অর্থবর্ষ ২৩-এ সংযুক্ত আরব আমিরশাহি (ইউএই) পাঁচ বছরের সময়-মেয়াদে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চিনের মতো ঐতিহাসিকভাবে শক্তিশালী অর্থনৈতিক অংশীদারদের ছাড়িয়ে আফ্রিকার বৃহত্তম উন্নয়ন অংশীদার ও বিনিয়োগকারী (১১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার) হিসাবে আবির্ভূত হতে প্রস্তুত হয়ে গিয়েছিল। সম্মিলিতভাবে , আবুধাবি অর্থবর্ষ ২২ ও অর্থবর্ষ ২৩-এ লজিস্টিক, জ্বালানি, খনিজ ও খননের মতো গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক খাতে ৯৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করেছে বা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এই বিশাল বিনিয়োগের কারণে ইইউ, চিন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পরে গত এক দশকে আমিরশাহি মহাদেশের চতুর্থ বৃহত্তম বিনিয়োগকারী হিসাবে আবির্ভূত হয়েছে। আমিরশাহি মহাদেশটির বৃহত্তম জিসিসি বিনিয়োগকারীও। এই বিশাল বিনিয়োগগুলি আফ্রিকার দেশগুলি এবং আমিরশাহির মধ্যে ২০১২ সালের ২০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার থেকে ২০২২ সালে ৬০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের অ-শক্তি বাণিজ্য প্রসারিত করতে সহায়তা করেছে।
আবুধাবির বিনিয়োগ ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ মহাদেশটি ১৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার পরিকাঠামো উন্নয়নের ব্যবধানের সম্মুখীন, যা প্রতি বছর প্রসারিত হচ্ছে।
আফ্রিকা মহাদেশের সঙ্গে আমিরশাহির গভীরতর অর্থনৈতিক সহযোগিতা এমন এক সময়ে গড়ে উঠছে, যখন চিনের অর্থনৈতিক সম্পৃক্ততা হ্রাস পাচ্ছে এবং ইইউ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে পিতৃতান্ত্রিক, চাপযুক্ত এবং তহবিল দেওয়ার ক্ষেত্রে ধীরগতিসম্পন্ন হিসাবে দেখা হচ্ছে। আবুধাবির বিনিয়োগ ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ মহাদেশটি ১৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার পরিকাঠামো উন্নয়নের ঘাটতির সম্মুখীন, যা প্রতি বছর প্রসারিত হচ্ছে। আমিরশাহির এই বিশাল বিনিয়োগগুলি আফ্রিকায় উল্লেখযোগ্য ভূ-রাজনৈতিক ও ভূ-অর্থনৈতিক গুরুত্ব-সহ আবুধাবিকে ফল দিয়েছে। এই নিবন্ধটি আফ্রিকায় সংযুক্ত আমিরশাহির ভূ-অর্থনৈতিক কৌশল এবং এর পিছনে কৌশলগত ও অর্থনৈতিক যুক্তি বিশ্লেষণ করে।
আমিরশাহির অর্থনৈতিক কৌশল ও বিনিয়োগ
আমিরশাহির অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তা অগ্রাধিকার দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে আমিরশাহি-আফ্রিকা সম্পর্ককে চালিত করেছে। ২০০০ থেকে শুরু করে, দুবাই আমিরশাহির বিনিয়োগকারী ও ব্যাঙ্ক আফ্রিকার অনেক দেশের বিশিষ্ট অর্থনৈতিক অংশীদার হয়েছে। দুবাইয়ের জন্য, ২০০০-এর দশকে, এটি একটি কৌশলগত অগ্রাধিকার ছিল, কারণ বৈচিত্র্যময় বিনিয়োগগুলি তার সীমিত তেল ও গ্যাসের সঞ্চয়ের প্রেক্ষিতে আবু ধাবির ঝুঁকি তুলনায় কমাচ্ছিল। আফ্রিকার অব্যবহৃত প্রাকৃতিক সম্পদ, বাজার, এবং প্রতিশ্রুতিময় ও ক্রমবর্ধমান মধ্যবিত্তরা লজিস্টিক, পর্যটন, পরিকাঠামোগত উন্নয়ন, শক্তি, স্বর্ণ ও কৃষি ক্ষেত্রে আকর্ষণীয় সুযোগ প্রদান করেছে। গত দুই দশকে হর্ন অফ আফ্রিকা, মাগরেব, ও মধ্য আফ্রিকা আমিরশাহির বিনিয়োগকারীদের জন্য অগ্রাধিকার অঞ্চল হিসাবে আবির্ভূত হয়েছে।
আফ্রিকাতে বিনিয়োগের জন্য সংযুক্ত আরব আমিরশাহির ভূ-অর্থনৈতিক কৌশলটি তিন-মুখী: কৌশলগত, অর্থনৈতিক ও আর্থিক। বৈশ্বিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় তেলসমৃদ্ধ দেশগুলির দীর্ঘমেয়াদি প্রাসঙ্গিকতা বজায় রাখা এবং সবুজ পরিবর্তনের যুগে এর আর্থিক আয় সম্পর্কে উদ্বেগ; বিশ্বায়নের আশ্রয়স্থল এবং একটি বৈশ্বিক আর্থিক সংযোগকারী হিসাবে এর প্রাসঙ্গিকতা বজায় রাখা; পূর্ব আফ্রিকা ও লোহিত সাগরের ধারে এর অর্থনৈতিক উচ্চতা প্রতিষ্ঠা করা এবং রাজনৈতিক গুরুত্ব অর্জন করা হল আফ্রিকায় সংযুক্ত আরব আমিরশাহির নিজ নিজ অর্থনৈতিক, আর্থিক ও কৌশলগত অগ্রাধিকার।
আফ্রিকার অব্যবহৃত প্রাকৃতিক সম্পদ, বাজার, এবং প্রতিশ্রুতিময় ও ক্রমবর্ধমান মধ্যবিত্তরা লজিস্টিক, পর্যটন, পরকাঠামোগত উন্নয়ন, শক্তি, স্বর্ণ ও কৃষি ক্ষেত্রে আকর্ষণীয় সুযোগ প্রদান করেছে।
এই কৌশলগত ও অর্থনৈতিক বাধ্যবাধকতাগুলি অনুসরণ করে সংযুক্ত আরব আমিরশাহি ২০০০ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে আফ্রিকাতে তার অর্থনৈতিক গুরুত্ব একীভূত করেছে৷ ২০২৩ সালে আফ্রিকায় আমিরশাহির মোট এফডিআই স্টক (৬০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার) চিনকে (৪২.১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার) ছাড়িয়ে গিয়েছে, যে অতীতে সবচেয়ে বড় দ্বিপাক্ষিক ঋণদাতা হয়ে উঠেছিল (৫৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার)। আমিরশাহির বিনিয়োগের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ক্ষেত্রগুলো ছিল লজিস্টিকস (বন্দর উন্নয়ন, সড়ক, রেলপথ, স্থলবন্দর), জ্বালানি (তেল, গ্যাস, সৌর, বায়ু, জলবিদ্যুৎ) এবং খনি (স্বর্ণ, সিআরএম, ইস্পাত, লোহা ও অ্যালুমিনিয়াম)।
মানচিত্র ১: আফ্রিকায় সংযুক্ত আরব আমিরাত কোম্পানির বন্দর

সূত্র: ডেটার্যাপার
সরবরাহ খাতে, সংযুক্ত আরব আমিরশাহির ডিপি ওয়ার্ল্ড এবং আবুধাবি পোর্ট গ্রুপ তেরোটি দেশে যথাক্রমে দশটি ও তিনটি বন্দর পরিচালনা করে। আবুধাবি পোর্ট গ্রুপ ঘানা, মাদাগাস্কার, মোজাম্বিক ও সুদানের সঙ্গে তাদের বন্দর পরিচালনা ও উন্নয়নের বিষয়ে আলোচনা করছে। উদ্দেশ্য হল আমিরশাহিকে এশিয়া, আফ্রিকা ও ইউরোপের মধ্যে একটি লজিস্টিক সংযোগকারী হিসাবে প্রতিষ্ঠা করা, যা আমিরশাহির ভূ-কৌশলগত অবস্থানকে বিশাল গুরুত্বপূর্ণ করে তুলবে। এই বিনিয়োগগুলি আমিরশাহির অর্থনীতি-চালিত বিদেশনীতিকে পোক্ত করে। আফ্রিকাতে এর সংযোগ-বিনিয়োগ আফ্রিকার সম্পদসমৃদ্ধ দেশ ও উদীয়মান বাজারের সঙ্গে অর্থনৈতিক অংশীদারি গড়ে তোলে, এবং আমিরশাহি বাণিজ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ উদীয়মান ও প্রতিষ্ঠিত বাণিজ্য রুটকে 'ফ্রেন্ডশোর' (মিত্রদের নিয়ে কাজ করা) করে তোলে।
মানচিত্র ২: আফ্রিকাতে সংযুক্ত আরব আমিরশাহির পুনর্নবীকরণযোগ্য বিনিয়োগ

সূত্র: ডেটার্যাপার
সংযুক্ত আরব আমিরশাহি আফ্রিকাতে নতুন ও পুরনো শক্তির উৎসগুলিতেও বিনিয়োগ করছে। আবুধাবি গত এক দশকে আফ্রিকাতে প্রায় ৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করেছে, এবং এই দশকের বাকি অংশে আরও ৪.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। আমিরশাহি মহাদেশটির ২৩টি দেশে সৌর, বায়ু, ব্যাটারি, হাইড্রোজেন, বায়ু ও তাপবিদ্যুৎ মিলিয়ে মোটের উপর ১৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করেছে বা বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে (ম্যাপ ২ দেখুন)। পুনর্নবীকরণযোগ্যগুলির প্রতি আমিরশাহি দৃষ্টিভঙ্গি দ্বিমুখী: জীবাশ্ম জ্বালানি ধীরে ধীরে ছেঁটে ফেলার পক্ষে ওকালতি, এবং সবুজ রূপান্তরকে শক্তি জোগানোর জন্য প্রয়োজনীয় সংস্থানগুলিকে সুরক্ষিত/নির্মাণ করতে সিআরএম ও ধাতু ক্ষেত্রে বিনিয়োগে। প্রধানত শক্তি বাণিজ্য ও উন্নয়নের দ্বারা উন্নত একটি অর্থনীতির জন্য এই বিনিয়োগগুলি ভবিষ্যতের জন্য ঝুঁকিহ্রাস প্রক্রিয়া।
ভূ-রাজনৈতিক ও ভূ-অর্থনৈতিক প্রভাব
স্বাভাবিকভাবেই, চিনা বিআরআই-এর মতোই, সংযুক্ত আরব আমিরাশাহির বিশাল বিনিয়োগ একে আফ্রিকার অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ভারসাম্যে ওজনদার করে তুলেছে। হর্ন অফ আফ্রিকা ও লোহিত সাগরের পথে বিনিয়োগ যেমন কৌশলগত তেমনি অর্থনৈতিকও ছিল। আমিরশাহি-ইউরোপ বাণিজ্যের প্রায় ১১০ বিলিয়ন ডলার মূল্যের সামগ্রী লোহিত সাগর দিয়ে যায়। লোহিত সাগরের তীরের এবং হর্নের অভ্যন্তরের দেশগুলি রাজনৈতিকভাবে বিভক্ত, ভঙ্গুর, এবং অভ্যুত্থান ও শাসন পরিবর্তনের ঝুঁকিপূর্ণ। পরস্পর নির্ভরশীল অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব প্রতিষ্ঠা করা লোহিত সাগরে প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করার একটি উপায়। আফ্রিকায় আমিরশাহির অর্থনৈতিক সম্পৃক্ততা এবং এই দেশগুলির রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা থেকে উদ্ভূত আরেকটি প্রবণতা হল আফ্রিকায় আবুধাবির ক্রমবর্ধমান প্রতিরক্ষা অংশীদারিত্ব।
লোহিত সাগরের তীরের এবং হর্নের অভ্যন্তরের দেশগুলি রাজনৈতিকভাবে বিভক্ত, ভঙ্গুর, এবং অভ্যুত্থান ও শাসন পরিবর্তনের ঝুঁকিপূর্ণ। পরস্পর নির্ভরশীল অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব প্রতিষ্ঠা করা লোহিত সাগরে প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করার একটি উপায়।
আবুধাবি যেখানে আমিরাশাহির প্রচুর বিনিয়োগ রয়েছে আফ্রিকার সেইসব দেশগুলির সঙ্গে একটি ত্রিমুখী নিরাপত্তা কৌশল অনুসরণ করে। এই কৌশলটি সক্ষমতা বৃদ্ধি, প্রতিরক্ষা শিল্পে সহযোগিতা ও সরঞ্জাম সংগ্রহ, এবং আফ্রিকাতে আমিরশাহির সামরিক ঘাঁটি স্থাপনের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে। আজ, ছয়টি আফ্রিকান দেশে (ইরিট্রিয়া, সোমালিল্যান্ড, সোমালিয়া, চাদ, লিবিয়া ও মিশর) আমিরশাহির সামরিক ঘাঁটি রয়েছে। অন্যান্য দেশে (রুয়ান্ডা, নাইজেরিয়া, মৌরিটানিয়া, আলজেরিয়া, তানজানিয়া, ইত্যাদি), আমিরশাহি আফ্রিকায় তার অর্থনৈতিক স্বার্থ রক্ষার জন্য সক্ষমতা বৃদ্ধি ও প্রতিরক্ষা শিল্প সহযোগিতার জন্য উপকরণ হিসাবে ব্যবহার করে।
আরেকটি উল্লেখযোগ্য ভূ-অর্থনৈতিক উন্নয়ন আফ্রিকায় আমিরশাহির সরবরাহ ও সংযোগ কৌশলের সঙ্গে সম্পর্কিত। আমিরশাহির লক্ষ্য তার ভূ-কৌশলগত অবস্থানকে কাজে লাগিয়ে নিজেকে এশিয়া, আফ্রিকা ও ইউরোপের মধ্যে একটি লজিস্টিক সংযোগকারী হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করা। আফ্রিকায় এর বিনিয়োগ আবু ধাবির অর্থনীতি-চালিত বিদেশনীতিকে পোক্ত করে। আফ্রিকাতে এর সংযোগ বিনিয়োগ আফ্রিকা্র সম্পদসমৃদ্ধ দেশ এবং উদীয়মান বাজারের সাথে অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব গড়ে তোলে, এবং আমিরশাহির বাণিজ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ উদীয়মান ও প্রতিষ্ঠিত বাণিজ্য রুটকে 'ফ্রেন্ডশোর' করে । উপরন্তু, ডিপি ওয়ার্ল্ড ও এডিপি গ্রুপ আমিরশাহির রাজপরিবারের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত, যার ফলে সরকারের পক্ষে অর্থনৈতিক বিনিয়োগের সঙ্গে আমিরশাহির ভূ-রাজনৈতিক লক্ষ্যগুলিকে সারিবদ্ধ করা সহজ হয়।
প্রতিষ্ঠিত ও বৃহত্তর ডিপি ওয়ার্ল্ডের তুলনায় এডিপি গ্রুপ লজিস্টিক ক্ষেত্রে তুলনামূলকভাবে নতুন খেলোয়াড়। তবুও, ২০২২ সাল থেকে, এডিপি গ্রুপ ছাড় (কনসেশন) ও সহযোগিতা চুক্তির মাধ্যমে পূর্ব আফ্রিকার উপকূলে সুদান, তানজানিয়া, অ্যাঙ্গোলা, মিশর ও কঙ্গো-ব্রাজাভিলে কার্যক্রম সম্প্রসারিত করেছে। ছাড় চুক্তি এবং সরকারি-বেসরকারি অংশীদারি হল এই দুটি লজিস্টিক কোম্পানির দ্বারা আফ্রিকায় আমিরশাহির সামুদ্রিক সংযোগ, লজিস্টিকস ও সংযোগ ব্র্যান্ড প্রসারিত করার জন্য ব্যবহৃত উপকরণ। উদাহরণ তানজানিয়া (দার-এস-সালাম), সোমালিয়া (বোসাসো) ও সেনেগাল (ডাকার)-এ পাওয়া যেতে পারে, যেখানে এই কোম্পানিগুলি বন্দর সম্প্রসারণের জন্য অর্থায়ন করার সময় ২০ বা ৩০ বছরের ছাড় চুক্তি স্বাক্ষর করেছিল।
আমিরশাহি ও চিন আফ্রিকায় পরিপূরকতা ও পারস্পরিক স্বার্থের পাশাপাশি ছাড় ও প্রকল্প নিয়ে নীরবে প্রতিযোগিতা করে। আফ্রিকার অর্থনৈতিক বৃদ্ধি ও বর্ধিত বাণিজ্য দুটোই তাদের স্বার্থের অনুকূল।
উল্লেখযোগ্যভাবে, পূর্ব ও মধ্য আফ্রিকা অঞ্চলগুলি চিন ও রাশিয়ার জন্যও ভূ-রাজনৈতিক স্বার্থের ক্ষেত্র। অনেক দেশে, যেমন রুয়ান্ডা, পুন্টল্যান্ড, মোজাম্বিক, গিনি, সেনেগাল ইত্যাদিতে, আমিরশাহির অর্থনৈতিক সম্পৃক্ততা এমনকি চিনের ট্রান্সন্যাশনাল সংযোগ উদ্যোগ বিআরআই-এর থেকেও পুরনো। যাই হোক, আফ্রিকায় চিন-আমিরশাহি প্রতিযোগিতা ও সহযোগিতার প্রবণতা ইঙ্গিত করে যে তাদের সম্পর্ক মহাদেশে একটি স্বার্থ ভাগ করে নেয়। আমিরশাহি ও চিন আফ্রিকায় পরিপূরকতা ও পারস্পরিক স্বার্থের পাশাপাশি ছাড় ও প্রকল্প নিয়ে নীরবে প্রতিযোগিতা করে। আফ্রিকার অর্থনৈতিক বৃদ্ধি ও বর্ধিত বাণিজ্য দুটোই তাদের স্বার্থের অনুকূল।
উপসংহার
আফ্রিকায় সংযুক্ত আরব আমিরশাহির বিদেশনীতি অনন্য। লজিস্টিকস ও বড়-মূল্যের পরিকাঠামো বিনিয়োগের মাধ্যমে অর্থনৈতিক সম্পৃক্ততা হল আমিরশাহির আফ্রিকা নীতির ভিত্তি। ২০২৫ সালের হিসাবে আমিরশাহিই একমাত্র দেশ যা আফ্রিকায় চিনের সাথে পাল্লা দিতে পারে বলে মনে হচ্ছে। যাই হোক, আমিরশাহির অর্থনীতি-চালিত বিদেশনীতি তার বৃহত্তম ব্যবসায়িক অংশীদার চিনের সঙ্গে সংঘর্ষের পরিবর্তে পরিপূরক। আমিরশাহি এছাড়াও ভারত-মধ্যপ্রাচ্য-ইউরোপ অর্থনৈতিক করিডোরের অংশ এবং ব্রিকস+ গোষ্ঠীর সদস্য, যার কিছু সদস্য আন্তর্জাতিক উত্তর-দক্ষিণ পরিবহণ করিডোরের (আইএনএসটিসি) অংশ। আমিরশাহিও আইএনএসটিসি-তে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। যাই হোক, ইরানের সঙ্গে ভূ-রাজনৈতিক সমস্যা এবং ইরান ও রাশিয়ার উপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞাগুলি যথেষ্ট বাধা। তবুও, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি তার অর্থনৈতিক উচ্চতা, ভূ-রাজনৈতিক অ-সারিবদ্ধতা, এবং অর্থনৈতিক বহু-সারিবদ্ধতার কারণে বিশ্বব্যাপী সংযোগের প্যারাডাইমে এবং উদীয়মান বিশ্বব্যবস্থায় একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে প্রস্তুত বলে মনে হচ্ছে।
পৃথ্বী গুপ্ত অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ প্রোগ্রাম-এর একজন জুনিয়র ফেলো।
The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.