Published on Nov 08, 2024 Updated 0 Hours ago

অভ্যন্তরীণভাবে ট্রাম্প ইতিমধ্যেই ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, তাঁর আগামী প্রশাসন তাঁর পূর্ববর্তী প্রশাসন থেকে স্পষ্টভাবে আলাদা হবে। তাঁর প্রথম মেয়াদের অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি, যেমন জন কেলি ও জন বোল্টন, হয় তাঁর থেকে নিজেদের দূরে সরিয়ে নিয়েছেন বা প্রকাশ্যে তাঁর নেতৃত্বের বিরোধিতা করেছেন। ফলে সম্ভাব্য স্বতন্ত্র নীতিগত লক্ষ্যসহ একটি নতুন দল এবার দায়িত্বে আসবে। এই পরিবর্তনের ফলে অভ্যন্তরীণ ও বিদেশনীতির ফ্রন্টে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন হতে পারে। এলন মাস্ক, বিবেক রামাস্বামী ও রবার্ট এফ কেনেডি জুনিয়রের মতো ব্যক্তিদের প্রবেশের অর্থ মহাকাশ, প্রযুক্তি, উদ্ভাবন, চিকিৎসা ও স্বাস্থ্যের মতো ক্ষেত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য এবার অনেকটা ভিন্ন নীতি অগ্রাধিকার হতে পারে।

ট্রাম্প ২.০ প্রথম মেয়াদের বিষয়বস্তুগুলিকে প্রতিধ্বনিত করবে, তবে বড় পরিবর্তন-সহ

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসাবে ডোনাল্ড ট্রাম্প পুনর্নির্বাচিত হয়েছেন, এবং সেই প্রেক্ষিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ওয়াশিংটনের পুনর্গঠনের ফলে সম্ভাব্য পরিবর্তনগুলির সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে প্রস্তুত হচ্ছে৷ ট্রাম্পের দ্বিতীয় প্রেসিডেন্সি সম্ভবত তাঁর আগের মেয়াদের বিষয়বস্তুগুলিকে প্রতিধ্বনিত করবে, তবে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন-‌সহ। যদিও তাঁর প্রথম প্রশাসন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, তার মিত্র ও বৈশ্বিক অংশীদারদের উপর সম্ভাব্য নীতি এবং সেগুলির প্রভাব মূল্যায়নের জন্য একটি রেফারেন্স পয়েন্ট প্রদান করে, ট্রাম্পের হোয়াইট হাউসে প্রত্যাবর্তন তাঁর চলে যাওয়ার পর থেকে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক ঘটনাগুলির কারণে নতুন গতিশীলতা নিয়ে আসতে পারে।

অভ্যন্তরীণভাবে ট্রাম্প ইতিমধ্যেই ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, তাঁর আগামী প্রশাসন তাঁর পূর্ববর্তী প্রশাসন থেকে স্পষ্টভাবে আলাদা হবে। তাঁর প্রথম মেয়াদের অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি, যেমন
জন কেলি জন বোল্টন, হয় তাঁর থেকে নিজেদের দূরে সরিয়ে নিয়েছেন বা প্রকাশ্যে তাঁর নেতৃত্বের বিরোধিতা করেছেন। ফলে সম্ভাব্য স্বতন্ত্র নীতিগত লক্ষ্যসহ একটি নতুন দল এবার দায়িত্বে আসবে। এই পরিবর্তনের ফলে অভ্যন্তরীণ ও বিদেশ নীতির ফ্রন্টে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন হতে পারে। এলন মাস্ক, বিবেক রামাস্বামী ও রবার্ট এফ কেনেডি জুনিয়রের মতো ব্যক্তিদের প্রবেশের অর্থ মহাকাশ, প্রযুক্তি, উদ্ভাবন, চিকিৎসা ও স্বাস্থ্যের মতো ক্ষেত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য এবার অনেকটা ভিন্ন নীতি অগ্রাধিকার হতে পারে। বৈদেশিক ক্ষেত্রে, ২০২১ সালে ট্রাম্প অফিস ছেড়ে যাওয়ার পর থেকে বিশ্বব্যাপী দৃশ্যপট ব্যাপকভাবে পরিবর্তিত হয়েছে৷ বিশ্ব এখন দুটি বড় দ্বন্দ্বের সম্মুখীন: ইউক্রেনের যুদ্ধ ও পশ্চিমে ক্রমবর্ধমান সংকট৷ চিনের অর্থনীতি, যদিও এখন মন্দার সম্মুখীন হচ্ছে, ইতিমধ্যে আকার ও প্রভাবে প্রসারিত হয়েছে এবং মার্কিন জাতীয় ঋণ অভূতপূর্ব মাত্রায় বেড়ে ৩৫ ট্রিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। উল্লেখযোগ্যভাবে, দ্বিতীয় ট্রাম্প প্রশাসন নতুন সামরিক সংঘাতে জড়িত হওয়ার বিরুদ্ধে একটি বিরল দ্বিদলীয় ঐকমত্য গড়ে তুলে কাজ করতে পারে। বাইডেন প্রশাসনের বিপরীতে, যা প্রায়শই ইউক্রেন ও ইজরায়েলের মতো জটিল ইস্যুতে বিভক্ত ছিল, ট্রাম্প আরও একতরফা পদ্ধতি অবলম্বন করবেন বলে আশা করা হচ্ছে, যা আন্তর্জাতিক চাপের পরিবর্তনশীলতার দ্বারা প্রভাবিত হওয়ার পরিবর্তে তাঁর পরিচিত দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে চালিত হবে। তাঁর দৃষ্টিভঙ্গিটি কোনও স্বঘোষিত মূল্যবোধের পরিবর্তে নিছক স্বার্থ দ্বারা পরিচালিত হয়। যেমন, বিদেশে গণতন্ত্র রক্ষা করা হচ্ছে কি না, তার চেয়ে চলতি যুদ্ধগুলি বন্ধ করা আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে। যাই হোক, এটি দেখতে আকর্ষণীয় ছিল যে ট্রাম্প তাঁর বিজয়ের পর বক্তৃতায় মার্কিন গণতন্ত্রকে বাঁচানোর কথা বলছিলেন, এমনকি তা এমন এক সময়ে যখন ব্যালট গণনা শেষ হয়নি। তাঁর এই প্রতিশ্রুতি অবশ্যই একটি সাম্প্রতিক সমীক্ষার পরিপূরণ করে, যা দেখিয়েছিল ৭৬% আমেরিকান নাগরিক গণতন্ত্রকে হুমকির সম্মুখীন বলে মনে করে।


বাইডেন প্রশাসনের বিপরীতে, যা প্রায়শই ইউক্রেন ও ইজরায়েলের মতো জটিল ইস্যুতে বিভক্ত ছিল, ট্রাম্প আরও একতরফা পদ্ধতি অবলম্বন করবেন বলে আশা করা হচ্ছে, যা আন্তর্জাতিক চাপের পরিবর্তনশীলতার দ্বারা প্রভাবিত হওয়ার পরিবর্তে তাঁর পরিচিত দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে চালিত হবে।



ইউক্রেনের ক্ষেত্রে, ট্রাম্প মার্কিন আর্থিক সহায়তার পুনর্মূল্যায়ন করবেন বলে আশা করা হচ্ছে, কারণ তাঁর প্রচারে কিয়েভকে অবিরাম সহায়তা দেওয়ার সমালোচনা করা হয়েছিল। তিনি যুক্তি দিয়েছেন যে, এই যুদ্ধে সীমিত কৌশলগত লাভের জন্য মার্কিন সংস্থানগুলিকে খর্ব করা হচ্ছে। তাঁর এই বক্তব্য বুঝিয়ে দিয়েছে যে তাঁর প্রশাসন ওই অঞ্চলে গণতন্ত্রের জন্য, বা ইউরোপীয় নিরাপত্তা স্থাপত্যের জন্য, সম্ভাব্য পরিণতি নির্বিশেষে ইউক্রেনের জন্য সহায়তা হ্রাস বা বন্ধ করতে পারে।

ইজরায়েলের ক্ষেত্রে, ট্রাম্প সম্ভবত মধ্যপ্রাচ্য নীতি বাস্তবসম্মতভাবে গ্রহণ করবেন। শুধুমাত্র আঞ্চলিক দ্বন্দ্বের প্রতিক্রিয়া দেখানোর পরিবর্তে, তিনি ওয়াশিংটনে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রেখে নিরাপত্তা বৃদ্ধিকারী জোটগুলিকে দৃঢ় করার লক্ষ্য রাখতে পারেন। তাঁর শেষ প্রশাসনের উত্তরাধিকারের উপর ভিত্তি করে ট্রাম্প আলোচনার জন্য বিভিন্ন পক্ষকে একত্রিত করার মাধ্যমে আঞ্চলিক সহযোগিতা বৃদ্ধির উদ্যোগগুলিকে পুনরুজ্জীবিত করার চেষ্টা করতে পারেন। এই কৌশলের মধ্যে সম্ভবত সংযুক্ত আরব আমিরশাহি, সৌদি আরব ও ইজরায়েলের মতো আব্রাহাম অ্যাকর্ডস স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে সম্পর্ক জোরদার করার পাশাপাশি কূটনৈতিকভাবে ইরানকে বিচ্ছিন্ন করাও অন্তর্ভুক্ত থাকবে। এই ধরনের পদক্ষেপগুলি আই২ইউ২ ও আইএমইইসি-‌র মতো স্থগিত উদ্যোগগুলিকে পুনরুজ্জীবিত করতে পারে, যা ইন্দো-প্যাসিফিক ও মধ্যপ্রাচ্য জুড়ে আঞ্চলিক সংযোগ বাড়িয়ে তুলবে। ট্রাম্পের পূর্ববর্তী প্রশাসন উল্লেখযোগ্যভাবে দক্ষিণ এশিয়াকে অগ্রাধিকার দিয়েছিল:‌ এটি এমন একটি প্রবণতা যা এই অঞ্চলের আপেক্ষিক স্থিতিশীলতার কারণে অব্যাহত থাকতে পারে। ভারতের জন্য, এটি ওয়াশিংটনের উল্লেখযোগ্য বাহ্যিক চাপ ছাড়াই নিজস্ব শর্তে আঞ্চলিক সম্পর্ক জোরদার করার জন্য একটি অনুকূল পরিবেশ তৈরি করতে পারে। ট্রাম্পের বাস্তববাদী দৃষ্টিভঙ্গি ভারতের আঞ্চলিক উচ্চাকাঙ্ক্ষার সঙ্গে ভালভাবে সারিবদ্ধ হতে পারে, বিশেষ করে যখন নয়াদিল্লি প্রতিবেশী দেশগুলির সঙ্গে তার জটিল সম্পর্কের মধ্য দিয়ে চলছে।


ট্রাম্পের পূর্ববর্তী প্রশাসন উল্লেখযোগ্যভাবে দক্ষিণ এশিয়াকে অগ্রাধিকার দিয়েছিল:‌ এটি এমন একটি প্রবণতা যা এই অঞ্চলের আপেক্ষিক স্থিতিশীলতার কারণে অব্যাহত থাকতে পারে।



প্রধান শক্তিগুলি পুনরায় নিজেদের অবস্থান চিহ্নিত করার সাথে সাথে তার
তরঙ্গ-‌প্রভাব বিশ্বব্যাপী অনুভূত হবে। ট্রাম্প কীভাবে বিশ্ববাণিজ্য, শুল্ক, প্রযুক্তি রপ্তানি, এবং ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশলের মতো আঞ্চলিক কৌশলগুলির মোকাবিলা করেন, তা আগামী বছরগুলিতে মার্কিন বিদেশনীতির মঞ্চ বাঁধবে৷ ট্রান্সঅ্যাটলান্টিক সম্পর্ক এবং বিশেষ করে চিনের সঙ্গে ক্ষমতার ভারসাম্য সম্পর্কে তাঁর অবস্থান ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করা হবে, কারণ এই সিদ্ধান্তগুলি "ট্রাম্প ২.০"-‌র কাঠামো এবং এর বৈশ্বিক প্রভাবকে সংজ্ঞায়িত করবে। যাই হোক, ট্রাম্পের 'ঠিক করতে হবে' প্রতিশ্রুতিটির দেশীয় মাত্রা আন্তর্জাতিক মাত্রার চেয়ে বেশি হবে।



এই ভাষ্যটি প্রথম
দ্য ইকনমিক টাইমস -এ প্রকাশিত।

The views expressed above belong to the author(s). ORF research and analyses now available on Telegram! Click here to access our curated content — blogs, longforms and interviews.

Authors

Harsh V. Pant

Harsh V. Pant

Professor Harsh V. Pant is Vice President – Studies and Foreign Policy at Observer Research Foundation, New Delhi. He is a Professor of International Relations ...

Read More +
Vivek Mishra

Vivek Mishra

Vivek Mishra is Deputy Director – Strategic Studies Programme at the Observer Research Foundation. His work focuses on US foreign policy, domestic politics in the US, ...

Read More +