গাজায় আক্রমণ অব্যাহত থাকায় নিরাপত্তা পরিষদের কূটনৈতিক আলোচনায় একাধিক ভেটো একের পর এক সঙ্কল্পকে পরাস্ত করেছে, যা রাষ্ট্রপুঞ্জের আরোপিত ‘মানবিক যুদ্ধবিরতি’কে অসম্ভব করে তুলেছে। এটি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি, ইউএন হাই কমিশনার ফর হিউম্যান রাইটস (ওএইচসিএইচআর) এবং ইউএন হাই কমিশনার ফর রিফিউজিস-এর (ইউএনএইচসিআর) এর মতো সংস্থাগুলিকে অসহায় ও প্রয়োজনীয় মানবিক সহায়তা প্রদানে অক্ষম করে তুলেছে। প্রথম ভেটো দেখা গিয়েছিল যখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র রেজোলিউশন এস/২০২৩/৭৭৩-এর বিরুদ্ধে ভেটো প্রয়োগ করে। কারণ এতে ইজরায়েলের আত্মরক্ষার অধিকারের পক্ষে কথা বলা হয়নি এবং হামাসের নামও উল্লেখ করা হয়নি। এই নেতিবাচক ভোট প্রত্যাশিত ছিল। কারণ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ১৯৪৫ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে ইজরায়েল ও প্যালেস্তাইন সম্পর্কিত প্রস্তাবগুলিতে ৩৪ বার ভেটো প্রয়োগ করেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এটিকে ‘ইজরায়েল এবং প্যালেস্তাইনিদের বিভক্ত করে এমন মূল সমস্যাগুলি সমাধান করার প্রচেষ্টাকে বোকামি’ বলে মনে করে। এটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে ইজরায়েলের চারপাশে তার আঞ্চলিক আধিপত্য বজায় রাখতে এবং রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদ (ইউএনএসসি) দ্বারা মধ্যস্থতা করে আলোচনার বিপরীতে দলগুলির মধ্যে প্রত্যক্ষ আলোচনার প্রচার চালায়। স্থগিত বা ‘যুদ্ধবিরতি’র পরিবর্তে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ‘বিরতি’ প্রস্তাবটিও ইউএনএসসি-র শক্তি ধারণ করে কৌশলগত ভাবে ইজরায়েলের স্বার্থ রক্ষার পথকেই অনুসরণ করে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এটিকে ‘ইজরায়েল এবং প্যালেস্তাইনিদের বিভক্ত করে এমন মূল সমস্যাগুলি সমাধান করার প্রচেষ্টাকে বোকামি’ বলে মনে করে।
নিরাপত্তা পরিষদে মার্কিন ভেটো অনুমানযোগ্য হলেও এ কথা মোটেই প্রত্যাশিত ছিল না যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভেটো ব্যবহার করে খসড়া রেজোলিউশনের পৃষ্ঠপোষকতা করবে এবং ইউএনএসসির সামনে তা পেশ করার কাজেও সক্রিয় হয়ে উঠবে। আমেরিকার প্রস্তাবিত রেজোলিউশনের বিরলতা দ্বিমুখী। প্রথমত, প্যালেস্তাইনের সংঘাতে রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদকে যুক্ত করার বিষয়টি অস্বাভাবিক। এটি কাউন্সিল থেকে ইজরায়েল-প্যালেস্তাইন বিরোধকে প্রতিরোধ করার জন্য তার দশকব্যাপী পুরনো অবস্থানের বিরোধিতা করে। দ্বিতীয়ত, এই রেজোলিউশনটি ইজরায়েল-প্যালেস্তাইন প্রসঙ্গে রাশিয়া-চিন দ্বৈত শক্তি দ্বারা প্রদেয় প্রথম টেন্ডেম ভেটোর প্রত্যাখ্যান করেছে। টেন্ডেম ভেটোর মধ্যে রাশিয়ান নেতিবাচক ভোট প্রত্যাশিত থাকলেও স্বাভাবিক বিরতির পরিবর্তে চিনের একটি ভেটোর সরাসরি প্রয়োগকে একটি উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি বলে মনে করা উচিত। পশ্চিম এশিয়ায় একটি শান্তি চুক্তির মধ্যস্থতায় চিনের আগ্রহ থাকলেও চিনা ভেটো দর্শিয়েছে যে, তারাও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পথেই হাঁটছে, অর্থাৎ ইউএনএসসি-র অচলাবস্থা বজায় রাখছে, যাতে প্রভাবশালী বৃহৎ শক্তিগুলির নজরদারিতে সংশ্লিষ্ট দলগুলি নিজেদের মধ্যে সরাসরি মধ্যস্থতা করতে পারে। বর্তমানে কাতার যুদ্ধরত ইজরায়েল ও হামাসের মধ্যে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ করছে। এই মুহূর্তে একটি চিনা ভেটো হামাসকে এই স্পষ্ট ইঙ্গিতই পাঠিয়েছে যে, চিন কেবল ক্ষমতার দিক থেকেই নয়, আরব উপসাগরকে তুষ্ট করার জন্য বহুপাক্ষিক প্রতিষ্ঠানগুলিতে সাহসী কূটনৈতিক পদক্ষেপ করার ক্ষেত্রেও সক্ষম এবং আগ্রহী। এটি ইজরায়েল-প্যালেস্তাইন বিরোধের সম্ভাব্য মধ্যস্থতাকারী হিসাবে প্যালেস্তাইনি নেতৃত্বের সামনে চিনের ভাবমূর্তিকে শক্তিশালী করে তুলেছে। চিন প্রকাশ্যে ঘোষণা করেছিল যে, তারা চিনের মাটিতে সরাসরি শান্তি আলোচনার জন্য প্যালেস্তাইন ও ইজরায়েলের আলোচকদের স্বাগত জানাবে। এটি আরও স্পষ্ট করে যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো চিনও রাষ্ট্রপুঞ্জের বহুপাক্ষিক শৃঙ্খলের বাইরে শান্তি আলোচনাকে স্বাগত জানায়।
নিরাপত্তা পরিষদে মার্কিন ভেটো অনুমানযোগ্য হলেও এ কথা মোটেই প্রত্যাশিত ছিল না যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভেটো ব্যবহার করে খসড়া রেজোলিউশনের পৃষ্ঠপোষকতা করবে এবং ইউএনএসসির সামনে তা পেশ করার কাজেও সক্রিয় হয়ে উঠবে।
একটি আন্তর্জাতিক শান্তি সম্মেলনের জন্য চিনের প্রস্তাবটিও ভূ-রাজনৈতিক আলোকে ব্যাখ্যা করা জরুরি। এই ধরনের শান্তি সম্মেলনের জন্য চিনের দাবিকে বিশ্লেষকরা রাষ্ট্রপুঞ্জ-সংলগ্ন বহুপাক্ষিক কাঠামোর প্রতি আনুগত্য বলে মনে করেন। এটি রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ পরিষদের রেজোলিউশন ৪২/৬৬ডি থেকে উদ্ভূত হয়েছে, যা ইউএনএসসি-কে এই ধরনের শান্তি সম্মেলন আয়োজন করার আহ্বান জানিয়েছে। ইউএনএসসি-এর মধ্যে এক অনড় মার্কিন উপস্থিতির কথা বিবেচনা করে এই ধরনের সম্মেলন একেবারেই অসম্ভব। কারণ ইজরায়েল এই ধরনের ধারণার বিরোধিতা করে এসেছে। অতএব, চিনের সাম্প্রতিক সম্মেলনের আহ্বান পশ্চিম এশিয়ার সংঘাতে সরাসরি মধ্যস্থতা করার জন্য চিনের চাপা উচ্চাকাঙ্ক্ষার মোড়ক হিসাবে কাজ করে। এই পরিস্থিতি চিনকে ভূ-রাজনৈতিক স্বার্থের নিরিখে রাষ্ট্রপুঞ্জের বহুপাক্ষিক ব্যবস্থাকে বিকল করে দেওয়ার অপরাধে অভিযুক্ত না করে বরং চিনকে দলগুলির মধ্যে সরাসরি মধ্যস্থতা করার উচ্চাকাঙ্ক্ষাকেই অব্যাহত রাখতে সাহায্য করে।
ইউএনএসসি-র বিকল হয়ে পড়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং চিনা স্বার্থের অনুকূল হলেও কাউন্সিলে ভেটোর নিম্নমুখী প্রভাব বহুপাক্ষিক প্রতিক্রিয়ার সম্পূর্ণ শৃঙ্খলকেই প্রভাবিত করেছে। ইন্টার-এজেন্সি স্ট্যান্ডিং কমিটি (আইএএসসি) – যা মানবিক প্রতিক্রিয়াকে সমন্বয়কারী শীর্ষস্থানীয় রাষ্ট্রপুঞ্জের সংগঠন - গাজা সঙ্কটের বিষয়ে রাষ্ট্রপুঞ্জের ১৮টি সংস্থার প্রধান প্রতিনিধিদের দ্বারা স্বাক্ষরিত একটি যৌথ বিবৃতি দিয়ে প্রতিক্রিয়া জানায় (দ্রষ্টব্য চিত্র ১)। ইউএনএসসি থেকে ছাড়পত্র ছাড়াই বহুপাক্ষিক প্রতিক্রিয়া এই ধরনের বিবৃতিতে সীমাবদ্ধ ছিল, যেহেতু গাজায় যাওয়া সাহায্য ইজিপশিয়ান রেড ক্রিসেন্ট এবং ইজিপশিয়ান ফুড ব্যাঙ্কের মতো রাষ্ট্রপুঞ্জ-বহির্ভূত মিশরীয় সংস্থাগুলি দ্বারা পরিচালিত হয়। এই সংস্থাগুলি ন্যাশনাল অ্যালায়েন্স ফর সিভিল ডেভেলপমেন্ট ওয়ার্ক (এনএসিডিডব্লিউ) নামে একটি কনসোর্টিয়াম গঠন করেছে এবং তারাই গাজার মাটিতে কাজ করছে। এটি রাষ্ট্রপুঞ্জ প্রচলিত ত্রাণের শৃঙ্খলপথ পরিবর্তন করে, রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবিক দলকে ইজিপশিয়ান রেড ক্রেসেন্ট দ্বারা ত্রাণ বণ্টনের ব্যাপারে পথ দেখানোর জন্য অবশেষে মিশরীয় সরকারের কাছ থেকে অনুমোদন পেয়েছে। গাজার কাছে ত্রাণ পাঠানোর জন্য স্বতন্ত্র দেশীয় এবং বেসরকারি সংস্থাগুলি ইজিপশিয়ান রেড ক্রেসেন্ট এবং অন্যান্য মিশরীয় সংস্থার কাছে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। কারণ রাষ্ট্রপুঞ্জের সংস্থাগুলি নিরাপত্তা পরিষদের অচলাবস্থার কারণে নিষ্ক্রিয় হয়ে রয়েছে। এটি নাগরিক সমাজের শক্তিগুলির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার উপর আলোকপাত করলেও একই সঙ্গে সঙ্কটের সময়ে বহুপাক্ষিক প্রতিক্রিয়ার একটি স্পষ্ট ব্যর্থতাকেও দর্শায়। বাস্তবতা হল এই যে, রাষ্ট্রপুঞ্জ-পরিচালিত মানবিক সহায়তা অচলায়তনে পর্যবসিত হয়েছে।
স্বাক্ষরকারী-
১) মার্টিন গ্রিফিথ, ইমার্জেন্সি রিলিফ কোঅর্ডিনেটর অ্যান্ড আন্ডার-সেক্রেটারি-জেনারেল ফর হিউম্যানিটেরিয়ান অ্যাফেয়ার্স (ওসিএইচএ)
২) সোফিয়া স্পেকমান সিনেইরো, সেক্রেটারি জেনারেল, কেয়ার ইন্টারন্যাশনাল
৩) জেন বাখহার্স্ট, চেয়ার অফ আইসিভিএ বোর্ড (খ্রিস্টান ত্রাণ)
৪) জেমি মান, এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর, ইন্টারন্যাশনাল কাউন্সিল অব ভলেন্টারি এজেন্সিজ (আইসিভিএ)
৫) অ্যান গোদার, চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার এবং প্রেসিডেন্ট এ আই, ইন্টারঅ্যাকশন
৬) এমি এ পোপ, ডিরেক্টর জেনারেল, ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর মাইগ্রেশন (আইওএম)
৭) জাদা ডি’ওয়েন ম্যাককেনা, চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার, মার্সি কর্পোরেশনস
৮) ভলকার তুর্ক, ইউনাইটেড নেশনস হাই কমিশনার ফর হিউম্যান রাইটস (ওএইচসিএইচআর)
৯) জান্তি সোয়েরিপ্তো, প্রেসিডেন্ট ও চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার, সেভ দ্য চিলড্রেন
১০) পাওলা গাভিরিয়া বেতানকর, ইউনাইটেড নেশনস স্পেশ্যাল র্যাপোটার অন দ্য হিউম্যান রাইটস অফ ইন্টারনালি ডিসপ্লেসড পার্সনস (এসআর অন এইচআর অফ আইডিপি)
১১) আকিম স্টেইনার, অ্যাডমিনিস্ট্রেটর, ইউনাইটেড নেশনস ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম (ইউএনডিপি)
১২) নাতালিয়া কানেম, এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর, ইউনাইটেড নেশনস পপুলেশন ফান্ড (ইউএনএফপিএ)
১৩) ফিলিপ্পো গ্রান্দি, ইউনাইটেড নেশনস হাই কমিশনার ফর রিফিউজিস (ইউএনএইচসিআর)
১৪) মাইমুনা মহম্মদ শরিফ, এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর, ইউনাইটেড নেশনস হিউম্যান সেটেলমেন্ট প্রোগ্রাম (ইউএন-হ্যাবিট্যাট)
১৫) ক্যাথারিন রাসেল, এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর, ইউনাইটেড নেশনস চিলড্রেনস ফান্ড (ইউএনআইসিইএফ)
১৬) সীমা বাহোস, আন্ডার-সেক্রেটারি-জেনারেল এবং এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর, ইউএন উইমেন
১৭) সিন্ডি ম্যাককেন, এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর, ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম (ডব্লিউএফপি)
১৮) টেডরস আধানম গেব্রেসিয়াস, ডিরেক্টর-জেনারেল, ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন (ডব্লিউএইচও)
চিত্র ১- গাজা সংক্রান্ত আইএএসসি যৌথ বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারীদের তালিকা
এই মুহূর্তে যা প্রয়োজন, তা হল সহযোগিতা বৃদ্ধি করা, যাতে নাগরিক সমাজের ক্ষমতাশালীরা সহজেই রাষ্ট্রপুঞ্জের সংস্থাগুলির ত্রাণভাণ্ডারকে ব্যবহার করে গাজায় মানবিক ত্রাণের পরিমাণ বৃদ্ধি করতে পারে।
মানবিক ত্রাণের উপর এই প্রভাব হল পশ্চিম এশিয়ায় শান্তির মধ্যস্থতাকারী হিসেবে নিজেদের উপস্থাপন করার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চিনের মধ্যে বিদ্যমান প্রতিযোগিতার ফলে আনুষঙ্গিক ক্ষতিসমূহ। এই পরিস্থিতিটির এ বার বহুপাক্ষিক ত্রাণ বিতরণের নকশা এবং এতে ইউএনএসসি-র ভূমিকার পরিবর্তন ঘটানোর জন্য সতর্কবার্তা হিসেবে কাজ করা উচিত। ইউএনজিএ-কে ত্রাণ বিতরণের ক্ষেত্রে আরও বেশি ক্ষমতা প্রদান করা উচিত। এমন চরম সঙ্কটের সময়ে সাংগঠনিক সংস্কারের জন্য চাপ দেওয়া বৃথা। এই পরিস্থিতি রাষ্ট্রপুঞ্জের সংস্থা এবং এনএসিডিডব্লিউ-এর মধ্যে তীব্র সমন্বয়ের দাবি রাখে। প্রাথমিক সমন্বয় শুরু হলেও রাষ্ট্রপুঞ্জের দলটি এখন মিশর থেকে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার মাধ্যমে ত্রাণ বিতরণের প্রচেষ্টা চালাতে পারে। এই মুহূর্তে যা প্রয়োজন, তা হল সহযোগিতা বৃদ্ধি করা, যাতে নাগরিক সমাজের ক্ষমতাশালীরা সহজেই রাষ্ট্রপুঞ্জের সংস্থাগুলির ত্রাণভাণ্ডারকে ব্যবহার করে গাজায় মানবিক ত্রাণের পরিমাণ বৃদ্ধি করতে পারে।
অঙ্গদ সিং ব্রার অবজার্ভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের রিসার্চ অ্যাসিস্ট্যান্ট।
The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.