Author : Sunaina Kumar

Published on May 24, 2025 Updated 0 Hours ago

সময় ব্যবহারের সর্বশেষ সমীক্ষার প্রাথমিক ফলাফলগুলি ভারতে নারীদের উপর অত্যধিক অবৈতনিক কাজের বোঝা প্রদর্শন করে, যার নীতি নির্ধারণের উপর প্রভাব রয়েছে।

নারীদের কাজের উপর জোর দেওয়া: সময় ব্যবহারের সমীক্ষা ২০২৪ থেকে প্রাপ্ত তথ্য

উনিশ শতকের শেষের দিকে ইংল্যান্ড এবং ফ্রান্সের শ্রমিক শ্রেণির পরিবারগুলিতে শুরু হওয়া সময় ব্যবহারের সমীক্ষাগুলি প্রাথমিকভাবে পারিবারিক বাজেট পরীক্ষা করা এবং সময়ের ব্যবহারের উপর ভিত্তি করে মানুষের আচরণ মূল্যায়ন করার জন্য পরিচালিত হয়েছিল। বিংশ শতাব্দীর মধ্যে শ্রমবাজারের বাইরে করা কাজকে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য এবং পরিবারের মধ্যে অবৈতনিক কাজের অর্থনৈতিক মূল্য পরিমাপ করার জন্য সময় ব্যবহারের সমীক্ষাগুলি চালানো হতে থাকে।


যেহেতু পরিবারগুলিতে বেশিরভাগ অবৈতনিক কাজ মহিলারা করে থাকেন, তাই সময় ব্যবহারের সমীক্ষাগুলি লিঙ্গ সমতা, জাতীয় কল্যাণ এবং মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) মহিলাদের অবৈতনিক কাজের অবদান পরিমাপের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। বিশ্বব্যাপী, মহিলারা বিশ্বের তিন-চতুর্থাংশ অবৈতনিক কাজ করেন। পরিবারের মধ্যে কাজের লিঙ্গভিত্তিক বিভাজন মহিলাদের শিক্ষা এবং কর্মসংস্থানে প্রবেশাধিকারকে বাধাগ্রস্ত করে।


ভারতীয় মহিলাদের দ্বারা অবৈতনিক গৃহস্থালি এবং যত্নের কাজে ব্যয় করা সময় পুরুষদের তুলনায় আট গুণেরও বেশি এবং অন্যান্য বেশিরভাগ দেশের তুলনায় বেশি।



অস্ট্রেলিয়া, জাপান, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং চিনের মতো হাতেগোনা কয়েকটি দেশের মধ্যে ভারত অন্যতম, যারা জাতীয় পর্যায়ে সময় ব্যবহারের সমীক্ষা পরিচালনা করে। ভারতে প্রথম সমীক্ষাটি
১৯৯৮ সালে পাইলট ভিত্তিতে পরিচালিত হয়েছিল, যা ছয়টি রাজ্যকে অন্তর্ভুক্ত করে এবং ২০১৯ সালে একটি বৃহত্তর সমীক্ষার ভিত্তি স্থাপন করে। ২০১৯ সালের সমীক্ষাটি ভারতে পুরুষ এবং মহিলাদের মধ্যে সময় ব্যবহারের বৈষম্য স্পষ্টভাবে প্রকাশ করে। ভারতীয় মহিলাদের দ্বারা অবৈতনিক গৃহস্থালি এবং যত্নের কাজে ব্যয় করা সময় পুরুষদের তুলনায় আট গুণেরও বেশি এবং অন্যান্য বেশিরভাগ দেশের তুলনায় বেশি। ভারতে মহিলা শ্রম অংশগ্রহণের হারের বিভ্রান্তিকর হ্রাসের উত্তর সময় ব্যবহারের সমীক্ষায় পাওয়া যাবে।


সময় দারিদ্র্য একটি লিঙ্গভিত্তিক সমস্যা, যা পুরুষদের তুলনায় মহিলাদের বেশি প্রভাবিত করে।
গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে বেতনভুক্ত এবং অবৈতনিক কাজের ভারী বোঝার কারণে সৃষ্ট সময় দারিদ্র্য মহিলাদের সুস্থতার উপর প্রভাব ফেলে, কারণ তাদের বেতনভুক্ত কাজ, শিক্ষা ও অবসরের জন্য সময় কম থাকে এবং এটি তাদের দারিদ্র্যের মধ্যে পড়া বা থাকার ঝুঁকি বাড়ায়।


২০২৪ সালের তথ্য এবং মহিলাদের সময় দারিদ্র্য

পরিসংখ্যান ও কর্মসূচি বাস্তবায়ন মন্ত্রক কর্তৃক সর্বশেষ সময়-ব্যবহার সমীক্ষার (জানুয়ারি-ডিসেম্বর ২০২৪) প্রাথমিক
ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে। সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে যে,  নারীরা (৬ বছর বা তার বেশি বয়সীদের জন্য) প্রতিদিন বিনা বেতনে গৃহস্থালি কাজে ব্যয় করেন ২৮৯ মিনিট, যেখানে পুরুষরা ৮৮ মিনিট সময় ব্যয় করেন। দিনে মোট সময়ের মধ্যে, মহিলারা তাদের সময়ের ১৬.৪ শতাংশ বিনা বেতনে গৃহস্থালি কাজে ব্যয় করেন, যেখানে পুরুষরা তাদের সময়ের মাত্র ১.৭ শতাংশ এই কাজে ব্যয় করেন। শুধু এটুকুই নয়। গৃহস্থালির কাজ ছাড়াও, ভারতে নারীরা প্রতিদিন ১৩৭ মিনিট যত্ন, শিশু এবং বয়স্কদের যত্ন নেওয়ার কাজে ব্যয় করেন, যেখানে পুরুষরা ৭৫ মিনিট ব্যয় করেন।


বয়স বাড়ার সাথে সাথে নারীদের উপর বিনা বেতনে গৃহস্থালি ও যত্নের কাজের বোঝা বৃদ্ধি পায়। ১৫-৫৯ বছর বয়সী মহিলারা এই ধরনের কাজে প্রতিদিন ৩০৫ মিনিট ব্যয় করেছেন, যা ২০১৯ সালে ৩১৫ মিনিট থেকে সামান্য হ্রাস পেয়েছে। একই বয়সের ক্ষেত্রে, ৪১ শতাংশ মহিলা পরিবারের সদস্যদের যত্ন নেওয়ার কাজে অংশগ্রহণ করেছিলেন, যেখানে পুরুষরা ২১.৪ শতাংশ অংশগ্রহণ করেছিলেন।


১৫-৫৯ বছর বয়সী মহিলারা এই ধরনের কাজে প্রতিদিন ৩০৫ মিনিট ব্যয় করেছেন, যা ২০১৯ সালে ৩১৫ মিনিট থেকে সামান্য হ্রাস পেয়েছে।



নারীদের সময়ের উপর একাধিক দাবি কীভাবে বেতনভোগী কাজে তাদের অংশগ্রহণের উপর সরাসরি প্রভাব ফেলে তা সমীক্ষাটি তুলে ধরে। ১৫-৫৯ বছর বয়সী ৭৫ শতাংশ পুরুষ ২৪ ঘণ্টার রেফারেন্স সময়কালে কর্মসংস্থান এবং সম্পর্কিত কার্যকলাপে অংশগ্রহণ করলেও, মাত্র ২৫ শতাংশ নারী বেতনভোগী কাজে অংশগ্রহণ করেন।

বেতনভোগী কাজের অর্থনৈতিক মূল্য

গত দশকে ভারতে নারীদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে প্রবেশাধিকার এবং সামগ্রিক
ডিজিটাল আর্থিক অন্তর্ভুক্তিতে উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়েছে, যা পরিবারের মধ্যে ক্ষমতায়ন এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণের উপর প্রভাব ফেলে। পাশাপাশি রান্নার পরিচ্ছন্ন জ্বালানি, পাইপযুক্ত জল, বিদ্যুদয়ন, রাস্তা নির্মাণ এবং স্যানিটেশন পরিষেবার মতো ভৌত পরিকাঠামোর উন্নতি হয়েছে, যা উন্নয়নশীল দেশগুলিতে নারীদের দারিদ্র্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ নির্ধারক হিসাবে বিবেচিত হয়। কিন্তু এ সবের ফলে ভারতীয় নারীদের উপর মোট কাজের বোঝা কমেনি। ২০১৯ সালের সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে যে রান্না, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা এবং শিশু যত্ন নারীদের অবৈতনিক কাজে ব্যয় করা প্রায় ৮৫ শতাংশ সময় দখল করে। সহায়ক নীতিমালা সত্ত্বেও নারীদের অবৈতনিক কাজ নিয়ে সামাজিক নিয়মগুলি পরিবর্তনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধী।


২০১৯ সালের সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে যে রান্না, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা এবং শিশু যত্ন নারীদের অবৈতনিক কাজে ব্যয় করা প্রায় ৮৫ শতাংশ সময় দখল করে।

যদিও পরিবার, সম্প্রদায় এবং সামগ্রিকভাবে অর্থনীতির কল্যাণের জন্য অবৈতনিক কাজ অপরিহার্য, তবুও এটি মূলত অস্বীকৃত এবং অবমূল্যায়িত রয়ে গিয়েছে। তবে, গবেষকদের কাছে নারীদের অবৈতনিক কাজের অর্থনৈতিক খরচ গণনা করার জন্য সময়-ব্যবহারের তথ্য ব্যবহার করা ক্রমশ সাধারণ ঘটনা হয়ে উঠেছে। সরকারের গত বছরের একটি প্রতিবেদন অনুসারে, নারীদের অবৈতনিক গৃহস্থালি কাজের আনুমানিক অর্থনৈতিক মূল্য ভারতের জিডিপির ১৫ শতাংশ থেকে ১৭ শতাংশ পর্যন্ত। প্রতিবেদনে জোর দেওয়া হয়েছে যে পরিবারের মধ্যে নারীদের কাজের দ্বারা সৃষ্ট উল্লেখযোগ্য মূল্য বেশিরভাগই উপেক্ষা করা হয়, কারণ তা বাজারের বাইরে।


সর্বশেষ সময়-ব্যবহার সমীক্ষাটি অবৈতনিক কাজের অসম বণ্টন মোকাবিলার প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেয়। সময় দারিদ্র্যের ক্ষেত্রে লিঙ্গ বৈষম্য এবং নারীর শ্রমশক্তির অংশগ্রহণকে সীমিত করা ব্যবধানগুলি মোকাবিলা করার জন্য প্রয়োজন সরকারি ও বেসরকারি ক্ষেত্রের মধ্যে একটি সহযোগিতামূলক পদ্ধতি, যত্নের পরিকাঠামোতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি, সহায়ক ছুটি ও সুবিধা নীতি, দক্ষতা প্রশিক্ষণ ও যত্ন পরিষেবা ক্ষেত্রে কর্মসংস্থান সৃষ্টি।



সুনয়না কুমার অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের সিনিয়র ফেলো।

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.