Published on Mar 19, 2024 Updated 0 Hours ago

এসডিজি ৫ এবং অন্য লক্ষ্যগুলির মধ্যে সংযোগগুলি আমাদের সম্মিলিত ভবিষ্যতের জন্য একটি নৈতিক বাধ্যবাধকতা হিসাবে এবং একটি কৌশলগত বিনিয়োগ হিসাবে লিঙ্গ সমতা অর্জনের আবশ্যিকতার উপর জোর দেয়।

কথা রাখুন: অ্যাজেন্ডা ২০৩০ এগিয়ে নিয়ে যেতে এসডিজি ৫-‌কে অগ্রাধিকার দিন

এই নিবন্ধটি আন্তর্জাতিক নারী দিবস সিরিজের অংশ



১৯১০ সালে কোপেনহেগেনে কর্মজীবী নারীদের আন্তর্জাতিক সম্মেলনে ১৭টি দেশের ১০০ জন মহিলা আন্তর্জাতিক নারী দিবসের (আইডব্লিউডি) প্রাথমিক বীজ 
রোপণ করেছিলেন, যাতে জীবনের সমস্ত ক্ষেত্রে — অর্থনৈতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক — নারীদের উদযাপন করা হয়। প্রায় ৬৫ বছর পর, রাষ্ট্রপুঞ্জ 8 মার্চকে আনুষ্ঠানিক আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে ঘোষণা করে, যা বার্ষিক বিশ্বব্যাপী নারী অধিকার আন্দোলনকে স্বীকৃতি দেওয়া ও পুনর্গঠিত করার একটি কেন্দ্রবিন্দু। এই বছর আইডব্লিউডি ২০২৪ একটি শক্তিশালী প্রচারাভিযান থিম গ্রহণ করেছে, "অন্তর্ভুক্তিকে অনুপ্রাণিত করুন"। এটি এমন একটি ক্রিয়াকাণ্ডের আহ্বান হিসাবে পরিবেশন করা হয়েছে যা লিঙ্গ সমতা ও অন্তর্ভুক্তির দিকে আমাদের চলমান যাত্রায় গভীরভাবে অনুরণিত হতে পারে। এটি প্রতিটি মহিলা ও মেয়ে যাতে বাধা ছাড়াই উন্নতি করতে পারে তার উপযোগী পরিবেশ তৈরির জন্য বিশ্বব্যাপী ব্যক্তি, সম্প্রদায় ও প্রতিষ্ঠানকে এর গ্রহণ ও প্রতিপালন করার জন্যও আহ্বান জানায় । ২০১৫ সালে বিশ্ব নেতারা গুরুত্বপূর্ণ বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে এবং একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ভবিষ্যৎ গড়ে তুলতে ১৭টি স্থিতিশীল উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিজি) নির্ধারণ করে উচ্চাকাঙ্ক্ষী অ্যাজেন্ডা ২০৩০ গ্রহণ করেন। এই লক্ষ্যগুলির মধ্যে 'এসডিজি ৫: লিঙ্গসমতা' আশা ও অগ্রগতির আলোকবর্তিকা হয়ে উঠেছে। এই নিবন্ধটি এসডিজি ৫-‌কে অগ্রাধিকার দেওয়ার অপরিহার্যতা মূল্যায়ন করতে চায়, এবং তা শুধুমাত্র এর অন্তর্নিহিত মূল্যের জন্য নয়, বরং স্থিতিশীল উন্নয়নের বৃহত্তর অ্যাজেন্ডাকে এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে এর রূপান্তরমূলক সম্ভাবনার জন্য এসডিজি ৫-এর সঙ্গে অগ্রবর্তী ও পশ্চাৎমুখী সংযোগগুলিকে লাভবান করতে।


বিশ্ব নেতারা গুরুত্বপূর্ণ বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে এবং একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ভবিষ্যৎ গড়ে তুলতে ১৭টি স্থিতিশীল উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিজি) নির্ধারণ করে উচ্চাকাঙ্ক্ষী অ্যাজেন্ডা ২০৩০ গ্রহণ করেন।

অন্তর্ভুক্তিমূলক ভবিষ্যতের জন্য এসডিজি ৫ 

এই ১৭টি স্থিতিশীল উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রাকে (এসডিজি) যা তাদের পূর্বসূরী সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার থেকে আলাদা করে, তা হল মানবাধিকারের জন্য এসডিজি-‌র
অন্তর্নিহিত প্রতিশ্রুতির সঙ্গে অসমতা, প্রান্তিকীকরণ এবং দারিদ্রের মধ্যে আন্তঃসম্পর্কের স্বীকৃতি। স্থিতিশীল উন্নয়ন অনুসরণে লক্ষ্য ৫ — যার লক্ষ্য 'লিঙ্গ সমতা অর্জন এবং সকল নারী ও মেয়েদের ক্ষমতায়ন' — অ্যাজেন্ডা ২০৩০-এর একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক, কারণ এটি তৈরিতে নাগরিক সমাজ, নারীবাদী আন্দোলন এবং নারী অধিকারের সমর্থকেরা যুক্ত ছিলেন। তার উপর, যেমনটি বিভিন্ন এসডিজি লক্ষ্যমাত্রায় প্রতিধ্বনিত হয়েছে, এর মূল অ্যাজেন্ডা হল 'কেউ যেন পিছিয়ে না থাকে', যা লিঙ্গগত প্রান্তিকীকরণের অভিজ্ঞতাগুলির জন্য একটি আন্তঃপর্যায় দৃষ্টিকোণ ব্যবহারের পরিসরও প্রদান করে।

প্রথমত, স্বতন্ত্র মর্যাদাকে স্বীকৃতি দিয়ে এবং বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াই করার লক্ষ্যে এসডিজি ৫ একটি অপরিহার্য মানবাধিকার হিসাবে লিঙ্গসমতার তাৎপর্য তুলে ধরে। দ্বিতীয়ত, ক্ষমতায়নের লক্ষ্যের মাধ্যমে এটি প্রতিষ্ঠিত লিঙ্গ ভূমিকা, স্টিরিওটাইপ এবং ক্ষতিকারক সাংস্কৃতিক অনুশীলনগুলিকেও দূর করতে চায়। তৃতীয়ত, এসডিজি ৫ অবৈতনিক পরিচর্যা কাজের মূল্য এবং বোঝা স্বীকার করে, এবং পরিবারের মধ্যে ভাগ করা দায়িত্ব প্রচারের লক্ষ্য রাখে। চতুর্থত, যার উপর জোর দেওয়া হচ্ছে সেই ক্ষমতায়ন এক-মাত্রিক নয়, তা জীবনের সমস্ত দিক অন্তর্ভুক্ত করে। যেমন, যখন এটি অর্থনৈতিক সম্পদে মহিলাদের সমান অধিকারের কথা প্রচার করে, তখন এটি প্রযুক্তিতে তাঁদের প্রবেশাধিকার এবং সরকারি ও বেসরকারি ক্ষেত্রে তাঁদের অধিকারের উপর জোর দেয়;‌ সেইসঙ্গে লিঙ্গসংক্রান্ত সুবিচারের জন্য লিঙ্গ-ভিত্তিক হিংসার বিরুদ্ধে নীতি এবং আইনের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করার সময় তাঁদের স্বাস্থ্য ও মঙ্গলকে উন্নত করার কথাও ভাবা হয়। কাজেই, লক্ষ্যের তাৎপর্য নিহিত এর অনুঘটক হিসাবে কাজ করার বিপুল ক্ষমতার মধ্যে, যা অনেক এসডিজি লক্ষ্যমাত্রাকে অগ্রসর করে বিভিন্ন কুশীলব ও অংশীদারদের মধ্যে সহযোগী প্রচেষ্টা এবং অংশীদারিত্বকে উৎসাহিত করার মাধ্যমে।


যখন নারী ও মেয়েদের শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, কাজ এবং রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়ায় প্রতিনিধিত্বের সমান সুযোগ দেওয়া হয়, তখন তাঁরা সমাজ জুড়ে অনেক সুবিধা এনে দেন।



লিঙ্গসমতা অভ্যন্তরীণভাবে উন্নত স্বাস্থ্য, শিক্ষা, অর্থনৈতিক বৃদ্ধি ও দারিদ্র্য হ্রাসের সঙ্গে যুক্ত। যখন নারী ও মেয়েদের শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, কাজ এবং রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়ায় প্রতিনিধিত্বের সমান সুযোগ দেওয়া হয়, তখন তাঁরা সমাজ জুড়ে অনেক সুবিধা এনে দেন। যেমন, কৃষি ক্ষেত্রে নারীর ক্ষমতায়ন খাদ্য নিরাপত্তা উন্নত করতে পারে (এসডিজি ২)। নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে নতুন সুযোগ প্রদানের জন্য প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনের ব্যবহার এসডিজি ৯-এর অগ্রগতির দিকে নিয়ে যেতে পারে। একইভাবে, নেতৃত্বে মহিলাদের পূর্ণ ও কার্যকর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা গেলে তা অর্থনৈতিক বৃদ্ধি (এসডিজি ৮) নিয়ে আসতে পারে, এবং শান্তিপূর্ণ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজকে উন্নীত করে এসডিজি ১৬-‌র অগ্রগতিকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে। যাইহোক, প্রদত্ত প্রেক্ষাপটে এসডিজি ৫ অর্জনের জন্য উল্লিখিত গভীর-মূল লিঙ্গ বৈষম্য মোকাবিলা করার জন্য সমন্বিত প্রচেষ্টার প্রয়োজন।


সারণী ১: এসডিজি ৫ এবং এর আন্তঃসংযোগ

Gender Inclusion-linked SDG Targets

এসডিজি ১ (দারিদ্র্যমুক্তি)

১৩টি লক্ষ্যের মধ্যে ৫টি - এর মধ্যে রয়েছে আন্তর্জাতিক এবং জাতীয় মানদণ্ড অনুসারে চরম দারিদ্র্য হ্রাস, বহুমাত্রিক দারিদ্র্য হ্রাস, সামাজিক সুরক্ষা অন্তর্ভুক্তি বৃদ্ধি এবং সম্পত্তির অধিকারগুলির সুযোগ সুরক্ষিত করা।

এসডিজি ২ (ক্ষুধামুক্তি)

১৪টি লক্ষ্যের মধ্যে ২টি - এর মধ্যে রয়েছে মহিলাদের মধ্যে রক্তস্বল্পতার প্রকোপ হ্রাস করা এবং ক্ষুদ্র খাদ্য উৎপাদনকারীদের গড় আয় বাড়ানো (যাঁদের একটি বড় অংশ নারী)

এসডিজি ৩ (সুস্বাস্থ্য ও সুস্থতা)

 ২৮টি লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে ৬টি - এর মধ্যে রয়েছে মাতৃত্বকালীন, শিশু এবং পাঁচ বছরের কম বয়সী মৃত্যুর অনুপাত হ্রাস, যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্যসেবাগুলিতে সর্বজনীন প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করা, সর্বজনীন স্বাস্থ্য কভারেজ অর্জন ও গুণমানে পর্যাপ্ত সুযোগ নিশ্চিত করা।

এসডিজি ৪ (গুণমানসম্পন্ন শিক্ষা)

১২টি টার্গেটের মধ্যে ৪টি - সম্পর্কিত লক্ষ্যগুলির মধ্যে রয়েছে মানসম্পন্ন প্রারম্ভিক শৈশব এবং প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষার সুযোগ নিশ্চিত করা, সম্পূর্ণ বিনামূল্যে, ন্যায়সঙ্গত এবং মানসম্পন্ন সংগঠিত শিক্ষা, সমস্ত মেয়ে এবং ছেলেদের মনো-‌সামাজিক সুস্থতা নিশ্চিত করা, সাশ্রয়ী মূল্যের মানসম্পন্ন বৃত্তিমূলক এবং মাধ্যমিক-‌পরবর্তী শিক্ষার সুযোগ, সাক্ষরতা এবং সংখ্যা শিক্ষায় লিঙ্গ বৈষম্য দূর করা।

এসডিজি ৬ (পরিষ্কার জল ও স্যানিটেশন)

১১টি লক্ষ্যের মধ্যে ১টি - নারী ও মেয়েদের দুর্বলতার দিকে দৃষ্টি নিবদ্ধ করে সকলের জন্য পর্যাপ্ত, ন্যায়সঙ্গত এবং নিরাপদে স্যানিটেশন এবং স্বাস্থ্যবিধির সুযোগ নিশ্চিত করা।

এসডিজি ৮ (শালীন কাজ এবং অর্থনৈতিক বৃদ্ধি)   

১৬টি লক্ষ্যের মধ্যে ৬টি - এর মধ্যে রয়েছে মহিলাদের জন্য শালীন কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং উদ্যোক্তা তৈরি করা, আর্থিক পরিষেবা সুযোগ সহ মহিলাদের মালিকানাধীন অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি আকারের উদ্যোগের আনুষ্ঠানিকীকরণ এবং বৃদ্ধিকে উৎসাহিত করা, লিঙ্গ বেতন ব্যবধান হ্রাস; শ্রম অধিকার রক্ষা এবং নারী ও অভিবাসী শ্রমিকসহ সকলের জন্য নিরাপদ ও সুরক্ষিত কাজের পরিবেশের প্রসার।

এসডিজি ৯ (শিল্প, উদ্ভাবন ও পরিকাঠামো)

১২টি লক্ষ্যের মধ্যে ৪টি - সম্পর্কিত লক্ষ্যগুলির মধ্যে অন্তর্ভুক্তিমূলক শিল্পায়নের প্রসার, মহিলাদের মালিকানাধীন ক্ষুদ্র শিল্প উদ্যোগগুলির সাশ্রয়ী মূল্যের ঋণের সুযোগ বাড়ানো এবং মূল্য শৃঙ্খলে তাদের সংযুক্তি, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিতে প্রবেশাধিকারের মাধ্যমে লিঙ্গ ব্যবধান পূরণ করা অন্তর্ভুক্ত।

এসডিজি ১০ (বৈষম্য হ্রাস)

১৪টি লক্ষ্যের মধ্যে ১টি – এর লক্ষ্য বৈষম্যমূলক আইন, নীতি ও অনুশীলনের ফলাফলের বৈষম্য হ্রাস করা এবং সকলের সমান সুযোগ নিশ্চিত করার মাধ্যমে সকলের ক্ষমতায়ন এবং সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক অন্তর্ভুক্তির প্রসার।

এসডিজি ১১ (টেকসই শহর এবং সম্প্রদায়)

১৫টি লক্ষ্যের মধ্যে ৩টি - সম্পর্কিত লক্ষ্যগুলির মধ্যে রয়েছে গণপরিবহণ এবং গণ-‌পরিসরে ন্যায়সঙ্গত ও অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবেশাধিকার, এবং সমস্ত ব্যক্তি, বিশেষ করে মহিলা ও শিশুদের শারীরিক ও যৌন হয়রানির ঘটনা ও দুর্বলতা হ্রাস করা।

এসডিজি ১৬ (শান্তি, ন্যায়বিচার ও শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান)

২৪টি লক্ষ্যের মধ্যে ৭টি - এর মধ্যে রয়েছে সংঘাত-সম্পর্কিত মৃত্যু, মানব পাচারের ঝুঁকি এবং যৌন হিংস্রতাসহ অন্যান্য ধরনের শোষণ হ্রাস করা, এবং তার পাশাপাশি লিঙ্গ-অন্তর্ভুক্ত জাতীয় ও স্থানীয় সরকা্রি প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থা করা।

সূত্র: লেখকের নিজস্ব, ইউএনডিইএসএ  এবং ইউএন উইমেন থেকে সংকলিত

 

আমরা কতদূর এসেছি?

এসডিজি ৫ লক্ষ্যমাত্রার বর্তমান প্রবণতাগুলি পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে বিশ্বব্যাপী দেশগুলি ২০৩০ সালের মধ্যে লিঙ্গসমতা
অর্জনের পথে নেই ৷ ৪১টি দেশ গড়ে মাত্র একটি এসডিজি ৫ লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করেছে, এবং সামগ্রিক পরিস্থিতি এখনও উদ্বেগজনক৷ লিঙ্গবৈষম্য টিকিয়ে রাখার ভিত্তিগত কারণগুলি মোকাবিলায় অপ্রতুল প্রচেষ্টা এসডিজি ৫ অর্জনের দিকে অগ্রগতিকে বাধা দেয়। এর মধ্যে রয়েছে আইনি পক্ষপাত, বৈষম্যমূলক সামাজিক মান, নারী ও মেয়েদের যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সিদ্ধান্তে সীমিত অধিকার, এবং অপ্রতুল রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা। এসডিজি অগ্রগতির ২০২৩ সালের মধ্য-মেয়াদি পর্যালোচনা  ইঙ্গিত দেয় যে, বাল্যবিবাহ বন্ধ করতে আরও ৩০০ বছর, বিদ্যমান আইনি কাঠামোর ফাঁক পূরণ করতে ২৮৬ বছর, এবং ম্যানেজমেন্ট ও আইনসভায় সমান নেতৃত্বের প্রতিনিধিত্ব অর্জন করতে যথাক্রমে ১৪০ বছর ও ৪৭ বছর সময় লাগবে।


একটি বিস্তৃত-ভিত্তিক আর্থ-সামাজিক রূপান্তরকে অনুঘটন করার ক্ষেত্রে এর গুণক প্রভাব থাকা সত্ত্বেও দেশগুলি এসডিজি ৫ লক্ষ্যগুলির অগ্রগতির জন্য স্থিতিশীল বিনিয়োগের উপর স্পষ্টভাবে জোর দিতে ব্যর্থ হয়েছে। এসডিজি ৫ অর্থায়নের ব্যবধান বর্তমানে প্রতি বছর
৬.৪ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার বলে আনুমানিক হিসাব করা হয়েছে, যা উন্নয়নশীল বিশ্বের জনসংখ্যার মাত্র ৭০ শতাংশের চাহিদা মেটাতে যথেষ্ট হবে। বিশ্ব যতই ২০৩০ সময়সীমার কাছাকাছি চলে যাচ্ছে, তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ করা না হলে সামাজিক খরচ ও প্রয়োজনীয়  বিনিয়োগ সম্ভবত ততই বাড়তে থাকবে। অ্যাজেন্ডা ২০৩০ কাঠামোর মধ্যে এসডিজি ৫-কে অগ্রাধিকার দেওয়ার জন্য পর্যাপ্ত অর্থায়নের ব্যবস্থা করতে হলে একটি ব্যাপক ও বহুমাত্রিক পদ্ধতি গ্রহণ করা অপরিহার্য হবে। এর মধ্যে নীতিনির্ধারণ প্রক্রিয়ায় লিঙ্গ দৃষ্টিভঙ্গি একীভূত করা, নারীর শিক্ষা ও স্বাস্থ্য বিনিয়োগ বাড়ানো, অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নের প্রসার, এবং নারীর অধিকার রক্ষার জন্য আইনি ও প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোকে শক্তিশালী করা অন্তর্ভুক্ত করা উচিত।

অ্যাজেন্ডা ২০৩০ কাঠামোর মধ্যে এসডিজি ৫-কে অগ্রাধিকার দেওয়ার জন্য পর্যাপ্ত অর্থায়নের ব্যবস্থা করতে হলে একটি ব্যাপক ও বহুমাত্রিক পদ্ধতি গ্রহণ করা অপরিহার্য হবে।

 

আইডব্লিউডি ২০২৪ থিম হাইলাইট হিসাবে ব্যক্তি, সম্প্রদায় ও প্রতিষ্ঠান সকলেরই লিঙ্গসমতাকে এগিয়ে নিতে এবং এসডিজি ৫–কে অগ্রাধিকার দিতে ভূমিকা পালন করতে হবে। সরকার লিঙ্গসমতাকে উন্নীত করে এমন আইন প্রণয়ন ও প্রয়োগ করতে পারে, লিঙ্গ-প্রতিক্রিয়াশীল কর্মসূচিতে সংস্থান বরাদ্দ করতে পারে, এবং মহিলাদের সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়ায় অর্থপূর্ণ অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে পারে।  ব্যবসাগুলি এমন নীতি গ্রহণ করতে পারে যা লিঙ্গ বৈচিত্র্য ও অন্তর্ভুক্তি প্রচার করে, লিঙ্গভিত্তিক বেতনের ব্যবধান দূর করে, এবং মহিলাদের উদ্যোক্তা হওয়া ও নেতৃত্বকে সমর্থন করে। নাগরিক সমাজ সংস্থাগুলি মহিলাদের অধিকারের পক্ষে ওকালতি করতে পারে, লিঙ্গ-ভিত্তিক হিংসা থেকে বেঁচে থাকা ব্যক্তিদের সহায়তা পরিষেবা প্রদান করতে পারে, এবং লিঙ্গসমতার প্রতি তাদের অঙ্গীকারের জন্য সরকার ও অন্য অংশীদারদের দায়বদ্ধ রাখতে পারে।

স্থিতিশীল উন্নয়নের জন্য ২০৩০ অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়নে এসডিজি ৫ কেন্দ্রীয়। এসডিজি ৫ এবং অন্য লক্ষ্যগুলির মধ্যে আন্তঃসম্পর্কগুলি আমাদের সম্মিলিত ভবিষ্যতে একটি নৈতিক বাধ্যতা এবং একটি কৌশলগত বিনিয়োগ হিসাবে লিঙ্গ সমতা অর্জনের প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেয়।



দেবস্মিতা সরকার অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশন–এর জুনিয়র ফেলো

রিয়া শর্মা অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের একজন রিসার্চ ইন্টার্ন।

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.

Authors

Debosmita Sarkar

Debosmita Sarkar

Debosmita Sarkar is a Junior Fellow with the SDGs and Inclusive Growth programme at the Centre for New Economic Diplomacy at Observer Research Foundation, India. ...

Read More +
Rhea Sharma

Rhea Sharma

Rhea Sharma is a Research Intern at the Observer Research Foundation ...

Read More +