Author : Kamal Malhotra

Published on May 08, 2023 Updated 0 Hours ago

তুরস্কের আসন্ন নির্বাচন তুর্কিয়ের অভ্যন্তরীণ নীতির পুনর্বিন্যাস করতে এবং এই গুরুত্বপূর্ণ মধ্যশক্তির জন্য দীর্ঘমেয়াদি বৈদেশিক নীতির পথকে আকার দিতে পারে

পথসন্ধিতে দাঁড়িয়ে তুর্কিয়ে: স্থিতাবস্থা বজায় রাখা অথবা পরিবর্তনের পক্ষে মতদান

সূচনা

২০২৩ সালের ১৪ মে হতে চলা তুরস্কের নির্বাচন দেশটির আধুনিক ইতিহাসে নিঃসন্দেহে সর্বাধিক প্রভাবশালী হতে চলেছে। কারণ এর ফলাফল সংশ্লিষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ভূ-রাজনৈতিক মধ্যশক্তিটির দীর্ঘমেয়াদি চরিত্র এবং কর্মপন্থা নির্ধারণ করবে। এই ফলাফলের প্রভাব শুধুমাত্র অভ্যন্তরীণ ক্ষেত্রেই নয়, ভূ-রাজনৈতিক ক্ষেত্রেও পড়বে। কারণ এ কথা প্রায় সর্বজনবিদিত যে, তুর্কিয়ে তার কৌশলগত ভৌগোলিক অবস্থানের দরুন ভূ-রাজনীতির নিরিখে বাস্তব ক্ষমতার তুলনায় অধিক শক্তিশালী ভূমিকা পালন করে। তাই প্রজাতন্ত্রটির শতবর্ষে হতে চলা এই নির্বাচনগুলির উপর নজর থাকবে সমগ্র বিশ্বের। এগুলির ফলাফল শুধুমাত্র তুর্কিয়ের শীর্ষ নেতৃত্বই নয়, বরং একই সঙ্গে দেশটির প্রশাসন কেমন হবে, দেশটির অর্থনীতির ভবিষ্যৎ এবং দেশটির সঙ্গে পাশ্চাত্য এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) দূরত্ব বাড়বে না কমবে, তা-ও নির্ধারণ করবে। রিশেপ তাইয়িপ এর্দোগানের অধীনে বিগত দুই দশক যাবৎ বজায় থাকা সাম্প্রদায়িক ইসলামিক বাস্তবতা কি স্থায়ী হবে, না কি আংশিকভাবে হলেও তুর্কিয়ে তার গণতান্ত্রিক শিকড় খুঁজে পাবে, যার পত্তন হয়েছিল মুস্তাফা কেমাল আতাতুর্কের হাত ধরে ১৯২৩ সালে প্রজাতন্ত্রটির সূচনার সময়?

তুর্কিয়ের এই ধর্মনিরপেক্ষ পথ এর্দোগানের দুই দশকব্যাপী শাসনের সম্মুখীন হয় এবং সংশ্লিষ্ট সময়ে লৌহ অনুশাসন ও নির্বাচনী একনায়কতন্ত্রের মাধ্যমে সংখ্যাগরিষ্ঠের শাসন সুদৃঢ় করা হয়।

আতাতুর্কের অধীনে প্রজাতন্ত্রটি ছিল আধুনিক ও কঠোরভাবে ধর্মনিরপেক্ষ এবং মুসলিম অধ্যুষিত দেশগুলির মধ্যে দেশটি আধুনিকতার বাতিঘর হয়ে ওঠে। তুর্কিয়ের এই ধর্মনিরপেক্ষ পথ এর্দোগানের দুই দশকব্যাপী শাসনের সম্মুখীন হয় এবং সংশ্লিষ্ট সময়ে লৌহ অনুশাসন ও নির্বাচনী একনায়কতন্ত্রের মাধ্যমে সংখ্যাগরিষ্ঠের শাসন সুদৃঢ় করা হয়। প্রাথমিকভাবে এই শাসনের পাশাপাশি বর্ধিত সমাজকল্যাণ পরিষেবার মাধ্যমে দারিদ্র্য হ্রাস করা এবং হিজাব পরিহিত মুসলিম মহিলাদের জন্য উচ্চশিক্ষা লাভ ও সরকারি দফতরে কাজ করার সুযোগ প্রদান করা হয়, যা পূর্বে তুরস্কের প্রজাতন্ত্রে নিষিদ্ধ ছিল। কিন্তু সাম্প্রতিক কালে এই সকল সুবিধা এক দ্রুত পতনশীল অর্থনীতি, একাধিক ভূমিকম্পের মারাত্মক ফলাফল প্রভৃতি একাধিক নেতিবাচক কারণের আড়ালে চাপা পড়ে গিয়েছে, যা বিরোধীপক্ষের মধ্যে এক অভূতপূর্ব ও ক্রমবর্ধমান ঐক্যের জন্ম দিয়েছে। ফলে মে মাসে বাস্তবেই এক পরিবর্তনের সম্ভাবনা লক্ষ করা যাচ্ছে, যা কিছু দিন আগে পর্যন্তও অকল্পনীয় ছিল এবং আগামী নির্বাচনে আদালেত ভে কালকিনমা পার্তিসি (একে পার্টি) ও এর্দোগানের ব্যক্তিগত পরাজয়ের সম্ভাবনাও ক্রমশ প্রকট হয়ে উঠছে।

তুরস্কের অর্থনীতি

তুর্কি নাগরিকরা বর্তমানে বছরের পর বছর ধরে একটি ব্যাপক সমস্যাজনক অর্থনীতি সহ্য করে চলেছেন এবং দারিদ্র্যের মাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে। পরিসংখ্যানের মাধ্যমে লাভ বা যন্ত্রণার খতিয়ান পর্যাপ্ত ভাবে প্রদর্শন করা সম্ভব না হলেও অর্থনীতির বর্তমান অবস্থা আংশিকভাবে দু’টি পরিসংখ্যানের মাধ্যমে ব্যাখ্যা করা যায়। ২০২২ সালে মুদ্রাস্ফীতির পরিমাণ ছিল ৮৫ শতাংশের বেশি। তার পর থেকে এটি হ্রাস পেয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে ২০২৩ সালের শুরুর দিকে প্রতি বছরে ৫৫ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু বাস্তবে সেই পরিমাণ যে অনেকটাই বেশি, তা সর্বজনবিদিত। গত পাঁচ বছরে তুর্কি লিরার মূল্য ৮০ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। এর পাশাপাশি আংশিকভাবে আইনি প্রশাসনের অপ্রত্যাশিত এবং অসম প্রয়োগের কারণে বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে একটি সুবিশাল, কষ্টসাধ্য ও বিশ্বাসযোগ্যতার ব্যবধান তৈরি রয়েছে। অনেক বিশ্বাসযোগ্য পর্যবেক্ষকও বিশ্বাস করেন যে, তুর্কিয়ের অর্থনীতি ধার করা সময়ের উপরেই দাঁড়িয়ে।

বিধ্বংসী ভূমিকম্প

এই বিপর্যস্ত অর্থনীতি বিরোধী দলগুলিকে একত্র করার জন্য যথেষ্ট না হলেও – ও এটি পার্লামেন্ট নির্বাচনে কুমহুরিয়েত হাল্ক পার্তিসি (সিএইচপি)কে জয় এনে দিতে পারে – কিন্তু ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের বিধ্বংসী ভূমিকম্পের কারণে ঘটা ধ্বংসলীলা এবং মৃতের সংখ্যা মূল আঘাত হানতে পারে। মৃতের সংখ্যা ১৯৩৯ সালের ডিসেম্বর মাসে তুর্কিয়েতে ঘটা ভূমিকম্পের চেয়েও খারাপ এবং রক্ষণশীল অনুমান অনুযায়ী, এই সংখ্যা শুধুমাত্র প্রথম দু’সপ্তাহেই প্রায় ৫০,০০০ ছুঁয়েছে। নির্বাচনের মাত্র তিন মাস আগে এই ভূমিকম্পের স্মৃতি মানুষের মনে জীবন্ত ও প্রাণবন্ত থাকবে এবং তা নির্বাচনে এর্দোগান এবং একেপি-র জয়লাভে আদৌ সহায়ক হবে না।

প্রশাসনের প্রতি অসন্তোষ

সাম্প্রতিক ভূমিকম্পের ধ্বংসাত্মক পরিসংখ্যানের জন্য দুর্বল প্রশাসনকে প্রত্যক্ষভাবে দায়ী হিসেবে দেখা যেতে পারে। সরকার কয়েক দশক ধরে ভবন নির্মাণের গুণমান এবং নিয়ম না মেনে চলা ঠিকাদারদের সাহায্য করার দোষে দুষ্ট। নির্মাণ সংক্রান্ত মাফ, যেমনটা ২০১৮ সালে সাধারণ নির্বাচনের ঠিক আগে পাস করা হয়েছিল, জরিমানার বিনিময়ে লাইসেন্সবিহীন সম্পত্তির নিবন্ধনের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। সম্মতি নিশ্চিত করা এবং সাধারণ মাফ প্রদান না করা শারীরিক ক্ষতি এবং মানুষের ক্ষতি উভয়ের উল্লেখযোগ্য হ্রাস ঘটায়।

সরকার কয়েক দশক ধরে ভবন নির্মাণের গুণমান এবং নিয়ম না মেনে চলা ঠিকাদারদের সাহায্য করার দোষে দুষ্ট।

বছরের পর বছর ধরে অর্থনীতির নিরিখে খারাপ প্রশাসন ব্যবস্থা ক্রমশ দৃশ্যমান হয়েছে। এর্দোগানের প্রধানমন্ত্রী এবং রাষ্ট্রপতির অর্থনৈতিক উপদেষ্টাদের অর্থনৈতিক ও আর্থিক পরামর্শের বিরুদ্ধে যাওয়ার প্রবণতার কারণে আরও বেশি ব্যাপক এবং প্রকট হয়ে ওঠে। কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের স্বাধীনতা এবং নীতিগুলির সঙ্গে ধারাবাহিকভাবে আপস করা হয়েছে, অসংখ্য গভর্নর পদ ছেড়ে দিয়েছেন অথবা প্রতিস্থাপিত হয়েছেন। এই প্রথা এর্দোগানকে অপ্রচলিত নিম্ন সুদের হারের নীতি বাস্তবায়নের অনুমতি প্রদান করে, যা সরাসরি মুদ্রাস্ফীতি, তুর্কি লিরার মূল্য হ্রাস এবং মুদ্রা রক্ষার জন্য বারবার অকার্যকর প্রচেষ্টার কারণে কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের সঞ্চয়ের উল্লেখযোগ্য হ্রাস ঘটিয়েছে। অর্গানাইজেশন ফর ইকোনমিক কো-অপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (ওইসিডি) সবচেয়ে সম্মানিত প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিবেচিত স্ট্যাটিস্টিক্স অফিস জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ভাবে বিশ্বাসযোগ্যতা হারিয়ে সরকারের মুখপত্রে পরিণত হয়েছে। এর্দোগানের পূর্ববর্তী অর্থনৈতিক দলের প্রবীণ সদস্য আলি বাবাকান এবং মেহমেত সিমসেককে বিনিয়োগকারীরা বিশ্বাসযোগ্য বলে মনে করলেও তাঁরা কয়েক বছর আগেই পদত্যাগ করেছেন এবং রাষ্ট্রপতি তাঁদের ফিরিয়ে আনতে ব্যর্থ হয়েছেন। পুনঃনির্বাচিত হলে তুর্কিয়ে আরও প্রচলিত মুক্ত বাজার নীতি অনুসরণ করবে বলে ইঙ্গিত দেওয়ার তাঁর সাম্প্রতিক প্রচেষ্টাগুলি বিশ্বাসযোগ্য নয় এবং সিমসেককে ভবিষ্যতের একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক ভূমিকায় ফিরিয়ে আনতে তিনি ব্যর্থ হয়েছেন।

মানবাধিকার লঙ্ঘন

বারবার মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা বিচার ব্যবস্থাকে আপস করার মুখে ফেলেছে। বিশেষ করে ২০১৬ সালের জুলাই মাসে অভ্যুত্থানের ব্যর্থ প্রচেষ্টার পর কয়েক লক্ষ তুর্কি নাগরিককে কারাগারে পাঠানো হয়েছে, অনেককেই সীমাহীন বিচার-পূর্ববর্তী বন্দিদশায় বছরের পর বছর ধরে আটক করে রাখা হয়েছে। ঘোষিত অভ্যুত্থান ষড়যন্ত্রকারী, সাংবাদিক এবং কুর্দি নাগরিকরা এই অত্যাচারের ভার বহন করেছেন।

নজিরবিহীন বিরোধী ঐক্য

একটি অত্যন্ত বিস্তৃত রাজনৈতিক পরিসর জুড়ে বিরোধী ঐক্য ক্রমশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এমনকি কুর্দিপন্থী ধর্মনিরপেক্ষ পিপলস ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (এইচডিপি) সম্প্রতি সিএইচপি-র নেতা কামাল কিলিচদারোগ্লুকে সম্মান জানিয়ে রাষ্ট্রপতি পদের প্রার্থী দিতে অস্বীকার করেছে। কিলিচদারোগ্লুর প্রার্থীপদ বর্তমান প্রায় সকল প্রধান বিরোধী রাজনৈতিক দল দ্বারাই সমর্থন পেয়েছে এবং মার্চ মাসে শুরুতে তুর্কিয়ে রাপোরু সমীক্ষা এর্দোগানকে আট পয়েন্টের ব্যবধানে এগিয়ে রেখেছে। অনেক ভাষ্যকার তাঁর প্রার্থিতা বিরোধী দলের সবচেয়ে বড় দুর্বলতা এবং তাঁর বদলে জেতার মতো অন্যান্য শক্তিশালী প্রার্থী রয়েছেন বলে মনে করলেও অন্যান্য পোলে মার্চ মাসের মাঝামাঝি সময়ে তাঁকে ১০ পয়েন্টেরও বেশি ব্যবধানে এগিয়ে রাখা হয়েছে।

বছরের পর বছর ধরে অর্থনীতির নিরিখে খারাপ প্রশাসন ব্যবস্থা ক্রমশ দৃশ্যমান হয়েছে। এর্দোগানের প্রধানমন্ত্রী এবং রাষ্ট্রপতির অর্থনৈতিক উপদেষ্টাদের অর্থনৈতিক ও আর্থিক পরামর্শের বিরুদ্ধে যাওয়ার প্রবণতার কারণে আরও বেশি ব্যাপক এবং প্রকট হয়ে ওঠে।

উপসংহার

প্রজাতন্ত্রের এই শতবর্ষীয় নির্বাচনের দিকে সকলের নজর থাকবে। এর ফলাফল শুধুমাত্র মুসলিম-সংখ্যাগরিষ্ঠ বিশ্ব জুড়েই নয়, বরং একই সঙ্গে তা পশ্চিমে, বিশেষ করে প্রতিবেশী ইউরোপেও অনুরণিত হবে। এর তাৎপর্য হবে মারাত্মক। কারণ তুর্কিয়েতেই ন্যাটো জোটের দ্বিতীয় বৃহত্তম স্থায়ী সেনাবাহিনী বিদ্যমান। উভয় দেশের সঙ্গেই তুর্কিয়ের নৈকট্য এবং পুতিনের সঙ্গে এর্দোগানের বন্ধুত্বের দরুন ইউক্রেন সঙ্কটের প্রেক্ষিতে এই নির্বাচন অতিরিক্ত ভূ-রাজনৈতিক গুরুত্ব পাবে। মে মাসে বাস্তব পরিবর্তন ন্যাটো এবং তুর্কিয়ের জন্য উল্লেখযোগ্য ইতিবাচক ভূ-রাজনৈতিক ফলাফল প্রদান করতে পারে, যার মধ্যে রয়েছে সেটির স্থগিত থাকা ইইউ-তে সংযোজনের দাবি, পশ্চিমী দেশগুলির সঙ্গে তার সম্পর্ক এবং ভবিষ্যতে ইউক্রেন ও মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাতের অবসান ঘটাতে তার পালনীয় ভূমিকা নির্ধারণ করা। এই ধরনের পরিবর্তন পুতিনের সঙ্গে তুর্কিয়ের সম্পর্কের জন্য ভাল না হলেও এটি তুর্কিয়ে এবং সৌদি আরবের মধ্যে সুন্নি বিশ্বের নেতৃত্বের জন্য আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বিতার হ্রাস ঘটাবে। কারণ কোনও ধর্মনিরপেক্ষ তুর্কি সরকারেরই এর্দোগানের মতো উচ্চাকাঙ্ক্ষা থাকবে না।

বলসিনারোর সাম্প্রতিক পরাজয়ের পরপরই এর্দোগান হেরে গেলে এটি নির্বাচনী স্বৈরশাসকদের কাছে একটি অত্যন্ত স্পষ্ট প্রয়োজনীয় সতর্কবার্তা এবং বিশ্বের কাছেও সমান ভাবে প্রয়োজনীয় ইতিবাচক বার্তা পাঠাবে। এটি প্রজাতন্ত্রের চরিত্রকে একটি সাম্প্রদায়িক নব্য-অটোমান প্যান-ইসলামবাদী চরিত্রে পরিবর্তন করার এবং আতাতুর্ককে জাতির জনক হিসাবে প্রতিস্থাপন করার জন্য এর্দোগানের উচ্চাকাঙ্ক্ষারও অবসান ঘটাবে, যা সমগ্র তুর্কি প্রজাতন্ত্র জুড়ে বিলবোর্ড জুড়ে আতাতুর্কের পরিবর্তে এর্দোগানের ছবির মাধ্যমে দৃশ্যমান হয়েছে।

মে মাসে বাস্তব পরিবর্তন ন্যাটো এবং তুর্কিয়ের জন্য উল্লেখযোগ্য ইতিবাচক ভূ-রাজনৈতিক ফলাফল প্রদান করতে পারে, যার মধ্যে রয়েছে সেটির স্থগিত থাকা ইইউ-তে সংযোজনের দাবি, পশ্চিমী দেশগুলির সঙ্গে তার সম্পর্ক এবং ভবিষ্যতে ইউক্রেন ও মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাতের অবসান ঘটাতে তার পালনীয় ভূমিকা নির্ধারণ করা।

যাই হোক, যদি এর্দোগান আবারও এই বিরোধপূর্ণ প্রেক্ষাপটে জয়ী হন, তা হলে তার নেপথ্যে থাকবে ন্যায্য ও ‘গভীর রাষ্ট্র’ এবং পক্ষপাতমূলক রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান, কুর্দি ভোটার দমন বা অনৈতিক রাজনৈতিক জোট। এমনটা হলে তুর্কিয়ের পক্ষে তার বর্তমান ইসলামি পথ থেকে সরে আসা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়বে। এটি শুধুমাত্র তুর্কিয়ে এবং সিরিয়া ও ইউক্রেনের মতো প্রতিবেশীদের জন্যই নয়, বরং মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ বিশ্বে প্রতিযোগিতা ও উত্তেজনা এবং ইইউ ও অন্যান্য পশ্চিমী গণতন্ত্রের সঙ্গেও তুর্কিয়ের সম্পর্কের জন্যও নেতিবাচক পরিণতি ডেকে আনবে। এই ধরনের জয় বিশ্ব জুড়ে ক্রমবর্ধমান স্বৈরশাসক এবং নির্বাচনী স্বৈরাচারীদের কাছেও ভুল সংকেত প্রেরণ করবে, যাঁরা এই জয় থেকে স্বস্তি লাভ করে তাঁদের নিজস্ব জাতীয় পরিকাঠামোয় ক্ষমতার উপর তাদের দখল আরও সশক্ত করার চেষ্টা চালাবেন। এর ফলে আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক ভূ-রাজনীতিতে প্রতিকূল প্রভাব পড়বে।

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.