারী মায়েদের অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত। মাঝারি মেয়াদে, বন্যাপ্রবণ গ্রামে উচ্চতর জল সঞ্চয় ট্যাঙ্ক নির্মাণ করা যেতে পারে, এবং বন্যার সময় সেখান থেকে জলের প্রাপ্তিযোগ্যতা বজায় রাখার জন্য উঁচু প্লাটফর্মে হ্যান্ড পাম্প স্থাপন করা যেতে পারে। দীর্ঘমেয়াদে, স্থিতিশীলভাবে জলের প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে স্থানীয় মহিলা স্ব-সহায়ক গোষ্ঠী (এসএইচজি) দ্বারা পরিচালিত বিকেন্দ্রীভূত জলের কিয়স্ক স্থাপন করা যেতে পারে। একটি জনসম্প্রদায়-ভিত্তিক জলের গুণমান পর্যবেক্ষণ কর্মসূচি মহিলাদের নিয়মিত জলের গুণমান পরীক্ষা করতে এবং দূষণের রিপোর্ট করতে প্রশিক্ষণ দিতেও কার্যকর হবে৷ জলশক্তি মন্ত্রক, জাতীয় গ্রামীণ জীবিকা মিশনের (এনআরএলএম) সঙ্গে সহযোগিতায়, বিদ্যমান ভূগর্ভস্থ জল ব্যবস্থাপনা কর্মসূচির সম্প্রসারণ হিসাবে এই কিয়স্কগুলিকে অর্থায়ন এবং সুবিধা দিতে পারে৷
গ। জরুরি অবস্থার সময় মাসিক স্বাস্থ্যবিধি ব্যবস্থাপনা উন্নত করুন
ভারতে প্রায় ৭৮ শতাংশ কিশোরী মেয়ে স্বাস্থ্যকর মাসিক পদ্ধতি ব্যবহার করে। যাই হোক, এই শতাংশ বিভিন্ন রাজ্যের ক্ষেত্রে পরিবর্তিত হয়। উদাহরণস্বরূপ, বিহারের মাত্র ৫৯ শতাংশ মানুষ স্বাস্থ্যকর মাসিক পদ্ধতি ব্যবহার করে, যা সব রাজ্যের মধ্যে সর্বনিম্ন। বন্যা এবং অন্যান্য জলবায়ু জরুরী অবস্থার সময়, এই সমস্যা আরও খারাপ হয়। স্যানিটারি প্যাড, পরিষ্কার কাপড় বা অন্যান্য মাসিক হাইজিন ম্যানেজমেন্ট (এমএইচএম) পণ্যের প্রাপ্যতা আরও সীমিত হয়ে যায়। ত্রাণ প্রচেষ্টা প্রায়শই এই প্রয়োজনীয় আইটেমগুলিকে উপেক্ষা করে, বা খুব কম পরিমাণে আইটেম সরবরাহ করে। ঋতুস্রাব নিয়ে সাংস্কৃতিক নিয়ম মেনে নারী ও মেয়েরা তাদের চাহিদা সম্পর্কে খোলাখুলি কথা বলতে পারে না, যার ফলে দুর্যোগ ত্রাণ পরিকল্পনায় অবহেলা দেখা দেয়। উদাহরণস্বরূপ, বিহারের রাজ্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনায় এমএইচএম-এর কোনও উল্লেখ নেই।
নারী ও মেয়েদের স্বাস্থ্য ও মর্যাদা রক্ষার জন্য দুর্যোগ প্রতিক্রিয়ায় এমএইচএম-কে সংযুক্ত করা অপরিহার্য।
নারী ও মেয়েদের স্বাস্থ্য ও মর্যাদা রক্ষার জন্য দুর্যোগ প্রতিক্রিয়ায় এমএইচএম-কে সংযুক্ত করা অপরিহার্য। প্রতিটি ঝুঁকিপূর্ণ রাজ্য জরুরি ত্রাণ কিট (ইউএন ডিগনিটি কিটগুলির অনুরূপ) স্টোরেজ সেন্টারগুলিতে রাখতে পারে যা দ্রুত এবং ব্যাপকভাবে বিতরণ করা যেতে পারে। অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রগুলিতে অবশ্যই ওয়াশিং স্টেশন, গোপনীয়তার জন্য পর্দা ও নিষ্পত্তির সুবিধাসহ এমএইচএম কর্নারগুলি নির্ধারিত থাকতে হবে। মেনস্ট্রুয়াল হাইজিন স্কিমের অধীনে অর্থায়নকৃত ভ্রাম্যমাণ স্বাস্থ্য ও স্বাস্থ্যবিধি ইউনিট বন্যা-জরুরি পরিস্থিতিতে এমএইচএম সরবরাহ ও শিক্ষার সঙ্গে প্রত্যন্ত অঞ্চলে পৌঁছনোর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। স্থানীয় বেসরকারি সংস্থাগুলি (এনজিও) ও রাজ্য সরকারি সংস্থাগুলির মধ্যে অংশীদারি, যেমন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগ ও রাজ্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ (এসডিএমএ), সাশ্রয়ী মূল্যের বায়োডিগ্রেডেবল স্যানিটারি পণ্য তৈরি করতে পারে এবং বন্যার ঘটনার সময় নিরাপদ এমএইচএম অনুশীলন সম্পর্কে সম্প্রদায়কে শিক্ষিত করতে পারে।
ঘ। ওয়াশ-এর উপর ফোকাস দিয়ে মাতৃস্বাস্থ্য পরিষেবাগুলিকে শক্তিশালী করা
সম্ভবত সবচেয়ে পরিণতিমূলক চ্যালেঞ্জ হল মাতৃস্বাস্থ্যের ব্যাঘাত। বন্যাপ্রবণ এলাকায় অনেক স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে পর্যাপ্ত ওয়াশ সুবিধার অভাব রয়েছে। যখন এই কেন্দ্রগুলি দুর্গম হয়ে যায় বা বন্যার সময় ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তখন গর্ভবতী মহিলারা প্রসবপূর্ব এবং প্রসবোত্তর যত্ন পেতে হিমসিম খান। এটি অসম, উত্তরপ্রদেশ ও বিহারের মতো অঞ্চলে বিশেষ করে বিপজ্জনক, যেখানে মাতৃস্বাস্থ্য সূচকগুলি ইতিমধ্যেই খারাপ জায়গায় রয়েছে ৷
স্বল্পমেয়াদে, মোবাইল হেলথ ক্লিনিকের সংখ্যা বাড়ানো এবং স্বাস্থ্যসেবা ফোন অ্যাপস, বিশেষ করে প্রসূতি আশ্রয়কেন্দ্র এবং ত্রাণ শিবিরের কাছে, পৌঁছে দেওয়া অপরিহার্য। এটি এসডিএমএ এবং ডিডিএমএ (জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ)-এর সঙ্গে সমন্বয় করে করা যেতে পারে। শুদ্ধ জল ও স্যানিটেশন সরবরাহ-সহ মৌলিক ওয়াশ সুবিধা দিয়ে সজ্জিত এই ধরনের ক্লিনিকগুলি গর্ভবতী মহিলাদের নিরাপদ প্রসবের স্থান প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে পারে। উচ্চ-ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় স্থায়ী বন্যা-প্রতিরোধী স্বাস্থ্যসেবা পরিকাঠামো গড়ে তোলার দিকে মধ্যমেয়াদি প্রচেষ্টার উপর ফোকাস করা উচিত। বন্যার সময় মাতৃস্বাস্থ্যকে সহায়তা করার জন্য আরও স্বীকৃত সোশ্যাল হেলথ অ্যাক্টিভিস্ট (আশা) কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হলে, তা হাসপাতালের সুযোগ সীমিত থাকা সত্ত্বেও মাতৃসেবা অব্যাহত রাখার বিষয়টি নিশ্চিত করতে সাহায্য করতে পারে। দীর্ঘমেয়াদি সমাধানের মধ্যে রয়েছে বন্যার সময় দূরবর্তী পরামর্শের সুযোগ দেওয়ার জন্য টেলিমেডিসিন পরিকাঠামো শক্তিশালী করা।
বন্যার সময় এবং পরে তাঁদের নির্দিষ্ট ওয়াশের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে মহিলা এবং মেয়েদের কাছ থেকে প্রতিক্রিয়া সংগ্রহ করার জন্য প্রায়শই কোনও ব্যবস্থা থাকে না।
ঙ। ওয়াশ এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় মহিলাদের অংশগ্রহণের প্রচার করা
মহিলা এবং মেয়েরা যে পঞ্চম বাধার সম্মুখীন হন তা হল ওয়াশ-সম্পর্কিত সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং দুর্যোগ ত্রাণ পরিকল্পনা থেকে তাঁদের বাদ পড়া। উল্লেখযোগ্যভাবে, জলবায়ু পরিবর্তন ও বিপর্যয় সংক্রান্ত ২৮টি রাষ্ট্রীয় কর্মপরিকল্পনার ৪৩ শতাংশে লিঙ্গের উল্লেখ নেই। ৯৪,১৯৭ জন প্রশিক্ষিত আপদা মিত্র স্বেচ্ছাসেবকদের মধ্যে মাত্র ১৬,৮২২ জন মহিলা। বন্যার সময় এবং পরে তাঁদের নির্দিষ্ট ওয়াশের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে মহিলা এবং মেয়েদের কাছ থেকে প্রতিক্রিয়া সংগ্রহ করার জন্য প্রায়শই কোনও ব্যবস্থা থাকে না। তাঁদের বাদ দেওয়ার ফলে এমন পরিকল্পনা হয় যা লিঙ্গ-নির্দিষ্ট প্রয়োজনগুলিকে সম্বোধন করে না।
এটি কাটিয়ে উঠতে, ওয়াশ এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় সক্রিয় ভূমিকা নিতে মহিলাদের ক্ষমতায়ন করতে হবে। মৌলিক ওয়াশ ব্যবস্থাপনা এবং কমিউনিটি হাইজিন প্রচারের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে বন্যাপ্রবণ এলাকায় নারী ও মেয়েদের জন্য স্বল্পমেয়াদি প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। স্থানীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটিতে মহিলাদের অংশগ্রহণের ন্যূনতম শতাংশ বাধ্যতামূলক করা উচিত, যেমনটি করা হয় ভূগর্ভস্থ জল ব্যবস্থাপনা কর্মসূচিতে, যার জন্য জল বাজেট এবং জল নিরাপত্তা পরিকল্পনা অনুশীলনে মহিলাদের ৩৩ শতাংশ ন্যূনতম প্রতিনিধিত্বের প্রয়োজন৷ মাঝারি মেয়াদে, ওয়াশ সুবিধাগুলির রক্ষণাবেক্ষণ এবং জলের গুণমান পর্যবেক্ষণের জন্য এই জনসম্প্রদায়গুলিতে মহিলাদের ওয়াশ কমিটি তৈরি করা যেতে পারে। দীর্ঘমেয়াদে, জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটিতে নারীর প্রতিনিধিত্বের প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ নিশ্চিত করবে যে দুর্যোগ পরিকল্পনা ও প্রতিক্রিয়ায় নারীদের কণ্ঠস্বর অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
উপসংহার
পরিকাঠামো ধ্বংসের চেয়েও বন্যা বেশি কিছু করে — এটি বিদ্যমান বৈষম্যকে আরও গভীর করে, যেখানে নারী ও মেয়েরা আপসকৃত ওয়াশ পরিষেবার দরুন ক্ষতির সম্মুখীন হয়। ভারতকে এখন এমন ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যেতে হবে যেখানে বন্যাপ্রবণ এলাকায় নারী ও মেয়েরা সাহায্যের নিষ্ক্রিয় প্রাপক হবে না, বরং সুস্থ সম্প্রদায় গড়ে তোলার ক্ষেত্রে সক্রিয় অংশগ্রহণকারী হবে।
অভিশ্রী পাণ্ডে অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের একজন রিসার্চ ইন্টার্ন
The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.